হিংস্র ভালোবাসা

হিংস্র ভালোবাসা !! Part- 25

— মেঘের হা করো কথাটা শুনে সামনে তাকিয়ে দেখি মেঘ এক লোকমা ভাত নিয়ে আমার মুখের সামনে বসে আছে, হঠাৎ হঠাৎ মেঘের এমন রুপ পরিবর্তন হতে দেখে আমি সত্যি অবাক সাথে ভিষন খারাপ ও লাগছে এটা ভেবে যে আমার জন্য আজ ওর এই অবস্তা কিন্তু আমি বা কি করতাম একমাত্র ছোট বোনের এমন অবস্তা দেখে কোন বোন সহ্য করতে পারবে কি না জানি না তবে আমি পারি নি আর তাই হয়তো আজ মেঘের এমন বিহেবিয়ার …..

— জানপাখি হা করো খাবার টা খেয়ে নেও অনেক রাত হলো ….(মেঘ রেগে ফারহা কে বললো)

ফারহা মেঘের ঝাড়ি শুনে তারাতারি খাবার টা মুখে নিয়ে নেয় , এটা দেখে মেঘ হেসে ফেলে ……….

মেঘ ফারহা কে পুরো খাবার টা খাইয়ে দিয়ে বলে,

– জান এতোক্ষন তো আমি তোমাকে খাইয়ে দিলাম এখন তুমি নিজের হাতে আমাকে খাইয়ে দেয়,,,

— মেঘের কথা শুনে আমি মনে হয় আকাশ থেকে পড়লাম বলে কি এই সাইকো ওকে আমার নিজ হাতে খাইয়ে দিতে হবে Impossible ..(মনে মনে)

ফারহা মেঘের কথা শুনে ডিরেক্ট না বলে মুখ ঘুড়িয়ে ফেলে, মেঘ ফারহার কান্ড দেখে রেগে চুলের মুঠি ধরে ফারহার নাকে এক কামড় বসিয়ে দেয়…..

মেঘ কে খাইয়ে দিবে না বলে মুখ ঘুরাতে সাইকো টা নাকে কামড় বসিয়ে দিলো ধাক্কা দিয়ে মেঘ কে সরিয়ে দিয়ে নাক টা চেপে ধরলো ফারহা…

— এই রাক্ষস আমার নাক টা কি খাওয়ার জিনিস নাকি হ্যা (রেগে বললো ফারহা )

— কি করবো বেবি আমার তো খিদে পেয়েছে আর তুমি আমাকে খাইয়ে দিবে না ৷

— তাই বলে আমার নাকে কামড় দিবে ইউ ইডিয়েট ,,,

— তুমি কি চাইছো জানপাখি .? এখন আমি তোমার ওই রসালো ঠোঁট জোড়া কামড়ে ধরি ..??(বাকা হেসে বললো মেঘ)

মেঘের লাস্ট কথাটা শোনা মাত্র ফারহা ওর মুখ টা চেপে ধরে.

তাহলে মিসেস চৌধুরী এখন কি আমাকে খাইয়ে দিবেন নাকি আমি তোমার ,,বাকিটা বলতে না দিয়ে ফারহা বলে উঠলো …

— না না আমি খাইয়ে দিচ্ছি ..(ফারহা)

মেঘ টেডি স্মাইল দিয়ে অন্য একটা পেলেট ফারহার সামনে ধরে ফারহা ওয়ারুমে যেয়ে হাত ধুয়ে মেঘ কে খাইয়ে দিতে লাগলো সাথে মনে মনে এক গাদা বকা দিতে লাগলো ,, মেঘ ফারহার মুখ দেখে মিটি মিটি হাসতে লাগলো ,, খেতে খেতে মেঘের ফোন টা বেজে উঠলো মেঘ ততোক্ষন ফোন রিসিব করলো না যতোক্ষন না ফারহার হাতে খাওয়া শেষ হয় ,,,

— মেঘ তোমার ফোন কন্টিনিউয়াসলি বেজে যাচ্ছে রিসিব কেনো করছো না..??(ফারহা)

— ইউ নো জানপাখি তোমার সাথে থাকা কালিন কেউ আমাদের ডিসট্রাব করুক এটা আমি লাইক করি না…(মেঘ)

— ওকে বাট এখন তো রিসিব করো..(ফারহা)

— হুম ,,,, ফারহার কথায় মেঘ কল টা রিসিব করে কানে ধরতে মেঘের চোখ মুখ শক্ত করে ফেলে বলে উঠলো ” আমি আসছি ” …

— জান আমাকে এখন যেতে হবে তুমি ঘুমিয়ে পরো তবে হা যদি পালানোর চেষ্টা কর তো তাহলে ………

বাকি টা না বলে ঠাসসস করে দরজা টা বন্ধ করে দিয়ে মেঘ বেরিয়ে গেলো….

