বজ্জাত বস রোমান্টিক হাজবেন্ড

বজ্জাত বস রোমান্টিক হাজবেন্ড !! Season -3 !! Part- 24

আবিরঃ চিল্লাতে বলি নাই বলছি এক চুমুক খাইতে,,না মানে যদি আবার কফিতে বিষ টিষ মিশিয়ে আনো আমাকে মারার জন্য তাই,,,শুধু এক চুমুক খাবে আর বেশি না ওকে,,যদি বেশি খাও না তাহলে তোমার বেতন থেকে কেটে রাখবো কফির টাকা,,,
তিথিঃ(কিপ্টুস)
আবিরঃ এই মিস বকবক কি ভাবছো এতো হুম
তিথিঃ আমার নাম তিথি ওকে স্যার (কিছু টা রেগে)
আবির তিথির কাছে যায় তিথি আবিরের এমন আগানো দেখে একটু পিছনে যায়,,,আবির তিথির অনেক সামনে যায়,,,
তিথিঃআ,,,পনি সা,,,মনে কেন আসছেন?
আবিরঃ তুমি যেই হও না কেন আমার জন্য আমার তোতাপাখি,,,আমার সব,,,
তিথিঃ দূরে সরে দাঁড়ান
আবিরঃ বাই দ্যা ওয়ে মিস বকবক তুমি আগে থেকে এতো মোটা হলে কি ভাবে(তিথির গালটা একটু টেনে দিয়ে)
তিথিঃ কি আমি মোটা?বেটা বজ্জাত তোর চোখে কি চাই পড়ছে যে দেখিস না আমি কতো শুকনা হুম,,,আর অই তুই মোটা বুজলি আগে থেকে তো পুরো ড্রাম হয়েছিস পেটু একটা হু
আবিরঃ কি আমি পেটু?আমি ড্রাম?
তিথিঃ সত্যি শুনতে কি তিতা লাগে??
আবিরঃ ওহ রেলি???
তিথি মুখ বাকা করে চলে যেতে লাগে আবির হাত ধরে টান দেয়,,,তিথি আবিরের বুকে এসে পড়ে,,,আবির তিথির হিজাব এর পিন গুলো খুলে ফেলে,,,পিন গুলো খোলার পর হিজাব টা খুলে চুল গুলো খোপা থেকে ছেড়ে দেয়,,,
তিথিঃ কিই করছেন কি?
আবিরঃ ইসসস
তিথি কিছু বলতে যাবে আবির তিথির ঠোঁটে আঙুল দিয়ে বলে
আবিরঃখোলা চুলে তোমায় অসাধারণ লাগে,,
সব গুলো চুল এসে তিথির কপালে পড়েছে,,আবির তিথির চুল গুলো আলতো করে সরিয়ে দিয়ে তিথির চুলে মুখ গুজায়,,আবির যেন তিথির সে নেশা ভরা চুলের ঘ্রাণ হারিয়ে যাচ্ছে,,,, আবিরের প্রত্যেক টা হার্ট বিটে যেন হারিয়ে যাচ্ছে তিথি,,,,তিথি যেন আজ আবিরের সে নেশা ভরা চোখে হারিয়ে যাচ্ছে,,,,নিজেকে একটা অনেক কষ্টে কন্ট্রোল করে,,,,
তিথি আবিরকে ধাক্কা দিয়ে বলে
তিথিঃ স্যার আমার কাজ আছে আসি
তিথি তাড়াতাড়ি চলে যেতে লাগে আবির তিথিকে ডেকে বলে
আবিরঃ এই খানে বসে বসে কাজ করেন
তিথিঃ মানে?আমি আপনার সামনে কাজ করবো?কখনো না হু
আবিরঃ যে ভাবে বলছো মনে হচ্ছে এই অফিস এর বস তুমি আর আমি পিএ,,চুপচাপ আমার সামনে কাজ করবে না হলে সেলারি কেটে রাখবো হুম
তিথিঃ (আস্তা একটা বিপজ্জনক রাক্ষস ইচ্ছে তো করছে কাবাব এর সুফ বানাই আর শয়তান টাকে খাওয়াই বেহুঁশ করি হু)
আবিরঃ ভাবনার রানি ভাবনা শেষ হলে চুপচাপ কাজ করো
তিথি বিরক্তি নিয়ে বসে পড়ে,,,আবির তিথির মায়াভরা মুখে তাকিয়ে আছে আর কফিতে চুমুক দিচ্ছে,,,আবিরের কাছে এই কফি দুনিয়ার বেস্ট কফি মনে হচ্ছে তিথির ঠোঁটের পরশ যে রয়েছে,,,

অনেক ক্ষন পর,,,
আবিরঃ মিস বকবক লাঞ্চ নিয়ে আসেন আমার জন্য
তিথিঃ আমি কি পিয়ন নাকি যে লাঞ্চ আনবো
আবিরঃ আমার পিএ তো, আর আমার পিএ মানে আমার সব কিছুর দায়িত্ব তোমার ওকে
তিথিঃ(এহেএএএএ আমার সব দায়িত্ব তোমার (একটু মুখ বাঁকা করে)এমন ভাবে বলছে মনে হচ্ছে আমি তার ঘরের বউ হু)
আবিরঃ তিথিইইইই(চিৎকার দিয়ে)
তিথিঃ উফফফ ষাড়ের মত চিৎকার কেন দিচ্ছেন(কানে দাত দিয়ে)
আবিরঃ কিইই আমি ষাড়ের মত চিৎকার করি(দাঁতে দাঁত চেপে)
তিথিঃ জ্বি না আপনি তো বিড়ালের মত চিল্লান যাই হোক কি বলেন
আবিরঃ এলিয়েন যে পুরো এলিয়েন,,,
তিথিঃকি?
আবিরঃ কিছু না লাঞ্চ নিয়ে আসো,,
তিথি চুপচাপ লাঞ্চ নিতে চলে যায়,,আবিরের খুব ভালো লাগছে তিথির আশেপাশে থাকতে,,,তিথির সহ মায়াভরা চেহারা এক পলক এর জন্য যে এতো চটপট করেছে তার হিসাব নাই,,,,
কিছু ক্ষন পর তিথি খাবার নিয়ে আসে আর টেবিলে রাখে,,,,
আবির লেপটপে কাজ করছে,,,তিথি এসেছে দেখে তো ও কিছু বলে নাই
তিথিঃ স্যার আপনার খাবার
আবিরঃ প্লেটে নাও সব কিছু
তিথি খাবার প্লেটে নিয়ে আবিরের সামনে দিতে যাবে আবির বলে
আবিরঃ আগে তুমি খাও
তিথিঃ মানে?
আবিরঃ মানে আগে টেস্টে করে দেখো,,যদি বিষ মিশাই থাকো আবার
তিথি নাক ফুলিয়ে ভাত
তিথিঃ ভাত মেখে একটু খায়,,,,ভাতের প্লেট রাখতে যাবে আবির আবার বলে
আবিরঃ খাইয়ে দাও আমাকে
তিথিঃ কিইইইইই
আবিরঃ রাক্ষসের মত চিল্লাও কা,,,খাইয়ে দিতে বলছি চিল্লাতে না
তিথিঃ আমি কেন আপনাকে খাওয়াই দিবো আজিব
আবিরঃ চুপচাপ খাইয়ে দাও না হলে সেলারি কেটে রাখবো,, দেখছো না আমি কাজ করছি চুপচাপ খাইয়ে দাও ওকে
আবির কথা গুলো একটু ধমক দিয়ে বলে,,,তিথি চুপচাপ ভাত মেখে আবিরকে খাইয়ে দেয়,,,আবির খাচ্ছে আর কাজ করছে,,আবরের খুব আনন্দ লাগে তিথির হাতে খেতে,,,তিথি অনেক বিরক্তি নিয়ে খাইয়ে দিচ্ছে আর মনে মনে তো ইচ্ছে মত বকা দিচ্ছে
তিথিঃ(শয়তান লোক একটা,,,পিএ থেকে কাজের মেয়ে বানিয়ে ছেড়েছে,,,আমাকে দিয়ে এই সব করাছে ইচ্ছে তো করছে ইচ্ছে তো ঝাড়ু পিঠা করি হু)
তিথি আবিরকে খাইয়ে দাওয়ার পর পানি গ্লাস এগিয়ে দেয়
আবিরঃ পানি খাইয়ে দাও
তিথিঃ আপনি কি কচি খুকি যে পানিও খাইতে দিতে হবে হুম
আবিরঃ যা ইচ্ছে ভাবতে পারো কিন্তু পানি খাইয়ে দাও এখন
