The Cobra King Mafia Boss- Season 4 !! Part- 42
→রুহীর কথাটা শুনতেই মেজাজ প্রচন্ড বিগড়ে যায় রোয়েনের।এই মেয়ের সাহস কি করে এমন কথা বলার তারওপর এমন পরিস্থিতিতে?রোয়েনের মাথা প্রচন্ড গরম হয়ে গেছে।এমন একটা মুহূর্ত নষ্ট করার মানে কি?রোয়েন এবার শোয়া থেকে উঠে বসে গলা ফাঁটিয়ে চিৎকার করে বলল,
.
.
-”তোমার সাহস কেমনে হলো ওনাদের নিয়ে কথা বলার?তাও আবার এমন মুহূর্তে?”
-”আ’ম সরি বাট ওনাদের আসা উচিৎ।মুরব্বি ওনারা,ওনাদের দোয়া প্রয়োজন আমাদের।”
-”কাদের দোয়া প্রয়োজন আর কাদের টা প্রয়োজন না সেটা বুঝাতে এসোনা।ওনারা প্রচন্ড লোভী।তোমাকে ভালোবাসেননা ওনারা।”
-”রোয়েন নানা নানুকে নিয়ে এসব বলবেননা প্লিজ।মানলাম বয়স্ক লোকের সাথে আমার বিয়ে ঠিক করেছিলো ওনারা।কিন্তু তাই বলে ওনারা আমাকে ঘৃনা করেননা।আর লোভী ও না।”
.
.
রুহীর কথায় প্রচন্ড অবাক রোয়েন।এতো অন্ধ বিশ্বাস কেন ওনাদের ওপর?রুহী কেন দেখতে পাচ্ছেনা তাদের সুন্দর মুখোশের পিছের কালো বীভৎস চেহারাটা?নাহ ওকে বিশ্বাস করতেই হবে রোয়েনের কথায়।মেজাজ আরো বেশি বিগড়ে গেলো।রোয়েন বলতে শুরু করলো,
.
.
-”রুহী তুমি ওনাদের চিনতে পারছোনা।ওনারা তোমার টাকাকে ভালোবাসে তোমাকে না।তুমি যাওয়ার পর ওনারা তোমাকে কি বলেছিলো মনে নেই?যে তুই এসেছিস কেন? টাকা পাঠিয়ে দিতি?রুহী আমার মনে হয়না নাতনী থেকে টাকাটা বেশি কোন নানা নানুর জন্য।তারপরও তুমি তাদের কে বিশ্বাস করছো।”
-”রোয়েন মানলাম ভুল করেছে তারা।কিন্তু তারা আমাকে ভালবাসে।আমাকে অনেক যত্ন করে বড় করেছে।তাদের বিরুদ্ধে যেতে পারবোনা আমি।”
-”তুমি আমার কথা বুঝতে পারছোনা।তারা তোমার জন্য ঠিক না। ”
-”আপনার হয়ত তাদের পছন্দ না।তাই এসব বলছেন।কিন্তু ওনারা সত্যিই আমাকে ভালোবাসে আর আমি চাই ওনারা আসবেন।”
.
.
এবার প্রচন্ড রেগে গেলো রোয়েন।এ মেয়েটা তো বুঝতে পারছেনা ওর কথা।রোয়েনের ইচ্ছে করছে জোরে থাপড় দিয়ে গাল ফাঁটায় ফেলতে কিন্তু প্রিয়তমাকে আঘাত করতে মন সায় দিচ্ছেনা রোয়েনের তাই গলা ফাঁটিয়ে বলল,
.
.
-”আমি যাকে চাই সেই বিয়েতে আসবে।বুঝেছো?”
.
.
রুহীর চোখ ফেঁটে অশ্রু বের হতে শুরু করে।দৌড়ে রোয়েনের রুম থেকে বের হয়ে নিজের রুমে গিয়ে দরজা লাগায় রুহী।রোয়েন দৌড়ে দরজা নক করতে শুরু করে।রুহী খুলছেনা।
.
.
-”রুহী দরজা খুলো বলছি।দরজা না খুললে খুব খারাপ হবে।রুহী দরজা খুলো, কথা আছে!!!!”
.
.
অপরপাশ থেকে রুহীর কান্নার শব্দ ভেসে আসতে থাকে।কিন্তু দরজা খুলে না ও।এক পর্যায়ে রোয়েন নিজের রুমে চলে আসে।সে রাত রুহী কেঁদে কাঁটিয়ে দেয়।সাড়ে চারটায় ফজরের নামাজ আদায় করে ঘুমিয়ে পড়ে রুহী।অভ্যাসমতো বেশ সকালে ঘুম ভাঙ্গে রুহীর।বিছানা ছেড়ে উঠে ফ্রেশ হয়ে পাকঘরে চলে আসে।রোয়েনের নাস্তা বানিয়ে টেবিলে দিয়ে কফি বানাতে চলে যায়।কফি বানিয়ে রোয়েনের রুমে এসে দেখে চুল আঁচড়াচ্ছে।রুহী কফি টা টিটেবিলে রেখে চলে আসতে নিলে রোয়েন ওর হাত টেনে নিজের কাছে এনে চুমু দিতে গেলে রুহী রোয়েন ছাড়িয়ে নিতে চায়।রোয়েন ওকে শক্ত করে ধরে বলল,
.
.
-”রুহী কথা শুনো।দেখো এভাবে বলতামনা।কিন্তু ওনারা সত্যিই,,,,, ”
-”আমি কিছু শুনবো না।শুধু চাই ওনারা বিয়েতে আসবে।”
-”রুহী বুঝতে চেষ্টা করো,,,,,,”
.
.
রোয়েনকে বলতে না দিয়ে ওর হাত ছাড়িয়ে বেরিয়ে যায় রুহী।রোয়েন মন খারাপ করে অফিসে আসে নাস্তা না করে।রামীন এসে ওর সামনে বসে।
.
.
-”কিরে মুখ শুকনো কেন?নাস্তা করিসনি?”
-”নাহ।”
-”কি হয়েছে রোয়েন?”
-”রুহী ওর নানা নানু কে আনতে চায়।ওকে বারবার বুঝানোর পর ও বুঝতে চায় না।কাল ঝগড়া হয়েছে এটার ওপর।কথা বলছেনা আমার সাথে।”
-”রুহীকে বুঝতে হবে ওনার নানা নানু তো খারাপ।”
-I don’t know what to do?
-থাক মন খারাপ করিসনা।ওকে সময় দে।
-হুম।।
.
.
কিন্তু রোয়েনের মন মানছেনা।মায়াবতীকে ছাড়া দূরে থাকতে ও পারছেনা।কতোটা ভালোবাসে বোঝানো বড় দায়।এদিকে রামীন সন্ধ্যায় বেরিয়ে পড়ে রেজোয়ান মাহবুবের ঘরের পানে।তার প্রিয় মানুষটি অপেক্ষা করছে তার জন্য।আগের দিনের চুম্বনের পর তেমন একটা কথা বলতে পারেনি আশফিনা ওর সাথে।রামীন এসে আশফিনাকে দেখতে পায় রেজোয়ান মাহবুবের গেটের সামনে।আশফিনা দাঁড়িয়ে আছে চুপচাপ।রামীন ওর সামনে দাঁড়ায়।তারপর বলল,
.
.
-”দেখো কাল যা হলো।আমি কেন করলাম জানিনা।”
-”না ঠিক আছে। আসলে আমার জীবনের প্রথম তো।তাই অন্যরকম লেগেছিলো।”
-”আশফিনা তোমাকে সত্যি কথা বলতে চাই।আমি চাই আমরা একে অপর থেকে কোন কিছু না লুকাই।”
-”হুম।বাট কি কথা বলবেন?”
-”তোমার জীবনে প্রথম চুম্বন ছিলো বাট আমার না।”
-”হ্যা!!!!”
-”হুম।জানোই তো অস্ট্রিয়ায় ছিলাম।সেখানকার কালচার কেমন বুঝো।তো সেখানে একটা মেয়ে ছিলো।ওকে ভালো লাগতো আমার।পনেরদিনের রিলেশন ছিলো।এ্যাক্সিডেন্টালি কিস টা হয়ে গিয়েছিলো।কিন্তু পর দিনই ব্রেকআপ করে ফেলি।”
.
.
রামীনের কথায় এতসময় খারাপ লাগলে ও এবার বেশ অবাক হয় আশফিনা।তারপর বলল,
.
.
-”কেন?”
-”ও লিভ টুগেদারে থাকতে চেয়েছিলো।কিন্তু সেটা আমার ধর্ম আমার বিবেক সায় দেয়নি।তাই ব্রেকআপ করে ফেলি।”
.
.
রামীনের প্রথম কিছু কথায় খারাপ লাগলে ও এবার ভালো লাগতে থাকে আশফিনার।
.
.
-”আশফিনা আমি জানি তোমার হয়ত খারাপ লাগছে।আ’ম সরি।”
-”ইটস ওকে।আমি খুশি কারন শেয়ার করেছেন আপনি।”
-”হুম।”
.
.
আশফিনা এবার চুপচাপ রামীনকে জড়িয়ে ধরে।রামীন ও ওকে জড়িয়ে ধরে অাষ্টেপৃষ্ঠে।এদিকে রুহী এখন আর ঠিক মতো কথাই বলছেনা।দরকারি কথা ছাড়া কোন কথা বলছেনা।রোয়েন কাছে টানলে ও আসতে চায়না।জীবনটা যেন থমকে গেছে রোয়েনের।কি হয়ে গেলো?কি করে বুঝাবে মেয়েটাকে?যতোই বুঝাতে চায় রুহী একটা কথাই বলে ওর নানা নানু আসবে বিয়েতে।আর রোয়েন না বলে দেয়।আর কতো এভাবে দূরে থাকবে মেয়েটার থেকে?রোয়েনের প্রায় সবসময়ই মন খারাপ থাকে।সেটা রামীনের চোখে পড়ে এমন কি রেজোয়ান মাহবুবের ও।রেজোয়ান মাহবুব সেদিন রোয়েনের কাছে আসেন।তারপর বললেন,
.
.
-”আপনি আমার ছেলে বাবা।আজ এই বাবা জানতে চাইছে কি হয়েছে তার ছেলের?”
-”বাবা রুহী চায় ওর নানা নানু এখানে আসুক।”
-”সেটা তো সম্ভব নয়।ওকে বুঝাতে হবে।”
-”কি করে বুঝাবো বলেন?বুঝতে চাইছেনা ও।কথাই বলছেনা।”
.
.
রেজোয়ান মাহবুব আর কিছু বলতে পারেননা।কিই বা বলবেন?বোকা মেয়েটাকে বুঝানো বড় কঠিন কাজ।তিন চারদিন পার হয়ে যায়।রুহীর কোন পরিবর্তন নেই।রোয়েন রুহীর রুমে আসে।দিনটা শুক্রবার।তাই ভাবলো আজ এ্যাংগেজমেন্ট এর শপিং করা যাওয়ার বাহানায় বুঝাবে রুহীকে।কথা গুলো ভেবে রুহীর দিকে তাকায় রোয়েন।নামাজের বিছানায় বসে আছে রুহী।সালাম ফিরালে রোয়েন বলল,
.
.
-”নামাজ শেষ হলে রেডি হয়ে নাও।শপিং এ যাবো।”
-”না।”
-”কি না?”
-”রুহী একদম ত্যাড়ামী করবেনা।থাপড়ে ত্যাড়ামী ছুটিয়ে দিবো।এক্ষুনি রেডি হয়ে নাও জাস্ট ইন ফাইভ মিনিটস।”
.
.
রুহী এবার চুপচাপ উঠে বাথরুমে চলে গেলো।শপিং এ আসার পর থেকে কিছুই পছন্দ করছে না রুহী।রোয়েন যাই দেখাচ্ছে চুপ করে আছে রুহী।এভাবে অনেকটা সময় পার হতেই রোয়েন রেগে ওকে বাসায় নিয়ে আসে।বাসায় এসেই রুহীকে দেয়ালে চেঁপে ধরে রোয়েন।
.
.
-”প্রবলেম কি কথা বলছো না কেন?কিছু পছন্দ ও করলেনা।”
-”আমার নানা নানু আসলেই হবে।আর কিছু লাগবেনা আমার।”
.
.
রুহীর কথা প্রচন্ড রেগে গিয়ে রোয়েন পাশের কাঁচের টেবিলে জোরে হাত বাড়ি লাগায়।কাঁচ ভেঙ্গে রোয়েনের কিছু ঢুকে যায়।আর বাকি কাঁচ ঝনঝন করে নিচে পড়ে গড়াগড়ি খেতে থাকে।কাঁচ ভাঙ্গার শব্দে রুহী চমকে উঠে রোয়েনের দিকে তাকিয়ে ওর হাতের দিকে তাকায়।কিন্তু রোয়েন ওকে উপেক্ষা করে বেরিয়ে যায়।রুহী আরো কিছুক্ষন রোয়েনের যাওয়ার দিকে তাকিয়ে থেকে রুমে চলে যায়।সেদিন রাতে রেজোয়ান মাহবুব রোয়েনের বাসায় আসে।সারাদিনে রোয়েন ঘর থেকে বের হয়নি।রেজোয়ান মাহবুব মেয়ে কে ডেকে আনেন।তারপর বললেন,
.
.
-”স্যার তোর নানা নানু কে দাওয়াত করেছে বিয়েতে।”
-”সত্যি!!!!”
.
.
রুহী খুশি মনে রোয়েনের রুমে যেতে নিলে বাবা ওকে থামায়।
.
.
-”আমার কথা শেষ হয়নি রুহী।”
-”কি বাবা??? ”
-”কাজ টা ভালো করিসনি।ভুল করেছিস তুই।”
চলবে