২য় প্রেম ( 2nd Love ) Part- 03
ইশান : প্রোপোজ অনেক গুল পাইছি কিন্ত একসেপ্ট করিনি একটাও
মিহি: কেন??
ইশান : যাকে ভালবাসি সে এখন করেনি তাই
মিহি: ওহহ। তুমি তাকে প্রোপোজ কর।
ইশান: সময় হলে করব
মিহি: যদি দেরী হয়ে যাই,সিট বুক হয়ে গেলে তো সে তোমার হবেনা
ইশান : সে আমাকে ভালবাসে না।কখন ও বাসবে কিনা জানিনা। তবুও অনেক ভালবাসি তাকে।সে যদি অন্য কাওকে ভালবাসা তাতে আমার কোন কষ্ট নাই।সে যাকে ভালবাসা তাকে নিয়ে থাকবে, সে খুশি থাকলে আমি খুশি
মিহি: তুমি খুব ভাল।সে যদি তোমাকে একসেপ্ট না করে তবে সে ভুল করবে। তোমার মত কাউকে হাসবেন্ড হিসাবে পাওয়া ভাগ্য এর বিষয়।সে যদি পেয়েও।দুরে ঠেলে দেই তাহলে সে বোকা।
ইশান : দেখা যাক কি হয়।সময় হলে বলব।
মিহি: হুম।
ইশান : যদি তোমাকে কেউ প্রোপোজ করে তুমি কি করবা??
মিহি: প্রোপোজ অনেকে করেছে কিন্তু একসেপ্ট করিনি।আর করব না।
ইশান : কেন
মিহি: তুমি সব জানো।
ইশান : অতীত তো অতীত চলে গেছে মিহি।নতুন করে আবার শুরু কর।সারাজিবন অতীত নিয়ে বসে থাকলে কি হবে?? অতীতকে ভুলে ফিউচার এ এগিয়ে যাও।সে তো থেমে নেই তুমি কেন থেমে থাকবে?? তুমিও তাকে দেখিয়ে দাও তুমি হেরে যাওনি।তুমি ভাল আছো,সুখি আছো। কেন তার জন্য নিজের জিবন এর সুখকে দুরে ঠেলে দিচ্ছ??কেন মিহি বল
মিহি: আমি ভাল আছি, জিবনে ঘুরে দাড়িয়েছি।নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করেছি।আর সুখ সে তো আমাকে ধোঁকা দেই।তাকে কি করে জিবনে ঠাই দেই??
ইশান : মিহি একে ভাল থাকা বলেনা।তুমি সবাই কে দেখাও তুমি ভাল আছো।সুখি আছো কিন্তু না তুমি ভাল নেই মিহি
মিহি: কে বলছে ভাল নেই?? আমি ভাল আছি ভাল থাকার জন্য তো সবাই কে ছেড়ে চলে গেছিলাম। আমি অনেক ভাল আছি
ইশান :আমি বিলিভ করিনা তুমি ভাল আছো, তুমি নিজের সুখের জন্য লন্ডন যাওনি মিহি।তুমি গিয়েছিলে কারন তোমার কষ্ট দেখে বাসার কেউ কষ্ট না পাই এই জন্য।তোমাকে আমি বুঝি মিহি।আমি এতটাও অবুঝ না যে তুমি যা বলবা আমি বিলিভ করব।তোমার মনের ভাষা আমি বুঝি
মিহি: এসব বাদ দাও ভাল লাগছে না এই বিষয়ে কথা বলতে,চল এখন উঠি।
ইশান : ওকে বাদ দিলাম খুশি তো??
মিহি: হুম।
মিহি আর ইশান উঠে সবার কাছে গেল
সন্ধ্যা হয়ে গেছে বাসায় যাওয়ার সময় ভাবি বলল শপিং মল এর দিকে যাবে।যে যার মত গাড়িতে বসল।
২০মিনিট পর গাড়ির একটা শপিংমল এর সামনে দাড়ালো,সবাই নেমে গেছে শুধু মিহি আর ইশান বসে আছে গাড়িতে
ইশান : তুমি যাবেনা? ??
