ভালোবাসার প্রতারণা

ভালোবাসার প্রতারণা !! Part- 06

(আজকে কনফিউশন দূর করে সুন্দর করে গল্পটা আপনাদের কাছে তুলে ধরার চেষ্টা করবো। আশা করি অনেকের মাথা ঘুরানো এখন বন্ধ হবে।)

প্রভাত তারাকে রুমে নিয়ে এসে শান্ত গলায় বলল ঘুমিয়ে পড়। তারার কথাটা হজম না হলেও ভালোই লেগেছে যাক কোনো রাগ দেখায় নাই। তারাও গিয়ে শুয়ে পড়লো। প্রভাত বারান্দায় গিয়ে কাকে যেন ফোন দিল।

সকালে…….

সবাই ব্রেকফাস্ট করতে টেবিলে বসে আছে। প্রভাত আর তারাও আসলো কিছুক্ষণ পর আকাশও আসলো। সবাইকে দেখে প্রভাত বলল

—–ড্যাড! আমার একটা জরুরী কথা ছিল।

—–বলো।

—– আমি আর তারা হানিমুনে যেতে চাই।

কথাটা শুনে তারা একবার প্রভাতের দিকে তাকালো আরেকবার আকাশের দিকে। আকাশও তারার দিকে তাঁকিয়ে আছে আর তাচ্ছ্যিলের হাঁসি দিচ্ছে। আকাশের বাবা বলল

——- তো যাও। ভালোই হবে কিছুদিন ঘুরাফেরা করলে মন ভালো থাকবে তার সাথে দুজন দুজনকে ভালো করে জানতে পারবে।

—— বাবা আমরা আজই যাচ্ছি।

—–আজকেই ? (মা)

——এনি প্রবলেম?

—– তোমার মমের প্রবলেম থাকলে কি হবে। আজ চাইলে আজই যাও। কিন্তু কোথায় যাবে!

—–ইন্দোনেশিয়া।

——ওকে।

সবাই খেয়ে চলে গেল কিন্তু আকাশ মাঝ পথেই খাওয়া ছেড়ে উঠে গেল। প্রভাত কোনো ভ্রুক্ষেপ করলো না। আর তারা! সে তো টেনশন করতে করতে মরেই যাচ্ছে। আকাশকে ফেস করবে কিভাবে!

তারা আকাশের রুমে গেল প্রভাত তখন অফিসে। তারা আকাশকে স্যরি বলতে গিয়েছিল। রুমের দরজা খোলায় ছিল। আকাশ তখন গিটারে সুর উঠাচ্ছিল। তারা ওর সামনে গিয়ে বলল

—— আকাশ!

আকাশ তারাকে দেখে খুব রেগে গেল। তারার দুই বাহু চেপে ধরে বলল

—– কেন এসেছিস এখানে!

—– আমি তোমাকে স্য…..

——হানিমুনে যাচ্ছিস। সেটাই তো বলতে এসেছিস!

—– ভুল বুঝছো আকাশ

—— আমি বারবার ভুল বুঝি! তুমি বলাতেই তো আমি অডিশনে গিয়েছিলাম। তাহলে আমার ভুলটা কোথায় বলো?

—–তোমার ভালোর জন্যই আমি বলেছিলাম। এটা তোমার ক্যারিয়ারের ব্যাপার ছিল। সেদিন সকালে যখন জানতে পারলাম অডিশনের লাস্ট ডেট তখন আমার মাথা ঠিক ছিল না। আমি চেয়েছিলাম তুমি নিজের গানকে আকড়ে ধরো। আমি তোমাকে তখন মেসেজ দিয়ে বলেছিলাম কারণ আমি চাইনা একটা জিনিসের জন্য তুমি সারাজীবন পস্তাও। তাই আমি ভেবেছিলাম বিয়েটা পরে করলেও হবে। আগে তুমি তোমার জীবনের সবচেয়ে বড় স্বপ্ন টা পূরণ করো। কারণ আমি চাইনা এই না পারা জিনিসটা সারা জীবন তোমাকে তাড়া করুক। আর প্রভাতকে বিয়ে করার কথা বলছো! আরে আমি তো জানতামই না যে ওর সাথে আমার বিয়ে হচ্ছে। আমি ভেবেছিলাম তুমি অডিশনে যাওনি আমার কথা ভেবে আমাদের সম্পর্কের কথা ভেবে তুমি ফিরে এসেছো।

—– এখন বলে কি হবে? যা হওয়ার তো হয়ে গেছে। কিন্তু একটা কথা শুনে রাখো আমি তোমাকে সুখি হতে দিব না কখনো না।

এদিকে প্রভাত ফিরে এসে তারাকে রুমে এসে কোথাও খুঁজে পাচ্ছ না। তখনিই তারা আকাশের রুম থেকে বের হয়ে আসলো। ব্যাপারটা প্রভাত এড়িয়ে যাওয়ার ভান করলো। কিন্তু মন থেকে তো আর পারলো না। তার তারা যে তাকে ছেড়ে চলে যাবে। ভাবতেই বুকে চিন চিন ব্যাথা করছে।

তারাকে দেখে প্রভাত বলল

—- রেডী হয়ে নাও। আমরা একটু পর বের হব।

—–ঠিক আছে।

তারা আর প্রভাত সবার থেকে বিদায় নিয়ে বেরিয়ে পড়লো ইন্দোনেশিয়ার উদ্দেশ্যে। কিন্তু কে জানতো তারা দুজন একা নয় আরেকজন ও গেছে ইন্দোনেশিয়ায়।

ইন্দোনেশিয়াতে পৌঁছে তারা আর প্রভাত একটা ফাইভ স্টার হোটেলে উঠল সেখানে একরাত থেকে পরেরদিন বালি যাবে। তারা আর প্রভাত রুমে গিয়ে ফ্রেশ হয়ে নিল। তারা খেয়াল করলো প্রভাত তার সাথে কথা বলছেনা। এড়িয়ে চলছে না চাইতেও তারার খুব খারাপ লাগছে। এটাই হয়তো স্বামী স্ত্রীর সম্পর্ক। কবুল বলার পর আপনা আপনি একটা টান চলে আসে। চাইলেও তা ছিঁড়তে পারে না।

চলবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *