বজ্জাত বস রোমান্টিক হাজবেন্ড !! Season -4 !! Part- 32
সবাই তিথিকে জড়িয়ে ধরে,,,তিশা কে সবাই অনেক টা আপন নেয়,,,সবাই তিশার সাথে ও অনেক গল্প করে,,তিশা তিথিকে পেয়ে বাড়ির সবাই আজ অনেক হেপ্পি,৷
তিথি তার মায়ের কাছে গিয়ে বসে,,মাকে জড়িয়ে বলে
তিথিঃমামনি জানো আমি কাল রাতে কিছু খাই নাই,,তুমি বলো আমি কি আজ পর্যন্ত রাতে না খেয়ে ছিলাম?
তিথির মাঃ না তা তো কখনো করিস নাই,,তুই ঝগড়া আর খাওয়া এই দুইটা জীবনে ছাড়তে পারবি না যত যাই হোক,,,
সবাই তিথির মায়ের কথা শুনে হেসে দেয়,,,আবির তো আরো
আবিরঃ মামনি জানো আপেল গাছে নাকি কমলা ও ধরে৷
আমানঃ হাহা নতুন আবিস্কার,,,,
আরিশাঃ কে বলেছে ভাইয়া??
আবিরঃ আর কে তোর এলিয়েন ভাবি,,,
তিথিঃ ওহ হ্যালো আপেল গাছে একদিন কমলা ধরবে ওকে, আর তা একদিন হবে ইনশাআল্লাহ,,,
তিথির মাঃ আবির আমার মেয়ের কাছে সব সম্ভব৷,,,বলেছিলাম না যে তাকে যারা নিয়ে গেছে তাদের চিন্তা হচ্ছে আমার এখন বুজলে তো কেন,,,,
আমানঃ হ্যাঁ আন্টি এইটা ঠিক বললেন,৷ আপনার কথা যে পুরো সত্যি তা আমরা সবাই প্রমাণ ফেলাম,,আর জানেন আন্টি যা যা রেসিপি তিথি ওদের খাওয়াইছে আল্লাহ রে ওরা জেলটা এখন সেভ ভাববে তাদের জন্য,,,
সবাই এক সাথে হেসে দেয়,,,তিশা শুধু তাকিয়ে আছে তিথির দিকে তিথি কেমন যেন চুপচাপ,,,তিথির কাছে এসে বসে
তিশাঃ ঠিক আছো???
তিথিঃ আমার কি হবে?
তিশাঃ না মানে তুমি চুপচাপ ওরা মজা করছে,,
তিথিঃ দূর আমি এমনি চুপ,,,
তিশাঃ ওহ আচ্ছা,,,
দাদিমাঃ আচ্ছা ওদের রেস্ট করতে দাও সবাই,,আর তিথিকে রেস্ট করতে হবে বেশি কারণ ওর হাতে লেগেছে অনেক,,,
আবিরের মাঃ হ্যাঁ সবাই রেস্ট নে আমি সবার জন্য খাবার এর ব্যবস্থা করছি,,
তিশাঃ আন্টি আমার যাওয়া উচিত,,, চাচা চাচি অনেক টেনশনে আছে হয়তো আমাকে দেখলে খুশি হবে ওদের জানানো হয় নাই,,,
আবিরের মাঃ সে কি চলে যাবে??এখন যেতে হবে না আমান তুই ওর ফ্যামিলি কে কল করে এখানে আসতে বল,, আর তুমি তিশা এখানে আজ দিন টা থাকো তারপর না হয় যাইও,,,
তিশাঃ আচ্ছা আন্টি,,,
খালামনিঃ তো তিশা তোমার কে কে আছে?
কথাটা শুনে মনটা ছোট হয়ে যায়,,,তবুও মুখে হাসি রেখে বলে
তিশাঃ চাচা চাচি আর চাচাতো দুইটা ভাই,,,
আবিরের মাঃ কেন তোমার বাবা-মা কই?
তিশাঃ ওরা বেঁচে নাই আন্টি,,,এক্সিডেন্টে মারা যায় অনেক বছর আগে,,,(মনটা মলিন করে)
আবিরের মাঃ বা রে আমরা বুজি ফ্যামিলি না,,আজ থেকে তুমি ও আমাদের বাসার একজন সদস্য বুজলে মেয়ে,,,আর হ্যাঁ নিজেকে কখনো একা মনে করবে না মনে রাখবে এই ফ্যামিলি তোমার ও,,,
তিশা উঠে আবিরের মাকে জড়িয়ে ধরে,,,আমান এই মুহূর্ত গুলো দেখে খুব হেপ্পি এই ভেবে যে তিশার মুখে আজ হাসি,,,
আরিশা তিশার কথা গুলো শুনে খুব কষ্ট পায়,,মেয়েটা আসলেই মায়াবী যার জন্য আমান তাকে এতো ভালোবাসে,, আর তার কথা গুলো ও মিষ্টি অনেক,,,,
এই দিকে তিথি চুপচাপ অন্য দিকে একা একা বসে আছে,,সবাই নিজের মত কথা বলছে হাসছে তিথি চুপচাপ ভাবছে আবির এমন কেন বললো,,,
তিথিঃ(আচ্ছা উনি আবেগ ভালোবাসা আমাদের মাঝে নাই এইটা বলার কি দরকার ছিলো? উনি কি একটু ও এইটা ভাবে না যে এইসবে আমার কষ্ট হয় কিন্তু আমার বা কেন কষ্ট হয় উনার জন্য,,,,উনি তো বলেছে আমাদের সম্পর্কে না আছে ভালোবাসা না আছে আবেগ মানে হলো আমাদের সম্পর্ক টা এমনি, অহ হ্যাঁ হবে না কেন উনি তো আমাকে বিয়ে করেছে শুধু মাত্র আমানের জিএফ ভেবে হু,,,অনেক খারাপ উনি অনেক)
তিথিকে একা দেখে তিথির মা তিথির কাছে এসে বসে,,
তিথির মাঃ আমি জানতাম যে তোর তো কিছু হবে না উল্টো যারা তোকে নিয়ে গেছে তাদের হবে,,
তিথি ভেঙ্গচি দিয়ে বলে
তিথিঃ কেন আমার প্রতি কি তোমার একটু দয়া মায়া লাগে না মামনি??
তিথির মাঃ তা তো লাগে কিন্তু ওই বেচারাদের উপর বুজলি,,,
তিথিঃ তুমি আমার শত্রু সবার মত হু,,,
তিথির মাঃআমার মেয়ে বুজি কোনো কারনে চিন্তিত?
তিথিঃ কেন?এমন কিছু না,,,
তিথির মাঃ না মানে যখন তুমি কাউকে মেরে আসতি বা এমন কিছু করতি আমি এইভাবে বলতাম আর তুই পুরো কাহিনী খুলে বসতি কি কি করেছিস এই সেই,,কিন্তু আজ খুব চিন্তিত আর একা একা এখানে বসে আছিস,,,
তিথিঃ এমন কিছু না,,আসলে একটু খারাপ লাগছে তাই,,,
তিথির মাঃ আচ্ছা আয় আমি তোকে তোর রুমে নিয়ে যাই,,,
তিথিঃ হুম আসো,,,,
তিথির মা তিথিকে রুমে নিয়ে যায়,,,তিথিকে শুয়ে দেয়,
তিথির মাঃ আমি থাকবো নাকি চলে যাবো??
তিথিঃ না সমস্যা নাই যাও আমি আছি,,বাবাকে ওষুধ দিয়ে দাও সময় ও হয়েছে,,,
তিথির মাঃ শুন তিথি মন যা করে তাই করবি সব সময় বুজলি,,আর হ্যাঁ তোর মুখে হাসি মানায় এইভাবে চুপচাপ নয় বুজলি পাগলি মেয়ে আমার,,,
তিথির মা চলে যায় নিচে,,,সবাই নিচে হইহুল্লোড় মধ্যে থাকে,,,তিশার চাচা চাচি আর চাচাতো ভাই আহাদ আসে,,আহাদ কে দেখে আরিশা অনেক অবাক হয়ে যায়,,,
আরিশাঃ আহাদ এখানে???
আহাদ আর তার ফ্যামিলি আসে,,,এসে তিশাকে জড়িয়ে ধরে,,তিশা ও কেঁদে দেয় তাদের জড়িয়ে ধরে,,,,আরিশা আহাদের কাছে গিয়ে বলে
আরিশাঃ কিরে তুই এখানে??
আহাদঃ হ্যাঁ তিশা আপু আমার এই কাজিন,,অই যে আমার আপুর কথা বলি এই তো আমার আপু,,,
আরিশা মুচকি হেসে বলে
আরিশাঃ অহ আচ্ছা,,,
সবাই এক সাথে খাওয়া দাওয়া করে,,শুধু তিথি ছাড়া
আবির কিছু টা অবাক হয় যে আজ তিথি খেতে আসে নাই নিচে ভাবে যে খাবার হয়তো উপরে পাঠিয়ে দিয়েছে,,,তবুও মাকে গিয়ে জিজ্ঞেস করে
আবিরঃ তিথি খেয়েছে মা?
আবিরের মাঃ না খায় নাই,,বলেছে ক্ষিধে নাই,,,
আবিরঃ তিথির আর ক্ষিধে নাই এই টা কেমনে সম্ভব,,
আবিরের মাঃ সব সময় মেয়েটাকে নিয়ে একদম মজা করবি না আবির,,,,ডান হাতে গুলি লাগে তাই হয়তো খাইতে পারছে না কত বলেছি খাইয়ে দেই বলে না,,,,
আবিরঃ আচ্ছা আমাকে দাও তো আমি নিয়ে যাই,,,
আবিরের মা খাবার বেড়ে দেয় তাকে,,সে খাবার নিয়ে রুমে যায় গিয়ে দেখে তিথি চুপচাপ বসে আছে,,,কি যেন ভাবছে,,
আবিরঃ আজ ম্যাডাম এর ক্ষিধে নাই যে??
আবিরের আওয়াজে খেয়াল করে যে আবির রুমে এসেছে,,তবুও পাত্তা না দিয়ে চুপ করে আছে
আবিরঃ কি ব্যাপার মিসেস তিতা বকবক আজ এতো চুপ?.
তিথিঃ আপনার সমস্যা কই চুপ যে?
আবিরঃ আমার কেন আবার সমস্যা হবে.??
তিথিঃ তাহলে???
আবিরঃ তাহলে তো কিছু না ম্যাডাম এখন আপনি এই বলেন যে খান নাই কেন?
তিথিঃ ক্ষিধে ছিলো না,,,
আবিরঃ তো ক্ষিধে কেন ছিলো না?
তিথিঃ আমার পেট জানে,,,,
আবিরঃ হুম বুজেছি,,,
তিথিঃ কি বুজেছেন শুনি??
আবিরঃ না তেমন কিছু না,,,আচ্ছা এখন চুপচাপ খেয়ে নিবে৷
তিথিঃ না খাবো না,,আমার খেতে মন চাইছে না,,,
আবির তিথির কথার পাত্তা না দিয়ে ভাত মেখে তিথির মুখের সামনে ধরে বলে
আবিরঃ আজ কিন্তু গরুর কলিজা ভুনা সে হইছে জানো,,,,খেয়ে দেখো কত টেস্টি হইছে
তিথি আবিরের দিকে হা করে তাকিয়ে আছে,,,আবার অন্য দিকে তাকায় না খেয়ে আবির বুজতে পেরেছে তিথি কোনো কারনে রেগে আছে তাই বলে
আবিরঃ তোমার ২২ টা দাঁত ছি
তিথিঃ মানে??
আবিরঃ মানে তোমার দাঁত নাই,,
তিথিঃ আমার দাঁত আছে ওকে,,আপনার নাই
আবির হা করে দেখাই বলে
আবিরঃ দেখো আমার সব আছে তুমি দেখাও তো,,
তিথি হা করে আবির এই সুযোগে তিথির মুখে ভাত দেয়,,,,তিথি পুরো বেক্কল হয়ে যায় আবিরের কান্ডতে,,,
আবিরঃ গরুর কলিজা ভুনাটা অনেক টেস্টি তাই না,,,
তিথিঃ হু,,,(ভাত মুখে নিয়ে)
তিথি ভাত শেষ করতেই আবির খাইয়ে দেয় তিথি ও চুপচাপ খেতে থাকে,,,আর আবির তিথির সে চোখের পলক গুলো দেখছে যা তিথি মিটমিট করছে,,,আবিরের কাছে খুব ভালোই লাগছে তিথিকে খাইয়ে দিতে,,,
কিছু ক্ষনে খাইয়ে দেয়,,,পানি টুকু খাইয়ে দিয়ে যেতে লাগে তিথি বলে উঠে
তিথিঃ রাতে ও কি খাইয়ে দিবেন???
আবিরঃ কেন?
তিথিঃ কেন কি আমার তো হাতে ব্যাথা তাই আর কি বলেছি হু,,
আবিরঃ হুম বুজেছি ম্যাম,,আচ্ছা খাইয়ে দিবো,
তিথিঃ ওকে,,
আবিরঃ আমি প্লেট রেখে আসি,,
তিথিঃ ওকে,,
আবিরঃ আচ্ছা তুমি রেস্ট নাও কিছু ক্ষন ঘুমাও
তিথিঃ না আমার ঘুম পাবে না,,,,
আবিরঃ সারারাত ঘুমাও নাই,,আর শরীর ও দুর্বল আমিও কিছু কাজ সেরে আসি বুজলে,,,
তিথিঃ হু,,,
আবির নিচে চলে যায়,,,
তিথি খুব খুশি এই ভেবে যে আবির তাকে খাইয়ে দিচ্ছে,,,,মনে মনে খুব আনন্দ লাগছে তার,,,আসলে এই আনন্দ টা কেন সে জানে না কিন্তু খুব ভালোই লাগছে তার এই ভেবে যে আবির তার অনেক কেয়ার করে,,
তিথি এইসব ভাবতে ভাবতে কখন যে ঘুমিয়ে পড়ে নিজে ও জানে না,,,,আর আবির ও তার কিছু কাজে বাহিরে যায়,,,
রাতের ১০ টা বেজে যায় তিথি এখনও ঘুম কেউ তাকে ডাকে নাই কারণ শরীর খারাপ তাই,,,তিশা আর তার ফ্যামিলি ও চলে যায় নিজের বাসায়,,তিথি মা-বাবারা ও,,,
আবির তার কাজ গুলো সেরে আসে,,সবাই কে হলরুমে দেখে আবির বলে
আবিরঃ কি ব্যাপার সবাই এখানে তিথির সাথে কে?
আরিশাঃ কেউ নাই ভাইয়া কারণ ভাবি ঘুমাচ্ছে এখনও,,,
আবিরঃ এখনও ঘুম???
আরিশাঃ হ্যাঁ ভাবি তো দুপুরে ঘুমাইছে আর উঠে নাই আমরা কেউ ডাকি নাই কারণ শরীর খারাপ তাই,,,
আবিরঃ হুম বুজেছি,,,আচ্ছা মা তিথির খাবার টা আর আমার টা উপরে পাঠাই দিও আমি ফ্রেশ হয়ে নেই তত ক্ষনে,৷
আবিরের মাঃ আচ্ছা যা,,,
আবির রুমে গিয়ে দেখে বাচ্চাদের মত তিথি ঘুমাচ্ছে,৷ চেহারায় না আছে কোনো টেনশন না কিছু,,,আবির ফ্রেশ হয়ে নেয় তারপর তিথির পাশে বসে কিছু ক্ষন,,,,
তিথির চেহারার দিকে অনেক ক্ষন তাকিয়ে থাকে দেখতে মায়াবী আর ঘুমান্ত চেহারা কেন জানি খুব ভালো লাগছে তার কাছে,,,তিথির কপাল থেকে চুপ গুলো সরিয়ে দেয়,অজান্তেই খুব ইচ্ছে করছে তিথির কপালে চুমু দিতে কিন্তু ভাবছে যদি বুজে যায়,,,
আবিরঃ তিথি তো ঘুমাচ্ছে তাহলে বুজবে কি করে?
একটু ভাবে তারপর সে তিথির কপালে আলতো করে চুমু দিয়ে দেয়,,,তিথির চোখে ও ইচ্ছে করছে চুমু দিতে যখনই দিতে যাবে দরজায় কড়া পড়ে,,
খাদিজাঃ ভাইজান খাবার,,,
আবির তাড়াতাড়ি সরে যায়,,,
আবিরঃ হ্যাঁ নিয়ে আয়,,
তিথি চোখ দুটি মুহূর্তে খুলে খাদিজার দিকে রাগী লুক নিয়ে মনে মনে ভাবে
তিথিঃ(আশার আর সময় পাইলো না উফফফ,,,কিছু ক্ষন পর আসলে কি হতো উফফ একটা চুম্মা আরো পেতাম,,,,,বজ্জাত বেডি একটা হু)
চলবে,,,,,,,,,