বজ্জাত বস রোমান্টিক হাজবেন্ড

বজ্জাত বস রোমান্টিক হাজবেন্ড !! Season -4 !! Part- 56

আবির তিথির ধমক শুনেই মুচকি হাসি দেয়,,ধমকে যেন আবিরের জন্য ভালোবাসা কেয়ারিং সব মিশ্রিত,আবির তিথির দিকে তাকিয়ে থাকে তিথি আবিরকে বকছে আর ওষুধ লাগাচ্ছে,,তার চোখ বেয়ে শুধু পানি গডিয়ে পড়ছে আবিরের হাত এমন দেখে,,আবিরের একটুও ব্যাথা লাগছে না মনে হচ্ছে তার হাতের সব ব্যাথা তিথির ছোঁয়ায় চলে গেছে,,
আবিরঃ আমি সত্যি ঠিক আছি তিথি জাস্ট সামান্য এইটা,,,চিন্তা করিও না তো
তিথিঃ চুপ থাকেন একদম আপনি…আমি জানি আপনি কেমন আছেন দেখছি(প্রচুর রেগে গিয়ে)আবার বলেও চিন্তা না করতাম হু,,,ইশ কত টুকু ছিলে গেছে আর উনি বলে কি না,।
আবির মুচকি হেসে দেয় তিথির ধমক শুনে৷ তিথি তার নাক টেনে টেনে বলছে
তিথিঃ কে বলেছে আসতে এইভাবে হুম,,, কত টুকু ব্যাথা পেয়েছেন,,,
আবিরঃআমি ঠিক আছি পাগলি,, আর কি করবো বলো আমার বউকে একটু দেখার জন্য তো আসতেই হবে,,,মন যে মানছে না তোমাকে না দেখে তাই
তিথিঃ হইছে আর ঢং করতে হবে না,,,
আবিরঃ তোমাকে সত্যি দেখতে ইচ্ছে করছে তাই,,তুমি বললে চলে যাই(কিছু টা অভিমানের সুরে)
তিথিঃ হু হইছে আর নাটক করতে হবে না হু,,,এসে যখন গেছেন আর যেতে ও হবে না,,,
আবির হেসে উঠে জানে তার পাগলীটা এমন,,,
তিথিঃ এতো দেখতে ইচ্ছে করলে কাল ও আসতেন,,(কিছু টা রাগী ভাব নিয়ে)
আবিরঃ কে বলেছে আমি কাল আসি নাই হুম??
তিথিঃ মানে?
আবিরঃ মানে কাল এসেছিলাম আমি,,আপনি বাচ্চাদের মত নাক ডেকে ডেকে ঘুম আর রুমের যে হাল করে রেখেছে বাচ্চাদের মত তা দেখে তো মাথা ঘুরাইছে আবার ভেবেছি কান্না করতেছো কিন্তু এসে দেখি কার্টুন দেখতে দেখতে ঘুম রুম এইভাবে নোংরা করে,,,তারপর আর কি ক্লিন করলাম দেন অনেক ক্ষন ছিলাম আপনার কাছে সকালের আজানের সাথে সাথে চলে গেছিলাম,,,
তিথি হা করে তাকিয়ে আছে এইজন্য যে এতো কিছু হলো সে জানে ও না,,,
তিথিঃ হেএ(আবিরের দিকে তাকিয়ে)
আবিরঃ হুম,,,আর আপনি টের ও পান নাই যে আমি আসছি,,,
তিথিঃ হু
তিথি হাতে ওষুধ পুরো লাগিয়ে বলে
তিথিঃ আমার জন্য কেন এতো কষ্ট তুলছেন?আমার জন্য মাঝ রাতে গাছ বেয়ে আমার রুমে আসতেছেন হাতে ব্যাথা পেয়ে ও,,,,
আবিরঃ মানে?
তিথিঃ এই যে আমাকে দেখার জন্য এতো কষ্ট করে আসছেন,,,জানেন এইসব তো মানুষ তখনই করে যখন সে কাউকে মন থেকে অনেক বেশি ভালোবাসে আর আপনি তো সবাই কে বলেই বেড়ান যে আপনার মনে আমার জন্য কিছু নাই,,,
আবিরঃ বড্ড বেশি বলে ফেলছো,,,
তিথিঃ মানে?
আবিরঃ কিছু না,,এখন কি খাইয়ে দিবে?
তিথি হাতটা ধুয়ে আবিরকে খাইয়ে দিতে লাগে,,,
তিথিঃ বাসায় খান নাই যে?
আবির কিছু টা বিরক্তি ভাব নিয়ে বলে
আবিরঃ অইখানে খাইতে ইচ্ছে করছে না তাই,,,
তিথিঃ মা বা বাড়ির কেউ কিছু জোর করে নাই আপনাকে খেতে?
আবিরঃআমি খাচ্ছি কি না তা দেখার কারো সময় নাই,,এখন তো মায়ের আদরের ভাইয়ের ছেলে এসেছে তাকে যত্ন করতে ব্যস্ত,,
তিথিঃ মানে আপনার মামাতো ভাই?
আবিরঃ না আমার শত্রু,,,
তিথি হেসে উঠে,,,
আবিরঃ হাসলে যে?
তিথিঃ না আপনি যে হিংসা করছেন তাই,,, কাজিন আসছে তার সাথে আড্ডা দিবেন তা না উল্টো রেগে আছেন,৷
আবিরঃ অই ছেলে আমার চোখের শত্রু,,
তিথিঃ কেন কি করেছে সে এমন যে আপনি তাকে পছন্দ করেন না,,,
আবিরঃ ওর কথা বলে আমার মুড আর নষ্ট করতে চাই না,,বাদ দাও,,
তিথি আবিরকে খাইয়ে দিয়ে বলে
তিথিঃ আপনি বসেন আমি প্লেটটা রেখে আসি,,
আবিরঃ কফি আনতে পারবে?
তিথিঃ হু আনতেছি,,,
তিথি কিচেনে গিয়ে কফি বানাতে থাকে,,,
এইদিকে আবির তিথির রুম ভালো করে দেখে,,,বালিশের পাশে একটা ডাইরি পায় ডাইরীর উপরে বড় করে লেখা আছে তিথি,,,বুজতে পারে তিথির ডাইরি প্রথম পেইজ খুলতেই লেখা তিথির স্বপ্ন,,
,,,,,,,,,,,ডাইরিতে,,,,,,,,,,,,,
বিয়ে করা,,সংসার করা,,অনেক গুলো বাচ্চার মা হওয়া,,,বাচ্চাদের বিয়ে দিয়ে নাতনিদের সাথে হানিমুনে যাওয়া,,,তারপর জমিয়ে প্রেম করা বুড়ো বয়সে,,,
লেখা গুলো দেখেই আবির হেসে উঠে,,,
আবিরঃ সিরিয়াসলি কেউ এইসব স্বপ্ন দেখে আবার ডাইরিতে ও লেখে আল্লাহ সত্যি আমার বউটা এলিয়েন,,,
আর এক পেইজ খুলেই চুপ করে যায়,,
,,,,অনেক ইচ্ছে আমার হাজবেন্ড যে হবে সে আমাকে অনেক ভালোবাসবে,আমার কেয়ার করবে,,সব সময় ঘুরতে নিয়ে যাবে,আমার সব স্বপ্ন পূরন করবে,,সব সময় আমাকে বুকে আগলে রাখবে,,আমার প্রতি তার ভালোবাসা কখনো কমবে না,,,সব সময় আমার পাশে থাকবে সার্পোট করবে সব পরিস্থিতিতে,,,
মুচকি হেসে অন্য পেইজ উল্টোই ওমা সে কি আবিরের ব্যাপারে লেখা,,,,
