The Cobra King Mafia Boss- Season 4 !! Part- 49
রোয়েন এবার অগ্নিদৃষ্টি দিয়ে রুহীর দিকে তাকালো।রুহী আজ রোয়েনের চোখে ক্রোধ দেখছে।রুহী বুঝতে পারছেনা কি হলো ওনার?এতো রেগে আছে কেন?রুহী ওর কাছে এসে দাঁড়ায় ভয়ে ভয়ে।রোয়েন এবার গম্ভীর কন্ঠে জিজ্ঞেস করলো,
.
.
-”সবার আগে পার্লারে যাওয়ার জন্য বেরিয়ে ছিলে।কই গিয়েছিলে?”
.
.
রোয়েনের প্রশ্নে বেশ অবাক রুহী।হঠাৎ এমন প্রশ্ন করছে কেন সে?রোয়েন এবার ধমক দিয়ে বলল,
.
.
-”কি হলো বলো কই গিয়েছিলে?আসতে এতো লেট হয়েছিলো কেন?”
-”ফ্রেন্ডের সাথে দেখা করতে গিয়েছিলাম।”
-”কেমন ফ্রেন্ড?”
-”ভার্সিটির ফ্রেন্ড।”
.
.
রোয়েনের প্রচন্ড রাগ লাগছে।মিথ্যে কেন বলছে রুহী?রোয়েন এবার রেগে বলল,
.
.
-”যাও নিচে যাও।”
.
.
রুহী কেঁপে উঠে দৌড়ে নিচে নেমে এলো।অনেকক্ষন পর রোয়েন নিচে নেমে আসে।রুহীর সাথে কথা বলতে হবে।কি করছে রুহী?জানতে হবে।নিচে নেমে রুহীর রুমে এসে ওকে পায়না রোয়েন।সারাঘর খু্ঁজে ও পায়না।পাঁচমিনিট পর রুহীর রুমের সামনে এসে দেখলো রুহী বসে আছে খাটে।রোয়েন বলল,
.
.
-”কই ছিলে?”
-”ওয়াশরুমে।”
-”বের হচ্ছি আমি।ফিরতে দেরি হবে।ঘুমিয়ে যেও।”
.
.
কথা গুলো বলে বেরিয়ে যায় রোয়েন।রুহী এখন ও ওর সাথে মিথ্যে বলছে। রুহীকে খু্ঁজতে গিয়ে ছাদে যায় রোয়েন।তখন নিচে তাকিয়ে দেখে রুহীকে একজন জোর করে জড়িয়ে ধরতে চাইছে।রুহী তাকে বাঁধা দেয়ার পর ও সে রুহীকে জড়িয়ে ধরেছে।রুহী কি লুকাচ্ছে জানেনা রোয়েন।রামীন আর রোয়েন ওদের ব্যাচেলর পার্টিতে আসে।ওদের অনেক গুলো ফ্রেন্ড আছে।জুয়েল এসে বলল,
.
.
-”কি মামা বিয়ে করতেছো?দাওয়াত ফাওয়াত তো পাইলামনা।”
-”মজা করছিস?কার্ড পাস নাই তোরা?”
-আরে মামা তোর লেগ পুল করছি।তা ভাবির সুন্দরী শালী নাই?
.
.
জিজ্ঞাস করে ফাহমিন।রোয়েন হেসে বলল,
.
.
-”আছে তবে বেশ ছোট।তোকে পালতে হবে।”
-”না মামা ওসব পালাপালির মধ্যে নাই।রোগী দের পালতে পালতে জীবন তেজ পাতা।বৌ নিমু তো আদর দিতে।”
-”হুম।আমি একটু ড্রিংক সেকশনে যাই।একটু পর জয়েন করছি।”
.
.
রোয়েন মদ গিলছে।ওর প্রচন্ড রাগ লাগছে।রুহী কেন মিথ্যে বলছে?কি করছে রুহী?কেন ওকে বলছেনা?রামীন সবাইকে ছেড়ে রোয়েনের পাশে বসে।
.
.
-”ঠিক আছিস?”
-”আমার প্রচন্ড রাগ লাগছে রামীন।”
-”কেন কি হলো?সব ঠিক করেছিস না?”
-”নাহ কিছু একটা হচ্ছে ওর জীবনে যেটা আমি জানিনা।রুহী কিছু লুকাচ্ছে।কিন্তু কি বুঝতে পারছিনা।”
-”কিছু আঁচ করতে পেরেছিস?”
-”দেখ এখন কিছু বলতে পারছিনা আমি।তবে জেনে সেভাবে এ্যাকশন নিবো আমি।”
-”হুম।দোস্ত যা করবি দুজনের কথা ভেবে নিবি আই হোপ।”
-”হুম।চল ওখানে যাই।।”
.
