The Cobra King Mafia Boss- Season 4 !! Part- 48
→হলুদ দেয়া হচ্ছে রুহী আর রোয়েনকে।নানু আজ ওকে স্টেজে এসে শাড়ীর দাম জিজ্ঞেস করলো।এটা কেউ কখনো করতে পারেনা।তাদের গিফ্ট দেয়ার পর ও দাম জানতে চাইলো।কম দাম বলে বাজে ব্যাবহার ও করলো।কারোর নানা নানু এমন হয় শুনেনি রুহী।তাহলে কি রোয়েন ঠিক?তার নানু নানা অাসলেই লোভী।ভাবছে রুহী।রোয়েনের দিকে একবার তাকায় ও।রোয়েনের দলের সবাই একসাথে রুহী আর রোয়েনের সাথে ছবি তুলল।তবে রোয়েনের মাথায় একটা জিনিস ঢুকছেনা রুহী কিছুদিন যাবৎ কথা বলতে চেষ্টা করছেনা।কেমন ভয়ে ভয়ে থাকে মেয়েটা।আর আজ যখন ছবি তুলছিলো রুহী বারবার হাত নেড়ে মানা করছিলো।যেন ছবি তুলতে ভয় লাগছে ওর।এমনিতেই রোয়েন জানে রুহী ছবি তুলতে খুব পছন্দ করে।কিন্তু এখন এমন করছে কেন?রোয়েন চুপ থাকলো।এদিকে রামীন আশফিনার কোমড় জড়িয়ে ধরে আছে।আশফিনার মাথা রামীনের বুকে।রামীন বুঝতে পারছে আশফিনার শরীর কাঁপছে।রামীন হেসে জিজ্ঞেস করে,
.
.
-”কি হলো?ওভাবে কাঁপছো কেন?”
-জানিনা।কেন যেন নিজেকে ঠিক রাখতে পারছিনা।একটু শক্ত করে ধরেননা।”
.
.
রামীন শক্ত করে বুকে জড়িয়ে ধরে আশফিনা কে।কিছুক্ষন পর সরে আসে ওরা।আশফিনা বলল,
.
.
-”আমাদের ওখানে যাওয়া উচিৎ।”
-”আচ্ছা চলো।”
.
.
ওরা আবার হলুদে জয়েন করে।খাওয়ার পর রোয়েন রামীন কে ডেকে নেয়।রামীন আর ও একটা খালি জায়গায় এসে দাঁড়ায়।রোয়েন বলল,
.
.
-”তোকে রুহীর সাথে কথা বলতে হবে।”
-”কি কথা???”
-”ইদানিং খুব ভয়ে ভয়ে থাকে,আতংকে থাকে।আগে কথা বলতে চাইতো এখন তাও বলছেনা।ওর কি হয়েছে বুঝতে পারছিনা।তুই ওকে জিজ্ঞেস কর ওর কি হয়েছে?”
-”রোয়েন দেখ রুহী আমাকে কিছুই বলবেনা।কারন তোর সাথে ও যেমন কমফোর্টেবল ফিল করবে আমার সাথে করবেনা।সো তোর জিজ্ঞেস করা উচিৎ।”
.
.
রামীনের কথায় রোয়েন চুপ হয়ে থাকে।আসলেই অনেক তো হলো।আর না।এবার সব ঠিক করা উচিৎ ওদের মাঝে।ওদের এই দূরুত্ব কোন বিপদের কারন না হয়ে দাঁড়ায়।তারপর কিছুক্ষন পর রোয়েন বলল,
.
.
-”আচ্ছা সব ঠিক করবো আজ।”
-”হুম জলদি কর।অন্তত নিজের বিয়ের মজাটা নে দোস্ত।”
-”হুম।”
.
.
সবাই বাসায় চলে আসে।রোয়েন আর রুহীর সাথে আশফিনা নীরা হামিদ আর সামায়রাও এসেছে।কারন একটু পর ওদের পার্লারে যেতে হবে।রুহী রুমে এসে কাপড় পাল্টে গোসল নেয়।রাতে মেহেদীর অনুষ্ঠান।রুহী শুয়ে ফোন হাতে নিয়ে দেখলো হলুদের ছবি পাঠিয়েছে আননোন নম্বর থেকে।রুহী মেসেজ করলো,
.
.
-”কে আপনি কেন এমন করছেন?কেন এত বিরক্ত করছেন?কি চান আপনি?
-”আমাকে জানতে হলে দেখা করতে হবে।এমনিতেই তো বলবোনা আমি কে?”
-”কবে দেখা করবেন?”
-”তুমি চাইলে আজই দেখা করবো।”
-”আজ কিভাবে?একটু পর আমার মেহেদী অনুষ্ঠান।”
-”সেটা তুমি ম্যানেজ করবা।”
.
.
রুহী অনেক ভেবে রাজি হয়ে যায়।সে মেসেজে বলল চারটায় তার সাথে দেখা করতে হবে।রুহী তিনটায় বেরিয়ে যায়।আশফিনা আর নীরা হামিদ ওকে আটকায়।নীরা হামিদ জিজ্ঞাস করেন,
.
.
-”কই যাস রুহী?একটু পর পার্লারে যাবো তো।”
-”মামী আমার এক বান্ধুবীর সাথে দেখা করবো।অনেকদিন ধরে বলছিলো দেখা করবে।”
-”কাউকে নিয়ে যা।একা যাস না।”
-”না মামী কিছু হবেনা।আমি তোমাদের সাথে এসে পার্লারে জয়েন করবো।”
-”সাবধানে যাস রুহী।”
-”জি মামী।”
.
.
রুহী বেরিয়ে আসে।ও কি করতে যাচ্ছে?কার সাথে দেখা করবে ও?সব ঠিক হবে তো? নাকি সব এলোমেলো হয়ে যাবে।রুহীর ভয় লাগছে কেমন যেন।এদিকে রুহী সে মানুষটার নির্দেশ মতো চলে যায় রেস্টুরেন্টে।সেখানে বসে কফি অর্ডার করে রুহী।কফি চলে আসে কিন্তু যার সাথে দেখা করবে সে আসে নাই।রুহী অপেক্ষা করতে কফিতে চুমুক দেয়।তারপর আর কিছু মনে নেই।সাতটা বাজে জ্ঞান ফিরে রুহীর।ও নিজেকে নতুন একটা বেডে পেলো।রুমটা সুন্দর ও বড়।রুহী ভয় পেয়ে পাশে তাকায়।একজন মহিলা বসা ওর পাশে।তার কাপড় দেখে বুঝা যাচ্ছিলো এখানকার কর্মচারী।রুহী উঠে বসে,
.
.
-”এখানে কেন আমি?কি হয়েছে আমার সাথে?”
-”ম্যাম রিল্যাক্স থাকুন।জ্ঞান হারিয়ে ফেলেছিলেন আপনি।ডাক্তার এনেছিলাম।আমরা সে বলল আপনার প্রেশার লো তাই এমন হয়েছে।”
-”ওহ কয়টা বাজে?”
-”সাত টা বাজে।”
.
.
সময় শুনে রুহী লাফ দিয়ে উঠে যায়।তারপর কফির বিল চুকিয়ে বেরিয়ে যায় ও।এদিকে নীরা হামিদ আশফিনা রুহীর জন্য বসে আছে পার্লারে।ওদের সাজ শেষ রুহীর টা বাকি।নীরা হামিদ আর আশফিনা চিন্তিত হয়ে যায়।কি হচ্ছে?রুহী এখনো আসলো না কেন?সাড়ে সাতটায় রুহী চলে আসে। রুহীকে পেয়ে ওরা প্রান ফিরে পেলো।রুহী ভিতরে আসতেই দুজনেই রুহীকে ঘিরে ধরলো।
নীরা হামিদ জিজ্ঞেস করে,
.
.
-”কই ছিলি তুই?”
-”ও আসতেই দিচ্ছিলোনা।”
-”ওহ আচ্ছা ঠিক আছে।রুহী জলদি সেজে নেয়।তোর গয়না গাটি লেহেঙ্গা নিয়ে এসেছি।নে নে জলদি পরে নে।”
-”জি মামী।”
.