মিহি: না ভাল লাগছে না,তুমি যাও
ইশান : তাহলে আমিও যাবনা
মিহি: কেন??
ইশান : তুমি একা বসে বোর হবে আর ওদের অনেক লেট হবে আসতে
মিহি: কেন এত কি কিনবে ওরা??
ইশান : মেয়ে মানুষ সব সময় দেড়ি করে তো জানো।আর শপিং হলে তো কথায় নেই।ওদের সাথে শপিং এ আসলে সে পাগল হয়ে যাবে.
মিহি: হাহা,বিয়ের পর বউকে নিয়ে তো তোমাকেও আসতে হবে
ইশান : যাকে ভালবাসি সে সবার থেকে আলাদা সে এমন না।
মিহি: ওহ ভাল
ইশান : হুম,চল ওই দিক এ ভাল লাগবে।
মিহি: না থাক এখানে ঠিক আছি
ইশান: চল তো এইখানে বসে থাকতে ভাল লাগছে না
মিহি আর না করল না মিহির ও গাড়িতে বসে থাকতে ভাল লাগছে না।২জন গাড়ি থেকে নামল
মিহি: চল একটু হাটি।
ইশান :হুম চল।ওই দিক টাই যাই,ফাকা আছে
মিহি: …………..
ইশান : কি হল চল
ভয় পাচ্ছো নাকি আমার সাথে যেতে
মিহি: আরে না,তোমাকে ভয় পাব কেন তুমি বাঘ নাকি ভাল্লুক? ?
ইশান : আমি একটা ছেলে তুমি একটা মেয়ে
মিহি: তো কি হইছে আমরা ফ্রেন্ড ও তাইনা।আর তোমাকে চোখ বন্ধ করে বিলিভ করা যাই
ইশান : তাই??
মিহি: হুম
ইশান আর মিহি ফাকা রাস্তা দিয়ে হাটছে আর কথা বলছে এর মধ্যে মিহি বলল চল না ফুচকা খাই অনেক দিন খাওয়া হইনি
ইশান : ওকে চল কিন্ত আমি খাব না
মিহি: কেন আগে তো খেতে এখন খাবে না কেন???
ইশান : আগে তুমি খাইয়ে দিতে তাই খেতাম।এখন তো খাওয়াই দেবেনা
মিহি: ও তাই বুঝি।
ইশান : হুম
মিহি: ওকে খাওয়াঈ দিব।চল
মিহি ইশান এর ৪বছর এর ছোট। কিন্ত ওদের মনের মিল অনেক ২জন ২জন কে বোঝে মিহির সব বিপদে ইশান পাশে ছিল,সব সময় মিহিকে সার্পোট করেছে।
ইশান আর মিহি ফুচকার দোকানে ধুকলো ২প্লেট ফুচকা অর্ডার করল ইশান একটা বাচ্ছা ছেলে ফুচকা দিয়ে গেল মিহি বাচ্ছা টার দিকে তাকিয়ে আছে আর ইশান মিহিকে দেখছে। হঠাত ইশানের ফোন বেজে উঠল অয়ন কল দিচ্ছে, ইশান রিসিভ করল।
ইশান : ভাইয়া বল
অয়ন : তোরা কই আমাদের শপিং হয়ে গেছে
ইশান : আমরা ফুচকা খেতে এসেছি ,তোমরা চলে যাও আমি আর মিহি পরে আসছি।
অয়ন: না,তুই এখনি আয় লেট করে গেলে আব্বু বকবে
ইশান : বড় আব্বুকে আমি ম্যানেজ করে নিব তোমরা চলে যাও
অয়ন : আব্বু কিন্ত রেগে গেল খবর আছে তোর
ইশান : বড় আব্বুকে আমি সামলে নিব
অয়ন: ওকে যা খুশি কর পরে আমাকে বলবিনা কিছু
ইশান : ওকে বাই
অয়ন : তারাতারি চলে আসিস কেমন ?
ইশান : ওকে ভাইয়া রাখি
টূট টুট টুট
আর এদিকে মিহি ছেলে টার কথা ভাবছে, ছেলেটার বয়স বেশি হলেও ১০বছর এই বয়সে পড়ালেখার সময় খেলা করার সময় কিন্ত এদের ভাগ্য টা এমন কাজ করে পেটের দায়ে কাজ করতে হচ্ছে
ইশান বলল
ইশান : কি এত ভাবছো
মিহি: ওই ছেলে টার কথা
ইশান : কোন ছেলে
মিহি: ওই ছেলে টা ফুচকা দিয়ে গেল
ইশান : ওহ কি ভাবছো
মিহি: ওর বয়স খুব বেশি হলে ১০বছর,পড়াশোনা ,খেলার সময় এখন কিন্ত ওর ভাগ্য টা দেখ পেটের দায়ে কাজ করতে হচ্ছে
ইশান : হুম ,ওদের দেখলে কষ্ট হয়
মিহি: আমরা কি ওর দায়িত্ব নিতে পারিনা??
ইশান: ওর দায়িত্ব আমরা নিলাম,ওর মত আর অনেক শিশু আছে ওদের কি হবে
মিহি: আমরা একটা কাজ করি?
ইশান : কি কাজ
মিহি: আমরা এমন বাচ্ছা দের জন্য এতিম খানা বানাইলে কেমন হয়,এমনিতে আমরা অনেক খরচ করি ওদের জন্য না হয় এই টুকু করি
ইশান : কিন্ত আমরা ২জন তো পারবনা
মিহি:হুম আমি বাসার সবাই কে বলব আশা করি সবাই হেল্প করবে
ইশান : হুম বাসায় গিয়ে সবাই কে বলব,এবার খেয়ে নাও
মিহি: হুম খাচ্ছি,তুমিও খাও
ইশান : এটা কিন্ত কথা ছিল না
মিহি: কি কথা ছিল
ইশান: তুমি আমাকে খাওয়ায় দিবে
মিহি: ওওওও,ছোট বাবু টারে খাওয়াই দিতে হবে
ইশান : বাবু বল আর যাই বল খাওয়ায় দিতে হবে
মিহি: ওকে
মিহি ইশান কে ফুচকা খাওয়াই দিল ইশান ও মিহিকে খাওয়ায় দিল,
খাওয়া শেষে ইশান বিল দিয়ে বাচ্ছা টাকে ডাক দিল বাচ্ছা টা ইশানের কাছে আসল মিহি বলল
মিহি: বাবু তোমার নাম কি?
বাচ্ছা টা: জে আমার নাম সাদ
মিহি: বাহ খুব সুন্দর নাম,তুমি কোথায় থাক??
সাদ: ওই পাশের গলি শেষ এ এটটটা বস্তি আছে ওই খানে থাকি
মিহি : তোমার বাসায় কে কে আছে
সাদ: আমার মা আর ছোট বোন আছে
মিহি: নিয়ে যাবে আমাকে তোমার বাসায়
সাদ: এখন তো হইব না আপা মালিক ছুটি দিবনা
মিহি: তোমার মালিক এর সাথে আমি কথা বলে নিচ্ছি তুমি চল
সাদ: আইচ্ছা চলেন
মিহি মালিক কে বলে সাদ এর বাসায় যাচ্ছে মিহির পিছনে ইশানও হাটছে
একটা সুরু গলির মধ্যে দিয়ে ধুকল সাদ একটা বেড়ার ঘরের মধ্যে ধুকতে বলল মিহিকে মিহি সাদ এর কথায় ধুকল ভিতরে সাদ এর মা আর বোন সুয়ে আসে মিহিদের দেখে চমকে উঠল।
সাদ কে বলল ওরা কারা
সাদ: মা এই আপা দোকানে ফুচকা খাইতে আইছিল তহন আমারে কইল আমাদের বাসাই আইব তাই আমার লগে নিয়ে আইছি
সাদের মা: আমার পোলাই কিছু করছে
মিহি : না আপনার ছেলে কিছু করেনি, ওকে না পরিয়ে কাজ এ দেছেন কেন
সাদের মা: কাজ না করলে খাবে কি, আমি লোকের বাড়ি কাজ করে যা পাই তাই দিয়ে ৩জন এর সংসার চলেনা তাই ওরে কামে দিছি
মিহি: ওর বাবা কই
ওর বাবা নেশা করত পুলিশে এ ধরছে সারাইতি অনেক টাহা লাগব ওত টাহা কই পামু
মিহি: হুম বুঝলাম, আজ থেকে সাদের সব দায়িত্ব আমি নিচ্ছি ওকে আর কাজে পাঠাবেন না ঠিক আছে
সাদের মা : কিন্তু
মিহি : কোন কিন্ত নই,
মিহি ওর ব্যাগ এ যা টাকা ছিল সব সাদের মায়ের হাতে দিয়ে বলল এটা রাখুন আমি মাঝেমধ্যে এসে আরও দিয়ে যাব, সাদকে স্কুল এ পাঠাবেন
সাদের মা মিহি কে জড়ায় ধরে কান্না করে দিল মিহি বলল
মিহি: আজ আসি পরে আবার আসব
সাদ : আপা আপনি অনেক ভাল
সাদের মা: আল্লাহ আপনার ভাল করুক,
মিহি ওদের থেকে বিদায় নিয়ে বেরিয়ে এল
ইশান : চল রিক্সা উঠি
মিহি: হেটে চল
ইশান : কেন? রিক্সা কি প্রব্লেম
মিহি: কোন প্রব্লেম নেই,ইচ্ছা করছে হাটতে হাটবে??
ইশান : ওকে চল
২জন হাটতে হাটতে বাসায় গেল
বাসায় ধুকতে কারোর সাথে কথা না বলে উপরে গিয়ে ফ্রেশ হয়ে সুয়ে আছে।
রাত ১০ টা
ভাবি: মিহি
মিহি: হুম ভাবি আসো
ভাবি: খেতে চল সবাই তোমার জন্য অপেক্ষা করছে
মিহি ; তুমি যাও আমি আসছি
ভাবি: না আমার সাথে চল
মিহি : ওকে চল
সবাই খাচ্ছে তখন মিহি বলল
আমার সবার সাথে কিছু কথা আসে
সবাই বলল কি কথা
মিহি: আমি আর ইশান ভাইয়া পথ শিশুদের জন্য এতিম খানা বানাতে চাই কিন্ত আমদের একার পক্ষে সম্ভব না তোমারা কি আমাদের হেল্প করবে
মামা: বাহ আমার মেয়েটা যে এত বড় হয়ে গেছে বুঝতে পারিনি, মামনি তোমার কথাই আমি খুব খুশি হয়েছি তোমার এই সিদ্ধান্ত আমাকে তোমার পাশে পাবে তুমি চিন্তা কর না
আমান,অয়ন একসাথে বলল আমিও সাথে আছি
মেজে মামা: মামনি আমরা সবাই আছি তুমি চিন্তা করনা মা খেয়ে নাও
মিহি: আমি জানতাম তোমারা সবাই আমার সাথে থাকবে
বড় মা: হুম এবার খেয়ে নে
ইশু :আপু আমিও হেল্প করব তোমাকে,আমার হাত খরচ এর টাকা থেকে আমিও ডোনেট করব
মিহি: আচ্ছা পাগলি
সবাই খাওয়া শেষ করে কথা বলে ঘুমাতে গেল। সবাই দেখে মানুষ ঘুমাই আসলেই কি সবাই ঘুমাতে পারে?? রাত কি সবার জন্য ঘুমানোর নাকি কারোর জন্য চোখের পানি ঝরানোর সময়? ??
চলবে??
বানান ভুলের জন্য দুখিত
নতুন লেখিকা আমি এটাই আমার প্রথম গল্প ভুল ক্রুটি গুল মাফ করে দিয়েন
সবার এত ভালবাসা পাবে আমি ভাবিনি সবাই কে ধন্যবাদ আমার গল্প পরার জন্য