ভালোবাসার অন্যরুপ ! Part- 19
ফুপি– আ..আমাকে ত..তুমি ক..কোথায় নিয়ে এ..এসেছো?? আ..আমার মেয়ে কোথায়??
আমান– ওহ হো শাশুড়িআম্মি এতো ভয় পাচ্ছেন কেনো??
ফুপি– ত..তুমি তো ব..বলেছিলে আমাকে ন..নীতার কাছে নিয়ে আসবে। ন..নীতা কই??
আমান– আপনি আপনার মেয়ের কাছে যেতে চান??
ফুপি– হ..হ্যাঁ।
#ফ্লাশব্যাক🌸🌸
ফুপি নিজের ড্রয়িং রুমে বসে সকালবেলা চা খাচ্ছিল আর খবরের কাগজ পড়ছিল ঠিক সেই সময় কেউ কলিং বেল বাজায়। কাজের লোক দরজা খুলে দিতেই আমান ভিতরে আসে, আমান কে আসতে দেখে ফুপি খুব খুশি হয়ে যান।
ফুপি– (মনে মনে– আমান এসেছে! তার মানে নীতা ওর কাজে সফল হয়েছে। নীতা তো বলেছিল একবারে বিয়ের প্রস্তাব নিয়ে আমান কে পাঠাবে। যাক বাবা এতো দিনে আমার ইচ্ছে সম্পূর্ণ হবে, এতদিন ঐ দুটো আপদ কে বিদায় করতে চাইছিলাম হচ্ছিলই না। এইবার বাঁচবো।) আরে জামাই যে। আসো আসো।
আমান– কেমন আছো ফুপ্পি স্যরি শাশুড়িআম্মি।
ফুপি– (মনে মনে– যা ভেবেছিলাম তাই! আমান কে নীতাই পাঠিয়েছে, নাহ আমান কে বুঝতে দেওয়া যাবে না আমি সবটা আগে থেকে জানি।) এসিব কি বলছো আমান। হ্যাঁ আমি সম্পর্কে তোমার শাশুড়ি কিন্তু সেটা তো ফুপি শাশুড়ি তাই না??
আমান– হ্যাঁ ফুপি শাশুড়ি ছিলেন কিন্তু এখন শাশুড়ি আম্মি হবেন সের্ফ শাশুড়ি। কারণ আমি তো আপনার মেয়ে মানে নীতা কে বিয়ে করতে চলেছি।
ফুপি– সে কি বাবা?? এসব কি বলছো?? মীরার সাথে তো তোমার সবে বিয়ে হলো।
আমান– ধুর! বাদ দিন তো ওর কথা। ওকে বাসা থেকে বার করে দিয়ে কিছু টাকা ধরিয়ে দিলেই হবে।
ফুপি– (মনে মনে– মীরার নামে আরেকটু বিষ ঢেলে দিই। তাহলে ঐ মায়াবি মেয়ে চাইলেও আর আমান কে নিজের বশে রাখতে পারবে না।) যা বলেছো বাবা, এক নম্বরের বেয়াদোপ, লোভী একটা মেয়ে। আব্বু-আম্মু ছিলো না তবুও এতো ভালোবাসলাম, আদর যত্ন করে মানুষ করলাম, দুই-বোনের সব পড়াশোনার খরচ চালালাম আর সেই মেয়েরা এখন আমাদের দেখেনা। মীরা তো যেদিন থেকে এ বাসা থেকে গেছে সেদিন থেকে একটা ফোন ও করে না আর ইসমিও কড়া কড়া কথা বলে। (শাড়ির আঁচল দিয়ে মুখ ঢেকে ন্যাকা কান্না করছে)
আমান– হম ঠিক বলেছেন, চলুন আমার সাথে। (দাঁতে দাঁত চেপে, হাত মুঠ করে)
ফুপি– কোথায় যাবো??
আমান– নীতার কাছে। নীতা বললো আপনার সাথে দেখা করতে ওর খুব ইচ্ছা করছে তাই আপনাকে নিতে এসেছি আমি।
ফুপি– ওহ চলো, চলো।
আমান ফুপি কে নিয়ে একটা গোপন বাসায় চলে এলো।
#ফ্লাশব্যাক_এন্ড 🌸🌸
ফুপি– কি হলো আমাকে আমার মেয়ের কাছে নিয়ে চলো প্লিজ।
আমান– কিন্তু আপনার মেয়ের কাছে গেলে যে আপনার ভালো লাগবে না।
ফুপি– মানে??
__আমি বলছি, স্যরি দেখাচ্ছি।
ফুপি– একি অর্নিল তুমি এখানে??
