ভালোবাসা এমনও হয়

ভালোবাসা এমনও হয় Season 2 !! Part- 12

(আমি আগেই বলেছি এক ট্রিক বার বার ব্যাবহার করি নাহ।।বাট আপনারা সবাই যে নায়ক পাল্টাবো নায়িকা পাল্টাবো ভেবে টেনশন করছেন তা দেখে ভালোই লাগছে।কতোজন তো আমাকে মেরে ফেলার হুমকি ও দিচ্ছে😅)

এইভাবে আরো কয়েকদিন কেটে গেল।আদ্রকে হসপিটাল থেকে রিলিজ দেয়া হয়ে গেছে।।এই কয়েকদিনে আদ্রর সাথে ও তরীর বেশ ভাব হয়ে গেছে।।মেঘ তাতে রেগে গেলেও তার কিছু করার নেই।।মেঘ তরীর জন্য দুইজন বডিগার্ড এর ও ব্যাবস্থা করেছে।নিজে তো আছে বাট পাশাপাশি বডিগার্ড ও রেখেছে।

একদিন

তরীঃ বাট আম্মু আমি কলেজে কেন যেতে পারবো নাহ??

নেশাঃ তরী তোর আব্বুকে জিজ্ঞাসা কর।।আমি কিছু জানি নাহ।

তরীঃ আজব😒।

তরী নীড়ের রুমে গেল।

তরীঃ আব্বু হোয়াট হেপেন।।আমাকে কলেজ কেন যেতে নাহ করেছো?

নীড়ঃ এখানে বসো আগে

তরীঃ ওকে এখন বলো(নীড়ের পাশে বসে)

নীড়ঃ তুমি জানো আমি যা করবো তোমার ভালোর জন্যই করবো তাই নাহ

তরীঃ বাট আব্বু হঠাৎ এইরকম কথা?

নীড়ঃ আসলে আমি চাইছি তোমার বিয়েটা দিয়ে দিতে

তরীঃ হোয়াট (অবাক হয়ে দাড়িয়ে গেল)

নীড় টেনে তরীকে বসালো।

নীড়ঃ ট্রাই টু আন্ডারস্ট্যান্ড প্রিন্সেস।।এটাই তোমার জন্য ভালো

তরীঃ বাট আব্বু আমি আমার পড়েলেখা কমপিলিট করতে চাই।

নীড়ঃ আমি জানি প্রিন্সেস।তুমি তো বিয়েটা করেও পড়ালেখা টা কম্পিলিট করতে পারো।।আর যার সাথে আমি তোমার বিয়ের কথা ভাবছি সে নিজেই বলেছে তোমাকে লেখাপড়া করতে দিবে।

তরীঃ বাট আব্বু….

নীড়ঃ তরী বুঝার চেষ্টা করো।।আমি তোমার ভালোর জন্যই করছি।।তোমাকে নিয়ে আমি আর তোমার আম্মু প্রতিদিন কতোটা টেনশনে থাকি তা শুধু আমরা জানি।।কয়েকদিন পর পরই তোমার উপর কোন নাহ কোন বিপদ আসছে তাই আমি চাইছি তোমাকে ওর হাতে তুলে দিয়ে নিশ্চিত হতে।

তরীঃ বাট আব্বু আমি চাইছি নাহ এখন বিয়ে করতে😔😞

নীড়ঃ বাট কেন?? তোমার কি কোন পছন্দ আছে?থাকলে আমায় বলো আমি তার সাথেই বিয়ে দিবো।।

তরীঃ নাহ আব্বু আমার তেমন কোন পছন্দ নেই(মনে মনে- কিভাবে বলবো আব্বু মেঘ ভাইয়ার কথা।।উনি তো আমাকে নাহ বরং বর্ষাকে পছন্দ করে😞🤕)

