বজ্জাত বস রোমান্টিক হাজবেন্ড

বজ্জাত বস রোমান্টিক হাজবেন্ড !! Season -4 !! Part- 55

শিহাব মুচকি হেসে বলে
শিহাবঃ তুমি ডাকলে আর আমি আসবো না এই কি হয়,,,
আবিরের মা শিহাবের গালে হাত দিয়ে বলে
আবিরের মাঃ তুই ছাড়া আর কেউ আমাকে সাহায্য করতে পারবে না,,,,তাই তো তোকে ডাকলাম আমার রাগী জিদি ছেলেটাকে লাইনে আনতে,,,
শিহাব আর আবিরের মায়ের হাত ধরে বলে
শিহাবঃ শুধু লাইনে আনবো না কিছু পুরানো হিসাব এর শুধ ও নিবো,,,
আবিরের মাঃ মানে?
শিহাবঃ সে তুমি বুজবে না,,,
শিহাব আবিরের মায়ের সাথে রেস্টুরেন্টে বসে তারা কফি খাচ্ছে আর আবিরের মা শিহাব কে অনেক কিছু বলে অনেক কিছু বুজায় দেয়,,আর কি কি করতে হবে সব কিছু,,
শিহাব মুচকি হেসে বলে
শিহাবঃ তার মানে আমাকে এখন এইটা করতে হবে??
আবিরের মাঃ হুম তাও তাড়াতাড়ি,,,আর আবির তোকে একদম দেখতে পারে না জানিস তাই তোকে দিয়েই হবে,,,
শিহাবঃ হাহা সেটায় তোমার আদরের ছেলে তো আমাকে সহ্য পর্যন্ত করতে পারে না,,যাই হোক মজা হবে, তাকে ও আমি একটু টাইট দিতে পারবো,,,
আবিরের মা হেসে দেয় দুইজনে অনেক ক্ষন কথা বলে অনেক ক্ষন পর আবিরের মা চলে যায়,,,
এইদিকে,,
আবির বাসায় এসে ফ্রেশ হয়েই অফিসে চলে যায় নাস্তা না করে,,
আর তিথি এখনও ঘুম তার আজ ঘুম এতো যে সে দিনের ১০ টা বাজে এখনও নাক ডেকে ডেকে ঘুম,,,
তিথির মা এসে তিথিকে ডাক দেয়,,,
তিথিঃ উফফ একটু ঘুমাতে দাও আরো
তিথির মাঃ আর কত ঘুমাবি মাইয়া উঠ,,,দিনের ১০ টা বাজে আর তুই কি না মহারানির মত ঘুমাচ্ছিস???
তিথি চোখ ডলতে ডলতে উঠে বসে মায়ের বকা শুনেই,,,,,,তিথির মা তিথিকে উঠতে দেখে রুম থেকে চলে যায়,,চারপাশে তাকিয়ে দেখে পুরো রুম এতো পরিষ্কার ভাবে তার মা হয়তো পরিষ্কার করেছে,,,ফ্রেশ হয়ে নাস্তা করতে থাকে
তিথির মাঃতিথি মার্কেট থেকে আমাকে কিছু জিনিস এনে দে তো,,,
তিথিঃ এখন???
তিথির মাঃ হুম এখন যাবি,,,
তিথি আর কি রেডি হয়ে নেয়,,,আবিরকে খুব মিস করছে ফোন টা হাতে নিয়ে দেখে আবিরের অনেক গুলো কল উঠে আছে,,,
তিথিঃ ইয়া আল্লাহ এই হিটলার টা এতো কল দিলো আর আমি জানিও না এখন তো আমাকে আস্তা গিলে খাবে,,,,
তাড়াতাড়ি আবিরকে কল বেক করে,,,আবির মিটিং করছে বিদায় তিথির কল টুকু রিসিভ করতে পারে নাই,,,
অনেক বার কল দেওয়ার পর যখন আবির ধরে নাই তিথি মন খারাপ করে বের হয়ে যায়,,,
মার্কেটে এসে মায়ের বলা মত কিছু জিনিস গুলো নিতে থাকে,,
এইদিকে শিহাব ও সেম মার্কেটে,,তিথিকে সে কখন থেকে ফলো করছে তিথির চেহারা এতো মিষ্টি যে শিহাব কয়েকটা দূর থেকে ছবি তুলে নেয়,,,
শিহাবঃ এই তাহলে সে?বাহা দেখতে তো অনেক সুন্দর বাহা আবির ছক্কা মেরে দিলি এইবার,,,এতো সুন্দর বউকে একা একা মার্কেটে পাঠালি সমস্যা নিয়া আমি তো আছি,,,,
শিহাব তিথির পিছনে পিছনে একটা দোকানে যায়,,,তিথি এক্যা ব্যাগ হাতে নিয়ে দেখে দেখতে সুন্দর ভাবে তার মায়ের জন্য নিবে,,,,
তিথিঃ এই ব্যাগটা কত?
