ভালোবাসা এমনও হয় Season 2 !! Part- 11
হঠাৎ মেঘের ফোনে কল আসলো।।বাট মেঘ তো সেই হুসে নেই।।ফোন কয়েকবার বাজতে বাজতে কেটে গেল।।তারপর নীড়ের মোবাইলে ফোন আসলো।নীড় ও ফোন ধরলো নাহ।।তারপর ফোন আসলো ইশানের মোবাইলে।।ইশান ফোন ধরলো।
ইশানঃ হ্যালো
অপরপাশেঃ…….
ইশানঃ তরী!!!!তরী তুমি কোথায়!!!
অপরপাশেঃ………
ইশানঃ হ্যা হসপিটালে।।ওকে আমরা আসছি।। হ্যা আমরা একসাথেই আছি।।আসছি আমরা।
।
ইশান নীড়কে আর মেঘকে বললো
নীড়ঃ হোয়াট তরী ঠিক আছে।।বাট তাহলে এতো কিছু…….
ইশানঃ আমি কিছুই জানি নাহ।।চলো ওখানে গিয়েই দেখা যাবে।।মেঘ এই মেঘ উঠ(মেঘকে ঝাকি দিয়ে)
মেঘ ঘুরে ইশানের দিকে তাকালো।
ইশানঃ মেঘ উঠ আমাদের হসপিটালে যেতে হবে তো
মেঘঃ আমি কোথায় যাবো নাহ ডেড।।এইখানে বৃষ্টির কাছে থাকবো।।তোমরা যাও
ইশানঃ আরে আমরা তো তরীর কাছেই যাচ্ছি।।ও তো হসপিটালে
মেঘঃ তুমি মিথ্যা বলছো ডেড
ইশানঃ আরে নাহ সত্যি।। তরী আমাকে নিজে ফোন দিয়েছে।
মেঘঃ সত্যি 🥺(উঠে দাড়িয়ে)
ইশানঃ ইয়েস মেঘ চল
সবাই মিলে হসপিটালে গেল।।তরীকে দেখেই সবাই দৌড়ে তার কাছে আসলো।।নীড়ের আগে মেঘ গিয়ে তরী কে জড়িয়ে ধরলো।
মেঘঃ বৃষ্টি তুই ঠিক আছিস তোর কিছু হয়নি তো(তরীকে ছেড়ে তার হাত পা চেক করে)
তরীঃ আরে আই এম অলরাইট। আমার কিছু হয়নি হয়েছে তো আদ্র ভাইয়ার
নীড়ঃ তুমি এখানে কিভাবে এলে??আর তুমি নাকি গাড়িতে ছিলে আর আদ্র এখানে কিভাবে??
তরীঃ আরে ওয়েট ওয়েট এতো প্রশ্ন একসাথে করলে উত্তর দিবো কিভাবে।।
নীড়ঃ বাট এতো…..
তরীঃ ওয়েট আব্বু।।আমি সব বলছি।।বাট প্লিজ আগে আদ্র ভাইয়াকে দেখে আসো।।আজ আমি সুস্থ আছি ওনলি ফর হিম।
মেঘঃ বুঝলাম নাহ
নীড়ঃ সব ক্লিয়ারলি বলো।।আদ্রর হসপিটালে কেন কি হয়েছে তার
তরী নাহ পেরে সবাইকে সব কিছু খুলে বললো।
আসলে ঘটনা কি হয়েছে
মেঘ যখন তরীকে গাড়ি তে লক করে যায় তখন লক টা ভালো করে লাগে নাহ।যার ফলে তরী গাড়ির দরজার গ্লাস খুলে বাইরে হাত দিয়ে দরজা খুলে ফেলে।।বাট গাড়ি থেকে বের হয়নি।।বাট পার্কিং এড়িয়ার পাশে একটা খরগোশ দেখে তরী তার পিছু নেয়।।খরগোশের পিছনে দৌড়াতে দৌড়াতে কখন যে রাস্তার মাঝখানে চলে আসে তার খবরই থাকে নাহ।।পিছিন থেকে গাড়ির শব্দ শুনে তরী পিছনে ঘুরে।।বাট কিছু করার ছিলো নাহ কারন গাড়িটা তার অনেক সামনে চলে এসেছে।।এক্সিডেন্ট নিশ্চিত যেনে তরী চোখ খিচে দাড়িয়ে পড়ে।।বাট তার আগেই আদ্র তাকে ধাক্কা দিয়ে সরিয়ে দেয় গাড়ির সামনে থেকে।।বাট নিজেকে বাঁচাতে পারেনি।।😪।।তরী কয়েকজনকে নিয়ে আদ্রকে হসপিটালে ভর্তি করে।।এইদিকে কলেজে যে এতো কিছু হয়ে গেছে তা তরী জানে নাহ।তাই মেঘকে ফোন দিচ্ছিলো হসপিটালে আসার জন্য।
সব কিছু শুনে নীড়,ইশান আর মেঘ তিন জনই অবাক।।আজ তরীর উপর দুইবার বিপদ আসতে চলছিলো আর এইবার ও আদ্রর কারনেই সে এখনো ঠিক আছে।
এইদিকে মেঘের কেন যেন খুন সন্দেহ লাগছে।।ইচ্ছে করছে তরীকে ঠাস ঠাস করে দুইটো লাগিয়ে দিতে।।খরগোশের জন্য যদি নিজের এক্সিডেন্ট হয়ে যেত তখন মেঘের কি হতো।।বাট এই বোকামির জন্য তরীকে কিছু বলা ও যায় নাহ।।কারন যদি তরী এই বোকামি টা নাহ করতো তাহলে সে ব্লাস্ট এর সময় গাড়িতে থাকতো।
মেঘ কিছুক্ষণ চুপ থেকে আদ্রকে দেখতে যাওয়ার কথা বললো।।সবাই একসাথে দেখতে গেল।
।
।
দরজা খুলার আওয়াজ পেয়ে আদ্র সেদিকে ঘুরলো।।সবাই সামনে দাড়িয়ে আছে।।আদ্র তাদের দেখে উঠে বসার চেষ্টা করলো।
নীড়ঃ থাক বাবা তোমাকে কষ্ট করে বসতে হবে নাহ।।শুয়ে থাকো সমস্যা নেই
(মেঘ আদ্রর দিকে ভ্রু কুচকে তাকিয়ে আছে।।পায়ে, হাতে আর মাথায় ও একটু ব্যান্ডেজ করা)
আদ্রঃ আই এম সরি আঙ্কেল।। কেমন আছেন আপনি
নীড়ঃ ভালো বাবা।।তুমি এখন কেমন আছো
আদ্রঃ ভালো
নীড়ঃ থেংকিউ সো মাচ আদ্র।।আমার মেয়েটাকে আবারও বাঁচানোর জন্য।।
আদ্রঃ ছি ছি আঙ্কেল এই সব কি বলছেন।। এটা তো আমার দায়িত্ব আঙ্কেল।
নীড়ঃ আবারও ধন্যবাদ তোমাকে।।তুমি বার বার আমার মেয়েকে রক্ষা করছো তার জন্য
আদ্রঃ আঙ্কেল প্লিজ আপনি যদি এইভাবে আমাকে বলতে থাকেন তাহলে আমি কিন্তু খুব কষ্ট পাবো।।আপনারা তো আমার পরিবারের মতোই।পরিবারের কারো জন্য যদি কিছু করি তাহলে ও কি আমাকে এতোটা ফরমালিটি দেখাতেন
মেঘঃ একদম ঠিক বলেছে আদ্র।।তরী তো আদ্রর বোনের মতোই তাই নাহ।।আর নিজের বোন কে বাঁচানোর জন্য ধন্যবাদ তো দেয়ার দরকার নেই।।তাই নাহ আদ্র(বলেই বাঁকা হেসে আদ্রর বেডের পাশে চেয়ার টেনে বসলো)
আদ্রও কিছু বললো নাহ।
মেঘঃ মামা আই থিংক তোমাদের এখন অফিসে যাওয়া উচিত।।সকালে তো এখানেই ছুটে আসলে।।আর তরীর ও রেস্ট নেয়া দরকার এতো তুফান গেল তার উপর।
ইশানঃ আমার মনে হয় মেঘ ঠিক বলছে।।আর আদ্র ও তো এখন প্রায় ভালোই আছে।।আমরা না হয় আক্ল আবার আসবো দেখা করতে।।
মেঘঃ হুম তাই করো।।ডেড, তুমি আর মামা একসাথে চলে যাও।।আর আরেক গাড়িতে তরীকে বাড়িতে পাঠিয়ে দেও আমি একটু আদ্রর সাথে থাকি
তরীঃ আমি ও থাকি???
মেঘঃ আমি বাড়িতে যেতে বললাম তো (রাগি চোখে তরীর দিকে তাকিয়ে)
তরীঃ (মনে মনে- হুহ😒)।।আব্বু চলো যাওয়া যাক।।আসি আদ্র ভাইয়া।।আপনি নিজের খেয়াল রাখবেন
আদ্রঃ হুম বাই পুচকি
তরী হেসে মেঘের দিকে তাকালো।।মেঘ রাগি চোখে তাকিয়ে আছে।।তরী মুখ ভেঙিয়ে চলে গেল।।
সবাই যাওয়ার পর
মেঘঃ কি অদ্ভুত তাই নাহ রে আদ্র
আদ্রঃ মানে
মেঘঃ তরীর সব বিপদে তুই আগে খবর পেয়ে যাস।।কি কানেকশন তোর আর তরীর বিপদের মধ্যে তাই নাহ
আদ্রঃ কি বুঝাতে চাইছিস তুই(ইনোসেন্ট লুক নিয়ে)
মেঘঃ এই যে দেখ পুরো ক্লাসের সবাই ক্লাসে ছিলো বাট তুই বাইরে ছিলি আর তরীকে ও বাঁচালি।।ইম্প্রেসিভ
আদ্রঃ তুই কি মিন করছিস আদ্র আমি তরীকে ক্ষতি করার চেষ্টা করছি।।তুই আমাকে এতোটা নিচ ভাবিস।।আর যদি আমিই ওর ক্ষতি করার চেষ্টা করতাম তাহলে বাঁচালাম কেন
মেঘঃ আমি তো বলিনি তুই এক্সিডেন্ট এর প্লে করেছিস
আদ্রঃ তাহলে
মেঘঃ বাদ দে জানিস আজ আমাদের কলেজের পার্কিং এড়িয়া তে আগুন লেগেছিলো।।আর কিভাবে লেগেছে জানিস।আমার গাড়ি ব্লাস্ট হয়ে।।হয়তো কেউ আমার গাড়িতে বোমা লাগয়েছিলো।।তরীর ক্ষতি করার জন্য।।বাট থেংকস টু ইউ।।
আদ্রঃ ওহহ গড এতো কিছু হয়ে গেল কলেজে।।আর আমি কিনা।।আচ্ছা কে তোর গাড়িতে বোম লাগিয়েছে জানতে পেরেছিস
মেঘঃ প্রুভ তো পাইনি।।বাট আমি জানি কে করেছে।
আদ্রঃ কে
মেঘঃ কেন তুই🙃
আদ্রঃ ছি ছি মেঘ তুই এইসব কি বলছিস আমি এইসব কেন করবো।।আমার এইসব করে কি লাভ।।😕😟
মেঘঃ রিয়েলি 🤨
আদ্র হেসে দিলো।
আদ্রঃ বাহ মেঘ এই না হলে মেঘ।।তোর বুদ্ধি আছে বলতে হবে
মেঘঃ তা একটু আছে।।বাট তোর মতো কুটনৈতিক বুদ্ধি টা রপ্ত করতে পারলাম কই
আদ্রঃ 😂😂।।তা যা বলেছিস।।হ্যাঁ আমিই তোর গাড়িতে বোম লাগিয়েছি।।বাট ট্রাস্ট মি আমার কোন ইচ্ছা নেই তরীকে মেরে ফেলার।।আমি তো যাস্ট ওর কাছে ভালো হতে চেয়েছিলাম।।তাই ভেবেছিলাম তাকে গিয়ে বাঁচাবো।।কিন্তু যখন তাকে বাঁচানোর জন্য তোর গাড়ির সামনে যাই দেখি তরী তো গাড়িতেই নেই।সে তো রাস্তাতে দৌড়াচ্ছে।। তখন খেয়াল করলাম পিছন থেকে একটা গাড়ি আসছে।।বাট তরীর সেদিকে হুস নেই।।তো কি আর করার তার কাছে ভালো হওয়ার জন্য নিজের জীবন বাজি রেখে ঝাপিয়ে পড়লাম তাকে বাঁচাতে।😅
মেঘঃ খুব বেশি সাহস দেখিয়ে ফেলছিস আদ্র।।আজ যদি বৃষ্টির কিছু হয়ে যেত তাহলে তোকে আমি শেষ করে দিতাম
আদ্রঃ আরে কিছু হতে দিলে তো হবে তাই নাহ।।আমি তো তাকে বাঁচানোর জন্যই এতো কিছু করলাম
মেঘঃ তোর সাহস এর প্রশংসা নাহ করে পারছি নাহ আদ্র।।।এতো বড় কাজ করে আমার সামনেই নির্ভয়ে স্বীকার করছিস।।হাও কিউট
আদ্রঃ আরে তুই তো আমার ফ্রেন্ড।তোকে নাহ বললে কাকে বলবো।আর তাছাড়াও আরেকটা কথা কি জানিস তোর আর আমার মাঝে অদ্ভুত মিল আছে।।তোর আর আমার চয়েস এক।তোর যেই জিনিস টা পছন্দ হয় আমারও অবিকল সেই জিনিসটাই পছন্দ হয়।
মেঘঃ বাট বৃষ্টি কোন জিনিস নাহ আদ্র।।ও আমার ভালোবাসা।। ওর পিছিনে নজর দেয়া বন্ধ করে দে
আদ্রঃ কেয়া কারু ও লারকে মে হু আদাত চগে মাজবুর🤣
মেঘঃ ইউ হেভ টু পে দেট ফর দিছ
আদ্রঃ আই ডিসার্ভ দিস😉
মেঘ নাক ফুলিয়ে বেরিয়ে গেল।
।
।
চলবে