বজ্জাত বস রোমান্টিক হাজবেন্ড Season 2 !! Part- 09
তিথি ড্রাইভারের দিকে রাগী লুকে তাকিয়ে বলে
তিথিঃ আপনি সামনে দেখে গাড়ি চালান,,ফালতু কথা না বলে😡,,,(শয়তান ড্রাইভার তোকে তো ইচ্ছে একটা লাথি দিয়ে আফ্রিকায় পাঠাতে ইচ্ছে করছে আফ্রিকার গন্ডারদের কাছে😡)
আবির তো হাসতে হাসতে শেষ,,,তিথি যে পরিমাণ রাগে ড্রাইভারকে গাড়ি চালাতে বলছে নিশ্চয়ই মনে মনে বেটার চৌদ্দঘুষ্টি এতো ক্ষনে উদার হয়ে যাচ্ছে তা আবির ভালো করে জানে,,,,তিথির খুব বিরক্তি লাগছে আবির তার ঘাড়ে এই ভাবে মাথা রাখায় আবার এক অজানা শান্তি ও লাগছে তা সে নিজেও জানে না কেন…তিথি আবিরের মাথায় হাত দিয়ে দেখে জ্বর টা আরো বেরে গেছে,,,,তিথির তো ভয়ে এখন যায় যায় অবস্থা কারণ সে আবিরকে এই ভাবে তাদের বাসায় নিয়ে গিয়ে কি বলবে,,,যদি আবিরের মা তাকে খুব বকা দেয়,,,কতো কথা যে তিথির মাথায় ঘুরছে ওই সময় ,,,,
হঠাৎ সিএনজিটি একটা বড় বাড়ির সামনে গিয়ে দাঁড়ায়,,তিথি আবিরকে একটু ঝাকুনি দিয়ে বলে
তিথিঃ স্যার এই টা কি আপনার বাড়ি?
আবির একটু মাথা তুলে দেখে হ্যাঁ বলে,,,,তিথি সিএনজি ড্রাইভারকে টাকা দিয়ে আবিরকে শক্ত করে ধরে নামায়,,,র গেটের ভিতরে যেতে তিথি তো পুরো অবাক এতো বড় বাড়ি দেখে
তিথিঃ (এই আমি কথায় এসে গেলাম😱এতো বড় বাড়ি মনে হচ্ছে কোনো প্রাসাদ,,,এতো বড় বাড়িতে এই বজ্জাতটা থাকে এই জন্য হয়তো এতো ঢং হুম)
আবির তিথির দিকে তাকিয়ে বলে
আবিরঃ তুমি এই ভাবে কি দেখছো?
আবিরের কথায় তিথির হুশ ফিরে,,মাথা নাড়িয়ে কিছু না বলে,,,,র ভিতরে যেতে লাগে,,চারপাশে তাকিয়ে তো তিথি আরো হাাা এতো সুন্দর করে বাগান সাজানো চারপাশে কতো সুন্দর সুন্দর ফুল,,,পাশে একটা সুমিং পুলও,,,,তার পাশে একটা টেবিল র এতো সুন্দর করে টেবিলটা সাজানো,,,তিথির তো বাহিরের দৃশ্য দেখে এতো মুগ্ধ যে বাড়ির ভিতরে তার যেতে একটুও ইচ্ছে করছে না,,,তিথি আবিরকে ধরে ভিতরে নিয়ে যেতে লাগে তখন একটা অল্প বয়সী মেয়ে এসে আবিরকে দেখে চিৎকার করে বলে
শিলাঃ খালামা ভাইজান আইছে গো( দূরে ভিতরে গিয়ে)
ভিতর থেকে আবিরের মা দূরে এসে আবিরকে এমন দেখে পুরো কান্না করে দেয় র আবিরকে জড়িয়ে ধরে বলে
মাঃ কথায় ছিলি রাতে কতো চিন্তা হচ্ছে তোর জন্য তা কি জানিস😢কতো ফোন দিয়েছি কিন্তু তোর ফোন বন্ধ এতো টা কেয়ারলেস কি ভাবে হস তুই আবির😢
তিথি আবিরের মায়ের এমন চিন্তা দেখে তার চোখ থেকে এক ফোঁটা জল বেয়ে পরে আজ যদি তার মা ও থাকতো হয়তো তার জন্য ও এমন চিন্তা করতো র এই ভাবে তাকে জড়িয়ে ধরে বকা দিতো,,,,
আবিরের মা আবিরের গায়ে হাত দিয়ে দেখে জ্বরে গা পুড়ে যাচ্ছে,,,আবিরের মা আবিরকে আবিরের রুমে নিয়ে যেতে লাগে কিন্তু একা না পারায় তিথি সাহায্য করে,,,,সিড়ি দিয়ে বেয়ে একটা রুমে আবিরকে নিয়ে যাওয়া হয়,,,রুমটা অনেক বড় চারপাশে এতো সুন্দর করে গুছানো যে তিথি পুরো মুগ্ধ,,,,বিছানায় আবিরকে শুয়ে দিয়ে আবিরের মা তিথির দিকে তাকিয়ে জিজ্ঞেস করে
আবিরের মাঃ কে তুমি মা? র আবিরকে কথায় পেলে র ওর এতো জ্বর আসলো কি ভাবে,,,,(এক নিশ্বাসে সব বলে যাচ্ছে)
তিথি আবিরের মায়ের অবস্থা বুজতে পারছে ছেলের এমন অবস্থা দেখে তিনি যে কতটা চিন্তিত তা সে ভালো করে বুজে,,,তিথি আবিরের মাকে সব খুলে বলে,,,আবিরের মা তো পুরো হতবাক সব কিছু শুনে,,,আবিরের মা তিথির মাথায় হাত বুলিয়ে বলে
আবিরের মাঃ তোমার বাবা-মা হয়তো তোমার জন্য খুব চিন্তা করছে?
আবিরের মায়ের কথা শুনে তিথি মুখ গোমড়া করে ফেলে র চোখ বেয়ে এক ফোঁটা পানি গড়িয়ে পরে,,,আবিরের মা তিথি এমন চেহারা দেখে তিথির মাথায় হাত রেখে বলে
আবিরের মাঃ কি হয়েছে তোমার?
তিথি চোখের পানি মুছে একটু স্বাভাবিক হয়ে বলে
তিথিঃ আন্টি আমার কেউ নাই,,,আমি এতিম ( মুখের কোণায় একটু হাসি এনে,,না চাওয়া সত্যে ও হাসি টা মুখে আনে,,কিন্তু চোখ বেয়ে পানি পরছে )
তিথির কথা শুনে আবিরের মা তিথির চোখের পানি মুছে দিয়ে বলে
আবিরের মাঃ আজকে থেকে নিজেকে এতিম মনে করবে না,,তোমার যখন ইচ্ছে হবে আমার কাছে এসো আমি ও তো তোমার মায়ের মতো তাই না,,
তিথি কি বলবে বুজতে পারছে না,,,এতো অল্প সময়ে কেউ কি ভাবে কাউকে আপন করে নেয় তা তিথি বুজতে পারছে না,,,শুধু মাথা নাড়িয়ে হ্যাঁ বলে,,,আবিরের মা একটু হেসে বাহিরে চলে যায় র তিথিকে আবিরের পাশে বসতে বলে,,,আবিরের মা বাহিরে গিয়ে ডাক্তারকে ফোন দেয় র শিলাকে বলে কিছু খাবার বানাতে ,,,,
তিথি আবিরে পুরো রুমটা ঘুরে ঘুরে দেখছে খুব সুন্দর আবিরের রুমটা,,,বিছানার ঠিক উপরে একটা বড় ছবি আবিরের,,,আবিরকে দেখতে কি না লাগছে ছবিটাতে এতো কিউট র এতো হ্যান্ডসাম লাগছে যে তিথি পুরো হা করে তাকিয়ে আছে,,,আবির একটা বাঁকা হাসি দিয়ে পকেটে দুই হাত রেখে গাড়ির সাথে হেলান দিয়ে দাঁড়ায়,,,আবিরের ছোট ছোট চুল গুলো কপালে পরে আছে,,,,কি না লাগছে আবিরকে উফফ😍😍তিথি তো পুরো হা করে তাকিয়ে আছে আবিরের ছবির দিকে,,,,
আবিরের মা আবিরের রুমে এসে দেখে তিথি দাঁড়িয়ে আছে,,
আবিরের মাঃ কি হলো তিতজি তুমি দাঁড়িয়ে আছো যে?
আবিরের মায়ের কথা শুনে তিথি পিছনে তাকায় র একটা মুচকি হেসে উনার পাশে গিয়ে দাঁড়ায়,,,র ওই সময় একজন ডাক্তার এসে আবিরকে দেখে কিছু ওষুধ দিয়ে যায়,,,,বৃষ্টি এসে আবিরকে এমন অবস্থা দেখে তার মাকে জিজ্ঞেস করে,,,পরে সব জানতে পেরে তিথির সামনে গিয়ে বলে
বৃষ্টিঃ তোমায় কি বলে যে ধন্যবাদ দিবো জানি না,,,,তার পর ও ধন্যবাদ আমার ভাইয়ের খেয়াল রাখার জন্য,,,
তিথি একটু মুচকি হাসে,,,,বৃষ্টি তিথি জামা কাপড় দেখে বুজতে পারছে ভিজা,,,বৃষ্টি তিথিকে নিজের রুমে নিয়ে গিয়ে আলমারি থেকে কাপড় বের করে বলে
বৃষ্টিঃ তাড়াতাড়ি গিয়ে চেঞ্চ করে আসো,,,
তিথিঃ আমি কি ভাবে এই কাপড় পড়বো,,আমি এখন এমনিতে বাসায় চলে যাবো,,,লাগবে না
বৃষ্টিঃ চুপ থাকো তো,,,দেখো আপু তাড়াতাড়ি গিয়ে পরে আসো র হ্যাঁ আমি কিন্তু তোমার ছোট বোনের মতো সো আমার কথা ও রাখতে হবে,,৷ তাড়াতাড়ি যাও
তিথি র কি করার ওয়াশরুমে গিয়ে কাপড় চেঞ্চ করে আসে,,,তিথির খুব ভালো লাগছে আবিরের পরিবারের সাথে দেখা করে,,, অনেক ফ্রি মাইন্ডের তারা,,,,তিথির খুব ভালো লাগছে তাদের সাথে দেখা করে,,,,অজান্তে একটু হেসে দেয়,,,,তিথি কাপড় চেঞ্চ করে রুমে এসে দেখে বৃষ্টি কথায় ও নাই,,,,,বৃষ্টির রুমটা ও যে অনেক সুন্দর করে সাজানো,,,তিথি পুরো রুমটা ঘুরে ঘুরে দেখছে তখন বৃষ্টি এসে তিথিকে দেখে পুরো থমকে যায়,,,তিথিকে কি না লাগছে,,,তিথি বৃষ্টির সামনে এসে একটু ঝাকুনি দেয় র বলে
তিথিঃ কি দেখছো এমন করে?
বৃষ্টিঃ তুমি তো অনেক সুন্দর আপু,,,,,,কি না লাগছে এই ড্রেসে জাস্ট ওয়াও😍
তিথি একটু ব্লাশিং হয়ে বৃষ্টিকে বলে
তিথিঃ ধন্যবাদ,, আচ্ছা আমার না এখন যাওয়া লাগবে বাসায়,,,
পিছন থেকে আবিরের মা এসে তিথিকে বলে
আবিরের মাঃ আজকে কথায় ও যেতে হবে না তোমার,,,এখানে থাকবে র হ্যাঁ তোমার সাথে যে থাকে তাকে বলে দাও,,,,এখন একটু খেয়ে রেস্ট নিবে ঠিক আছে,,,,
তিথিঃ না আন্টি,,,আমি বাসায় যেতে পারবো
আবিরের মাঃ হ্যাঁ আমার কথা কেন রাখবে আমি কে বা হই তোমার,,আচ্ছা যাও( মন খারাপ করে)
তিথি একটু মুচকি হেসে আবিরের মাকে জড়িয়ে ধরে বলে
তিথিঃ সরি আন্টি,,আচ্ছা থাকবো
আবিরের মা তিথির হাত ধরে খাবার টেবিলে নিয়ে যায় ,,র খাবার দেয় তিথি আবিরের মায়ের এমন ব্যবহার দেখে পুরো কান্না করে দেয়,,,
আবিরের মাঃ তিথি কি হলো কান্না করছো কেন?
তিথি কান্না কিছু বলতে পারছে না,,আবিরের মা বুজতে পেরে তিথির পাশে চেয়ার টেনে বসে র নিজের হাতে খাইয়ে দেয় তিথিকে ,,,,তিথির কি না ভালো লাগছে সে বলে বোজাতে পারবে না,,,,,মায়ের ভালোবাসা আদর সে কখনো পায়নি আজ যখন আবিরের মায়ের কাছে এমন ভালোবাসা পাচ্ছে তখন নিজের চোখের পানি র ধরে রাখতে পারছে না,,,আবিরের মা তিথির চোখের পানি দেখে তিথিকে বলে
আবিরের মাঃ কি হলো আবার কান্না করছো কেন? খাবার বুজি মজা হয় নাই?
তিথিঃ না না আন্টি,,,আপনি যা ভাবছেন তা না, খাবার অনেক মজা হয়েছে,আসলে আন্টি এই ভাবে কখনো কেউ আমাকে খাইয়ে দেয় নাই,,,😢আমার মা থাকলে হয়তো এই ভাবে😢😢😢
আবিরের মাঃ আরে পাগল মেয়ে,,,এই ভাবে কান্না করছো কেন? আমাকে নিজের মা মনে করতে পারো,,,র হ্যাঁ একদম কান্না করবে না বলে দিলাম ,, র হ্যাঁ যদি দেখি না একটা থাপ্পড় দিবো,,,,
তিথি মুচকি হেসে মাথা নাড়ায়,,র আবিরের মা তাকে খাইয়ে দিচ্ছে,,,,,
আবিরের একটু ভালো লাগায় নিজের রুম থেকে আস্তে আস্তে বের হয়ে দেখে তার মা তিথিকে নিজের হাতে অনেক যত্নে খাইয়ে দিচ্ছে,,,তিথির দিকে চোখ পড়ায় যেন আবিরের চোখ আটকে যায়,,,একটা গোলাপি কালারের থ্রি পিছ পরেছে,,,,মুখে কোনো সাজ নাই,,চুল গুলো খোপা করা,,,,,তিথিকে যে আবিরের কাছে এতো সুন্দর লাগছে আবির নিজে ও জানে না কেন,,,আবিরের যেন হার্ট- বিট এতো বেরে যায় তিথিকে দেখে মনে হচ্ছে তার বুকের মধ্যে কেউ ঢোল বাজাচ্ছে😂,,৷, আবির তার বুকের বাম পাশে হাত রেখে বড় একটা নিশ্বাস ফেলে র নিজে নিজে বলে
আবিরঃ উফফ এই মেয়েটার মাঝে এমন কি আছে যে বার বার মেয়ে টার দিকে তাকিয়ে থাকতে ইচ্ছে করে,,, এতো মায়াবী,,,,
আবির সিড়ি বেয়ে নিচে নামছে,,র নিজে নিজে আবার বলছে
আবিরঃ আমার মায়ের হাতে খাচ্ছে দেখ কতো সুন্দর কতে,,দাঁড়াও মিস তিতা একটু মজা দেখাই তোমাকে😂
আবির সিড়ি দিয়ে নামছে র নিজে নিজে কথা বলছে,,,,,আবিরকে নামতে দেখে আবিরের মা আবিরকে বলে
আবিরের মাঃ সে কি রে তুই কেন উঠে আসলি ??কিছু লাগলে বলতি উঠে আসার কি দরকার ছিল? যা রেস্ট নে গিয়ে,,,
তিথি মুখে খাবার নিয়ে আবিরের দিকে তাকায়,,,
আবির একটু মুচকি হেসে চেয়ার টেনে বসে আবিরের মাকে বলে
আবিরঃ আম্মু তুমি যে মেয়েকে নিজের হাতে খাইয়ে দিচ্ছো এতো যত্ন করে জানো এই টা ওই মেয়ে যে আমার সাথে রেস্টুরেন্টে ঝগড়া করেছে,যার জন্য ওই দিন আমার মাথা এতো খারাপ ছিল,,( আবির তিথির দিকে তাকিয়ে বলে)
আবিরের মাঃ কি বলিস😱😱
তিথির তো গলায় খাবার যেন আটকে গেছে,,আবির এমন কিছু তার মাকে বলবে তিথি ভাবতে ও পারে নাই,,,,তিথির কাশতে থাকে আবির পানির গ্লাস টা এগিয়ে দিয়ে বলে
আবিরঃ নাও খেয়ে নাও😂😂
তিথি আবিরের হাত থেকে তাড়াতাড়ি পানির গ্লাস নিয়ে গটগট করে পানি খেতে থাকে,,খাচ্ছে কম পালাছে বেশি, ভয়ে কি করছে সে নিজে ও জানে না😂,,,তিথির এমন কান্ড দেখে আবির তো হাসতে হাসতে শেষ,,
চলবে,,,,,,,,,,,,,,,,