বজ্জাত বস রোমান্টিক হাজবেন্ড

বজ্জাত বস রোমান্টিক হাজবেন্ড !! Season -4 !! Part- 10

তিথি আবিরকে দেখে ৪৪০ এর শকড খায়,,,ভয়ে কলিজা শুকিয়ে যায়,,আবির তিথিকে দেখে থাপ্পড় এর কথা মনে পড়ে রাগ যেন হাজার গুণ এইবার বেড়ে যায়,,,,
আবির রাগে তিথির সামনে এসে টেবিলে জোরে থাপ্পড় মেরে বলে
আবিরঃ সাহস হয় কি করে এতো কিছু করার পর আমার অফিসে পা রাখার(প্রচুর রেগে)
তিথি আবিরের চেহারা দেখে অনেক ঘাবড়ে যায়,,রাগে যেন আবির লাল হয়ে আছে,,,,অফিসের সবাই তাকিয়ে আছে,,,
আবিরঃ আনসার মি,,,,,(জোরে চিৎকার করে)
তিথির চোখ বেয়ে পানি গড়িয়ে পড়ে আবিরের ধমক শুনেই,৷আবির পারছে না তিথিকে এখানে গিলে খেতে,,,,
আর এইদিকে ভয়ে তিথির অবস্থা খারাপ,,,,অফিসের সবাই ভয় পেয়ে যায় আবিরের এমন রাগী লুক দেখে,,আবির রাগী তা সবাই জানে কিন্তু এতো টা রাগ সে কখনো দেখায় নাই অফিসে,,রাগ যেন হাজার গুন বেড়ে যায় আবিরের তিথির চুপ থাকা দেখে,,
আবিরঃ কথা কি কানে যাচ্ছে না???
আবির তিথিকে জোরে ধমক দিয়েই তিথির টেবিলে রাখা ব্যাগ ফাইল সব ছুড়ে ফেলে দেয়,,,তিথি আরো ভয় পেয়ে যায়,,,
আবিরঃ এখন বের হবে আমার অফিস থেকে,,,তোমার মত বেয়াদব মেয়ের জায়গা নাই আমার অফিসে,,,
আমান আবিরের চিৎকার এর আওয়াজ পেয়ে তাড়াতাড়ি এসে দেখে আবির প্রচুর রেগে আছে তাও আবার তিথির উপর,,,,আবির্র ঘাড়ে হাত রেখে বলে
আমানঃ আবির কি হলো এতো রেগে আছিস কেন?
আবিরঃ এই মেয়েকে অফিসে রাখছে কে?এখন বের কর এই মেয়েকে,,,এমন বেয়াদব মেয়ে এই অফিসে কি করে,,,
আমানঃ আবির শান্ত হও,,,সবাই দেখছে
আবিরঃ কেয়ার করি না আমি,,,এই মেয়েকে আমি আমার অফিসে দেখতে চাই না,,,আর তুমি লজ্জা শরম বলতে কিছু আছে দাঁড়িয়ে না থেকে জাস্ট গেট আউট (চিৎকার করে)

আমান আবিরের হাত টা ধরে বলে
আমানঃ আবির আমার কথা আগে তারপর বলিস সব,,,এখন সাথে আয় কেবিনে,,,,
আবিরঃ আমি যা বলছি তা কর আগে,,,
আমানঃ হুম আর বাকিরা এখানে দাঁড়িয়ে না থেকে কাজ করুন
আমান আবিরকে জোর করে নিয়ে যায় কেবিন,
এই দিকে তিথি ধুপ করে বসে পড়ে চেয়ারে ভয়ে যেন বুক্টা ধুপধাপ করা শুরু করছে,,,,তিথি মাথা নিচু করে আছে,,চোখের পানি গড়িয়ে পড়ছে,, অনেকটা লজ্জায় পড়ে যায় সবার সামনে সবাই তিথির দিকে তাকাচ্ছে এই দেখে তার আরো বেশি কষ্ট হচ্ছে,,,আবির তাকে একা বলতে পারতো যা বলার কিন্তু সবার সামনে এইভাবে অপমান করেছে খুব কান্না পাচ্ছে তিথির এমন হওয়াতে,,,,
এই দিকে আবির প্রচুর রেগে আছে,,,কেবিনে এসেই আমান এর সাথে রেগে যায়,,
আবিরঃ অই মেয়েকে অফিসে কে রাখছে??
