Childhood marriage

Childhood marriage 2 ! Part- 08

মাঃ কোন মেয়েটা?
সায়নঃ একটু আগে যেই মেয়েটা…
মাঃ তুই কি ছোঁয়ার কথা বলছিস?
সায়নঃ (চমকে উঠে)ছোঁয়া!!!মা..ম..মানে?
মাঃ কেন তুই ওকে চিনতে পারিস নি?
সায়নঃ না মানে আমি আ..সলে..
মাঃ অবশ্য চিনবিই বা কি করে,সেই ছয় বছর আগে দেখেছিস!তখনতো ও অনেক ছোট…
সায়নঃ মাতো ঠিকই বলেছে ছয় বছর আগে…দেখেছি বললেও ভুল হবে,ওর দিকে কখনও ঠিক করে তাকিয়ে দেখেছি কিনা সেটা নিয়েও আমার কনফিউশন আছে(মনে মনে)

(এদিকে কলেজে)
ছোঁয়া পড়ে এলাকারই একটা গার্লস কলেজে,একটু চঞ্চল প্রকৃতির আর মিশুক হওয়ায় মুহূর্তেই সবার সাথে মিশে যেতে পারে।বন্ধুর তালিকাটাও বেশ বড় তবে সবচেয়ে ঘনিষ্ঠ বান্ধবীর নাম লোপা,ওর বাড়িটা সায়নদের বাড়ির কয়েক বাড়ি পরেই।
যাই হোক আজ সকালে ওদের নেক্সট প্রেজেন্টেশন নিয়ে একটা ডিসকাশন ছিল তাই বেশ সকাল সকালই বাড়ি থেকে বেরিয়ে পড়েছিল।কিন্তু তাড়াহুড়ো করতে গিয়ে ভুলেই গিয়েছিল যে আজকে হাসনাত স্যারের ক্লাস আছে।
হাসনাত স্যার হচ্ছে ওদের সবার ত্রাস,নিজে সবসময় নিয়ন মেনে চলে আর কেউ যদি একটুও অনিয়ম করে তাহলে তার খবর আছে।একেবারে চৌদ্দ গুষ্ঠী উদ্ধার করে দেবে,স্টুডেন্টদের উপর কিভাবে টর্চার করা যায় তার উপর মনে হয় তিনি পিএইচডি করে এসেছেন!টর্চার করার জন্য রোজ রোজ নতুন নতুন পদ্ধতি আবিষ্কার করেন।
সেই হাসনাত স্যারের হোমওয়ার্ক আনতে ছোঁয়া আজকে ভুলে গেছে!স্যার যদি জানতে পারে তাহলে কাঁচাই চিবিয়ে খেয়ে ফেলবে,ক্লাসে ঢুকতেই দেবে না।তাইতো ছুটতে ছুটতে বাড়ি চলে গিয়েছিল কিন্তু…
শেষ রক্ষা আর হল না,ও যখন কলেজে ফিরল,স্যার তখন অলরেডি ক্লাসে ঢুকে গেছেন।তো ছোঁয়া ভেবেছিল পেছন দরজা দিয়ে চুপটি করে ঢুকে পড়বে কিন্তু
কপাল খারাপ হলে যা হয় আর কি…
স্যারের চোখ এড়াতে পারল না আর দেখার সাথে সাথেই ওকে ক্লাসের বাইরে এক পায়ে দাঁড়িয়ে থাকার পানিশমেন্ট করে বসল।সেই থেকে ছোঁয়া রুমের বাইরেই দাঁড়িয়ে আছে,দেড় ঘন্টার ক্লাস এখনও অর্ধেক ক্লাসই হয়নি…
