সেলিব্রেটি স্বামী !! Part 08
উনি রেগে আমাকে একটা ধাক্কা দিয়ে উঠে চলে গেলেন। কিছুক্ষণ পর মেয়েটার কোমড় ধরে রুমে নিয়ে আসলেন। তারপর আমার সামনে দাড়িয়ে মেয়েটার কোমড় চেপে ধরে বললেন,
-বেবি কিস মি?
-ওকে স্যার।
মেয়েটি উনার গাল ধরে উনার মুখের দিকে আগাচ্ছে।আর আমি নিজের চোখ বন্ধ করে অন্য দিকে ঘুরে আছি।হঠাৎ ঠুস করে একটা শব্দ আসলো আমার কানে।আর আমি কেঁপে উঠে চোখ খুললাম।দেখলাম এবার মেয়েটির ঠোঁটের দিকে উনি অগ্রসর হচ্ছেন।একদম চুচার মতোন ঠোঁট বানিয়ে রেখেছে মেয়েটি।আমি কোনো উপায় না পেয়ে বিছানার উপরে বালিশ থাকায় ছুড়ে মারলাম মেয়েটির মুখের উপর।মেয়েটি নড়েচড়ে উঠলো।আর উনি আমার দিকে তাকালো।আমি বিছানা থেকে নেমে দাড়ায়।মেয়েটির দিকে রাগি দৃস্টিতে তাকায়।মেয়েটি ভয়ে উনার থেকে কিছুটা দূরে সরে যায়।আমাকে আগাতে দেখে মেয়েটি ছুটে রুম থেকে বেড়িয়ে যায়।
মেয়েটি যাওয়ার পর আমি উনার সামনে গিয়ে দাড়ালাম। শাড়ির আঁচল দিয়ে উনার গাল ঘঁষতে থাকলাম। আমার চোখে পানি টলমল করছে।উনি আমাকে ধাক্কা দিয়ে দূরে সরিয়ে দিলেন।আমার মুখের উপরে আঙুল তুলে কিছু বলতে যাবেন আমি উনার আঙুলটা ধরে ফেললাম।
-অনেক করেছেন আর না…আহান!
উনাকে টেনে কাছে নিয়ে আসলাম আমি।উনার ঘারে হাত বাঁধিয়ে উনার ঠোঁটে নিজের ঠোঁট মিশালাম।উনি একদম চুপ হয়ে আছেন।কিছুক্ষণ পর উনার গালটা ধরে আমি অসহায় দৃষ্টিতে তাকিয়ে বললাম,
-এমন কেন আপনি?
সঙ্গে সঙ্গে আমার গালে পরলো উনার হাতের এক চর।আমি গালে হাত দিয়ে উনার দিকে তাকিয়ে আছি।আর উনি আমার দিকে।দু’জনেই নিশ্চুপ। কেউ কোনো কথা বলছি না।
নিরাবতা কাটিয়ে আচমকা উনি আমার কোমড় জড়িয়ে ধরলেন।আমি চোখদুটো বন্ধ করে নিলাম।আমার কোমড়ে ব্যাথা অনুভব হলো। চোখ মেলে তাকিয়ে দেখলাম উনি আমার কোমড়ে নখের আচর দিয়ে চলেছেন।খামচে ধরে আছেন আমার কোমড়।আমি উনার বুকে হাত রেখে উনাকে সরিয়ে দিতে চাইলাম।উনি আরও শক্ত করে খামচে ধরে মুখটা এগিয়ে আনলো আমার দিকে।আমার গালে দিলো এক কামড়।আমি ব্যাথায় চিৎকার করাতে উনি আমার দুই ঠোঁট কামড়ে বন্ধ করে রাখলো।
আমি এখন চিৎকার করতে পারছি না।এই যন্ত্রণাও সইতে পারছি না।দু’চোখ বেয়ে শুধু অশ্রু গড়িয়ে পরছে অনবরত।উনি আমায় ছেড়ে দিয়ে আমার শাড়ির আঁচলটা একটানে ফেলে দিলেন।আর আমার গলায় ও বুকে উনার দেওয়া সেদিনের কামড়ের দাগগুলোতে আঙুল ছুঁইয়ে বললেন,
-এসব পেতে তোমার খুব মজা লাগে তাই না বেবি? সেদিনের কামড়গুলো ভুলে যাও নি মনে হচ্ছে! আরও পেতে চাও? ঠিক আছে। এখন থেকে নো আদর।উড়া ধুরা কামড়।তো আর কোথায় কোথায় কামড় প্রয়োজন বলোতো?
আমি কাঁদছি। উনি আমাকে কাঁদতে দেখছে।আর পৈশাচিক ভাবে হাসছে।আমি বুঝতে পারছি না এই মানুষটার কয়টা রূপ।উনি আমার মুখে উনার প্রশ্নের উত্তর না পেয়ে আমাকে ধাক্কা দিয়ে অনেকটা ছিটকে দূরে সরিয়ে দেয়। আমার দিকে খিটখিটে মেজাজে তাকিয়ে দরজাটায় শব্দ করে আওয়াজ করে রুম থেকে বেড়িয়ে যায়।
সারাদিন বিছানায় গুটিশুটি মেরে বসে থাকি আমি।এর মধ্যে একবারও উনি রুমে আসেন নি।আর আমিও রুম থেকে বের হয় নি।শ্বাশুরি মা একবার এসেছিলো।আমাকে দেখে কিছুটা আচ করতে পেরেছেন।আমার কাছে জানতে চাচ্ছিলো উনার কথা আমি কিচ্ছু বলি নি।আমি এখনো বসে আছি সেই বিছানার উপরেই।সারাদিন পর এখন ঘুমে আমার চোখদুটো বন্ধ হয়ে আসছে।আমি বসা অবস্থায় উনার অপেক্ষা করতে করতে বিছানার এক কণিষে মাথা ঠেকিয়ে ঘুমিয়ে পরি।মাঝরাতে শব্দ পেলে আমার ঘুম ভেঙে যায়। তাকিয়ে দেখি মদের বোতল হাতে নিয়ে ঢুলতে ঢুলতে উনি রুমে ঢুকছেন।হাঁটছেন আর পরছেন।আবার উঠে দাড়িয়ে সামনে এগিয়ে আসছেন।আমি প্রথমে ভাবি উনাকে গিয়ে ধরবো কিন্তু পরে আর উনার কাছে যায় না।কারণ সেদিন উনি মদ খাওয়ার নাটক করে এভাবে এসেই অভিনয় করেছিলেন।
আমি আমার মতো বসে আছি আর উনাকে দেখছি। উনি এসেই আমার কোলের উপরে মাথা রেখে ধরাম দিয়ে বিছানায় পরেন।আমার হাতটা টেনে নিজের মাথার উপরে নেয়। আমাকে বলে,
-আরু প্লিজ আমাকে ক্ষমা করে দাও। আমি ভুল করে ফেলেছি আর করবো না।তোমার গায়ে আর কক্ষনো হাত তুলবো না।ভালোবাসি তোমাকে আমি।
আমি কিচ্ছু বলছি না।আমি বুঝতে পারছি এসব উনার কোনো না কোনো মুভির ডায়লগ।উনি সত্যিই মানুষকে খুব সুন্দরভাবে ইমোশনাল করতে পারে।এসব কথা কাল রাতেও উনি আমাকে বলেছিলেন।আর সেদিন মাতাল হবার এ্যাক্টিংও করেছিলেন।পরক্ষণে সব অস্বীকার করেছেন।উনি সত্যি খুব বড় মাপের একজন অভিনেতা।
উনি আমার কোমড়টা চেপে ধরলেন।আর বললেন,
-বলোনা আরু আমাকে তুমি ক্ষমা করেছো।বলো আরু প্লিজ বলো?
আমি কিচ্ছু বলি না।উনি আমার মুখোমুখি হয়ে উঠে বসেন।আর আমাকে ঝাকিয়ে বলেন,
-বলো না আরু! প্লিজ বলো!
আমি খেয়াল করি আজ উনার মুখ থেকে সত্যি বিশ্রি গন্ধ আসছে।তাহলে কি উনি সত্যি মদ খেয়েছে?
উনি এখনো বলছে,
-আরু। বলোনা কিছু?
কেন জানি না আজ উনাকে বিশ্বাস করতে ইচ্ছে করলো।আমাকে জড়িয়ে ধরলেন উনি আর বললেন,
-বলো না আরু আমাকে ভালোবাসবে? কখনো ছেড়ে যাবে না।আমি কস্ট দিলেও না।আমি তো প্রতিশোধ তুলছি তাই না?
আমার চোখে পানি চলে আসে।আমিও উনাকে ঝাপটে ধরি।আর কান্না জড়িত কন্ঠস্বরে বলি,
-একটা চরের জন্য আর কত প্রতিশোধ তুলবেন আমার উপর আপনি?
-কিসের চর? আসো তোমাকে আদর করি।
উনি আমার মুখের সামনে মুখটা এনে ঢুলছে।আর ঠোঁট কাপিয়ে বলছে,
-তোমার এই মুখটা আমি সেদিন দেখে একদম বাকরূদ্ধ হয়ে গিয়েছিলাম।তুমি এতো সুন্দর। যেন কোনো জান্নাতের হূর।জানো আমি মিডিয়াতেও কখনো এমন অপ্সরী দেখি নি।সবাই তো মেকাপে সুন্দরী। আর আমার বউটা এমনিতেই এতো সুন্দরী। দেখলে সারাদিন দেখে যেতে ইচ্ছে করে।মন চাই সারাক্ষণ ওই মুখে ঠোঁট ডুবিয়ে রাখি।
উনার কথায় এবার আমি হেসে উঠলাম।উনাকে বললাম,
-এইগুলো সব আপনার মনের কথা তো? নাকি কাল সকালে আবার বলবেন সব মুভির ডায়লগ?
উনি গলা খামচে ধরে বললেন,
-না না সত্যি বলছি।বিশ্বাস করো আমি কোনো ডায়লগ শোনাচ্ছি না।
-হুমমম।তাহলে ঠিক আছে।অনেক রাত হয়েছে ঘুমিয়ে পরুন।
উনি টেনে আমাকে বিছানায় শুইয়ে দেয়।
-কি করছেন কি?
-ঘুমাচ্ছি? আমার বুকে মাথা রেখে বলেন, আমার মাথায় হাত বুলিয়ে দাও!
সকালে! এক ধাক্কায় উনি আমাকে বিছানা থেকে নিচে ফেলে দেয়। ফ্লোরে পরে অসহায় দৃষ্টিতে উনার দিকে তাকিয়ে আছি আমি। উনি বলছেন,
-বেয়াদ্দপ মেয়ে।সুপারস্টার আহান খানের বুকে ঘুমাবি তুই? কি যোগ্যতা আছে তোর? গাইয়া, জঙলি, খালাম্মা টাইপ সাজ পোশাক।না আছে কোনো স্ট্রাইল আর না আছে কোনো চলন বলনের স্ট্রাটার্স।তোর মতোন মেয়ের সাথে শুধু ফুরতি করা যায় কিন্তু নিজের স্ত্রী হিসেবে কাছে টানা যায় না।কথাটা মাথায় গেথে রাখিস।কখনো ভুলেও ভাবিস না স্ত্রী মেনে আমি তোর কাছে আসি।আমি শুধুই ফুরতি করতে তোকে কাছে টানি ব্যাস।
আমার মুখের উপরে বালিশ ছুড়ে উনি উঠে ওয়াশরুমে চলে গেলেন।
চলবে,,,,,