আমানঃ দেখ শান্ত হও,আগে আমার কথা শুন
আমান আবিরকে বসায় এক গ্লাস পানি এগিয়ে দিয়ে বলে
আমানঃ খেয়ে নে তারপর বলিস,,,
আবির পানি খেয়ে গ্লাস্টা রাখে,,কিছু টা শান্ত হয় আবির আমানের জন্য শান্ত গলায় বলে
আবিরঃ অই মেয়েকে কে রেখেছে???
আমানঃ আমি রেখেছি,,যখন তুই লন্ডন গেলি কয়েকজন এর ইন্টারভিউ নিয়েছিলাম তেমন কেউ আসে নাই তাই আমি ওকে নিয়ে নিলাম আর কাজ ভালো করে,,,
আবিরঃ তুই জানিস না অই মেয়ে কেমন বেয়াদব,,,বিরক্তিকর একটা মেয়ে,,, খুজ নিয়ে দেখ ইন্টারভিউ দিতে আসা সব লোককে এই মেয়ে বিদায় করেছে,,,
আমানঃ আবির শুন তুই মাথা ঠান্ডা কর আগে,,,ও অনেক ভালো কাজ করে আর আজ না এসেছে এক মাস হয়ে গেছে বুজার চেস্টা কর,,,, আর সব চেয়ে বড় কথা একটা মেয়ে সে আর এইভাবে সবার সামনে এইভাবে কথা বলা উচিত হয় নাই৷
আবিরঃ ওর জন্য আমাকে লেকচার দিচ্ছিস?জানিস কত টুকু ওকে,,,ওই মেয়েকে ভালো করে জানিস না তাই লেকচার গুলো দিচ্ছিস,,,
আমানঃ আমি তোকে লেকচার দিচ্ছি না,,দেখ আমার সব কথা তুই শুনিস প্লিজ এইটা লাস্ট রিকুয়েস্ট,,,আর ওকে আমি অনেক ভালো জেনেছি এই এক মাসে,,যত টুকু জেনেছি যথেষ্ট আমার জন্য,,,আর কোম্পানির সিদ্ধান্ত নেওয়ার আমার ও তো কিছু অধিকার আছে আমি যদি কাউকে অফিসে রাখতে চাই তাহলে কেন তুই তাকে বের করতে চাস এখন
আবিরঃ মানে?অই মেয়ের জন্য তুই আমাকে এই সব বলছিস,,,,
আমানঃ না আমি তা বলছি না দেখ ভালো কাজ করে,,,অনেক ভালো মেয়ে,,, তোর সাথে কি হয়েছে তা তো জানি না হয়তোবা তিথির ভুল ছিলো একটু বাচ্চা তাই
আবির বুজে গেছে যে আমান তিথির পক্ষ নিচ্ছে,,তিথিকে অফিস থেকে বের করতে হলে আগে আমানকে বুজাতে হবে আর আমানের কথা শুনে বুজে যায় যে আমান চায় না তিথি অফিস থেকে বের হোক তাই কিছু না বলে শুধু বলে
আবিরঃ ওকে তুই চাস এই মেয়ে এখানে থাকবে,,,
আবির আর কিছু না বলে চলে যায় নিজের কেবিনে,,,,কিছু ক্ষন পর আমান আবিরের কেবিনে যেতে লাগে আবির বারন করে সে একা থাকতে চায় কিছু ক্ষন তাই আর আমান আবিরের কেবিনে যায় না,,,
