সেলিব্রেটি স্বামী

সেলিব্রেটি স্বামী !! Part 09

-বেয়াদ্দপ মেয়ে।সুপারস্টার আহান খানের বুকে ঘুমাবি তুই? কি যোগ্যতা আছে তোর? গাইয়া, জঙলি, খালাম্মা টাইপ সাজ পোশাক।না আছে কোনো স্ট্রাইল আর না আছে কোনো চলন বলনের স্ট্রাটার্স।তোর মতোন মেয়ের সাথে শুধু ফুরতি করা যায় কিন্তু নিজের স্ত্রী হিসেবে কাছে টানা যায় না।কথাটা মাথায় গেথে রাখিস।কখনো ভুলেও ভাবিস না স্ত্রী মেনে আমি তোর কাছে আসি।আমি শুধুই ফুরতি করতে তোকে কাছে টানি ব্যাস।
আমার মুখের উপরে বালিশ ছুড়ে উনি উঠে ওয়াশরুমে চলে গেলেন।আমি সেখানে সেই অবস্থায় ভাবলেশহীন ভাবে পরে আছি।আমার নিথর শরীর আর কিচ্ছু বুঝছে না।উনার এমন রূপ বর্তনে আমি হতভম্ব হয়ে আছি।আমি বুঝতে পারছি না উনি কেন এমন করেন আমার সাথে!
কিছুক্ষণ পর ওয়াশরুম থেকে বের হলেন উনি। এখনো আমাকে সেখানেই পরে থাকতে দেখে রেগে গেলেন।কাছে এসে আমাকে ডাকতে থাকলেন। উনি বোঝেন আমার কোনো ধ্যান নেয়। রেগে আমার গালে মারে এক চর। আমি ধ্যান ফিরেয়ে গালে হাত রেখে উনার দিকে তাকালাম।আমাকে ঝাকিয়ে বললেন উনি।
-ভাব নিচ্ছিস? একবার ডাকলে কথা কানে যায় না?
আমি এবার অসহায় দৃষ্টিতে তাকালাম উনার দিকে।আমার চোখে পানি টলমল করছে কিন্তু মুখে থেকে কোনো শব্দ বের হচ্ছে না। কিছু বলার ভাষা হারিয়ে ফেলেছি আমি। আচমকা উনি আমার ঠোঁট জোড়া নিজের দখলে নিয়ে নিলো।আমার দম বন্ধ হয়ে আসতে লাগলো।ভাবতে লাগলাম এটা কি করছেন উনি? উনি আমার ঠোঁট ছেড়ে দিয়ে আমার গালটা খুব শক্ত করে চেপে ধরে বললেন,
-ভালো লাগছে না আমাকে? বসে বসে কোন নাগরের কথা ভাবা হচ্ছে শুনি?
উনার কথা যেন আমার বুকে তীরের মতোন এসে বিঁধছে।উনি আমায় ধাক্কা দিয়ে আবার বললেন,
-কি হলো চুপ করে আছিস কেন? যখনই আমি কাছে আসবো অন্যমনুষ্ক যেন না দেখি।
কথাটা বলে উনি আবার আমার ঠোঁট আকড়ে ধরলেন নিজের ঠোঁটে।কিছুক্ষণ পর ঠোঁট ছেড়ে দিয়ে হাত দিয়ে দুই ঠোঁট মিশিয়ে খামচে ধরে বললেন,
-ঠোঁট কি অসর হয়ে গেছে তোর? এভাবে শক্ত করে ফ্রীজে তুলে ঠান্ডা বানিয়ে রাখিস।ডাফার!
আমাকে ধাক্কা দিয়ে চলে গেলেন উনি।আমি ফ্লোরে বসে পা গুটিশুটি দিয়ে অশ্রু বিলাশ করছি।হঠাৎ খেয়াল করলাম আমার কোলের উপরে একটা প্যাকেট এসে পরলো।মুখ তুলে তাকিয়ে দেখি উনি দাড়িয়ে।উনার চেহারাতে সর্ব জমিনের রাগ বিরাজ করেছে।চোখের ইশারায় উনি আমাকে প্যাকেটটা খুলতে বললেন।প্যাকেট খুলতেই দেখলাম একটা শর্ট ড্রেস।ড্রেসটা দেখে বুঝলাম এগুলো সাধারণত কাপড়ের নিচেই পরে মেয়েরা।কিন্তু উনার কথা শুনে আমার চোখ ছানাবড়া হয়ে গেলো।ইচ্ছে করছে মাটিয়ে মিশে যেতে।উনি বললেন,
-একটু পর প্রেস, মিডিয়া সব চলে আসবে।রেডি হয়ে নিস।বাইরে স্ট্রেজ সাজানো হচ্ছে।এই ড্রেসটা পরেই তোকে আমার সাথে যেতে হবে। কিছু জুয়েলার্সের সাথে ফটোসুট করা হবে।আমি কন্টাক্ট পেপারে সাইন করে দিয়েছি।তুই পরে করে দিস।আজকের জন্য এই ড্রেসটা পার্ফেক্ট।আর শোন একটু কোমড় দুলে হাঁটার চেস্টা করিস।হিল পরে হাঁটতে পারবি না জানি।তুই রেডি হয়ে আই আমি তোকে কোলে করেই শুটিংটা করবো।
