বজ্জাত বস রোমান্টিক হাজবেন্ড !! Season -3 !! Part- 27
মামানিঃ হ্যাঁ এমন ছেলে কি আর পাবো তুই বল,,দেখ তিথি তুই যফি রাজি থাকিস তাহলে কথা আগে বারাবো না হলে না,,কারণ তোর জীবন তাই
তিথিঃ তুমি আর মামা হেপ্পি থাকলে আমিও হেপ্পি,,আর আমার জীবনে তোমাদের চেয়ে আর কিছু ইম্পর্টেন্ট না,,ওদের বলে দিয়ো যে এই বিয়েতে আমি রাজি,,,,,
আজ সবাই অনেক খুশি,,,নিরব আজ অনেক খুশি সে ভাবতে ও পারে নাই যে তিথি মেনে যাবে এতো সহজে,,,তিথির বুক ফেটে যেন কান্না আসছে কিন্তু সে কাঁদতে পারছে না কারণ মামানির মুখে যে আজ অনেক হাসি,,,
নিরবের বাবা মা চায় বিয়ে টা তাড়াতাড়ি হোক তাই তারা ১০ দিনের মধ্যে বিয়ের ডেট ফেলে দেয়,,,,ডেট পরে যাওয়ায় তিথির বুকে যেন কেউ চুরি দিয়ে আঘাত করে,,,,নিরবের মা আর মামানি ওরা কথা বলে,,,নিরব আর তিথিকে একা কথা বলতে বলে,,,,তিথি নিজের রুমে যায় নিরব ও যায়,,
নিরবঃ আমি জানি তুমি অনেক টা শকড এই ভাবে না জানিয়ে আশায়,,আসলে বাবা-মা যখন থেকে তোমার ব্যাপারে জেনেছে তখন থেকে তারা তোমাকে আমাদের বাসায় নিয়ে যেতে চায় একবারে,,,তুমি চিন্তা করিও না তিথি মামার সব দায়িত্ব আমার,,
তিথিঃ,,,,,,,,!
নিরবঃ তিথি তুমি রাজি তো এই বিয়েতে?
তিথিঃ হুম আমি রাজি,,,
নিরবঃ তুমি চাইলে বিয়ের পর ও জব করতে পারো সমস্যা নাই,,,
তিথিঃ ধন্যবাদ (মুচকি হেসে)
নিরব অনেক কথা বলে কিন্তু তিথি হ্যাঁ অথবা না ছাড়া আর কিছু বলে নাই,,,সবাই খাওয়া দাওয়া শেষ করে চলে যায়,,,তিথি বারান্দায় বসে আছে আকাশের দিকে আনমনে তাকিয়ে,,, চোখ দিয়ে পানি টপটপ করে গড়িয়ে পড়ছে,,,,মনে পড়ছে আবিরের সাথে কাটানো সব মুহূর্ত,,,,ভার্সিটিতে সে ঝগড়া আবির তাকে হুট করে কোলে নেওয়া,,, জঙ্গলের সে দিন গুলো,,,সব কিছু আজ তিথির মনে নাড়া দিচ্ছে,,, মন বারবার বলছে তিথি এই বিয়ে করিস না,,,আবিরের কথা ভাব আবির আবির শুধু আবির এই নাম টা বারবার কানে বাজে বারবার শুধু মন চিৎকার করে বলে তুই শুধু আবিরের,,,
হঠাৎ করে ফোনের রিং টা বেজে ওঠে,,,অনেক বার রিং হয় ফোন হাতে নিয়ে তাকিয়ে দেখে আবিরের নাম্বার,,আবিরের নাম্বার দেখে বুকটা যেন মুচড়ে উঠে এক অজানা ভয়ে,,,কল টা রিসিভ করার কেন জানি আজ সাহস হচ্ছে না,,,,কেটে যায় কল তখন মেসেজ এর টুং একটা শব্দ আসে তখন মেসেজ টা দেখে আবিরের
আবিরঃ এখন যদি রিসিভ না করো তাহলে তোমার কপালে অনেক খারাপি আছে বলে দিলাম,,চুপচাপ কল রিসিভ করো
তিথি চোখের পানি মুছে কিছু টা স্বাভাবিক হয়ে নেয়,,,আবির আবার কল দেয় তিথির হাত কাঁপছে এই ভেবে যে আবির হয়তো বিয়ের কথা জেনে গেছে,,,আবির কি করবে এই ভেবে ভয়ে শেষ,,, অনেক টা সাহস করে রিসিভ করে
তিথিঃ হ্য হ্যালো
আবিরঃ ফোন ধরতে এতো সময় লাগে কেন হুম কই ছিলে এতো ক্ষন?
তিথিঃ আমার যেখানে ইচ্ছে সেখানে ছিলাম এতে আপনার কি?
আবিরঃ অহ তাই আমার কি?
তিথিঃ জ্বি
আবিরঃ সামনে থাকলে বুজতে আমার কি হয়,,,আজকে সামনে নাই বলে বেশি ফ্যান ফ্যান করছো,,,দাঁড়াও এসে তোমার গালে কামড় দিবো তারপর বুজবে আমার কি…
তিথিঃ কিইইই?আপনি আমার গালে কামড় দিবেন মানে?
আবিরঃ হুম কামড় দিবো,,,,হাজার হোক আমার,,,,,,,,!
তিথিঃ আপনার কি??
আবিরঃ আমার কি তা এতো জানার ইচ্ছা আছে নাকি ম্যাডাম
তিথিঃ আপনার সাথে কথা বলাই বেকার দূর
আবিরঃ আমার সাথে না বলে যদি অন্য কারো সাথে বলার কথা ভাবলে ও পায়ের নলা ভেঙ্গে দিবো হুম
তিথিঃ মানে?
আবিরঃ মানে হলো ম্যাডাম আপনি যদি আমাকে ছাড়া অন্য কারো কথা মাথায় ও আনেন না তাহলে ওই দিন দেখবেন এই আবির রহমান কত খারাপ হতে পারে বুজলে মিস বকবক ,,,,,,,
আবিরের এমন কথা শুনে তিথি অনেকটা ঘাবড়ে যায়,,,,কপালে ঘাম ছুটতে থাকে,,,,তিথি ভয়ে শেষ এই ভেবে যে যদি আবির তিথির বিয়ের কথা শুনে তাহলে কি হবে,,,,আবির অনেক কিছু বলতেই থাকে আর তিথি চুপ করে শুধু শুনে,,,আজ কেন জানি তিথির কাছে আবিরের আওয়াজ টা খুব শুনতে ইচ্ছে করছে,,,আবিরের আওয়াজে আজ অনেক টা শান্তির মত কাজ করছে,,,,,,
বারান্দায় বসে বসে তিথি আবিরের সাথে কথা বলতে থাকে,,,,দুইজনে যেন সব ভুলে গেছে,,তিথি ও আজ অনেক হাসে আবিরের কিছু কিছু কথায়,,,,কেটে যায় রাত তাদের এই ভাবে,,,,,
সকালে মামানি এসে দেখে তিথি বিছানায় নাই বাথরুমে ও নাই বারান্দায় গিয়ে দেখে সেখানে ঘুমিয়ে আছে,,,শুক্রবার তাই তিথিকে ডাকে নাই,,,অনেক টা বেলা করে আজ উঠে,,,অনেক রাতে তিথি ঘুমায় ফোন টা হাতে নিয়ে দেখে আবিরের কল এখনও আছে কথা বলতে বলতে ঘুমিয়ে পড়ে দুইজনে,,তিথি মুচকি হেসে কল টা কেটে দেয়,,,ফ্রেশ হয়ে সামনের রুমে এসে দেখে নিরবের মা বসে আছে,,,নিরবের মাকে সালাম করে পাশে বসে,,,
নিরবের মাঃ বিয়ের তো বেশি দেরি নাই তাই ভাবছিলাম আজ তো শুক্রবার কিনা কাটা কিছু টা করে ফেলি আর তুমি কাল অফিসে গিয়ে বিয়ের জন্য কিছু দিন ছুটি নিয়ে আসবে,,,,,
তিথি মাথা নাড়িয়ে হ্যাঁ জানায়,,
তিথিঃ আন্টি আপনি যা পছন্দ করে নিবেন আমার তা পছন্দ হবে,,আপনাদের যেমন ইচ্ছে তেমন নিয়েন আন্টি
নিরবের মাঃ কিন্তু তোমার পছন্দ তো লাগবে,,বিয়ে তো আর বারবার হবে না তাই তোমার পছন্দ মত নিলে ভালো হয় না
তিথিঃ আসলে আন্টি আমার না শরীর টা আজ ভালো নাই যদি কিনাকাটা করতে মামানি যায় উনি আমার পছন্দ জানে আর মামা ও একা বাসায় আমি রেস্ট করি আর মামার খেয়াল রাখবো,,,,
মামানি আর নিরবের মা মার্কেটে চলে যায়,,,তিথি ইচ্ছে করে যায় নাই তার মন মানছেই না এই বিয়েতে,,,
মামার কাছে এসে মামার হাত ধরে বসে আছে চোখ বেয়ে শুধু পানি গড়িয়ে পড়ছে,,,,
তিথিঃ মামা আজও আমি আবিরকে ভুলতে পারি নাই,,অনেক ভালোবাসি তাকে আজও,, সে যা করেছে তার জন্য তার উপর প্রচুর ঘৃনা করা উচিত কিন্তু মামা ওকে দেখলে আমি সব ভুলে যাই,,,,মাঝে মাঝে ভাবতে ইচ্ছে করে যা কিছু অই দিন হয় যা হয়েছে সব মিথ্যা,,,,সব কিছু মামা এই বিয়েতে আমার ইচ্ছে নাই মামা,,,আমার মন মানছে না মামা প্লিজ কিছু বলো কি করবো আমি??মামা প্লিজ আমায় আইডিয়া দাও আমি কি করবো
মামা পাশে অনেক ক্ষন বসে থাকে,,,প্রচুর কান্না করে তিথি৷,,,,অনেক ক্ষন পর নিজের রুমে যায়,,,তার কিছু ভালো লাগছে না,,,অস্তির লাগছে অনেক,,,,দুপুর ঘনিয়ে সন্ধ্যা হয়ে আসে,,,দরজায় কয়েকটা টুকা পড়ায় তিথি দরজা খুলতে আসে,,চুল গুলো হাত খোপা করে,,,দরজা খুলে পুরো থমকে যায় তিথি,,,,,সামনে আবির দাঁড়িয়ে আছে মুচকি হেসে,,,আবির তিথিকে হালকা জড়িয়ে ধরে বলে
আবিরঃ অনেক মিস করছি তোতাপাখি অনেক,,,
তিথি তো একটু সরে দাঁড়ায়,,,
আবিরঃ মামানি কই?
তিথিঃ মার্কেট গেছে এসে যাবে
আবিরঃ ওহ তাই তাহলে তো ভালোই,,,
আবির ভিতরে ডুকে যায়,,তিথি দরজা লাগিয়ে বলে
তিথিঃ এখন মামানি নাই মামানি আসলে আসিয়েন এখন যান
আবিরঃ মামানি নাই তাই তো আরো ভালো,
তিথির কাছে এসে তিথির কপালে আলতো করে চুমু দিয়ে বলে
আবিরঃ তোমাকে ছাড়া খুব কষ্টে ছিলাম,,,খুব কষ্ট হচ্ছে তাই এসে গেলাম বাসায় ও যাই নাই আগে তোমার এই মায়াভরা চেহারা দেখার জন্য,,,,,
তিথি শুধু আবিরের কথা শুনছে,,,আবির আজ কেমন জানি অনেক খুশি,,,
তিথিঃ আজ বুজি অনেক হেপ্পি আপনি?
আবিরঃ হুম অনেক অনেক (এই বলে তিথিকে কোলে নিয়ে ঘুরতে থাকে)
তিথিঃ কি করছেন কি প্লিজ ছাড়ুন প্লিজ
আবিরঃ তোমার জন্য সারপ্রাইজ আছে একটা,,,একটু পরে
তিথিঃকি সারপ্রাইজ?
আবিরঃ ম্যাডাম বললে কি সারপ্রাইজ থাকবে?সারপ্রাইজ টা একটু পরে না হয় জানবেন,,,,,,
তিথি কিছু বুজতে পারছে না আবির কি বলতেছে,,,,আবির তিথির কপালে আবার চুমু দিয়ে বলে
আবিরঃ আমি বাসায় গিয়ে ফ্রেশ হয়ে আসি প্লিজ আমার জন্য কিছু খাবার বানাবে আসলে অনেক ক্ষেধা লাগছে
তিথিঃ আচ্ছা
আবিরঃ আচ্ছা আনি তাড়াতাড়ি আসতেছি তুমি খাবার রেডি রাখো,,,
আবিরের মুখে আজ অনেক হাসি কেমন জানি আজ তাকে অনেক বেশি খুশি লাগছে এই ভেবে তিথিও অনেক টা খুশি হয়ে যায়,,,,
তিথিঃ পাগল একটা
তিথি মুচকি হেসে কিছু খাবার করতে যায় রান্না করে,,,,, কিছু ক্ষন পর দরজায় আবার টুকা পরে
তিথিঃ এখন আমার পুরো মাথা আবার খাবে এই বজ্জাত এনাকন্ডা,,,ভাগ্যিস তাড়াতাড়ি নুডুলস টা করে ফেললাম না হলে বলতো আমি কাজের না একটার,,,বজ্জাত বিপজ্জনক রাক্ষস একটা
তিথি হেসে গিয়ে দরজা খুলে দেখে মামানি আর নিরবের মা অনেক গুলো শপিং করে এসেছে,,,ওদের দেখে হাসিটা যেন উড়ে যায় তিথির,,,,
মামানিঃ কিরে সর দরজা থেকে
তিথিঃ হুম
তিথি কিছু শপিং প্যাকেট নিয়ে সোফায় রাখে তাদের জন্য পানি আনতে যায়,,,পানি এনে তাদের দেয়,,,তার মধ্যে আবির হাজির তিথির নজর পড়ে আবিরের পিছনে আবিরের মা-বাবা,,,তাদের দেখে তিথি অনেক টা অবাক হয়,,,,মামানি আবিরকে দেখে বলে
মামানিঃ আবির তুমি যে আসো
আবিরঃ মামানি এরা আমার মা-বাবা আজকে এসেছে আমার সাথে আপনার সাথে দেখা করতে এসেছে
মামানি গিয়ে আবিরের মাকে জড়িয়ে ধরে তাদের বসতে দেয়,,,আবিরের মা উঠে গিয়ে তিথির মাথায় হাত রেখে আস্তে করে তিথিকে বলে
আবিরের মাঃ মাশাল্লাহ আমার ছেলের পছন্দ আছে,,,
তিথি আবিরের মায়ের পা ধরে সালাম করতে যায় তখন উনি তিথিকে ধরে বুকে জড়িয়ে ধরে বলে
আবিরের মাঃ আমার মেয়ে তুমি পা ধরবে না,,,আমার আবিরের বউ পরে হবে আগে আমার মেয়ে বুজলে
তিথির চোখের পানি টলটল করে যেন এখন পরবে,,,,তিথির আর বুজতে বাকি রইলো না যে কি সারপ্রাইজ,, আবির তার ফ্যামিলি এনেছে তিথির আর আবিরের বিয়ের জন্য,,,,,ভয়ে তিথির কলিজা শুকিয়ে যায় এখন কি হবে এই ভেবে,,,, অসহায় ভাবে তাকিয়ে আছে আবিরের দিকে আবির চোখ টিপ দেয় আর ফ্লাই কিস দেয় তিথিকে,,,,
মামানিঃ তিথি সবার জন্য চা নিয়ে আয়
তিথি মাথা নাড়িয়ে যেতে লাগে তখন আবিরের কথায় থেমে যায়
আবিরঃ এতো শপিং কেন করলে মামানি,,,বাসায় কি বিয়ে শাদি লাগছে নাকি হুম
মামানিঃ ওহ সরি তোমাকে তো বলাই হয় নাই আর কিছু দিন পর তিথির বিয়ে নিরবের সাথে,, আর এনি নিরবের মা তিথির হবু শাশুড়ি,,,,,
তিথির বিয়ে কথাটা শুনে আবির দাঁড়িয়ে যায়,,মাথায় যেন আকাশ ভেঙ্গে পড়লো,,,কলিজায় কেউ যেন চুরি দিয়ে টুকরো টুকরো করে ফেললো,,আবির তিথির দিকে তাকায় তিথি মাথা নিচু করে আছে,,,আবিরের মা একটু পিছ পা হলো,,,আবিরের দিকে তাকিয়ে দেখে আবিরের চোখ মুখ মুহূর্তে লাল হয়ে যায়,,,,,
চলবে,,,,,,