Married To The Dark King- Mafia Boss- Season 3 !! Part- 74
একে অপরের ঘ্রানে মিশে ছিলো সারারাত।যতো ভালোবাসে ততোবেশি ভালবাসতে মন চায়।রুহীর ঘ্রানে মাতাল রোয়েন।রুহীর মায়া জালে সেই প্রথম দিন থেকেই ফেঁসে গেছে রোয়েন।নিজেকে আরো ফাঁসাতে চায় রোয়েন।সারাজীবন রুহীর প্রেমের জালে ফেঁসে থাকতে চায় রোয়েন।রুহীর ঠোঁটে গভীর চুমু দিয়ে আলতো করে পাঁচ ছয়টা চুমু দিয়ে মাথা তুলে তাকায় রোয়েন।রুহী ঘুমের রুপকথার রাজ্যে পাড়ি দিয়েছে।
রোয়েন রুহীর কপালে ঠোঁট ছুঁয়ে উঠে ফ্রেশ হতে চলে যায়।
ফ্রেশ হয়ে নিচে নেমে যায় রোয়েন।রুহী কিছুই খেতে চায়না।স্পাইশি খাবার খেতে অবশ্য না করেনা।রুহীর জন্য স্পাইশি স্প্যাগেটি বানালো।একটু টক করে বানিয়েছে।যেন খেতে পারে।অবশ্য ঝাল কমিয়ে দিয়েছে।
ঘুম ভেঙ্গে উঠে বসে রুহী।দুহাত উপরে তুলে আড়মোড়া ভেঙ্গে নিলো।সকালটা ভীষন ফ্রেশ লাগছে।খাট থেকে নেমে সামনে আগাতে নিবে তখনই ধপ করে খাটের ওপর বসে পড়ে রুহী।দুহাতে মাথা চেঁপে ধরে।চোখের সামনে সব কেমন যেন ঝাপসা হয়ে আসছে।আরেকটু হলে পড়েই যেতো।রোয়েন রুমে এসে রুহীকে ওভাবে বসে থাকতে দেখে দৌড়ে ওর কাছে এসে দাঁড়ালো।
-রুহী কি হয়েছে?রুহীর হাত ধরে বলে রোয়েন।
-জানিনা,মাথা ঘুরাচ্ছে।
-রোয়েন রুহীর হাত ধরে উঠিয়ে ওয়াশরুমে নিয়ে ফ্রেশ করিয়ে দিলো।
রুহীকে নিয়ে ওয়াশরুম থেকে বেরিয়ে আসে রোয়েন।রুহীকে ধরে খাটে বসিয়ে ওর হাতে স্প্যাগেটির বাটি ধরিয়ে রুহীর চুল মুছতে লাগলো।
-বাহ!! খুব ভালো হয়েছে।বলে উঠে রুহী।
-থ্যাংক ইউ।আরো দিবো?জিজ্ঞেস করে রোয়েন।
-আরে না না পাগল?ইটস এনাফ।বলে উঠে রুহী।
-ওকে খেয়ে নাও।বের হবো।শপিং এ যেতে হবে।ওরা ও যাবে।বলে উঠে রোয়েন।
রুহী মাথা উঠিয়ে রোয়েনের দিকে তাকায়।
-ওরা মানে?কারা?জিজ্ঞেস করে উঠে রুহী।
-আমার মা বাবা রেহান রুপন্তী।তোমার বাবাকে ও বলেছিলাম পার্টিতে এ্যাটেন্ড করতে।ওনার মিটিং আছে তাই আসবেননা।বলে উঠে রোয়েন।
-ওহ আচ্ছা।রুহী স্প্যাগেটি টুকু শেষ করে উঠে রেডি হয়ে নিলো।রোয়েন রুহীকে নিয়ে বেরিয়ে পড়লো আজিজ রায়হানের বাসার উদ্দেশ্যে। সেখান থেকে রেহান রুপন্তী,সাইফ রাহমান আর রায়না রাহমান কে নিয়ে বেরিয়ে পড়লো শপিংমলের উদ্দেশ্যে।রুপন্তী আর রুহী ডিজাইন মিলিয়ে নেটের শাড়ী কিনলো।রুপন্তীর টা হোয়াইট আর রুহীর টা জাম কালারের।
