সেলিব্রেটি স্বামী

সেলিব্রেটি স্বামী !! Part 34 (Last-Part)

#পর্ব_৩৪(অন্তিম)
#Mst_Liza
🍁
আমাকে নিয়ে ডাক্তার আন্টির চেম্বার থেকে বের হলেন উনি।আচমকা আমাদের মেয়েকে উনার কোলে দিয়ে অপারেশন থিয়েটারের দিকে ছুটলো মাইশা।রুহান মাইশার পেছনে ছুটছেন।কিছুই বুঝতে পারলাম না আমি।উনার হাতে ভর দিয়ে কিছুটা সামনে এগিয়ে এসে দেখলাম একজন ২৩/২৪ বছর বয়সের যুবতী তরুণী বসে আছেন অপারেশন থিয়েটারের সামনের বেঞ্চটাতে।গায়ের রং তার সাদা ধবধবে।নাক বোঁচা। মাথার চুলটা একটু হালকা বাদামী কালার করা তবে কোঁকড়ানো।উনার হাতটা চেপে ধরে মুখের দিকে তাকিয়ে বললাম আমি,
-কে ওই মেয়েটা?
উনি ভ্রু কুঁচকে আমার দিকে তাকালেন। আমি উনাকে ঝাঁকিয়ে বললাম,
-কি হলো বলছেন না কেন?
উনার মুখে বিরক্ত বোধের ছাপ দেখতে পেলাম।তাই চুপ হয়ে গেলাম আমি।চোখদুটো নিচু করে রেখেছি।উনি আমার কাঁধে হাত রেখে কপালে কপাল ছুঁইয়ে শান্ত গলায় বললেন,
-এখনো ভয় পাও আমার রাগকে? আরু তাকাও আমার দিকে।যা হয়েছে ভুলে যাও না সবকিছু।সেদিন যদি আমি তোমার উপর রাগ করে না যেতাম।তাহলে তো ফিরে এসে তোমাকে আর আমাদের সন্তানকে পেতাম না।তুমিই তো বলো যা হয় ভালোর জন্য। আমি কখনো আর তোমার উপরে রাগ করবো না কথা দিলাম।
আমি উনার পিঠে হাত রাখলাম।এমন সময় মাইশার চিৎকার এলো আমার কানে।সামনে তাকালে দেখতে পেলাম সেই তরুণীকে। তার এতো সুন্দর চেহারায় মুখের এক সাইটটা পুড়ে ঝলসে গিয়েছে।এতোক্ষণ অন্য সাইটটা দেখেছিলাম আমি।তাই বুঝতে পারি নি তার সাথে কি হয়েছে।দুচোখ বেয়ে অনবরত পানি গড়িয়ে পরছে তার।মাইশা তাকে চোখের পানি মুছিয়ে দিচ্ছে নিজের হাতে।আর সে মাইশাকে দূরে সরিয়ে দিচ্ছে। বারবার মাইশাকে বলছে আমাকে ছুঁইও না।চলে যাও এখান থেকে তুমি।প্লিজ চলে যাও।মাইশা তাকে কারণ জিজ্ঞাসা করছে।জানতে চাইছে কি হয়েছে এই কয়দিনে।কিন্তু কিচ্ছু বলছেন না সে।মাইশার অনেক জোড়াজুড়িতে না পেরে ধাক্কা দিলেন সে।মাইশা পরে যাওয়ার আগে রুহান মাইশাকে ভালোভাবে ধরে রাখলেন।রাগি দৃস্টিতে তাকালেন সেই তরুণীর দিকে।তাকে কিছু বলতে যাবেন মাইশা আটকালেন।রুহানের রাগ দেখে চোখের পানি মুছে নিয়ে রুহানের পড়নের শার্ট খামচে ধরে ঝাঁকিয়ে বললেন,
-এখান থেকে চলুন।
রুহান মাইশাকে জড়িয়ে ধরে বললেন,
-ওই মেয়েটার সাহশ হয় কি করে তোমার সাথে এমন ব্যাবহার করার? কোথাকার কোন মেয়ে তার কাছে কেন এতো অপমানিত হচ্ছো তুমি?
মাইশা ডুকরে কেঁদে উঠলো,
-কোথাকার কোন মেয়ে নয় রুহান। আমি সম্মানের সাথে আপনার সাথে আজ আছি সেটা শুধু মাত্র চুমপুয়িং আপুর জন্য।
রুহান মাইশাকে টেনে নিজের সামনে আনলেন।অবাক দৃষ্টিতে তাকিয়ে বললেন,
-ইনিই কি সে?
মাইশা হালকা মাথা ঝাঁকিয়ে কান্না জড়িত কন্ঠে বলে উঠলেন,
-হ্যাঁ।ইনিই সে।আমার চুমপুয়িং আপু।
এমন সময় মা এসে পরলে চোখের পানি মুছে নিয়ে মাকে বলল মাইশা,
-মা চলো সবাই অপেক্ষা করছে আমাদের জন্য।তুমি বাবা, আমি আর উনি এক গাড়িতে চলে যায়। আপুরা বেবিকে নিয়ে অন্য গাড়িতে আসবে।
কথাটা বলে কাঁদতে কাঁদতে হসপিটালের সিঁড়ির দিকে ছুটলো মাইশা।রুহান মাইশার পিছনে ছুটলেন।মা মনে হয় কিছুই দেখে নি।স্বাভাবিক ভাবে বাবাকে ডেকে বললেন,
-কি গো আসবে না কি? মেয়েটা যে সিঁড়ি দিয়ে নামলো।মনে হয় কিছু হয়েছে না হলে কাঁদবে কেন? জামাইও ছুটলো মেয়েটার পিঁছনে।
বাবা আর মা কথা বলতে বলতে লিফটে উঠে গেলেন।
আমি আর উনি ওই তরুণীকে দেখছি।মাইশা চলে যেতেই ফ্লোরে কপাল ঠেকিয়ে লুটিয়ে পরে কাঁদছেন সে।কেঁদে কেঁদে হিচকি তুলে নিজেকে নিজে বলছেন,
-তুমি কখনো জানবে না মাইশা তোমাকে ডিসুজা ভালোবেসেছিলো কিংবা তুমি তার কাছে মোহ ছিলে।আমি জানি ডিসুজা তোমার কাছে কতোটা সম্মানের।তাই সত্যিটা তোমাকে আমি কখনো বলতে পারবো না।আজ আমার এই অবস্থার জন্য ডিসুজা দায়।এটা জানলে তুমি তাকে খারাপ ভাববে।মানুষটা সত্যি খুব ভালো।তার বিজনেস, ঘড় যাবতীয় সব কাজ আমি সামলেছি।সব কিছুর দেখাশুনা আমি করেছি।শুধু তার মনের দিকটা এতোটা দূর্বল ছিলো যার জন্য সে এমন করেছে।আমাকে ভালোবাসে বলেছেন সে।এটাই তো অনেক।কিন্তু আমার চেহারা? আর তার চেহারা? আমি না হয় নিজেকে সামলে নিতে পারবো।কিন্তু সে কি পারবে? সমাজটা যে বড্ড স্বার্থপর।
এতোক্ষণে কিছুটা হলেও বুঝতে পারলাম ব্যাপারটা।উনি আর আমি এগিয়ে আসলাম তরুনীর কাছে। তার পিঠে হাত রাখলাম আমি।সে কেঁপে উঠে আমাকে দেখে বললেন,
-কে?
-মাইশার বোন আমি।
সে নিশ্চুপ হয়ে রইলেন।আমি তাকে বললাম সবটা বলুন আমায়।আমি অনেক জোড় করাই সে আমাকে বলল সবটা।সব শুনে থমকে গেলাম আমি।মনে মনে ভাবলাম বিয়ের পর উনিও তো আমাকে অনেক অত্যাচার করেছেন।আমার নিস্তেজ শরীরে জুতা পরা অবস্থায় পায়ের উপরে উঠে বুক পর্যন্ত হেঁটে এসেছেন।নিজের মুখ থেকে চিবানো খাবার ফেলে দিয়ে আমাকে খেতে বলেছেন।দিন শেষে ভালোবেসেছেন সকাল হলে ছুড়ে ফেলে দিয়েছেন।যখন ডিভোর্স চেয়েছি তখন বুঝেছেন নিজের ভুলটা।এতোটা ভালোবেসেছেন আমাকে যে সহ্য করতে না পেরে হার্ট অ্যাটাক করেছেন।আমার ছোট বেলার একটা ভুলের মাশুল উনি এতোগুলো বছর ধরে নিজের মধ্যে জমিয়ে রেখেছিলেন।আর সেই রাগটা উনি এভাবে প্রকাশ করেছেন।
উনার হাতের স্পর্শে ধ্যান ফিরলো আমার।আমার হাতটা চেপে ধরে বললেন উনি,
-কি ভাবছো?
