বজ্জাত বস রোমান্টিক হাজবেন্ড

বজ্জাত বস রোমান্টিক হাজবেন্ড Season 2 !! Part- 35

আবির কেবিনের সামনে গিয়ে দরজার বাহিরে থেকে তিথিকে দেখে তিথির মুখে অক্সিজেন মাকর্স লাগানো,,,,, আবিরের চোখ বেয়ে অজোরে পানি গড়িয়ে যাচ্ছে,,,,,বুকের মধ্যে যেন কেউ ছুরি মেরে দিচ্ছে,,, মনে হচ্ছে তার কলিজা দুই ভাগ করে দেয় কেউ😭😭😭😭😭
দুই বছর পর,,,,,,,,,,,
তিথিঃ এই বজ্জাত এনাকন্ডা আমায় বুকে জড়িয়ে ধরে ঘুমাও না প্লিজ,,,খুব ইচ্ছে করছে তোমার বুকে মাথা রাখতে ওই বজ্জাত এনাকন্ডা তুমি কি শুনছো
আবির তিথির হাতটা ধরে নিজের বুকে জড়িয়ে ধরে আর কপালে চুমু দিয়ে বলে
আবিরঃ বাহা আমার বউকে তো লাল শাড়িতে বেস মানাইছে যেন লাল পরী😍😍
তিথিঃ সব সময় তোমার কাছে পরী লাগী কোন দিন পেত্নী লাগছি বলবে???
আবিরঃ আমার বউ যে এতো সুন্দর তাকে যতো দেখি প্রেমে পড়ি,,,এই তোতাপাখি আমার বুকে মাথা রেখে চুপচাপ ঘুমায় আর একটা কথা বলবে কিস করে দিবো কিন্তু 😜😜
তিথি চুপচাপ আবিরের বুকে মাথা রেখে ঘুমিয়ে পড়ে,,,কিছু ক্ষন পরে তিথি হঠাৎ ছাদে চলে যায় আর ছাদ থেকে নিচে পরে যায়,,,,
আবিরঃ তিথিইইইইইইইইইই
আবির লাফ দিয়ে উঠে দেখে চারপাশে আলো হয়ে গেছে তার মানে সকাল হয়ে গেছে,,,,পুরো শরীর ঘেমে গেছে কলিজা পুরো শুকিয়ে গেছে তিথিকে ছাদ থেকে আবার পড়তে দেখতে,,,,
আবির তাড়াতাড়ি উঠে খাটের দিকে তাকিয়ে দেখে বিছানায় খুব সুন্দর করে ঘুমিয়ে আছে তার ঘুমপরী,,,৷ মুখে অক্সিজেন মার্কস লাগানো,,,,আবিরের পুরো রুমে তিথি ছবি,,,,আবির তিথির পাশে গিয়ে তিথির হাতে হাত রেখে কিছু ক্ষন তিথির দিকে তাকিয়ে থাকে আর বলে
আবিরঃ আমি বলেছিলাম তিথি যে তোমার এই মায়াবী ঘুম আমি সারাজীবন দেখতে রাজি কিন্তু এই ভাবে না,,, প্লিজ তিথি উঠে যাও প্লিজ,,,আমার খুব কষ্ট হচ্ছে তোমাকে ছাড়া আর পারছি না,, দুই বছর হয়ে গেছে প্লিজ এই বার তো উঠে যাও,,,আর কতো ঘুমাবে,৷ আমার কলিজা ভালো তো প্লিজ তিথি উঠে যাও প্লিজ আর পারছি না 😭😭😭😭😭

আবিরের চোখ বেয়ে পানি গড়িয়ে পড়ছে,৷ প্রত্যেক দিন তার দিন শুরু হয় তিথি থেকে আর শেষ হয় তিথি থেকে,,,,
দেখতে দেখতে দুইটি বছর কেটে যায়,,,এই দুই বছরে আবির যে কতো কষ্ট পেয়েছে তা শুধু তার পরিবার দেখেছে,,, প্রত্যেকটা মুহূর্তে তিল তিল করে শেষ হয়েছে নিজের মাঝে শুধু বেঁচে আছে একটায় আশায় যে তার তিথি জেগে উঠে বলবে এই মিস্টার এনাকন্ডা,,,,,
আবিরের কাছে তিথির সাথে কাটানো প্রত্যেকটা মুহূর্তেই বেঁচে থাকার কারণ ছিলো,,,কিন্তু তিথির মুখে একটা শব্দ শুনার জন্য পুরো পাগল হয়ে পড়ে,,,,
হাসপাতাল থেকে তিথিকে আবিরের রুমে শিফট করা হয়,,, আবির প্রতিদিন ঘুম থেকে উঠে তার ঘুমপরীর সাথে কথা বলে,,,,আবিরের ঘুম তো ধরতে গেলে আসেও না,,,শুধু তার ঘুমপরীর হাতটি ধরে রাত কাটিয়ে দেয়,,,,
আবির পুরো চেঞ্চ তার রাগ যেন হাজার গুণ বেরে যায়,,,,আবিরের রাগ এতো যে সে কাউকে ছেড়ে কথা বলে না,,,,,,
আবির ফ্রেশ হয়ে রেডি হতে থাকে আর তিথির সাথে কথা বলতে থাকে
আবিরঃ জানো তোতাপাখি আমি ভাবছি কি আমাদের যখন বেবী হবে তখন আমি তাকে অনেক কিছু শিখবো,,,কি বলো
তিথিঃ,,,,,,,,,,,,,,,,,

আবির মুখটা মলিন করে টাই লাগাতে লাগাতে বলে
আবিরঃ খুব ইচ্ছে ছিলো তুমি আমার টাই বেঁধে দিবে আর আমার গালে চুমু দিবে,,,ভেবেছিলাম অনেক প্রেম করবো কিন্তু 😔😔😔😔আচ্ছা যাই হোক তুমি তাড়াতাড়ি সুস্থ হয়ে যাও তখন দেখবে কতো আদর করবো তোমায়,,,
আবির টাই লাগিয়ে তিথির পাশে বসে তিথির কপালে চুমু দিয়ে তিথিকে বাই বলে অফিসে যাওয়ার জন্য বের হয়ে যেতে লাগে হঠাৎ নজর পড়ে আয়নার সামনে একটা টেবিলে যেখানে কতো কাচের চুড়ি এনে জমা করে রেখেছে আবির শুধু তার তোতাপাখিকে পড়িয়ে দিবে বলে,,,,
পিছনে ফিরে আবার তিথির দিকে এক বার তাকিয়ে দেখে কি সুন্দর করে না ঘুমাচ্ছে তার ঘুমপরী,,,,,
আবির নিচে নেমে দেখে তার মা নাস্তা নিয়ে বসে আছে,,,,
আবিরের মাঃ আবির নাস্তা করে নে
আবিরঃ ক্ষেধে নাই মা
আবিরের মাঃ প্রত্যেক দিন তোর ক্ষেধে থাকে না😢আর কতো কষ্ট পাবি আর কতো আমাকে দিবি বল
আবিরঃ,,,,,,,,,৷ ,,,
আবিরের মাঃ যখন থেকে তিথি কোমায় গেছে আমি আমার আবিরকে হারিয়ে ফেলছি,,,,দুই বছর হয়ে গেছে আবির আর কতো কষ্ট পাবি😢😢
আবিরঃ মা আমার তিথি
আবিরের মাঃ হ্যাঁ তিথি শুধু তিথি আমাদের তো তুই চোখে ও দেখিস না,,,,আমি তো মা বল নিজের সন্তানের আর কতো কষ্ট দেখবো,,,
আবিরঃ মা আমার ভালোবাসা জিন্দা লাশ হয়ে আছে,,,তুমি বলছো আমি হাসি খুশিতে লাফাই
আবিরের মাঃ আমি তা বলি নাই
আবির তার মাকে জড়িয়ে ধরে বলে
আবিরঃ মা আমার সুখ তিথির কাছে,,, খুব ভালোবাসি ওকে মা খুব,,,,জানো মা বুকের মধ্যে খুব ব্যাথা হয় যখন দেখি তিথি ওই অক্সিজেন মার্কস মুখে দিয়ে শুয়ে আছে,,,মা দুই বছর হয়ে গেছে এখনও কেন সে উঠছে না,,,,
আবিরের মা আবিরের চোখের পানি মুছে দিয়ে বলে
আবিরের মাঃ আল্লাহ সব ঠিক করে দিবে দেখিস বাবা
আবির চোখের পানি মুছে অফিসে চলে যায়,,,,,
আবিরের মাঃ প্লিজ আল্লাহ তিথিকে ঠিক করে দাও আর পারছি না নিজের ছেলের কষ্ট দেখতে😢😢😢প্রত্যেকটা মুহূর্তে আমার ছেলেটা কষ্ট পেয়েছে প্লিজ আল্লাহ ফিরিয়ে দাও আমাদের তিথিকে
আবির অফিসে যাওয়ার সাথে সাথে সবাই দাঁড়িয়ে যায় সবাই সালাম দেয়,,,আবিরের সে রাগী ফেস যা দেখে সবাই ভয় পায়,,,,শুধু একটা মেয়ে ছাড়া জয়েন করেছে মাত্র তিন মাস আর এই তিন মাসে আবিরের প্রতি তার ভালো লাগা কাজ শুরু করে দেয়,,,নাম মিথিলা৷৷ ,, আবিরের উপর সে ভাবে ক্রাশ খেয়েছে খাবে না কেন আবির যে আগে থেকে আরো হ্যান্ডসাম লাগছে,,৷ চোখে সাদা চশমা,,,রাগী ফেস,,,,আর সে খোচা খোচা দাঁড়ি
মিথিলা আবিরের দিকে মুগ্ধ নয়নে তাকিয়ে আছে,,,পিছন থেকে রাফি এসে মিথিলাকে বলে
রাফিঃ স্যার এর উপর ক্রাশ খেয়ে লাভ নাই সে কখনো তোমাকে লাভ করবে না,,,
মিথিলাঃ কেন?আমি কি দেখতে খুব বাজে,,,আমি কি স্যার এর যোগ্য না??
রাফিঃ এমন নয় মিথিলা,,,স্যার আগে থেকে একজনকে খুব ভালোবাসে,,
মিথিলাঃ কি???
রাফিঃ হ্যাঁ স্যার আমাদের তিথিকে খুব ভালোবাসে,,,
মিথিলাঃ তিথি???
রাফিঃ হ্যাঁ তিথি,,,,মেয়েটার নাম তিথি,,,এই অফিসে জব করতো প্রচুর দুষ্টু ছিলো,,,সবাই স্যারকে ভয় পাইতো এক সে ছাড়া,,,স্যার তাকে কিছু বললে উল্টো স্যারকে বলে চুপ করাই দিতো,,,,,,প্রচুর বাচাল ছিলো,,,খুব ভালো একটা মেয়ে, দেখতে খুবই সুন্দর,,,স্যার আর তিথি একে অপরকে অনেক ভালোবাসতো তাদের ভালোবাসা দেখে সবাই তাদের পারফেক্ট জুটি বলতো,,,
মিথিলাঃ এখন কথায় তিথি??
রাফিঃ কোমায়
মিথিলাঃ কি😱😱😱কি ভাবে
রাফিঃ দুই বছর আগে স্যার আর তিথির বিয়ে হওয়ার কথা ছিলো অনেক সুন্দর ভাবে তাদের প্রত্যেকটা বিয়ের অনুষ্ঠান হয়েছে,,,,তাদের বিয়ের দিন এক অমানুষ এর জন্য সব শেষ হয়ে যায়,,,সে ও তিথিকে ভালোবাসতো,,,সে তিথিকে পাবে না তাই আবির স্যার এর আও হতে দেয় নাই,,আর ছাদ থেকে ধাক্কা মেরে ফেলে দেয় তাদের বিয়ের দিন,,,নতুন বউ সেজেছে তিথি ওই দিন আর সে দিন তাকে😢😢😢😢
মিথিলাঃ স্যার খুব ভালোবাসে তাই না???
রাফিঃ হ্যাঁ খুব ভালোবাসে তিথিকে,,,,আজও তিথির জন্য অপেক্ষা করছে যে সে উঠে যাবে,,,
মিথিলাঃ একটা ছেলে একটা মেয়েকে এতো ভালোবাসে,,,স্যার এর জন্য আজকে আমার মনে আরো সম্মান আর,,,,,,,,,,,
আবির কাজ করতে এতো ব্যস্ত যে কখন কফি দিয়ে গেছে যে খাওয়ার সময় টুকু ও নাই,,,মিথিলা আবিরের সামনে ফাইল নিয়ে দাঁড়িয়ে আছে,,,আবিরের ফোনে ফোন বার বার বাজছে
মিথিলাঃ স্যার আপনার ফোন
আবিরঃ হুম

মিথিলাঃ স্যার হয়তো বাসা থেকে দিচ্ছে
আবির ফোনে তাকিয়ে দেখে হ্যাঁ বাসা থেকে দিচ্ছে তাড়াতাড়ি রিসিভ করে
আবিরের মাঃ আবির তাড়াতাড়ি বাসায় আয় তিথি
তিথি নাম টা শুনে আবির দাঁড়িয়ে যায়,,, ভয়ে তার কলিজা শুকিয়ে যায়,,সব কিছু ফেলে দৌড়াতে থাকে,,, গাড়ির দরজা খুলে সিটে বসে ড্রাইভ করছে,,,হার্ট বিট যেন বেরে গেছে,,,তাড়াতাড়ি বাসায় এসে দূরে রুমে গিয়ে দেখে সবাই এক হয়ে দাঁড়িয়ে আছে,,অনেক কষ্ট সবার ভিড় থেকে সরে সামনে গিয়ে যা দেখে আবির নিজের মধ্যে আর নাই,,,,আবিরের সামনে তিথি হালকা শুয়া হয়ে আছে,,,
তিথি আবিরকে দেখে মুচকি হেসে দেয়,,,চোখ বেয়ে পানি গড়িয়ে পড়ে তিথির,,,আবির দূরে গিয়ে তিথিকে জড়িয়ে ধরে আর পাগল মতো কান্না করে দেয়,,,,
সবাই আবিরের কান্না দেখে কান্না করে দেয়,,,আবিরের মা সবাইকে নিয়ে বাহিরে চলে যায়,,,
তিথিঃ প্লিজ কান্না করিয়েন না,,আমার খুব কষ্ট হয় আপনি কান্না করলে প্লিজ
আবিরঃ তোতাপাখি😭😭😭😭😭😭😭😭
তিথিঃ এই মিস্টার বজ্জাত এনাকন্ডা যদি আর এক বার কান্না করো না তাহলে তেলাপোকার ভর্তা খাওয়ামু হুম
আবির তিথিকে শক্ত করে জড়িয়ে ধরে বলে
আবিরঃ আমার খুব কষ্ট হয়েছে তিথি তোমাকে ছেড়ে থাকতে এই দুই বছর 😭😭😭😭প্লিজ আমাকে ছেড়ে যাইও না প্লিজ তিথি😭😭😭
তিথিঃ আমি আর কোথায় ও যাবো না,,,😢😢😢এতো ভালোবাসেন কেন??😭😭😭
আবিরঃ আমার তোতাপাখিকে ভালো না বেসে কা কে বাসবো,,,
তিথি আবিরের গালে দুই হাত রেখে চুমু দিয়ে বলে
তিথিঃ আপনাকে অনেক হ্যান্ডসাম লাগছে😍
আবির তিথির গালে চুমু দিয়ে তিথিকে আবার জড়িয়ে ধরে,,,আবিরের খুশি কা যে বলে,, তার খুব খুশি লাগছে এই টা ভেবে যে তার তিথি তার কাছে ফিরে এসেছে,,,,আবিরের ধৈর্য আর ভালোবাসা তিথিকে ফিরিয়ে নিয়ে এসেছে আবিরের কাছে,,,
চলবে