— হা কি লাভ টা হলো মেঘের সাথে এতো টা নরমালি কথা বলে …!! সেই তো আমাকে এই বন্ধ রুমে আটকে চলে গেলো ৷ উফফ এখান থেকে পালানোর কোন রাস্তাই খুজে পাচ্ছি না ….(ফারহা)

ফারহা বেডে শুয়ে পালানোর কথা চিন্তা করতে করতে ঘুমিয়ে পড়লো , মেঘ ল্যাপটপে ফারহার একা একা বক বক শুনে মেঘের পেট ফেটে হাসি বের হতে চাচ্ছে কিন্ত পাশে গার্ড থাকায় মেঘ নিজের হাসি টা চেপে রাখে ……

— মাই গড জানপাখি তুমি এতোক্ষন এই কারনে নরমাল বিহেব করেছিলে কিন্তু আফসোস তোমার এই ট্রিক টা কোন কাজে আসলো না…….(মেঘ)
.
.
.
.
.
.
— ফারহার বাবা রাত কতো হয়েছে দেখেছো .? ফারহা এখনো এসে পৌছায় নি আমি তিন্নি কে কল করেছি কিন্তু… বাকি টা বলার আগে ফারহার বাবা বলে উঠলো …

— কিন্তু কি ,,! তিন্নি বললো যে ফারহা ওর বাসায় যায় নি তাই তো…???(ফারহার বাবা )

— হ্যা , কিন্তু তুমি কি করে জানলে ? আমি তো এখনো তোমাকে কিছু বলে নি .! (ফারহার মা)

— ফারহার মা মন শক্ত করো সামনে আমাদের মেয়ে অনেক বড় একটা বিপদ অপেক্ষা করছে এর আগে যদি মেয়ে টা কে বাচাঁতে না পারি তাহলে ,,,,

— তাহলে কি ফারহার বাবা..??

— তাহলে ফারিহার মতো ওকে ও আমাদের হারাতে হবে ….

মিস্টার আশিকের কথা শুনে মিসেস মোহনা প্রায় আতঁকে উঠলেন ,, এটা দেখে মিস্টার আশিক মিসেস মোহনা কে জরিয়ে ধরে বলে…..

— ফারহার মা শান্ত হও দেখো আমাদের মেয়ের কিচ্ছু হবে না ৷

— কি বলছো ফারহার বাবা , আমাদের মেয়ে টা এখন কেমন আছে কি করছে তা আমরা কেউ জানি না ৷ আর তুমি বলছো শান্ত হতে ….(মিসেস মোহনা)

— হা বলছি কারন ফারহা মেঘের কাছে বন্দি আছে ..

— তুমি জানলে কি করে ..??

এখন এই সব কথা বলার সময় না মোহনা ৷ আমি বের হচ্ছি তুমি বাড়িতে থাকো আর দরজা খুলবে না যতোক্ষন না আমি আসছি….(মিস্টার আশিক)

আশিকের কথা মতো মোহনা দরজা আটকে রুমে বসে থাকে এদিকে আশিক ফারহার খোজে চৌধুরী ম্যানশনে হাজির হয়…….

— মিস্টার আরহান চৌধুরী মিস্টার আরহান চৌধুরী (জোড়ে চিৎকার করে)

মিস্টার আশিকের চিৎকার শুনে আরহান চৌধুরী নিচে নেমে এসে মিস্টার আশিকের সামনে দারায়….

— আমার মেয়ে কোথায় আরহান চৌধুরী …???(মিস্টার আশিক)

— মেঘের কাছে এখন কোথায় আছে তা আমি জানি না তবে আপনাকে দেখে এতোটুকু শিওর যে ফারহা বাড়ি পৌছায় নি ও মেঘের কাছে আছে….(আরহান চৌধুরী)

মিস্টার আশিক এবার সত্যি ভেঙ্গে পরে ..

— দেখুন মিস্টার চৌধুরি আপনি আমার একটা মেয়ে কে শেষ করে দিলেন সে প্রতিশোধের নেশায় আমার অন্য মেয়ে আপনার মতো নোংড়া মানুষের সাথে নোংড়া খেলায় নেমে পরে হ্যা তবে জিত আমার মেয়ের হলে ও একটা মেয়ে কে আমি হারিয়েছে এখন কি আমার এই শেষ সম্বল টা কেও কেড়ে নিতে চান আপনারা বাবা ছেলে মিলে ……(মিস্টার আশিক)

মিস্টার আশিকের কথা গুলো শুনে আরহান চৌধুরীর রাগে ফেটে পড়ার কথা কিন্তু তিনি তা না করে মিস্টার আশিকের সামনে একগ্লাস পানি নিয়ে দারিয়ে বলে…

— মিস্টার আশিক প্লিজ পানি টা খেয়ে নিন তারপর শান্ত হয়ে আমার কথাটা একটু মন দিয়ে শুনুন…

মিস্টার আশিক অবাক হয়ে আরহান চৌধুরীর বলা কথা গুলো শুনছে তিনি বিশ্বাস করতে পারছে না যে লোক টা এতো ডেয়ারিং ইগোস্টিক বদমেজাজি যে লোকটা নিজের Status য়ের সাথে যায় না বলে ঠান্ডা মাথায় খুন করতে পারে সে লোক এভাবে ওনার মতো ছোট বিজনেসম্যানের সামনে পানির গ্লাস হাতে নিয়ে দারিয়ে আছে………

— মিস্টার আশিক এভাবে গ্লাস হাতে দারিয়ে থাকতে আমার সত্যি লজ্জা করছে ৷দেখুন আমার সারবেন্ট গুলো কি ভাবে আমার দিকে ড্যাব ড্যাব করে তাকিয়ে আছে যাষ্ট লুক দেম…(আরহান চৌধুরী)

মিস্টার চৌধুরি গ্লাস টা টেবিলে রেখে মিস্টার আশিক কে বসতে বলে এবার মিস্টার আশিক চৌধুরীর কথা মতো সোফায় বসে পরে …..

— দেখুন মিস্টার আশিক আমি জানি আমি যা করেছি তা কখনো ক্ষমার যোগ্য না কিন্তু দেখুন আমার কথা পাপের শাস্তি আমার ছেলে মেয়ে দুটো পাচ্ছে , আমার মেয়ে টার সন্মান হানি যা হওয়ার হয়েছে কিন্তু আমার একমাত্র ছেলে টা দিনে দিনে ডেন্জারাস সাইকো তে পরিনত হচ্ছে শুধু মাত্র আপনার মেয়ে ফারহার জন্য …….

— আমি এতো কথা শুনতে আসি না মিস্টার চৌধুরি ৷ আমি আমার মএ কে নিয়ে যেতে এসেছি…(মিস্টার আশিক)

— তা এখন আর সম্ভব নয় মিস্টার আশিক কারন ফারহা অন্য কারোর হাতে নয় মেঘের হাতে বন্দি আছে আর ওকে ফিরে পেতে হলে আপনাকে ধর্য্য রাখতে হবে ….

মিস্টার আশিক আর কথা না বাড়িয়ে উঠে দারালেন…

— আমি আপনার কথা গুলো শুনলাম মিস্টার চৌধুরি এখন আমার কথা গুলো মন দিয়ে শুনুন ৷ আমি আমার মেয়ে কে চাই আর তা চব্বিশ ঘন্টার মধ্যে যদি আপনি ফিরিয়ে দিতে পারেন তো বেশ আর না পারলে পাচঁ বছর আগে যে গল্প টা শেষ হইনি সে গল্প টা আমি শেষ করবো……..

কথাটা বলে মিস্টার আশিক চৌধুরী ম্যানশন থেকে বেরিয়ে যায়…….
.
.
.
.
.
.
— বস বিশ্বাস করুন আমি আপনার সাথে বেইমানি করেনি …(আসলাম)

— তাই নাকি , তাহলে এগুলো কি আসলাম..( ক্লাবে আরহান চৌধুরীর সাথে আসলামের কিছু ছবি দেখিয়ে)

— বস আপনি আমাকে এক্সপ্লেইন করার সুযোগ দিন প্লিজ (কাদতে কাদতে বললো আসলাম)

— আচ্ছা বল কি বলতে চাস তুই ( হাতে ধারালো চাকু ঘুরাতে ঘুরাতে বললো মেঘ)

— বস আপনার ড্যাড আমাকে ফোন করে ক্লাবে যেতে বলে আমি না বললে আমাকে আপনার ভয় দেখিয়ে বলে তুই “যদি না আসিস তো তোর নামে মেঘের কাছে কমপ্লেইন করবো ” বস আমি আপনাকে কতো টা মানি সেটা আপনি খুব ভালো করে জানেন বিশ্বাস করুন আমি আরহান চৌধুরীর কোন কথায় রাজি হই নি …(আসলাম)

— ড্যাড কি প্রপোজাল দিয়েছিলো তোকে…??(মেঘ)

— বস বললো আমাকে ওনার হয়ে কাজ করতে আর ফারহা ম্যাম কে পালিয়ে যেতে সাহায্য করতে ….(আসলাম)

আসলামের কথা শুনে মেঘের চোখ মুখ রেগে লাল হয়ে গেলো মনে হচ্ছে এখুনি লাভা বের হবে মেঘের চোখ থেকে ৷ মেঘ অন্য গার্ড দের আদেশ দিলো সারা রাত আসলামের উপর টর্চার করে বাকি যা ইনফরমেশন আছে তা বের করে নেওয়ার , আর মেঘের কথা মতো আসলামের উপর টর্চার করতে থাকে বাকি রা….

এর মধ্যে কয়েক বার মেঘ ফারহার খবরা খবর নিচ্ছে ফারহার রুমে লুকোনো সি সি ক্যামেরার মাধ্যমে আর অন্য দিকে আগুন ভোর বেলার অপেক্ষা না করে নিজের প্লেনে যাওয়ার জন্য রেডি হতে থাকে আগুন…….

— আ’ম কামিং ফারু , তোর শরীলের একটা ফুলের টোকাও পরতে দিবো না আমি , এবার হয় মেঘ মরবে না হয় আমি এসপার ওসপার করেই ছাড়বো…………………..

— স্যার সব রেডি চলুন….

— হুম , আমি আসছি ফারু ………….
.
.
.
.
#To_be_Continued…..

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *