বধুবরন

বধুবরন-সিজন-2 ! Part- 11

শুভা নাকমুখ কুচকে বিদঘুটে ভঙ্গি করে জ্যাককে কোলে নিয়ে বসে আছে ২ ঘন্টা যাবত।মেজাজ চায়ের গরম টগবগে পানির মতো টগবগ করছে।ইচ্ছা করছে এই জ্যাকটাকে ধাপ ধাপ ফ্লোরে আছড়ে আছড়ে মারতে।শুভা সোফা খামচে বসে আছে।হঠাৎ উষ্ণতা অনুভব করলো কোলজুড়ে।শুভা নাক মুখ চূড়ান্ত লেভেলের বিদঘুটে করে চিৎকার দিয়ে উঠলো।নীল সামনে বসে দাত কটমট করছে স্কেল হাতে।
“- হাড্ডি ঘুরা করে দিব। চুপ কর!
নীলকে বিরক্ত হতে দেখে শুভা আরও জোরো চিৎকার শুরু করলো।দুএকজন কাজের লোক ছুটে আসলে নীল ইশারায় তাদের কাজে ফিরে যেতে বলে।
“-শেষ বারের মতো বলছি চুপ কর।
“- আমার গায়ে আপনার কুত্তায় পেশাব করে দিছে আমি কি চুপ করে বসে ঘ্রাণ শুকবো?
“- শুকো সমস্যা কোথায়?
“- আপনি শুকেন! এই বজ্জাতের হাড় হাড্ডি নাম কোল থেকে নাম বলছি।না হলে গলা টিপে মেরে দিব।জ্যাক শুভার ঝাঁঝালো গলার আওয়াজ শুনে তাড়াতাড়ি নেমে মালিকের পা ঘেষে দাঁড়ায়
“-এ হ্যাআআ! বড় মা! আমি বদ টার সাথে সংসার করবো না।আপনারে আমি ডিভোর্স দিমু দেইখেন।
“- কি দিবা? নীল রেগে এগোতে এগোতে বলে।
“- ভয় পাই নাকি আপনারে।ডিভোর্স দিমু।ইংলিশে এতো ফটর ফটর করেন আর ডিভোর্স মানেএএএ
নীল শুভাকে বাকিটা বলার সাহস দিলো না।ঠোঁট কামড়ে ধরলো।শুভা নীলের বুকে এলোপাথাড়ি কিল ঘুষি দিয়েও থামাতে পারলো না।নীল এবার আরও গভীর ভাবে আকড়ে ধরলো।কোলে উঠিয়ে উপরে নিয়ে ওয়াশরুমে ঢুকে পড়লো।
“- ফালতু লোক।সরেন
নীল শুভার হাত ওয়াশরুমের দেয়ালে চেপে ধরে অন্য হাত দিয়ে শাওয়ার ছেড়ে দেয়।
“- ১৮ পূর্ণ হলো বেগম।এবার তো প্রতি মুহুর্তে বুঝবেন নীল কি জিনিস।লেটস স্টার্ট।পুরো দু’ঘন্টা ধরে বাথরুমে আটকে স্পেশাল গোসল করিয়েছে শুভাকে।বেচারির চোখ মুখ লাল হয়ে গেছে।চাদরে নিচে উুউু করে কাঁপছে। নগ্ন গায়ে তোয়ালে পেচিয়ে ভেজা চুল নাড়তে নাড়তে নীল ওয়াশরুম থেকে রুমে ঢুকলো।ঠোঁটে চিরচেনা দুষ্টু হাসি।শুভা লজ্জায় তাকাতেও পারছে না সেদিক।নীল শরীরে প্যান্ট টিশার্ট জড়িয়ে শুভার পাশে বসলো।শুভাকে টেনে সামনে বসিয়ে শুভার ভেজা চুলগুলো তোয়ালেতে মুছতে লাগলো।
“-এখন থেকে এমন ভালোবাসা রোজই আনলিমিটেড পাবা ইদুরনী!শুভার চুলগুলো তোয়ালেতে জড়িয়ে টেনে কানে কানে বলে।
“-দুনিয়াতে যদি কোনো লুচু এওয়ার্ড থাকতো আমি সিওর ওটা আপনিই পেতেন।হু।শুভা নাকে কান্না করে বলে।
“- হুমম! স্টেজে উঠে লুচু হওয়ার সব ক্রেডিট তোমাকেই দিতাম। কথাটা বলেই শুভার গালে আলতো করে কামড় দেয়।
“- উহুউ! আপনি জলাতঙ্কের ভ্যাকসিন নেন না কেন? আপনারে জ্যাকের ভুতে পাইছে।খালি কথায় কথায় কামড় দেন।
“- আমার তো মন চাই কামড়ে খেয়ে ফেলি তোমারে।আওও( কামড় দেওয়ার ভঙ্গি করে)
“- রাক্ষস একটা।
“- আচ্ছা শোনো সিরিয়াস কথা বলি।আজ ও বাড়ি যাচ্ছি আমরা।
ও বাড়ি যাওয়ার কথা শুনে শুভার মনটা খারাপ হয়ে গেল।এই প্রথমবার যাবে।বুকটা দুরুদুরু শুরু হলো শুভার।নীল বুঝতে পেরে শুভাকে শক্ত করে জড়িয়ে ঘাড়ে কিছুক্ষণ ঠোঁটে চেপে
বললো,
“- ভয় কিসের আমি আছি না? আমি থাকতে নো টেনশন ওকে!