-কিছু না।
তরুণীর দিকে তাকিয়ে বললাম,
-বোন! ভালোবাসাটা জীবনের সবকিছু নয়।এই পাগলামি গুলো ক্ষতি করবে আপনার এবং আপনার ভবিষ্যৎ জীবন সঙ্গীর।ভালোবাসলে যে অপর পাশের মানুষটার সব অত্যাচার মুখ বুঝে সহ্য করবেন তা কিন্তু নয়।ভালোবাসলে কিছু হারানোর ভয় থাকা দরকার।তখন বুঝতে পারবে অপর পাশের মানুষটার অনুপস্থিতি ভেতরটাকে কতোটা শূন্য করে দেয়।সহজে মেনে নিবেন তো পরবর্তীতে সেই একই ভুল করবে।মাঝে মাঝে একটু ভয় দেখাতে হয়।হারিয়ে যাওয়ার ভয়।উনার হাতটা চেপে ধরে বললাম আমি, আমাদের দেখুন।আমার যখন ছয় বছর বয়স তখন উনার বয়স ছিলো সতেরো।ভালোবাসা কি অদ্ভুত! যার জন্য আমার ওই বয়সের একটা ভুলকে উনি চৌদ্দ বছর ধরে নিজের ভেতরে জমিয়ে রেখেছেন।এতো বছরে উনার মুখটায় আমি ভুলে গিয়েছিলাম।এটাও ভুলে গিয়েছিলাম আমার আসল বাবা-মা কে।আমি স্কুল যেতাম উনি কলেজ ফাঁকি দিয়ে রোজ দূর থেকে আমাকে দেখতেন। আজ উনি আমার স্বামী।#সেলিব্রেটি_স্বামী এটাই নিয়তি।
-তাহলে আমি কি করবো?
আমি কিছু বললাম তাকে।সেটা শুনে একটা চিরকুট লিখে নার্সের হাতে দিয়ে চলে আসলেন সে আমাদের সাথে।
🍁
আমরা সকলে বস্তিতে আসতেই বস্তির লোকজন ঘিরে ধরলেন আমাদের।চুমপুয়িং কে আমার একটা খিমার পরিয়ে নেকাব দিয়ে মুখ বেঁধে দিলাম।যেন ওর মুখ দেখে কেউ কিছু বলতে না পারে।মেয়েকে নিয়ে গাড়ি থেকে নামলেন উনি।সকলে জানে আমি ভীর ভাট্টার মধ্যে যায় না।গাড়িতে বসে রইলাম আমি আর চুমপুয়িং।চুমপুয়িং এর মনটা উতলা হয়ে আছে না জানি ওদিকে ডিসুজার কি খবর।
আমি চুমপুয়িং এর হাতে হাত রেখে বললাম ধৈর্য ধরো বোন।সব ঠিক হয়ে যাবে।
তিন ঘন্টা ধরে গাড়ীর মধ্যে বসে রইলাম।ওদিকে তিন সেলিব্রেটি আর মেয়েটাকে নিয়ে সবাই বেশ মজাই করছে মনে হচ্ছে।চুমপুয়িং আমার কাছে জানতে চাইলো এতোক্ষণ এভাবে আমি তার জন্য বসে আছি কি না।মুচকি হেসে বললাম আমি একান্তে থাকতেই অভ্যস্ত।চুমপুয়িং অনেক আগ্রহ নিয়ে জিজ্ঞাসা করলো আমি এমন কথা কেন বলছি? আমি বললাম এমনই আমি।তুমিও অভ্যস্ত হয়ে যাবে দেখও।
সন্ধ্যার পর অনুষ্ঠান শেষ হলো।সকলে যার যার নিজের বাড়িতে।মাইশার এতোক্ষণে আমার কাছে আসার সময় হলো।ফেন, মিডিয়া একবার ঘিরে ধরলে কোথাও যাওয়ার মতো পরিস্থিতি থাকে না সেলিব্রেটিদের।গাড়ির দরজা খুলতেই মাইশার চোখের সামনে চুমপুয়িং পরল।নেকাব বাঁধা মুখে চিনতে পারলেন না বোধহয় তাকে।আমার কন্ঠ শুনে বুঝতে পারল আমি অপজিত পাশে।কারণ আমাদের দু’জনেই মুখ বাঁধা।ঘুরে এসে গাড়ির দরজা খুলে আমাকে ধরে নামালো মাইশা।রুমে নিয়ে গিয়ে আমাকে বসিয়ে দিলো। চুমপুয়িং আমাদের সাথে আসলেন। রুমের মধ্যে এসে মাইশাকে টেনে ধরে জড়িয়ে ধরে কাঁদলেন সে।মাইশাকে আমিই সবটা খুলে বললাম।