,,,,,,,মিস্টার বজ্জাত এনাকন্ডা একটা,,,রাগ যেন তার নাকের মধ্যেই থাকে অলটাইম,,বাট তার মনটা অনেক ভালো কেন জানি তাকে ভালো লাগে আমার,,,,,,,
এইরকম অনেক গুলো লেখা আবিরকে নিয়ে,,কিছু কিছু এমন মুহূর্ত লেখা যা দেখে আবিরের বেশ ভালোই লাগে,,,
,,,,,আপনি অনেক খারাপ মিস্টার বজ্জাত আপনার জন্য আমার মনে ফিলিংস আসতে না আসতেই আপনি আমার মন ভেঙ্গে দিলেন,,জোর করে বিয়ে করলেন আবার উল্টো ভুল বুজে আপনাকে আমি শাস্তি দিবো কিন্তু ঘৃনা করতে পারবো না কারণ আপনি অনেক কিউট,,,,
মুখের কোনায় হাসি আটকে যায়,
আবিরঃ পাগলী একটা,,,
উপর পেইজ খুলেতেই চোখ যায়,,,
,,,,,,অনেক ভালোবাসি আমি আপনাকে অনেক,,,ভালোবাসা কি জানতাম না কিন্তু শুধু জানি ভালোবাসা মানে আপনি,,আপনার বুকে মাথা রেখে যে শান্তি পাই তা কোথাও পাই না,,জানি না আপনি কি আমাকে ভালোবাসেন?,,,,
দরজা খুলার আওয়াজ পেয়ে তাড়াতাড়ি ডাইরিটা রেখে দেয় আবির,,তিথি কফি নিয়ে এসে আবিরকে দেয়
তিথিঃ সরি আসতে দেরি হয়ে গেছে,,
আবিরঃ হুম সমস্যা নাই,,,তুমি খাবে না?
তিথিঃ আমি তো শুধু আপনার জন্য বানাইছি,,আর রাতে কফি খেলে আমার ঘুম হবে না,,
আবিরঃ আমার থেকে খাও একটু,,,
তিথিঃ এখন আবার কাফ আনতে যেতে হবে তাহলে
আবিরঃ লাগবে না এক চুমুক তুমি খাবে আরক চুমুক আমি,,,
তিথি হা করে থাকে,,আবির কফিতে এক চুমুক দিয়ে তিথির দিকে এগিয়ে দেয়,,কাফ টা হাতে নিয়েই তার মনে যে কি আনন্দ হচ্ছে,,,কফি কাফে চুমুক দিচ্ছে আর আবিরের দিকে তাকাচ্ছে
আবিরঃ সব শেষ করে দিও না আবার তুমি তো খাওয়া শুরু করলে শেষ কোন দিকে হয় টের এই পাই না,,,,
তিথিঃ হু নেন
আবির তিথি এইভাবে কফি টা খায়,,,কফি খাওয়ার পর আবির তিথির সামনে গিয়ে বসে,,তিথির হাতটি ধরে বলে
আবিরঃ তোমাকে অনেক কষ্ট দিয়েছি আমি তাই না?
তিথিঃ না তো কি বলছেন?(কিছু টা ঘাবড়ে গিয়ে)
আবিরঃ আমি জানি অজান্তেই জানাতেই আমি অনেকটা কষ্ট দিচ্ছি,,,মায়ের রাগ আমার উপর পুরো উচিত আর তুমি আমাকে অই সময় সার্পোট করলে যখন মা আমাকে বকছে,,,

তিথিঃ মা আপনাকে অনেক ভালোবাসে হঠাৎ এমন শুনায় উনি এইভাবে বকেছে৷
আবিরঃ জানি কিন্তু মা তোমাকে ও ভালোবাসে বুজলে,,,
তিথিঃ হুম,,,
আবিরঃ আচ্ছা এখন ঘুমাবে আমার সাথে আমার খুব ঘুম পাচ্ছে
তিথিঃ আপনি কি এখানে ঘুমাবেন???
আবিরঃ হুম কেন?
তিথিঃ কিন্তু কেন?
আবিরঃ তোমাকে ছাড়া রাতে ঘুমাতে পারি না জানো আবার জিজ্ঞেস কেন করছো?
তিথিঃ হু,, মানে ভাবছিলাম গল্প করবো তাই,,
আবিরঃ ওকে কিন্তু আমার বুকে মাথা রেখে যা বলার বলবে,,
আবির শুয়ে পড়ে তিথি বসে আছে এখনও
আবিরঃ কি ব্যাপার আসো,,,
তিথিঃ হুম
তিথি আবিরের বুকে শুয়ে অনেক ক্ষন চুপ থাকে,,
আবিরঃ কি হলো চুপ যে?
তিথিঃ না তো এমনি,,
আবিরঃ আচ্ছা আসো ঘুমাবে,,
তিথি আবার উঠে যায়,,,
আবিরঃ কি হলো উঠে গেলে যে?
তিথিঃ আমার ঘুম পাচ্ছে না আপনি ঘুমান,,,
আবিরঃ বুকে আসো আগে তারপর ঘুমাচ্ছি,,
আবির তিথিকে টেনে বুকে নেয়,,,তিথির মাথায় হাত বুলিয়ে দিচ্ছে আর বলছে
আবিরঃ তিথি
তিথিঃ জ্বি
আবিরঃ তুমি আমার বুকে শুলে অনেক শান্তি পাই,,জানো রাতে এখন ঘুম আসে না তোমাকে বুকে না নিলে জানি না এতো টা টান কিভাবে হলো শুধু জানি তুমি ছাড়া এখন আর কিছু ভাবতে পারি না,,,
তিথি এইদিকে ঘুম,,,আবির যে এতো কিছু বলছে তা খেয়াল নাই,,শুতে না শুতেই ম্যাডাম ঘুমিয়ে যায়,,,
আবিরঃ ভালোবেসে ফেলেছি হয়তো আমিও তোমাকে,,,জানো তিথি তোমার কথা ভাবতে ভালো লাগে তোমার সাথে সময় কাটাতে সব সময় ভালো লাগে,,,
তিথির কোনো উত্তর না পেয়ে আবির তিথিকে ডাকে
আবিরঃ তিথি,,,,
আবির তিথির দিকে তাকিয়ে দেখে ঘুম,,
আবিরঃ পাগলী একটা,,,
আবির ও তিথিকে শক্ত করে জড়িয়ে ধরে ঘুমিয়ে যায়,,,
সকালে,,
তিথির মা দরজা সে কখন থেকে নক করছে তিথি দরজা খুলা তো দূরে থাক আবিরের বুকে ঘুম,,আরো শক্ত করে ধরে ঘুমায়,,আর আবির ও বুজতে পারে নাই এতো বেলা হয়ে গেছে,,,
আবিরের ঘুম ভেঙ্গে যায় চোখ খুলেই দেখে তিথি তার বুকে,,বাহির থেকে তিথির মা দরজা নক করছে আর ডাকছে,,,আবির তাড়াতাড়ি তিথিকে ডাকে,,,
আবিরঃ তিথি এই তিথি তাড়াতাড়ি উঠো,,,
তিথিঃ উফফ ঘুমাতে দেন তো,,,
আবিরঃ তোমার মামনি দরজা নক করছে,,,
তিথিঃ তো কি হইছে?
আবিরঃ কি হইছে মানে তিথি আগে উঠো,,
আবির তিথিকে তাড়াতাড়ি উঠায়,,তিথি উঠে বসে আবিরের দিকে তাকিয়ে বলে
তিথিঃ এখন কি হবে???
আবিরঃ সেটাই তো বলছি সে কখন থেকে,,,
তিথিঃ আপনি খাটের নিচে লুকান,,তাড়াতাড়ি
আবিরঃ হোয়াট???মাথা কি গেছে আমি খাটের নিচে লুকাবো???
তিথিঃ ওহ হ্যাঁ আপনি যে মোটা অইখানে ঢুকতে ও পারবেন না,,,
আবিরঃ কষাই একটা চড় লাগাবো সাত সকালে ফাজলামি করছো???