“- হুমম।
“- হুমম! হুমম করলে কিন্তু সত্যি সত্যি আরেকটা কামড় দেব।দেব দেব,
“- এই না! না!অনেক খারাপ আপনি অনেক খারাপ
“- থ্যাংকু এখন নিচে চলো।(নাক কুচকে শুভার চুলগুলো পিঠে ছড়িয়ে দিয়ে)
“- কেন?
“- জ্যাককে আবার কোলে নিয়ে বসে থাকবে।
“- কি! না( আতঙ্কিত চোখে)
“- হ্যাঁ!
“- না!
“- এমন করেন কেন? যা বলেন তাই তো শুনি।
“- কবে শুনছ?
“- দেখেন মজা নিয়েন না কিন্তু! ভাল্লাগে না
“- তাহলে চলো মজা লাগার মতো কিছু করি? লেটস স্টার্ট
“- ইশশ! আইছে কোথথেকে।ভাগেন।লেটস স্টার্ট লেটস স্টার্ট বলে বলে আমার বারোটা বাজায় দেয়।শুভা দৌড়ে ঘর ছেড়ে বেরিয়ে যায়।
“- আসলেই এইটা পাগলী! ভালো ভাবেই বলছিলাম চলো নিচে যাই গেল না।যেই রোমান্টিক কথা বলছি ওমনি দৌড়ে গেল।কি যে হবে নীল তোর? নীল মুচকি হেসে ঘর থেকে বেরিয়ে শুভাকে খোজে।রান্নাঘরে উঁকি দিতেই দেখে মুখে হাসির ঝরনা ধারা বইয়ে কি যেন তৈরি করছে।নীল পা টিপে টিপে শুভার কোমড় জড়িয়ে ধরবে তার আগেই শুভা গরম খুন্তি নীলের দিকে তাক করে ধরে।
“- এতো চালাক কেন হু! অতি চালাকের গলায় দড়ি জানেন না?
“- জানি!
“- তাহলে চালাকি করতে এসেছেন কেন?
“- তোমার হাতে গলায় দড়ি পড়ব তাই।বলেই আবার জড়িয়ে ধরে।
“- এই ছাড়েন! ছাড়েন! সুযোগ পেলেই লুতুপুতু করেন।মানুষ দেখলে কি ভাববে বলেন?
“- মানুষের খাই না পড়ি যে মানুষের কথা শুনবো? আমার বউ আমি যখন খুশি তখন জড়িয়ে ধরবো কার কি?
“- ইশশ! শখ কতো?
“- অনেককককক।একটা সিরিয়াস কথা জিজ্ঞেস করি?
“- হুমম
“- কি হওয়ার ইচ্ছা তোমার জীবনে?
“- আর ইচ্ছা! সব ইচ্ছা তো আপনার কারনে রসাতলে গেল।আপনার কারনে আমার লাইফটাই শেষ। শুভার কথা শুনে নীলের মুখের হাসি উবে গেল।একদম ধারালো ছুরির ফলার মতো বুকে লাগলো শুভার বলা কথাটা।
“- তারপরও শুনি!( জোর করে মুখে হাসি এনে)
“- শেফ! বড় শেফ হওয়ার ইচ্ছা আমার।নিজস্ব রেস্টুরেন্ট থাকবে।ব্যস!তার পর হজ্জ্ব করে এসে আল্লাহ আল্লাহ করবো।কিন্তু সেটা তো সম্ভব নয়।
“- কেন সম্ভব নয় কেন?