🍁
সাতটা দিন কেটে গেলো। ডিসুজা অপারেশনের পর থেকে তার আশেপাশে কোথাও চুমপুয়িং কে অনুভব করেন নি।না পেরেছেন খেতে, না পেরেছেন ঘুমাতে আর না কোনো কাজ ঠিকঠাক ভাবে করতে পেরেছেন সে।চোখ দুটো আর ঠোঁট ছাড়া সম্পূর্ণ মুখে ব্যান্ডেজ করা তার।আজ সে কথা বলতে পারছেন।তার কেবিনে নার্স ঢুকতেই সে আস্তে করে জানতে চাইলেন তার এসিস্টেন্ট চুমপুয়িং কোথায়? নার্স বেড়িয়ে গেলেন কেবিন থেকে।কিছুক্ষণ পর চিরকুটটা এনে ডিসুজার সামনে রেখে বললেন এটা তাকে দিতে বলেছেন তার এসিস্টেন্ট।ডিসুজা এক টানে চিরকুটটা নিজের কাছে নিয়ে নিলেন আর পড়লেন চিরকুটে লেখা কথাগুলো। তাতে লেখাছিলো,
-স্যার! আমি চলে যাচ্ছি আপনার বিজনেস বাড়ি সবকিছু ছেড়ে অনেকদূরে। আমি জানি আপনি মন থেকে আমাকে ভালোবেসেছেন কিন্তু কি করবো বলেন আপনার এই রকম ভালোবাসা আমার পছন্দ না।যখন রাগ হবে আমাকে মারবেন।আবার সেই ভুলের মাশুল দিতে নিজের ক্ষতি করবেন।আজ আপনার পাগলামোর জন্য চেহারাটা নস্ট হয়ে গেল আমার।এমনকি আপনি নিজের চেহারাটাও নস্ট করে ফেলেছেন।আমি চলে এসেছি শুনে আবার হয়তো রাগ করবেন আপনি।নিজেকে আঘাত করবেন নইতো জিনিসপত্র সব ভাঙচুর করবেন।এসব আর মেনে নিতে পারবো না আমি।তাই চলে এলাম।যেদিন বুঝতে পারবো আপনি শান্ত প্রকৃতির হয়েছেন। ঠান্ডা মাথায় সব কাজ করছেন।সেদিন আবার ফিরে আসবো।
চিরকুটটা পড়ার শেষে রাগে ভাজ করে দূরে ছুড়ে ফেলতে যায় ডিসুজা।মুহূর্তে থেমে গিয়ে চিরকুটের লাস্ট কথাটা মনে করেন সে “আবার ফিরে আসবো।”
ডিসুজা অশ্রুভেজা চোখে খাবার প্লেটটা নিজের কোলের উপরে রাখে।খেতে না পারলেও জোড় করে নিজের মুখে খাবার ভরে।আর এদিকে ওদিকে তাকিয়ে কান্না জড়িত কন্ঠে বলেন,
-এই আমি খাচ্ছি দেখও।এখন থেকে ঠিক মতো ঘুমাবো।নিজের যত্ন নিবো সবসময়। তোমাকেও যত্নে রাখবো।আর কখনো কস্ট দেবো না তোমায় ফিরে আসো তুমি।সুযোগ দাও আরেকটা বার আমায়।ভুল হবে না কখনো আর।
চুমপুয়িং ল্যাপটপে বসে ডিসুজার কান্ড দেখছেন।নিজেও চোখের পানি ফেলছেন।ছটফট করছে তার মন ডিসুজার কাছে যাওয়ার জন্য। মাইশা ল্যাপটপ টা বন্ধ করে নিয়ে চুমপুয়িং এর কাঁধে হাত রাখলেন।চোখের পানি মুছিয়ে দিয়ে বললেন মাত্র কিছুটা দিন ধৈর্য ধরো আপু।নতুন রূপে দু’জন দু’জনকে দেখবে তোমরা।একজন নার্স এসে চুমপুয়িং এর ড্রেস চেঞ্জ করাতে নিয়ে গেলেন।ওদিকে ডাক্তার আসলেন ডিসুজার মুখের ব্যান্ডেজ খুলতে।ডিসুজার মুখের ব্যান্ডেজ খুলে সামনে আয়না ধরলেন ডাক্তার।এক পলক আয়নায় নিজের মুখ দেখে চিনলেন না সে।