আসলে এই কয়েকদিনে মেঘ বর্ষার অনেক ক্লোজ হয়েছে।।সবই ছিলো তরীকে কষ্ট দেয়ার জন্য।।কারন মেঘের নাহ করার সত্ত্বেও তরী আদ্রর সাথে কথা বলতো।।আর তাই মেঘ ও তরীকে দেখিয়ে দেখিয়ে বর্ষার সাথে মিশতো।

নীড়ঃ তাহলে আর বিয়েটা করতে সমস্যা কি😊

তরীঃ বাট আব্বু আমি তোমাদের ছেড়ে🥺

নীড়ঃ আরে পাগলি মেয়ে এর জন্য কাঁদতে হয় নাকি।।মেয়েদের তো পরের ঘরে যেতেই হয়।।আর তুমি যখন চাইবে আমার কাছে চলে আসবে৷ কেউ আটকাবে নাহ(তরীর চোখের পানি মুছে দিয়ে)

তরীঃ 😞

নীড়ঃ আচ্ছা ঠিকাছে আজ দেখতে আসুক।।যদি তুমি নাহ চাও আমি নিষেধ করে দিবো।।ওকে

তরীঃ হুম😔

বিকালের দিকে তরীকে দেখতে এলো।।ঈশাও এসেছে বাড়িতে সাথে হিয়া ও।।তরীকে সুন্দর করে সাজিয়ে ছেলে পক্ষের সামনে নিয়ে যাওয়া হলো।।

তরী মুখ তুলে তাকালো।আর তাকিয়েই অবাক।।

তার সামনে আর কেউ নাহ বরং আদ্র দাড়িয়ে আছে।।
তরী চিন্তায় পরে গেল।।তারমানে কি আদ্র তাকে বিয়ে করতে চাইছে।।কথাগুলো তরীর মাথায় ঘুর ঘুর করছে।।
তরী খেয়াল করলো আদ্রর সাথে একটা মহিলা ও আছে।।আসলে মহিলাটি হলো আদ্রর ফুপি।।আদ্রর বাবা মা বেঁচে নেই।মহিলাটির নাম আবিরা।

তরী তাকে সালাম দিলো

আবিরাঃ বসো তরী এইখানে বসো(মহিলাটি তরীকে টেনে তার পাশে বসালো।।তরী ও মন খারাপ করে তার পাশে বসলো)

আদ্রঃ আঙ্কেল উনি হলেন আমার ফুপি।।ছোট থেকে আমি উনার কাছেই থেকেছি।উনিই আমাকে বপড় করে তুলেছে।

নেশাঃ বাট তোমার বাবা মা??

আদ্রঃ আসলে আন্টি আনার আব্বু আম্মু বেঁচে নেই

নেশাঃ ওহহ সরি।। আমি জানতাম নাহ।। প্লিজ মন খারাপ করো নাহ

আদ্রঃ নাহ ইটস ওকে আন্টি।

আবিরাঃ আবি সত্যিই তোর পছন্দ আছে বলতে হবে।।পুরো চাঁদের টুকরা😊

আদ্র একটু মুচকি হেসে নিচের দিকে তাকালো

নেশাঃ আভি??

আদ্রঃ আসলে আন্টি ফুপি আমাকে আভি বলে ডাকে

নেশাঃ ওহহ।।তাছাড়াও তোমার ফুপি কে আমার খুব চেনা লাগছে।।কারো ফেস এর সাথে খুব মিল লাগছে

আবিরাঃ আমাকে🙄।।হতে পারে হয়তো কোন দিন দেখেছিলেন

ঈশাঃ আচ্ছা এখন এইসব বাদ দিন সবাই।।তো ভাবি আই মিন আপনাকে আমি ভাবি বলতে পারি তো(আবিরার দিকে তাকিয়ে)

আবিরাঃ সিউর

ঈশাঃ ওকে তো ভাবি আমাদের মেয়েকে পছন্দ হয়েছে তো

আবিরাঃ পছন্দ না হয়ে উপায় আছে।।এতো সুন্দর মেয়েকে কার পছন্দ নাহ হবে।।আর আভি তো বলেই দিয়েছে ফুপি তোমার পছন্দ হোক আর নাহ হোক আমি এই পুচকি মেয়েকেই বিয়ে করবো😅নাহ হলে কুরুক্ষেত্র বাধাবো

ঈশাঃ 😂তাহলে তো আর কোন কথাই নেই।আমাদের ও ছেলেকে বেশ পছন্দ।। তাহলে বিয়ের দিন পাকা করে ফেলি কি বলেন

তরী অবাক হয়ে সবার দিকে একবার তাকিয়ে আবার মাথা নিচু করে ফেললো।

আদ্রঃ আই থিংক এতোটা জলদি সব কিছু করার দরকার নেই আন্টি।।তরীকে একটু টাইম দেয়া দরকার।

নীড়ঃ আমার মনে হচ্ছে আদ্র ঠিক বলছে ।।

আবিরাঃ ওকে ওকে।।বাট তরীকে আদ্রর সাথে আলাদা কথা বলতে ভালো হতো

নেশাঃ হ্যা অবশ্যই।। তরী আদ্রকে তোমার রুমে নিয়ে যাও

তরীঃ আচ্ছা।।আসুন(আদ্রর দিকে তাকিয়ে)

আদ্র তরীর পিছু নিলো।। তরী আদ্রকে নিয়ে নিজের রুমে গেল।

তরীঃ ববসুন

আদ্রঃ তুমি ও বসো

তরীঃ নাহ আমি ঠিকাছি ।। আপনি বসুন

আদ্র বসলো।।আদ্র মুচকি মুচকি হেসে তরীর দিকে তাকাচ্ছে।।তরী নিচের দিকে তাকিয়ে শাড়ির আচলে একবার আঙুল প্যাচাচ্ছে আবার খুলছে

আদ্রঃ তোমার এই বিয়েতে মত আছে তো??

তরীঃ(মনে মনে-আদ্র ভাইয়াকে কিছু বললেন যদি মেঘ ভাইয়াকে বলে দেয়)আমি আসলে এখন বিয়ে করতে চাইছি নাহ

আদ্রঃ কিন্তু সেটা কেন জানতে পারি

তরীঃ আসলে আমি আমার পড়ালেখা কম্পিলিট করতে চাই

আদ্রঃ সেটা তো বিয়ের পর ও করতে পারো

তরীঃ কিন্তু😞

আদ্রঃ ইউ কেন ট্রাস্ট মি তরী।।আমি কথা দিচ্ছি কখনো তোমার উপর জোর করবো নাহ।।আর নাহ কোন কাহে তোমাকে বাধা দিবো।।বাকিটা তোমার ইচ্ছা।।এখন তুমি তোমার ডিসিশন জানিও।।আমি ওয়েট করবো

তরীঃ হুম😞

আদ্রঃ জানো তোমাকে দেখে আমার প্রথম দিন থেকেই ভালো লেগে গেছিলো। পরেরদিন আমার উপর পড়ে গেল।।ট্রাস্ট মি তোমাকে এতো কাছ থেকে দেখে আমার হার্টবিট অফ গেছিলো মনে হলো।।পরেরদিন তাই ইচ্ছা করে তোমার উপর পরে গেলাম

তরীঃ তারমানে আপনি ওইদিন ইচ্ছা করেই পরেছিলেন😠

আদ্রঃ 😅😅কি করবো বলো লোভ হচ্ছিলো খুব

তরীঃ 😒😑

আদ্রঃ জানি নাহ কখন থেকে তুমি আমার লক্ষ্য হয়ে গেলে তরী।।আই ওয়ান্ট ইউ।।কথা দিচ্ছি কখনো তোমাকে খুশি থাকতে দিবো নাহ

তরীঃ মানেহ😕

আদ্রঃ ওহ সরি সরি আই মিন কষ্টে থাকতে দিবো নাহ

তরীঃ 🙄

আদ্রঃ নাও চয়েস ইজ ইউর।।আমি তোমার জবাবের আশায় থাকবো😊

বলেই আদ্র রুম থেকে বেরিয়ে গেল।

তরী ও ধীর পায়ে বের হলো।

একটুপর আদ্র আর তার ফুপি চলে গেল।।তরী নিজের রুমে চলে এলো।।

এইদিকে তরী কলেজে আসেনি বলে মেঘ তরীকে ফোন দিয়েছে বাট ফোনটাও রিসিভ করেনি তরী।।তাই তরীদের বাড়ি চলে এসে সোজা।

বাড়িতে ঢুকেই অবাক হলো ঈশা কে দেখে।

মেঘঃ মম তুমি এখানে?🤨

ঈশাঃ আরে আজ তো তরীকে দেখতে এসেছিলো তাই এসেছি।।তুই এখানে কেন

পরের কথাটি আর মেঘের কান পর্যন্ত পৌছায়নি।।তরীকে দেখতে এসেছে শুনেই মেঘ চুপ হয়ে গেছে।

ঈশাঃ কিরে কই হারিয়ে গেলি

মেঘঃ হ্যাঁ নাহ কিছু নাহ।।বৃষ্টি কোথায়

ঈশাঃ ওর রুমে হবে হয়তো

মেঘ ওকে বলে তরীর রুমের দিকে চলে গেল।


তরীর রুমের সামনে গিয়ে দরজা নক করলো।ভিতর থেকে কোন সারা নাহ পেয়ে রুমে ঢুকে গেল।সারা রুম জুড়ে তরীর ত ও নেই।।বারান্দার দিকে তাকিয়ে দেখলো তরী বারান্দার জানলার গ্রিলে হাত ফিয়ে এক দৃষ্টিতে বাইরের দিকে তাকিয়ে আছে।।মেঘ যে তার পিছনে সেই খবরও নেই।।

মেঘঃ বৃষ্টি এই বৃষ্টি (তরীর কোন সারা পেল নাহ)

মেঘ সামনে গিয়ে দাড়ালো মেঘ এইবার তরীর দিকে ভালো করে তাকালো।।তরীকে শাড়িতে খুব সুন্দর লাগছে।

মেঘ তরীকে দেখতে আসার কথাটা ভুলে গেল।গিয়ে তরীকে পিছন থেকে জড়িয়ে ধরলো.।কোমড়ে কারো স্পর্শ পেয়ে তরীর ঘোর কাটলো।।চমকে উঠে পিছনে ঘুরে মেঘকে দেখে অবাক হয়ে গেল।।

ধাক্কা দিয়ে মেঘের থেকে দুরে সরে দাড়ালো।
মেঘের ও হুস আসলো।

তরীঃ ততুমি এএখানে ককি করছো

মেঘঃ তোকে দেখতে এসেছিলাম।।কলেজ কেন যাসনি আজ(তরীর কপালের চুল গুলো কানে গুজে দিয়ে)

তরীঃ পাত্রপক্ষ দেখতে এসেছিলো😞

মেঘঃ বাহ তো খুব শিগগিরই বিয়ের দাওয়াত খাচ্ছি

তরীঃ 🥺🥺😥

মেঘঃ তা পাত্রকে কি পছন্দ হয়েছে, হুম????

তরীঃ আমাকে আদ্র ভাইয়া দেখতে এসেছিলো(মেঘের চোখের দিকে তাকিয়ে)

মেঘ তরীর চুলের থেকে নিজের হাত সরিয়ে দুরে সরে দাড়ালো

মেঘঃ সিরিয়াসলি??

তরীঃ 😞আব্বুর উনাকে পছন্দ হয়েছে

মেঘঃ তো?

তরীঃ আব্বু চাইছে বিয়েটা দিয়ে দিতে।।বাকি সবাই ও রাজি

মেঘঃ তো!!!!

তরীঃ

চলবে🙃

(খুব ঠান্ডা মাথায় প্যাচ লাগানো যাকে বলে আরকি😶😑ভুলে ও ভাববেন নাহ প্যাচ নেই।।রেডি ফর বিগ বাঁশ🙃🙄)