বজ্জাত বস রোমান্টিক হাজবেন্ড !! Season -3 !! Part- 39
আবিরঃ তুই আসলে সব ঠিক হবে,,,সে কোথায়
আমানঃ আছে,,,অনেক জলদি দেশে আসছি ভাই,,,
আবিরঃ অপেক্ষা আছি,,,
আমান আমেরিকায় থাকে,,তিন বছর আগে আমান আমেরিকাতে চলে আসে,,,আমান দেশে আর যায় নাই,,,আমানের ভিসায় কিছু প্রবলেম হওয়ায় সে দেশে যেতে পারে না আবির যখন তাকে ফোন করে,,এখন সব ঠিক পরশু আমান তার ওয়াইফ কে নিয়ে দেশে যাবে,,,
আমান ফোন টা রেখে পিছনে থাকায় দেখে কফি হাতে নিয়ে দাঁড়িয়ে আছে আমানের ওয়াইফ মিসেস রিতু আমান রহমান,,,
রিতুঃ তোমার কফি,,
আমানঃ আবিরের ফোন আসছে,,,
রিতুঃ তিথি কেমন আছে?
আমানঃ ভালোই আছে নাকি,,শুধু ভুলটা রয়ে গেছে ওদের মাঝে,,
রিতুঃ সব আমার জন্য হয়েছে সব কিছু হয়েছে আমান, আমার জন্য তাদের দুইজনকে এতো কষ্ট পেতে হয় সব কিছুর জন্য শুধু মাত্র আমি দায়ী,,
রিতু সোফায় বসে পড়ে,,আমান রিতুর কাছে গিয়ে বসে,,হাত ধরে চোখের পানি গুলো মুছে বলে
আমানঃ তোমার দোষ ছিলো না,,,যা কিছু হয়েছে সব পরিস্থিতির কারণে,,,প্লিজ রিতু নিজেকে দায়ী করা অফ করো,,,
রিতুঃ ওই দিন যদি তুমি না আসতে তাহলে হয়তো আমি,,,
আমানঃ চুপ একদম,,অতীত নিয়ে কিছু বলতে চাই না আর না শুনতে,,,,,,যা কিছু হয়েছে আল্লাহর ইচ্ছেতে,,
রিতু আমানকে জড়িয়ে ধরে কেঁদে দেয়,,
রিতুঃ আমি অনেক ভাগ্যবতী যে তোমার মত হাজবেন্ড পেয়েছি,,,,তুমি না থাকলে হয়তো সব হয়তো আমি কি ভাবে
আমানঃ রিতু যা হয়েছে ভালোর জন্য সো প্লিজ ওই নিয়ে আর কিছু শুনতে চাই না,,,
রিতুঃ তিথির সাথে ভালো হয় নাই আমান,,মেয়েটা ছোট থেকে কষ্ট পেয়েছে,,,অই দিন আমার জন্য সে আরো পেয়েছে,,আমান অই দিন আমি আমার সার্থকতা দেখেছি ওর মন ভেঙ্গে দিয়েছি,,
আমানঃ সব কিছু ঠিক করতেই আমরা দেশে যাচ্ছি,,,
রিতুঃহুম
আমানঃ তিথি আবিরের ভাগ্যে ছিলো তাই এতো কিছুর পর ও আজ আবিরের বউ তিথি,,,
অই সময় একটা আওয়াজ আসে,,,দুইজনে পিছনে তাকিয়ে দেখে,,
রিমানঃ মাম্মা মাম্মা মাম্মা
পিছনে ছোট ছোট পা দিয়ে আস্তে আস্তে হেঁটে আসছে আমান রিতুর আদরের ছেলে রিমান,,,মাত্র ২ বছর কিন্তু কথা গুলো আমতা আমতা করে বলে যে অনেক কিউট লাগে,,আমানের কলিজার টুকরা রিমান,,,আমান উঠে কোলে নেয় রিমানকে,,
আমানঃ খালি মাম্মা পাপ্পা কি করছে হুম
আমান রিমানকে নিয়ে দুষ্টুমি করে রিতু তাকিয়ে আছে বাপ ছেলের দিকে,,,
রিতুঃ অনেক কিছুই পালটে এই তিন বছরে,,,অনেক মিস করি তিথি তোকে,,,আমি জানি আমি তোর ক্ষমার যোগ্য না,,,কিন্তু সত্তিটা তোকে জানতেই হবে তিথি,,জানি হয়তো আমাকে ঘৃনা করিস কিন্তু যা হয়েছে তা আমি যেহেতু করেছি তাহলে আমি ঠিক করবো,,,
এইদিকে
তিথির একটু ও ভালো লাগছে না,পুরো বাসা আজ খালি সবাই একটু বাহিরে যায়,,আর তিথির খারাপ লাগায় সে বাসায় থাকে,,আলমারি গুছাতে থাকে ভালো লাগছে না তাই,,,
আলমারির মধ্যে একটা এলবাম পায় এলবাম টা নিয়ে বারান্দায় চলে যায়,,চেয়ারে বসে এলবাম টা দেখতে থাকে আবিরের অনেক আগের ছবি আগে ও অনেক কিউট ছিলো,,স্কুলের ছবি,,কলেজের ছবি সব,,,পিক গুলো দেখে হাসি পায় একটু একটু কারণ আবির তখন শুকনা ছিলো
তিথিঃ বাহা এই বজ্জাত দেখি তো শুকনা কাঠ ছিলো হিহি,,
তিথি আবিরের পুরানো ছবি গুলো দেখতে থাকে,,প্রচুর হাসি পায় তার,,
আবিরের কাজ তাড়াতাড়ি শেষ হওয়ায় বাসায় এসে যায়,,
আবিরঃ সীমা কাউকে দেখছি না যে সবাই কই
সীমাঃ ছোট সাহেব সবাই তো বাহিরে গেছে আসতে দেরি হবে বলছে,,,,
আবিরঃ ওহ আচ্ছা
সীমাঃ ভাবি আছে বাসায় নিজের রুমে
আবিরঃ তিথি যায় নাই সবার সাথে?
সীমাঃ উনার নাকি ভালো লাগছে না তাই উনি যায় নাই,,
আবিরঃ আমার রুমে একটা কফি নিয়ে আসিও ওকে,,
আবির রুমে যায়,,তিথি নিজে নিজে হাসছে,,হাসির আওয়াজ পেয়ে বারান্দায় গিয়ে দেখে এলবাম হাতে,,,
আবির তিথির হাত থেকে এলবাম কেড়ে নিয়ে বলে
আবিরঃ তুমি এলবাম কই পেলে?
তিথি হাসির জন্য কিছু বলতেও পারছে না
আবিরঃ হাসি অফ করো ওকে,,আর হাসির কিছু নাই
তিথিঃ আপনি আগে দেখতে হাহা
আবিরঃ আমি জানি আমি অনেক কিউট ছিলাম তখন হু
তিথিঃ হ্যাঁ হ্যাঁ অনেক কিউট,,,,এতো যে
আবিরঃ হয়ছে ওকে,,,কিছু পিক আছে যেগুলোর কারণ শুনলে হাসবে,,,
তিথিঃ কি বলুন
আবিরঃ আচ্ছা আমি ফ্রেশ হয়ে আসি আর তুমি আমার জন্য প্লিজ কিছু খাওয়ার জন্য আনবে দুপুরে কিছু খাই নাই কাজের চাপ ছিলো তাই,,,
তিথিঃ আমি এখনই আনছি,,,
তিথি নিচে নেমে যায়,,,আবিরের জন্য হালকা নাস্তা তাড়াতাড়ি বানিয়ে ফেলে,,,,সীমা কফি নিতে যাবে তিথি মানা করে,,,নিজের জন্য ও কফি নিয়ে যায়,,,আবির ফ্রেশ হয়ে তিথির পাশে বসে,,
আবিরঃ খাইয়ে দাও তুমি আর আমি এলবাম এর পিক এর কারণ বলি
তিথিঃ আপনি কি বাচ্চা যে খাইয়ে দিতে হবে হুম,,,
আবিরঃ তুমি খাইয়ে দিবে কি না তা বলো?যদি খাইয়ে না দাও তাহলে প্লেট টা কিচেনে রেখে আসো আমি খাবো না,,
তিথিঃ হয়ছে আর ঢং করতে হবে না,,,,
তিথি আবিরকে খাইয়ে দিচ্ছে আর আবির প্রথম পিকটা দেখিয়ে বলে
আবিরঃ এই পিক তখন কার যখন আমি ক্লাস নাইনে ছিলাম,,জানো প্রথম দিন একটা ম্যাম আসে অনেক সুন্দর,এতো কিউট যে বলার বাহিরে,,,,,ম্যামটা প্রথম থেকেই প্রিয় ছিলাম কিন্তু আমি উনার উপর ক্রাশ খাইছিলাম,,,আকাশ,মেঘ ওরা মিলে ম্যামকে চিঠি দেয় যে আমি নাকি ম্যামকে লাভ করি,,,,,
তিথিঃহেএএ তারপর
আবিরঃ আর কি ম্যাম আম্মু আব্বুকে ডাকাইছে স্কুলে আর যা বকা আমায়,,,ওই দিন ওই হারামি গুলোর জন্য আমি কালারিং হয়ে যাই,,,ওই স্কুলে আর পড়বো না বাসায় বলে দেয়,,তারপর স্কুল চেঞ্চ করে আমার,,আর আকাশ মেঘ উরা ও আমার সাথে স্কুল চেঞ্চ করে,,,
তিথিঃ হাহা আপনাকে মারে নাই?
আবিরঃ হু আমাকে কেউ মারতো না ওকে,,,আর আমাকে যদি কিছুতে বকাও দিতো না আমান সব সময় নিজের গায়ে নিয়ে নিতো,,,আমার ভাই কম বন্ধ ছিলো বেশি,,,
তিথিঃ আচ্ছা আমান ভাইয়া কোথায় উনাকে তো দেখি নাই আসার পর,,,
আবিরঃ আমান আমেরিকাতে চলে গেছে তিন বছর আগে,,,বড় মা-বাবা অনেক মানা করে শুনে নাই,,,,আমানের কাজের জন্য গেছিলো এখন ওই খানে থেকে যায়,,,
তিথিঃ ওহ উনার সাথে আমার শুধু ২-৩ বার দেখা হয়েছে তারপর,,,,,
আবিরঃ হুম,,আমান বিয়ে করেছে
তিথিঃরেলি কাকে?
আবিরঃ জানি না,,
তিথিঃ কেন জানেন না আপনার ভাই আপনি জানেন না
আবিরঃ হুম জানি না তো,, আচ্ছা ম্যাম আপনার গালে কি
তিথিঃ কই আমার গালে কি?
আবিরঃ ওয়েট আমি দেখাছি কি
আবির তিথির গালের কাছে মুখ নিয়ে আসে,,,হুট করে কিস করে বলে
আবিরঃ কিছু না
তিথিঃ আপনি একটা,,,,,,
আবিরঃ কি আমি হুম
তিথিঃ রাক্ষস একটা হু
আবিরঃ আর তুমি রাক্ষসী,,,রাক্ষসের বউ তো রাক্ষসী
তিথিঃ কথায় কেউ পারবে না হু,,,
আবির তিথির দুষ্টু মিষ্টি ঝগড়া তো লেগেই থাকে সব সময়,,,,,,দুইজনের মধ্যে ভালোবাসা জন্ম নেয় নতুন করে,,,
তারপরের দিন সন্ধ্যায় তিথি বারান্দায় দাঁড়িয়ে আছে,,,,,খোলা চুল গুলো বাতাসে উড়ছে,,,,আবির পিছন থেকে তিথিকে জড়িয়ে ধরে তিথি কিছু বলে না কারণ জানে তার বলাটা বেকার
আবিরঃ কি ভাবছেন ম্যাডাম
তিথিঃ কিছু না,,,
আবির তিথির চুল গুলো সরিয়ে ঘাড়ে থুতনি রেখে কানের কাছে ফুঁ দেয়,,,
তিথিঃ কি হচ্ছে কি
আবিরঃ তা আমি কি জানি কি হচ্ছে
তিথি চলে যেতে লাগে,,আবির তিথির হাতটা ধরে টেনে নেয় বুকে,,,আবিরের হার্ট বিট গুলো যেন তিথির কাছে খুব প্রিয় প্রত্যেক বার সে মনযোগ দিয়ে শুনে,,,আজও সেম,,,
আবিরঃ তিথি জানো তোমায় না কিছু বলার আছে
তিথিঃ কি?
আবিরঃ কাল একটা সারপ্রাইজ আছে তোমার জন্য,,,
তিথিঃ কাল কিসের সারপ্রাইজ?,,,
আবিরঃ দাঁড়াও ভেবে নেই কিসের সারপ্রাইজ (ফাজলামি করে)
তিথিঃ দূর আপনার সারপ্রাইজ আপনার মত,, নিচে যাই আমি
আবিরঃ যাবে আর কি আগে আমার সাথে তো কিছু সময় কাটাও
তিথিঃ দেখুন আমার ইচ্ছে নাই,,,
আবিরঃ কিন্তু আমার ইচ্ছে আছে আমার বউটাকে একটু কাছে পাওয়ার
তিথিঃ ফাজলামি কম করবেন,,,সরেন তো যেতে দেন
তিথি চলে আসে,,,,,নিচে সবার সাথে সে বসে আড্ডা দেয়,,,,আবিরও নিচে নামে তিথির দিকে তাকিয়ে দেখে তিথি মন দিয়ে শাড়ি দেখছে,,,মা শাড়ি আনিয়েছে অনেক গুলো
মাঃ তিথি তোর যেটা যেটা ভালো লাগে নিয়ে নে,,আর কালকের জন্য একটা সুন্দর থেকে বেঁচে নিবি কেমন
তিথিঃ কাল কি আম্মু?
মাঃ হে আল্লাহ এই মেয়ে কি?কাল তোর আর আবিরের বিয়ের এক মাস হবে,,,
আবিরঃ কাকে কি বলছো আম্মু,,মাথামোটা মেয়ে একটা কিছু জানে না,,,শুধু জানে ঝগড়া করতে এই ছাড়া কি আর কিছু জানে,,,ডামিশ এর আম্মা একটা
তিথি প্রচুর রেগে যায় আবিরের কথায়,,
তিথিঃ আপনি কত বুদ্ধিমান জানা আছে,,,ঘোড়ার ডিম পারেন আপনি সব সময় হু
আবিরঃ আমি যে বললাম এই মেয়ে মাথামোটা তা কি ভুল?
তিথিঃ আপনি একটা,,,,,
আবিরঃ আমি যাই হই না কেন ম্যাডাম আপনি যে মাথামোটা তা সিউর,,এই জানেন না যে ঘোড়া ডিম পাড়ে না,,,
মাঃ উফফ তোরা নার্সারির বাচ্চাদের মত কেন ঝগড়া করিস হুম,,তারা ও তোদের থেকে হাজার গুণ ভালো,,,সব সময় ঝগড়া
মামানিঃ ঝগড়াতে তো ভালোবাসা বাড়ে,,,
তিথি নাক ফুলিয়ে চলে যায় রুমে
মাঃ হয়ছে শান্তি তুই,, সব সময় মেয়েটাকে রাগাস শয়তান ছেলে একটা
আবিরঃ আরে বাপরে এই দেখি উল্টো ঝাড়ি আমায়,,,বাহা বাহা এখন তো আমি পর হয়ে গেলাম আর ওই ঝগড়াটি এলিয়েন আপন,,,দুনিয়া এতো বেইমান কেন,,,(অভিনয় করে)
মা উঠে এসে আবিরের কান চেপে ধরে বলে
মাঃ বদমাশ ছেলে ফাজলামি না করে যা ওকে মানিয়ে নে,,,
আবিরঃ আহা আম্মু যাচ্ছি তো কান তো ছাড়ো,,উফফফ ওই রাক্ষসীর জন্য আমার কান যাচ্ছে
মাঃ আবার
আবিরঃ সরিইইই প্লিজ ছাড়ো এইবার
মা আর মামানি হাসতে থাকে,,
মামানিঃ আবির তিথিকে অনেক ভালোবাসে,,তাই ওকে একটু জ্বালায়,,
মাঃ হুম জানি দুইজন দুজনেকে খুব ভালোবাসে কিন্তু ফাজলামি গুলো তাদের ভালোবাসা বারিয়ে দেয়,,,
আবির রুমে গিয়ে দেখে গাল ফুলিয়ে বসে আছে,,আবির ও পাশে গিয়ে বসে
আবিরঃ আমার বউ যখন রাগে না তখন লাল টমেটো এর মত লাগে,,ইচ্ছে করে গাপুশ করে খেয়ে ফেলি,,,
তিথি নাক ফুলিয়ে চোখ গরম করে তাকায়,,,
আবিরঃ ইসস এই ভাবে তাকিও না গো আমার লজ্জা করে আর একটা গান মনে পড়ে,,আচ্ছা গেয়েই ফেলি
🎵🎼পড়েনা চোখের পলক
কি তোমার রূপের ঝলক
দোহাই লাগে মুখটি তোমার
একটু আঁচলে ঢাকো
আমি জ্ঞান হারাবো
মরেই যাবো
বাঁচাতে পারবে নাকো 🎼🎵
তিথি আরো ক্ষেপে বারান্দায় চলে যায়
আবিরঃ এই যা বউটা দেখি আরো রেগে গেলো ইসস কি করি,,
আবির তিথির পিছনে পিছনে বারান্দায় যায়,,,
আবিরঃ বাহা আমার বউটা দেখি লাল টমেটো কে ও হার মানাবে এতো লাল হয়ে আছে,,
তিথিঃ যান তো আপনি
আবিরঃ কই যাবো তোমায় ছাড়া ম্যাম আমি যে তোমার লাল লাল টমেটো গাল গুলো গাপুশ করে করে খেতে চাই
তিথিঃ মাথার উপর থেকে আছাড় মারবো তখন খাইয়েন হুম
আবিরঃ পারবে আমায় তুলতে,, ওহ হ্যাঁ পারতেও পারো তুমি তো আবার এলিয়েন তাও ঝগড়াটি এলিয়েন
তিথি এই বার তো এতো রাগে রুম থেকেই বের হয়ে যায়,,আবির হাসতে থাকে,,অনেক ক্ষন হয়ে যায় তিথি রুমে আসে নাই,,আবির গিয়ে দেখে মামানির রুমে ঘুমিয়ে পড়েছে,,,আবির মুচকি হেসে তিথিকে কোলে করে রুমে নিয়ে আসে,,নিজের বুকে মাথাটা রেখে সেও ঘুমিয়ে পড়ে,,
সকালে,,,,
চলবে,,,,,,