ছোঁয়াঃ এখনও ক্লাস শেষ হচ্ছে না কেন?হায় হায় এখনও আধা ঘণ্টা!ঘড়িটা কি নষ্ট হয়ে গেল নাকি?ছোঁয়া…আবতো তু গেয়ি…সব হয়েছে ওই বেয়াদব লোকটার জন্য।বেটা বজ্জাত আজকেই তোকে আমার সামনে আসতে হল?আর এসেই আমার সাথে ঝামেলা করতে হবে!সরি বলানোর জন্যে আটকে না রাখলে হয়তো…আর ছোঁয়া,তুইও না..কি দরকার ছিল শুধু শুধু ঝামেলা করার?চুপচাপ সরি বলে চলে আসলেইতো পারতি,তাহলেতো আর এভাবে এক পায়ে দাঁড়িয়ে থাকতে হত না।আর দুই মিনিট আগে আসলেইতো চুপচাপ রুমে ঢুকে যেতাম…
ও মা…আরতো দাঁড়িয়ে থাকতে পারিনা,পা ব্যথা করছেতো…আর কতক্ষণ যে ক্লাস হবে কে জানে…ঐ খাটাশ লোকটাকে যদি আর একবার সামনে পেতাম না…নাহ আর পারছি না,আর বেশিক্ষণ এভাবে থাকলে যে আমি এক পায়ে খোড়া হয়ে যাব!এখন আমার কি হবে গো…কে আছো..আমাকে এই জল্লাদের হাত থেকে বাঁচাও
(ছোঁয়া নিজের মনে বক বক করতে করতে খেয়ালই করেনি যে ক্লাস শেষ হয়ে গেছে আর স্যার বাইরে চলে এসেছে আর ওর দিকে রাগে কটমট করে তাকিয়ে আছে।ও খেয়াল করেনি দেখে স্যার অলরেডি ডাস্টার দিয়ে দেয়ালে বেশ কয়েকবার আঘাত করে ফেলেছে)
স্যারঃ (হুংকার দিয়ে)ছোঁয়া…
ছোঁয়াঃ (চমকে উঠে)জ্বি..স্যার…
(স্যার ওর দিকে একবার কটমট করে তাকালেন,তারপর ওকে ক্লাসরুমে যাওয়ার ইশারা করেই হনহন করে চলে গেলেন)
ছোঁয়াঃ সর্বনাশ!সব মনে হয় শুনে ফেলেছে।ছোঁয়া তুইও না,মনে মনে কিছু ভাবলে মনে মনেই কথা বলা উচিত এই কথাটাও জানিস না?তুই কি গাধা?কি দরকার ছিল এত জোরে জোরে বকবক করার?
(বকবক করতে করতেই নিজের সিটে চলে আসলো ছোঁয়া,বসতে যাবে তখনই লোপা বলে উঠল)
লোপাঃ তুই আবার একা একা বকবক করছিস!আচ্ছা তুই কি পাগল?
ছোঁয়াঃ ওই ছুড়ি তুই আবার আমাকে পাগল বলছিস!
লোপাঃ তো কি করব?একা একা কারা কথা বলে জানিস?পাগলরা…
ছোঁয়াঃ আমি মোটেও পাগল না,আমি একদম ঠিক আছি
লোপাঃ কখনও শুনেছিস,কোন পাগল নিজেকে পাগল বলে স্বীকার করেছে?
ছোঁয়াঃ লোপার বাচ্চা..তোরেতো আমি…
লোপাঃ আগে আমারে ধর,তারপর যা ইচ্ছা করিস
ছোঁয়াঃ একবার খালি সামনে পাই তারপর বুঝবি পাগলামি কাকে বলে…
লোপাঃ আচ্ছা বাবা সরি,আর বলব না।এবার কি আমার একটা কথার জবাব দিবি?

ছোঁয়াঃ কি?
লোপাঃ কাহিনী কি বলতো?
ছোঁয়াঃ কিসের কাহিনী?
লোপাঃ ক্লাসে আসতে দেরি হল কেন বল,তুইতো টাইমলিই বেরিয়ে গিয়েছিলি তাহলে…
ছোঁয়াঃ সব হয়েছে ওই শয়তানটার জন্যে
লোপাঃ কোন শয়তান?
ছোঁয়াঃ তোর সাথে যার ঝামেলা লাগে সেইতো হয় শয়তান নাহয় বেয়াদব,আচ্ছা তুই কি ঝামেলা করার জন্যে কখনও কোন মানুষ খুঁজে পাস না?যাই হোক,এখন বল কি করেছে এই নতুন শয়তানটা?
