The Mysterious Man- Mafia Boss- Season-3 (Part-2)

The Mysterious Man- Mafia Boss- Season-3 (Part-2) Part- 36

সেদিনের পর থেকে অনেক বার চেষ্টা করে ও ইয়ারাবীর সাথে যোগাযোগ করতে পারেনি আরাভ।মেয়েটা ওর ফোন রিসিভ করছে না কলেজে ও যেয়ে পাচ্ছেনা মেয়েটাকে।বেশ অস্থির লাগছে আরাভের।কোন কিছুতেই মন বসছেনা ওর।সেদিন যদি নিজেকে একটু সংযত রাখতো তাহলে ইয়ারাবী ওর পাশে থাকতো,ওর সাথে কথা বলতো,হয়ত ভালোবাসাটাও হয়ে যেতো।কিন্তু সেদিন কি করে নিজেকে নিয়ন্ত্রনে রাখতো ও?মেয়েটার নৈকট্যে ও যে নিজেকে নিজের মাঝে রাখতে পারেনা।মাঝে মধ্যে খুব চিন্তা হয় আরাভের।মেয়েটা ভালো আছে তো?কোন ঝমেলা হয়নি তো?উপুড় হয়ে শুয়ে এমন নানান রকম ভাবনায় বিমোহিত আরাভ ইয়ারাবীর স্থিরচিত্রে চোখ বুলাচ্ছে।কন্টাকে গিয়ে ইয়ারাবীর নম্বরে কল দিলো।কল কেঁটে যাচ্ছে অপরপাশ থেকে।একে একে ৩০ টা কল দিলো আরাভ।সেই একই ভাবে কেঁটে যাচ্ছে।
মেসেজ অপশনে গিয়ে ইয়ারাবীর নম্বরে মেসেজ দিলো আরাভ
”এই মেয়ে জলদি কল রিসিভ করো।নাহলে ভীষন খারাপ হয়ে যাবে”
আরাভ অপেক্ষায় আছে অপর পাশ থেকে নরম অাঙ্গুলে লিখা কিছু অক্ষরের অপেক্ষায়।
কিন্তু অপরপাশ থেকে কোন জবাব এলো না প্রতিদিন কার মতো।
ইয়ারাবী খাটের কোনায় বসে কাঁদছিলো।এটাই এখন নিত্যদিনের সঙ্গী।কলেজে যাওয়া ভুলে গেছে ইয়ারাবী।রুম থেকে ও অতোটা বের হয়না।আরাভের মেসেজ টায় একবার চোখ বুলায় ইয়ারাবী।তারপর অনিচ্ছাসত্ত্বে ও ফোন টাকে বন্ধ করে দেয়।
রুপন্তী মেয়ের এ অবস্থা মানতে পারছেনা।এতোটা চুপচাপ কখনো দেখেনি মেয়েটাকে।কলেজে ও যাচ্ছেনা।কি হচ্ছে সেটা ও বলছেনা।কি চাইছে এই মেয়ে জানতে হবে রুপন্তীর।ইয়ারাবীর সামনে খাটের ওপর বসলো রুপন্তী।তারপর মেয়ের হাতে হাত রেখে বলল
,
,
,
,
,
,
,
,
,
,
,
-তুই ঠিক আছিস মামনি?
-হুম।আমি ঠিক আছি মাম্মা। বলে উঠে ইয়ারাবী।
-তোকে তো ঠিক লাগছেনা।চেহারার এ কি হাল করেছিস?নিজেকে আয়নায় একবার দেখেছিস?কলেজে ও যাচ্ছিস না।কি হলো তোর?