দোকানদারঃ ২০০০ টাকা ম্যাডাম
তিথিঃ কিইইইই?
দোকানদারঃ কি হলো ম্যাডাম আপনি এতো জোরে চিৎকার কেন করছেন?
তিথিঃ অই মিয়া ডাকাতি করতেছেন পাবলিকদের উপর,,,২০০ টাকার জিনিস ২০০০ টাকা???? টাকা কি গাছে ধরে নাকি যে এতো চওড়া দামে মানুষ কে লুট করবেন?
দোকানদার তো হতবাক তিথির এমন কথা শুনেই,,,ভয়ে কিছু বলেও না তবুও সাহস করে বলতে যাবে কিছু শিহাব পিছন থেকে বলে উঠে
শিহাবঃ আপনাদের আসলে লজ্জা করা উচিত যে এতো কম দামের জিনিস এতো দামে বিক্রি করছেন,,মেয়ে মানুষ একা পেয়েছেন বলে এইভাবে ঠকাবেন???,
তিথিঃ হ্যাঁ ভাই আপনি একদম ঠিক বলেছেন এইসব দোকানদার সাধারণ মানুষদের লুট করে নেয়,,,
শিহাবঃ উনি যে দামে চাচ্ছে দিয়ে দেন,,,
শিহাব অন্য দিকে ইশারা করে তিথির থেকে টাকা কম নিতে লোক টা শিহাবের কথা মত নেয়,,,
তিথি দোকান থেকে বের হয়ে যেতে লাগে শিহাব ডাকে,,
শিহাবঃ এই যে মিস?
তিথিঃ আমাকে ডাকছেন ভাই সাহেব?
শিহাবঃ জ্বি বাট আমি ভাই সাহেব না প্লিজ এইটা ডেকে আমাকে বুড়া বানিয়ে দিবেন না,,
তিথি হেসে উঠে,,,
শিহাবঃ হাই আমার নাম শিহাব রেওয়াজ,,,
তিথিঃ ওহ আচ্ছা,,,
শিহাবঃ আপনার নাম?
তিথিঃ মিসেস তিথি রহমান,,,
শিহাবঃ অহ বিবাহিত আপনি?
তিথিঃ হ্যাঁ,,,
শিহাবঃ লাগছে না ভেবেছি কলেজ পড়ুয়া মেয়ে,,,
তিথিঃ ওহ তাই আমার এলাকার লোক জন তো বলে আমি ক্লাস সেভেনে পড়ি,,,(একটু বিরক্তি ভাব নিয়ে)
শিহাবঃ আপনি মেবি রেগে যাচ্ছেন আচ্ছা সরি,,
তিথিঃ সরি কেন?
শিহাবঃ এই যে আপনাকে কলেজ পড়ুয়া বলেছি তাই,,,
তিথিঃ হু আচ্ছা আমি আসি,,,
শিহাব ভাবতে থাকে কিভাবে তিথির সাথে পরিচয় হবে ভালো ভাবে,,,তিথির পিছন পিছন যায় ক্যান্টিন পর্যন্ত তিথি ক্যান্টিনে গিয়ে বার্গার পিজ্জা ফুচকা আইসক্রিম অনেক কিছু অর্ডার করে,,,শিহাব এমন ভাব করে যে সে একটা জায়গা ও পাচ্ছে না বসার,,,তিথি দেখে ও না দেখার ভান করে আর নিজের মত করে খেতে লাগে,,,
শিহাব এসে তিথিকে বলে
শিহাবঃ আমি কি এখানে বসতে পারি প্লিজ??
