The Mysterious Man- Mafia Boss- Season-3 (Part-2) Part- 39
রোয়েন রুহী আর রুপন্তী ফ্লোরিডার একটা হোটেলে উঠেছে।সাথে আছে রোয়েনের ডাক্তার সরোয়ার হোসেন।রোয়েন রুহী আর রুপন্তী প্রথম তিনদিন ভালোই ঘুরেছে।কিছু বিখ্যাত টুরিস্ট স্পট গুলো থেকে ঘুরে এসেছে।সামনের ২৫ তারিখ রোয়েনের সার্জারি হবে।সে নিয়ে রুহীর চিন্তার শেষ নেই।প্রচন্ড ভীতি কাজ করছে ওর।আর করবেইনা কেন?লোকটাকে বড্ড ভালোবাসে ও।ওর স্বামী ওর জীবন চলারপথের একমাত্র সঙ্গী।তাকে তো রুহী হারাতে চায়না।রুপন্তী রুহীকে বুঝায় সর্বক্ষন।কিন্তু কিছুতেই কোন লাভ হয়না।সার্জারির কথা মনে আসতেই কান্নায় ভেঙ্গে পড়ে রুহী।
রোয়েন রুহী আর রুপন্তী নিচে এসেছে ব্রেকফাস্ট সাড়তে।তখনই রোয়েনের নম্বরে কল আসে আরাবীর।টিস্যু তে হাত মুছে মেয়ের কল রিসিভ করলো ও।
,
,
,
,
,
,
,
,
,
,
,
-হ্যালো বাবাই।কি খবর?অপর পাশ থেকে বলে আরাবী।
-এই তো মা ভালো।তুই আর ইয়ারাবী কেমন আছিস?জিজ্ঞেস করে রোয়েন।
-জি বাবাই ভালো।মাত্র ডিনার সাড়লাম।বাসায় আর্ভিন এসেছে।বলছিলো তোমাদের সাথে কথা বলবে ভিডি ও কলে।
-মেয়ের কথায় সায় দেয় রোয়েন।আচ্ছা আমরা রুমে গিয়ে কল দিচ্ছি।একটু অপেক্ষা কর।
,
,
,
,
,
,
,
,
,
,
,
রোয়েনরা রুমে গিয়ে আরাবীর স্কাইপিতে কল দিলো।তখনই ভেসে এলো রেহান আরাবী ইয়ারাবী আর আর্ভিনের চেহারা।ওদের মাঝে অনেক সময় পর্যন্ত কথা হয়। ঘন্টা খানিক কথা বলার পর আর্ভিন আর রেহান বেরিয়ে পড়ে বাসার উদ্দেশ্যে।
আরাভ ক্লাবে পুল খেলে এসে ঘরে ঢুকে।মিসেস আজহার বলেন আব্বু তুমি ফ্রেশ হয়ে এসে খেয়ে নাও।আরাভ মাথা নেড়ে রুমে চলে গেলো।ফ্রেশ হয়ে নিচে নেমে আসে আরাভ।মিসেস আজহার খাবার বেড়ে আরাভের সামনে বসে আছেন।
আরাভ বলল আন্টি অর্পন আর আঙ্কেল খেয়েছে?হ্যারে বাবা খেয়েছে।ফেন্সিটা আজ সেই পার্টিতে গেলো মাত্র ফিরে এসেছে।এই মেয়ের চাল চলন একেবারেই ভালো লাগেনা।ভদ্রতা বলতে কিছু নেই।কিছুটা রেগে বলেন মিসেস আজহার।আরাভ চুপচাপ খেয়ে রুমে যেতে নিবে খেয়াল করলো অর্পনের রুমের বারান্দায় ফেন্সি ফোনে কথা বলছে।আরাভ শুনতে পেলো,