উনার কথা শুনে আমার পায়ের নিচ থেকে মাটি সরে যাচ্ছে।কি বলছেন কি উনি? আমি যে পরপুরুষের সামনে যাই না উনি কি সেটা জানেন না? তাহলে কেন এমন করছেন উনি? হে আল্লাহ! এটা হবার আগে তুমি আমার মৃত্যু দাও।আর পারছি না সইতে আমি। (মনে মনে)
উনি আমার হাত শক্ত করে টেনে ধরলেন।আমার মুখটা নিজের দিকে টেনে গাল শক্ত করে চেপে ধরে বললেন,
-১০ কোটি টাকার কন্টাক্ট। সুপারস্টার আহান খান। সাথে তার ওয়াইফ। এমন মডেল হাতছাড়া করতে চান না জুয়েলার্সের মালিক।শুটিং এর থিমও ভাবা হয়ে গেছে আমার। তোকে কোলে করে স্ট্রেজে নিয়ে যাবো।পাশেই সুইমিংপুল থাকবে।কোল থেকে ছেড়ে তোকে নিচে ফেলে দেবো।তুই সাতার কেটে সুইমিংপুলের চারপাশে রাউন্ড রাউন্ড ঘুরবি।তারপর যেখান থেকে পড়েছিলি সেখানে আবার চলে আসবি।আমি অভিমান করে উল্টো দিকে মুখ ঘুরিয়ে থাকবো।তুই এসে আমার পায়ে খোঁচা দিবি।তখন আমি মুচকি হেসে হাঁটু নুইয়ে ফিল্মি স্ট্রাইলে তোর হাতে একটা ডায়মন্ড রিং পরিয়ে দিয়ে প্রোপোজ করবো।রেডি হয়ে তারাতারি বাড়ির মেইন গেটের কাছে আয়! আমি ওখানেই অপেক্ষা করবো তোর!
উনার বলা শেষ হলে আমাকে একটা ধাক্কা দিয়ে বেরিয়ে যান উনি।আমি সেখানে বসে কাঁদতে থাকি।ভাবি কি করবো আমি? কিভাবে উনাকে বোঝাবো?
কিছুক্ষণ পর আমি চোখ মুখ মুছে উঠে দাড়ায়। মনে মনে ভাবি, উনি আমার স্বামী। উনার আদেশ অমান্য করলে আমার আল্লাহ অসন্তুষ্ট হবেন।আমি যদি এখন এখান থেকে পালিয়ে যায় তাহলে উনার অসম্মান হবে।উনাকে নিয়ে উল্টা পাল্টা অনেক নিউজ বানানো হবে।উনি যদি রেগে আমাকে নিজের থেকে দূরে সরিয়ে দেয়? শুনেছি সেলিব্রেটিরা যখন তখন ডিভোর্স দেয়।আবার বিয়ে করে।কিন্তু আমি যে উনাকে ভালোবেসে ফেলেছি।এখন আমি চাইলেও উনার থেকে পালাতে পারবো না।আবার এমন পোশাক পরেও..!!আমি উনির সব আদেশ মানতে পারবো।সব অত্যাচার সহ্য করতে পারবো।কিন্তু যেটা ইসলামে নিষিদ্ধ আর হারাম সেটা কখনোই না।
অনেক ভাবার পরে উনার দেওয়া ড্রেসটা হাতে নিয়ে উঠে দাড়ালাম আমি।আমি ড্রেসটা পরলাম আমার পরনের কাপড়ের নিচে।তারপর বোরখা পরে উপরে খিমার। নিকাপ বাঁধলাম। হাতে, পায়ে মোজা দিয়ে শরীরের আপাদমস্তক ঢেকে নিলাম।
আয়নার সামনে দাড়িয়ে নিজেকে দেখছি এবার।হ্যাঁ এটাই তো আমার সাজ।এই সাজটার জন্য কতোই না মাইর খেয়েছি মায়ের কাছে।কতোই না গালি শুনেছি। স্কুল, কলেজে এমন সাজের জন্য ক্লাস মিটদের হাসির কারণ হয়েছি।মনের মধ্যে প্রশান্তি লাগছে এখন।আজ আবার বাইরে যাবো।মাথার উপরের খোলা আকাশটা দেখবো।কেউ আমাকে খুটিয়ে দেখবে না।পর্যাবেক্ষণ করবে না।
আমি ধীর পায়ে রুম থেকে বের হচ্ছি।ভয়ে আমার হাত পা কাঁপা কাঁপি করছে।না জানি উনি আমায় আজ কি শাস্তি দেন।সমস্ত বাড়িতে মানুষ শূন্য।শ্বাশুড়ি মা আজ বাড়িতে নেয়।না যানি থাকলে আজ কি হতো! বাড়ির বাইরের বিশাল এড়িয়া জুড়ে খুব সুন্দর করে সাজানো হয়েছে।দূর থেকে কানে ভেসে আসছে সকলের চিৎকার চেচামেচির আওয়াজ।উনি গেইটের কাছেই দাড়িয়ে আছেন।আমি বাড়ির মেইন গেটটা কাছে পৌঁছালাম।উনি আমার পায়ের শব্দ পেয়ে মাইক হাতে নিয়ে সকলের দৃস্টি আকর্ষন করল।সকলে অধির আগ্রহে আছে আমাকে দেখার জন্য। আমি দরজা খুলতেই উনি ফিল্মি স্ট্রাইলে বসে নিজের হাত বাড়িয়ে দিলো।আর সকল লাইট ক্যামেরা আমাদের দুজনের উপর এসে পরলো।
চলবে,,,,,,