আমার ক্রাশ বর

আমার ক্রাশ বর !! Part- 03

তখন পেছন থেকে একজন বলে ওঠে,,,
তাতে কি হয়েছে,সব সময় তোমার পছন্দের মানুষ কে পাবে তার কোনো মানে হয় না!!

অারিয়ান :তাই বলে ফুপু আম্মা সব সময় সবার ইচ্ছা আমি মেনে নিতে পারবো না।

ফুপু আম্মা :আরিয়ান এখন কি তুমি আমার মুখে মুখে তর্ক করবা???তোমার কাছে আমার এতো দিনে এই সম্মান??

আরিয়ান :ফুপু আম্মা কে জড়িয়ে ধরে বলে না,
তোমাকে আমি স্বপ্নেও অসম্মান করার কথা ভাবতে পাড়ি না।

ফুপু আম্মা :জানি তো,,আমার রাগী ছেলে আর যা-ই করুক আমাকে কখনো অপমান করতে পারে না।

আরিয়ান :আমি কেনো, কোনোদিক কাউকে তোমাকে অপমান করতে দিবো না ।

ফুপু আম্মা : হুম,,,আসলে তোমার ড্রাইভার রফিক চাচা তোমাকে আনতে যাবার সময় হঠাৎ করে অসুস্থ হয়ে যায়,, তাতে হসপিটালে ভর্তি করতে হয়।তাই বাড়ির অন্য ড্রাইভার কে তোমাকে আনতে পাঠাই আমরা।

আরিয়ান :তাহলে এ কথা আমাকে আগে বলতে পারতেন।। তা রফিক চাচা কেমন আছে এখন??

আরিফ চৌধুরী :রফিক ভাই এখন ভাল আছে,,,
সে এখন তার বাড়িতে,, ডাক্তার তাকে কিছুদিন বিশ্রাম করতে বলছে।তাহলে ঠিক হয়ে যাবে সে।

আরিয়ান :আমি এখুনি তার সাথে দেখা করতে যাবো।

ফুপু আম্মা :না থাক,,অনেক দূর থেকে অনেক বছর পর আসছো!! কাল বা পরশু যাবে তার সাথে দেখা করতে।

আরিয়ান :তুমি যখন বলছো তখন তো আর তোমার কথার অবাধ্য হতে পারি না।

ফুপু আম্মা :সবি বুঝলাম,,, তা বাড়িতে এসে এইভাবে চিৎকার করার কারণ কি ছিলো এবার তো বলো??

অারিয়ান :আর বলো না,,,এক বেয়াদব ফাজিল মেয়ে আমাকে রাস্তার মাঝে ড্রাইভার বলো সম্বোধন করছে,,,কোনদিন দিয়ে আমাকে ড্রাইভার মনে হয় বুঝি না।

ফুপু আম্মা :তা মেয়েটার সাহস আছে,,,আমাদের এমন সুন্দর ছেলেকে কি করে ড্রাইভার বলছে,,,,কোনদিক দিয়ে ড্রাইভার মনে হয়।

আরিয়ান :ব্যবহার দেখে তো মনে হয়ছে কোনো বস্তির থার্ড ক্লাস মেয়ে হবে।

আরিয়ানের মা :আচ্ছা বড় আপা অনেক বিচার হয়ছে,,,এবার আরিয়ান যাও বাবা ফ্রেশ হয়ে আসো।

ফুপু আম্মা :তাই তো এতো কথার মাঝে ছেলেটা যে এতো দূরে থেকে আসছে সে কথা তো ভুলে গিয়েছি,,, যাও আরিয়ান ফ্রেশ হয়ে আসো।

তারপর আরিয়ান চলে যায় নিজের রুমে ফ্রেশ হতে,,,



তারপর বিকালে চৌধুরী ভিলাতে
কেউ এক জন এসে আরিয়ান কে জড়িয়ে ধরে বলে,,,
বড় ভাইয়া তুমি আসছো??
জানো তোমাকে কতো মিস করছি,,,
আর তুমি তো সারাদিন ব্যস্ত থাকো??
তোমার যে একটা ছোট ভাই আছে সেদিকে কি খেয়াল আছে??

আরিয়ান :আয়াত ছাড় আমাকে,,,,
কেউ এভাবে হসপাতাল থেকে এসে জড়িয়ে ধরে,
ডাক্তার হয়ে এতোটুকু জানিশ না যে কতো জীবাণু আছে তোর সাথে,,যা ফ্রেশ হয়ে আস আগে।

আয়াত :আরে তুমি ভুলে গেছে,,তুমি যে এমন করবে তা আমি জানি।তাই হাসপাতাল থেকে একদম ফ্রেশ হয়ে তোমার কাছে আসছি।

আরিয়ান :যাক তাহলে ভাল করছিস,, বলে নিজেকে আয়াতের কাছ থেকে ছাড়িয়ে নেয়।

আয়াত : শুনলাম তুমি নাকি নতুন নামের স্বীলমোহর পেয়েছ???

আরিয়ান :মানে কি???

আয়াত :শুনছি কেউ না কি তোমাকে ড্রাইভার বলে গালি দিয়েছে 😂

আরিয়ান :মজা নেওয়া হচ্ছে তোর সাথে কেউ এমন করলে তখন বুঝবি।

আয়াত :জানো আজ এক মেয়ে আমাকে পটাতে চেষ্টা করছে,,,কিন্তু তুমি তো জানো আমি আরিয়ান চৌধুরীর ছোট ভাই আয়াত চৌধুরী।
আমাকে পটানো এতো সোজা নয়।

আরিয়ান :তাই তাহলে কি করছো তুমি??

আয়াত :ডাইরেক্ট মেয়ের বাড়ির ঠিকানা চায়ছি,, মেয়েটা ভয়ে পালিয়ে গেছে।😆😆😆

আরিয়ান :খুব ভাল কাজ করছিস,, এসব মেয়েদের বেশী মাথায় উঠাতে নেই।।তা রফিক চাচার কোনো খবর জানিস??

আয়াত :হ্যা শুনেছি সে না কি আরাম করতে গ্রামের বাড়িতে চলে গেছে,,,সেখানে কিছু থাকবে তারপর আসবে।

আরিয়ান :ওহ তাহলে একদিন সময় করে তার গ্রামের বাড়িতে গিয়ে দেখা করে আসবো।

আয়াত :আচ্ছা ভাইয়া যেদিন ইচ্ছে যেও।



এদিকে অনু বাড়িতে বসে অনেক জায়গাতে চাকুরীর জন্য এপ্লিকেশন জমা দিয়েছে।সে সবের
উওর আসতে কিছুদিন সময় লাগবে।

কিন্তু বেচারির মা তার পিছু ছাড়ে না।।

অনুর মা :তা আবিরের বাবা তোমার মেয়েকে নিয়ে কিছু ভাবছো??

অনুর বাবা :কি আর ভাবা উচিৎ বলো তো??

অনুর মা :তোমার মেয়ের বিয়ের কথা কিছু ভাবছো??

অনুর বাবা :আচ্ছা কি সমস্যা তোমার বলো তো সারাদিন মেয়ের পেছনে বিয়ে বিয়ে করে পড়ে থাকো,,মেয়েটাকে কি একটু শান্তি তে থাকতে দিবে না।

অনুর মা :একদম মেয়ের মুখের বুলি বলবে না,,,মেয়ের প্রতি মায়া থাকা ভাল কিন্তু বেশি মায়া ভাল না।

অনুর বাবা :তোমার কপালে যখন আমার মতো ভদ্র শান্ত মানুষ জুটছে,, আমার মেয়ের কপালেও তেমন কেউ জুটবে।।

অনুর মা :ওরে আমার কোথা কার রাজা বাদশা আসছেন,,,না খুঁজে উনি পেয়ে যাবেন ওনার মেয়ের জন্য জামাই,,

অনুর বাবা :ঠিক সময় হলে জামাই পাবো ইনশাআল্লাহ।

অনুর মা :জামাই বুঝি গাছে ধরে,,,যে সময় হলে তুমি তাকে গাছ থেকে পেরে আনবে।

এসবের মাঝে অনু এসে ওর বাবাকে জড়িয়ে ধরে বলে বাবাগো সারাবছর আম্মু এমন বিয়ে বিয়ে করে,,, এসব কি ঠিক বলোতো বাবা।