সাইফ রাহমান রায়না রাহমানের অফহোয়াইট রং এর একটা কাতান শাড়ী কিনলো।সেই সাথে কিছু অর্নামেন্টস।
♦♦♦
শপিং সেড়ে রাস্তায় এলো ওরা।ভ্যানে একজন লোক আইস্ক্রিম বিক্রি করছে।তা দেখে রায়না রাহমান আইসক্রিম খাওয়ার জেদ ধরলেন।
রুপন্তী রুহীকে জিজ্ঞেস করতেই রাজি হয়ে গেলো ওরা।
রোয়েন সবার জন্য আইসক্রিম নিলো।রুহী নিজের আইসক্রিমটা ছিড়ে রোয়েনের দিকে ধরলো।রোয়েন রুহী কে খাইয়ে দিলো।রুহীর ঠোঁটের কোনে লেগে থাকা আইস্ক্রিম টার ওপর ভীষন লোভ হচ্ছে রোয়েনের।জিভ দিয়ে রুহীর ঠোঁটের কোনায় লিক করে খেয়ে নিলো আইসক্রিম টুকু।
-আরেহ।কেউ দেখে ফেল,,,,,রোয়েনের রুহীর ঠোঁটে আঙ্গুল রাখলো।
-শশশ আমার ভালোবাসা জারি থাকবেই সব সময় সব জায়গায়।
রুহীর মুখ লাল হয়ে এলো।তারপর অন্যদিকে ফিরে গেলো রুহী।এ লোকটা ও না।কখন কি করে ফেলে বলা যায়না।মনে মনে বলতে থাকে রুহী।
রুপন্তী আর রেহান আইসক্রীম খাওয়ার ফাঁকে গল্প করেই চলছে।সাইফ রাহমান রায়না রাহমান একে অপরকে আইসক্রীম খাইয়ে দিচ্ছেন।রায়না রাহমানের ঠোঁটটাকে ছুঁয়ে দিচ্ছেন আইস্ক্রিম মুছার ছলে।
রায়না রাহমান লজ্জা মাখা হাসি দিয়ে সাইফ রাহমানকে আইসক্রিম খাওয়াচ্ছেন।
দূর থেকে এসব দেখে আর সহ্য হচ্ছিলোনা সাজিদ রায়হানের।ভীষন ক্ষোভ হচ্ছে নিজের ওপর।রোয়েন রুহী একটু দূরে থাকায় তাদের দেখতে পারেননি সাজিদ রায়হান।বিকেলে ঘরে ফিরে এলো সবাই।অবশ্য রোয়েনের ঘরেই এসেছে।তাহলে রেডি হয়ে বেরিয়ে পড়া যাবে।ঘরে হালকা কিছু খেয়ে নিয়ে রেডি হতে ব্যাস্ত হয়ে পড়লো ওরা।রুপন্তীকে শাড়ী পরিয়ে নিজে শাড়ী পরে নিলো রুহী।দুজনেই খুব সুন্দর করে সেজেছে।রেহান তো আজ ট্যারা হয়ে যাবে রুপন্তীকে দেখলে।আর রুহীকে দেখলে রোয়েনের কি অবস্থা হবে সেটা হয়ত বলতে হবেনা?
দুইবোন রেডি হয়ে নিচে নেমে এলো।রেহান চোখ বড় বড় করে রুপন্তীকে দেখছে।বড় নিশ্বাস বেরিয়ে এলো বুক চিরে আর মুখ ফঁসকে বেরিয়ে এলো Gorgeous!!!!
ফোনে কথা শেষ করে রোয়েন ডাইনিং রুমে এসে রুহীকে দেখতে পায়।রুহী ও রোয়েনের থেকে চোখ সরাতেই পারছেনা।
কালো যেন রোয়েনের জন্যই তৈরি।এই লোকটাকে এতো মানায়।রুহী নিজের মাঝেই থাকেনা রোয়েন কে কালো কোটে দেখলে।
হাইট তো মাশাল্লাহ।মুখে খোঁচা খোঁচা দাড়ি, মায়াবী চোখ।ড্যাম হ্যান্ডসাম আমার বরটা ভাবতে থাকে রুহী।
রোয়েনের ঠোঁটের কোনে বাঁকা হাসি।তুমি তো শেষ ডার্লিং।ঘরে ফিরেই দেখোনা কি হাল করি?আর কতো নেশা জাগাবা?
তোমার নেশায় তো মাতাল এই কোব্রা লিডার।এই নেশা যে ছাড়ানো অসম্ভব হয়ে পড়ছে।
রুহী রোয়েনের চোখের ভাষা পড়তে পারছে।মুখ লাল হয়ে এলো লজ্জায়।তারপর মাথা নেড়ে দুষ্টু হাসি দিলো।
♦♦♦
পার্টিতে চলে এলো ওরা।রোয়েনের হাতের ভিতর হাত ঢুকিয়ে হেঁটে ভিতরে এলো রুহী।রোয়েনের গুলসানের গার্ডেন হাউজে হচ্ছে পার্টিটা।রোয়েনের লোকেরা দৌড়ে ওদের কাছে এলো।সবাই ওদের প্রশংসা করছে।রফিক আর তার স্ত্রী আর মেয়ে এলো রোয়েন আর রুহীর কাছে।
রফিকের মেয়ের নাম রামিসা।রফিক মেয়ের সামনে মাথা নিচু করে বলল,
-মামনি আঙ্কেল আন্টিকে সালাম দাও।
-আসসালমু আলাইকুম আঙ্কেল, আসসালামু আলাইকুম আন্টি।বলে উঠে রামিসা।
রোয়েন আর রুহী রামিসা আদর করে দিলো।
-কেমন আছো মামুনি?রুহী বলে উঠে।
-জি আন্টি ভালো।হেসে বলল রামিসা।
-রুহী ওনি অনন্যা।রফিকের স্ত্রী।একজন বোরকা ওয়ালা মহিলার দিকে ইশারা করলো রোয়েন।
অনন্যা ওদের দিকে এগিয়ে এলো।
-স্যার ভালো আছেন?(অনন্যা)
-হুম।ওর রুহী আমার ওয়াইফ।বলে উঠে রোয়েন।অনন্যা রুহীর হাত ধরে বলল ভাবি চলেন সবার সাথে দেখা করাই।
-জি চলুন।রুপন্তী আয় আমার সাথে।বলে উঠে রুহী।
রুপন্তী ওদের সাথে চলে গেলো।রোয়েন রেহান আর সাইফ সবার সাথে গল্পে মেতে উঠলো।
রুহী, অনন্যা,রুপন্তী আর অন্যান্য ভাবিরা গল্প করেছে পুরো পার্টিতে।
খাওয়া দাওয়া ড্রিংকস শেষে সবাই জোর করতে লাগলো রোয়েন আর রুহীকে কাপল ড্যান্সের জন্য।
রুহী হাত দিয়ে ইশারা করছিলো ও নাচবেনা।ঠিক সেই সময়ে রোয়েন রুহীর হাত ধরে টেনের বুকে জড়িয়ে নিলো।রুহীর কোমড় জড়িয়ে নাচতে লাগলো রোয়েন।
হঠাৎ নাচের মাঝেই রুহীর চোখ ঝাপসা হয়ে আসে।মাথা কেমন যেন করে উঠে।রুহী কে দেখে স্বাভাবিক লাগছেনা রোয়েনের।
-রুহী আর ইউ ওকে?রোয়েন জিজ্ঞেস করে উঠে নাচের মাঝেই।
-রুহী কিছু বলতে পারছেনা।
-রোয়েন থেমে গেলো।রুহীর মাথা ঢলে পড়লো রোয়েনের কাঁধে।
রোয়েন জড়িয়ে ধরলো ওর মায়াবতীকে।
রুহীকে হাসপাতালে নিয়ে আসে রোয়েন।লন্ডন থেকে ইন্টার্নি করে আসার পর রোয়েনের জন্য একটা কেবিন বরাদ্দ করা ছিলো।
হাসপাতালে এসে জানতে পারে সাজ্জাদ ছুটিতে আমেরিকা গেছে।রোয়েন রুহী রুপন্তী রেহান সাইফ রাহমান আর রায়না রাহমান পাঠিয়ে রুহীকে নিয়ে নিজের কেবিনে চলে এলো।
রুহী কে বেডে শুইয়ে রোয়েন রুহীর পাশের টুলে বসলো।রুহীর মাথায় হাত রাখলো রোয়েন।তারপর রুহীকে চেক করে চিন্তায় পড়ে যায় রোয়েন।যেটা ও ভাবছে আসলে কি সেটাই?
রোয়েন রুহীকে বাসায় নিয়ে এলো।রুহীকে ঘুম পাড়িয়ে রোয়েন ওর স্টাডি টেবিলে বসে পড়লো।সারারাত স্টাডি করে একটা রিপোর্ট তৈরি করলো।
সকাল বেলা ঘুম ভাঙ্গে রুহীর। আশেপাশে তাকিয়ে উঠে বসতে নিবে তখনই আচমকা রোয়েন রুহীকে ধরে বসিয়ে দিয়ে ওর কপালে ঠোঁট ছুঁইয়ে দিলো।
তারপর রুহীর থেকে একটু সরে এসে বলল ভালবাসি বৌ।
চলবে