বজ্জাত বস রোমান্টিক হাজবেন্ড

বজ্জাত বস রোমান্টিক হাজবেন্ড !! Season -3 !! Part- 40

তিথি এই বার তো এতো রাগে রুম থেকেই বের হয়ে যায়,,আবির হাসতে থাকে,,অনেক ক্ষন হয়ে যায় তিথি রুমে আসে নাই,,আবির গিয়ে দেখে মামানির রুমে ঘুমিয়ে পড়েছে,,,আবির মুচকি হেসে তিথিকে কোলে করে রুমে নিয়ে আসে,,নিজের বুকে মাথাটা রেখে সেও ঘুমিয়ে পড়ে,,
সকালে,,,,
তিথি ঘুম ভাঙ্গে আর নিজেকে আবদ্ধ করে আবিরের বুকে,,,,,, কিছুটা চিন্তায় পড়ে যায় সে এখানে কি ভাবে,,,
তিথিঃ আমি তো মামানির রুমে ঘুমিয়েছিলাম তাহলে এখানে কি ভাবে?হুম হয়তো এই বিপজ্জনক রাক্ষস টা আনছে আমায়,,,
তিথি উঠার চেস্টা করছে আবির আরো শক্ত করে জড়িয়ে ধরে,,,তিথি আবিরের গালের কাছে মুখ নিয়ে জোরে কামড় দেয়
আবিরঃআয়ায়ায়া(ঘুম থেকে লাফিয়ে)
তিথিঃ কেমন লাগছে?
আবিরঃ রাক্ষসী একটা আজ তোমায় আমি
তিথি উঠে যেতে লাগে আবির টেনে নিজের বুকে চেপে ধরে
আবিরঃ আমাকে কামড় দিয়ে কই যাচ্ছেন আপনি ম্যাডাম
তিথিঃ ভালো হচ্ছে না কিন্তু ছাড়ুন
আবিরঃ এতো সহজে তো ছাড়ছি না,,,কামড়ের বদলে কামড় তো পেতেই হবে ম্যাম
তিথিঃ না না না প্লিজ একদম না,,
আবিরঃ হিহাহুহু আজ তোমায় কে বাঁচাবে আমার হাত থেকে (ডেবিল মার্কা হাসি দিয়ে)
আবির তিথিকে ঘুরিয়ে নিচে ফেলে দেয়,,,তিথি চোখ বন্ধ করে ফেলে ভয়ে,,কপাল টা ভাজ করে ফেলে,,হাতের মুটো বটে ফেলে,তিথির এমন ফেস দেখে আবিরের হাসি পাচ্ছে পুরো বাচ্চাদের মত কান্ড করে,,,আবির তিথির ঠোঁটে আলতো করে চুমু দেয়,তিথি যেন কেঁপে উঠে আবিরের প্রত্যেক ছোঁয়ায়,,আবির ঘাড়ে কিস করতে থাকে,,,,তিথিফ আবিরের টি-শার্টটি শক্ত করে আকড়ে ধরে,,,আবির তিথির গালে নিজের গাল লাগায় তিথির নাকে চুমু দেয়,,আবির যেন কি করছে নিজে ও জানে না আর তিথিও বাধা দিচ্ছে না,,

আবিরের হুশ আসে ফোনের কলে,,,তিথি চোখ খুলে কিছুটা লজ্জা পায়,,আবির তাড়াতাড়ি উঠে যায়,,
আবিরঃ ও আ,মার ফোন
তিথিঃ হুম
আবির ফোনটা নিয়ে বারান্দায় চলে যায়,,তিথি বসে আছে এখনও লজ্জা পাচ্ছে নিজে নিজে
তিথিঃ কি হচ্ছে আমার সাথে আমি কিছু কেন বলি নাই,,,
আবির বারান্দায় গিয়ে কথা বলতে থাকে,,তিথি বারান্দায় যায় তাওয়াল টা অই খানে আছে তাই,,,তখন শুনে
আবিরঃ আমি ঠিকানা মেসেজ করে দিবো সময় মত এসে গেলে হবে,,,গাড়ি আমি পাঠিয়ে দিবো সময় মত চিন্তার কিছু নাই,,
আবির কথা গুলো বলে ফোন রেখে পিছনে ঘুরে দেখে তিথি,,,
আবিরঃ তুমি?
তিথিঃ তাওয়ালটা নিতে আসছি
আবিরঃ ওহ দাঁড়াও আমি দিচ্ছি
তিথিঃ আচ্ছা আপনি কাকে ঠিকানা দিচ্ছেন
আবিরঃ আমার স্পেশাল গেস্ট
তিথিঃ কে?
আবিরঃ সন্ধ্যায় দেখবে কে,যাও ফ্রেশ হয়ে নাও তোমার তো আবার দুই ঘন্টা লাগে
তিথিঃ কি আমার দুই ঘন্টা লাগে বজ্জাত এনাকন্ডা
আবিরঃ সত্যি বললেই দোষ
তিথিঃ হু
তিথি যেতে লাগে আবির তিথির কোমড় ধরে ঘুরিয়ে নিয়ে নিজের কাছে টেনে নেয়,,,
তিথিঃ কি করছেন কি ছাড়ুন
আবিরঃ যখন তুমি এই ভানে মুখ ফুলাও না ইসসস তোমায় কি যে কিউট লাগে তখন ইচ্ছে করে(তিথির ঘাড়ে থুতনি রেখে)
তিথিঃ কি ইচ্ছে করে?(অবাক দৃষ্টিতে)
আবিরঃ বলবো?
তিথিঃ না থাক আপনার অই টাইপের কথা আপনার কাছেই রাখুন হু
আবির তিথির ঘাড়ে কিস করতে থাকে,,
তিথিঃ দে,,,রি হচ্ছে,, ছা,,ড়ুন
আবির তিথির কথা কানেও নেয় না,,,তিথির ঘাড়ে জোরে কামড় দিয়ে দেয়,,,তিথি আবিরকে ধাক্কা দেয় পিছনে যায় ঘাড়ে হাত বুলিয়ে রাগী কণ্ঠে বলে
তিথিঃ রাক্ষস নাকি আপনি উফফ এতো জোরে কামড় দেয় কেউ পুরো মাংস তুলে ফেলছে রাক্ষস একটা
আবিরঃ আরে যা তুমি দিলে ঠিক আর আমি দিলেই পাগল তাই না
তিথিঃ আপনার সাথে কথা বলাই বেকার দূর
তিথি ওয়াশরুমে চলে যায়,,আবির হাসতে থাকে
আবিরঃ পাগলী একটা,,,এখন শুধু সন্ধ্যার অপেক্ষা কারণ টা যে আমার ও অজানা আমাকে ও তিথির সাথে সব টা জানতে হবে আসল ঘটনা কি আর কে দায়ী এই সবের পিছনে,,,আই প্রমেস যে এই সব এর পিছনে দায়ী তাদের আমি ছাড়বো না,,,আমার আর তিথির মধ্যে যার জন্যই এতো প্রবলেম তাকে আমি এমন শাস্তি দিবো যে নেক্সট টাইম আমার আর আমার তিথির মাঝে আসতে ও হাজার বার ভেবে নিবে,,,
সীমা অই সময় রুমে আসে
সীমাঃ ছোট সাহেব আপনাকে বড় সাহেব নিচে যেতে বলছে
আবিরঃ ওকে আসছি,,
আবির ওয়াশরুমের দরজা বারি দেয়
আবিরঃ তিথি আমার ব্রাশটা দাও তো
তিথিঃ উফফ শান্তি মত শাওয়ার ও নিতে দিবে না এই রাক্ষস
আবিরঃ তিথি ব্রাশ দিবে কি না তা বলো
তিথিঃ আমার শাওয়ার শেষ হয় নাই হলে দিয়ে দিবো ওকে
আবিরঃ না দিলে কিন্তু তোমার মেকাপের সব জিনিস আমি নিচে ফেলে দিবো বলে দিচ্ছি
তিথিঃ একদম ওই গুলো ছুঁয়ে দেখবেন না,,,খুব খারাপ হবে কিন্তু তাহলে বলে দিচ্ছি
আবিরঃ তাহলে ব্রাশ দাও ম্যাম
তিথি বিরক্তি ভাত নিয়ে মাথায় শাম্পু নিয়ে ব্রাশ দেয়,,আবির হাসতে হাসতে শেষ
তিথিঃ বেটকান ক্যান এতো হুম
আবিরঃ তোমায় পুরো জোকার লাগছে ওয়েট আমি ফোনটা নেই কয়েকটা পিক তুলি
তিথি এতো রেগে যায় যে বাথরুমের দরজা অনেক জোরে লাগায়,,,আবির তো হাসতে হাসতে শেষ বেচারিকে রাগাতে তার এতো ভালো লাগে যে কোথায় কোথায় রাগায়,,আবির ব্রাশ করতে করতে নিচে নেমে যায়,,
বাবাঃ কি ব্যাপার আজ ব্রাশ হাতে নিয়ে নিচে যে
আবিরঃ কি করবো আব্বু একটা দজ্জাল বউ কপালে জুটছে তাই (চেহারাটা বানিয়ে)
মাঃ কানের নিচে কষে চড় লাগামু শয়তান তুই কেমন আমার জানা আছে বেচারি মেয়েটাকে সারাদিন শুধু জ্বালাস
আবিরঃ যা বাবা আমি তো কিছু ও বলতে পারবো না,,
আবির আর বাবা হাসতে থাকে,,,তারা কিছু ইম্পর্টেন্ট কথা বলে,,কিছু ক্ষন পর তিথি নিচে নেমে দেখে আবির ফ্রেশ হয়ে গেছে,,,বসে বসে বাবার সাথে কথা বলছে,,মা তিথিকে নাস্তার টেবিলে বসতে বলে,,সবাই এক সাথে নাস্তা করছে আবির ফাজলামি করে বলে
আবিরঃ আচ্ছা মা টিভিতে দেখো যে তোমরা বউ শাশুড়ির ঝগড়া তা এই বাসায় করতে পারো না,,আমি আর বাবা একটু দেখতাম আমাদের ও তো খুব ইচ্ছে করে বউ শাশুড়ি ঝগড়া দেখার আহা কি না ঝগড়া তাদের
আবির আর বাবা মিলে হাই ফাইভ করে আর হাসতে থাকে,,তিথি নাক ফুলিয়ে তাকায়,,মা থাপ্পড় দেখিয়ে বলে
মাঃ চড় খানি এখন ফাজিল,, এইটা আমার বউমা না এইটা আমার মেয়ে তাই ঝগড়া হয় না,,তোর মত নাকি ঝগড়াটে
তিথিঃ রাইট আম্মু এক নাম্বারের ঝগড়াটে এই রাক্ষস
সবাই তিথির দিকে তাকায়,,,সবাই এক সাথে হেসে দেয়,,,সবাই অনেকটা আনন্দে মেতে উঠে,,,
কেটে যায় পুরো দিনটা,,

বাসায় একটা ছোট পার্টি রাখে,,শুধু বাসার মানুষ গুলো আসে,,তিথি একটা কালো শাড়ি পড়ে,,আবির কালো শার্ট দেখতে দুইজনকে কিউট লাগছে,,,সবাই ব্যস্ত হয়ে পড়ে পার্টির আনন্দে,,,,আবির তিথির কানের কাছে গিয়ে বলে
আবিরঃ আজ তোমায় অনেক সুন্দর লাগছে,,,,পুরো
তিথিঃ পুরো কি
আবিরঃ পুরো পেত্নী (জিভে কামড় দিয়ে)
তিথিঃ আপনিইইইই সরেন তো
আবির হেসে দেয়,,তিথি রাগ করে অন্য পাশে চলে যায়,,,,,কিছু ক্ষন পর আবির লাইটটা অফ করে,,,সবাই আবিরের দিকে তাকায় তিথিও,,
আবিরঃ একটা মেয়ে ছিলো যে সব সময় দুষ্টুমি ফাজলামি করতো,,,দুনিয়ার আজগুবি কথা তার কাছে ছিলো,,,এমন এমন নাম বলতো যে কেউ ভাবতে ও পারবে না,,,,,আর যখন মেয়েটি প্রচুর রেগে যায় পুরো মুখ লাল টমেটো এর মত হয়ে যায়,,,,মেয়েটি যেম ঝগড়াটি ছিলো উফস সরি এলিয়েন ঝগড়াটি কারণ মেয়েটির খাবার এর রেসিপি শুনে তো যে কেউ বেহুশ হয়ে যায়,,
সবাই হাসতে থাকে,,তিথি চোখ দুটো ছোট করে আবিরের দিকে কেমন ভাবে যেন তাকিয়ে আছে,,,আর অনেকে হাসছে আওয়াজ করে,,,,
আবিরঃ মেয়েটি তার মামা-মামানিকে খুব ভালোবাসতো,,,মেয়েটির একটা বেস্টু ছিলো যে তাকে সব সময় বুজতো,,মেয়েটির সাথে তেমন কেউ থাকতে পারতো না কারণ মেয়েটি খুব রাগী ছিলো,,,কিন্তু তার পাশে যে সব সময় ছিলো তা হলো তার বেস্টু,
তিথি আবিরের কোথায় কিছু টা অবাক হয় এই ভেবে আবির কেন এই সব বলছে,,,তার চোখে ও পানি আসে এই ভেবে যে তার বেস্টি যে ছোট থেকে তার পাশে ছিলো সব সময় বিনা কারণে তার সাথে সব সম্পর্ক ভেঙ্গে চলে যায়,,,
আবিরঃ বেস্টুটা একটা কারণে তার বেস্ট ফ্রেন্ডকে একা ছেড়ে চলে যায়,,আর ওই এলিয়েন মেয়ে ও সব ছেড়ে অনেক দূরে চলে যায়,,,
আবির তিথির কাছে এসে চোখের পানি মুছে দিয়ে বলে
আবিরঃ পিছনে তাকাও
তিথি পিছনে ফিরে পুরো শকড,,,তিথির পিছনে দাঁড়িয়ে আছে রিতু,,,,চোখের পানি টপটপ করে পড়ছে রিতু,,,তিথি নিজেকে সামলে রাখতে পারছে না চোখের পানি পড়তে থাকে,,,,রিতু দৌড়ে এসে তিথিকে জড়িয়ে ধরে কেঁদে দেয়,,তিথিও কান্না করে দেয়,,,দুই বেস্ট ফ্রেন্ড যেন এতো দিন পর তাদের সুখটা পেয়েছে,,,পিছনে আমান রিমানকে কোলে নিয়ে দাঁড়িয়ে আছে,
রিতুঃ আম সরি আম রেলি সরি তিথু
তিথি রিতুকে সরিয়ে দিয়ে বলে
তিথিঃ সরি কে আপনি আর আমি তিথু না তিথি
সবাই তাকিয়ে থাকে তাদের দিকে,,
রিতুঃ এই দেখ কান ধরছি প্লিজ আমায় মাফ করে দে প্লিজ
তিথি এসে ঠাস করে এক থাপ্পর দেয় রিতুকে,,আমান যেতে লাগে আবির বাধা দেয়
আবিরঃ ওদের কে ওদের মত হেন্ডেল করতে দে,,,
তিথিঃ তোর সাহস হয়ছে কি ভাবে আমাকে ছেড়ে যাওয়ার,,,একা রেখে চলে গেলি অহ হ্যাঁ আমি তো তোর সব কেড়ে নিয়েছি তাই না
রিতুঃ আমি জানি আমি যা করেছি তা ভুল,,,বিশ্বাস কর আমার কিছু দুর্বলতা ছিলো,,,আম সরি
তিথিঃ কি এমন দুর্বলতা যে আমায় ছেড়ে গেলি?
রিতুঃ সব বলবো তোকে,, তোকে বলার জন্যই দেশে এসেছি
তিথিঃতুই দেশে ছিলি না?
রিতুঃ না,,

আমানঃ আচ্ছা শুধু কি বেস্ট ফ্রেন্ডকে জড়িয়ে ধরবে আমি কি দোষ করেছি হুম
তিথিঃ আমান ভাইয়া আপনি,,,
আমানঃ যাক তাহলে শালিকা নজর তো দিলো উফস সরি শালিকা আবার ভাবি ও এখন কি ডাকি আমি,,,
তিথিঃ শালিকা মানে?
আমানঃ রিতু তুমি আমায় পরিচয় করে দিলে না কি অবিচার আমার উপর
তিথি রিতুর দিকে তাকায় রিতু রিমানকে কোলে নিয়ে বলে
রিতুঃ আমান আমার হাজবেন্ড তিথি,,আর এইটা আমাদের ছেলে রিমান,,
তিথি রিমানকে কোলে নেয় রিতু থেকে,,,,,,
তিথিঃ তুই বিয়ে ও করে ফেলেছিস আর ছেলে ও আছে আর আমি জানি না,,সর তুই তোর সাথে কথা নাই আমার,,
তিথি রিমানকে নিয়ে অন্য পাশে চলে যায় ওর সাথে খেলে আর এই দিকে সবাই আমান আর রিতুর সাথে গল্প করতে থাকে,,রিতু আবিরের দিকে তাকায় নজর পড়ায় চোখ সরিয়ে ফেলে,,
আবিরঃ আমি জানি তুমি কেন এমন করছো রিতু সত্তিটা জানা আমার আর তিথির খুব প্রয়োজন
রিতুঃ আমি বলবো আবির সব বলবো,,,আমি চাই তুমি আর তিথিকে একা বলি এতো মানুষ ওদের সামনে কি ভাবে
আবিরঃ চিন্তা করিও না রিতু এতো দিন যখন অপেক্ষা করেছি আর না হয় কয়েক ঘন্টা করবো
রিতু সবার কাছে আবার যায় গল্প করতে থাকে এই দিকে তিথি তো মহা হেপ্পি রিমানকে পেয়ে,,রিমানকে চুমু দিচ্ছে বারবার,, ওর গালে হাত দিয়ে টানছে, আবির তাকিয়ে আছে তিথির কান্ড গুলো,,,আবিরের বাবা-মা সবাই তিথির মুখে এই হাসি দেখে অনেক খুশি,
চলবে,,,,,,।