আরে সেদিন এতো বড় ভুল হয়ে গেলো জেনি।আরাভ আর কি নাম যেন মেয়েটার ইয়ারাবী না জানি কি?সেদিন ওরা ডিনারে গিয়েছিলো।আমি তো ভাই আরাভের গাড়ির ডেকিতে ছিলাম।এতো রাগ লাগছিলো বলার মতো নারে।আরাভকে আমি ভালোবাসি আর ও ডিনার করে ইয়ারাবীর সাথে।তাই আমি ঐদিন আরাভের বিয়ারে নেশার ঔষধ মিলিয়ে দিয়েছিলাম।যেন আরাভ ওটা খেয়ে ইয়ারাবীর সাথে অসভ্যতা করে। বাঙ্গালী মেয়েগুলো জানিসই তো কেমন?বিয়ের আগে এসব অসভ্যতা লাইক করেনা।কিন্তু হলো তো উল্টো বিয়ারটা খেলো ইয়ারাবী।তারপর দুজন কোথায় গায়েব হলো খুঁজেই পেল,,,,,,,,,কথা শেষ করতে পারলো ফেন্সি।আরাভ ওর হাত থেকে ফোনটা নিয়ে আছড়ে ফেলে পা দিয়ে চেঁপে গুড়ো গুড়ো করে ফেলল।
,
,
,
,
,
,
,
,
,
,
,
-হাউ ডেয়ার ইউ!!!!!কি করে পারলি এসব?গলা ফাঁটিয়ে চিৎকার করলো আরাভ।
-হেই আরাভ আর ইউ আউট অফ ইউর মাইন্ড?আমার ফোনটা নষ্ট করে দিলে।রেগে বলল ফেন্সি।
-ফেন্সির চুল চেঁপে ধরলো আরাভ।গোটু হেল উইদ ইউর ফোন।আমার ইয়ারাবীর সাথে এসব করার সাহস কি করে হলো তোর?
,
,
,
,
,
,
,
,
,
,
,
আরাভের চিৎকারে অর্পন আজহার আঙ্কেল আর আন্টি অর্পনের রুমে এলো দৌড়ে।তবে কেউ কিছু বলার সাহস পেলোনা।আরাভ চিৎকার করে যাচ্ছে একনাগাড়ে।ইয়ারাবী কে খুব ভালোবাসি আমি।মাইন্ড ইট।ওর সাথে তো সব সমাধান করেই নিবো কিন্তু তোর ছায়া যদি আমার ত্রিসীমানায় পড়েছে না তাহলে আরাভের জঘন্যতম রুপ দেখবি।কথা গুলো বলে ফেন্সির চুল টানতে টানতে নিচে এলো আরাভ।আন্টি আঙ্কেল জানতে চাইছে কি হয়েছে।কিন্তু আরাভ কিছু বলার পরিস্থিতে নেই।ফেন্সির চুল ধরে ঘর থেকে বের করে দিলো আরাভ।তারপর রুমে এসে দরজা লাগিয়ে সিগারেট ধরিয়ে বারান্দায় এসে বসে।মাথা জ্বলছে ওর। এদিকে অর্পন দরজা নক করছে রুমের। আরাভ কড়া গলায় জানালো ও এখন কোন কথা বলতে প্রস্তুত নয়।অর্পন চলে যায় নিজ রুমে।এদিকে কিছুটা নরমাল হয়েছে ইয়ারাবী।
ক্লাশ করছে সাত দিন হলো।ওর শরীর ভালো যাচ্ছেনা।দিনের পর দিন আরো দূর্বল লাগতে শুরু করেছে।মাথা ঝিমঝিম করে।আবার কখনো কখনো মাথা চক্কর দিয়ে ওঠে।মাসের ২০ তারিখ পেরিয়ে গেছে।ভয় হচ্ছে ইয়ারাবীর।তারপর ও মনে মনে স্থির করলো আরো কয়েকদিন অপেক্ষা করবে।
কিন্তু ভয়টা চেঁপে বসেছে।দুদিন পার হয়ে গেলো।মাথা ঘুরার ব্যাপারটা বেড়ে চলছে।মুখের স্বাদ টা হারিয়ে গেছে।বান্ধুবীর মিলে ঠিক করেছে বাহিরে যাবে।ইয়ারাবী ওদের অপেক্ষা করতে বলে ওয়াশরুমে এলো।তারপর হঠাৎ ওর পুরো শরীর গুলিয়ে আসতেই বমির চাপ সামলাতে পারলোনা।বমি করে দিলো বেসিনে।কিন্তু দূর্ভাগ্যজনক ভাবে বমি কিছুটা জামাতে ও পড়ে গেলো।ইয়ারাবী দ্রুত ড্রেস পরিষ্কার করে ক্লাশে এলো।
আস্মিতা ইয়ারাবীর হাত ধরে বলল চল।ইয়ারাবী জানালো আজ না।শরীর খুব খারাপ লাগছে।বাসায় যাবো।স্নিগ্ধা বলল তুই ঠিক আছিস ইয়ারাবী?ইয়ারাবী মাথা নেড়ে ব্যাগ নিয়ে বেরিয়ে পড়লো।ঘরে গিয়ে নিজেকে থিক রাখতে পারলো না ইয়ারাবী।পরদিন কলেজ থেকে একজন গাইনোকোলোজিস্ট এর কাছে এলো ইয়ারাবী।ওর ব্লাড আর ইউরিন টেস্ট করালো।ডাক্তার ফারজানা আলম জানালো পরদিন রিপোর্ট পেয়ে যাবে ও।হাসপাতাল থেকে বের হতে মনে হলো কেউ যেন ওকে দেখছিলো।ভয় লাগতে থাকে ইয়ারাবীর।মাথায় ঘোমটা চেঁপে ঘরে চলে গেলো ও।
,
,
,
,
,
,
,
,
,
,
,
রোয়েনকে হাসপাতালে এডমিট করা হয়েছে।লাঞ্চ আওয়ারের পরেই ওর সার্জারি শুরু হবে।কেবিনে বসে আছে রুপন্তী রুহী আর রোয়েন।ঘন্টা খানিক বাদেই রোয়েনকে নিয়ে যাবে ওরা।রোয়েন গল্প করছে কিন্তু রুহী চুপচাপ।ওর চোখের কোনা জ্বলজ্বল করছে।কিছুক্ষন আগে বাসায় কথা হয়েছে।আরাবী কাঁদছিলো তবে রুহীর সামনে নয়।রুপন্তী বাহিরে গেলো ফোন রিসিভ করতে।রুহীর পাশে বসে রোয়েন।রুহীর হাত নিজের হাতে নিয়ে বলল,
রুহী জানি অনেক কষ্ট দিয়েছি।অনেক অন্যায় করেছি।রুহী মাফ করে দিও আমাকে প্লিজ।আরাবী আছে সবাই আছে।ভালো থাকবে তুমি।আমার রুহু কতক্ষন চলবে জানিনা কিন্তু প্রানপন লড়ে যাবো তোমার ফিরার জন্য।রুহী কাঁদছে ডুকরে।রোয়েন স্বাভাবিক ভাবে বলল কেঁদোনা রুহী।আমি আছি তোমার সাথে সবসময় থাকবো।ভালোবাসি রুহী।বলে উঠে রোয়েন।রুহী রোয়েনকে জড়িয়ে কাঁদতে লাগলো।কান্নার মাঝে রুহীর কথা গুলো বুঝতে পারলোনা রোয়েন।রুপন্তী রুমে ঢুকে নিজেকে খুব কষ্টে সামলিয়ে বলল ওয়ার্ড বয় আসছে জিজু কে যেতে হবে।রুহী রোয়েনকে ছাড়তে চাইছেনা।কোনমতে রোয়েনকে ছাড়ালো রুপন্তী।রোয়েন পেশেন্ট ড্রেস পরে রুহীকে আর রুপন্তীকে বুকে জড়িয়ে নিয়ে বেরিয়ে গেলো।রুহী আর রুপন্তী ও রোয়েনের পিছু নিলো।ওটিতে ঢুকানো হয়েছে রোয়েনকে।
ইয়ারাবী মনকে কোনভাবেই শান্ত রাখতে পারছেনা।একে জেঠুর অপারেশন তারপর ওর মান্থলি মিস হয়ে যাওয়া।টেস্ট রিপোর্ট।সব মিলিয়ে মাথা খারাপ হচ্ছে ইয়ারাবীর।ইয়ারাবী জানলো দীর্ঘ আটঘন্টার সার্জারির পর রোয়েনের অপারেশন সাকসেসফুল হয়েছে।পরদিন কেবিনে দিবে।
রুহী আর রুপন্তীর সাথে বাসার সবার কথা হয়েছে।রুহী আজ দুরাকাত নফল নামাজ আদায় করেছে আল্লাহর দরবারে।রোয়েনের সাথে দেখা করে এসেছে।কিন্তু কথা হয়নি।লোকটা কে একঝলক দেখেছে।কিছুক্ষন আগে ওনার বুক ফাঁড়া হয়েছিলো।সেদিন সারারাত দুচোখের পাতা এককরতে পারেনি রুহী।বিছানায় এপাশ ওপাশ করেছে ও।
চলবে