ছোঁয়াঃ কি করেনি তাই বল আজকে ওই লোকের সাথে না…এই এক মিনিট এক মিনিট,তুই কি আমার সাথে ফাযলামি করছিস?মজা নিচ্ছিস?
লোপাঃ এই না না,মজা কেন নিব?I am serious,এখন বলতো কাহিনী কি…
ছোঁয়াঃ শুরু থেকে সব ঘটনা খুলে বললাম,সব শুনে দেখি ফাযিলটা দাঁত বের করে হাসছে!লোপা…
লোপাঃ অনেক কষ্টে হাসি থামালাম।হুম বল…
ছোঁয়াঃ ওই তুই হাসছিলি কেন?আমি কি ফাযলামি করছি নাকি?কত্ত সিরিয়াস একটা ব্যাপার আর তুই…
লোপাঃ বুঝছিতো অন..নে..ক সিরিয়াস ম্যাটার।বলেই আবারও হাসতে লাগলাম
ছোঁয়াঃ তবে রে…পালাচ্ছিস কোথায়?এবার আর তোকে ছাড়ছি না…

(সায়নের বাড়িতে)
মাঃ খা বাবা,ভাল করে খা।ইশ রে,না খেয়ে খেয়ে আমার ছেলেটা দেখছি এক্কেবারে শুকিয়ে গেছে!
সায়নঃ উফ মা আর কত খাওয়াবে?আর পারছি না তো,তুমি দেখি দুইদিনেই আমাকে মোটকু বানিয়ে ফেলবে!
মাঃ চুপ করতো,তোর মত বয়সে তোর বাবা কত খেতো জানিস?কই তাতেতো তোর বাবা মোটা হয় নাই,এখনও কত ইয়াং আর স্ট্রং দেখিস না?আর তোরা এই যুগের পোলাপান খেতেই চাস না!

সায়নঃ ওসব তুমি বুঝবে না মা,এটাই এখনকার ট্রেন্ড।স্লিম বডি আর সিক্স প্যাক এ্যাবস ও তুমি বুঝবে না
মাঃ খুব বুঝতে পারছি,এখন চুপ করে বোস,আমি তোকে খাইয়ে দেই।ছোটবেলায় আমার হাতে না খেলে তোর খাওয়াই হত না,আজ এতবছর পর…
(মা ফুঁপিয়ে ফুঁপিয়ে কাঁদতে লাগলো)
সায়নঃ উফ!মা…তুমি আবার শুরু করলে!সমস্যা কি তোমার?
মাঃ বুঝবি বাবা,যখন নিজে সন্তানের বাবা হবি তখন বুঝবি।এখন চুপচাপ খা তো
সায়নঃ উফ মা…
মাঃ চুপ,একদম চুপ।মুখ খোল
সায়নঃ আচ্ছা মা,ও কি সত্যিই ছোঁয়া?
মাঃ তা নয়তো কি,আমি কি তোকে মিথ্যে বলছি?
সায়নঃ না মানে আসলে তা না…
মাঃ শোন কথা পরেও বলতে পারবি,আগে খাওয়া শেষ কর…
সায়নঃ মা…দূর ছাই,আর ভাল্লাগে না।মা তুমি যাওতো,কখন থেকে শুধু খাইয়েই যাচ্ছে!আরে আমি কি মানুষ নাকি রাক্ষস?
মাঃ আচ্ছা ঠিক আছে,তুই তাহলে রুমে গিয়ে একটু রেস্ট কর
সায়নঃ Thank god…
নিজের রুমে চলে আসলো সায়ন,সবকিছুই কেমন যেন অন্যরকম লাগছে।ঘরটা ঠিকই আছে তবে তার ডেকোরেশন টোটালি চেঞ্জ হয়ে গেছে,ছয় বছর আগের সাথে কোন মিলই নেই,দেখে মনে হবে যেন এটা অন্য কোন রুম।রুমটাকে ঘিরে কত পুরনো স্মৃতি লুকিয়ে আছে মনের কোণে,উত্তরের জানালা আর পুকুরপাড়ের কথা মনে পড়তেই ছুটে গিয়ে জানালাটা খুলে দিল।ওর সবচেয়ে প্রিয় জায়গা ছিল এটা,বৃষ্টির দিনে এই জানালায় দাড়িয়ে কতদিন যে পুকুরের দিকে তাকিয়ে থেকেছে তার হিসেব নেই।
এমন হাজারো স্মৃতির ভেলায় ভাসতে ভাসতে কখন যে ঘুমের কোনে ঢলে পড়ল হয়তো সায়ন নিজেও বুঝতে পারলো না…

ছোঁয়া যখন বাসায় ফিরল তখন বিকেল পেরিয়ে গেছে,কোন রকমে ফ্রেশ হয়ে হালকা কিছু নাশতা করেই নিজের রুমের দিকে চলে গেল।সন্ধ্যা প্রায় নেমেই এসেছে,পুরো রুম তাই তখন বেশ অন্ধকার হয়ে আছে
ছোঁয়াঃ উফ!যা একটা দিন গেল না!আজকে আমার দিনটাই খারাপ ছিল,সকাল থেকে যার সাথেই দেখা হচ্ছে সেই হয় ঝামেলা করছে নাহয় ঝাড়ি দিচ্ছে!প্রবলেম কি এদের?যাই হোক দিনটাতো শেষ হল আর চিন্তা নেই।কি আশ্চর্য!পুরো রুমতো অন্ধকার হয়ে আছে,লাইট কি জ্বালাবো?না বাবা আর লাইট জ্বালিয়ে কাজ নেই,এমনিতেই অনেক টায়ার্ড আর ঘুমও পাচ্ছে প্রচুর।এক কাজ করি চুপচাপ ঘুমিয়ে পড়ি…
(ছোঁয়া শুয়ে পড়তেই বুঝতে পারলো বিছানায় কেউ আগে থেকেই শুয়ে আছে!বিকট একটা চিৎকার দিয়েই বিছানায় উঠে বসলো তারপর বেডের পাশেই রাখা টেবিল ল্যাম্পটার স্যুইচ চেপে দিল।আলো জ্বলে উঠতেইতো ওর চোখ কপালে উঠে গেল)
ছোঁয়াঃ আ..আপনি!মা…বাবা…তোমরা কে কোথায় আছো?চোর…চো…
(ছোঁয়া আর কিছুই বলতে পারল না কারণ ততক্ষণে সায়ন ওর মুখ চেপে ধরেছে)
সায়নঃ শসসস…চুপ একদম চুপ

ছোঁয়াঃ হে আল্লাহ এ কোন বিপদে ফেললা?এই লোক আবার আমাকে…না না এ কিছুতেই হতে পারে না।নিজেকে ছাড়ানোর জন্য প্রাণপণে হাত-পা ছূড়তে লাগলাম
সায়নঃ এই মেয়ে,কি সমস্যা?একটু সময়ও কি চুপ করে থাকতে পারো না?আর একবার নড়াচড়া করলে না…
(তখনই সায়নের মায়ের গলা শোনা গেল)
ছোঁয়াঃ বেটা খাটাশ,এইবার কি করবি?মা চলে এসেছে,এবারতো আমাকে ছাড়তেই হবে…
সায়নঃ মায়ের কণ্ঠ শুনে হাতটা যে কখন একটু আলগা করে ফেলেছি বুঝতেই পারিনি
ছোঁয়াঃ সুযোগ বুঝে দিলাম বেটার হাতে আচ্ছা মত একটা কামড় বসিয়ে
সায়নঃ আউচ!ওহ গড এইটা মেয়ে নাকি রাক্ষসী?একেবারে রক্ত বের করে দিল!
ছোঁয়াঃ লোকটা এখন হাত নিয়ে ব্যস্ত,আমার দিকে কোন খেয়ালই নেই।এই সুযোগ,দিলাম ভোঁ দৌঁড়
সায়নঃ কয়েক সেকেন্ডের জন্যে একটু অন্যমনস্ক হয়েছি আর ম্যাডাম এই সুযোগে পালিয়েছে!হাজার চেষ্টা করেও আটকাতে পারলাম না,এই মেয়েতো দেখছি আমার ইজ্জতের ফালুদা বানিয়ে ছাড়বে…
ছোঁয়াঃ বাইরে এসেই দেখলাম মা আর দাদী এদিকেই আসছে।ছুটে গিয়ে মাকে জড়িয়ে ধরেই হাঁপাতে লাগলাম
মাঃ (অবাক হয়ে)ছোঁয়া!কি হয়েছে মা?এমন করছিস কেন?