তিথিঃ কেন এখানে কি লটারি লাগাইছে.??? যে এখানেই বসতে হবে?অন্য জায়গায় গিয়ে বসেন,,,
শিহাবঃ আ,,সলে ম্যাডাম এখানে তো আর জায়গা নাই বসার তাই,,,যদি আপনি মাইন্ড না করেন আর কি আসলে প্রচুর ক্ষিধে পেয়েছে আমার,,,এক পাশে চুপচাপ বসে খেয়ে চলে যাবো,,
তিথির একটু দয়া হলো,,,
তিথিঃ ওকে বসেন কিন্তু আমার খাবার থেকে একটু ও ধরবেন না,,
শিহাবঃ না না ধরবো না,,,আমি আমার টুকু অর্ডার করছি আপনার জন্য কিছু করবো আর?
তিথিঃ বলেছিলাম আমি করতে?
শিহাবঃ না তা তো বলেন নাই,,,
তিথিঃ হু বসতে দিয়েছি বলে আমার উপর লাইন মারতে আসিয়েন না ওকে আমি বিবাহিত,,,
শিহাবঃ জ্বি জ্বি,,,
শিহাব তিথির দিকে আড় চোখে বারবার তাকাচ্ছে তিথি নিজের মনের মত খাচ্ছে,,শিহাব শুধু কফিটা খাচ্ছে আর কিছু না বাট হ্যাঁ তিথির সব খাওয়া ড্যাবড্যাবিয়ে তাকিয়ে দেখছে,শিহাব তো হতবাক একটা মেয়ে এতো খেতে পারে,,,
তিথির ফোন টা বেজে উঠে,,ফোনের স্কিনে ভেসে উঠে আবিরের নাম্বার,,পিজ্জা মুখে নিয়ে কলটা রিসিভ করে
তিথিঃ হ্যালো (মুখে খাবার তাকায় আওয়াজ টা একটু অন্য রকম লাগে)
আবিরঃ কি হলো আওয়াজের?
তিথিঃ আমি পিজ্জা খাচ্ছি,,
আবিরঃ মুখে খাবার নিয়ে কথা বলতে বারন করি নাই একবার?
তিথিঃ ওকে কল কাটেন তাহলে খেয়ে কল দিবো,,
আবিরঃ না থাক,,,কই তুমি?
তিথিঃ মার্কেটে আসছি,,,জানেন এখানের পিজ্জাটা জাস্ট অসাধারণ আর বার্গার টা তো ফাটাফাটি,,ফুচকাটার টেস্ট তো কি বলবো
আবিরঃ যেখানে যাও না কেন খাওয়া টা মিস হয় না তোমার,,,
তিথিঃ কিছু বললেন?
আবিরঃ না খাও ভালো করে খাও,,,
শিহাব বুজতে পারে তিথি আবিরের সাথে কথা বলে,,
শিহাবঃ তিথি পানি টা খাও গলায় আটকাবে খাবার,,খেয়ে কথা বলো,,,
একটা ছেলের আওয়াজ পেয়ে আবির অবাক হয়ে যায়,,আর তিথির সাথে কি সুরেলা ভাবে না কথা বলছে,,,তিথি কিছু টা অবাক হয় যে শিহাব তাকে আপনি থেকে সোজা তুমি আর কেয়ারিং ভাব দেখাচ্ছে,,,
আবিরঃ তুমি কার সাথে মার্কেটে গেলে(প্রচুর রেগে)
তিথি খাবার টা শেষ করে বলে
তিথিঃ আমি তো একা এসেছি,,,
আবিরঃ ছেলেটা কে?
তিথিঃ আরে জানি না,,আমি ক্যান্টিনে,,
আবির রেগে তিথিকে বলে
আবিরঃ ভিডিও কল দিচ্ছি এখন দেখাবে সাথে কে তোমার,,,,
তিথিঃ এখানে ভিডিও কল?অনেক মানুষ এখানে,,,
আবিরঃ চুপচাপ কল রিসিভ করবে আর দেখাবে সাথে কে আছে,,,
আবির কলটা কেটে দেয়,,
তিথিঃ অই মিয়া আপনার সমস্যা কি হ্যাঁ.?? আমাকে আপনি থেকে সোজা তুমি ছ্যাছড়ামির সীমা আছে ওকে,,
শিহাবঃ আপনি খাওয়ার সময় কথা বলছেন তাই,,আর আমার অনেক কাছের একজনের নাম ও তিথি,,আপনি এমন ভাবে খাচ্ছেন যে তার কথা মনে পড়ে গেলো,,,
তিথি আর কিছু বলবে আবিরের ভিডিও কল হাজির,,তিথি রিসিভ করে
আবিরঃ বেক ক্যামেরা দাও
তিথি বেক ক্যামেরা দিয়ে দেখে শিহাব গায়েব,,তিথি কিছু টা অবাক হয়ে যায়,
আবিরঃ যে তোমাকে পানি খেতে বলেছে সে কোথাও
তিথিঃ আমিও তো তাই ভাবছি,,,
আবিরঃ মানে???