.
সব বন্ধুরা মিলে অনেক মজা করছে।কিন্তু রোয়েন খুশি হতে পারছেনা।
এদিকে ফিদা ফিজা নিচে নেমে আসে।রুহীর রুমে এসে ওরা রুহীর দুপাশে বসে পড়ে।রুহী ওদের দেখে চমকে গেলো।ওরা এমন ভাবে বসেছে যেন রুহীকে ভালো করে চিনে।ফিজা অর্থাৎ শাহরিনা আপু বড় তাবাস্সুম আপুর থেকে।তবে দুজনেই ড্যান্সার।অনেকবার জাতীয় এ্যাওয়ার্ড ও পেয়েছে।ফিজা আর ফিদা রুহীর সাথে অনেক ফাজলামো করে।কিন্তু ওরা খেয়াল করে রুহী হাসেনা।শেষ রাতে পার্টি শেষ করে ঘরে ফিরে আসে রোয়েন।এদিকে পরদিন রুহীর সঙ্গীত।সকাল থেকেই উপরে ফিজা আর ফিদা আপু নাচছে।রুহীকে সাথে এনেছে ওরা গান সিলেক্ট করার জন্য।কিন্তু কিছু করতে পারেনি রুহী।যেখানে ও নিজের মন ভালো নেই সেখানে ও কি করবে?
ফিদা আর ফিজা ভীষন সুন্দর নাচে।তবে রুহী ওদের নাচকে এঞ্জয় করতে পারছেনা।
রাতে হবে সঙ্গীত।বিকেলে নীরা হামিদ, আশফিনা, সামায়রা, তাঞ্জুম চলে এসেছে।রুহীকে আজ লেমন কালারের একটি লেহেঙ্গা পরানো হয়েছে তার সাথে সব সাদা আর সোনালী রং মেলানো গহনা।আজ অন্যরকম সুন্দর লাগছে রুহীকে।সাতটায় ওরা সবাই রোয়েনের কনভেনশন সেন্টারে চলে আসে।রোয়েনকে সাদা রং এর কমপ্লিট স্যুট জোর করে পরিয়েছ রামীন।রোয়েন আর রুহীকে পাশা পাশি বসানো হলো।ওদের সামনে নাচবে ফিদা আর ফিজা।কিছুক্ষন পর গান বেজে নাচ শুরু হয়।রোয়েন সামনে তাকিয়ে আছে।রুহীর দিকে তাকাচ্ছে ও না।রুহীর চোখ জলে ভরে যাচ্ছে এ কেমন বিয়ে?যেখানে হবু বর ওর দিকে তাকাচ্ছেনা ভালোবেসে কথা বলছেনা।
ফিদা আর ফিজা চারটা গানে নেচেছে খুব সুন্দর করে।তারপর আসে আশফিনা আর রামীন।কাপল ড্যান্স করবে ওরা।সবাই হাত তালি দিচ্ছে।রামীনের নাচের সময় রোয়েনের মুখে হাসি ছিলো।রামীন আর আশফিনার পর এলো সামায়রা।ও একা নাচবে।ওর পিছে রুহী ফ্রেন্ডরা আছে।এদিকে রোয়েনের ফ্রেন্ড ফাহমিন সামায়রার নাচ দেখার সময় বেশ কৌতুহল ছিলো।
ব্যাপারটা রোয়েন দেখে মাথা নাড়ে।জবাবে ফাহমিন দাঁত বের করে হাসতে থাকে।এরপর আসে রামীন আর ফাহমিন।ওরা দুজন মেয়ে নিয়ে নাচবে।তবে কথা হলো রামীনের আশফিনা আছে তবে ফাহমিনের কেউ নেই।ফাহমিন বলল,
.
.
-”রামীন তুই নাচ ভাই।”
-”কেন?”
-”তোর গার্লফ্রেন্ড আছে দোস্ত আমি তো একা।”
.
.
রামী রুহীর ফ্রেন্ডদের দিকে তাকায়।ওরা কেউ রাজিনা।সামায়রাকে রামীন জিজ্ঞেস করে,
.
.
-”ওর পার্টনার হবা?”
-”ভাইয়া আব্বু আম্মু আছে।বকা দিবে।”
.
.
এতক্ষন দাঁড়িয়ে সব শুনছিলেন নীরা হামিদ।তারপর হেসে বললেন,
.
.
-”নাচো।ভাইয়াই তো।”
-”ওকে মা।”
.
.