.
রুহী লেহেঙ্গা পরে সেজে নেয়।চকলেট রং এর লেহেঙ্গা পরেছে রুহী।লেহেঙ্গার নিচের পার্টটা ফুলানো।লেহেঙ্গাটা বেশ সুন্দর।রুহীকে সাজানোর পর গয়না পরায় নীরা হামিদ।এরপর বেরিয়ে আসে ওরা।গাড়ি সোজা কমিনিউটি সেন্টারে চলে গেলো।সেখানে সবাইকে দেখতে পায় রুহী।রোয়েন ও আছে।আজ ফুল ব্লাক কমপ্লিট সুট পরেছেও।রুহী ভিতরে ঢুকতেই রোয়েন ওর দিকে তাকায়।রুহী যেভাবে সাজে সব ভাবেই মানায়।আজ ভীষন সুন্দর লাগছে।রোয়েন ভাবছে সবার আগে কই গিয়েছিলো রুহী?আজ কথা বলবে রোয়েন।এতো দিন একটু বেশি রুড ছিলো ও।তাই হয়ত কিছু বলেনি।আজ রোয়েন কথা বলবে।নরমাল করবে সব ও।রুহীকে দেখতে থাকে রোয়েন।আজ ভালবাসবে মায়াবতীকে খুব ভালবাসবে।রুহীকে ভিতরে নেয়া হলো।ভিতরে আসার সময় রুহী শুনতে পায় ওর বেশ পছন্দের একটা গান বাজছে।সেটা এই অনুষ্ঠানের সাথে পারফেক্ট।
Mehndi Hai Rachnewaali, Haathon Mein Gehri Laali
Kahe Sakhiyaan, Ab Kaliyaan
Haathon Mein Khilnewaali Hain
Tere Mann Ko, Jeevan Ko
Nayi Khushiyaan Milnewaali Hai
Mehndi Hai Rachnewaali, Haathon Mein Gehri Laali
Kahe Sakhiyaan, Ab Kaliyaan
Haathon Mein Khilnewaali Hain
Tere Mann Ko, Jeevan Ko
Nayi Khushiyaan Milnewaali Hai
O Hariyali Banno
Le Jaana Tujhko Guiyyaan Aane Waale Hai Saiyyaan
Thaamenge Aake Baiyyaan, Goonjegi Shehnaayi
রুহী ভিতরে দেখতে পায় অনেক মেয়ে নাচছে গানটাা।ওর বান্ধুবীরা ও আছে।সেখানে আরো দুজন মেয়েকে দেখতে পায় একদম।অপরিচিত ওরা।তবে সবার মাঝে ওরা নাচছে।বেশ ভালো নাচে।রুহীকে ভিতরে নিয়ে আসা হয়।তাঞ্জুম ও মেহেদী লাগাচ্ছে।সামায়রা দৌড়ে এসে রুহীকে নিয়ে মাঝে বসায় একটা জরি ওয়ালা কপড় পরানো পিড়ির ওপর।চারজন মেয়ে রুহীকে মেহেদী পরাতে শুরু করে।দুজন ওর হাতে আর দুজন দু পায়ে । এরই মাঝে রোয়েনকে দেখতে পায় রুহী।ভিতরে এলো সে।রুহীকে একবার দেখে রুহী ফোনে কথা বলতে শুরু করে।আসলে রোয়েন রুহীকে দেখছে লুকিয়ে।রুহীর মেহেদী দেয়ার মাঝে ঐ দুইজন রুহীর দুপাশে এসে বসে।দুজন হাসছে।ওরা দেখতে ও বেশ।বেশ হাসি খুশি। তাদের মাঝে একজন বলল,
.
.
-”আজ আমরা তোমার সাথে থাকবো।”
-”জি???”
-”হুম।তারপর!!!!! ”
-”খুব নাচবো।”
-”মানে?”
.
.
রুহীর কথায় ওরা হেসে দেয়।আগের জন বলল বিশ্বাসই হয়না তুমি ডার্ক প্রিন্সের হবু স্ত্রী।এতো ভীতু আর বোকা বোকা। রুহী একটু কষ্ট পায়।তারপর ওরা বলল,
.
.
-”দেখো মাইন্ড করোনা।আমরা ফাজলামো করছিলাম।আমরা দু বোন।তোমার সঙ্গীতে নাচবো।আমি শাহরিনা রুজাইনা ফিদা আর ও আমার ছোট বোন তাবাস্সুম রুহাইনা ফিদা।পাকিস্তান থেকে এসেছি।”
-”ওহ আচ্ছা।আসলে বুঝতে পারিনি।”
-হুম।তবে বেশ সুন্দরী তুমি।মিঃ রোয়েনের সাথে বেশ মানাবে।
-”থ্যাংক ইউ।”
-”আচ্ছা আমরা পরে কথা বলছি।ফিদা আমার সাথে আয়।”
-”জি আপি আসি।থাকো রুহী।”
.
.
রুহীর মেহেদী দেয়ার পর একটু শুকিয়ে গেলে ওকে কয়েকজন উঠিয়ে নিয়ে নাচতে যায়।রুহী নাচের মাঝে খেয়াল করে রোয়েন ফিদা আর ফিজার সাথে কথা বলছে হেসে হেসে।রুহীর চোখে পানি চলে আসে।সে ওর সাথে কথা বলছেনা কিন্তু ঠিকই ওদের সাথে কথা বলছে।মেহেদীর পর খাওয়া দাওয়া হয়।এরপর বেরিয়ে আসে ওরা।রুহী জানতে পারে মেয়ে গুলো রোয়েনের বাসায় ওদের সাথে থাকবে।রুহীর মন টা খারাপ হয়।রামীন ওদের সাথে গাড়িতে উঠে বসে।রুহী পিছনে মেয়েগুলোর সাথে আর রামীন রোয়েনের সাথে।ওরা হাসাহাসি করছে রুহীর সাথে দুষ্টু দুষ্টু কথা বলছে।রুহী মাঝে মাঝে ওদের কথায় লজ্জা পেয়ে রোয়েনের দিকে তাকাচ্ছে।ওরা বাসায় চলে আসে।রোয়েন বলল,
.
.
-”ওপরে রুম আছে।আপনারা গিয়ে ফ্রেশ হয়ে নিন।মেইড খাবার দিবে।কোন প্রবলেম হলে আমাকে বলবেন।”
.
.
রোয়েনের কথায় ফিজা বলল,
.
.
-”আমরা ঠিক আছি।আপনি টেনশন করবেননা।”
-”ওকে।রামীন ছাদে আয়।”
.
.
রোয়েন আর রামীন ছাদে আসে।একটু পর ওদের ব্যাচেলর পার্টি।রোয়েন বলল,
.
.
-”রুহীকে ছাদে আসতে বল কথা বলবো।”
-”ওকে।”
.
.
রামীন বেরিয়ে যায়।রোয়েন ভাবছে কিভাবে কথা শুরু করবে।মেয়েটাকে যে বড্ড কষ্ট দিয়ে ফেলেছে ও।তখনই রোয়েনের হোয়াটসএ্যাপে একটা ভিডিও আসে।বেশ অবাক রোয়েন।নম্বরটা অচেনা।রোয়েন ভিতরে ঢুকে দেখলো রুহী খাটে বসে আছে ওর সামনে অর্ধনগ্ন এক পুরুষ।অবশ্য রুহীর মুখের এক সাইড দেখা যাচ্ছে।তবে চেহারা দেখা যাচ্ছেনা।রোয়েন ওর জামা দেখে বুঝতে পারলো এটা রুহী।লোকটা গিয়ে রুহীর গালে হাত রাখতেই ভিডিও অফ হয়ে গেলো।রোয়েন রেগে গেলো।এটা কি দেখলো ও?
রুহী কে নিয়ে এলো রামীন।রুহীর মুখ টা শুকিয়ে আছে।ভয়ের ছাপ চেহারায়।
চলবে