কিছুক্ষণ পর ভালোভাবে নিজের মুখটা দেখে নিয়ে কাঁপা কাঁপা হাতটা আয়নার দিয়ে আঙুল উঁচিয়ে জিজ্ঞাসা করলেন সে, কে এটা? ডাক্তার মুচকি হেসে বললেন আপনি।ডিসুজা দুই হাতে নিজের মুখ ছুঁইয়ে বললেন, সত্যি এটা আমি? আমার সার্জারি কে করিয়েছে? ডাক্তার কোনো কথা না বলে নিশ্চুপ হয়ে রইলেন।একদম বাঙালিদের মতোন লাগছে ডিসুজাকে।একদম নতুন রূপে তাকে দেখতেও অন্য রকম লাগছে।
🍁
ডিসুজা সারাক্ষণ চুমপুয়িং এর কথা ভাবে আর নিজের যত্ন নেয় চুমপুয়িং কে পাবে বলে। অপারেশনের সাতদিন পর চুমপুয়িং এর মুখের ব্যান্ডেজ খোলা হয়।একদম ভিন্ন চেহারার বাঙালি একটা মেয়ে। আরও কিছুদিন পর,, আমি, উনি, মাইশা রুহান মিলে ঠিক করি দুজনকে একসাথে দেখা করাবো।তাই ডিসুজার কাছে একটা পার্সেল পাঠিয়ে দিই চুমপুয়িং এর নাম করে আমরা।চুমপুয়িং কেও রেডি করিয়ে রেস্টুরেন্টে পাঠায়।
রেস্টুরেন্টে ঢুকতেই দু’জন দুজনের সাথে ধাক্কা খেলও তারা।দুজন দুজনকে পলকহীন ভাবে দেখছেন।কেমন এক অদ্ভুত মায়া কাজ করছে দুজনের চোখে।মাথা থেকে পা পর্যন্ত দুজনেই দেখে নিলেন। চুমপুয়িং এর পড়ণে লাল সবুজ ছাপার সেলোয়ার-কামিজ আর ডিসুজার পরণে লাল ট্রি শার্ট কালো প্যান্ট।একদম খাঁটি বাঙালি দুটো মানুষ।একসাথে দুজনেই বলে উঠলেন সরি।কন্ঠ শুনে বুঝতে আর বাকি রইলো না সামনে দাড়ানো মানুষটা কে।চুমপুয়িং ডিসুজার ট্রি শার্টের কলারটা টেনে ধরে বললেন আপনি? ডিসুজাও চুমপুয়িং এর চুলের ভাজে হাত ডুবিয়ে বলে উঠলেন তুমি? দুজনের চোখে পানি চলে আসলো।ডুকরে কেঁদে উঠলেন দুজন।চেহারা পাল্টে গেলেও ভেতরের মনটা যে একই রয়েছে।একটুকুও বদলাই নি দুজনের ভালোবাসা ভেতর থেকে।হুট করে রেস্টুরেন্টের মধ্যে ঢুকে গেলাম আমরা চারজন।আমাদের দেখতেই সেখানে উপস্থিত সকলে ছুটে আসলেন।ভীরের মধ্যে ঢুকে গেলেন মাইশা, রুহান আর উনি।আমি পিছনে দাড়িয়ে রইলাম।উনি মাথা উঁচু করে আমাকে দেখলেন আর বিরক্ত বোধ করলেন।ফেনদের টানাটানি অটোগ্রাফ নেওয়া চলতে থাকলো। মাইশা, রুহান পাশাপাশি থাকায় দুজন দুজনকে উপলব্ধি করছে আর আমি দূর থেকে শুধু উনাকে দেখছি।আমার স্বামী যে #সেলিব্রেটি_স্বামী।এমনই চলবে সারাটাজীবন।স্বামী সেলিব্রেটি হলে যা হয়।
মেয়েটাকে কেন যে শ্বাশুড়ি মায়ের কাছে রেখে আসলাম।ওকে আনলে অন্তত সময়টাতো কাটাতে পারতাম।খেয়ে দেয়ে চলে যেতাম রেস্টুরেন্ট থেকে।একা একা আর ভালো লাগছে না।একটা ফাঁকা টেবিলে বসে অপেক্ষা করছি উনার জন্য। ভীর যেন কমছেই না।যতো মানুষ আসছে রেস্টুরেন্টের ভেতরে ততোই উনাদের ঘিরে ধরছে।
।।।।।সমাপ্ত।।।।।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *