বজ্জাত বস রোমান্টিক হাজবেন্ড !! Season -3 !! Part- 28
তিথির বিয়ে কথাটা শুনে আবির দাঁড়িয়ে যায়,,মাথায় যেন আকাশ ভেঙ্গে পড়লো,,,কলিজায় কেউ যেন চুরি দিয়ে টুকরো টুকরো করে ফেললো,,আবির তিথির দিকে তাকায় তিথি মাথা নিচু করে আছে,,,আবিরের মা একটু পিছ পা হলো,,,আবিরের দিকে তাকিয়ে দেখে আবিরের চোখ মুখ মুহূর্তে লাল হয়ে যায়,,,,,
তিথি আবিরের দিকে তাকায় আবিরের চেহারায় যে রাগ টা তিথি ঠিক বুজতে পারে,,,তিথি এই নিয়ে ভয় পাচ্ছে আবির কি করবে,,,,
আবিরঃ এই বিয়েতে কি তিথি রাজি মামানি?
মামানিঃ হুম ও রাজি এই বিয়েতে আর বলায় তো বিয়ের আওয়াজ সব তাড়াতাড়ি আমরা শুরু করে দেই,,আর বিয়ে তো সামনের সপ্তাহে
মামানির কথা শুনে আবির তিথির দিকে যে লুক দিয়ে তাকায় তা দেখে তিথি অনেক ভয় পেয়ে যায়,,,আবির আর কিছু না বলে চলে যায় তার পিছনে তার মা-বাবা ও,,,,,আবির নিজের রুমে গিয়ে সব কিছু ফেলে দেয়,,চিৎকার করে বলে
আবিরঃ কি ভাবে তুমি এমন করলে তিথি কি ভাবে??একটা বার আমার কথা ভাবলে না আমার কি হবে কেন করলে তিথি কেন?
আয়নায় ঘুষি মেরে আয়না ভেঙ্গে ফেলে,,হাত থেকে ঝরঝর করে রক্ত পড়তে থাকে,,,,আবিরের মা দূরে এসে দেখে ঘরের সব জিনিস এলো মেলো,আবির্র হাত থেকে রক্ত পড়ছে,,,,
আবিরের মাঃ এই কি করলি তুই??হাত থেকে কত রক্ত পড়ছে
মা আবিরের হাত টা টেনে তাড়াতাড়ি ব্যান্ডিস করর দেয়,,,আবির তার মাকে জড়িয়ে ধরে কেঁদে দেয়,,,
আবিরঃ মা ও আমার সাথে এমন কেন করলো মা,,আমি পারবো না মা ওকে ছাড়া পারবো না আমি
আবিরের মাঃ বিয়ে এখনও হয় নাই আবির,,,বিয়ে হবে কিন্তু তোর সাথে আর কারো সাথে না,,
আবির মুখ তুলে তাকায় মা কি বলে,,,
আবিরের মাঃ আমার ঘরের বউ যদি কেউ হয় তাহলে সে তিথি,,আবির বিয়ে ওই দিন হবে যে দিন ঠিক হয়ছে কিন্তু বর চেঞ্চ হবে,,,যে ভাবে হোক এই বিয়ে তোর সাথে হবে,,,এর জন্য আমাকে যা করতে হবে আমি এতে রাজি,,,,
আবিরঃ লাভ ইউ মা,,আমার সব সমস্যার সমাধান তোমার কাছে,,,
আবিরের মাঃ হুম এখন যা ফ্রেশ হয়ে নে,,আর যে ছেলের সাথে ওর বিয়ে ঠিক হয়ছে তাকে বুজা না বুজলে এমন কিছু কর যার জন্য ওকে এই বিয়ে ভাঙ্গতে হয় ইচ্ছায় না হয় অনিচ্ছায়
আবিরঃ হুম মা তিথির বিয়ে ওই দিন হবে যে দিন সে ঠিক হয়ছে,,,,কিন্তু তিথি এই ঘরের বউ হয়ে আসবে আর কারো ঘরের না,,
এই দিকে,
তিথি নিজের রুমের পাইচারি কাটতে থাকে আর ভাবতে থাকে আবিরের কি অবস্থা,,,আবির কেমন আছে,,উল্টো পালটা কিছু করে নাই তো,,,তিথি এক পাশে বসে আছে আর না পেরে,,,
রাত অনেক টা হয়ে যায়,,,আবির শুধু মাঝ রাতের অপেক্ষা করছে আর তা হয়ে যাওয়ায় আবির তিথির বারান্দায় দিয়ে রুমে ডুকে গিয়ে দেখে তিথি ঘুমাচ্ছে,,,আজ আবিরের মেজাজ অনেক খারাপ হয়ে যায় তিথির ঘুম দেখে,,,
আবিরঃ আমার ঘুম হারাম করে এখন অনেক শান্তিতে সে ঘুমাচ্ছে বাহা,,আমি কষ্টে চটপট করবো আর তুমি আরামে ঘুমাবে এমন তো হতে আমি দিবো না কখনো না,,
আবির তিথির মুখে পানি ঢেলে দেয়,,,তিথি লাফ দিয়ে উঠে যায় দেখে আবির
তিথিঃ আপনি?
আবিরঃ কেন যার সাথে বিয়ে ঠিক হয়ছে তাকে বুজি আশা করলে এখানে.?.
তিথিঃ কি যা তা বলছেন আর এতো রাতে আপনি এখানে কেন?
আবির তিথি টেনে তুলে দেওয়ালের সাথে জোরে চেপে ধরে দাঁতে দাঁত চেপে বলে
আবিরঃ তোমার সাহস হয় কি করে অন্য ছেলেকে বিয়ে করার জন্য রাজি হতে???এতো সাহস তোমার যে অন্য একজনের বউ হতে চাইছো?
তিথি ব্যাথায় কেঁদে দেয়,,,চোখ বেয়ে পানি গড়িয়ে পড়ে,,,,আবির তিথির হাত আরো শক্ত করে চেপে ধরে,,,তিথিকান্না সুরে বলছে
তিথিঃ প্লিজ ছাড়ুন আমার হাতে লাগছে
আবিরঃ লাগুক আমার যে মনে লেগেছে তা কি তিথি?আমাকে ছাড়া অন্য কারো কথা ভাবলে কি ভাবে তুমি হুম
তিথি এই বার কিছু টা জোরে আবিরকে ধাক্কা দিয়ে বলে
তিথিঃ রাজি হয়েছি বেশ করেছি,,,,আমার যাকে ইচ্ছে বিয়ে করবো এতে আপনার কি??
আবিরঃ ওহ রেলি আমার কি?আমার কি তা জানতো চাও তাই তো ওকে ফাইন
তিথি কিছু টা ঘাবড়ে যায়,,,আবির তিথির দুই হাত চেপে ধরে তিথির ঠোঁটে আজ সে ডুবে যায়,আজ ভালোবাসার পরশ নয় রাগ,অভিমান সব আজ,,,তিথি প্রচুর ব্যাথা পাচ্ছে চোখ দিয়ে তো পানি পড়ছেই আজ তা আবিরের খবর নাই,,,,তিথি অনেক চেস্টা করছে আবিরকে সরানোর কিন্তু আবিরের কাছে কি আর তিথি পারে,,,আর আবির যেন আজ এতো টা হারিয়ে গেছে তিথির চোখের পানি পর্যন্ত দেখছে না,,,,
অনেক ক্ষন পর আবির তিথিকে ছেড়ে দেয়,,,তিথি হাঁফাতে থাকে,,,ঠোঁট দুটো লাল হয়ে যায়,,,,কান্নায় তো অবস্থা খারাপ,,,,আবির তিথির চুল ধরে নিজের কাছে টেনে নেয় তিথির ঘাড়ে জোরে কামড় বসিয়ে দেয়,য,ব্যাথা তিথি চিৎকার করতে যাবে আবির তিথির মুখ চেপে ধরে,,,,,
আবিরঃ আমার কি এর পর যদি কখনো জিজ্ঞেস করো তাহলে অই দিন এর চেয়ে বেশি খারাপ হবে,,,,,
তিথি আবিরকে রেগে থাপ্পড় মারার জন্য হাত তুলে আবির হাতটা ধরে নিজের দিকে টান দেয় তিথিকে,,,তিথিকে ঘুরিয়ে তিথি ঘাড়ে নিজের থুতনি রেখে বলে