তিথিঃ জানি না,,,মেবি চলে গেছে লোক টা,,,
আবিরঃ এখন বাসায় যাবে,,,আর চুপচাপ কোনো দিকে না গিয়ে বাসায় গিয়েই আমাকে কল দিবে ওকে,,,
তিথিঃ হু,,,
আবির কল টা কেটে অডিও কল দেয়,,,
আবিরঃ যত ক্ষন না বাসায় যাচ্ছো কল কাটবে না,,,
তিথি উঠে যায় বিলটা দিয়েই হাটা শুরু করে,,মার্কেট থেকে বের হয়ে সিএনজির জন্য দাঁড়ায় আর আবিরের সাথে কথা বলছেই,,,এইদিকে শিহাব তিথির সামনে একটা প্যাকট দিয়ে বলে
শিহাবঃ এখানে কিছু চকলেট আছে তোমার জন্য,,আজ তোমাকে অনেক সুন্দর লাগছে ধন্যবাদ আমার সাথে দেখা করার জন্য,,,
তিথিঃ হেএএএএ???
আবির ফোনের ওপাশ থেকে সব শুনে,,রাগে টেবিলের উপর একটা গ্লাস ছিলো অইটা ফেলে দেয়,,,
শিহাব তিথির অন্য প্যাকেট গুলোর মধ্যে তার দেওয়া প্যাকেট রেখেই চলে যায়,,
আবিরঃ কে এই ছেলে আর তুমি কার সাথে দেখা করতে আসলে হ্যাঁ (ধমক দিয়ে)
তিথি আবিরের ধমক খেয়েই বলে
তিথিঃ সত্যি আমি জানি না কে??
আবির রেগে কল টা কেটে দেয়,,, তিথি বেচারি আবিরের এমন রেগে কল কাটাতে চিন্তিত হয়ে যায়,,আবার রেগে চারপাশে তাকিয়ে দেখে শিহাব নাই,,
তিথিঃ অই হারামি বেয়াদব অমানুষ টা কই গেলো?? আজ সে আমাকে এইভাবে ফাসিয়ে দিলো উফফ,,এখন মিস্টার বজ্জাত এনাকন্ডা ভাববে আমি কোনো ছেলের সাথে দেখা করতে আসছি ইয়া আল্লাহ আজ আমার কপালে কি না দুঃখ আছে,,
তিথি অনেক টা টেনশন নিয়ে বাড়ি ফিরে যায়,,,বাড়ি ফিরে দেখে সামির স্কুল থেকে এসেই টিভি দেখছে ডোরেমন,,,তিথিকে দেখেই বলে
সামিরঃ এই আপু নতুন মুভি ডোরেমনের আয়,,,
তিথিঃ আরে বাহা,,,
তিথি সোফায় ঝাপিয়ে বসে ভাই বোন দুইটা কার্টুন দেখতেই ব্যস্ত হয়ে পড়ে,,,অনেক ক্ষন ধরে কলিং বেল বাজছে কিন্তু তিথি আর সামির দুইটা কার্টুনে এতো মন যোগ দেয় যে তারা কেউ পাত্তা ও দিচ্ছে না,,,
তিথির মাঃ উফফফ আসছি আর তোরা দুইটা কি বয়রা যে কানে শুনিস না সে কখন থেকে কেউ বেল দিচ্ছে,,,,
তিথিঃ মামনি ডির্সাব করিও না তো ডোরেমন দেখতে দাও,,
তিথির মাঃ আল্লাহ এই কেমন মেয়ে কপালে দিলে আমার,,, বিয়ে হয়ে গেছে তবুও বাচ্চাদের মত আজও কার্টুন দেখে,,
তিথির মা দরজা খুলেই দেখে আবির,,আবিরের চোখ মুখ সব লাল হয়ে আছে দেখেই বুজা যাচ্ছে প্রচুর রেগে আছে,,,
আবিরঃ আসসালামু আলাইকুম,,, তিথি কই.?
তিথির মাঃ ওয়ালাইকুম আসসালাম,,,তুমি এখানে এই ঠিক দুপুরে
আবিরঃ কিছু কাজ ছিলো মামনি,,,ভিতরে আসবো?