অনুর বাবা :মোটেই না,,,একদম খারাপ করে তোমার মা।

অনুর মা :ওহ এখন বাপে আর মেয়ে মিলে আমাকে দোষী বানাবে,,,থাকবো না তোমাদের বাড়িতে,,,চলে যাবো সব কিছু ছেড়ে।

অনু :তুমি যাবে কেন আমি যাবো।

অনুর মা :আলহামদুলিল্লাহ্‌,, মেয়ের তাহলে বিয়ের জন্য মত আছে।

অনু :Oh,,Hello,, excuse me mom
আমি কি একবার ও বলছি বিয়ে করবো,,,

অনুর মা :তুই তো বলছিস,,,এ বাড়ি থেকে চলে যাবি।

অনু :তাই বলে তো বিয়ে করে শ্বশুরবাড়ি যাবো এমন কথা তো বলি নাই।

অনুর মা :তাহলে কোথায় যাবি তুই??? 😕😕

অনু :এই রহিমা খালা এদিকে আসো।

রহিমা ভেতরে আসে।।

অনুর মা : কি গো রহিমা তুমি কোথায় যাবে??

রহিমা :আসলে আফাজান আমি কয়দিনের জন্য গ্রামে যাবো,,,আমার ভাই অসুস্থ তারে দেখতে,,
মেলাদিন তো যায় না গ্রামে।

অনুর মা :তা তুমি যাবে ঠিক আছে,,,এখানে অনুর কি কাজ?? অনু কি চাও তুমি??

অনু :কিছু না,,কিছুদিন তোমার থেকে মুক্তি,, রহিমা খালার সাথে কিছুদিন গ্রামে গিয়ে থাকতে চায়।

অনুর বাবা :অবশ্যই তুমি গ্রামে যাবে,,,এখানে কারো কোনো অনুমিতর দরকার নেই।

অনু :ছুটে গিয়ে বাবাকে জড়িয়ে ধরে বলে লাভ ইউ বাবা,, এই না হলে বাবার মতো বাবা।

অনুর মা :আমি তো তোর শএু তাই না রে

অনু :তার থেকে কম ও না বুঝছো ,,

অনুর বাবা :তুমি একটু বেশী বেশী অনুকে নিয়ে চিন্তা করো,,

অনুর মা :কি করবো,,,মেয়েটা যে আমার খুব দস্যি।

অনু :বলে ওর মায়ের কপালে চুমা দিয়ে চলে যায় রেডি হতে,,,।

কারণ আজ রাতে ওরা গ্রামের পথে রওনা দিবে।

তারপর অনু আর রহিমা গ্রামে চলে যায়।
এদিকে গ্রামে এসে অনুর সেই মজা করছে,,,
এই গাছে উঠে পেয়ারা পারা ,,,
পুকুরপাড়ে বসে সবার সাথে গল্প করা,
সবাই একসাথে পুকুরে গোসল করা,,
রহিমার ভাইয়ের বাড়িতে থাকা,,,

সে বাড়িতে অনুকে দেখে কেউ বলবে না অনু এদের কেউ না,,
এবাড়ির সদস্য মনে হবে তাকে।
অনু খুব মিশুক স্বভাবের,,,
যে কোনো পরিবেশে সে নিজেকে মানিয়ে নিতে খুব ভাল মতো পারে।
অনুর মাঝে কোনো অহংকার নেই,,,
একদম সাধারণ সে,,
কিন্তু তার মাঝে অনু অসাধারণ একজন।
রহিমার পরিবারের সবার সাথে মিলেমিশে তার দিন ভালই যাচ্ছে,,,

অনু যেখানে থাকবে সেখানে কোনো অকাজ হবে না তা কি কখনো হতে পারে,,কখনো না,,
আজ ও তার ব্যতিক্রম কিছু করে নাই অনু।

সকালবেলা ঘটায় এক অঘটন…..
(আচ্ছা অনু এতো ফাজিল কেনো?? কি জানি নতুন কি বিপদ ঘাড়ে আনবে সে😒)



চলবে….

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *