Married To The Dark King- Mafia Boss- Season 3 !! Part- 69
ওনি এখানে হঠাৎ?এখানে তো আসারই কথা না।ঠিকানা পেলো কই ওনি?ভাবতে থাকে রোয়েন।দৌড়ে মেইন গেটের সামনে চলে যেতে থাকে রোয়েন।স্বামীকে এভাবে দৌড়াতে দেখে রুহী অবাক হয়ে রোয়েনের যাওয়ার দিকে তাকিয়ে থাকলো।মেইন গেটের সামনে এসে রোয়েন আশেপাশে সাজিদ রায়হানকে খুঁজার চেষ্টা করছে।জামাই বাবা কাকে খুঁজছেন?দারোয়ান জিজ্ঞেস করে উঠলো।একজন বয়স্ক লোক এসেছিলো একটা ফর্সা বিদেশী মেয়েকে নিয়ে দেখেছেন?জিজ্ঞেস করলো রোয়েন।হ দেখছি।গেট দিয়া খুব তাড়াহুড়া কইরা বাইর অইয়া গেলো।রোয়েন কিছুটা চিন্তিত হয়ে বাহিরে তাকিয়ে রইলো।
রুহীর কাছে এসে দাঁড়ালো আজিজ রায়হান।রুহী রোয়েন কই রে মা?তোর সালাম আঙ্কেল ওর সাথে দেখা করার জন্য দাঁড়িয়ে আছে। ওনার যেতে দেরি হয়ে যাবে।একনাগাড়ে কথা গুলো বলে মেয়ের দিকে তাকালেন আজিজ রায়হান।হঠাৎ কি যেন হলো দৌড়ে বাহিরে চলে গেলো।আজিজ রায়হান ফোন বের করে রোয়েনের নম্বরে কল করতেই নম্বর বিজি পেলো।দরজার দিকে তাকায় আজিজ রায়হান।রোয়েন পকেটে ফোন ঢুকিয়ে ভিতরে এলো।ভ্রু কুঁচকে আজিজ রায়হানের কাছে এসে দাঁড়ায় রোয়েন।কল দিয়েছিলেন?বলে উঠে রোয়েন।জি আমার এক কাজিন তোমার জন্য অপেক্ষা করছে।ওদের বাসা দুর তাই তাড়াহুড়োয় আছে ও।বলে উঠলেন আজিজ রায়হান।ওকে,চলুন ওনার কাছে।বলে আজিজ রায়হানের সাথে সালাম সাহেবের কাছে এলো রোয়েন।সালাম ও রোয়েন রুহীর হাসবেন্ড।আসসালামু আলাইকুম আঙ্কেল।বলে উঠে রোয়েন।ওয়ালাইকুম আসসালাম রোয়েন।কেমন আছো?জিজ্ঞেস করে উঠেন সালাম সাহেব।জি আঙ্কেল ভালো।হালকা হাসে রোয়েন।আচ্ছা আজিজ তাহলে আজ আসি আমি।মেয়ে আর জামাইদের নিয়ে বাসায় এসো।ভালো লাগবে আমার।বলে উঠেন সালাম সাহেব।জি অবশ্যই আবার আসবা কিন্তু সালাম।বলে উঠেন আজিজ রায়হান।জামাই বাবা বাসায় এসো রোয়েন কে বলে উঠেন সালাম সাহেব।জি আঙ্কেল ইনশাল্লাহ।বলে উঠে রোয়েন।সালাম সাহেব চলে গেলো।সব গেস্টদের বিদায় দিয়ে যার যার রুমে চলে যায় সবাই।খাটে বসে রোয়েন সাজিদ রায়হানের কথা ভাবছে।এই লোক হঠাৎ এ বাসায় কি করে পৌছালো।কে ঠিকানা দিলো ওনাকে?ভাবতে থাকে রোয়েন।রুহী পিছনে হাত দিয়ে ব্লাউজের ফিতা খুলার চেষ্টা করছে।না পেরে কিছুক্ষন হাত দুটোকে ঝাড়লো রুহী।আবার ফিতা খুলার চেষ্টায় ব্যাস্ত হয়ে পড়লো।রাগী চোখে রোয়েনের দিকে তাকায় রুহী।
এই লোকটাকি বুঝতে পারছেনা তার সাহায্য দরকার।এই শুনো একটু সাহায্য করোনা বলে উঠে রুহী।রোয়েনের কানে রুহীর কথা যাচ্ছেনা।আবার ও ডাকে রুহী কিন্তু রোয়েন আগের মতোই বসে আছে।রুহী কোন মতে ফিতা খুলে নিয়ে সুতির একটা স্যালোয়ার কামিজ নিয়ে ওয়াশরুমে ঢুকে পড়লো।দরজা বন্ধ করার শব্দে চিন্তায় বাঁধা আসে রোয়েনের।রুহী একটু রাগ করেই দরজা লাগিয়েছে।এতো কিসের ব্যাস্ততা যে বৌয়ের ডাক ও কান পর্যন্ত যায়না? হুহ বিড়বিড় করতে থাকে রুহী।রুপন্তী বারান্দায় বসে আংটি টাকে ঘুরিয়ে ঘুরিয়ে দেখছে।রেহানের ভালোবাসার যত্নের প্রতীক আংটিটা।রুপন্তীর চোখের সামনে রেহানের পরানোর দৃশ্য রেহানের চোখ বাঁধা অবস্থায় দৌড়ে এসে রুপন্তীকে জড়িয়ে ধরা,নাচের সময় ওর চোখের পাতায় ফুঁ দেয়া প্রতিটি স্মৃতি ময় হয়ে আছে রুপন্তীর চোখে।উফ কি ছিলো সেই সময়টা!!! একদম ভালোবাসায় পরিপূর্ন। ওদের ও বিয়ে হবে।রুপন্তী ও রেহানের বৌ হবে।ওদের ও ছোট্ট একটা সংসার হবে।ভেবেই লজ্জায় লাল নীল হতে থাকে রুপন্তী।হঠাৎ কাঁধের ওপর গরম একটা বাতাস এসে লাগে রুপন্তীর।পুরো শরীর বেয়ে একটা শীতল শিহরন বয়ে গেলো।দুটো হাত রুপন্তীর কাঁধ ছাড়িয়ে ওর কুনুই পর্যন্ত এসে থেমে গেলো।
মায়ায় চোখ বুজে রুপন্তী।ওর নিশ্বাস ভারি হতে শুরু করলো।পিছনের ব্যাক্তির ভারি নিশ্বাস গুলো রুপন্তীর শরীর মন হৃদয়কে ছুঁয়ে দিচ্ছে।রুপন্তীর দম বন্ধ হয়ে যেতে চাইছে।শরীর যেন অবশ হয়ে আসছে।নিশ্বাস যতো দ্রুত পড়ছে পিছনের ব্যাক্তির নিশ্বাস আরো গভীর ভাবে রুপন্তীর ঘাড়ে লাগছে।রুপন্তী কাঁপা গলায় -বলে উঠলো রেহান!!!
-হুম।পিছন থেকে বলে উঠে সে।
-ভালবাসি রেহান,আপনাকে ভালোবাসি।
-আমি ও ভালবাসি।তোমাকে চাই আমি।
বলে উঠে রেহান।রুপন্তী যেন উন্মাদ হয়ে যাচ্ছে রেহানের নেশায়।রেহান রুপন্তীর কাঁধে ঠোঁট ছুঁয়ে দিয়ে ওকে নিজের দিকে ফিরালো।রুপন্তী রেহানের গেঞ্জীটাকে খাঁমচে ধরে রেহানের গালে চুমু দিয়ে একটু সরে চোখ খুলে নিলো।রেহান পলকহীন ভাবে রুপন্তীকে দেখছে।রুপন্তীর চোখ থেকে চোখ সরিয়ে ওর ঠোঁটের দিকে তাকায় রেহান।তারপর রুপন্তীকে বুকে টেনে নিয়ে ওর ঠোঁটে ঠোঁট মিলায় রেহান।
ফ্রেশ হয়ে বেরিয়ে আসে রুহী।খাটের দিকে তাকিয়ে রোয়েনকে পায়না ও।একরাশ বিরক্তি নিয়ে খাটের কাছে এসে দাঁড়াতেই খুব শক্ত করে ওর পেট জড়িয়েরু ধরলো কেউ।
ডাকছিলে তখন,শুনতে পাইনি। সরি বলে উঠে রোয়েন।রুহী রোয়েনকে সরিয়ে খাটে এসে বসলো।রোয়েন রুহীর পাশে এসে বসলো।আরে বললাম তো সরি।রাগ করছো কেন?বলে রুহীর হাত ধরে রোয়েন।রুহী হাত ছাড়িয়ে নিয়ে একটু সরে বসলো।রোয়েন রুহীর কাছে এগিয়ে এসে ওর চুল মুখ ডুবায়।রুহী রোয়েনকে সরিয়ে আরেকটু সরে বসলো।রুহীর হাত শক্ত করে ধরে নিজের কাছে নিয়ে আসে রোয়েন।রুহী কে ওর দিকে ফিরিয়ে চুমু খেতে যাবে তখনই রোয়েনকে সরিয়ে দিলো রুহী।এবার ভীষন রাগ হয় রোয়েনের।
-কি হলো তোমার? এমন এ্যাবসার্ড আচরন করছো কেন?ধমক দিয়ে বলল রোয়েন।
-রুহী চুপচাপ বসে আছে।
-কি হলো জিজ্ঞেস করছি কিছু।বলো না কেন?
এমন করছো কেন?অন্যসময় আদর নিতে ব্যাকুল হয়ে থাকো।আর আজ কি হলো?রাগী গলায় বলল রোয়েন।
রুহী এবার কেঁদেই দিলো।
-আবার কি হলো?কাঁদছো কেন?জিজ্ঞেস করে উঠে রোয়েন।
রুহী কাঁদছে।কিছুই বলছেনা।
-আশ্চর্য কিছু তো বলো।না বললে কেমনে বুঝবো?
জিজ্ঞেস করে রোয়েন।
রুহী কোনমতে নিজেকে সামলিয়ে নিয়ে বলল কয়টাদিন আমার থেকে একটু দূরে থাকো প্লিজ।
জাাস্ট সেভেন ডেইজ রোয়েন।আমার ভালো লাগছেনা।পেট ব্যাথা হাত পা কামড়াচ্ছে।রোয়েন হালকা হেসে রুহীর মাথায় চুমু খেলো।এটা তো বললেই পারতা।আমি তোমার হাসবেন্ড রুহী।আমার কাছে এতো দ্বিধাবোধ কেন?রুহী মুচকি হেসে রোয়েনের দিকে তাকায়।রোয়েন রুহীর গালে কপালে চুমু দিয়ে ওকে ধরে খাটে হেলান দিয়ে বসালো।বসো আমি এক্ষুনি আসছি।বলেই বেরিয়ে যায় রোয়েন।রুহী মুচকি হেসে রোয়েনের যাওয়ার দিকে চেয়ে থাকে।রেহান রুপন্তীর গলায় কাঁধে অনবরত চুমু বর্ষন করে রুপন্তীকে কোলে তুলে নেয় রেহান।রুপন্তীকে খাটে শুইয়ে ওর গলায় মুখ ডুবিয়ে দেয়।বেশ কিছুক্ষন পর রুপন্তীর গলা থেকে সরে ওর পেটে ঠোঁট ছুঁইয়ে মাথা তুলে রেহান।তারপর হেসে রুপন্তীর কপালে ঠোঁট বুলিয়ে বেরিয়ে যায়।কিছুক্ষন পর রোয়েন দুটো ট্যাবলেট আর একবাটি গরম সুপ নিয়ে রুমে আসে।রুহী উঠে বসতে চাইলে ওকে থামিয়ে দেয় এভাবেই থাকো।রুহী নড়লোনা।রোয়েন নিজ হাতে রুহীকে সুপ খাইয়ে দিয়ে গ্যাস্ট্রিকের ট্যাবলেট আর পেইন কিলার টা খাইয়ে দিলো।রুহীর মাথার চুল আলতো হাতে টেনে দিচ্ছে রোয়েন।রুহী মুচকি হেসে রোয়েনকে দেখছে।ঘুমাবেনা?জিজ্ঞেস করে উঠে রুহী।
তুমি ঘুমাও।বলে উঠে রোয়েন।পরদিন রুহীকে নিয়ে বাসায় চলে আসে রোয়েন।রুহীর দিকে বিশেষ খেয়াল রাখছে ও।চকলেট, টক ঝাল আচার, রুহীকে শুইয়ে দেয়া,ওর পছন্দ অপছন্দের খেয়াল রাখা,মাঝে মধ্যে চুল ধুইয়ে দেয়ার সবই করছে রোয়েন।
এভাবে সাতটাদিন পার হয়ে গেলো।রোয়েন আর রুহীকে সাজিদ রায়হান যেতে বলেছেন ওনার বাসায়।রোয়েন না করতে পারলোনা।সাজিদ রায়হানের দেয়া গিফট গুলোই পরে নিলো ওরা।রোয়েনকে ব্লাক কমপ্লিট সুট আর রুহীকে ডার্ক ব্লু শাড়ী আর কিছু অর্নামেন্টস দিয়েছেন সাজিদ রায়হান।ওনার বাসায় গিয়ে ওরা খেয়াল করলো সাজিদ রায়হান অসুস্থ।ওনার গার্লফ্রেন্ড টা নেই সেখানে।সার্ভেন্টরা বলল ওনি কিছুই মুখে নিচ্ছেননা।কোন কিছুই নাকি ভালো লাগছেনা ওনার।রুহী সাজিদ রায়হানের রুমে এলো।রোয়েন ওনার খাটের পাশে চেয়ারে বসে আছে।আপনি নাকি কিছু খান নাই?জিজ্ঞাস করে উঠে রুহী।
না। ভালো লাগছেনা মুখে।বলে উঠেন সাজিদ রায়হান।রুহী বেরিয়ে গেলো রুম থেকে।নিজ হাতে সুপ বানিয়ে আনলো সাজিদ রায়হানের রুমে।নিজ হাতে ওনাকে সুও খাইয়ে দিলো।
-রোয়েন আমার খুব ভালো বন্ধু।কিন্তু তুমি আমার মেয়ে আজ থেকে।বলে উঠেন সাজিদ রায়হান।
-রুহী মুচকি হাসলো।জি আঙ্কেল অবশ্যই।
রোয়েন তোমার বৌটা খুব লক্ষী মেয়ে।
ভাগ্য গুনে এমন বৌ মেলে।রোয়েন হেসে রুহীর দিকে তাকায়।
তারপর ওরা তিনজন মিলে গল্প করলো বেশ কিছুক্ষন যাবৎ।
রাত বাড়তেই রোয়েন রুহীকে নিয়ে বাসায় ফিরে এলো।
রুহী ফ্রেশ হতে চলে যায়।রোয়েন খাটে বসে ল্যাপটপে কাজ করছে।ফ্রেশ হয়ে বেরিয়ে আসে রুহী।রোয়েনেরনপাশ ঘেঁষে শুয়ে পড়ে ও।রোয়েন কাজের ফাঁকেই রুহীকে দেখে নিলো।রুহীর চুলের ফাঁকে ওর সাদা কাঁধ যেন রাতের আঁধারে প্রজ্জ্বলিত চাঁদ।রোয়েন ল্যাপটপ রেখে রুহীর পাশে শুয়ে ওর কাঁধে ঠোঁট ছুঁইয়ে ওকে বুকে টেনে নিয়ে ঘুমিয়ে যায়।পরদিন বিকেলে আজিজ রায়হানের কল আসে রোয়েনের ফোনে।
চলবে