তিথির মাঃ হ্যাঁ আসো,,অই তো সে যে মার্কেট থেকে আসছে জামা কাপড় গুলো পর্যন্ত ছাড়ে নাই এসেই টিভির দুয়ারে তাও আবার বাচ্চাদের মত কার্টুন দেখছে,,,তুমি বসো আমি পানি নিয়ে আসি,
,তিথির না কিচেনে চলে যায়,,,

আবির তিথিকে দেখেই প্রচুর রেগে যায় আরো, এক তো দোষ করেছে কোথায় কল দিয়ে আবিরকে সরি বলবে তা না উল্টো কার্টুন দেখছে এসেই,,,,তিথি তো হাসতে হাসতে শেষ টিভির দিকে তাকিয়ে,,হাসতে হাসতে সামিরের গায়ে পড়ে যাচ্ছে,,,আবির গিয়েই তিথির হাত ধরে টান দিয়ে দাঁড় করায়,,আবিরকে দেখে তো ভয়ে হাত পা কাঁপছে হুট করে আবির কত থেকে আসছে ভাবতে থাকে,,,
তিথিঃ (এই বজ্জাত আবার কত থেকে টপকে পড়লো)
আবিরঃ কথা আছে তোমার সাথে রুমে চলো,,,,
তিথিঃ না এখানে বলেন কি?
আবির রাগী লুক দিয়ে দাঁতে দাঁত চেপে ধরে বলে
আবিরঃ যা বলি তা করো,,
ভয়ে আবিরের সাথে রুমে যায়,,রুমের দরজা লাগিয়ে দিয়ে তিথির হাত চেপে ধরে বলে
আবিরঃ ছেলেটা কে ছিলো????
তিথিঃ কো,,,ন ছেলে?
আবিরঃ ন্যাকামি না করে এখন বলবে কে তোমাকে চকলেট গিফট করলো আর তার সাথে দেখা করতে তুমি গেলে?? সাহস হয় কি করে তোমার যে অন্য ছেলের সাথে দেখা করতে যাওয়ার হুম,??উত্তর দাও?
আবির প্রচুর রেগে আছে,,,আবিরের এমন রাগ দেখে তো তিথি ভয় পেয়ে যায়,,,কান্না করে দেয়
তিথিঃ আ,,মি সত্যি জানি না,,,(নাক টেনে টেনে)
আবিরঃ একটা থাপ্পড় লাগাবো কান্না অফ করো,,
কিছু বলতে না বলতেই ব্যা ব্যা করে শুধু কাঁদবে,,,
তিথি কান্না থামিয়ে আবিরকে সব খুলে বলে যে একটা ছেলের সাথে কিভাবে দেখা সে কি বলেছে,,আবির তিথিকে অনেক বিশ্বাস করে,,চোখের পানি মুছে দিয়ে বলে
আবিরঃ এখন থেকে বের হবে না যা লাগবে আমাকে বলবে আমি এনে দিবো আর না হলে আমার সাথে যাবে ওকে,,,
তিথিঃ হু,,,
আবিরঃ আর হ্যাঁ মুখ বেঁধে বের হবে যেখানে যাও,,,
তিথি আবিরের এমন কেয়ারিং দেখে বলে উঠে
তিথিঃ আমার প্রতি আপনার এতো চিন্তা কিসের? আপনি তো আমাকে ভালোবাসেন না তাহলে কেন এতো চিন্তা দেখাছেন?
আবিরঃ ভালোবাসি আর না বাসি এই মনে রাখবে তুমি আমার বিয়ে করা স্ত্রী,,,আমি ছাড়া আর কারো কথা মাথায় ও আনবে না ওকে,,,আর হ্যাঁ আমার স্ত্রীর উপর আমার অধিকার আছে বিদায় আমি কেয়ার দেখাচ্ছি ওকে,,
তিথিঃ আজ ছেলেটা সে কিউট ছিলো (ইচ্ছা করে আবিরকে জেলাস ফিল করাতে)
আবিরঃ চোখ খুলে ফেলবো অন্য ছেলের দিকে তাকালে,,,
তিথিঃ হু,,,
আবির তিথির গালে হাত দিয়ে নিজের দিকে টেনে এনে বলে
আবিরঃ আমার একদম পছন্দ না তুমি অন্য কানো ছেলের সাথে কথা বলো ওকে,
আবিরের চোখে স্পষ্ট ভেসে উঠে যে সে তিথিকে অনেক ভালোবাসে যা তিথি বুজলেও অপেক্ষা করে আবিরের মুখে শুনার জন্য,,,,তিথি যে চায় আবির তার ফিলিংস গুলো বুজে তাকে বলুক,,,
আবির তিথিকে বলে উঠে
আবিরঃ যদি কখনো দেখি আমি অইদিন দেখবে কি করবো,,,
তিথিঃ কিস করবেন বুজি??