তিথি বিরক্তি নিয়ে আবিরকে পানি খাইয়ে দেয়,,,
আবিরঃ মুখ মুছে দাও তোমার ওড়না দিয়ে
তিথিঃ কখনো না
আবিরঃ ওকে ফাইন ২০০০ টাকা সেলারি থেকে কেটে রাখবো
তিথি দাঁতে দাঁত চেপে নিজের ওড়না দিয়ে আবিরের মুখ মুছে দেয়,,,,
তিথি এই সব নিয়ে চলে যায় আবির মুচকি হাসতে থাকে,,,আবির ভাবতে থাকে তিথি যে মেয়ে সে কখনো কারো কথায় এতো তাড়াতাড়ি রাজি হতো আর সে এতো সহজে আবিরের কথায় রাজি হচ্ছে,, কিছু টা অবাক হচ্ছে সে,,,
সারাদিন কেটে যায় আবিরের অত্যাচার তিথির উপর দিয়ে,, আর যতবার খাবার আনাছে প্রত্যেক বার তিথিকে আগে টেস্ট করতে হচ্ছে,,এই ভাবে কেটে যায় পুরো দিন,,,ছুটির সময় তিথি আবিরকে কিছু না বলে তাড়াতাড়ি চলে যায়,,,আবির অফিস এর কিছু পেপার থেকে তিথির ঠিকানা নেয়,,,
তিথি রুমে এসে ফ্রেশ হয়ে বিছানায় বসে বকবক করে
তিথিঃ এই হারামি বজ্জাত এনাকন্ডা কেন এসেছে এই এখানে,,,আবার আমাকে কষ্ট দিতে এসেছে এই হারামি,,,
তখনই মামানি আসে এসে বলে
মামানিঃ কিরে কিছু খাবি না,,এসে রুমে বসে রইলি যে
তিথিঃ মামানি ক্ষেধে নাই তুমি খেয়ে নাও
মামানিঃ জানিস তিথি উপরের তলায় এক নতুন ভাড়াটিয়া আসছে,,,এতো বড় রুম উপরের তলা আর অই খানে এক ছেলে নাকি একা থাকবে,,
তিথিঃমামানি বড় লোক এর বিরাট কারবার এতে আমাদের কি,,সে একা থাকুক বা একশ জন নিয়ে এতে আমাদের কিছু না,,,
মামানিঃ হুম তাও কথা,,আচ্ছা আয় কিছু টা হলে ও লহেয়ে নে না হলে যে তোর মামা কষ্ট পাবে,,আয় মা সারাদিন কত কাজ করেছিস,,,আয় কিছু টা খেয়ে নিবি
তিথি কথা না বারিয়ে খেতে যায়,,,টেবিলে বসে ভাত গুলো আঙুল দিয়ে শুধু নাড়ছে খেতে তার ইচ্ছে করছে না করবে কি ভাবে সারাদিন আবির যা খাবার তাকে খাইয়েছে এতো পেট ফুল লোড,,তার মধ্যে আবির হুট করে এই ভাবে আসা এই গুলো সে মেনে নিতে পারছে না,,
মামানিঃ কিরে ভাত গুলো এমন করছিস কেন খা
তিথিঃমামানি আসলে আমার না খেতে ইচ্ছে করছে না,,,,

মামানি কিছু বলতে যাবে তখন দরজায় কেউ নক দিচ্ছে,,,মামানি উঠে যেতে লাগে তখন তিথি বলে
তিথিঃ মামানি তুমি খাও আমি দেখছি
তিথি হাতটা ধুয়ে দরজার দিকে যাচ্ছে এতো বার যে নক করতেছে তিথি বিরক্তি হয়ে বলে
তিথিঃ দরজা কি ভাঙ্গার প্লেন আছে নারে,,, এতো জোরে বারি না দিলে কি পেটের ভাত হজম হবে না
তিথি এই সব বলছে আর দরজা খুনে তো পুরো হা হয়ে আছে,,,,মনে হচ্ছে চারশ চল্লিশ এর কারেন্ট খাইছে,,,,
মামানিঃ কে রে তিথি?
তিথিঃ হেএএ
তিথির আওয়াজ অফ হয়ে যায় আবিরকে দেখে,,আবির তিথির সামনে দাঁড়িয়ে আছে একটা বাটি নিয়ে
তিথিঃ আ,,,আপনি এখানে কেন
আবিরঃ চিনি হবে এক কাফ
তিথিঃ কিইইই
আবিরঃ হুম প্রতিবেশী রা তো এমন করে তাই না,,আসলে আমি উপরের তলার নতুন ভাড়াটিয়া আর তোমার প্রতিবেশী তো এক কাফ চিনি হবে
তিথিঃ নাই চিনি যেতে পারেন এখন
আবিরঃ তুমি যে কিপটা তা আমি জানি তাই তুমি আমাকে চিনি দিবে না যাও সরো এখন
তিথিঃ কি আমি কিপটা??
আবিরঃ বাহা অনেক দিন পর সত্যি শিকার করলে,,(তিথিকে হাল ধাক্কা দিয়ে ভিতরে ডুকে যায়)
তিথিঃ এতো বড় সাহস আমার বাসায় আমাকে ধাক্কা দিয়ে ডুকে গেছে এই লোক কে তো আজ আমিইইই
আবির সোজা ঘরের মধ্যে ডুকে যায়,,মামানিকে দেখে সালাম দেয়,,তিথি ও পিছনে পিছনে যায়,,তিথি নাক ফুলিয়ে বলে
তিথিঃ আমাদের বাসার চিনি শেষ আপনি যেতে পারেন
আবিরঃ মিস বকবক আমি তোমার কাছে আসি নাই আমি আমার জানেমান এর কাছে এসেছি হুর
তিথিঃ কিইই জানেমান কে আবার
আবির মামানিকে জড়িয়ে ধরে বলে
আবিরঃ এই টা ওকে মিস ঝগড়াটি আন্টি
তিথিঃ কিইই আমি আন্টি আজকে তো আমি তোকে
মামানিঃ আহা তিথি কি হচ্ছে কি এই ভাবে কেন কথা বলছিস
তিথিঃ মামানি এখন এই বজ্জাত লোক কে বলবে আমার বাসা থেকে বের হতে,,
আবিরঃ দেখলে মামানি বাসায় মেহমান আসলে কি ভাবে ব্যবহার করে,,,পরে লোকে বলবে তুমি শিখিয়ে দিয়েছো এমন কথা বলতে
তিথিঃ আমার বাসা থেকে এখন বের হবি শয়তান এই টা আমার বাসায় যা ভাগ,,
মামানিঃ তিথি একদম চুপ
মামানি আবিরের মুখে হাত বুলিয়ে জিজ্ঞেস করে
মামানিঃ কেমন আছো বাবা

আবিরঃ আলহামদুলিল্লাহ ভালো কিন্তু আমি অনেক রেগে আছি আপনার উপর আপনারা ঢাকা থেকে চলে আসলেন এই ভাবে একটা বার বলা ও প্রয়োজন মনে করেন নাই
মামানিঃ আব কিছু এতো তাড়াহুড়ো করে হয়েছে যে কি বলবো
তিথিঃ মামানি যাকে তাকে আমাদের ব্যাপারে কেন বলছো
আবির উঠে তিথির সামনে আসে আর তিথির নাক টা টেনে বলে
আবিরঃ ঝগড়াটি আন্টি জি আমি যে সে না ওকে আমি হলাম মামানির জানেমান ওকে নাও চুপ
তিথি নাকে হাত দিয়ে পুরো বেক্কল হয়ে যায়,,,তিথির নাক এমন ভাবে টান দিয়েছে যে তিথি তাকিয়ে আছে আবিরের দিকে এই দিকে আবির মামানির সাথে গল্প করতে থাকে,,নাক মুখ সব ফুলিয়ে আবিরের দিকে তাকিয়ে আছে
তিথিঃ অফিসে তো শান্তি দেয় না এখন বাসায় ও,, উফফফ আল্লাহ আর কেউ ছিলো না প্রতিবেশী করতে শেষ মেষ এইবিপজ্জনক বজ্জাত
তিথির এমন মেজাজ খারাপ হচ্ছে যে তার ইচ্ছে করছে আবিরের গলা চেপে ধরতে আর আবির তো মামানির সাথে যা গল্প তা দেখে তিথি তেলে বেগুন ভাজা হয়ে যাচ্ছে,,,,
চলবে,,,,,,