তিথিঃ হু,,,আচ্ছা বাথরুমে যান,
আবির তাড়াতাড়ি বাথরুমে চলে যায়,,তিথি তাড়াতাড়ি চুল গুলো ঠিক করে দরজা খুলে হামি দিতে দিতে বলে
তিথিঃ উফফ মামনি কি হইছে এতো সকাল সকাল কেন ডাকছো???
তিথির মাঃ এতো কি করতেছিলি হ্যাঁ??? এতো ক্ষন লাগে খুলতে,
তিথিঃ উফফ মামনি একটু তো শান্তি মত ঘুমাতে দাও,,,মানুষ বলে বাপের বাড়ি নাকি মেয়েরা আসলে নাক ডেকে ডেকে আরামে ঘুমাতে পারে আর আমি কিনা তাও পারছি না হু,,

তিথির মাঃ হইছে ড্রামাবাজ,,,এতো বেলা হলো তাই ডাকলাম নাস্তা কি খাবি না হুম,,,
তিথিঃ হুম খাবো আচ্ছা যাও আমি ফ্রেশ হয়ে আসতেছি,,,
তিথির মা চলে যায় দরজা টা লাগিয়ে বাথরুমের দরজা নক করে
তিথিঃ মামনি চলে গেছে এইবার আসেন,,,
বাথরুমে তিথি সাবান নিচে ফেলে রাখছে অইখানে স্লিপ খেয়েই আবির যেভাবে পড়ে,,চিৎকার দিয়ে উঠে
আবিরঃ আউচ,,,
তিথিঃ এই আপনার কি হলো??? বাথরুমে কি তেলাপোকা দেখেছেন যে এইভাবে ভয় পেয়েছেন??তাড়াতাড়ি দরজা খুলুন আমি তেলাপোকা টা নিয়ে ফেলে দিচ্ছি,,,
আবির নিচে পড়ে আছে,,কোমড়ে এতো ব্যাথা পেয়েছে যে বলার বাহিরে,,অনেক কষ্ট করে দরজা টা খুলে
তিথি আবিরকে দেখে কিছু টা হতবাক আবির কিছু টা ভিজা আর রাগী ভাবে তাকিয়ে আছে তার দিকে
তিথিঃ কি হলো আপনি এইভাবে তাকিয়ে আছেন কেন??
আবিরঃ জীবনে কি আক্কেল জ্ঞান বলতে কিছু হবে না নাকি তোমার হ্যাঁ???
তিথিঃ কেন???
আবিরঃ বাথরুমে সাবান কেন ফেলে রাখলে হ্যাঁ???
তিথিঃ সাবান তো ফেলে রাখছি যাতে তেলাপোকা আছাড় খেয়ে পড়ে মাথা পাঠায় তাই,,
আবিরঃ কয়েকটা চড় দিলে এইসব ফালতু কথা মাথা থেকে ঝেড়ে ফেলবে,,বেকুব মেয়ে তেলাপোকা সাবানে কখনো আছাড় খায়???তোমার তেলাপোকা পড়তে গিয়ে আমি পড়ে গেছি
তিথিঃ ওহ আচ্ছা ব্যাথা পেয়েছেন বুজি?
আবিরঃ সিরিয়াসলি তুমি আসলে বেকুব নাকি তার চেয়ে বড় কিছু?? পড়ে গিয়ে কি কেউ সুখ পায়???
তিথিঃ সরি বকেন কেন এতো (ন্যাকা কান্না করে)
আবিরঃ কান্না অফ করো,,,,আমার কোমড়ে অনেক লেগেছে ব্যাথা,,
তিথিঃ দাঁড়ান
তিথি গিয়ে আবিরের হাতটা নিজের ঘাড়ে রাখে আবিরকে শক্ত করে ধরে আসতে আসতে বিছানায় নিয়ে আসে,,,
তিথিঃ আপনার তো পুরো শার্ট প্যান্ট ভিজে গেছে এখন কি পড়বেন আপনার তো জামা কাপড় ও নাই এখানে,,
আবিরঃ সমস্যা নাই আমি এইভাবে থাকবো,,
তিথিঃ আচ্ছা আমি নিয়ে আসছি কিছু,,,
তিথি তাড়াতাড়ি বাহিরে চলে যায়,,কিচেনে উঁকি দিয়ে দেখে মামনি কাজ করছে আর বাবা সোফায় বসে খবরের কাগজ পড়ছে,,,সে তাড়াতাড়ি তার বাবার রুমে গিয়ে একটা লুঙ্গি আর পাঞ্জাবি লুকিয়ে রুমে যেতে লাগে মামনি ডাক দেয়
তিথির মাঃ কিরে এখনও ফ্রেশ হস নাই???
তিথিঃ হ্যাঁ এখন হবো আসলে একটু তোমাদের দেখতে আসছি কি করতেছো তাই,,,
তিথির মাঃ তোমার বাবার পাঞ্জাবি লুঙ্গি নিয়ে কই যাস?
তিথিঃ(এই যা দেখে ফেললো উফফ আমার মামনির চোখ নাক সিসিটিভি ক্যামেরা যে সব দেখে ফেলে)ইয়ে মানে মামনি আমার না খুব সুখ হইছে পাঞ্জাবি লুঙ্গি পড়ে পিক তুলার অই যে ছোট বেলার মত তাই,,
তিথির মাঃ তোর যে কখন কি শখ উঠে আমি বাপু বুজি না,,আচ্ছা তাড়াতাড়ি আয় খেয়ে নিতি,,,
তিথিঃ ওকে
তিথির মাঃ আচ্ছা আমি গিয়ে তোর রুম টা পরিষ্কার করে দেই তুই ফ্রেশ হয়ে নে,,,
তিথি ঘাবড়ে যায় কথাটা শুনেই,,,
তিথিঃ নায়ায়া
তিথির মাঃ কিরে এতো জোরে না কেন করলি?
তিথিঃ না মানে আমি বড় হয়েছি বিয়ে ও হয়েছে তো নিজের কাজ নিজে করা বেটার তাই আর কি বলছি আমি আজ পরিষ্কার করে নিবো,,,,
তিথির নাঃ তুই ঠিক আছিস তো?? জ্বর টর আসে নাই তো?( তিথির কপালে হাত দিয়ে)
তিথিঃ কেন?
তিথির মাঃ না আজ এতো ভদ্র হয়ে গেলি তাই,,
তিথিঃহু
তিথি রেগেই নিজের রুমে চলে যায়,,,রুমের দরজা টা লাগিয়ে আবিরের দিকে পাঞ্জাবি আর লুঙ্গি টা এগিয়ে দেয়,,,
আবিরঃ আমি লুঙ্গি পড়বো??
তিথিঃ কেন শাড়ি পড়তে চান বুজি??
আবিরঃ চুপ ফাজিল মেয়ে,,,সব সময় মজা
তিথিঃ বাহা রে আপনি বললেন তাই,,,বাই দ্যা রাস্তা শশুড়ের লুঙ্গি পাঞ্জাবি পড়ার মজা আলাদা যদিও আমি পড়ি নাই আজও
আবিরঃ আসলে তোমার মাইরের অভাব বুজলে,,ছোট বেলায় যদি মামনি কষায় বেত দিয়ে কয়েকটা লাগাইতো তাহলে হয়তো আক্কেল বলতে অইটা এসে যেতো,,,
তিথিঃ আপনি আমার রুমে থেকে আমাকে এতো বড় কথা বললেন আপনার এতো বড় সাহস,,
আবিরঃ বাবা রে উনার রুম,,,লুক মিসেস রহমান এইটা আমার বউয়ের রুম সো বকবক করিও না,,,
তিথিঃ হু হইছে আপনি চেঞ্চ করে নেন আমি ফ্রেশ হয়ে আসি,,,
তিথি ফ্রেশ হতে চলে যায়,,আবিরের কোমড়ে এতো বেশি ব্যাথা করছে যে সে উঠে যে দাঁড়িয়ে চেঞ্চ করবে অই শক্তি টুকু ও নাই,,,তিথি ফ্রেশ হয়ে এসে দেখে আবির এখনও ভিজা কাপড়ে,,
তিথিঃ আপনি এখনও চেঞ্চ করেন নাই??
