আমার ক্রাশ বর !! Part- 28
এদিকে অনুর কান্না শুনে মৌ এসে দেখে, অনু পায়ে হাত দিয়ে ধরে বসে কান্নাকাটি করছে।
মৌ তাড়াতাড়ি বাড়ির সবাই কে ডাক দেয়।
শাশুড়ি মা, শ্বশুর এসে দেখে বেচারি অনুর পা ফুঁলে গেছে।
সে সময় আরিয়ান ও বাড়িতে এসে দেখে তার রুমের মাঝে সবাই জটলা বেধে বসে আছে।
অনুর পাশে বসে ওর পায়ে হাত দিয়ে দেখে পা ফুলে গেছে।
আরিয়ান অনুকে বলে,”তা রুমের মধ্যে কি ভাবে পায়ের বারোটা বাজালেন ম্যাডাম। ”
অনু আরিয়ানের দিকে তাকিয়ে জোড়ে কান্না করে বলে,”দেখেন মা, আমি ব্যাথায় মরে যাচ্ছি আর আপনার ছেলে পড়ে আছে কি ভাবে কি হয়েছে তার পিছনে।”
শাশুড়ি মা বলে,”বাকী ইতিহাস না হয় বাবা পড়ে জানবি!মেয়েটা ব্যাথায় কাতর হয়ে গেছে আগে ডাক্তারের কাছে নিয়ে যা “।
অারিয়ান অনুকে আর কিছু না বলে তাড়াতাড়ি কোলে করে হাসপাতালে নিয়ে যায়।
হাসপাতালে এসে ডাক্তার দেখিয়ে পরিক্ষা – নিরিক্ষা করে রিপোর্ট দেখে ডাক্তার বলে,”পা ভাঙ্গে নাই,কিন্তু হাড়ে আঘাত লেগেছে।
আমরা এমনি নরমাল ব্যান্ডেজ করে দিয়েছি। কিছুদিন বিশ্রাম করলে সব ঠিক হয়ে যাবে।”
আরিয়ান তখন ডাক্তার কে বলে,”দেখেন তো অনুর আর কোনো সমস্যা আছে না কি?
সারাদিন খিটখিটে মেজাজ নিয়ে ঘুরাঘুরি করে,
শরীর দুর্বল হয়ে গেছে,খাবার খায় না সময় মতো।”
ডাক্তার আরিয়ানের কথা শুনে এক ভ্রু কুঁচকে তাকিয়ে বলে,”পাশের ল্যাবে গিয়ে এই পরিক্ষা করে আসেন।”
আরিয়ান অনুকে পাশের ল্যাবে নিয়ে গিয়ে পরিক্ষা করে বাহিরে কিছু সময় অপেক্ষা করার পর রিপোর্ট আসে।
রিপোর্ট হাতে পেয়ে ডাক্তার তাদের দু জনকে কেবিনে ডেকে পাঠায়।
অনু আরিয়ান কে দেখে ডাক্তার বলে,”আপনারা বিবাহিত?”
অনু কর্কশ গলায় বলে,”ফাইজলামি মনে হয় আপনার?দেখতে পারছেন না আমার কতো সুন্দর স্মার্ট হিরো মার্কা বর,তার কোলো চড়ে ঘুরঘুর করছি? এর পর ও বলেন Husband wife কি না?”
আরিয়ান অনুর মুখ চেপে ধরে বলে,”উফফ তুমি আর মানুষ হবে না,কবে যে বড় হবে আল্লাহ জানে,আমি তোমাকে নিয়ে যে কি করি। ”
এবার ডাক্তার ওদের ঝগড়াঝাঁটির মাঝে বলে,”অভিনন্দন আপনাদের আপনারা খুব তাড়াতাড়ি দুই জন থেকে তিন জন হবেন “।
অনু আরিয়ান হা করে ডাক্তারের দিকে তাকিয়ে জোড়ে বলে,”কি বলছেন এগুলা “।
ডাক্তার বলে,”আপনারা বাবা মা হবেন এতে খুশি না। ”
আরিয়ান অনুর দিকে তাকিয়ে বলে,”আলহামদুলিল্লাহ্ খুব খুশি। ”
তারপর ডাক্তার তাদের কিছু সাজেশন দিয়ে দেয় তা নিয়ে তারা বাড়িতে চলে আসে।
বাড়িতে এসে সবাই জিজ্ঞাস করে,ডাক্তার কি বলেছে?
আরিয়ান বলে,”পা ভাঙ্গে নাই,কিন্তু বিশ্রাম করতে বলেছে। ”
আয়াত এসে বলে,”যাক ভাবী পা ঠিক আছে এটাই অনেক। ”
এমন সময় আরিয়ান আয়াতের কান ধরে বলে,”এই তুই কি খেয়ে ডাক্তার হয়েছিস তা এখুনি আমাকে বলবি। ”
আয়াত বলে,”উফ ভাই কান ছাড় লাগছে তো আমার।”
আরিয়ান আরো জোড়ের কান ধরে বলে,”তুই ডাক্তার হয়েছিস তাই না,তোর ভাবীর কি(গল্পের আসল লেখিকা Angel Frozen Nishi ) হয়েছে তাই বলতে পারিস না,শরীল দুর্বল, অতিরিক্ত টেনশনে এমন হয়েছে,ঘোড়ার ডিম হয়েছে।”
এবার অনু চিৎকার করে বলে,”ঐ আরিয়ান নিজের বাচ্চা কে কোন বাপে ঘোড়ার ডিম বলে??
ফাজিল ছেলে পায়ে সমস্যা আমার,মাথায় সমস্যা তোমার।”
আরিয়ান অনুকে বলে,”সব দোষ তোমার তুমি কিছুই বোঝো না তাই না?”
অনু বলে,”ওহ এর আগে তো আমি তিন চার টা বিয়ে করেছি । সেখান থেকে তো আমি অভিজ্ঞতা সম্পন্ন হয়ে আসছি।
আরিয়ান বলে,”আমিও আগে দশ বারো টা বিয়ে করি নাই যে জানতে পারবো? ”
আয়াত বলে,”এই তোরা থামবি, তোরা বাচ্চা দের মতো ঝগড়া কেনো করিস কি হয়েছে তা আগে বলবি তো না কি? ”
আরিয়ান :কেনো রে তুই ডাক্তার তোর তো বোঝা উচিৎ ছিলো।
আয়াত :ঘোড়ার ডিম সেই তখন থেকে হেয়ালী করে যাচ্ছি সোজা ভাবে কথা বলতে পারিশ না।
আরিয়ান বলে,”শেষ পর্যন্ত আমাকে এভাবে নিজের কথা ঢোল পিটিয়ে বলতে হবে বুঝতে পারি নাই। ”
অনু বলে,”আপনি বলবেন কেনো, আমি মানুষ ভাড়া করবো সারা শহর মাইকিং করতে। ”
আরিয়ান বলে,”হে মাইকিং করো,,তাহলে আমার কি কাজ, থাকো তুমি আমি চলে যায়। ”
অনু আয়াত কে বলে,”দেবর জ্বি একটু নাগিন নাগিন
গান টা ছাড়েন তো ডান্স করি।”
আরিয়ান আয়াত কে বলে,”তুই যদি গান চালু করিশ তোর সাথে অনুর ও খবর আছে। ”
আয়াত বলে,”দেখ ভাই তোর মনের মাঝে কিছু তো চলছে,তা প্লিজ ক্লিয়ার করে বল। ”
আরিয়ান অনুর পাশে বসে,একটা দীর্ঘশ্বাস ছেড়ে বলে,,”তুই চাচ্চু হবি,মা বাবা তোমরা দাদা দাদী হবে আর আমারা মা বাবা। ”
আয়াত তো সেই খুশী হয়ে এসে আরিয়ান কে জড়িয়ে ধরে বলে,”অভিনন্দন ভাই,তুই বাবা হবি ভাবা যায় বল। ”
আরিয়ান বলে,”হুম সেই জন্য তো বলেছি তুই কি খেয়ে ডাক্তার হয়েছিস।”
আয়াত বলে,”দেখ ভাই আমি আমি গাইনোক্লিজ ডাক্তার না যে এতো সব বুঝবো। ”
আরিয়ান বলে,”হুম বুঝেছি তো। ”
আরিয়ানের বাবা আরিয়ান কে জড়িয়ে ধরে অভিনন্দন জানায়।
অনুকে শাশুড়ি জড়িয়ে ধরে বলে,”আহারে মেয়েটার এমন খুশির দিনে পা ভেঙ্গে ঘরে বসে আছে।”
আবির পেছন থেকে বলে,”আন্টি এটা ভালো হয়েছে,,পায়ের জন্য যদি অনু মনু একটু বিশ্রাম করে। ”
অনু নিজের পরিবার কে দেখে সেই খুশি।
অনুর বাবা মা আবির সবাই অনুকে দেখতে আসছে।
অনুর মা বলে,”যাক মেয়ে আমার বিয়ে করতে রাজি হতো না,আর আজ আমাকে এতো বড় খুশীর খবর দিয়েছে।”
অনুর মা বাবা অনুকে জড়িয়ে ধরে কপালে চুমা দেয়।
আবির তার বোন কে জড়িয়ে ধরে বলে,”অামার ছোট অনু মনু আজ না কি আরেক টা পিচ্ছির মা হবে ভাবা যায়। ”
অনু :ধুর ভাইয়া কি যে বলো না তোমরা।
আয়াত বলে,”দেখেন আবির ভাই ভাবী কি লজ্জায় না পাচ্ছে,, মুখটা পুরা লাল হয়ে গেছে।”
অনুর শাশুড়ি মা বলে,,”আয়াত এমন করে ভাবী কে কেউ ডিস্টার্ব করে,,ভাবী এমনি তো অসুস্থ।”
আবির :তা অনু তুই পায়ে ব্যাথা কি ভাবে পেয়েছিস রে।
অনু : না, মানে ঐ রুমে হাটতে গিয়ে শাড়ী তে পা বেধে পড়ে গেছি।
আবির :কেউ শুধু শুধু শাড়ী তে পা বেধে পড়ে যায় এটা বিশ্বাস করতে হবে।
অনু বলে,”না তোমাকে বিশ্বাস করতে হবেনা,আমি রুমে নাচতে ছিলাম।
তখন ধপাৎ করে পরে পা ভাঙ্গছি এবার খুশী তো।”
আবির :হুম, এটা বিশ্বাস করা যায়।
তোর থেকে এমন কিছু আশা করা যায়।
অনুর মা বলে,”উফ আবির এবার তো থামবি তোদের ঝগড়া এমন সময় ও করতে হবে।
অনুর শাশুড়ি সবার জন্য মিষ্টির প্লেট এনে বলে,সবাই এই খুশী তে মিষ্টি মুখ করেন।
তারপর সবাই অনুকে মিষ্টি মুখ করিয়ে দেয় আর নিজেরাও মিষ্টি খায়।
আরিয়ান বলে,,””হুহ,সবাই অনুকে নিয়ে ব্যস্ত আমার দিকে কারো খেয়াল নেই,,আমিও যে বাবা হবো সে কথা সবাই ভুলে গেছে।
আয়াত :সরি ভাই তোকে কে মনে রাখে, এখন তো ভাবীর খেয়াল রাখবো সে তো চাচ্চু ডাক শোনাবে।
তখন রাজ পেছন থেকে বলে ওঠে,”আরিয়ান আমি ভুলি নাই রে।
তাই তো তোর খুশি তে গ্রহণ লাগাতে চলে আসছি।”
আরিয়ান :তুই এখানে কেনো আসছিস? তোকে কে বলেছে এ কথা।
মৌ বলে,”ভাইয়া এমন একটা খুশীর খবর ভাইয়া আর মা কে না দিয়ে থাকতে পাড়ি নায়।”
তখন ফুপু গিয়ে অনুর পাশে বসে বলে,”যাক তাহলে এ বাড়িতে ছোট বাচ্চা হবে, ঠিক ঠাক ভাবে হলেই হয়।
অনু বলে,”দোয়া করবেন ভালো ভাবে যেনো আপনাকে ফুপু দাদী মা বানাবো ইনশাআল্লাহ। ”
এদিকে রাজ বলে, “আজব প্রশ্ন তো,আমার ভাই বাবা হবে সে খুশী তে শামিল হতে চলে আসছি।
আরিয়ান বলে,”তোকে তো আমি আমার খুশী তে শামিল হতে বলি নায় তাহলে কেনো আসবি।”
রাজ :তুই তো কখনো বলবি না,তাই নিজ দায়িত্বে আমি তোর জন্য সারপ্রাইজ হয়ে আসছি,তোর আর অনুর সাথে এবার বেশ কিছু দিন থাকবো এ বাড়িতে।
আরিয়ান কিছু বলবে তার আগে আবির বলে,”এবার আমাদের যাওয়া দরকার।