ছোঁয়াঃ মা আমার ঘরে…ঐ..ঐ…
(কথা শেষ না করেই ছোঁয়া জ্ঞান হারিয়ে ফেলল)
মাঃ ছোঁয়া..কি হয়েছে মা?কথা বল…ও মা,কি হল বলেনতো কিছুইতো বুঝতে পারছি না
দাদীঃ আমিওতো কিছুই বুঝতে পারছি না
মাঃ খোকা…একবার এদিকে আয়তো…ছোঁয়া..চোখ খোল মা…
দাদীঃ দাদুভাই…
সায়নঃ হঠাৎই বাইরে মা আর দাদীর চিৎকার শুনতে পেলাম।সঙ্গে সঙ্গেই রুমের বাইরে দৌঁড় দিলাম।কি হয়েছে মা?ডাকছো কেন?
দাদীঃ দেখ না দাদুভাই,ছোঁয়া…
মাঃ হঠাৎ করে কি হল মেয়েটার?দেখ না বাবা ও কোন কথা বলছে না কেন?আমার কিন্তু খুব ভয় করছে…
সায়নঃ মা,দাদী please don’t panic মানে চিন্তা কোর না,আমি দেখছি ব্যাপারটা।ছোঁয়াকে কোলে তুলে নিলাম তারপর ছুটলাম রুমের দিকে,মা আর দাদীও আমার পিছু পিছু ছুটলেন।
দাদীঃ সাবধানে দাদুভাই
সায়নঃ ছোঁয়াকে আস্তে করে বিছানায় শুইয়ে দিলাম।ফুলি…ফুলি…
(ফুলি দৌঁড়ে আসলো)
ফুলিঃ জ্বি ভাইজান?ও আল্লাহ আপার আবার কি হইল?চাচীজান,দাদী আপনেরা কিছু কন না কেন?
সায়নঃ আরে বক বক না করে তাড়াতাড়ি পানি নিয়ে আসো
ফুলিঃ জ্বি আনতাছি
মাঃ ও মা,কি হল মেয়েটার বলেনতো?যেই মেয়ে সবসময় ছোটাছুটি করে সে আজকে এরকম চুপ…
সায়নঃ উফ!মা..আবার শুরু করলে!বললামতো তেমন কিছুই হয়নি,তারপরও যদি তোমার বিশ্বাস না হয় তাহলে ডক্টর ডাকি?
মাঃ তোকে ডাকতে হবে না,আমি রহিমকে আগেই বলে দিয়েছিলাম
সায়নঃ ওহ
ফুলিঃ এই যে ভাইজান,পানি
সায়নঃ ফুলির হাত থেকে পানি নিয়ে ছোঁয়ার চোখে মুখে ছিটিয়ে দিলাম,মেয়েটা দেখলাম একটু নড়ে উঠল।তারপর একবার চোখ মেলে তাকিয়েই আবার বন্ধ করে ফেলল
মাঃ আবার কি হল?ছোঁয়া…চোখ খোল মা…
সায়নঃ উফ মা…তুমি থামবে?আমি কিন্তু আর নিতে পারছি না,জাস্ট রিল্যাক্স ডক্টর আঙ্কেল এক্ষুণি চলে আসবেন
(তখনই রহিম ডক্টরকে নিয়ে রুমে ঢুকল)
রহিমঃ চাচী,ডাক্তারসাব আইসা পড়ছে,আপনে আর কোন চিন্তা কইরেন না
(কিছুক্ষণ পর)
সায়নঃ কি বুঝলেন ডক্টর?
ডক্টরঃ চিন্তার কোন কারণ নেই,She is absolutely fine
মাঃ তাহলে এমন কেন হল?
ডক্টরঃ ও মনে হয় সকাল থেকে কিছুই খায়নি
মাঃ হ্যাঁ সকালে নাস্তা না করেই বেরিয়ে গিয়েছিল,বলেছিল ক্যান্টিন থেকে খেয়ে নেবে।খেয়েছে কিনা তাতো জানা হয়নি,তবে কিছুক্ষণ আগে হালকা কিছু নাস্তা করেছে
ডক্টরঃ আমি যা বুঝছি,সারাদিনে তেমন কিছুই খায়নি আর অতিরিক্ত স্ট্রেসেই মনে হয়…
সায়নঃ তোমরাতো আর আসল সত্যিটা জানোনা,ওর মেইন স্ট্রেসতো আমাকে নিয়ে,আমাকে দেখে যে শকটা পেয়েছে তাতেই….(মনে মনে)
ডক্টরঃ যাই হোক,আমি আপাতত স্যালাইন আর এই ইনজেকশনটা দিয়ে যাচ্ছি।আর ঘুম ভাঙ্গলে কিছু খাইয়ে এই ঔষধটা খাইয়ে দিও তাহলেই আশা করি ঠিক হয়ে যাবে
সায়নঃ ওকে ডক্টর

(রাতে)
মহসিন সাহেব বাড়ি ফিরেছেন কিছুক্ষণ আগে,ফিরেই ছোঁয়ার অবস্থা দেখে বেশ রেগে গেছেন।বাকি সবার মত ব্যাপারটাকে তিনি মোটেও স্বাভাবিকভাবে নেননি।
বাবাঃ সায়ন,একবার আমার রুমে এসো
মাঃ ওকে কেন ডাকছো?ওতো কিছুই করেনি।আমি বলছি এসবে ওর কোন হাত নেই
বাবাঃ আছে কি নেই সেটা আমি বুঝব।সায়ন…
সায়নঃ জ্বি বাবা আসছি
(সায়ন মহসিন সাহেবের পিছু পিছু উনার ঘরে ঢুকল)
বাবাঃ অন্য কেউ না বুঝলেও আমি কিন্তু ঠিকই বুঝেছি এসবে তোমার কিছুটা হলেও হাত আছে
সায়নঃ না বাবা আমি আসলে…
বাবাঃ সে যাই হোক যা হওয়ার হয়ে গেছে,ওটা নিয়ে আর কথা বাড়াতে চাই না কিন্তু পরবর্তীতে যেন আর এমন কিছু না হয়
সায়নঃ হুম
বাবাঃ আচ্ছা এখন তুমি আসতে পারো
সায়নঃ বাবার কথা শুনে বাইরের দিকে পা বাড়ালাম
বাবাঃ আশা করি ছয় বছর আগে যেই ছেলেমানুষিটা করেছিলে এবার আর তেমন কিছু করবে না…
সায়নঃ কিছুই বলতে পারলাম না,মাথা নিচু করে বেরিয়ে আসলাম

(কিছুক্ষণ পর)
সায়ন বালিশে হেলান দিয়ে ল্যাপটপে কাজ করছে,ছোঁয়ার ঘুম এখনও ভাঙ্গেনি।ওকে এখন সায়নের রুমেই রাখা হয়েছে,সায়নের পাশেই নিশ্চিন্তে ঘুমাচ্ছে মেয়েটা।সায়ন একটু পর পর এর দিকে তাকাচ্ছে আর নিজের অজান্তেই মুচকি করে হাসছে
সায়নঃ কে বলবে এই মেয়ে এই রকম দূরন্ত!ঘুমিয়ে থাকলেতো একেবারে পুতুলের মত লাগে আর জেগে থাকলে?একেবারে ঝাঁসি কি রাণী…(মনে মনে)
(হঠাৎ ছোঁয়া একটু নড়ে উঠল তারপর পিটপিট করে চোখ মেলে তাকালো)
ছোঁয়াঃ আ..আমি কোথায়?
(হঠাৎ সায়নের দিকে চোখ পড়তেই চমকে উঠল ছোঁয়া তারপর একরকম লাফ দিয়ে বিছানায় উঠে বসলো)
ছোঁয়াঃ আ..আপনি!!!
চলবে…