আবিরঃ হোয়াট?
তিথিঃ হ্যাঁ আপনি তো বললেন আপনি কিছু করবেন তাই ভাবলাম আপনি মেবি আমাকে কিস করবেন,,,
আবিরঃ অনেক শখ তাই না…??
তিথিঃ কি?
আবিরের ফোন টা বেজে উঠে,,,ফোন টা হাতে নিয়ে দেখে আমান,,,
আবিরঃ পরে বুজাবো কি,,,আসি আমি
আবির চলে যায়,,তিথি রুম থেকে বের হয়ে টিভির সামনে আবার বসে,,
তিথির মাঃ কিরে আবির চলে গেলো যে?আমি আরো ওর জন্য খাবার রেডি করছিলাম,,না খেয়েই চলে গেলো?
তিথিঃ বাহা বাহা অই বজ্জাত এনাকন্ডার জন্য খাবার রেডি করছো আর এই দিকে যে তোমার আপন নিজের মেয়ে না খেয়ে আছে সে দিকে খেয়াল নাই,,
তিথির মাঃ আর ন্যাকামি করতে হবে না টেবিলে খাবার রাখা আছে খেয়ে নে,,
এই দিকে
আবির বাড়িতে এসে দেখে আমান আর তিশা,,,
আবিরঃ আরুর সাথে দেখা করতে আসলি বুজি?
আমানঃ হুম,,কই গেছিলি তুই মিটিং ছেড়েই?,,আমাকে পরে সামলাইতে হইছে
আবিরঃ একটা ইম্পর্টেন্ট কাজ ছিলো?
তিশাঃ তিথি কেমন আছে?
আবিরঃ আ,,মি কেমনে জানবো?
আমানঃ কেন মাত্র যে দেখা করে আসলি আর জানলি না যে সে কেমন আছে?
আবিরঃ আমি কই দেখা করতে গেলাম আজিব কি সব বলিস,,,
আমানঃ তিথির মাকে কল দিচ্ছিলাম তিথি কেমন আছে জানতে তখন আন্টি বললো যে তুই নাকি অইখানে,,,
আবিরঃ না মানে একটা কাজ ছিলো অইদিকে তাই ভাবলাম মামনি আর বাবার সাথে দেখা করে আসি তাই,,
আমান হেসে উঠে,,,,
আবিরঃ আচ্ছা আমি ফ্রেশ হয়ে আসি দাঁড়া,,
আবির ফ্রেশ হয়ে নিচে নামে,,,,আহাদ আমানের সাথে বসে কথা বলছে আবির অইসময় শিহাব তাদের বাড়ি আসে,,,শিহাবকে দেখেই আবির আমান দুইজন দাঁড়িয়ে যায়,,,আবির শিহাবকে দেখে রেগে যায়,,শিহাব আবিরের সামনে এসে বলে
শিহাবঃহে আবির কেমন আছিস??
আবিরঃ তুই এখানে কি করছিস?
শিহাবঃ ওমা সে কি আমি এখানে আসতে পারবো না বুজি??
আবিরের মা এসে শিহাবকে বলে
আবিরের মাঃ শিহাব তুই???
শিহাব গিয়ে আবিরের মাকে জড়িয়ে ধরে বলে
শিহাবঃ ফুফু তোমাকে এতো মিস করছি যে কি বলবো,, তাই এসে গেলাম,,
আবিরের মাঃ একদম ঠিক করেছিস,,,কত মিস করেছি ইশ কত শুকিয়ে গেলি তুই,,
শিহাবঃ এখন মোটা হয়ে যাবো তোমার হাতের মজার মজার খাবার খেয়েই,,
আবির রেগে হাতটা শক্ত করে ফেলে,,শিহাব কে দুই চোখে আবির দেখতে পারে না,,,আমান ঠিক বুজতে পারে আবিরে রাগ টা তাই আবিরের হাতটা একটু শক্ত করে ধরে আস্তে বলে
আমানঃ আবির শান্ত হও,,,
শিহাবঃ ফুফু ক্ষিধে পাইছে অনেক,,,
আবিরের মাঃ এখনই আনছি তুই আমানের সাথে আবিরের সাথে কথা বল,,,
শিহাব আমানের কাছে গিয়ে বলে
শিহাবঃ কি অবস্থা তোর আমান?