অনুর পা ভালো হয়েগেলে,অনু কে আমাদের বাড়িতে কিছুদিন রাখবো।”
আরিয়ান বলে,”না অনু কোথাও যাবে না,ও আমার সাথে থাকবে। ”
আবির বলে,”আমি কি এক বার ও বলেছি শুধু অনুকে নিয়ে যাবো,অনু যখন যাবে তুমিও তো অবশ্যই থাকবে ওর সাথে।”
আরিয়ান বেচারা লজ্জায় পরে যায়।
আরিয়ানের বাবা বলে,”থাক বাবা আর লজ্জা পেয়ে কাজ নেয়।সবার এমন অবস্থা হয়। বউ কে কেউ বাবার বাড়িতে পাঠাতে চায় না।”
অনুর শাশুড়ি মা বলে,”হা নিজে তো আমার সাথে বাবার বাড়ি গিয়ে আঠার মতো লেগেছিলে। ”
সবাই সে কথা শুনে হাসা-হাসি শুরু করে দেয়।
তারপর অনুর বাড়ির সবাই চলে যায়।
তাদের চলে যাবার পর অনুর মন খারাপ হয়ে যায়।
আরিয়ান অনুকে কোলে করে রুমে নিয়ে যায়।
তারপর অনুকে বাথরুমে নামিয়ে দেয় অনু ফ্রেশ হয়ে বাহিরে আসে অারিয়ান কোলে করে বিছানাতে বসিয়ে রেখে নিজে ফ্রেশ হয়ে আসে।
এসে অনুর পাশে বসে অনুর দু হাত নিজের
হাতের মাঝে নিয়ে বলে,”কি হয়েছে আমার ময়নাপাখি?”
অনু বলে,” জানি না কেনো জানি অন্যরকম এক অনুভূতি কাজ করছে তা কি বুঝতেছি না।”
আরিয়ান অনুর কপালে চুমা দিয়ে নিজের বুকের মাঝে জড়িয়ে ধরে বলে,”জানো আজ আমি খুব খুশী, তুমি আমাকে পৃথিবীর সব থেকে বড় খুশী টা আমাকে দিয়েছো। ”
অনু বলে,”দেখেছ আমি কতো বোকা এমন একটা কথা যে আমি বুঝতে পারি নায়।”
আরিয়ান আচ্ছা বাদ দাও,এসব কথা এখন থেকে তোমাকে নিজের সাথে আমাদের পিচ্ছির খেয়াল ও রাখতে হবে।
অনু আমি পারবো না,পিচ্ছির বাবা, চাচা, দাদা, দাদী সব আছে তারা রাখবে আমি তো খাবো আর ঘুমাবো।
আরিয়ান :ওরে আমার পাগলী বউটা রে।
তারপর অনুর মাথায় হাত বুলিয়ে দিতে থাকে, আর ভাবতে থাকে হঠাৎ করে এতো খুশী তে কারো কু নজর তো আবার লাগবে না।
অনুর এই অবস্থায় রাজ আবার কিছু করবে না তো।
হঠাৎ করে আবার আমার জীবনে ওর আগমন।
অনু কি পারবে নিজেকে সব বিপদআপদ থেকে রক্ষা করতে।জানি না আমাদের ভবিষ্যৎ কি???
যারা লেখিকার বিনা অনুমিত তে গল্প নিজেদের পেজে দেন তাদের কি গল্পের লেখিকার অনুমিতর দরকার হয় না??আচ্ছা ঠিক আছে অনুমিত নেওয়ার প্রয়োজন বোধ করেন না!! কিন্তু লেখিকার নাম টা দিতে ভুলে জান কি করে??আবার অনেকে তো লেখিকার নামের স্থানে নিজের নাম বসিয়ে দেন কিন্তু কেনো বুঝি না?? আর পাঠক পাঠিকা দের উদ্দেশ্যে একটা কথা। কম বেশী সবাই গল্প পড়েন কোন গল্প কে কোথায় চুরি করে দেয় তা আপনারা দেখেও চুপ থাকেন এটা কি ঠিক। আপনারা তাদের প্রতিবাদ না করলে আমাদের আর কিছু বলার থাকে না।
‘
‘
‘
চলবে….