এই দিকে তিথি কান্নায় চোখ মুখ লাল করে ফেলে,,,নাক ঢলতে ঢালতে শেষ,,,নিজের ব্যাগ গোছাচ্ছে আর নিজে নিজে বলছে
তিথিঃ ভাবে কি সে নিজেকে হ্যাঁ এসে এক গাঁধা শুনিয়ে যাবে আর আমি চুপচাপ বসে থাকবো হু কখনো না,,
তিথি কাঁদছে আর চোখের পানি মুছে নিজে নিজে বলতে শুরু করে,,,
তিথিঃ অই রাক্ষসের অফিস এইটা জানলে জীবনে এখানে জব নিতাম না,, আস্তা একটা লাল কাক,,,সব সময় খালি চিল্লাবে,,,নাক একটা আছে চব্বিশ ঘন্টা পঁচা ইঁদুরের মত রাখবে,,,ইচ্ছে তো করে নালায় চুবাই মারি হলুদ ইঁদুর একটা,,,
আমান এসে দেখে তিথি তার সব জিনিস গোছাচ্ছে,,,আর ইচ্ছে মত বকবক করছে আবিরকে ইচ্ছে মত বকছে,,,
আমান তিথিকে জিজ্ঞেস করে
আমানঃ এইসব কেন গুছালে?কই যাও তুমি?
তিথিঃ আমি এখানে এক মুহূর্ত ও থাকবো না,,ওই লাল কাক এর অফিস জানলে কখনো এখানে জব নিতাম না৷,,,আর ভাবলে কি ভাবে অই বজ্জাত এর অফিস জানার পর আমি এক মুহূর্ত এখানে থাকবো হ্যাঁ?
আমানঃ আমি জানি না আবির তোমার উপর এতো রেগে কেন গেলো? কিন্তু তুমি কোথাও যাচ্ছো না,,তুমি নিজে জব ছেড়ে যেতে পারবে না,,,
তিথিঃ উনি বলে গেছে যে আমি এখান থেকে যেন বের হয়ে যাই,,,পরে যদি দেখে যাই নাই আবার এক বালতি এসে শুনাই যাবে হু,,,তিথির আত্নসম্মান অনেক তো বাই ওকে
আমানঃ তিথি এই এক বছর আগে তুমি এই অফিস থেকে যেতে পারবে না আর না তোমাকে বের করতে পারবে,৷ যদি তুমি জব ছেড়ে দাও এক বছর এর আগে তাহলে কোম্পানিকে তুমি ২ লাক্ষ টাকা জরিমানা দিয়ে যেতে হবে?
আমানের কথা শুনে তিথি পুরো হা করে আছে,,ঢোক গিলে আমানকে বলে
তিথিঃ মানে কি আমান?
আমানঃ এই টা এই কোম্পানির রুলস তিথি,,,আর তুমি সাইন ও করেছো তোমার সারর্টিফিকেট সব কিছু জমা হয়ে গেছে যা তুমি পাবে ও না,,তাই বলছি মাথা গরম না করে শান্ত হও ওকে,,,আবির রেগে আছে এখন যখন শান্ত হবে সব ঠিক হবে আর আমি তো আছি তাই না,,,
তিথিঃ এই হলুদ ইঁদুর এর সাথে কাজ করা আমার দাড়া সম্ভব না৷
আমানঃ আমি তো আছি আমার সাথে করিও,,,আচ্ছা একটা প্রশ্ন?
তিথিঃকি?

আমানঃআবিরকে চিনো কিভাবে?
তিথিঃ সে এক লম্বা কাহিনী পরে বলবো,,যা খুব ভয়ংকর আমার জীবনে হু,,,,
আমানঃ আচ্ছা পরে শুনবো এখন কাজ করো আর হ্যাঁ প্লিজ কাজ টা ঠিক ভাবে করিও,,,আবির কিন্তু এমনি প্রচুর রাগী তো প্লিজ একটু ওর সাথে কথা বলতে সাবধান ওকে,,,আর ওর সামনে যাওয়ার দরকার নাই যা লাগবে আমাকে বলিও আমি আছি ওকে,,,,
তিথিঃ(হ্যাঁ বয়ে গেছে অই বজ্জাত বস এর সাথে সুন্দর করে কথা বলতে আমার তো এখন ইচ্ছে করছে ওকে উগান্ডাতে পাঠাই আর একটা কষে থাপ্পড় মেরে তখন এরটা আস্তে পড়ছে হু)হু
আমানঃ নিজের কাজ করো,
আমান চলে যায়,,তিথি বসে বসে নখ কামড়াতে থাকে,,,আর ভাবতে থাকে আবির তার কি হাল করবে,,
এই দিকে আবির তার কেবিন থেকে দেখতেছিলো এতো ক্ষন আমান আর তিথির দিকে,,,এই বুজেছে যে তিথিকে এইভাবে বের করতে পারবে না,,,তিথির ফাইল আনায় আর পড়তে লাগে সব কিছু ঠিক আছে কিন্তু বড় কথা আমান তিথির পক্ষে তাই তিথিকে সহজে বের করা যাবে না,,,
আবিরঃ এই অফিসে জব করার শখ কিছু দিনে মিটে যাবে তোমার,,আর আবির রহমান এর সাথে পাল্লা নেওয়ার মজা হারে হারে টের পাবে,,,লাইফে কখনো এই আবির রহমান এর নাম ভুলবে না এমন অবস্থা করবো রেডি হয়ে নাও মিস বকবক
আবির নিজেকে কন্ট্রোল করে,,,একটা পিয়ন কে দিয়ে তিথিকে ডাকায়,,
পিয়নঃ ম্যাডাম আপনাকে আবির স্যার ডাকে,,,
তিথি কথাটা শুনে পুরো থমকে যায়,,,ভয়ে কলিজা ধুকধুক করা শুরু করে,,,
তিথিঃ(হে আল্লাহ এতো বড় শাস্তি কেন দিলেন আপনার এই মাসুম তিথিটাকে,,,এই বজ্জাত টার অফিস পাইলেন আমাকে জব দেওয়ার জন্য,,আমি সিউর এখন কেবিনে ডুকলেই আমাকে কয়েকটা থাপ্পড় দিবে আমার এই নরম নরম গাল আজ শেষ)
পিয়নঃ ম্যাডাম শুনেছেন কি?
তিথির হুঁশ ফিরে,,,
তিথিঃ হ্যাঁ হ্যাঁ শুনেছি আপনি যান আমি যাচ্ছি
পিয়নঃ এখন যেতে বলছে দেরি হলে পরে স্যার বকা দিবে,,
তিথিঃ হুম যাচ্ছি (ভাই রে ভাই কে তুই হ্যাঁ এক তো ভয়ে মরি উপরে আরো লাগাস ভয় হুস)
পিয়ন চলে যাওয়ার পর তিথি তার কপালে হাত রেখে গভীর ভাবে ভাবে
তিথিঃ যদি আমাকে থাপ্পড় মারে তখন?? সিউর অনেক থাপ্পড় মারবে,,,আল্লাহ কি করবো প্লিজ হেল্প মি,,,,
এই দিকে আবির তিথির জন্য অপেক্ষা করছে নিজের রাগ কন্ট্রোল করে,,,,নিজে নিজে বলে উঠে আবির,,,
আবিরঃ তুমি অনেক ওভারস্মার্ট তাই না??,,,আর এই ওভারস্মার্ট এর কারনে তোমার জীবনে কত বড় তুফান আনবে তা কল্পনা ও করতে পারবে না মিস বকবক,,,
তিথি না আসায় পিয়ন কে দিয়ে আবার ডাকায়,,
পিয়ন আবার ডাকে তিথিকে,,,অনেক ক্ষন পর সাহস করে কেবিনের সামনে যায় বুকে হাত রেখে বলে
তিথিঃ হে আল্লাহ সব আপনার হাতে,,,, আপনার তিথি আজ মহাযুদ্ধে যাচ্ছে তাকে সাহায্য করিয়েন প্লিজ,,,
তুথিঃ আসবো?
কেবিনের দরজা খুলে দেখে আবির নাই,,,চারপাশ তাকিয়ে দেখে নাই,,,তিথি কেবিনের ভিতরে ডুকার সাথে সাথে দরজা লাগানোর শব্দ পেয়ে পিছনে তাকিয়ে দেখে আবির,,,তিথি গালে দুই হাত দিয়ে বলে
তিথিঃ আম সরিই,,,,আমি আর কখনো এমন ভুল করবো না প্রমেস,,,আর কখনো আপনাকে থাপ্পড় মারবো না প্লিজ আমাকে থাপ্পড় মারিয়েন না,,
আবির চুপ করে আছে,,তিথি গালে হাত রেখে চোখ বন্ধ করে কথা গুলো বলে খুব ভয়ে আছে দেখে বুজা যাচ্ছে,,,কিন্তু আবিরের রাগটা যে তিথিকে দেখে বেড়ে গেলো,,তিথির দিকে যায় হাতটা শক্ত করে চেপে ধরে দরজার সাথে জোরে ধাক্কা দিয়ে দাঁড় করায়,,জোরে এইভাবে ধাক্কা দেওয়ায় তিথি পিঠে খুব ব্যাথা পায়,,,দাঁতে দাঁত রেখে বলে উঠে আবির

আবিরঃ সাহস হয় কি করে তোমার রাস্তায় আমাকে থাপ্পড় মারার???আবার আমার অফিসে আসার?
আবির তিথির হাত টা খুবই শক্ত করে ধরে ব্যাথায় তিথির চোখ বেয়ে পানি গড়িয়ে পড়ে,,,আবির যেন নিজের হুঁশে নাই এতো পরিমাণ সে রেগে আছে,,,
আবিরঃ তুমি জানো না আমি কি কি করতে পারি,,,ধারণা নাই তোমার তাই এতো বড় সাহস দেখানোর সাহস করেছো,,,,,
তিথিঃ প্লিজ ছাড়ুন আমার হাতে লাগছে,,,,
আবিরঃ লাগুক যে থাপ্পড় তুমি আমাকে দিলে যা এখনও আমার কানে বাজছে তা আমি কখনো ভুলবো না আর তুমি ও ভুলে যাবে তা আমি হতে দিবো না,,
তিথি আবিরের দিকে রাগী লুক নিয়ে তাকিয়ে বলে
তিথিঃ ওকে মারেন আমাকে থাপ্পড় আপনি ও,,,,আপনার প্রতিশোধ নিয়ে নেন,,,মন শান্তি করুন আমাকে থাপ্পড় মেরে,,
আবির মুখের কোণায় একটু হাসি এনে বলে
আবিরঃ তুমি কি ভেবেছো তুমি যা করলে তা আমি করবো কখনো না,,,,,থাপ্পড় এর দাম তুমি ঠিক পাবে কিন্তু অন্য ভাবে,,,আর যা ভুলবে না কখনো ওকে,,,
কথাটা বলেই আবির তিথিকে ছেড়ে দেয়,,,তিথির হাতের কব্জি পুরো লাল হয়ে যায়,,,,
আবির নিজের টেবিলের দিকে যায় টেবিলে রাখা কয়েকটা ফাইল তিথির দিকে ছুড়ে মারে আর বলে উঠে
আবিরঃ কাল সকাল ১০ টার মধ্যে সব ফাইল রেডি চাই,,,ওকে
তিথির খুব রাগ লাগে হাতে না দিয়ে এইভাবে ছুড়ে মারে আবার এইভাবে অর্ডার চুপচাপ তিথি নিচ থেকে ফাইল গুলো নেয়,,,,অনেক গুলো ফাইল দেখে আবিরের দিকে অবাক দৃষ্টিতে তাকায়,,,
আবিরঃ হা করে আমার মুখ না দেখে যাও কাজে,,,
তিথিঃ এখানে তো অনেক গুলো এতো গুলো কিভাবে কাল সকালে?
আবিরঃ এইটা আমার মাথা ব্যাথা না কিভাবে করবে আমি জানি না,,,,কাল সকালে যেন পাই নাও গেট আউট
তিথি আবিরের এমন ব্যবহারে একটুও অবাক না,,সে জানে আবির তাকে শাস্তি দেওয়ার জন্য এইসব করছে,,,তিথি চলে যায় আবির ম্যানেজার কে ডেকে এনে বলে
আবিরঃ মিস তিথিকে আগের বছরের সব ফাইল চেক করতে বলবেন,,,আর হ্যাঁ ২ দিনের মধ্যে সব যেন পাই যদি না পাই তাহলে আপনি যেতে পারেন অফিস থেকে ক্লিয়ার
ম্যানেজারঃ ওকে স্যার
আবিরঃ আর শুনন,,,মিস তিথিকে কি কি কাজ দিতে হবে আমাকে জিজ্ঞেস করবেন,,,
ম্যানেজারঃ জ্বি স্যার
আবিরঃ যেতে পারেন,,,
ম্যানেজার চলে যাওয়ার পর আবির লেপটপে মনোযোগ দেয়,,,
এইদিকে তিথি এতো গুলো ফাইল দেখে পুরো শেষ,,,একটা ফাইলে এতো ভুল হিসাব যে ঠিক করতে করতে তার বিকাল ৪ টা বেজে গেছে লাঞ্চ পর্যন্ত করতে যায় নাই,,,,
আমান একটা মিটিং শেষ করে এসে দেখে তিথি মন দিয়ে কাজ করছে কিছু না বলে নিজের কেবিনে চলে যায়,,,,আবির আমানের কেবিনে এসে বলে
আবিরঃ কাল যে মিটিং অইটায় তুই যাওয়ার দরকার নাই আমি একা মিটিং করে নিবো তুই বরং একটু বাসায় যাইস মা তোকে যেতে বলেছে,,,
আমানঃ ওকে,,,তুই যেমন চাস
আবির মুচকি হাসে,,
আমান তার কিছু কাজ করে চলে যায় আজ তাড়াতাড়ি,,,
এইদকে সন্ধ্যা হয়ে যায়,,
সন্ধ্যায় সবার ছুটি হয়ে যায় তিথি এখনও কাজ করছে সারাদিন কিছু খেতে না পারার তার প্রচুর ক্ষিধা পেয়েছে,,,আবির ও অফিসে আছে শুধু
তিথি পেটে হাত দিয়ে বলে
তিথিঃ আমি যদি আর এক সেকেন্ড এখানে থাকি না খেয়ে তাহলে মরেই যাবো,,,,
তিথি উঠে যেতে লাগে আবার ফাইল গুলো দেখে তাই ফাইল গুলো সাথে করে নিয়ে নেয়,,,
অফিস থেকে বের হতেই লেট হয়ে যায় তার অনেক,,, রাস্তায় অপেক্ষা করছে গাড়ির জন্য একটা গাড়ি নাই,,,এইদিকে আবির অইসময় বের হয় অফিস থেকে তিথিকে দাঁড়াতে দেখে ও না দেখার অভিনয় করে গাড়িতে উঠে যায়,,,,গাড়ি একটু সামনে নেওয়ার পর আবার পিছনে আনে,,,আবার এতো জোরে ড্রাইভ করে যে রাস্তার পাশে জমানো পানি গুলো সব তিথির কাপড়ে মুখে পড়ে,,
আবির মুচকি হেসে গাড়ির স্পিড বাড়িয়ে চলে যায়,,
এইদিকে তিথি রাগে শেষ
তিথিঃ লাল কাক একটা ইচ্ছে করে করেছে আমি জানি,,,,চোখ তো নয় যেন পাথর হাতে নিয়ে ড্রাইভ করে যতসব,,,আমার প্রিয় ড্রেস(কান্না কান্না ভাব নিয়ে)
তিথি অনেক কষ্টে বাসায় ফিরে,, তাড়াতাড়ি শাওয়ার নিয়ে কিছু খেয়ে বিছানায় হেলান দেয় একটু আর সাথে সাথে চোখে যেন ঘুম ধরে যায়,,,,,
ফাইল গুলো আর দেখার সময় হয় নাই তার,,,রাতের ১ টায় ঘুম ভাঙ্গে ঘড়ির কাটায় টাইম দেখে তাড়াতাড়ি উঠে ফাইল গুলো নিয়ে বসে আর চেক করতে থাকে,,,,ঘন্টা খানিক পর কলম মুখে দিয়ে ভাবে
তিথিঃ বজ্জাত টাকে যদি নালায় চুবাতে পারতাম,,,,ইচ্ছে তো করে ডিমের জুস বানিয়ে তরমুজ এর সুপ বানিয়ে খাই,,,ছাগল এর বাপ একটা হু ওকে ওকে কাজ কর তিথি না হলে অই হলুদ জিরাফ কাল আবার শুনাবে এই ফাইল গুলোর জন্য হু
এইদিকে,,

আবিরের চোখে যেন ঘুম নেই বারবার কানে আসছে থাপ্পড় এর আওয়াজ,,,,সিনটা কিছুতে ভুলতে পারছে না,,,বারান্দায় চলে যায় বারান্দায় গিয়ে দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে ভাবে
আবিরঃ অই মেয়েকে আবির রহমান এর আসল রুপ দেখাতে হবে,,,,আবির রহমান এর সাথে নেক্সট টাইম কথা বলতে ও যাতে কাঁপে এমন অবস্থা করবো,,,কাল থেকে তোমার লাইফ আর তোমার মত চলবে না যেমন আমি চাইবো তেমন হবে এখন থেকে,,,,
সকালে,,,,,
তিথি সারারাত ফাইল গুলো চেক করতে থাকে,,,অফিস এর টাইম হয়ে যাওয়ায় রেডি হয়ে হালকা নাস্তা করে বের হয়ে যায় অফিসের জন্য,,,,
অফিসে এসে দেখে সবাই তিথির দিকে তাকিয়ে আছে কেমন ভাবে,,তিথি কিছুটা বিরক্তি ভাব নিয়ে বলে
তিথিঃ আমার কি রুপ বেয়ে বেয়ে পড়ছে নাকি যে হা করে তাকিয়ে আছো সবাই
নিলয় এসে তিথিকে টেনে এক পাশে নিয়ে যায়,,,
নিলয়ঃ চুপ চাপ এই দিকে আয়,,
তিথিঃ কি হইছে বল,,,
নিলয়ঃ আবির স্যার তোকে ২ বার খুজে গেছে,,,আর রেগে ছিলো
তিথিঃ এই লাল কাকের কি আর কাজ নাই আমাকে খুজা ছাড়া
নিলয়ঃ তাড়াতাড়ি যা পরে স্যার রাগ করবে আবার কাল যা দেখলাম আল্লাহ
তিথি মুখ ভেঙ্গচি দিয়ে নিজের টেবিলের সামনে যায়,, তার ব্যাগ টা রেখে আবিরের কেবিনে যায়,,,দরজা নক করে
তিথিঃ আসতে পারি স্যার
আবিরঃ হুম,,(লেপটপে কাজ করতে করতে)
তিথিঃ আমাকে ডেকেছিলেন?
আবিরঃ হ্যাঁ এতো লেট আপনার? আর ফাইল গুলো কি রেডি?
তিথিঃ জ্বি স্যার শুধু একটা ফাইল বাকি আছে এই ছাড়া সব রেডি
আবির লেপটপ অফ করে তিথির দিকে তাকিয়ে বলে
আবিরঃকোম্পানি আপনার কাজের জন্য বেতন দেয় আপনার কাজ ফাঁকি দেওয়ার জন্য না,,,
তিথিঃ সরি স্যার (অমানুষ একটা আস্তা একটা কালা জিরাফ)
আবিরঃ আজ তোমার কিছু কাজ আছে,,তোমার জন্য অপেক্ষা করছিলাম কখন তুমি আসবে আর তোমার কাজ তোমাকে বুজিয়ে দিবো আমি,,,
তিথিঃ কি কাজ?
আবির উঠে দাঁড়ায় তিথির দিকে এসে বলে
আবিরঃ আমার সাথে আসো,,,,,

আবির তিথিকে গাড়ি পার্কিং এর জায়গায় নিয়ে যায়,,,তিথি হা করে তাকিয়ে আছে এই ভেবে যে তাকে দিয়ে কি করাবে আবির,,,
আবিরঃ এখানে আজ অনেক গুলো গাড়ি আসবে মানে আজ আমার একটা মিটিং আছে তা শেষ হওয়া পর্যন্ত তুমি গাড়ি পার্কিং এর জায়গায় কাজ করবে,,আর বাহির থেকে অনেক গুলো গাড়ি আসবে আবার যাবে সব গুলো লাইনে আর সুন্দর করে থামাবে আবার ঠিক করে পার্কিং জায়গার থামাবে রাখতে বলবে,,আর হ্যাঁ সব গুলো গাড়ি আপনি পাহারা দিবেন,,একটা গাড়ির কিছু হলে আপনার বেতন থেকে নেওয়া হবে ক্লিয়ার
তিথিঃ মানে?(অবাক দৃষ্টিতে তাকিয়ে)
আবিরঃ কেন বাংলা ও কি কম বুজো???
তিথিঃ আমি কি দাড়োয়ান যে এইসব করবো
আবিরঃ আজ থেকে সব,,,চুপচাপ যা বলেছি তা করবে,,এইটা আমার অর্ডার
আবির চলে যায়,,তিথি খুব বিরক্তি ভাব নিয়ে দাঁড়ায় কিছু ক্ষনের মধ্যে একটা একটা গাড়ি আসতে থাকে আর সব গুলো গাড়ি তিথি একটা জায়গায় পার্কিং করতে বলে,,,,খুব আজব লাগছে তিথির কাছে এমন কাজ দেওয়ায় খুব কষ্ট ও হচ্ছে,,
আজ আমান আসে নাই যে তিথিকে বাঁচাবে,,,
আবির বেশ মজা নেয় এইটার,,,রোদের মধ্যে দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে তিথি গাড়ি পাহারা দিচ্ছে আবার কিছু গাড়ি পার্কিং করতে সাহায্য করছে,,,এইসব দেখে আবিরের কাছে বেশ ভালো লাগে ইনজয় করে তিথির কষ্ট গুলোকে,,,কফি কাপে চুমু দিয়ে তিথির কান্ড দেখছে তার কেবিনের জানালা দিয়ে,,,
কিছু ক্ষন পর আবির তার কয়েকটা মিটিং শেষ করে,,,মিটিং শেষ করে নিজের কেবিনে এসে বসে থাকে তিথিকে তবুও সে ডাকে না ইচ্ছে করে,,,প্রায় সন্ধ্যা ঘনিয়ে আসে,,তিথি এখনও পার্কিং লোকেশনে,,,,খুব জিদ লাগছে তিথির সারাদিন খালি পেটে ছিলো একটু পানি পর্যন্ত খাওয়ার আজ সুযোগ দেয় নাই আবির এমন ব্যবস্থা আগে থেকে করে রেখেছিলো,,,,
তিথির শরীর পুরো দুর্বল হয়ে যায় সারাদিন না খাওয়ায়,,চেহারা টা পুরো শুকিয়ে যায়,,দাঁড়াতে পর্যন্ত কষ্ট হচ্ছে সারাদিন দাঁড়িয়ে থাকার কারনে,,,চোখ গুলো ও ঝাপসা হয়ে আসছে,,,
চলবে,,,,,,,,,