বজ্জাত বস রোমান্টিক হাজবেন্ড Season 2 !! Part- 34
আবির দূরে এসে নিচে তাকিয়ে দেখে লাল রং এ রক্ত গুলো পুরো মেঝেতে ভরে গেছে,,আর তিথি তার মাঝে শুয়ে আছে,,,,,
আবিরঃ তিথিইইইইইইইইইইইইইই😭😭😭😭😭😭😭😭
আবিরের পুরো দুনিয়া যেন এক মুহূর্তে শেষ হয়ে যায়,,,,আবিরের মা পুরো বরফ হয়ে যায়,,,সবার হাত পা পুরো বরফ হয়ে পড়ে,,,,মুহূর্তে যেন সব কিছু শেষ হয়ে যায়,,,,
আবির দূরে সিড়ি দিয়ে নিচে নামে,,,দূরে যেতে সে সিড়ি থেকে পড়ে যায়,,,,মাথায় কিছুটা লাগে এতে তার একটু ও খেয়াল নাই কারণ তার পুরো দুনিয়া তো নিচে মেঝেতে শুয়ে আছে,,,,
পুরো বাড়ির মেহমান সহ আবিরের পিছনে যায়,,,,আবির দুরে গিয়ে দেখে তার তিথি রক্তাক্ত অবস্থা মেঝেতে পড়ে আছে,,,রক্ত পুরো মুখটা ভরে গেছে,,,,,আবির তিথির পাশে ধুপ করে বসে পড়ে,,,তিথির মাথাটা নিজের কোলে নিয়ে তিথির মুখ থেকে রক্ত গুলো মুছে দিয়ে তিথির হাতটা শক্ত করে ধরে বলে
আবিরঃ তি,,,,থি,,,এই তোতাপাখি দেখো আ,,,মি তোমার বজ্জাত এনাকন্ডা 😭😭😭প্লিজ তোতাপাখি উঠে দেখো একবার 😭😭😭
আবিরের কান্না দেখে সবাই কান্না করে দেয়৷, বড্ড বেশি যে ছেলেটা ভালোবাসে মেয়েটাকে,,, ,,যে রহমান বাড়ি খুশিতে মেতে উঠছে এতো যেন মুহূর্তে যেন দুঃখের ছায়া এসে ঘিরে ধরেছে,,,,,,,পুরো বাড়ির খুশি যেন মেঝেতে শুয়ে আছে তিথির সাথে 😢
শিহাব দাঁড়িয়ে থমকে যায় আবিরের কান্না দেখে,,,,,আবির যে তিথিকে খুব ভালোবাসে তা আর বুজতে বাকি রইল না,,,,,আমান আবিরের কান্না দেখে নিজের চোখের পানি ধরে রাখতে পারে নাই,,হঠাৎ শিহাবের দিকে নজর পড়ায় আমান গিয়ে শিহাবের কলার চেপে ধরে মারা শুরু করে,,,আমান আর আকাশ মিলে ইচ্ছে মত শিহাবকে মারে,,,বাড়ির সব ছেলেরা মিলে অনেক মারে শিহাবকে,,,,
আবির এখনও তিথির রক্তাক্ত দেহটা নিয়ে পড়ে আছে,,,,
একজন প্রতিবেশিঃ ইসস আজকে মেয়েটা নতুন বউ সেজেছে,,,,, কতো স্বপ্ন নিয়ে সে আজকে বউ সেজেছে আর আজকেই তাকে দুনিয়া ছেড়ে চলে যেতে হলো বেচারি অল্প বয়সে মারা গেলো,,,,
মারা গেলো কথাটা শুনে আবির প্রচুর রেগে যায়,,,
আবিরঃ আমার তিথি বেঁচে আছে বুজলেন আমার তিথি আমাকে ছেড়ে কথায় ও যেতে পারে না(চিৎকার করে বলে))
আবিরের মা আবিরের পাশে বসে তার ঘাড়ে হাত রেখে বলে
আবিরের মাঃ আবির তিথিকে নিয়ে হাসপাতালে চল বাবা প্লিজ,,,তিথির কিছু হবে না ওকে তাড়াতাড়ি ওকে নিয়ে চল
আবিরঃ হ্যাঁ আমার তিথির কিছু হবে না,,আমার তিথি আমাকে ছেড়ে যাবে না কথায় ও,,,,সে ঠিক আছে
আবির চোখের পানি মুছে তাড়াতাড়ি তিথিকে কোলে করে দুরাতে থাকে আর বলতে থাকে
আবিরঃ আমি থাকতে তোমার কিছু হবে না,,,যতো ক্ষন আমার নিশ্বাস আছে তোমার কিছু হবে না ওকে,,,,
আবির তিথিকে নিয়ে গাড়িতে উঠে বসে আবিরের যেন প্রাণ সাথে নাই,,আমান দূরে এসে গাড়িতে বসে আর ড্রাইভ করা শুরু করে,,,,আবির তিথির মাথাটা নিজের কোলে রেখে তিথিকে অনেক কিছু বলছে, অনেক ক্ষন পর তিথির চোখ দুটো আস্তে করে খোলায় আবিরের জানে যেন পানি আসছে,,,
আবিরঃ তোমার কিছু হতে দিবো না আমি😢😢😢ঠিক হয়ে যাবে তুমি😢😢আমায় ছেড়ে কথায় ও যাবে না তুনি😢😢তুমি শুধু আমার আমাকে ছেড়ে প্লিজ যাইও না😢😢মরে যাবো আমি প্লিজ তিথি😢😢আমরা এখন হাসপাতালে চলে আসবো আর তুমি ঠিক হয়ে যাবে ওকে
তিথি হালকা একটু মুচকি হেসে আবিরের গালে অনেক কষ্টে এক হাত রেখে বলে
তিথিঃ আ,,,মি আপনার মাঝে আছিই,,,,প্লিজ কান্না করিয়েন না,,,,আমি আপনার মাঝে সারাজীবন থাকবো,,,আপনাকে ছেড়ে আমি কথায় ও যাবো না,,,,, প্লিজ কান্না বন্ধ করেন প্লিজ
আবির তিথির মাথায় পাগলের মত চুমু দিয়ে বলে
আবিরঃ তোমার কিছু হলে আমি মরে যাবো প্লিজ আমাকে ছেড়ে যাইও না প্লিজ তোতাপাখি,,,এই তোতাপাখি প্লিজ আমায় ছেড়ে যাইও না 😢😢😭😭😭
তিথি আস্তে আস্তে আবিরের সাথে কথা বলছে কথা বলতে তার খুব কষ্ট হচ্ছে তার পর ও সে বলছে জানে আবিরের অবস্থা খুব খারাপ তার এই অবস্থা দেখে,,,তিথি মুচকি হেসে আবিরকে বলে
তিথিঃ আমার স্বপ্ন পূরন করবেন তো???
আবিরঃ হ্যাঁ তুমি সুস্থ হয়ে আসো তারপর আমাদের বিয়ে তারপর আমাদের বেবী তাদের বিয়ে দিবো তারপর তাদের ছেলেমেয়ে তাদের বিয়ে দিয়ে আমরা আবার হানিমুনে যাবো কেমন,, অনেক ঘুরবো আমার তোতাপাখিকে নিয়ে,,,
তিথি একটু মুচকি হেসে আবিরের নাকটা আস্তে করে ধরে,,,
আবিরের কথা শুনে আমান হেসে দেয়,,এমন মুহূর্তে হাসি আসে না ঠিক কিন্তু আবিরের কথা শুনে না হেসে ও পারে না,,,আবির আমানের দিকে তাকিয়ে বলে
আবিরঃ ফাস্ট ড্রাইভ কর আমান প্লিজ
আমানঃ আর একটু আবির আমরা এসে গেছি অনেক টা,,,,,,
তিথির চোখ দুটো যেন বন্ধ হয়ে আসছে,,চোখ দুটো পুরো ঝাপসা হয়ে যাচ্ছে,,,, আবিরকে ডাবল ডাবল লাগছে তিথির,,,অনেক কষ্টে তিথি আবিরকে বলে
তিথিঃ আমায় শক্ত করে একটু জড়িয়ে ধরবেন প্লিজ
আবির তাড়াতাড়ি তিথিকে জড়িয়ে ধরে বুকে আগলে নেয়,,,,, তিথির কপালে চুমু দিতে থাকে,,,,কিছু ক্ষন পর তারা হাসপাতালে চলে আসে তখন আবির তিথিকে কোলে নিয়ে দুরাতে থাকে কিন্তু তিথির কোনো আওয়াজ শব্দ নাই😢😔আর না কোনো নড়াচড়া 😢😢
আবির চিৎকার করে ডাক্তারকে ডাকছে
আবিরঃ ডাক্তার ডাক্তার
কিছু নার্স আর ডাক্তার দূরে এসে দেখে আবিরের কোলে তিথি,,,তারা তাড়াতাড়ি তিথিকে আই সি ইউতে নিয়ে যায় আর চিকিৎসা করা শুরু করে,,,
আবিরের পুরো পরিবার আসে,,,,আবির সিটে বসে থাকে গালে হাত দিয়ে আর তিথির জন্য কান্না করতে থাকে,,,,,
আমান আকাশকে দেখে বলে
আমানঃ শিহাবের কি করেছিস???
আকাশঃ ওকে এমন ধুলাই দিচ্ছি যে উঠে ও দাঁড়াতে আর পারবে না,,,,আবিরের মামাদের জন্য আর পারি নাই তারা পুলিশ ডেকে আনছে আর শিহাবকে নিয়ে যেতে দেয়,,শালাকে ইচ্ছে মত পিঠাইতে বলছি ওই খানে
আবিরের মা আবিরের পাশে গিয়ে বসে,,আবিরের ঘাড়ে হাত রেখে বলে
আবিরের মাঃ সব ঠিক হয়ে যাবে আবির দেখিস তিথি সুস্থ হয়ে যাবে,,,আমাদের কাছে ফিরে আসবে😢😢(নিজেকে অনেক কষ্টে বুজিয়ে আবিরকে বুজাছে,,,)
আবির তার মাকে জড়িয়ে ধরে কান্না করে দেয়
আবিরঃ আম্মু আনি বাঁচবো না আমার তিথিকে ছাড়া আম্মু প্লিজ আমার তিথিকে ফিরিয়ে দাও আম্মুউউউউ প্লিজ 😭😭😭😭😭
নানিঃ নানা ভাই আল্লাহ আছে রে,,,উনি সব ঠিক করে দিবে দেখিস,,,প্লিজ নিজের মধ্যে ধৈর্য্য রাখ
সবাই অনেক চিন্তিত এই টা ভেবে যে কি হবে,,,, নার্স গুলো কেমন ভাবে যেন দুরা দুরি করছে,,,,এই সব দেখে আবিরের বুকটা মুচড়ে উঠে,,,,আবিরের নিশ্বাস যেন বন্ধ হয়ে যাচ্ছে,,,,বুকের মধ্যে কেমন যেন এক কষ্ট হচ্ছে মনে হচ্ছে কষ্ট টা খুবই বেশি বেরে যাচ্ছে,,,,
আবির দূরে গিয়ে একটি নার্সকে জিজ্ঞেস করে
আবিরঃ আমার তিথি ঠিক আছে তো??? 😢😢
নার্সঃ উনার অবস্থা খুবই খারাপ,,,,আপনারা দোয়া করেন আল্লাহর কাছে প্রার্থনা করেন???
আবির তো পুরো থমকে যায়,,,আবিরের বাবা ফোন করে বড় ডাক্তার আনায়,,,,সবাই তিথির জন্য প্রার্থনা করছে,,,এশারের আজান দেয়,,,মেয়েরা তাড়াতাড়ি গিয়ে অযু করে নামাজে বসে,,,,আমান আবিরকে নিয়ে যায়,,,পাশে একটা মসজিদ আছে ওই মসজিদে আবির অযু করে নামাজ পড়ে আর আল্লাহর কাছে তার তিথির জান ভিক্ষা চাইছে,,,,,,
মোনাজাতে চোখের পানি গুলো গড়িয়ে পড়ছে,,,,,আবিরের খুব কান্না পাচ্ছে তার পর ও শক্ত করে আছে,,,,আল্লাহর কাছে প্রার্থনা করে
আবিরঃ হে আল্লাহ আমি কখনো তেমন কিছু চাই নাই,,চাওয়ার আগে তুমি আমাকে দিয়েছো হে আল্লাহ প্লিজ আমার তিথিকে ফিরিয়ে দাও,,,আমি আর কিছু চাই না প্লিজ আল্লাহ আমার তিথিকে ফিরিয়ে দাও,,৷৷ 😭😭😢😭😭😢😭😢
প্রত্যেক মানুষ তিথির জন্য দোয়া করে,,,,সবার প্রার্থনায় আজ তিথির জান ভিক্ষা চাওয়া,,,,
নামাজ আদায় করে আবির হাসপাতালে যায় গিয়ে দেখে এখনও ডাক্তার বের হয় নাই,,,,আই সি ইউর লাল বাতিটি এখনও জ্বলছে,,,,আবিরের বুকে যেন হাজার তুফান বেয়ে যাচ্ছে এই মুহূর্তে,,,
অনেক ক্ষন পর লাল বাতিটি অফ হয় আর ডাক্তার বের হয়ে আসে,,,,,আবির দূরে ডাক্তারের সামনে যায়,,ডাক্তার মাথা নিচু করে রাখে,,,
আবিরের কিছু জিজ্ঞেস করার যেন সাহস নাই,,তারপর ও অনেক কষ্টে জিজ্ঞেস করে
আবিরঃ ডাক্তার আমার তি,,,,থি ঠিক আছে তো 😢😢😢
সবাই ঘিরে ধরে ডাক্তারকে
ডাক্তারঃ আম সরি😔😔😔😔
আবিরঃ সরি মানে???আমার তিথি ঠিক আছে??ডাক্তার প্লিজ চুপ করে থাকবেন না প্লিজ বলুন আমার তিথি ঠিক আছে
ডাক্তারঃ সরি আবির তিথি কোমায় চলে গেছে😔😔😔কখন কোমা থেকে বের হবে জানি না,,,,,হয়তো কিছু দিনে ফিরবে না হয় মাস বা বছর কিন্তু কখন ফিরবে তার ঠিক নাই😔😔
ডাক্তারের কথা শুনে আবির এক পা পিছিয়ে নেয়,,,,,বুকটা যেন কেঁপে ওঠে এই কথা শুনে,,,,আবিরের মা তো কান্না করে দেয় এমন কথা শুনে,,,,,
আবির কেবিনের সামনে গিয়ে দরজার বাহিরে থেকে তিথিকে দেখে তিথির মুখে অক্সিজেন মাকর্স লাগানো,,,,, আবিরের চোখ বেয়ে অজোরে পানি গড়িয়ে যাচ্ছে,,,,,বুকের মধ্যে যেন কেউ চুরি মেরে দিচ্ছে,,, মনে হচ্ছে তার কলিজা দুই ভাগ করে দেয় কেউ😭😭😭😭😭
দুই বছর পর,,,,,,,,,,,