The Cobra King Mafia Boss- Season 4

The Cobra King Mafia Boss- Season 4 !! Part- 40

→সন্ধ্যায় রুহীর কান্না থেমে যায় কলিংবেল বাজার শব্দে।চোখ জোড়া মুছে খাট থেকে নেমে দরজার সামনে এসে দাঁড়িয়ে কি যেন ভাবে কিছুক্ষন তারপর দরজা খুলেই দেখে তাঞ্জুম ভাবি,শামীম ভাইয়ের বৌ।রুহীকে দেখে হালকা হাসে তাঞ্জুম।ওনার হাতে দুটো শপিং ব্যাগ।রুহী ওনাকে ভিতরে আসতে বলে সরে দাঁড়ায়।তাঞ্জুম ভাবি বেশ সেজে এসেছেন।এর কারন বুঝতে পারছেনা রুহী।তাঞ্জুম ভাবি ব্যাগ দুটো রুহীর দিকে ধরে বললেন,
.
.
-”রুহী এগুলো পরে রেডি হয়ে এসো।”
-”কেন?”
-”পার্টি আছে স্যারের কনভেনশন সেন্টারে।”
-”না আমি যাবোনা।”
.
.
তাঞ্জুম কিছু বলতে যাচ্ছিলো।ঠিক সেই মুহূর্তে রুহীর ফোন বেজে উঠে।ও দৌড়ে রুমে এসে ফোন হাতে তুলে দেখে রোয়েনের কল আসছে।রুহী কল রিসিভ করে কানের সামনে রাখে।তারপর ভাঙ্গা গলায় বলল,
.
.
-”জি!!”
-”রুহী কোন রকমের ফালতু জেদ না করে চলে আসো।না আসলে খুব খারাপ হবে।”
.
.
রুহী কিছু বলতে পারেনি।বলার আগে কল কেঁটে যায়।রুহী কেঁদে ব্যাগ দুটো হাতে নিয়ে রুমে আসে।সেখানে একটা শাড়ী আছে জাম কালারের আর আর কিছু গয়না। রুহী সেগুলো পরে নেয়।তারপর সাজ নিয়ে বেরিয়ে যায় তাঞ্জুম কে নিয়ে।রোয়েনের কনভেনশন সেন্টারে পৌছেই দেখে পুরো অন্ধকার।কোথাও কেউ নেই।এমনকি সাথে তাঞ্জুম ছিলো সে ও নেই।রুহীর কেমন বুক ধুকধুক করতে শুরু করে।কি হচ্ছে ওর সাথে?হঠাৎ কিছু কিছু জায়গায় আলো জ্বলে উঠতে শুরু করে।যেসব জায়গায় আলো জ্বলছিলো সেখানে রুহী ওর আর রোয়েনের কাপল ছবি দেখতে পায়।রুহী বেশ অবাক হয়ে যায়। হঠাৎ কারোর হাতের ছোঁয়া পায় ও।একটা পুরুষালি হাত বেশ শক্ত তবে খুব পরিচিত আর প্রিয়।সেই হাত যেটা ওকে বুকের মাঝে আগলে রেখেছে।সেই হাত যেটা ওকে ভালোবেসে জড়িয়ে ধরে।সেই হাত যে হাতের ছোঁয়া না পেলে ওর ভালো লাগেনা একদমই।সেই হাত যে হাত আঁকড়ে ধরে বেঁচে থাকতে চায়।রুহীর ভয় লাগছেনা এখন আর।কারন বড় নির্ভরযোগ্য মানুষটার হাত ধরে আছে ও।হাঁটতে হাঁটতে এক জায়গায় এসে থেমে যায় ওরা।হঠাৎ পুরো জায়াগায় আলো জ্বলে উঠে আর অনেক জন চিৎকার করে উঠে,
.
.
-”সারপ্রাইজ!!!!!! ”
.
.
রুহী এবার চমকে উঠে আশেপাশে তাকিয়ে দেখে পরিচিত সব মুখ।রামীন আর ওর ভাই ভাবি, আশফিনা,বাবা রোয়েনের লোকেরা সব।রুহী এবার সামনে তাকায় রোয়েনের দিকে।তারপর জিজ্ঞাস করে,
.
.
-”কি হচ্ছে এসব?”
.
.
রোয়েন কিছু না বলে বাঁকা হেসে হাঁটু গেড়ে বসে রুহীর সামনে।তারপর একটা হাত এগিয়ে দেয় রুহীর সামনে,
.
.