আবিরঃ উঠতে পারছি না প্রচুর ব্যাথা করছে কোমড়,,,
তিথি আবিরকে শক্ত করে ধরে উঠতে সাহায্য করে,,
তিথিঃ আপনি কি মোটা বাপুরে,,,
আবিরঃ কিই?
তিথিঃ হ্যাঁ আপনাকে তুলতে গিয়ে আমার সব শক্তি এনার্জি শেষ,,,,
আবিরঃ আর তোমাকে যে আমি কোলে করে নেই অনেক সময় এইজন্য আমার কোমড় টা ধীরে ধীরে ভেঙ্গে গেছে,,
তিথিঃ হু(বিরক্তি ভাব নিয়ে)আর নিয়েন না,,,
আবিরঃ হুম
আবিরের হাতে ব্যাথা আবার কোমড়ে ও অনেক ব্যাথা,,শার্টের বুতাম একটা খুলেই বড় নিশ্বাস নেয়,,
তিথিঃ কি হলো ব্যাথা করছে নাকি অনেক?
আবিরঃ হুম
তিথিঃ আপনি যদি বলেন আমি সাহায্য করি?
আবিরঃ ওকে
তিথি আবিরের শার্টের বুতাম আসতে আসতে খুলতে থাকে,,,আবিরের নজর শুধু তিথির দিকে আর তিথির হার্ট বিট যেন অনেক গুন বেড়ে যায়,,,আবিরের অনেক টা কাছে সে আবার শার্টের বুতাম গুলো ও খুলছে,,,
শার্টের বুতাম খুলেই পাঞ্জাবি টা আসতে আসতে পড়িয়ে দেয়,,
তিথিঃ আমি লুঙ্গি পড়াতে পারবো না হু,,
আবিরঃ কেন পারবে না হুম?তোমার হাজবেন্ড হই পারতে তো হবেই,,
তিথিঃ অই চুপ থাকেন তো পারবো না আমি,,
আবির হেসে উঠে,,,তিথি অন্য দিকে ফিরে যায় আবির চেঞ্চটা করেই বলে
আবিরঃ শেষ চেঞ্চ করা ম্যাডাম,,
তিথিঃ আচ্ছা আপনি থাকেন আমি কিছু খাবার নিয়ে আসি,,,,
তিথি গিয়ে কিচেন থেকে নাস্তা গুলো বেশি করে নিয়ে হাঁটা শুরু করে,
তিথির মাঃ টেবিলে সুন্দর করে বসে খেতে পারিস না হুম
তিথিঃ মামনি রুমে খাবো,,,
তিথির মা আর কিছু বলে না জানে তার মেয়ে এমন,,,
তিথি নাস্তা নিয়ে রুমে আসে দেখে আবির প্রচুর ব্যাথায় কেমন করছে,,তাড়াতাড়ি মলম নিয়ে আবিরকে বলে
তিথিঃ আপনি অইভাবে শুবেন
আবিরঃ কেন?
তিথিঃ না মানে মলম টা লাগিয়ে দিতাম যাতে ব্যাথাটা কমে,,,
আবির উল্টো হয়ে শুয়ে পড়ে তিথি আবিরের কোমড়ে মলম লাগাতে থাকে,,,আবিরের বেশ ভালোই লাগে যে তার বউ তার অনেক সেবা করছে,,,মলম লাগিয়ে হাতটা ধুয়ে এসে আবিরকে নাস্তা খাইয়ে দেয় আর নিজে খেতে লাগে,,
তিথিঃ আপনি এখন কিভাবে যাবেন?
আবিরঃ সেটায় ভাবছি,,,
তিথিঃ আপনি আজ এখানে থাকবেন কি?
আবিরঃ তাড়িয়ে দিতে চাইলে চলে যাবো এই ব্যাথা নিয়ে আর কি,,,
তিথিঃ আমি কখন তাড়ালাম আজিব,,,আর এমন অবস্থায় যেতে ও পারবেন না,,,
আবিরের ফোন টা বেজে উঠে ফোন টা হাতে নিয়ে দেখে মায়ের কল,,
আবিরঃ কথা বলিও না মা কল দিচ্ছে
তিথিঃ হুম,,
আবিরঃ হ্যাঁ মা বলো
আবিরের মাঃ তুই কই?সন্ধ্যায় যে বাড়ি থেকে বের হলি আর আসলি না রাতে এতো কল দিলাম ধরিস ও নাই,,,সকালে ও আসলি না?
আবিরঃ কেন তোমার আদরের ভাইয়ের ছেলের যত্ন নেওয়ার পর আমার কথা মনে পড়েছে?
আবিরের মাঃ কিসব বলিছিস বল তো?
আবিরঃ কিছু না একটা কাজে আসছি আসতে দেরি হবে চিন্তা করি ও না,
আবির কল টা কেটে দেয়,,মায়ের মনটা ছোট হয়ে যায় ভাবতে থাকে ছেলেটা কিছু কি খেয়েছে,,,
শিহাবঃ কি হলো ফুফু?
আবিরের মাঃ আমি ভেবেছি তুই আসাতে আবির অনেক টা ঠিক হবে তিথিকে পুরো সম্মান দিয়ে এখানে নিয়ে আসবে,,নিজের ফিলিংস বুজবে কিন্তু সে নিজের খেয়াল পর্যন্ত এখন নিচ্ছে না,,,
শিহাবঃ ফুফু তোমার ছেলে যে ত্যাড়া এতো তাড়াতাড়ি লাইনে আসবে না তাকে লাইনে আনতে হলে হিট করতে হবে কিছু কথা দিয়ে,,,আর হ্যাঁ তিথিকে কাল দেখেছিলাম বেশ মায়াবী

আবিরের মাঃ হ্যাঁ আমার ছেলের বউটা অনেক মায়াবী,,অনেক ভালো সে ওর মত একটা মেয়ে পাবো ভাবি নাই,,,
শিহাবঃ হুম আবিরের কপাল আসলেই ভালো যে এতো সুন্দর বউ পাইছে,,,(গভীর ভাবে ভেবে)
এইদিকে,,
তিথিঃ এইভাবে কেন কথা বললেন?
আবিরঃ বাদ দাও তো
তিথিঃ হু,,আচ্ছা আপনার কাপড় গুলো ধুয়ে বারান্দায় দেই যাতে শুকিয়ে যায়,,,
আবিরঃ হুম,,,
তিথি বালিশ গুলো ঠিক করে দেয় আবিরকে যাতে ব্যাথা টা একটু কম লাগে,,আবিরের কাপড় গুলো ভালো ভাবে ওয়াশ করে শুকাতে দেয়,,,
তিথির মা আজ হতবাক তিথি রুম থেকে বের হচ্ছে না,,,,
তিথির বাবাঃ আরে মেয়েটা একটু একা থাকতে চায় থাকতে দাও এতো ডির্সাব কেন করো বলো তো?
তিথির মাঃ তোমার মেয়ে রুমে এতো ক্ষন আছে আমার অবাক লাগছে যে মেয়ে পুরো বাড়ি মাথায় তুলে সে আজ চুপচাপ
তিথির বাবাঃ ওর মত ওকে থাকতে দাও এইভাবে মেয়েটাকে জ্বালাই ও না,,
তিথির মা আর কিছু বলে না নিজের কাজে মন দেয়,,
এইদিকে
তিথি আবিরের পাশে বসে তার সব ছোট বেকার কাহিনী বলছে,,,কি করেছে না করে সব,,এলবাম টা নিয়ে সব ছবি দেখায় আবির তো পুরো ক্রাশ খায় তিথির কলেজের কিছু ছবি দেখে,অনুষ্ঠানে শাড়ি পড়েছে বেশ কিউট লাগছে তিথিকে,,,
চলবে,,,,,