-ভালো লাগছেনা মাম্মা।কয়েকদিন রেস্ট চাই আমি প্লিজ।স্বাভাবিক গলায় বলল ইয়ারাবী।
-তোর সামনে পরীক্ষা ইয়ারাবী।বলে উঠে রুপন্তী।
-মাম্মা আমি ম্যানেজ করে নিবো সব।এখন ভালো লাগছেনা আমার।বলে উঠে ইয়ারাবী।
-ওকে যা ভালো মনে করিস।মেয়ের মাথা হাতিয়ে বেরিয়ে গেলো রুপন্তী।
,
,
,
,
,
,
,
,
,
,
,
ইয়ারাবী বুকে বালিশ চেঁপে ধরলো।গাড়ি থেকে বেরিয়ে ইয়ারাবী কে আরাভের বুকে জড়িয়ে নেয়ার ব্যাপারটা বেশ কষ্ট দিচ্ছে ওকে।তার বুকখানি বড় ভরসার জায়গা ছিলো।কিন্তু আরাভ ইয়ারয়বীর ছোট্ট হৃদয়খানিকে ভেঙ্গে দুমড়েমুচড়ে দিয়েছে।এতোদিন লোকটার ফোন কল না পেলে ওর রাতটা কাঁটতো না।কিন্তু এখন তার নামটা ও সেই রাতটার কথা মনে করিয়ে দেয়।এখন ওর রাতের সঙ্গী হলো বালিশ ভিজিয়ে ফেলা অশ্রু গুলো।বালিশে মুখ চেঁপে কাঁদতে শুরু করে ইয়ারাবী।
লোকটার কথা যে খালি মনে আসে ওর।কিন্তু লোকটাকে ভুলে যেতে চায় কিন্তু পারছেনা।কি করবে ইয়ারাবী?
রাত একটায় চারদিক নিস্তব্ধতায় ছেয়ে গেছে।বাসায় সবাই ঘুমিয়ে পড়েছে।ইয়ারাবী শুয়ে কাঁদছিলো।ওকে অনেকবার খেতে ডাকা হয়েছিলো কিন্তু যায়নি ও পেট ব্যাথার বাহানা দিয়ে।কিছু ভালো লাগছেনা ওর।খাওয়াটা ও গলা দিয়ে নামবেনা।আরাভের কল আসছে আর ইয়ারাবী বারবার কাঁটছে।হঠাৎ মেসেজ ইয়ারাবীর নম্বরে
”ব্যালকনিতে এসো।নয়তো তোমাদের দরজার সামনে গিয়ে বেল বাজাবো।সেটা অবশ্যই ভালো লাগবেনা।আমি অপেক্ষা করছি তোমার।”
ইয়ারাবী ধপ করে উঠে বসলো।ব্যালকনির থাই গ্লাসে কারোর ছায়ামুর্তি দেখতে পাচ্ছে ও।ইয়ারাবী ভাবছে কি করবে এখন ও?লোকটা যদি সত্যি সত্যি বাসার বেল বাজায় তাহলে মাম্মা পাপা উঠে যাবে।নাহ এসব হতে দেয়া যায়না।ইয়ারাবী উঠে দাঁড়িয়ে ব্যালকনির সামনে এলো।ব্যালকনির থাইগ্লাস সরাতেই আরাভ ওর হাত টেনে দেয়ালের মাঝে চেঁপে ধরলো।
,
,
,
,
,
,
,
,
,
,
,
আমার ফোন ধরো না কেন তুমি?ধমক দিলো আরাভ।
-আপনার সাথে কোন কথা বলতে চাইনা আমি।কেন এসেছেন এখানে?চলে যান।রেগে বলল ইয়ারাবী।
-কোথাও যাব না আমি।আমার উত্তর চাই। ফোন ধরোনি কেন আমার?ইয়ারাবীর কোমড় চেঁপে ওর কাছে চলে এসেছে আরাভ।
-ইয়ারাবী আরাভের দিকে চেয়ে আছে।ওদের ঠোঁটজোড়া লাগো লাগো।আরাভ একটু এগুতে গেলে ইয়ারাবী আরাভকে সজোরে ধাক্কা দিলো।কাছে আসবেননা আমার।বলে ঘরে ঢুকে গেলো ইয়ারাবী।
,
,
,
,
,
,
,
,
,
,
,
আরাভ ও ঘরে ঢুকে ইয়ারাবীর হাত চেঁপে টেনে নিজের সাথে মিশিয়ে নিলো।এমন করছো কেন তুমি।দেখো সেই রাতে আমি,,,,, আরাভ কে থামিয়ে দিলো ইয়ারাবী দেখুন আমি কোন কথা শুনতে চাইনা আপনার।প্লিজ চলে যান। নাহলে আমি এক্ষুনি কিছু একটা করে বসবো।রেগে বলল ইয়ারাবী।আরাভের হাত আলগা হয়ে এলো ইয়ারাবীর হাত থেকে।ইয়ারাবী সরে এলো।আরাভ বলল ইয়ারাবী দেখো সেই রাতে তুমি,,,,,,দেখেন আপনি যদি কিছু বলেননা খুব খারাপ হয়ে যাবে।কথাটা বলে ইয়ারাবী নিজ হাতে ছুড়ি চেঁপে ধরলো।এর থেকে ভালো চাইলে এক্ষুনি চলে যান।নয়তো নিজেকে শেষ করে দিবো।বলে উঠে ইয়ারাবী।আরাভ ইয়ারাবীর হাত থেকে ছুড়ি জোর করে ধরে ফেলে দিয়ে কাছে এসে ওর কাঁধ চেঁপে ধরে ইয়ারাবীর গাল জোর করে ধরে ওর কপালে গালে চুমু এঁকে দিলো। ইয়ারাবী চোখ বুজে আরাভের স্পর্শ অনূভব করছে।তারপর হঠৎ ওর চোখের সামনে সেই সকালের চিত্র ফু্টে উঠতেই ইয়ারাবী আরাভকে ধাক্কা দিয়ে সরিয়ে বলল আপনারা না এগুলোই পারেন।শরীরটাই তো আপনাদের চাই।সেদিন তো আমার সাথে ইন্টিমেট হলেন।এখন আপনাকে মাফ করলে আপনার কথায় রাজি হলে আপনি আবার ও আমার সাথে ঐ একই কাজ করবেন।আর যখন আপনার মনোবাসনা পূরন হবে তখন ছেড়ে দিবেন আমাকে।নতুন শিকার খুঁজে নিবেন আপনার পৈশাচিকতা প্রকাশ করতে। আরাভ থমকে গেছে।ওর ইয়ারাবী এসব কি বলছে।আপনাকে খুব বিশ্বাস করতাম।আপনার পাশে সিকিউর ফিল করতাম।কিন্ত এখন ঘিন্না লাগে নিজের ওপর যে আমি আপনাকে বিশ্বাস করেছি।আরাভ বলল ইয়ারাবী আমি তোমাকে খুব ভালোবাসি।কিন্তু তুমি আমাকে অবিশ্বাস করেছো আমার চরিত্রের ওপর সন্দেহ করেছো।আমি আর কখনো তোমার সামনে আসবো না কিন্তু তুমিই আমার কাছে আসবা।ইয়ারাবীর ঠোঁটের কোনে জোর করে চুমু দিয়ে আগের মতো ব্যালকনি দিয়ে নেমে গেলো।ইয়ারাবী দৌড়ে ব্যালকনিতে এলো।তারপর নিচে তাকায় ও।আরাভ চলে গেছে।
আরাবী শাড়ীটা পরে নিজেকে খুব সুন্দর করে রাঙ্গিয়ে নিয়েছে আর্ভিনের রং এ।তারপর নিজেকে আরেকবার আয়নায় দেখে বেরিয়ে পড়লো বীচসাইডে যাওয়ার জন্য।সেখানে পৌছুতে আরেকটা লোক এসে একটা চিরকুট দিলো।সেখানে লিখা”পুর্নিমার চাঁদটাও লজ্জা পাবে তোমায় দেখে।ডান সাইডে তাকাও।দেখতে পাবে তোমার অপেক্ষায় আজ আমি সমুদ্রের কিনারে দাঁড়িয়ে।”ইয়ারাবী ডান দিকে চেয়ে খেয়াল করলো খুব সুন্দর লাইটিং আর মোমবাতি জ্বালানো।আজ বীচ সাইড পুরাই খালি।বেশ অবাক হলো আরাবী।একটু কাছে আসতেই আর্ভিনকে ও দেখলো আরাবী।আরাবী কাছে আসতেই আর্ভিন ওর হাত ধরে টেবিলে এনে বসালো।দুজনে মিলে ডিনার করলো।
ডিনার শেষে আর্ভিন আরাবীর হাত টেনে দাঁড় করালো।কোথা থেকে যেন মুহাব্বাত বারসা দেনা তু গানটা বেজে উঠেছে।গানের তালে তালে আরাবীর কোমড় জড়িয়ে নাচতে লাগলো আর্ভিন।হঠাৎ নিচে বসে পড়লো আর্ভিন হাঁটু গেড়ে।তারপর আরাবীর পা নিজের রানের ওপর উঠিয়ে বলল উইল ইউ মেরি মি আরাবী?আ’ম মেডলি ইন লাভ উইথ ইউ।আরাবী কি বলবে ভেবে পাচ্ছেনা।তারপর হেসে মাথা ঝাঁকিয়ে আরাবী বলল ইয়েস আই উইল।আরাভ নুপুর পরালো।
,
,
,
,
,
,
,
,
,
,
,
-সবাই রিং দিয়ে প্রপোজ করে আর তুমি নুপুর দিয়ে।বলে উঠে আরাবী।
-রিং দিয়ে সবাই প্রপোজ করে জানি।কিন্তু মনে করো আজ আমার ভালবাসার বাঁধনে বেঁধে নিলাম তোমায়।যতোবার এটা বাজবে মনে হবে তুমি আমার আশেপাশে আছো।আমার হৃদয়ের মাঝে আছো।আর যতোবার বাজবে তুমি আর কারো হতে পারবেনা।এর প্রত্যেকটা শব্দ তোমাকে আমার কাছে নিয়ে আসবে।আমার কথা মনে করিয়ে দিবে।মনে করিয়ে দিবে তুমি শুধু আমার।আরাবীর হাত নিয়ে আর্ভিন বলল রিং তো তোমায় দিবোই।বলে আরাবীর হাতের আঙ্গুলে আংটি পরিয়ে দিলো।
,
,
,
,
,
,
,
,
,
,
,
তারপর আরাবীী হাত ধরে সমুদ্রের কিনার ঘেষে হাঁটতে লাগলো আর্ভিন।আরাবী বারবার আর্ভিনকে দেখছে।আর্ভিন আরাবীর কোমড় জড়িয়ে নিজের কাছে টেনে নিলো।সমুদ্রের পানি ওদের পা ভিজিয়ে দিচ্ছে।রাত একটার দিকে হোটেলে ফিরে এলো আরাবী আর্ভিন।হোটেল রুমে ঢুকতেই আরাবী কে জড়িয়ে ধরে ওর ঠোঁট জোড়াকে নিজের আয়ত্বে নিয়ে নিলো আর্ভিন।চোখ বুজে চুমু খেতে শুরু করলো আরাবীকে।আরাবী আজ পুরোদমে সাপোর্ট দিচ্ছে আর্ভিনকে।আরাবীর ঠোঁটের আশপাশ ভিজে যাচ্ছে আর্ভিনের ঠোঁটের স্পর্শে।আরাবীর ঠোঁট থেকে সরে এসে ওর গলায় মুখ ডুবায় আর্ভিন।বেশকিছুক্ষন পর দুজন টায়ার্ড হয়ে বিছানায় শুয়ে পড়লো।আর্ভিন নিজের বিছানায় চলে গেলো।
সকালে ফ্রেশ হয়ে বেরিয়ে গেলো আর্ভিন।আরাবী ফোনে ব্যাস্ত ছিলো।আর্ভিন নাস্তা নিয়ে ঘরে ফিরতেই খেয়াল করলো আরাবী কাঁদছে।ওর চোখ মুখ ফুলে গেছে একদম।আর্ভিন ট্রে রেখে আরাবীর কাছে এসে বসলো।
,
,
,
,
,
,
,
,
,
,
,
-কি হলো আরাবী?
-আমি ঢাকায় যাবো আর্ভিন এক্ষুনি।
-কেন কি হলো?বিকেলে আমরা ফিরে যাবো আরাবী।
-না আর্ভিন প্লিজ জলদি চলুন।আমি এক্ষুনি যাবো।কেঁদে কেঁদে বলছে আরাবী।
-কি হলো কি?বলবে তো?আরাবীর চিবুক ধরে বলল আর্ভিন।
-বাবাই খুব অসুস্থ আর্ভিন।ওনার হার্টে ব্লক ধরা পড়েছে।প্লিজ জলদি চলুন
-আর্ভিন আর কিছু জিজ্ঞেস করতে পারলোনা।তড়িঘড়ি করে ব্যাগ গুছাতে লাগলো।আরাবী তুমি নাস্তা করে নাও।
-আর্ভিন না বাবাকে দেখার আগ পর্যন্ত আমার গলা দিয়ে একফোঁটা পানি ও নামবে না।কাঁদছিলো আরাবী।
চলবে