সামায়রা ফাহমিনের কাছে আসে।কিন্তু ভাইয়া উপাধি পছন্দ হয়নি ওর।তবে রোয়েনের দিকে চেয়ে ঠিকই হেসেছিলো।ওদের নাচ শেষে রোয়েনের সব ফ্রেন্ড রা নাচে।তারপর আসে রোয়েন রুহীর পালা।ওরা কাপল ড্যান্স করবে।রোয়েন সবার কথায় উঠে আসে কিন্তু রুহী বসে আছে।সবাই ওকে উঠতে বলছে কিন্তু রুহী উঠছেনা।রোয়েন হাত এগিয়ে দেয় রুহীর দিকে। রুহী হাত তারপর রোয়েনের দিকে তাকায়।তারপর হাত এগিয়ে দিতেই রোয়েন হাত টেনে নিজের সাথে লাগিয়ে নেয়।খুব রুডলি কাজ টা করে রোয়েন।রুহীর একহাত রোয়েনের হাতে অপর হাতটি রোয়েনের স্যুট খাঁমচে ধরেছে।গান শুরু হলো,
Raahon mein humko milo jahan bas pyaar ho
Sar pe fizaaon ke ishq sawar ho
Aasmaan ko phir zameen se
Itni mohabbat ho
Wafa faili ho zameen pe
Chahaton ki sohbat ho
Jheel ke paani mein, ishq hi behta ho
Ishq ho duaa bas ishq ki ibadat ho
Khuda bhi jab tumhe mere paas dekhta hoga
Itni anmol cheez de di kaise sochta hoga
Subah ka chain mera shaam ka sukoon hai
Pyaar tera pyaar nahi mera junoon hai
Dard tujhe ho agar aankh meri roti hai
Juda hoke marr jayenge hamein maloom hai,,,,,,,,,,,,,
গান শেষে রোয়েন রুহীকে ছেড়ে সরে আসে।রুহী নিচে তাকিয়ে আছে।ওর চোখজোড়া অশ্রু ভেজা।ওরা আবার স্টেজে এসে বসে। এরপর মুরব্বিরা এসে ওদের দোয়া দিয়ে যান।মিষ্টি ও খাওয়ান।কিছুক্ষন পর শুরু হয় গ্রুপ ড্যান্স।সবাই মিলে নাচবে।এটা দিয়ে শেষ হবে রুহীর সঙ্গীত অনুষ্ঠান।নাচ শুরু হলো রোয়েন রুহীকে সবার ভিড়ে ঢুকানো হলো।রোয়েন রুহীর দিকে তাকাচ্ছেনা।রুহীর চোখজোড়া বেয়ে পানি গড়াচ্ছে।এভাবে শেষ হলো সঙ্গীত অনুষ্ঠান।সবাই বাসায় ফিরে আসে।রুহী কাপড় পাল্টে ফ্রেশ হয়ে নেয়।কাল ওদের বিয়ে। সারাজীবনের জন্য ও রোয়েনের হয়ে যাবে।রাতে রোয়েনের বন্ধুরা এসে ওকে নিয়ে গেলো।আজ রাত সবাই মজা করবে।আর নীরা হামিদ আশফিনা আর সামায়রা রুহীর কাছে এলো।সাথে ফিজা আর ফিদা তো আছেই।ফিজার কাছে হাসির কথার শেষ নেই।নিজে ফাজলামো করছে আর সবার হাসতে হাসতে পেট ব্যাথা হয়ে গেছে।রুহী এক কোনায় বসে আছে।রুহীর গায়ে কালো ফুল হাতার একটি স্যালোয়ার কামিজ আর মাথায় ঘোমটা।আশফিনা রুহীকে একা একা থাকতে দেখে জিজ্ঞেস করে,
.
.
-”রুহী কি হলো তোর?”
-”না কিছুনা।”
-কিছু তো হয়েছেই।এমন চুপচাপ আছিস কেন?তোর বিয়ে বলে আমরা মজা করছি আর তুই চুপ কেন?”
-”শুনছি তোদের কথা।”
.
.
তখনই ফিজা বলল,
.
.
-”রুহী চুপ নেই।কাল মিঃ রোয়েনের সাথে কি কথা বলবে,কি কি করবে তা ভাবছে।”
.
.
ফিজার কথায় হেসে দেয় সবাই।আশফিনা বলল,
.
.
-”কিরে রুহী সত্যি নাকি?”
-”আরে নাহ তেমন কিছুনা।ভালো লাগছেনা আমার।”
-”উফ রুহী তোদের লাভ ম্যারেজ।ইসস কি রোমান্টিক তাইনা?রুহী তোর বিয়ে দেখে আমার ও করতে ইচ্ছে করছে।”
.
.
রুহীর কান্না চলে আসে আশফিনার কথায় কিন্তু কাঁদেনা।নিজেকে শক্ত রাখলো ও।সে রাত রোয়েন ওর বন্ধুদের সাথে থেকে যায়।নীরা হামিদ আর আশফিনা সামায়রা রুহীর সাথে থাকে।
চলবে