The Cobra King Mafia Boss- Season 4 !! Part- 41
→টিকিট দুটো দেখে রুহী খুব বেশি অবাক হয়ে যায়।আর বেশ খুশি ও কারন ওর ভালবাসার মানুষটাও সিনেমা দেখবে।যিনি কিনা অত্যন্ত রাগী আর রক্তারক্তি খেলায় ডুবে থাকেন।আজ সেই মানুষটা সিনেমা তাও আবার কোরিয়ান রোমান্টিক সিনেমা।রুহীর এতো খুশি লাগছে।ও বিশ্বাস করাতে পারছেনা নিজেকে যে ওর রোয়েন সিনেমা দেখবে।এতসময় টিকিট গুলো দেখে খুশি হচ্ছিলো রুহী।ঠোঁটের কোনে মৃদু হাসি ছিলো ওর।রোয়েন টিকিট গুলো ওর হাত থেকে নিয়ে বলল,
.
.
-”যাও রেডি হয়ে আসো,বের হবো।”
-”এখন?”
-”হুম এখন।যাও!!”
.
.
রুহী মাথা নেড়ে রেডি হতে চলে যায়।কিছুসময় পর রুহী বেরিয়ে আসে।আজ পশ্চিমা সাজে আছে রুহী।ব্ল্যাক ডেনিম প্যান্ট,ধুসর বর্নের টিশার্ট আর ওপরে কালো হাতা কাঁটা পাতলা জ্যাকেট।লম্ব গুলো কে পনিটেইল করে নিয়েছে।হাতে মোটা চেইনের ঘড়ি।রোয়েন একনজরে পুরোটা দেখে নেয় মায়াবতীকে।পশ্চিমা সাজে চমৎকার লাগছে।রোয়েন এবার ধীরে রুহীর কাছে এসে দাঁড়ায়।রুহী মাথাটা নিচে নামাতে নিলে রোয়েন ওর থুতনি ধরে থামায়।তারপর রুহীর কপালে চুমু খেয়ে সরে আসে।রুহী মুচকি হাসে।তারপর খুব ধীরে বলল,
.
.
-”আপনি যখন কপালে স্পর্শ করেন।মনে হয় অামি খুব নিরাপদ আছি।খুব ভরসা পাই।”
.
.
রোয়েন এবার রুহীর গালে স্পর্শ করে বলল,
.
.
-এখানে চুমু দিলে কি মনে হয়?
-‘আমনে হয় সত্যিকারে ভালবাসার মানুষকে পেয়েছি।”
.
.
রোয়েন এবার হেসে রুহীর ঠোঁটে হাত ছুঁইয়ে বলে,
.
.
-”এখানে?”
-”এখানে!!”
.
.
লজ্জা পেয়ে যায় রুহী মাথা নামিয়ে বলল,
.
.
-”জানিনা।”
.
.
রোয়েন কিছুনা বলে মুচকি হেসে রুহীর হাত ধরে বেরিয়ে আসে।আজ রামীন আর আশফিনা ও যাবে ওদের সাথে।চারজনে বেরিয়ে যায়।গুলসানের একটা সিনেপ্লেক্সে চলে আসে ওরা।ওরা দেখবে কোরিয়ান মুভি My Secret romance।রুহী আর আশফিনা খেয়াল করে সিনেমা হলে ওরা চারজন ছাড়া কেউ নেই।রুহী বেশ অবাক হয়ে রোয়েনকে জিজ্ঞেস করে,
.
.
-”কেউ নেই যে?”
-”আজ পুরোটা হল আমাদের জন্য বুক করেছি।”
-ওহ আচ্ছা।মুচকি হাসে রুহী।
.
.
ওরা ভিতরে ঢুকে গেলো পপকর্ন আর জুস কিনে।মুভি শুরু হয়ে যায়।রুহী একমনে মুভি দেখছে।তবে রোয়েনের সেদিকে কোন খবর নেই।রোয়েন তো তারা মায়াবতীকে দেখতে ব্যাস্ত।রোয়েন রুহীর হাতের ওপর হাত রেখে ওর আঙ্গুল গুলো নিজের আঙ্গুলের ভাজে নিতে থাকে।রুহী রোয়েনের দিকে একবার তাকিয়ে মুচকি হাসে।রোয়েন এবার রুহীর ঠোঁটে চুমু খায়।রুহী মাথা সরিয়ে মুভির দিকে তাকায়।এদিকে হঠাৎ রামীন বলল,
.
.
-”আমরা পপকর্ন কিনে আনি।”
-”একজন যা।”
-”দুই প্যাকেট আমি একা ধরতে পারবোনা।তোরা দেখনা।”
-”ওকে যা ভাগ।”
.
.