আমানঃ হুম ভালো তুই?
শিহাবঃ আমি তো ভালো থাকবোই,,,

আবিরকে বলে
শিহাবঃ আমার ভাইটাকে জড়িয়ে ধরি নাই অনেক বছর,,আজ মিস করতে চাই না
আবির বাধা দেওয়ার আগেই আবিরকে জড়িয়ে ধরে বলে
শিহাবঃ এখনও বুজি রাগটা নাকের মধ্যেই আছে?
আবির শিহাবকে সরিয়ে বলে
আবিরঃ এখানে কেন আসলি তুই?
শিহাবঃ আরে বাহা আমার ফুফুর বাড়ি আমি আসবো না এমন হয়,,,তোর কলেজ ফ্রেন্ড লাগি আবার মামাতো ভাই আমি একটু তো সম্মান দিয়ে কথা বল,,,
আবির রেগে বলে
আবিরঃ আমার বাড়িতে যেন তোকে সন্ধ্যার পর আর না দেখি,,এসেছি খা ভালো তারপর বিদায় হও,,,
আবিরের মা খাবার বেড়ে বলে
আবিরের মাঃ শিহাব আয়
শিহাবঃ আসছি ফুফু,,,
শিহাব আবিরকে বলে
শিহাবঃ মাত্র তো আজ আসলাম এতো তাড়াতাড়ি যাবো ভাবলি কি করে?
আমানঃ আবির কিছু বলিস না আন্টি মা আছে,,,
শিহাব আবিরের কানের কাছে গিয়ে বলে উঠে
শিহাবঃ নিয়াকে মিস করছিস না???
আবিরঃ তোকে আমি?(রেগে)
আবিরের মাঃ শিহাব কি হলো আয়,,,
শিহাব খেতে চলে যায় আবিরকে চোখ মেরেই,,,
আবির রেগে নিজের রুমে চলে যায় সাথে আমান ও যায়,,,
আবিরঃ অই ছেলে আমার বাড়িতে কেন এসেছে?
আমানঃ তা তো আমিও বুজছি না,,,কলেজের দিন গুলো তে যা করেছে সে,,আচ্ছা তোর কানের কাছে গিয়ে কি বলছে?
আবিরঃ নিয়াকে মিস করছি কিনা জিজ্ঞেস করছে?
আমানঃ এই মেয়ের জন্য সব হয়েছে,,,
আবিরঃ না নিয়ার জন্য না,,ছোট বেলা থেকেই সে আমার পিছনে লাগতো আমার একদম পছন্দ না ওকে,,,
আমানঃ আমি জানি তা,,,
আবির অনেক টা রেগে থাকে আমান ও তাকে বুজায় শান্ত হতে,,,
এইদিকে,,
সন্ধ্যা হয়ে আসে তিথি কফি কাফ নিয়েই ছাদে চলে যায়,,ছাদের হালকা বাতাস তার অনেক ভালো লাগছে,,আবিরকে খুব মিস করছে আবিরের সাথে কাটানো মুহূর্ত গুলো যেন বারবার তার চোখের সামনে আসছে,,,
তিথিঃ মিস্টার হিটলার অনেক মিস করছি আপনাকে,,ইশ যদি আপনি এখানে থাকতেন কি না ভালো হতো,,,
অনেক টা সময় সে একা একা ছাদে কাটায়,,অনেক সময় হয়ে যাওয়াতে রুমে এসে যায়,,খেয়েই নিজের রুমে গিয়ে লাইট অন করে দেখে আবির
তিথিঃ আ,,,,পনিইইইইইই?
আবির তাড়াতাড়ি তিথির মুখ চেপে ধরে বলে
আবিরঃ ইশ কেউ জানলে সমস্যা আছে আমি এখানে?
তিথিঃ উহহুউউউউ
আবিরঃ হাত সরাবো কিন্তু চিল্লানি দিবে না ওকে,,,
তিথি মাথা নাড়িয়ে হ্যাঁ জানায়,,,
আবির তিথির মুখ থেকে হাত সরিয়ে দিয়ে বলে
আবিরঃ প্লিজ চিৎকার দিও না,,
তিথিঃ আপনি এখানে এই সময় কি করছেন???
আবিরঃ কেন তোমার সাথে দেখা করতে?
তিথিঃ হ্যাঁ????
আবিরঃ হুম
তিথিঃ কিভাবে আসলেন?না মানে সামনের রুমে তো আমরা ছিলাম আপনাকে তো দেখি নাই,,,
আবিরঃ দরজা দিয়ে আসি মাই আমি বারান্দা দিয়ে আসছি,,
তিথি চোখ বড় বড় করে আবিরকে বলে
তিথিঃ আপনি লাফ দিয়ে বারান্দা দিয়ে আসছেন?
আবিরঃ দূর পাগলি আমি গাছ বেয়ে তারপর বারান্দা আসছি,,
তিথিঃ কিই আপনি গাছে উঠতে পারেন.?
আবিরঃ কেন পারবো না নানার বাড়িতে কত উঠেছি হিসাব নাই,,,
তিথিঃ আপনাকে এই বুদ্ধি দিলো কে যে গাছে উঠে বারান্দা দিয়ে আমার রুমে আসার,,
আবিরঃ তোমার হাজবেন্ড হই বুদ্ধি আর কাউকে দিতে হয় এমনি এসে যায়,,আচ্ছা এতো কথা না আমার ক্ষিধে পেয়েছে প্রচুর দুপুর থেকে কিছু খাই নাই,,,
তিথিঃ সে কি আপনি না খেয়ে আছেন?বাসায় খান নাই?
আবিরঃ না খাই নাই খাওয়ার মুড উঠে গেছে বাড়িতে,,,
তিথিঃ কেন?
আবিরঃ পরে বলবো আগে প্লিজ আমার জন্য কিছু নিয়ে আসবে অনেক ক্ষিধে পেয়েছে,,,
তিথি তাড়াতাড়ি গিয়ে কিচেন থেকে খাবার প্লেটে নিয়ে আসতে লাগে দেখে তার মামনি পানির জগ নিয়ে আসছে,,মামনি তিথিকে দেখেই বলে
মামনিঃ তুই তো একটু আগে ডিনার করকি আমাদের সাথে এখন আবার খাবার??
তিথিঃ অনেক ক্ষিধে পেয়েছে মামনি,,তুমি তো জানোই আমার কত ক্ষিধে পায় তাই আর কি,,
মামনিঃ আচ্ছা যা,,,
তিথি রুমে এসেই দরজা লাগিয়ে দেয়,,,

তিথিঃ এই নেন খেয়ে নেন,,
আবিরঃ তুমি খাইয়ে দিবে?
তিথিঃ কেন আপনার হাত নাই বুজি?(অভিমানের সুরে)
আবির তার হাতটা দেখিয়ে বলে
আবিরঃ আজ গাছে উঠতে গিয়ে ছিলে গেছে হাতটা,,
তিথি তাড়াতাড়ি খাবারের প্লেট রেখে আবিরের হাতটা ধরে ফুঁ দিতে থাকে,,হাত অনেকটা ছিলে গেছে,,রক্ত ও বের হচ্ছে,,,,তিথি তাড়াতাড়ি ওষুধের বক্সটা এনে আবিরকে বসিয়ে হাতটা টেনে নেয়,,হাতে ফুঁ দিচ্ছে আর সেভলন লাগাচ্ছে,,তিথির চোখে জমানো পানি গুলো টপটপ করে পড়ছে তা দেখে আবির বলে উঠে
আবিরঃ অই পাগলি কান্না কেন করছো???
তিথিঃ কে বলেছে আপনাকে এইভাবে আসতে হ্যাঁ???(ধমক দিয়ে)
আবির তিথির ধমক শুনেই মুচকি হাসি দেয়,,ধমকে যেন আবিরের জন্য ভালোবাসা কেয়ারিং সব মিশ্রিত,আবির তিথির দিকে তাকিয়ে থাকে তিথি আবিরকে বকছে আর ওষুধ লাগাচ্ছে,,তার চোখ বেয়ে শুধু পানি গডিয়ে পড়ছে আবিরের হাত এমন দেখে,,আবিরের একটুও ব্যাথা লাগছে না মনে হচ্ছে তার হাতের সব ব্যাথা তিথির ছোঁয়ায় চলে গেছে,,
চলবে,,,,,

Comments