“- ধরেন আল্লাহ পাকের ইচ্ছা ও চেষ্টায় একটা রেস্টুরেন্ট খুলেও ফেললাম কিন্তু হজ্বে কি করে যাবো?
“- আমি টাকা দেব কেন যেতে পারবে না?
“- আজব কথা বলেন আপনি।ইসলামে কিছু নিয়ম নীতি আছে বুঝলেন?আপনিই তো ধর্মই মানেন না জানবেন কি কর?ইসলামের নিয়ম অনুযায়ী যার তার সাথে হজ্জ্বে যাওয়া যাবে না।বিবাহিত মেয়েদের স্বামীর সাথে যাওয়ার নিয়ম আছে।আর আপনি তো হলেন নাস্তিক। কার সাথে যাবো আমি? আমার কপাল কি অযথায় খারাপ বলি? আল্লাহ মনে হয় চান ই না আমি জান্নাতবাসী হই তা না হলে এতো দুআ দুরুদ পড়ার পরও কেন আপনার মতো একটা অমুসলিমের সাথে আমার বিয়ে দিল।হু।শুভা আপন মনে ঘ্যানঘ্যান করে গেল।শুভা বুঝতেও পারলো না ওর বলা এক একটা কথা নীলকে কতটা আঘাত দিল।কথাগুলো সঠিক তবুও নীল তার প্রিয় মানুষের কাছ এতোটা হৃদয় ভাঙা কথা শুনতে চাই নি।তবুও বুকে কষ্ট চেপে হেসে হেসে শুভার ঘ্যানঘ্যান শুনে গেল।মনে মনে কিছু ভেবে নিয়ে মৃদু হাসল।রাতে শুভাকে নিজ হাতে সাজিয়ে গুজিয়ে ও বাড়ি নিয়ে গেল।শুভা অবাক হলো আজ এবাড়ির মানুষের আচরন দেখে।শুভার কেন যেন মনে হলো প্রতিটি মানুষ মুখোশ পড়া।এদের হাসি ছলনার বিষে মোড়া।নীল শুভাকে হাত ছাড়াই করছে না।তা দেখে নীলের দাদী ও বড় ফুপি মুখ ফুলিয়ে আছে।শুভা চোখ ছোট করে সেদিক তাকাতেই আবার হেসে দেয় তারা।শুভার অস্বস্তি লাগছে।মনের মধ্যে কেমন যেন লাগছে।তবে সবাই এমন না।নীলের ছোট চাচী আর মা খুবই আন্তরিক শুভার সাথে।শুভাকে খুব আদর করলো রান্নাঘরে নিয়ে।নীলের মা তো জড়িয়ে ধরে কেঁদেছে।অনেক কথা হয়েছে তাদের সাথে।নীলের মা নিজের হাতের বালা দুটো খুলে শুভাকে পড়িয়ে মন ভরে দুআ করে দেয়।নীল শুভার হাত ধরে নিজের কামরা দেখিয়েছে। শুভা অবাক চোখে দেখেছে ঘরটা।বই পত্রের ছোট খাট একটা লাইব্রেরী।আচ্ছা মানুষ বেশি পড়লেই জ্ঞানের গড়িমায় নাস্তিক হয়ে যায় নাকি?নীলের নাস্তিক হওয়ার রহস্য কি? শুভা ভেবে নেয় একদিন সুযোগ বুঝে প্রশ্নটা নীলকে করবে। শুভা হাতের স্পর্শে নীলের শৈশব কৈশোরের সব কিছু দেখছে।ভালো লাগছে শুভার।শুভা মনে মনে ঠিক করে রেখেছে এই বাস্কেট বল,গ্লাভস,ক্যারাম বোর্ড, ভিডিও গেমস আর অবশ্যই নীলের পিচ্চিকালের নাদুস নুদুস ছবিটা আর ঐ যে কৈশোরের বাস্কেট বল হাতে নিয়ে ঘুরানো ছবিটা ওর বাচ্চাদের জন্য রেখে দেবে।বাবার জিনিস ওরাও ছুয়ে দেখবে কিন্তু একটা জিনিসও নষ্ট করতে দেবে না শুভা।ভালোবাসার মানুষের ভালোবাসা দিয়ে মোড়া এই জিনিসগুলো যে শুভার অনেক পছন্দের। ভালোবাসার মানুষ! শুভা আনমনেই লজ্জায় লাল হলো কথাটা ভেবে।তাহলে কি নীল কে ও ভালোবেসে ফেলেছে? ধ্যাৎ!
“- কি হলো? এতো লাল নীল হচ্ছ কেন? আমি তো কিছুই করি নাই।
শুভা নীলকে অবাক করে দিয়ে ঝাপিয়ে পড়লো নীলের বুকে।বুকে মুখ লুকিয়ে গলা জড়িয়ে দাড়িয়ে রইল।নীলের জীবনের তৃতীয় খুশি হয়তো এটা।প্রাপ্তিও বলা যায়।প্রথমবার খুশি হয়েছিল এসএসসিতে বোর্ড স্টান্ড হয়ে এবং দ্বিতীয়বার রোদি জন্মের সময়।চোখে জল চলে আসলো নীলের।খুশির জল। শুভার বুঝার আগেই নিজের আবেগ সামলে নিল।চোখের গড়ানো খুশির জল টুকু মুছে একগাল হেসে শুভার মাথায় বিলি কাটতে কাটতে বললো,
“- আমার বউটা আজ নিজ থেকেই ভালোবাসা দিচ্ছে? ডাল মে কুচ কালা নাকি হু
“- নেহি কুচ কালা ধলা নেহি।শুভা কারও ঋণ রাখে না বুঝলেন।অল্প করে হলেও শোধ দেয়।আপনি এতো ঝাপ্পি পাপ্পি দেন আমিও একটু শোধ করে দিলাম।এই আরকি।
শুভার কথা শুনে নীল বাঁকা চোখে তাকিয়ে রইল।
“- আচ্ছা তাই নাকি! তাহলে তো আজ থেকে ঝাপ্পি পাপ্পির ডোজ বাড়াতে হবে দেখছি।আমারও তো ইচ্ছা করে বউয়ের ঝাপ্পি পাপ্পির।
“- ইশশ! সরেন!( লজ্জায় মুখ নামিয়ে)
“- শুভা!
“- হুমম!
“-তিন জন মানুষ আমার জীবনে অধিক প্রিয়।আমার শ্বাস প্রশ্বাস যাদের ভালোবাসায় চলে।যাদেরকে আমি আমার নিজের চেয়েও বেশি ভালোবাসি।তাদের একজন আমার মম।দ্বিতীয় জনকে আজ তোমায় দেখাব।চলো
নীলের কথা শুনে শুভার বুকে কাঁপন শুরু হয়।নীল শুভার হাত ধরে যতো এগোচ্ছে শুভার বুক ততই কাঁপছে। কাকে নিজের জীবনের চাইতেও বেশি প্রিয় ভাবে? কে সে? শুভা কেন সে হলো না।এমন নানা প্রশ্ন শুভার হৃদয় বিদীর্ণ করছে।প্রতিটা স্ত্রী লোকই চাই মা বোনের পরই হোক তার স্থান এবং ক্রমশ সে হয়ে উঠবে আপন পুরুষের সর্বেসর্বা। নীল একটা রুমের দরজা খুলে ভেতরে ঢুকতেই শুভা চোখ বন্ধ করে ফেললো।শুভা সহ্য করতে পারবে না নীলের জীবনে পরনারীকে। মরে যাবে যে তাহলে।বন্ধ চোখে জলে টইটুম্বুর হয়ে যায়।গা কাঁপতে থাকে ভীষণ রকম।
“- শুভা! আর ইউ ওকে? খারাপ লাগছে? শুভাকে শক্ত হয়ে চোখ বন্ধ করে দাড়িয়ে থাকতে দেখে নীল আতঙ্কিত হয়ে ওঠে। শুভার মুখটা আজলা ভরে নিয়ে জিজ্ঞেস করে।
“- ভাবি ঠিক আছ তুমি? ভাইয়া ভাবি কি অসুস্থ?
“- ভাইয়াআআআ! শুভা টুপ করে চোখটা খুলে নীলের হাতের আজলা থেকে মুখ সরিয়ে বিছানায় বসা মেয়েটার দিকে তাকিয়ে থাকে।তারপর পুরো ঘরটায় এক নজর বুলিয়ে নেয়।না! এই মেয়ে ছাড়া কেউ নাই।তবে কি এই টাইই।শুভা বোকা বোকা ভঙ্গিতে নীলের দিকে তাকাতেই নীল কপাল চাপড়ে বসে পড়ে।তা দেখে হেসে কুটি কুটি হয় নীলের বোন রোদেলি।শুভা মুগ্ধ চোখে মেয়েটার হাসি দেখে।নীলের হাসির পর যদি সুন্দর কারও হাসি শুভা দেখে থাকে তবে এই মেয়ের।দেখতে যেমন সুন্দর হাসিও সুন্দর।নীলের মতো। শুভা ধুম করে রোদেলির পাশে বসে পড়ে।
“- তুমিই তাহলে উনার দ্বিতীয় প্রিয়জন?
“- হুমম।( হেসে)
“- মাশাল্লাহ! মাশাল্লাহ। কতো কিউট তুমি।একদম পুতুল।মন চাচ্ছে শাড়ি পড়িয়ে শোকেজে সাজিয়ে রাখি।
“- হি!হি! হি! ভাইয়া সি ইজ সো লাভলি! আমার খুব পছন্দ হয়েছে রে।থ্যাংকস এতো কিউট মিষ্টি একটা ভাবি গিফট করার জন্য।
রোদির কথায় শুভা লজ্জায় মুখ লাল করে মুচকি হাসে আড়চোখে নীলের দিকে তাকিয়ে।নীল কি জবাব দেয় সেটাই অপেক্ষা করছে শুভা।
“- কিউট কে? এই ইদুরনী? রোদি তুই অনেক ভোলু রে! এই মেয়ে সাংঘাতিক রকমের পাজি।আমার লাইফ স্টাইল ই চেঞ্জ করে ফেলেছে।সারাদিন ঝগড়া করে মাথা নষ্ট করে দেয়। আমার জীবনে এমন ঝগরুটে মেয়ে আমি দ্বিতীয়টি দেখিনী বুঝলি?
শুভার লজ্জায় রাঙা মুখে একবালতি গরম পানি ঢেলে দিল নীল।মুহুর্তে রণচন্ডির রূপ নিয়ে বললো,
“- কি! আমি ঝগড়া করি? আমি ঝগরুটে? আমার মতো দ্বিতীয় ঝগরুটে দেখেন নাই?
“- না! ( মুখটা গম্ভীর ভাব এনে রোদিকে আড়চোখে চোখ টিপ দিয়ে বলে)
“- কি খারাপ লোক!আপু তুমি জানো এই লোক আমাকে কতো জ্বালায়ই।খাইতে জ্বালাই,বসতে জ্বালাই, শুতে জ্বালাই ইদানিং তো ওয়াশরুমেও জ্বালাই।
“- তাই নাকি( নীলকে লজ্জা পেতে দেখে রোদি হো হো করে হেসে ওঠে)
“- হ্যা! কথায় কথায় শুধু জ্যাককে কোলে তুলে দেয়।ইচ্ছা করে আমার সাথে এমন করে।জানে কুত্তা বিলাই আমার পছন্দ না।
“- ভাইয়া তুই তো খুব খারাপ হয়ে গেছিস! ( নীলকে নত মস্তকে লাজুক হাসি হাসতে দেখে রোদি মুচকি হেসে চোখ দিয়ে শাসিয়ে বলে)ভাবি তুমিও ভাইয়াকে জ্বালাবা।উঠতে, বসতে,শুতে পারলে ওয়াশরুমেও।
“- আরে কেমনে? এই টা তো বডি বিল্ডার!রেন্ডি অর্টন।এই টার সাথে আমার মতো বাচ্চা মেয়ে পারে।ধমক দিয়েই তো অবস্থা খারাপ করে দেয় আমার।চোখ দেখছ তার? মনে মনে পুরো টেনিস বল।রাগ হলে ফুটবল বানিয়ে ভয় দেখায়।আপু আমি অসহায় মানুষ কেমনে এই কুত্তাওয়ালা ব্যাডার সাথে পারবো বলো? ( মুখটা বেচারি করে)
“- কুত্তাওয়ালা ব্যাডা! কে? ভাইয়া! ( রোদি হাসতে হাসতে খুন হয়ে যাবার উপক্রম)
“- শুভা কি সব বলছ? একদম চুপ ( চোখ বড় বড় করে)
“- দেখেছ কেমন শাসাচ্ছে আমাকে? ( মুখ ফুলিয়ে ভেংচি দিয়ে)
“- ভাইয়ারে আমি হাসতে হাসতে মরে যাবো কিন্তু। আল্লাহ! কি বউ পেয়েছিস তুই পুরাই অস্থির।একদম পারফেক্ট হয়েছে তোর জন্য। তোমাকে স্যালুট ভাবি।ইউ আর টোটালি অ্যামেইজিং সুইট হার্ট।এগেইন এ বিগ থ্যাংকস ভাইয়া এতো সুন্দর একটা গিফটের জন্য।
“- হি! হি! হি! ( নীলের দিকে ভেংচি দিয়ে লাজুক হাসি দিয়ে রোদিকে জড়িয়ে ধরে)

চলবে,,,

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *