মিশে আছো আমার অস্তিত্বে

মিশে আছো আমার অস্তিত্বে !! Part-08

আকাশ হন্তদন্ত হয়ে তার মাকে কোলে নিয়ে নামছে,,চোখে মুখে কোনো কিছু হারানোর ভয়।তৃষা মাকে এই অবস্থায় দেখে অবাক হয়ে যায়,,আকাশকে কিছু জিজ্ঞেস করবে তার আগেই আকাশ তার মাকে নিয়ে বাইরে বেরিয়ে গেল।তৃষা কিছুক্ষণ চুপ করে দাঁড়িয়ে থাকলো কি হচ্ছে কিছুই যেন তার মাথায় আসছে না।বাইরে বেরিয়ে দেখলো আকাশ চলে গিয়েছে।পরে সার্ভেন্টদের কাছে জানতে পারলো বিকালে তৃষা বেরিয়ে যাওয়ার কিছুক্ষণ পর হঠাৎ করে মায়ের শরীর অসুস্থ হয়ে পড়ে।
প্রথমে বাড়ির কাজের লোকেরা সকাল আকাশকে ফোন করে কিন্তু আকাশের মিটিং থাকাই ফোন রিসিভ করতে পারে না,, তারা তৃষাকে ও ফোন করে কিন্তু অনেকবার রিং বেজে যাওয়ার পরেও তৃষা যখন রিসিভ করেনা,, তখন বাধ্য হয়ে আকাশের ম্যানেজার কে ফোন করে জানাই,, আর কিছুক্ষণের মধ্যেই আকাশ বাড়ি ফিরে তার মাকে নিয়ে হসপিটালে চলে যায়।
কথাগুলো শোনার পর তৃষা সঙ্গে সঙ্গে নিজের ফোন চেক করে দেখলো ২৪+ মিসড্ কল তার মধ্যে আকাশের ও অনেক গুলো মিসড্ কল। ফোন সাইলেন্ট হ‌ওয়ায় বুঝতে পারেনি।এতগুলো কল দেখে তৃষার নিজের‌ই খারাপ লাগতে শুরু করলো।সার্ভেন্টদের কাছ থেকে হসপিটালের নাম জেনে তাড়াতাড়ি করে বেরিয়ে গেল হসপিটালের উদ্দেশ্যে।
সেখানে গিয়ে দেখল আকাশ ওটির সামনে দাঁড়িয়ে আছে,,মুখ অনেকটা শুকিয়ে গিয়েছে।আকাশকে দেখে তৃষার খুব মায়া হলো।আস্তে করে আকাশের কাছে গিয়ে তার পিঠে হাত রাখলো। আচমকা পিঠে কারোর স্পর্শ পেয়ে আকাশ পিছনে ফিরে তৃষা কে দেখতে পেল। মুহূর্তের মধ্যে আকাশের শুকিয়ে থাকা মুখ ভয়াবহ হয়ে গেল।আকাশের রক্তিম চোখ দেখে তৃষার বুক ছ্যাত করে উঠলো,,শুকনো ঢোক গেলে কিছু বলতে যাবে তার আগেই আকাশ হুঙ্কার দিয়ে বলে উঠলো-;
-:কোথায় ছিলে তুমি??
আকাশের কথার কী উত্তর দেবে তৃষা ভেবে পাচ্ছে না।আকাশ আবার বলে উঠলো-;
-:কোথায় ছিলে??(রেগে চিল্লিয়ে)
তৃষা কাঁপা কাঁপা গলায় বলে উঠলো-;
-:ফে…ফ্রেন্ডের সা..সাথে দ..দেখা করতে গিয়েছিলাম।
-:তুমি জানো না আমার মা অসুস্থ??তোমাকে কিসের জন্য আমি বিয়ে করেছি তা কী তুমি ভুলে গিয়েছো??
তারপর তৃষাকে বাহু দুটো শক্ত করে ধরে বলে উঠলো-;
-:তোমার কোনো আইডিয়া আছে আমি তোমাকে কতবার ফোন করেছি??আরে যদি আমি সঠিক সময়ে না আসতাম তাহলে কী হতো??বলো(চিৎকার করে)তোমার বাবা মরতে মরতে বেঁচেছে শুধুমাত্র আমার দয়ায় আর তুমি!!তুমি আমার মাকে মৃত্যুর দিকে ঠেলে দিয়েছো।কেন??
আকাশের এরকম ভয়বাহ রুপ আর চিৎকার করে কথা বলায় তৃষা প্রচন্ড ভয় পেয়ে যায়।ভয়ে ফুঁপিয়ে ফুঁপিয়ে কেঁদতে শুরু করে। আকাশ এতে আরো রেগে যায়-;
-:এই শোনো তোমার এই ড্রামটিক কান্না বন্ধ করো।আমার মায়ের যদি কিছু হয় তাহলে আমি তোমায় ছারবো না।
-:আ..আ..আ..মি স..ত..ত্যি..(ফুঁপিয়ে)
-:চুপ একদম চুপ।সড়ে যাও আমার চোখের সামনে থেকে।
হঠাৎ পিছন থেকে একজন বলে উঠলো-;
-:আকাশ কী হয়েছে আন্টির??
আকাশ পিছনে তাকিয়ে দেখলো রিনা এসেছে,,আকাশ আর কিছু না ভেবে রিনাকে শক্ত করে জড়িয়ে ধরলো।এতক্ষন সে একটা নিরাপদ আশ্রয় খুঁজছিল,,রিনাকে দেখে তার মনে হলো সে সেই আশ্রয়টা পেয়ে গিয়েছে। সত্যিই কি তাই??
রিনাকে আকাশের বুকে দেখে তৃষার দম বন্ধ হয়ে আসছিল।হোক না এটা শুধুমাত্র একটা কন্ট্রাক্ট ম্যারেজ তবুও সে তো আকাশের ই বিবাহিত স্ত্রি।কী করে সহ্য করবে নিজের স্বামীর বুকে অন্য একজন নারীকে??
-:কী হয়েছে আকাশ??
-:মা..মা হঠাৎ করে খুব অসুস্থ হয়ে পড়েছে(কাঁপা কাঁপা গলায়)
-: চিন্তা করো না আন্টির কিছু হবে না।
এই বলে আকাশকে ধরে সামনের একটা চেয়ারে বসালো আর তৃষার দিকে তাকিয়ে একটা শয়তানি হাসি দিল।এই হাসি দিয়ে হয়তো সে তৃষাকে স্পষ্ট করে বুঝিয়ে দিতে চাইছে যে তার স্বামি খুব তাড়াতাড়ি অন্য কারোর হতে চলেছে।দেখা যাক কী হয়..সব‌ই নিয়তির উপর নির্ভর।।
.
.
.
(বাকিটা নেক্সট পর্বে)
.
.