Childhood marriage

Childhood marriage 2 !! Part- 21

#পর্ব-২১
#লেখিকা-সানজিদা সেতু
সায়নদের ক্যাম্পাস খুলেছে বেশ কিছুদিন আগে,অন্য সবার মত সায়নকেও তাই ফিরে আসতে হয়েছে।অন্য সবার ক্ষেত্রে ব্যপারটা খুব স্বাভাবিক হলেও সায়নের ক্ষেত্রে কিন্তু মোটেও স্বাভাবিক ছিল না।কারণ একটাই এর আগে কখনোই কোন ছুটিতে এভাবে বাসায় যায়নি সায়ন,এবার কেন গেল সেটাও বুঝতে পারছে না।তবে যাই হোক এবারে গিয়ে অন্য এক ছোঁয়ার সাথে পরিচয় হয়েছে সায়নের,যেই ছোঁয়াকে এর আগেরবার একেবারেই চোখে পড়েনি ওর।যে কয়দিন ও বাড়িতে ছিল এই নতুন ছোঁয়ার সাথেই ম্যাক্সিমাম টাইম স্পেণ্ড করেছে।অদ্ভূত হলেও সত্যি এই মেয়েটাকে এখন থেকে প্রচণ্ড মিস করবে সায়ন।বাড়ি ছেড়ে আসার সময় খুব অদ্ভূত একটা ফিলিংস হচ্ছিল,মনে হচ্ছিল যেন কিছু একটা পেছনে ফেলে যাচ্ছে!আসতেই ইচ্ছে করছিল না।কেন এমন হচ্ছে কিছুই বুঝতে পারছে না সায়ন,সব থেকে বেশি খারাপ লাগছিল যখন ছোঁয়া নিজ হাতে টিফিনবক্স প্যাক করে সায়নের দিকে বাড়িয়ে ধরেছিল!মন চাইছিল ওকেও সাথে করে নিয়ে আসুক কিন্তু মুখে কিছুই বলতে পারেনি…

বাড়ি থেকে ফিরে সায়ন যে বেশ বদলে গেছে ব্যাপারটা সবার আগে খেয়াল করেছে মারুফ।সায়ন বাড়ি থেকে এসেছে প্রায় সপ্তাহ খানেক হয়ে আসলো,এর মধ্যে একবারও রিয়ার ব্যাপারে নাতো কোনকিছু জিজ্ঞেস করেছে আর না ও যে এসেছে তার ব্যাপারে রিয়াকে ইনফর্ম করেছে।ওর বিহেভে মনে হচ্ছে রিয়াকে ও এভয়েড করছে বা কোনভাবে ওর সাথে ব্রেক আপ করতে চাইছে।এজ এ রুমমেট মারুফ ব্যাপারটাতে যথেষ্ট খুশি হলেও পুরোপুরি ক্লিয়ার হওয়ার আগে কোনকিছু বলার সাহস পাচ্ছে না।
অন্যদিনের মত আজকেও সায়ন বালিশে হেলান দিয়ে জানালা দিয়ে বাইরের দিকে তাকিয়ে আছে,একমনে কি যেন ভাবছে।এবারে বাড়ি থেকে ফেরার পর থেকে এটা সায়নের জন্য একরকম ডেইলি রুটিনে পরিণত হয়েছে।মারুফ অনেক্ষণ ধরেই ওর গতিবিধি লক্ষ্য রেখে চলেছে,শেষমেষ না বলে আর পারলোই না…
মারুফঃ সায়ন…সায়ন…
সায়নঃ…..
মারুফঃ ওই শালা শুনতে পাস না?
সায়নঃ (চমকে উঠে)আমাকে কিছু বলছিস?
মারুফঃ এখানে তুই ছাড়া আর কে আছে শুনি…
সায়নঃ ওহ
(সায়ন আবারও নিজের মাঝে হারিয়ে গেল,মারুফ অবাক হয়ে ওর দিকে তাকিয়ে আছে,কিছু বলতে যাবে তখনই ওর ফোনটা বেজে উঠল।ফোনটা হাতে নিতেই চোখে মুখে একটা স্পষ্ট বিরক্তির ছাপ ফুটে উঠল তারপর উঠে গিয়ে সায়নের দিকে ফোনটা বাড়িয়ে ধরল)
মারুফঃ এই নে ধর,কথা বল
সায়নঃ কি?

মারুফঃ তোর ফোন,রিয়া…
সায়নঃ প্লিজ দোস্ত,Do me a favor ওকে বল আমি নেই,এখনও বাড়ি থেকে ফিরেনি
মারুফঃ মানে কি!আমি কেন শুধু শুধু মিথ্যে বলতে যাব?
সায়নঃ প্লিজ দোস্ত তুই না আমার ভাল দোস্ত…আমার জন্য এইটুকু করতে পারবি না!
মারুফঃ ওকে ফাইন,বলছি…অলয়েজ ব্ল্যাকমেইলিং…
(মারুফ ফোনটা রিসিভ করে একটু দূরে সরে গেল,কথা শেষ করেই আবার সায়নের কাছে ফিরে এলো।অনেক্ষণ সায়নের দিকে কটমট তাকিয়ে থেকে শেষে মুখ খুলল)
মারুফঃ এসবের মানে কি?What’s going on?
সায়নঃ কই কিছু নাতো
মারুফঃ কিছু যদি নাই হয়ে থাকে তাহলে রিয়ার সাথে কথা বলছিস না কেন?ইভেন তুই যে এসেছিস সেই খবরটা পর্যন্ত ওকে দিস নি!এই মেয়েতো ফোন দিয়ে দিয়ে আমার মাথাটায় খারাপ করে দিল,শোন আমি আর পারব না,এবার ওকে যা বলার তুই নিজেই বলবি…
সায়নঃ সরি দোস্ত,আর এমন হবে না
মারুফঃ (অবাক হয়ে)ওই তোর শরীর স্বাস্থ্য সব ঠিক আছে তো?জ্বর টর আসছে নাকি..দেখি দেখি এইদিকে আয়তো…
সায়নঃ আমি একদম ঠিক আছি,আমার কিচ্ছু হয়নি
মারুফঃ তাহলে হঠাৎ এভাবে কথা বলছিস কেন?What’s wrong with you man?
সায়নঃ নাথিং
মারুফঃ বললেই হল?সেই এসে থেকে খেয়াল করছি,Something is wrong…কিছু একটাতো হয়েছেই,বল কি হয়েছে…
সায়নঃ বললামতো কিছু হয়নি,আমার আবার কি হবে?
মারুফঃ দেখ সায়ন,আমি কিন্তু ঠিক বুঝতে পারছি কোন একটা গোলমাল হয়েছে।এখন তুই নিজে থেকে বলবি নাকি আমরা সবাই মিলে খুঁজে বের করব সেটা তোর ব্যাপার।তবে হ্যাঁ যদি আমাদেরকেই খুঁজে বের করতে হয় তাহলে কিন্তু তোর খবর আছে…
সায়নঃ আরে দোস্ত রাগ করছিস কেন?তোকে বলব নাতো কাকে বলব বল,তুইতো আমার একমাত্র রুমমেট তাইনা…
মারুফঃ বলব মানে কি?এক্ষুণি বল…
সায়নঃ এক্ষুনি!
মারুফঃ হ্যাঁ এক্ষুনি,টাইম ওয়েস্ট না করে শুরু কর…
সায়নঃ দোস্ত,একটা মেয়ে…আমি যতই ভাবছি ওর কথা চিন্তা করব না ততই আরও বেশি করে মনে পড়ছে!আমি কি করব কিছুই বুঝতে পারছি না…
মারুফঃ এটা আর নতুন কি?আমরা সবাই জানি তুই আর রিয়া…
সায়নঃ তুই ঠিক বুঝতে পারছিস না,It’s not about Riya.রিয়ার ব্যাপারে আমার কখনোই এমন কোন ফিলিংস আসেনি,It’s completely different
মারুফঃ মানে কি!রিয়া নয়তো আবার কে?ব্যাপারটা ক্লিয়ার করে বলতো…
সায়নঃ দেখ রিয়া আর ছোঁয়ার ব্যাপারটা সম্পূর্ণ আলাদা,ওহ সরি তোকেতো বলাই হয়নি,ওর নাম ছোঁয়া।ওর আশেপাশে যখন থাকি,রিয়ার কথা আমার একটুও মনে পড়ে না,মনে হয় সময়টা যদি এখানেই থমকে যেত!এই কয়দিন ওর সাথে ছিলাম তাই ঠিক বুঝতে পারিনি কিন্তু বাড়ি থেকে চলে আসার পর থেকেই ওকে প্রচণ্ড মিস করছি,বারে বারে ওর কাছে ছুটে যেতে ইচ্ছে করছে,ওর সাথে কাটানো প্রতিটা মুহূর্ত চোখের সামনে ভেসে উঠছে।ও এখন কি করছে না করছে সেসব ভাবতে ভাবতেই আমার দিন কেটে যাচ্ছে,কোন কাজে মন বসাতে পারছি না।রিয়ার ক্ষেত্রে কিন্তু আমার সাথে এমন কিছু হয়নি…
মারুফঃ হুম বুঝলাম…
সায়নঃ কি বুঝলি?
মারুফঃ This is totally gone case.সায়ন বেটা…আবতো তু গেয়া…
সায়নঃ এখন কি করি বলতো…একদিকে রিয়া আর অন্যদিকে ছোঁয়া…আমিতো কিছুই বুঝতে পারছি না
মারুফঃ তাহলে এখন তুই কি করতে চাইছিস?
সায়নঃ সেটাইতো মাথায় আসছে না,তুইই একটা বুদ্ধি দে প্লিজ…
মারুফঃ আচ্ছা মেয়েটা কি তোর এলাকার?মানে তাকে কি তুই আগে থেকেই চিনতিস?
সায়নঃ আরে চিনি মানে কি,আমরা দুজনতো একসাথেই…
মারুফঃ তোর ব্যাপারে ওর চিন্তা ভাবনাও কি এমনই নাকি…আই মিন ও কি তোকে পছন্দ করে?
সায়নঃ মে বি

মারুফঃ May be!What do you mean by may be?
সায়নঃ আরে বাবা আমি কি ওকে কখনও আমার মনের কথা বলেছি নাকি যে ওর মনে কি আছে জানতে পারব?
মারুফঃ ঘটনাতো মনে হচ্ছে বেশ সিরিয়াস,ভালই হবে ঐ রিয়া মেয়েটার থেকে সায়নকে বাঁচানো যাবে।যাই হোক একটু বাজিয়ে দেখতে হবে…(মনে মনে)
সায়নঃ কি রে,কথা বলছিস না কেন?
মারুফঃ ও হ্যাঁ বলছিলাম খামোখা অন্য একজনকে কেন টানছিস বলতো?আরে রিয়াতো তোর জন্য সেট আছেই,তাই বলছি ওকে নিয়েই হ্যাপি থাক আর ঐ মেয়েটাকে…ওকে আর তোর লাইফে এন্ট্রি করাস না,just get rid of her…
সায়নঃ I can’t
মারুফঃ কিন্তু কেন?
সায়নঃ She is already a part of my life.ইনফ্যাক্ট বর্তমানে আমার উপর সবচেয়ে বেশি অধিকার কার জানিস,ওর…
মারুফঃ কি পাগলের মত বকছিস বলতো,তোর কি মাথার ঠিক আছে?
সায়নঃ আমি ঠিকই বলছি,পুরো ঘটনা জানলে তুইও বলবি আমি যা বলছি একদম ঠিক বলছি
মারুফঃ তোর মাথাটা সত্যি সত্যি গেছে,ওই সরতো আমাকে আমার কাজ করতে দে…
সায়নঃ She is my wife.আমার জীবনের সবচেয়ে ইম্পর্টেন্ট পার্ট…
(মারুফ পানি খাচ্ছিলো,সায়নের কথা শুনে বেচারার বিষম লেগে গেল,কোন রকমে নিজেকে সামলে নিয়ে সায়নের দিকে এগিয়ে গেল)
মারুফঃ তুই কি বললি!!!
সায়নঃ বলেছি আমি ম্যারিড আর ছোঁয়া আমার স্ত্রী
মারুফঃ What nonsense is this!stop kidding sayon.আমি কিন্তু মোটেও ফাযলামির মুডে নেই
সায়নঃ আই এ্যাম সিরিয়াস বিলিভ মি…
মারুফঃ কেমন যেন তালগোল পাকিয়ে যাচ্ছে,সায়নের কথাগুলো বিশ্বাস করতেতো ইচ্ছে করছে না কিন্তু ওর মুখের এক্সপ্রেশন দেখে মনে হচ্ছে ও আসলেই সিরিয়াস তাই কি বলব কিছুই মাথায় আসছে না
সায়নঃ মারুফের মনের অবস্থা আমি বুঝতে পারছি,বেচারা খুব চিন্তায় পড়ে গেছে বাট আমি যে টেনশনে আছি তার থেকে মুক্তি পেতে হলে কারো না কারো সাথেতো প্রবলেমটা শেয়ার করতেই হবে…
মারুফঃ তুই..কি সত্যিই…
সায়নঃ হুম
মারুফঃ কিন্তু কখন?কিভাবে?আমাকে আগে বলিসনি কেন?আচ্ছা বিয়েটা কি তোর ইচ্ছেতেই হয়েছে নাকি তোকে কেউ জোর করে…
সায়নঃ মারুফ…একটু শান্ত হয়ে বোস,আমি সব খুলে বলছি…ওকে প্রথম থেকে পুরো ঘটনা খুলে বললাম
মারুফঃ (অবাক হয়ে)সা..সাত ব..বছ..র!
সায়নঃ হুম
মারুফঃ আই জাস্ট কান্ট বিলিভ দিস,কেমনে সম্ভব!আমরা কেউ কিচ্ছু টের পেলাম না!
সায়নঃ টের পাবি কিভাবে বিয়েটাকে,ছোঁয়াকে মন থেকে মেনে নিতে পারিনি তাইতো সবকিছু ছেড়ে চলে এসেছিলাম।আমিই যেখানে বিয়েটাকে মানিনি সেখানে সবাইকে জানানোর প্রশ্নই আসে না
মারুফঃ এই জন্যেই তুই কোন ছুটিতে বাড়ি যাওয়ার কথা মুখেও আনতি না তাইনা?
সায়নঃ হুম,আসলে বাবা-মার উপর প্রচণ্ড রেগে ছিলাম আর কোনকিছু না বুঝেই ছোঁয়াকে সবকিছুর জন্য দায়ী করছিলাম।একটাবার বোঝারও চেষ্টা করি নি যে ওর অবস্থাও আমারই মত,ইনফ্যাক্ট ওর অবস্থা আমার থেকেও খারাপ…ওই অতটুকু বয়সে সবাইকে ছেড়ে…
মারুফঃ তাহলে এখন?এখন কি করতে চাইছিস?
সায়নঃ আমি না ঠিক বুঝতে পারছি না জানিস,ওর প্রেমে পড়েছি কিনা জানিনা তবে এতটুকু বুঝতে পারছি আমার লাইফে অন্য কোন মেয়েকে আর জায়গা দিতে পারব না কারণ তাতে দুজপ্নকেই ধোঁকা দেওয়া হবে
মারুফঃ তাহলে?
সায়নঃ দেখ অতকিছু আমি বুঝিনা কিন্তু অনেস্টলি বলছি মেয়েটাকে এতদিন অনেক কষ্ট দিয়েছি,ওর প্রাপ্য অধিকার থেকে বঞ্চিত করেছি কিন্তু আর না,এবারে ওকে সব ফিরিয়ে দিব।ভালোবাসতে পারি আর না পারি বাট ওকে ওর প্রাপ্য মর্যাদা দিয়ে আমার করে নিব
মারুফঃ ওতো তোর আছেই,নতুন করে আবার পাওয়ার কি আছে
সায়নঃ তুই ঠিক বুঝতে পারছিস না…
মারুফঃ আমি সব বুঝতে পারছি,এখন বল আমাকে কি করতে হবে
সায়নঃ আপাততঃ তেমন কিছুই করার নেই,যখন দরকার হবে তখন বলব
মারুফঃ ওকে…
সায়নঃ আর হ্যাঁ কথাগুলো আর কাউকে বলার দরকার নেই,সময় হলে আমি নিজেই সবাইকে জানিয়ে দিব
মারুফঃ আর রিয়া?ওর কি করবি?ওর ব্যবস্থা কিন্তু তোকেই করতে হবে আর সেটা যত তাড়াতাড়ি করবি ততই ভাল…
সায়নঃ হুম…

বাড়ির পেছনের পুকুরপাড়ে ওর প্রিয় জায়গাটাতে বসে আছে ছোঁয়া।একা একা পদ্মফুল দুটোর সাথে কথা বলছে কিন্তু কেন জানি আজকে একটু অন্যরকম লাগিছে।অন্যদিনের মত অতটা ভাল লাগছে না,কিছু একটা মিসিং মিসিং লাগছে।
ছোঁয়াঃ আচ্ছা আমি কি উনাকে মিস করছি?নাহ মিস কেন করব,উনিতো কখনোই আমাদের সাথে থাকেননি সো মিস করার প্রশ্নই আসে না।তবে কি…হুম বুঝেছি আসলে এবারে অনেকদিন এখানে ছিলেনতো তাই…যাই হোক লোকটাকে যতটা খারাপ মনে করেছিলাম,আসলে কিন্তু ততটাও খারাপ না।শুধু একটু বেশিই রগচটা,মা-বাবার সাথে কথা বলার সময় খেয়ালই থাকে না কাদের সাথে কথা বলছে।আচ্ছা উনি এমন কেন?ভালোই হয়েছে তাড়াতাড়ি চলে গেছে,নাহলে আমার মাথাটাই শেষ করে দিত।সামনে এডমিশন টেস্ট আর আমি..সারাদিন শুধু উনার সাথে ঘুরে বেড়িয়েছি!এভাবে চলতে থাকলে আমাকে আর কোত্থাও চান্স পাওয়া লাগতো না,তখন এই বেটাই আবার আমাকে সবচেয়ে বেশি খোটা দিত।চলে গেছে এখন শান্তি,ছোঁয়া বেবি অনেক হয়েছে আর না,এবার কোমড় বেঁধে লেগে পড়ো,আর বেশি সময় নেই সো এখন শুধু পড়া আর পড়া….

(পরদিন বিকালে)
সায়ন আর মারুফ সেন্ট্রাল ক্যাফেটেরিয়ার সামনের বটতলায় বসে আছে।ছুটির পরে এই প্রথম সবাই একসাথে বসবে বলে ঠিক করেছে।আজকে একটা ছোটখাট মিটিং হবে যাতে ক্লাবের পরবর্তী কর্মসূচি সম্পর্কে সবাইকে অবহিত করা হবে আর তাছাড়া এত লম্বা একটা ছুটি শেষে সবার সাথে সবার দেখা সাক্ষাৎ হবে তাই এটাকে একটা ছোটখাট গেট টুগেদারও বলা যায়।যাই হোক কিছুক্ষণের মধ্যেই সবাই আসতে শুরু করলো,সবাই সবার সাথে কুশল বিনিময় করছে।সায়নের সেদিকে খেয়াল নেই,ও গাছের সাথে হেলান দিয়ে বসে আকাশের দিকে তাকিয়ে এক মনে কি যেন ভাবছে।তানি,রাকিব,দীপু,আসিফ একে একে সবাই চলে এসেছে কিন্তু এসে সায়নের সাথে কোন কথায় বলেনি,যে যার মত নিজ নিজ সিটে বসে পড়েছে।রিয়াকে নিয়ে ওদের মধ্যে যে ভুল বোঝাবুঝি হয়েছিল তা এখনও ঠিক হয়নি তাই সবাই সবার থেকে বেশ দূরত্ব বজায় রেখে চলছে।
মিটিং শুরু হয়েছে কিছুক্ষণ আগে,সায়ন বেশি কিছু বলেনি।টুকটাক কিছু কথা বলেই চিন্তার জগতে হারিয়ে গেছে।অবস্থা বেগতিক দেখে মারুফ নিজেই সবকিছুর দ্বায়িত্ব নিজের কাঁধে তুলে নিয়েছে।ব্যাপারটা আর কেউ সেভাবে খেয়াল না করলেও রাকিব,দীপু আর আসিফের কিন্তু ঠিকই খটকা লেগেছে কিন্তু কেউ কাউকে কিছুই বলেনি,কিছুই হয়নি এমন একটা ভাব নিয়ে বসে আছে।
মিটিং প্রায় শেষের পথে,তখনই কোথা থেকে রিয়া ছুটতে ছুটতে চলে আসলো,এসেই কারো দিকে না তাকিয়ে সায়নের হাত ধরে টানতে টানতে ওকে ওখান থেকে নিয়ে আসলো।সোজা ওদের ক্লাব হাউজে নিয়ে আসলো,সায়ন এতক্ষণ কিছু না বললেও এবার আর চুপ করে থাকতে পারলো না,এক ঝটকায় রিয়ার থেকে হাতটা ছাড়িয়ে নিল।রিয়া অবাক হয়ে ওর দিকে তাকিয়ে আছে..
সায়নঃ What is this Riya?ওখানে একটা গুরুত্বপূর্ণ মিটিং হচ্ছিল,সবার সামনে থেকে আমাকে এভাবে নিয়ে আসার মানে কি?
রিয়াঃ তার আগে তুমি বল এসবের মানে কি?
সায়নঃ কিসবের মানে?

রিয়াঃ তুমি বাসায় গিয়ে পর্যন্ত না আমাকে একটাবার ফোন দিয়েছো,না আমার কোন কল রিসিভ করেছো আর তাছাড়া আমি খবর পেয়েছি তুমি ফিরেছো বেশ কয়েকদিন হল অথচ মারুফ আমাকে কন্টিনিউয়াসলি মিথ্যে বলে যাচ্ছে যে তুমি এখনও বাসায়।এসবের মানে কি?তুমি কি ওকে কিছুই বলবে না?আমি কিন্তু ওই ছেলেকে এত ইজিলি ছেড়ে দিব না,এখন তুমি কি করবে দেখো
সায়নঃ হুম দেখছি কি করা যায়।মারুফকে ফোন দিলাম,একবার রিং হতেই রিসিভ করলো
মারুফঃ আগে থেকেই রেডি ছিলাম,জানতাম সায়ন ফোন দিবে।হ্যাঁ বল…
সায়নঃ আই নিড ইয়োর হেল্প,ক্লাব হাউজে চলে আয় কুইক…
মারুফঃ হ্যাঁ আসছি,ক্লাব হাউজের দিকে দৌঁড় দিলাম
রিয়াঃ মারুফকে ডাকলে?তুমি কিন্তু ওকে উচিত শাস্তি দেবে
মারুফঃ ভেতরে আসবো?
সায়নঃ ওহ মারুফ,আয়…
মারুফঃ হ্যাঁ বল কি করতে হবে
সায়নঃ ডু মি এ ফেভার,রিয়াকে এখান থেকে বাইরে নিয়ে যা কুইক…
চলবে…
#নোটঃ এই সায়নটা আসলেই একটা গাধা,আমরা সবাই যেখানে বুঝতে পারছি যে ও ছোঁয়ার প্রেমে রীতিমত হাবুডুবু খাচ্ছে সেখানে ওই বেটা কিছুই বুঝতে পারছে না!ডিয়ার রিডার্স নো টেনশন ছোঁয়াকে ওই বদমাশটা যত কষ্ট দিয়েছে তারজন্য এখন ওকে শাস্তি পেতেই হবে,ওকে বাঁদরনাচ না নাচিয়ে আর ছাড়ছি না…