আবিরঃ আমি থাকতে তুমি অন্য কারো হবে আর তা আমি মেনে নিবো ভাবলে কি ভাবে হুম,,,,
তিথিঃ আপনি যা করছেন মোটে ও ঠিক করছেন না,,,প্লিজ ছাড়ুন আমাকে
আবিরঃ আমি কি করছি তা তুমি টের পাবে কিছু দিন পর,,,,বিয়ের খুব শখ তাই না ওকে ওই শখ টা পূরন হবে,,,,
তিথি কিছু বলতে যাবে আবির তিথিকে নিজের দিকে ঘুরিয়ে তিথির ঠোঁটে আলতো করে চুমু দিয়ে বলে
আবিরঃ অনেক ভালোবাসি অনেক,,,,ঘুমিয়ে যাও
আবির এই বলে চলে যেতে লাগে আবার ফিরে এসে কপালে আলতো করে চুমু দিয়ে বলে
আবিরঃ ভুলে গেছি যে আমার তোতাপাখির কপাল আমার উপর রেগে যাবে যদি তাকে ছুঁয়ে না দেই
তিথি রাগী লুক দেয়,,,আবির মুচকি হেসে বলে
আবিরঃ রেডি থাকিও বউ সেজে কলিজা
তিথিঃ কিইইই?কলিজা মানে কে কলিজা কার কলিজা?
আবির কিছু না বলেই চলে যায়,,তিথি এই দিকে রাগে শেষ,,আয়নায় দাঁড়িয়ে দেখে ঘাড়ে দাঁতের দাগ বসে যায়,,,,আর ঠোঁটে ফুলে তো অবস্থা খারাপ,,, ,তিথির খুব রাগ লাগছে নিজের চুল নিজে ধরে টানছে নিচে ধপ করে বসে কান্না করে
তিথিঃ কেন এমন হচ্ছে কেন?কেন আমার সাথে এমন হচ্ছে,,,
অনেক ক্ষন কান্না করে,,বারান্দায় গিয়ে বসে আলাশের দিকে আনমনে তাকিয়ে আছে,,,,চোখ দিয়ে পানি তো পড়ছেই,,,,
এই দিকে আবির গিটার নিয়ে বারান্দায় এসে বসে,,,
চোখ বন্ধ করে গান শুরু করে
🎻🎼সবই বুঝি,
তবু অবুঝের মতো।
তোমায় খুঁজি,
নিয়ে হারানোর ক্ষত।
আজও ভাবি,
কেন বেদনার মতো,
হৃদয়ে আঁকি,
নীল প্রজাপতি শত।
ফেরাতে পারিনি আমি,
পারিনি তোমার হতে।
তুমিতো গিয়েছো চলে,
দ্রুতলয়ে আলোর পথে।
সবই বুঝি,
তবু অবুঝের মতো।
তোমায় খুঁজি,
নিয়ে হারানোর ক্ষত।🎻🎼
আবিরের গান শুনে তিথি আরো কেঁদে দেয়,,তার বুজতে বাকি রইলো না যে এই গান শুধু তার জন্য,,আবির অনেক কষ্ট পেয়েছে তা তিথি বুজতে পারে,,,,
আবিরের চোখের কোণায় পানি এসে জমে যায়,,,,গিটার টা বুকে নিয়ে বলে
আবিরঃ খুব ভালোবাসি আমি তোমাকে তিথি খুব বেশি,,,,কখনো পারবো না তোমায় হারাতে,,তিথি শুধু আবিরের আর আবির শুধু তিথি,,,এখন যা হবে তার জন্য আমি দায়ী না তিথি এর জন্য এখন তুমি দায়ী,,,
দুইজনে আজ কষ্টে পাচ্ছে,,রাত টা যেন আজ বড্ড বেইমান কোনো মতে কাটছেই না,,,
এই দিকে কলের উপর কল দিয়ে যাচ্ছে নিরব তিথির খবর পর্যন্ত নাই,,,
সকালে,,,,
নিরব তিথির বাসায় এসে মামানিকে জিজ্ঞেস করে
নিরবঃ মামানি তিথি কোথায়?
