The Mysterious Man- Mafia Boss- Season-3 (Part-2)

The Mysterious Man- Mafia Boss- Season-3 (Part-2) Part- 41

★★★★
আরাভ দাঁড়িয়ে আছে ইয়ারাবীর সামনে।ওর ঠোঁটের কোনে বাঁকা হাসি।মেয়েটা সেই কতক্ষন ধরে ঘাড় নামিয়ে রেখেছে।এখনো পর্যন্ত বাঁকা হয়ে যায়নি ভাগ্যিস।আজ আকাশী রং এর স্যালোয়ার কামিজ পরে এসেছে ইয়ারাবী।সেই সাথে লম্বা চুল গুলো খোলা রেখেছে।চোখের নিচে একটু কাজল আর কোন সাজ নেই।তবে অপরুপ লাগছে ইয়ারাবীকে আরাভের কাছে।ওর গাল দুটো লাল হয়ে আছে।একটু যদি ছুঁয়ে দিতে পারতো মন্দ হতোনা।
ইয়ারাবী নিজের হাত জোড়া মুঠ করে রেখেছে।আরাভ নিজেকে নরমাল করে বলল কেন ডেকেছো?সেদিন পার্টি থেকে আসার পর ঘরে ভীষন কান্না করে ইয়ারাবী।ও কি করবে?ওর বাচ্চাটাকে মারতে পারছেনা।পাপা মাম্মা খুব কষ্ট পাবেন ওর কাজে।এদিকে বড় জেঠু।ওনি তো ভীষন কষ্ট পাবেন।আর ওনাকে এখন কষ্ট দেয়া যাবেনা।
কি করবে ইয়ারাবী?বেশ চিন্তায় পড়ে যায় ইয়ারাবী।ইয়ারাবী কলেজে যাচ্ছেনা দেখে ইস্পিতা ইয়ারাবীর কাছে আসে।খুব করে বুঝায় মেয়েটাকে।
দুদিন কাঁটানোর পর ইয়ারাবী ঠিক করে আরাভের কাছে যাবে ও।তাই বিকেলে আরাভকে লেকের পাড়ে আসতে বলল।
,
,
,
,
,
,
,
,
,
,
,
-কিছু বলবে ইয়ারাবী?জিজ্ঞেস করে আরাভ
-মাথা ঝাঁকায় ইয়ারাবী।আপনি কি সত্যিই ভালোবাসেন আমায়?
-আরাভ ইয়ারাবীর দিকে তাকায়।চমকে গেছে ও।হঠাৎ ইয়ারাবী কি বলছে এসব?তারপর শান্ত গলায় বলল হুম আগে বাসতাম খুব ভালোবাসতাম তোমাকে।কিন্তু যখন আমার ক্যারেক্টার আমার ভালোবাসার ওপর সন্দেহ করেছো তুমি।আমার সম্পূর্ন কথা না শুনে ঘর থেকে তাড়িয়ে দিয়েছো।তখন থেকে ঘৃনা করি তোমায় আমি।এখন আমায় বিয়ে করতে চাইছো কারন আমার সন্তানের মা হতে চলেছো।আর নাহলে বিয়ে করতে না আমায়।আমার বাচ্চাটা তোমার কাছে বোঝা।
-ইয়ারাবী থমকে যায়।বাবুটা আমার ও।ও আমার ভিতরে ধীরে ধীরে বড় হচ্ছে।ও কি করে আমার জন্য বোঝা হতে পারে?
-আরাভ ইয়ারাবীর দিকে একদৃষ্টে তাকিয়ে আছে।মেয়েটার চোখে পানি।আরাভ বলল এজন্য আমার বাচ্চাটাকে মেরে ফেলতে গিয়েছিলে?এবরশন করতে গিয়েছিলে তুমি।রাগী গলায় বলল আরাভ।
-ইয়ারাবী নিশ্চুপ হয়ে যায়।
,
,
,
,
,
,
,
,
,
,
,
ইয়ারাবীর সামনে একটা পেপার ধরে আরাভ।আগে পড়ে নাও।তারপর সাইন করো।ইয়ারাবী পড়তে গেলে আরাভ বলল এটার মতে বিয়ের পর তুমি আমার সকল কথা শুনবা।যা বলবো তাই করবা।আমার কথার অবাধ্য হলে ডিভোর্স দিতে পারবো আমি তোমাকে।ইয়ারাবী মুখ শক্ত করে বলল বিয়েটাকে বিজনেস না করলে ভালো হয়।যদি বিয়ে করতে চাও আমার কথা শুনতেই হবে নাহলে এই বিয়ে হবেনা।বলে উঠে আরাভ।ইয়ারাবী মাথা ঝাঁকিয়ে সাইন করে দিলো।পেপার সাইন করার সময় ইয়ারাবীর চোখেী পানি বাঁধা মানছিলো না।বারবার ডুকরে কেঁদে উঠছিলো।পেপার সাইন করার পর মুখে হাত চেঁপে পিছু ফিরে চলে যেতে নিলে আরাভ ইয়ারাবী কে ডেকে উঠে।ইয়ারাবী দাঁড়িয়ে যায়।আরাভ ইয়ারাবীকে চেয়ার দেখিয়ে বলল
,
,
,
,
,
,
,
,
,
,
,
-বসো।
-আমি বাসায় যাবো।বলে উঠে ইয়ারাবী।
-বসতে বলেছি বসো।ধমক দিয়ে উঠে আরাভ।
-ইয়ারাবী বসে পড়লো।একটা লোক ফ্রাইড রাইস ভেজিটেবল আর চিকেনফ্রাই নিয়ে এলো।
-আরাভ বলল খাও এগুলো।
-আমি খেয়ে আসছি।বলে উঠে ইয়ারাবী।
-তোমার ভাগেরটা খেয়েছো।আমার বাচ্চাটা উপাস।ওকে খাওয়াও।
,
,
,
,
,
,
,
,
,
,
,
ইয়ারাবী আরাভের দিকে তাকায় ছলছল চোখে।আরাভ লেকের পানির দিকে চেয়ে আছে।আরাভ জানে ওর মায়াময়ী না খেয়ে আছে।ইয়ারাবী যতোই সেজে নিজের কষ্ট গুলো লুকোতে চায় সেগুলো আরাভের চোখকে ফাঁকি দিতে পারেনা।ইয়ারাবী কেঁদে কেঁদে একটু খেয়ে নিলো।খাওয়া শেষে আরাভ ড্রাইভারকে দিয়ে ইয়ারাবীকে বাসায় পাঠায়।আজ আরাভ ও কিছু খায়নি।ইয়ারাবীর প্লেটটা কাছে নিয়ে ওর এঁটো খাবার গুলো খেতে শুরু করে।ম্যানেজার আরাভের কাছে এসে বলল স্যার নতুন খাবার দিচ্ছি।এগুলো দিয়ে দিন।আরাভ বলল আমার বৌয়ের খাবারটা খাচ্ছি।ইউ নো ম্যানেজার ঝুটা খানেসে পেয়ার বাড়তা হ্যা।ম্যানেজার হেসে অন্যদিকে চলে গেলো।
সেদিন সন্ধ্যা আটটায় আকরাম আজহার তার স্ত্রী অর্পন আর আরাভ রেহানের ঘরে আসে।হঠাৎ ওনাদের দেখে বেশ অবাক হয় রেহান।তারপর ও অতিথিদের সোফায় এনে বসায় ও।আকরমা আজহার বললেন আমার ছেলে আরাভকে তো চিনেন।আপনাদের সাথে ওর তো পরিচিতি আছেই।রেহান হাসিমুখে বলল হুম।অনেক ভালো ছেলে আপনার আরাভ।আকরাম আজহার বললেন আপনার ইয়ারাবীকে আমার আরাভের ভালো লেগেছে।আমাদের ও বেশ ভালো লেগেছে আপনার মেয়েকে।আপনি যদি রাজি থাকেন ইয়ারাবী কে আমার আরাভের বৌ করে নিতে চাই।রেহান বলল আসলে আমি কখনো কোন সিদ্ধান্ত একা নেইনা।আমার বড় ভাইয়ের সাথে আমার যোগাযোগ করতে হবে।আকরাম আজহার বলেন তাহলে ওনার সাথে কথা বলুন।
রেহান মাথা ঝাঁকিয়ে উপরে চলে এলো।রুপন্তী কাপড় ভাজ করছিলো।রেহান রুমে এসে দরজা লাগায়।
রুপন্তী অবাক হয়ে বলল কি হলো?দরজা লাগালে যে?
রেহান বলল আকরাম আজহার তার ওয়াইফ আর দুই ছেলে আসছে।ওনারা ইয়ারাবীকে পছন্দ করছে আরাভের জন্য।বেশ অবাক হয় রুপন্তী।কি বলবে ভেবে পাচ্ছেনা ও।রেহান বলল ভাইয়াকে ভাবি সহ আসতে বলি।তারপর ওনারা যা বলবেন।আরাভ কে আমার ও খুব ভালো লাগে।তবে ভাইয়ার সিদ্ধান্ত ছাড়া আগাবোনা।
রুপন্তী বলল জিজু কে আসতে বলো।রুপন্তী চিন্তিত হয়ে যায়।মেয়েটা বাচ্চা এখনো।রুপন্তী আকরাম আজহারের পরিবার সম্পর্কে জানে।ভীষন ভালো তারা।এমন ঘরে ইয়ারাবী গেলে সুখে থাকবে।রেহান রোয়েন কে কল দিয়ে ব্যাপারটা বলতেই রোয়েন বলল ওনাদের নাস্তা দে।আমি তোর ভাবি আর আরাবীকে নিয়ে আসছি।রেহান ওকে ভাইয়া বলে কল কাঁটলো।তারপর নাস্তা অর্ডার করলো বাহির থেকে।
ইয়ারাবী ঘুমোচ্ছিলো।রুপন্তী এসে মেয়েকে জাগিয়ে বলল হাত মুখ ধুয়ে নে।ইয়ারাবী বুঝতে পারছেনা কি হচ্ছে?আরাভ কি এসেছে নাকি?ভাবছে ও।
ঘন্টাখানিকের মাঝে রোয়েন রুহী আর আরাবী এসে পৌছুলো।
আকরাম আজহার রোয়েনের সামনে আবার ব্যাপারটা তুলে ধরলেন।রোয়েন বলল ইয়ারাবী যথেষ্ঠ্য বাচ্চা মেয়ে।খুব লক্ষী ও।আর আপনারা এ কয়দিনে অবশ্যই ওকে খেয়াল করেছেন।আমি চাই আমার মেয়েটা আপনাদের ওখানে বৌ না মেয়ে হয়ে থাকবে।সে ব্যাপারে আমি নিশ্চিন্ত হলেই আমার মেয়ে দিবো।
আকরাম আজহার বললেন ভাই আপনার সাথে আমার অনেক আগের সম্পর্ক।আমার কিন্তু কোন মেয়ে নাই।একটা মেয়ের অভাব সবসময় ফিল করেছি আমি আজও করি।আপনার মেয়ে খুব আদরে থাকবে এতোটুকু নিশ্চিন্ত করতে পারছি আপনাকে।
রোয়েন বলল তাহলে ঠিক আছে।আমি রাজি আপনাদের প্রস্তাবে।রুপন্তী ইয়ারাবী কে নিচে নামাতে বলো। রুপন্তী উপরে এসে ইয়ারাবীর রুমে এলো।বেগুনী রং এর স্যালোয়ার কামিজ পরেছে ইয়ারাবী তার সাথে খুব হালকা সাজ।ইয়ারাবীকে আরাবী সহ নিচে নামিয়ে আনে রুপন্তী।আরাভ এবার মাথা উঁচু করে ইয়ারাবী কে দেখতে পায়।ইয়ারাবী ওর সরাসরি সোফায় বসে আছে।আকরাম আজহার আর মিসেস আজহার ইয়ারাবীর সাথে হালকা পাতলা কথা বলছেন।ইয়ারাবী মাথা নিচু করে জবাব দিচ্ছে তবে সীমিত।বেশ কিছু সময় চলে যায়।আকরাম আজহার আরাভের কানে কি যেন বললেন।তখন আরাভ গলা পরিষ্কার করে বলল,
,
,
,
,
,
,
,
,
,
,
,
-আপনারা রাজি থাকলে ওকে আজই আংটি পরাবো আমি।
-ইয়ারাবী তাকায় আরাভের দিকে।
-রোয়েন একটু হেসে বলল সেটাই হোক।রেহান ও সাথো সাথে বলল আচ্ছা।রেহান উপরে চলে গেলো।কিছুক্ষন পর লাল একটা বক্স নিয়ে ফিরে এলো।
,
,
,
,
,
,
,
,
,
,
,
ইয়ারাবীকে আরাভের পাশে বসানো হয়েছে।আরাভ লাল ছোট্ট বক্স থেকে একটা ডায়মন্ড রিং বের করলো।ইয়ারাবী মাথা নিচু করে আছে।খুব ভয় হচ্ছে ওর।তবে মনের কোনে ভালো লাগাটাও কোন অংশে কম নেই।ভাললবাসার মানুষটাকে পাবে ও।তারপর ও কোথায় যেন একটু অভিমান ও কাজ করছে আরাভের ওপর।আরাভ ইয়ারাবীর হাত টেনে নিজের কাছে নিলো।তারপর আঙ্গুলে আংটি পরালো।ইয়ারাবীর হাতে রুপন্তী আংটির বক্স থেকে আংটি বের করে ধরিয়ে দিলো।রুপন্তী আরাভকে আংটি পরায়।তারপর অনেক গুলো ফ্ল্যাশলাইট জ্বলে উঠে আরাবী আর অর্পনের ক্যামেরায়।
চলবে