-”মায়াবতী তোমার মায়াজালে সারাটাজীবন আটকে থাকতে চাই।তোমার ভালোবাসায় নিজেকে পরিপূর্ন করতে চাই।নিজের প্রত্যেক হৃদকম্পনে তোমাকে অনুভব করতে চাই।প্রত্যেকটা সকালে তোমার ভিজা চুলের পানির স্পর্শে জাগতে চাই।সেই সুযোগ দিবে আমায়?হবে আমার কোব্রাপুরির রানী?Will you marry me Ruhi???
.
.
রোয়েন এভাবে প্রপোজ করবে ভাবতে পারেনি রুহী।ও তো অবাকের চরম সীমায়।লোকটার জন্য ওর ভালোবাসা যেন অনেকটা বেড়ে গেছে।তাকে হারাতে চায়না রুহী।খুব ভালোবাসে প্রিয় মানুষটিকে।হঠাৎ পাশে সবাই চিৎকার করতে লাগলো,
.
.
-”রুহী ম্যাম!!!রুহী ম্যাম!!! রুহী ম্যাম!!!”
.
.
এবার আর চুপ থাকতে পারেনা রুহী।রোয়েনের হাতের ওপর হাত রাখে ও। তারপর কম্পন ধরা গলায় বলল,
.
.
-Yes.
.
.
রোয়েন উঠে রুহীর অনামিকা অাঙ্গুলে একটা আংটি পরিয়ে দেয়।রুহী গিয়ে জড়িয়ে ধরে রোয়েনকে । কেঁদে দেয় ও।রোয়েন ও কিছুটা জড়িয়ে ধরবে মায়াবতীকে তারপর কানে ফিসফিস করে বলল,
.
.
-”রুহী সবাই আছে।তোমার বাবা ও আছে।”
.
.
বাবার কথায় লজ্জা পেয়ে সরে আসে রুহী।তখনই রেজোয়ান মাহবুব এসে মেয়ের কাছে দাঁড়ান।তারপর হেসে বললেন,
.
.
-”সরি মা।তোকে সারপ্রাইজ দেয়ার জন্যই করেছিলাম এমনটা।”
-”আনা বাবা সরি বলতে হবেনা।”
.
.
রুহী এসে বাবাকে জড়িয়ে কেঁদে দেয়।কিছুক্ষন পর সরে আসে রুহী।রোয়েন এসে আস্তে করে বলল,
.
.
-”আরেকটা সারপ্রাইজ আছে আশা করি ভালো লাগবে।”
-”কি সেটা?”
.
.
রোয়েন এবার রুহীর হাত ধরে সবার সামনে মাইকে বলল,
.
.
-”আমাদের বিয়ে সামনের মাসের ১০ তারিখে। আজ থেকে বাকি আছে আরো তেইশ দিন।আমি চাইছি এবার সবাই মিলে প্রস্তুতিতে লেগে যান।”
.
.
রোয়েনের কথায় সবাই হাত তালি দিতে শুরু করে।
.
.
হাত দিয়ে রুহীকে সামনে তাকাতে ইশারা করে।রুহী সামনে তাকিয়ে দেখে আরমান হামিদ আর নীরা হামিদ দাঁড়িয়ে আছে আর তাদের মেয়ে সামায়রা হাসি মুখে।রুহী দৌড়ে ওনাদের জড়িয়ে ধরে।দুজনে ভাগনীকে জড়িয়ে ধরে।রুহী সরে এসে সামায়রার গালে চুমু খেয়ে বলল,
.
.
-”ভালো আছিস সোনা?”
-”জি আপি।তুই ভালো আছিস?”
-”হুম।”
-”আপি জানো রোয়েন ভাইয়া আমাদের আনিয়েছে তোকে সারপ্রাইজ দিতে।রুহী মাথা উঠিয়ে মামা মামীর দিকে তাকায়।ওনারা ও মাথা নাড়ায়।”
.
.
রুহী উজ্জ্বল হাসি হেসে রোয়েনের দিকে তাকায়।লোকটা আগের মতো দাঁড়িয়ে আছে। রুহী মামা মামী আর সামায়রার সাথে গল্প করে কিছুক্ষন।ওয়েটার হেঁটে হেঁটে ড্রিংকস দিচ্ছে সবাইকে।রোয়েন বিরক্ত হচ্ছে মেয়েটা কেন ওর থেকে দূরে থাকছে।রোয়েন এজজন ওয়েটার কে ডেকে কি যেন বলল।রুহী খেয়াল করে হঠাৎ লাইট অফ হয়ে গেছে।সবার মাঝে কেমন যেন হৈ রৈ পড়ে যায় এরই মাঝে রুহীর হাত ধরে কেউ নিজের সাথে মিশিয়ে নেয়।রুহী কেঁপে উঠে তার কলার খাঁমচে ধরে।তখন হালকা নীল আলো জ্বলে উঠে।আর ওদের ওপর সাদা আলো।রোয়েন নেশাকাতর চোখে মায়াবতীকে দেখছে।রুহীর কোমড় রোয়েনের এক হাত পেঁচিয়ে ধরেছে।রুহীর একহাত ধরে আছে রোয়েন।হঠাৎ কোথা থেকে যেন গান বেজে উঠে।
Dil Hai Ke Manta Nahin Lyrics
Dil hai ke manta nahin
Dil hai ke manta nahi
Mushqil badi hai rasme mohabbat
Ye jaanta hi nahi
Dil hai ke manta nahin x (2)
Yeh bekarari kyun ho rahi hai,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,
নাচের মাঝে রুহী ভালবাসার মানুষটাকে দেখছিলো।রোয়েন তো আজ চোখ ফেরাতে পারছেনা।অসাধারন লাগছে মায়াবতীকে।পার্টি শেষে সবাই খাওয়া দাওয়া করে চলে যায়।মামী মামা আর সামায়রা রেজোয়ান মাহবুবের ঘরে থাকবে।রুহীকে নিয়ে রোয়েন ঘরে চলে আসে।বাসায় ঢুকে আর সময় না নিয়ে রুহীকে কোলে করে রুমে আসে রোয়েন।রুহীকে বিছানায় শুইয়ে ওর ওপর নিজের ভর ছেড়ে দেয়।রুহীর ঠোঁটে চুমু খেতে শুরু করে রোয়েন।রুহী ও যেন পূর্ন অধিকারে চুমু দিচ্ছে রোয়েনকে।রুহীর গলায় কপালে গালে পেটে এলোপাথাড়ি চুমু দিতে থাকে রোয়েন।একটু পর সরে আসে ও।রুহী রোয়েন কে দেখছে।ওর হাত রোয়েনের গলায়।রুহী ধীরে সেখানে আঙ্গুল বুলাচ্ছে।আর কিছুদিন পরেই লোকটাকে পেয়ে যাবে সম্পূর্ন ভাবে।আর দূরুত্ব থাকবেনা।রোয়েন রুহীর কপালে চুমু খেয়ে বলল,
.
.
-”আমি চাই সব সময় আমার সাথে থাকো তুমি।আমার স্ত্রী, আমার মায়াবতী আমার প্রেমিকা হয়ে।আমার সাহসের উৎস হিসেবে থাকবে আমার সাথে।পারবেনা?”
-”আমি সবসময় আপনার সাথে থাকবো।আপনাকে চাইবো।আপনার পথ চলার সঙ্গী হবো।শুধু কথা বলা বন্ধ করবেননা।খুব কষ্ট হয় আমার।”
-”আই লাভ ইউ রুহী।”
.
.
রুহী রোয়েনকে টেনে ওর কপালে গালে ঠোঁটে চুমু খেয়ে শক্ত করে জড়িয়ে ধরে।দুজনেই একপর্যায়ে ঘুমিয়ে যায়।পরদিন বিকেলে আশফিনা রামীনের ঘরে চলে আসে।পহেলা বৈশাখ তাই অফিস বন্ধ।রামীন প্রেয়সীকে দেখে মুগ্ধ।লাল স্যালোয়ার কামিজ পরে আছে মেয়েটা।চমৎকার লাগছে দেখতে।আশফিনার হাতে হটপট।রামীন বলল,
.
.
-”কোথাও যাচ্ছো?”
-”না কেন?”
-‘এতো সেজে আছো।খুব সুন্দর লাগছে।”
-”মাঝে মাঝে আপনাকে দেখলে মনে হয় হাঁদারাম আপনি।বুঝেননা কেন সেজেছি?আজ তো পহেলা বৈশাখ ও।”
-”ওহ সরি ভুলেই গেছি।তা কি এনেছো?”
-”কাল কেক বানিয়েছিলাম আপনার জন্য কিন্তু দিতে পারিনি।তাই নিয়ে আসলাম।”
-”ওহ।”
.
.
রামীনকে নিয়ে কেক খাটে বসে আশফিনা।বাটি খুলতেই হামলে পড়ে রামীন কেকের ওপর।চেঁটে পুঁটে খেয়ে নেয় কেকটা।এদিকে আছরের নামাজ পড়ে নেয় রুহী।উঠে পিছনে ফিরতেই রোয়েনের সাথে ধাক্কা খায় ও।
.
.
-”এভাবে দাঁড়িয়ে আছেন যে?ভয় পেয়ে গেছিলাম।”
.
.
রোয়েন চুপচাপ রুহীর হাতে দুটো টিকিট ধরিয়ে দেয়।সিনেমা হলের টিকিট।
চলবে