মামানিঃ নিজের রুমে হয়তো রেডি হচ্ছে অফিসের জন্য,,,,
নিরব তিথির রুমে যায় গিয়ে দেখে তিথি ব্যাগ নিয়ে বের হবে,,,,
নিরবঃ অহ তুমি রেফি তাহলে চলো
তিথিঃ কোথায়?আমি অফিস যাবো এখন
নিরবঃ তোমাকে অফিস দিয়ে আমিও অফিস যাবো,,,,
তিথি কিছু না বলে হুম বলে,,নিরব কিছু টা লক্ষ করে তিথিকে বলে
নিরবঃ তিথি তোমার ঠোঁটে কি হয়েছে ফুলে গেছে যে?
তিথি ঠোঁটে হাত দিয়ে ভাবে কাল রাতের কথা,,,,কাল রাতে আবির তাকে জোর করে ঠোঁটে কামড় দেয়,,,
তিথিঃ আসলে পিঁপড়ে কামড় দিয়েছে ঠোঁটে তাই ফুলে গেছে
নিরবঃ ওহ আচ্ছা ওষুধ লাগিয়ে ছিলে,,,
তিথিঃ হুম,,, চলুন দেরি হচ্ছে
তিথি হিজাব পড়ায় ঘাড়ে কামড়ের দাগ দেখা যায় নাই,,,ঠোঁটে হাত দিয়ে রাখে তিথি,,,,,নিরব আর তিথি নিচে নামে,,তখন আবির গাড়িতে উঠতে যাবে তখন তিথিকে দেখে সাথে একটা ছেলে দেখে তিথির সামনে এসে বলে
আবিরঃ গুড মর্নিং তিথি
তিথি আবিরের দিকে ভয়াবহ ভাবে তাকায় যদি আবির কিছু করে,,,,
নিরবঃ তিথি তুমি উনাকে ছিনো
আবিরঃ কেন ছিনবে আমি ওর,,,
তিথির দিকে তাকিয়ে,,, তিথি ঢোক গিলে আবির কি বলবে এই ভেবে
নিরবঃ আপনি ওর কি?
আবিরঃ ওর বস আর প্রতিবেশী ও,,
নিরব হাত বারিয়ে বলে
নিরবঃ আমি তিথির হবু বর
হবু বর কথাটা শুনে আবিরের মাথা খারাপ হয়ে যায়,,,চোখ গরম করে তিথির দিকে তাকায়,,,
তিথিঃ আমাদের দেরি হচ্ছে
নিরবঃ আচ্ছা আসি তাহলে আমাদের বিয়েতে আসবেন কিন্তু
আবির কিছু বলে না চুপচাপ দাঁড়িয়ে থাকে,,,নিরব বাইকে উঠার পর তিথি তার পিছনে উঠে চলে যায়,,তিথি ভয়ে শেষ এই ভেবে যে অফিসে তার সাথে কি হবে,,,আবির যে পরিমাণ রেগে আছে আজ তো তিথি শেষ,,,
চলবে,,,,,,