অর্নিল– আসলে আমারও আপনার সাথে কিছু হিসেব বাকি আছে। তাই আর কি দেখা করতে এলাম যতই হোক ফুপি শাশুড়ি বলে কথা, আদর যত্ন না করলে হয়??
ফুপি– এ..এই আমাকে ব..বাঁধছো কেনো??
আমান– ক্রমশ প্রকাশ্য।
অর্নিল একটা ভিডিও প্লে করে দিলো, যেখানে নীতা কে অ্যারেস্ট করার ক্লিপ টা চলছে, তারপর যেই ভিডিও টা আছে সেটা দেখে ফুপি চিৎকার করে উঠলো।
ফুপি– তুমি কি পাষাণণণণ?? আমার মেয়েটার উপর এরকম মানবিক অত্যাচার কি করে করতে পারলে তুমিইইইই?? (চিৎকার করে)
আমান– আস্তে ফুপি আস্তে। এতো হাইপার হওয়া আপনার শরীরের পক্ষে ক্ষতিকর।
অর্নিল– এখনই যদি শরীর খারাপ হয়ে যায় তাহলে নিজের মেয়ের মতোন কষ্ট উপভোগ করবেন কীভাবে??
আমান– এই দেখুন, আমি আপনার মেয়েকে বুঝিয়ে ছিলাম, মীরা আমার কলিজা, ওর দিকে হাত বাড়ানোর কথাটা জানো দুঃস্বপ্নেও না ভাবে, কিন্তু ও কি করলো?? নাটক করতে গিয়ে আমার মীরার হাতে কফি ফেলে দিলো। তাই আমি দ্বিগুণ ভাবে সেটা ফেরত দিয়েছি। যদিও তেমন কিছু করিনি।
ফুপি– (মনে মনে– কফি ঢেলে দেওয়ায় নীতার হাতে ফুটন্ত পানি ঢেলেছে, হাত কেটে তার উপর লেবু দিয়ে গরম কফি ঢেলেছে, এটা নাকি তেমন কিছু না। (ঢোঁক গিলে) তাহলে আমার সাথে কি করবে?? আমি তো কম কিছু করিনি মীরার সাথে। এদিকে আবার অর্নিল…তাহলে কি ও ইসমির জন্য..??)
অর্নিল– এখনই এতো ভয় পাচ্ছেন ফুপি?? আগে কাজ গুলো করতে দিন তারপর না হয়…
ফুপি– আমাকে ছেড়ে দাও প্লিজ। তোমরা এরম কেনো করছো?? প্লিজ ছেড়ে দাও আমায়। (কান্না করে)
আমান অর্নিলের দিকে তাকিয়ে বাঁকা হাসলো, অর্নিল ও হাসলো আমানের দিকে তাকিয়ে তারপর ফুপি কে বললো।
অর্নিল– কার কাছে প্রাণ ভিক্ষা করছেন ফুপি?? ছেড়ে দিন নিজের প্রাণের আশা। আমি ক্ষমা করে দিলেও ভাই কোনদিন ক্ষমা করবে না। আমান খানের কলিজায় হাত দিয়েছেন আপনি, নীতা তো তাও সুযোগ পেয়েছিল আপনি তাও পাবেন না স্যরি টু সে।
অর্নিলের কথা শেষ হতে না হতেই ফুপি গগন কাঁপানো আর্তনাদ করে উঠলো। অর্নিল চোখ বন্ধ করে হাত মুঠ করে নিলো।
ফুপি– আআআআআআ!!
আমান– আস্তে, ফুপি আস্তে। কানে লাগছে তো।(আরো জোরে চাপ দিয়ে)
আমান গরম খুন্তি ফুপির হাতে চেপে ধরে চিৎকার করে বললো।
আমান– মনে আছে যখন আপনি ঠিক এভাবে গরম খুন্তির ছ্যাঁকা দিতেন মীরা কে, সামান্য রান্নায় ভুল করলে?? তখন ও ঠিক এইভাবে চিৎকার করে আপনার কাছে ক্ষমা চাইত।
ফুপি– আআআআ, আ..আ..আমাকে ছ..ছে..ছেড়ে দ..দা..দাও।
আমান খুন্তি টা সরিয়ে নিলো। আর ফুপির হাতের বাঁধন খুলে দিলো, এতে ফুপি একটু স্বস্তির নিশ্বাস ফেলতেই আবার ফুপির চোখ বড়ো বড়ো হয়ে গেলো, কারণ আমান পা দিয়ে একটা স্টোভ এগিয়ে নিয়ে এলো যার উপর কড়াই বসানো আর কড়াইতে গরম তেল ফুটছে।
ফুপি– না না না না না না এমন করো না। প্লিজ আমার ভুল হয়ে গেছে।
আমান কোনো কথা না শুনে ফুপির কব্জিটা ধরে গরম তেলের মধ্যে চুবিয়ে দিলো। আর বললো।
আমান– সামান্য ভার্সিটি যাওয়ার অনুরোধ করেছিল আমার মীরা। তাতে আপনি কি বলেছিলেন?? বলুনননন!!