আশফিনাকে নিয়ে বেরিয়ে আসে রামীন।আশফিনা খেয়াল করলো রামীন ওকে খাবার সেকশনে না নিয়ে অন্য জায়গায় নিয়ে এলো।আশফিনা বুঝতে পারছেনা কি করতে চাচ্ছে এই লোক?রামীন ওকে একটা পিলারের সাথে এনে দাঁড় করায়।আশফিনা একটু হেসে বলল,
.
.
-”এখানে আনলেন যে?পপকর্ন তো ঐদিকে।”
-”শশশশ!!!!আশফিনা এখন আমি কিছু করবো।”
-”কি করবেন?”
-”চোখ বুজে নাও।”
-”ক কি করবেন আপনি?”
-”শশশশ এতো কথা না বলে চোখ বুজো।নাহলে ফিল করতে পারবেনা।”
-”করছি।মাথা খারাপ হয়ে গেছে আপনার।”
.
.
আশফিনা চোখ বুজে নেয়।হঠাৎ ওর মনে হয় ওর ঠোঁটজোড়া নতুন একজোড়া ঠোঁট শুষে নিচ্ছে।আশফিনার আর চোখ খুলতে ইচ্ছে করলোনা।বড্ড আরাম হচ্ছে ওর।এদিকে রোয়েন রুহীর কাঁধে ঠোঁট বুলাচ্ছে।রুহীর কেমন যেন লাগছে।
.
.
-”দেখতে দিবেননা?”
.
.
রুহীর কথায় রেগে যায় রোয়েন।তারপর কটমট গলায় বলল,
.
.
-”তোমাকে কি ধরে রেখেছি।তুৃমি দেখো।আমাকে বিরক্ত করছো কেন?”
.
.
রুহী চুপ হয়ে যায়।রুহী ভাবছে ওর নানা নানু কি বিয়েতে আসবেনা।রোয়েন তো তাদের পছন্দ করেননা।তাহলে ওর বিয়েতে ওনারা আসবেননা?হঠাৎ রোয়েন সরে এলো।তারপর ফিসফিসিয়ে বলল,
.
.
-”পপকর্ন আনতে এতসময় কেন লাগছে?রুহী বসো আনি দেখে আসি ওদের।”
-”আচ্ছা।”
.
.
রোয়েন বেরিয়ে এসে ওদের খুঁজতে থাকে।খাবার সেকশনে ওরা নেই।কিছুটা চিন্তিত হয় রোয়েন।ও হাঁটতে থাকে।হঠাৎ ও খেয়াল করে একটা পিলারে রামীনের মতো কেউ রোয়েনের দিকে পিঠ দিয়ে দাঁড়িয়ে কি যেন করছে।রোয়েন এবার একটু ভালোমতো দেখার ট্রাই করে।লোকটার পিঠে একটা মেয়েলি ফর্সা হাত।রোয়েন এবার সরে এসে ওদের চেহারা দেখতেই চমকে গেলো।রামীন আর আশফিনা চুম্বনরত অবস্থায়।রোয়েন মুচকি হেসে ভিডিও করলো পুরো সিনটা।ভিডিও করে রোয়েন এসে রুহীর পাশে বসে।মুচকি হাসছে ও।রুহী রোয়েনকে দেখে,
.
.
-”কি হলো?”
-”কিছুনা।দেখো তুৃমি।”
-”ওনারা কই?”
-”অনেক ভিড় সেখানে তাই বিলম্ব হচ্ছে।নায়ক নায়িকার বিয়ে হয়ে গেছে রুহী?”
-”না আপনি তো দেখেননি।শুধু,,,,, রুহীর মুখ লাল হয়ে আসে।”
.
.
রোয়েনের মুখে দুষ্টুমি হাসি।ও বলল,
.
.
-”শুধু কি করছিলাম?”
-”কিছুনা।”
-”কিছু তো বলতে চাইছিলে,বলো।”
.
.
রুহী কিছু বলতে যাচ্ছিলো তখনই রামীন আর আশফিনার আগমন ঘটে পপকর্ন হাতে।রুহী আশফিনাকে জিজ্ঞেস করে,
.
.
-”এতো দেরি হলো যে?”
-”রুহী অনেক ভিড় ছিলো।এখনই কমেছে।”
-”ওহ।।”
.
.
সিনেমা শেষে ওরা বেরিয়ে আসে।হালকা খাবার খেয়ে বাসায় চলে আসে।আশফিনা কে ঘরে পাঠিয়ে রামীনকে নিজের বাসায় আনে রোয়েন।রুহীকে রোয়েন ওর রুমে নিয়ে বলল
.
.
-”ফ্রেশ হয়ে নাও।আমি রামীনকে নিয়ে ছাদে গেলাম।”
-”ওকে জলদি আসবেন।”
-”হুম।”
.
.
রুহী ফ্রেশ হতে যায়।রোয়েন রুহীকে না দেখিয়ে একটা ভোদকা কিনেছিলো।রোয়েন রামীনকে নিয়ে ছাদে আসে।সাথে দুটো গ্লাস। রামীন বোতলটা দেখে বলল,
.
.
-”বাহ দোস্ত আজ এ কোন রোয়েনকে দেখছি?”
-”নাটক করিস না তো।ইচ্ছে হলো আজ।”
-”ওহ ভালো।তা রুহী দেখেনি?”
-”নাহ ও জানলে রাগ করবে।”
-”ওহ।”
.
.
রোয়েন আর রামীন ছাদে রাখা দুটো চেয়ারে বসে পড়ে।রোয়েন দুটো গ্লাসে একটু করে ঢেলে নিয়ে একগ্লাস রামীনকে দেয়।রামীন সেটায় নিয়ে সিপ দেয়।রোয়েন একটু করে খায়।কিন্তু রামীন অনেক খাচ্ছে।দুবন্ধু গল্প করতে থাকে।হঠাৎ রোয়েন বলল,
.
.
-”আজ দুটো মুভি দেখেছি।”
-”কি??”অবাক হয় রামীন।
-”হ্যা একটা হলে আর একটা বাহিরে।বাহিরেরটা বেশ ইন্টারেস্টিং ছিলো।”
-”কি বলছিস?”
-”হুম।ওয়েট ভিডিও করে এনেছি।”
.
.
রোয়েন ভিডিওটা ছেড়ে রামীনের সামনে ধরে।রামীন মাতাল চোখে ভালো মতো দেখার চেষ্টা করলো।তারপর মাতাল গলায় বলল,
.
.
-”ছেলেটা দেখতে ঠিক আমার মতো না?”
-”হুম।মেয়েটা কিন্তু ঠিক আশফিনার মতো তাইনা?”
.
.
রোয়েনের কথায় রামীনের মাতালতা কেঁটে যায়।চোখ বড় বড় করে নেয়।রোয়েন হো হো করে হাসতে শুরু করে।রামীনের মুখ চুপসে গেলো।ও বলল,
.
.
-”তোকে আর রুহীকে কিস করতে পর্যন্ত দেখিনি।আর তুই আমাদের টা ভিডিও করে নিলি?এটা ঠিক না।”
-জাস্ট ভিডিও করেছি।নেটে তো তোকে বিশ্বপ্রেমিকের খ্যাতি তো দেইনি।”
-”হুম।”অন্যমনস্ক ভাবে।
-”তা এসব কতোদিন ধরে চলছে বলবেন?”
-”বিশ পচিশ দিনের মতো।দেখ ওকে আমি খুব ভালোবাসি সত্যি ভালোবাসি।”
-”বিয়ে কবে করবি?”
-”ঠিক করিনি।ও তো চলে যাবে।বাবা মা ও এখানে নেই।বুঝতে পারছিনা।কি করবো?”
.
.
আরো অনেকক্ষন গল্প করে দুই বন্ধু।এগারোটায় রামীন বাসায় চলে যায়।রোয়েন নিচে এসে দেখলো রুহী পড়া শুনা করছে।রোয়েন রুহীর মাথায় চুমু দিয়ে রুমে চলে যায়।ডিনার করে ওরা সাড়ে এগারোটায়।রুহী রেয়েনের রুমে আসে।নানা নানুর কথা বলা প্রয়োজন ওনাকে।রোয়েন রুহীকে দেখছে।রুহী বলার চেষ্টা করছে।ওর খুব ভয় হচ্ছে।হঠাৎ রোয়েন কাছে এসে ওর হাত টেনে খাটে বসায়।তারপর ওর দুগালে চুমু দিয়ে ওকে বিছানায় শুইয়ে দেয়।রুহীর ওপর হালকা উঁবু হয়ে ওর ঠোঁট শুষে নিতে শুরু করে।রোয়েন আজ ভালোবাসার সাগরে নৌকায় ভেসে বেড়াচ্ছে।রুহীর গলায় এসে নামে ও।সেখানে চুমু খেতে থাকে।রুহী ভাবছে ওনার মন ভালো আছে।কথা টা বলার দরকার এখনই।রুহী হঠাৎ বলল,
.
.
-”আমার নানা নানু মনে হয় আসবে।”
.
.
রুহীর কথায় ভালোবাসার নৌকা যেন হঠাৎ প্রবল ঢেউতে ডুবে গেলো।মেজাজ বিগড়ে গেলো রোয়েনের।এমন কথা বলার মানে কি তাও আবার এমন সুখের মুহূর্তে?ভাবতে থাকে রোয়েন।
চলবে