আমার ক্রাশ বর !! Part- 33
রিমা অনুকে প্রথমে ওর বাবার বাড়ি নিয়ে যায়। সেখানে গিয়ে সুন্দর একটা শাড়ি পড়িয়ে হালকা মেকআপ করিয়ে বলে,”চল দোস্ত সেলফি তুলি। ”
দুজনে অনেক ছবি তোলার পরে উদ্দেশ্য আরিয়ান দের বাড়ি কিন্তু হঠাৎ
তারপর অনু বলে,”আমি চেঞ্জ করে আসি তুই থাম। ”
রিমা :রাখ তোর ড্রেস চেঞ্জ,চেঞ্জ করতে হবে না।এভাবে গেলে সমস্যা কি তোর।
অনু :এতো সাজুগুজু হঠাৎ কেমন লাগবে বলতো।
রিমা কিছু হবে না।তারপর দুজন আরিয়ান দের বাড়ির উদ্দেশ্যে রওনা দেই।
কিছু সময় পর তারা চৌধুরী ভিলার দরজার সামনে এসে দেখে দরজা বন্ধ।
অনু :এ অসময় বাড়ি এতো নিরব কেনো?
রিমা :হয়তো বাড়িতে কেউ নেই চল ভেতরে যাওয়া যাক।
অনু দরজায় হালকা ধাক্কা দিতে দরজা খুলে যায়।
অনু দরজা দিয়ে ভেতরে ঢুকতে পুরো বাড়ির লাইট জ্বলে ওঠে।অার অনুর মাথার উপর ফুলের বৃষ্টি হতে থাকে।
সেখানে আরিয়ান এসে অনুর সামনে হাটু গেড়ে বসে আংটি পড়িয়ে দেয়।
সব কিছু তো অনুর মাথার উপর দিয়ে যাচ্ছে। পুরাবাড়ি এতো সুন্দর করে সাজানো এভাবে ফুলের বৃষ্টি আংটি পড়িয়ে দেওয়া মানে বুঝতে পারছে না।
তখন বাড়ির সবাই এক সাথে বলে ওঠে,”Happy marriage anniversary both of you! ”
অনু তো নিজের জিব্বাতে কামড় খাই।
মনে মনে বলে,”হায় আল্লাহ নিজের বিবাহ বার্ষিকীর কথাটা ভুলে গেছি।”
আরিয়ান বলে,”আরে জানেমন এমন অবস্থায় তোমার সব মনে থাকবে এমন তো না।তাই মন খারাপ করবে না। চলো সবাই মিলে আনন্দ করবো।”
সবাই মিলে কতো আনন্দ করছে অনুকে ঘিড়ে।
অনুকে একটা সাজানো টেবিলের সামনে নিয়ে যায়।
ফুল দিয়ে ডেকোরেশন করা টেবিলের মাঝে একটা বড় চকলেট কেক রাখা অনুর পছন্দের।
অনু তো সেই খুশি কখন যে চকলেট কেকটা কাটবে সেই সময়ের অপেক্ষা আর করতে পারে না।
আরিয়ান অনুকে হাত ধরে নিয়ে পাশের সোফাসেটে বসে।
তারপর আবির রিমা অায়াত মৌ চারজন গ্রুপ ডান্স করে।
অনু খুব ইনজয় করে কিন্তু মনটা কেকের উপড়ে পড়ে থাকে।
সবাই অনুর বেপার টা বুঝতে পারে।
সবাই কথা বলে অনুকে বিরক্তি করতে চায়।
কিন্তু অনু টেবিলের দিকে তাকিয়ে থাকে এক মনে।
তারপর আয়াত সবাই কে উদ্দেশ্য বলে,”এখন কেক কাটা হবে তার পর ভাবীর জন্য গিফট আছে যা ভাইয়ার স্পেশাল গিফট ।”
তারপর সবাই একসাথে কেক কাটতে টেবিলের পাশে জড়ো হয়।
আরিয়ান অনু কেক কাটবে ঠিক সে সময় পেছন থেকে কেউ বলে ওঠে,”Happy marriage anniversary! ”
সবাই পেছনে তাকিয়ে দেখে রাজ আর ফুপি দাড়িয়ে আছে।
রাজ কে দেখে রিমা আবিরের হাত শক্ত করে জড়িয়ে ধরে।
রাজ সবার সামনে এগিয়ে আসে।
সোজা রিমার সামনে এসে কান ধরে হাটু গেড়ে বসে বলে,
“সরি আমি ভুল কাজ করেছি,জানি অনেক অন্যায় করেছি।(গল্পের আসল লেখিকা Angel frozen nishi)আমার ভুলের কোনো ক্ষমা নাই। তার পর ও রিমা আপু প্লিজ আমাকে মাফ করে দিবেন। আমি ছোট থেকে বিদেশি সংস্কৃতি দেখে বড় হয়েছি তাই দেশের মেয়েদের সম্মান করা শেখাটা হয়ে ওঠেনি।
আপনি যদি আজ আমাকে মাফ না করে।
তাহলে আমি নিজের অপরাধ বোধ থেকে বাহির হয়ে নতুন ভাবে জীবন শুরু করতে পাবরো। ”
রিমা আবিরের মুখের দিকে তাকিয়ে আছে।
আবির বলে,”অন্যায় তোমার সাথে করেছে।
তাই শাস্তি দিবে কি ক্ষমা করে নতুন ভাবে শুরু করার পথ দেখাবে তোমার ইচ্ছা। ”
রিমা কিছু সময় ভেবে বলে,”যদি কেউ নিজের ভুল বুঝতে পারে তাহলে অবশ্যই তাকে ক্ষমা করা উচিৎ। আপনি যখন নিজের ভুল বুঝে মাফ চাইছেন তখন আজকের মতো আপনাকে মাফ করে দিলাম।”
রাজ সেখান থেকে উঠে অনুর সামনে এসে কান ধরে হাটু গেড় বসে বলে,”ভাবী আপনি ভাইয়ের বউ তারপর ও সম্মান করি নাই।সব সময় অসম্মান করে কথা বলছি প্লিজ আমাকে মাফ করে দিবেন।আমিও আয়াতের মতো আপনার বেবির ভালো চাচ্চু হয়ে থাকতে চাই।
প্লিজ সেই অধিকার টুকু আমাকে দিবেন। ”
অনু: কি বলবে বুঝতেছে না।
তখন ফুপি বলে,”জানি বউমা আমি আর আমার ছেলে তোমার সাথে খুব খারাপ ব্যবহার করছি।ছেলের অন্যায় দেখেও তাকে কখনো শাসন করি নাই।তেমার সাথে আমি কখনো ভাল ব্যবহার করি নাই। প্লিজ বউমা আমাদের মাফ করে দাও।আমরা নতুন অতিথি কে নিয়ে সব কিছু নতুন করে শুরু করবো।
এভাবে আমাদের দূরে রাখবে না বউমা।”
অনু তার ফুপু শাশুড়ি কে জড়িয়ে ধরে বলে,
“কাছের মানুষ ভুল করতেই পারে,যদি ভুল শিকার করে মাফ চেয়ে ফিরে আসে তাকে কি দূরে সরিয়ে রাখা যায়? ”
ফুপি বলে,”আজ বলছি আরিয়ান তুই সেদিন যে সিদ্ধান্ত নিয়েছিস তাই সঠিক। না হলে কি অনুর মতো মেয়েকে বউমা হিসাবে আমরা পেতাম।”
আরিয়ান :ধন্যবাদ ফুপি অনুকে মেনে নেওয়ার জন্য।
অনু :উফফ কতো সময় এভাবে দাড়িয়ে থাকবো,
আমি কেক খাবো।
সবাই অনুর কথা শুনে হো হো করে হেসে দেয়।
আয়াত বলে,”ভাবী তুমি যদি খাবার দেখে এমন করো তাহলে পিচ্চি গুলা কি করবে ভাবা যায়। ”
অনু :পিচ্চি একটা তাই গুলা না।পিচ্চিটা কি করবে আম্মুর মতো পেটুক হবে।
এরপর সবাই দুজন মিলে কেক কাটে।
অনু আরিয়ান কে না খাওয়ায় দিয়ে আগে নিজে মনের মতো করে খেয়ে পেট ভরে।
সবাই অবাক হয়ে তাকিয়ে থাকে অনু কি করে তা বোঝার জন্য চেষ্টা করছে।
সবার এভাবে তাকিয়ে থাকা দেখে অনু বলে,”কি বলবো বলো,পিচ্চি অনেক সময় নাড়াচাড়া করছে খাবে তাই।তোমার আগে ওদের খবার দিয়েছি এখন তুমি খাও। “তাই বলে, “আরিয়ান কে কেক খাওয়া দেয়।
খাওয়া দাওয়া শেষে।
সবাই অনুকে গিফট দিচ্ছে।
আবির রিমা দুইটা সুন্দর টেডিবিয়ার গিফট দেয়।
আয়াত মৌ বাচ্চা দের দুইট ছোট খাট উপহার দেয়।
অনু বলে,”তোমাদের মাথা খারাপ যে সব ডবল ডবল দিচ্ছো।”
আরিয়ান দুইটা টেডিবিয়ারের মাঝে বসে বলে,”জানো অনু আমাদের দুইটা বেবি হবে।এটাই তোমার সারপ্রাইজ। ”
অনু উঠে চিৎকার দিয়ে বলে,”ঐ খচ্চর বর আগে বলবা না,আমার দুই টা বেবি হবে ভাবা যাই।আল্লাহ গো আমি যমজ পিচ্চির মা হবো।”
দৌড়ে গিয়ে আরিয়ান কে জড়িয়ে ধরে বলে, “দেখে এই পিচ্চি পেটে না কি দুই জন আছে আমার ভাবতেই সারা পৃথিবীর সুখী মানুষ মনে হচ্ছে।এক সাথে দুজন মা বলে ডাকবে সারাবাড়ি
দুই জনের কলরবে মুখরিত হবে।”
আরিয়ান :হুম জানি তো,এই জন্য এর থেকে বেস্ট গিফট কিছু হতে পারে না তোমার জন্য।
তারপর সবাই অনু আরিয়ান অনেক উপহার দেয়।
এদিকে ফুপি বলে,,”অনু মা তোমার কিন্তু এখন থেকে বেশি সাবধানে চলাফেরা করতে হবে।”
অনুর শাশুড়ি :তুমি আর মোটেই দৌড়াদৌড়ি করতে যাবে না।তোমার যা দরকার আমাদের বলবে তবুও তোমার কিছু করার দরকার নাই।
রাজ বলে,”ভাবী বিরক্ত হলে আমাকে বলবে আমি তোমাকে আমার ফ্লাটিং ইতিহাস শোনাবো।”
আয়াত :আমি তোমাকে ডাক্তারি করা শেখাবো।।রাজের ফ্লাটিং শোনার দরকার নাই,,
যদি ছেলে বাবু হয় আর রাজের মতো গুণ পায় তাহলে আমাদের জীবন শেষ।
রাজ :তোর মতো নিরামিষ হলে তো জীবনে বিয়ে টাও দিতে পারবো না।কোনো মেয়ের সাথে Hi/Hlw করতে জানে না।
আরিয়ান :থাক আমার ছেলে মেয়ে আমাদের মতো হবে তোদের ঝগড়াফসাদ করতে হবে না।
তারপর সব মেহমান চলে যাই।
রিমা আবির যাবার সময় বলে,”কিছু দিন পর তো আবার দেখা হবে অনুর সাত মাসের সাধের অনুষ্ঠানে।”
তারপর অনু আরিয়ান নিজেদের রুমে চলে যাই।
দুজন ফ্রেশ হয়ে বারান্দার চেয়ারে বসে গল্প করে।
দেখেছ আমাদের বিয়ের আজ এক বছর হয়ে গেছে।
অনু বলে,”একবছর আগেও আমি আর তুমি দু জন কতো অচেনা মানুষ ছিলাম।আর আজ একজন অন্যজন কে ছাড়া কিছু ভাবতেও পারি না।”
আরিয়ান বলে,”উফ তুমি যে কি ডেঞ্জারাস তা প্রথম দিন বুঝতে পারছি,আচ্ছা সেদিন কোন দিক দিয়ে তোমার আমাকে ড্রাইভার মনে হয়েছিল বলবে।”
অনু :আসলে ড্রাইভিং সিটে যে বসে সেই ড্রাইভার হয় সেই হিসাবে বলছিলাম তাতে কি হয়েছে? ”
আরিয়ান :কিছু হয়নি,এখন থেকে একটু চুপচাপ থাকবে না হলে বেবিরাও এমন তোমার মতো নাছোড়বান্দা হবে।
অনু বলে,”এই শোনো বেবিদের নাম রাখতে হবে তো।”
আরিয়ান :তারা যখন আসবে তখন তাদের নাম রাখা যাবে।
অনু :না আমি আজকেই ওদের নাম রাখবো।
আরিয়ান :দুইটা মেয়ে কি দুইটা ছেলে তাই তো জানি না।তাদের আবার কি নাম রাখবো বলো।
অনু :একটা ছেলে আর একটা মেয়ে হবে।
তাই একটা মেয়ে আর একটা ছেলের নাম বলো।
আরিয়ান :তুমি কি ভাবে শিউর??
অনু :কারণ ওরা সারাদিন আবির ভাই আর আমার মতো মারামারি করে তাই।
আরিয়ান :দেখেছ এখুনি কি ডেঞ্জারাস। তাহলে আসলে কি করবে।
অন :এতো কথা জানি না।আমার এখন নাম লাগবে বলো।
আরিয়ান :আচ্ছা অনেক রাত হয়েছে তুমি ঘুমিয়ে পড়ো। কাল সকালে তোমাকে নাম বলবো।
অনু :সত্যি বলবে তো
আরিয়ান :তোমাকে মিথ্যে বলার সুযোগ আছে না কি যে বলবো।
তারপর অনু আরিয়ান রুমে এসে ঘুমিয়ে পড়ে।
আরিয়ান ভাবে কি বিপদ রে বাবা রাতে ঘুমালে সকালে নাম বলবো কি করে।
‘
‘
‘
চলবে…..