ফুপি– আআআআ!! র..রা..রান্না ন..ন..না ক..করার ব..বা..বাহানা দ..দি..দিয়ে ভ..ভা..ভার্সিটি য..যে..যেতে চ..চা..চাইছিস।
আমান– তারপর ঠিক এভাবেই আমার মীরার হাতটা পুড়িয়ে দিয়েছিলেন তাই না??
ফুপি কিছু বলার মতো আর অবস্থায় রইলো না অজ্ঞান হয়ে গেলো। আর আমান ও হাতটা ছেড়ে দিলো তারপর হাতের মধ্যে ঠান্ডা পানি ঢালতে নিলেই অর্নিল বাঁধা দেয়।
আমান– বাঁচিয়ে রাখতে হবে, এতো তারাতাড়ি মরে গেলে, বদলা নেবো কি করে??
অর্নিল– কখন বললাম মেরে ফেলবো??
আমান– কি করতে চাইছিস??
অর্নিল– তোর কলিজার গায়ে হাত তুলেছিল তার প্রতিশোধ তো তুই নিয়ে নিলি, এবার আমার কলিজার গায়ে যে হাত তুলেছে সেটার প্রতিশোধ নেবো না??
আমান– ইসমিকেও??
অর্নিল– হমম!!
আমান আর কিছু না বলে অর্নিলের হাতে বোতল টা দিয়ে কাঁধে হাত চাপড়ে একবার ফুপির দিকে তাকিয়ে বেরিয়ে গেলো। এদিকে অর্নিল বোতল টা রেখে একটা ছুরি হাতে নিয়ে ওটার ধার পর্যবেক্ষণ করতে নিলেই ওর আঙুল টা কেটে যায়, ও আঙুল টা মুখে পুড়ে নিয়ে বাঁকা হাসে ফুপির দিকে তাকিয়ে।
বেশ কিছুক্ষণ পর,
ফুপি– (মনে মনে– আহ! হাত টা এতো, এতো জ্বলছে কেনো?? উফফ আর পারছি না ভীষণ জ্বালা করছে।)
ফুপি আস্তে আস্তে চোখ খুলতেই দেখলো পোড়া হাত টা ওরকমই রয়েছে, কিন্তু যেখানে খুন্তি দিয়ে পোড়ানো হয়েছে সেখানে ব্যান্ডেজ করা আর জায়গা টা জ্বালা পোড়া করছে, ফুপি সামনে তাকাতেই দেখলো অর্নিল পায়ের উপর পা তুলে বসে আছে আর ছুরির ধার পর্যবেক্ষণ করছে। ফুপি কাঁপা কাঁপা গলায় বললো।
ফুপি– আমার হাতটা ভীষণ জ্বলছে অর্নিল, আমাকে একটু পানি দাও, প্লিজ আমি আর পারছি না। আর ব্যান্ডেজের জায়গা টা জ্বলছে কেনো??
অর্নিল– ওমা সে কি?? ব্যান্ডেজের জায়গা টা কেনো জ্বলছে আপনি জানেন না?? আপনার টেকনিক তো আমি আপনার উপর ইউস করলাম।
ফুপি– ম..মা..মানে??
অর্নিল– বুঝতে পারেননি?? ঠিক আছে আমি বুঝিয়ে দিচ্ছি।
অর্নিল ফুপির দিকে ঝুঁকে বললো।
অর্নিল– মনে আছে ইসমির হাত কেটে গেছিলো?? তাই জন্য বলেছিল ও সেদিন কোনো সব্জি কেটে দিতে পারবে না। আপনি কি করেছিলেন?? ব্যান্ডেজ করে দেওয়ার নাম করে কাটা জায়গায় লবণ দিয়ে নুন দিয়ে ব্যান্ডেজ করে দিয়েছিলেন। আমিও সেটাই করেছি জাস্ট একটা জিনিস এক্সট্রা এড করেছি। মরিচ গুড়ো।
ফুপির চোখ ইতিমধ্যে লাল হয়ে গেছে, শরীর থেকে দরদর করে ঘাম ঝরছে, চোখ দিয়ে পানি পরছে, কিন্তু কাকে অমানবিক বলবে?? কাকে পাষাণ বলবে?? নিজেকে নাকি আমান আর অর্নিল কে?? আজ বুঝতে পারছে কতো টা কষ্ট পেতো মীরা আর ইসমি। আর উনি সেগুলো দেখে পৈশাচিক হাসি হাসতেন। কোনো ক্ষতি তো করেনি মেয়ে দুটো ওনাদের। তারপরেও দিনের পর দিন এই সমাজে একটু আশ্রয়ের জন্য এতো অত্যাচার সহ্য করেও পরে থাকতো। অনেক ব্যাথায় কাতরিয়ে ছিলো সেদিন মীরা যেদিন গরম খুন্তি হাতে চেপে ধরেছিল। তারপরেও মীরা কে রান্না করতে হয়েছিল। গরম তেলে হাত চুবিয়ে দেওয়ার পরেও মেয়েটাকে নিজে হাতে খেতে হয়েছিল, ইসমি না আসায়।
হাত কেটে যাওয়ার পরে ওমন ব্যান্ডেজ করে ইসমি কে সব্জি কুটতে হয়েছিল, পানি পর্যন্ত দেয়নি কাজ না শেষ হওয়া পর্যন্ত। সব কাজ করার পরে সামান্য রুটি খেতে দিয়েছিল, কে কি বলবে?? মীরা তো নেই। তাই অত্যাচার দিন দিন বাড়ছিল।
এসব চিন্তা থেকে বেরিয়ে এলো ফুপি ঠিক তখন যখন অর্নিল ফুপির সামনে ঠান্ডা বোতলের পানি গুলো ফেলছিলো কিন্তু ফুপি কে দিচ্ছিল না। ফুপি শুধু কাঁদছিল কারণ তিনিও পানির জন্য এভাবে কাতরাতে দেখেছিল ইসমি কে।
অর্নিল উঠে চলে গেলো আর চিৎকার করে একজন কে বলে গেলো।
অর্নিল– শুকনো রুটি মরিচ দিয়ে খেতে দেবে আর এক গ্লাস পানি দেবে শুধুমাত্র।
ফুপি চিৎকার করে কেঁদে উঠলেন, এছাড়া আর কিছু করার নেই আজ ওনার। উনি এসবেরই যোগ্য।
আমান কে বাইরে গাড়ির সাথে হেলান দিয়ে দাঁড়িয়ে থাকতে দেক্গে অর্নিল আমানের কাছে এগিয়ে গেলো আর জিজ্ঞেস করলো।
অর্নিল– এখনো যাসনি ভাই?? এতক্ষণ ধরে দাঁড়িয়ে আছিস??
আমান– চিৎকার টা শুনে কেনো জানো এক্তা শান্তি পাচ্ছিলাম। ইউ নৌ মীরা যখন ঐ হাত নিয়ে আমার অফিসে এসেছিল, আমি জানতাম পর্যন্ত না। খুন্তির ছ্যাঁকা টা দেখতে পেয়েছিলাম কিন্তু হাত টা যখন পুরোপুরি পুড়ে গেছিলো তখন তো অফিসেই আসেনি। খুন্তির ছ্যাঁকা দেখে ভেবেছিলাম হয়তো সত্যি রান্না করতে গিয়ে পুরে গেছে কিন্তু যখন…
আমানের কথা জড়িয়ে যাচ্ছে দেখে অর্নিল আমানের কাঁধে হাত দিয়ে জিজ্ঞেস করলো।
অর্নিল– ভাবি এসেছিল অফিস??
আমান– জোর করে, ভয় দেখিয়ে নিয়ে এসেছিলাম। ওর হাতটা দেখার পর না আমার মাথার ঠিক ছিলো না। ইচ্ছে করছিলো, ইচ্ছে করছিলো…
অর্নিল– নিজের হাত পুড়িয়ে ফেলতে তাই তো?? আর তুই সেটা করেও ছিলিস ভাই। ঠিক আজ যেমন কফি ঢেলেছিস।
আমান একটা দীর্ঘশ্বাস ছেড়ে বললো।
আমান– তুইও কিছু কম যাস না। জানলি কি করে ইসমির সাথে এরম ব্যবহার করেছে??
অর্নিল– ভার্সিটি তে তো সব সময় এই গত এক মাস ওর পিছনে ঘুরতাম, একদিন হাত ধরাতেই চিৎকার করে ওঠে, জোর করে ব্যান্ডেজ টা খুলতেই দেখতে পাই…
আমান– দগদগে কাঁটা জায়গায় লবণ ছড়ানো??
অর্নিল– তুই কি করে জানলি??
আমান– কিছুক্ষণ আগে। ভুলে যাস না সিসি টিভি ক্যামেরা লাগানো রুমটাতে।
অর্নিল– ভাই নিজের ফুপি কি করে এতটা অমানবিক হতে পারে?? আই মিন হাউ??
আমান– কে বললো নিজের??
অর্নিল– মানে?? (সন্দেহর চোখে তাকালো)
আমান– হমম (হ্যাঁ বোধক মাথা নাড়ালো)
অর্নিল– (একটা দীর্ঘশ্বাস ফেলে) ভাই তোর হাত তো পুড়ে গেছে?? (আমানের হাতের দিকে দেখিয়ে)
আমান– ওহ ঠিক আছে। তখন আমারও সামান্য লেগেছিল খেয়াল করিনি। নীল!! (অর্নিলের হাত হাতে নিয়ে) হাত কাটলো কী ভাবে?? একটা কাজ তোর দ্বারা হয় না?? 😡
অর্নিল– যত দোষ আমার বেলা তাই না?? 😡 নিজে যে হাত পুড়িয়েছিস সে বেলা কিছু না?? 😒
আমান– আমার সাথে তোর একদম তুলনা করবি না, তুই ভালো মতো জানিস আমি…
অর্নিল– হাহ! জানি জানি 😏। দ্য গ্রেট আমান খান হাত পুড়িয়ে বসে আছে। 😝 ভাই তোর দ্বারা রোম্যান্স ছাড়া কিছু হবে না তুই মুরি খা 🤕😵😬
আমান– আমার দ্বারা কিছু হবে না তাই না?? (শার্ট ফোল্ড করতে করতে)
অর্নিল– হিহি হ্যাঁ 😁
আমান– আমি মুরি খাবো তাই না?? (এগোতে এগোতে)
অর্নিল– ইয়ে হ্যাঁ মানে না 😅 (দৌঁড়)
আমান– চল তোকে মুরি ভাজা শেখাই তারপর একসাথে মুরি খাবো। (অর্নিলের পিছনে দৌঁড়াতে লাগলো।)
অর্নিল আর আমান গাড়ি কে কেন্দ্র করে গোল গোল ঘুরছে। অনেক্ষন পর দুজন গাড়ির সামনে দাঁড়িয়ে হাঁপাতে লাগলো তারপর একে অপরের দিকে তাকিয়ে হেসে দিলো।
আমান– বাসায় চল, তোর জন্য সারপ্রাইজ আছে।
অর্নিল– কি সারপ্রাইজ??
আমান– চল গেলেই জানতে পারবি।
আমান আর অর্নিল বাসায় চলে এলো, বাসায় ঢুকে কাওকে দেখতে না পেয়ে আমান নিজের রুমে আর অর্নিল ইসমির রুমে চলে গেলো।
অর্নিল ইসমির রুমে এসে দেখলো ইসমি চুপচাপ দাঁড়িয়ে আছে ব্যালকনি তে, অর্নিল কোনো কিছু না ভেবে পিছন থেকে গিয়ে জড়িয়ে ধরলো ইসমি কে। এদিকে ইসমি মন ভালো না থাকায় ব্যালকনি তে দাঁড়িয়ে ছিলো তখনই অর্নিলের স্পর্শ পেতেই মাথায় রক্ত উঠে গেলো। অর্নিলের দিকে ফিরে সর্বস্ব শক্তি দিয়ে ধাক্কা মারলো অর্নিল কে যার কারণে অর্নিল টাল সামলাতে না পেরে ব্যালকনির দরজায় বারি খেলো, হাতটা আগে থেকেই কাঁটা ছিলো আর সেই জায়গায় আবার খোঁচা খেলো। দরজার কিনারে একটা ধারালো অংশ বেরিয়ে ছিলো সেটাতেই অর্নিল খোঁচা খেয়েছে।
ইসমি– হাউ ডেয়ার ইউ?? একটা কথা পরিস্কার করে বললে তোমার কানে যায় না?? কালকে রাতেই তো বললাম আমার কাছে আসার চেষ্টাও করবে না তারপরেও বেহায়ার মতো চলে এসেছো?? সাচ আ ক্যারেক্টার লেস পারসন ইউ আর। (চিৎকার করে বললো)
অর্নিলের হাত থেকে টপ টপ করে রক্ত পরছে আর চোখ থেকে পানি। ইসমির সকাল থেকেই ফুপির করা অত্যাচার গুলো ভেবে মাথা গরম আর মন খারাপ। তার মধ্যে অর্নিলের কাছে আসা। ইসমি নিজেকে স্বাভাবিক করে অর্নিলের দিকে ফিরতেই ও আতকে উঠলো।