বউ রানী { সিজন ২ }

বউ রানী { সিজন ২ } ——- পর্ব–২

ফ্রেস হয়ে বাহিরে এসে দেখি শ্বাশুড়ি
আমার বউকে হাতে লাঠি নিয়ে
দৌরাচ্ছে আর বলছে ঘরে জামাই রেখে
তুই বাহিরে ছেলেদের সাথে দৌরা
দৌরি করতেছিস! গতকল তোর বিয়ে হয়ছে
আর আজকে কিনা তুই খেলতে চলে আসলি?
সোনালী:- বিয়ে হয়ছে তো কি হয়ছে!
আমি আগেই আব্বাকে বলেছি গোল্লাছুট,
কানাঁমাছি, বউছিঃ আর লাফা লাফি
খেলবো। আব্বা এই গুলাতে রাজি হয়ছে
বলে তো আমি বিয়ে করতে রাজি হয়ছি।
শ্বাশুড়ি:- তখন তো তোর আব্বু তোকে
রাজি করাবার জন্য বলছে! এখন তোর
বিয়ে হয়ছে আর বিয়ের পরে মেয়েরা এই
সব কিছু খেলেনা। মেয়েরা বিয়ের পর
স্বামির সাথে সময় কাটাই বেশি বেশি।
সোনালী:- কিসের সময় কাটাবো আর
কিভাবে?
শ্বাশুড়ি:- ঠিক আছে আজকে তোর ভাবি
তোকে শিখিয়ে দিবে কিভাবে সময়
কাটাতে হয়?
সোনালী:- গতকাল তুমি আর ভাবি
আমাকে যা যা করতে বলেছো আমি তা
তা করেছি তবে ভাবি যে বলছিলো
আমাকে ওনি আন্জাদা ধরবে আর চুমা
দিবে কোথায় ওনি তো আমাকে কিছুই
করেনি। সব কিছু আমারি করতে হয়ছে
আমি চুমা দিয়েছি আমিই আন্জাদা
ধরেছি। তখনি শ্বাশুড়ি গিয়ে সোনালীর
মুখ চেপে ধরে বলতেছে,,
শ্বাশুড়ি:- বর আর বউ কিছু করলে তা
কাওকে বলতে নেয়। এখন গিয়ে স্বামির
সাথে বসে একটু গল্প কর যা।
সোনালী:- কি গল্প করবো এখন কি কোন
গল্প করার সময়! তার চায়তে ভালো হবে
খেলাটা শেষ করে নেয়। তখনি শ্বাশুড়ি
হাতের লাঠি দিয়ে সোনালীকে আঘাত
দিতে আরম্ব করেছে আর সোনালী আব্বা
আম্মা করে চিল্লাচ্ছে আমি দাঁড়িয়ে
দাঁড়িয়ে ওদের কাহিনি দেখতেছি।
শ্বাশুড়ি:- যা এখুনি গিয়ে স্বামির সাথে
বসে বসে গল্প করবি তানা হলে একটাও
আঘাত মাটিতে পরবেনা।
সোনালী:- হ্যা আম্মা আমি এখুনি
যেতেছি বলে হাত ডলতে ডলতে আমার
দিকে এগিয়ে আসতেছে এসে আমাকে
বলতেছে,, এই যে, আসেন আমরা দুজনে বসে
এখানে গল্প করি?
আমি:- কিসের গল্প করবে?
সোনালী:- যেই মন চাইবে সেইটা বলবেন
আমি শোনবো তানা হলে মায়ের হাতের
মাইর একটাও মাটিতে পরবেনা সব গুলা
আমার গারে আর পিটে পরবে।
আমি:- ঠিক আছে তাহলে চলো একটু
তোমাদের গ্রামটা ঘুরে আসি হেটে
হেটে।
সোনালী:- সারা গ্রাম আমার ঘুরা এখানে
কিছু নেয়, আর গল্প করতে হলে গ্রাম
দেখতে যাবো কেন?
আমি:- ঠিক আছে তাহলে রুমের ভিতরে
যাই?
সোনালী:- রুম কিসের রুম।
আমি:- এই মানে ঘরের ভিতরে?
সোনালী:- ভাবি বলেছে শুধু রাতের
বেলাই আমি আর আপনি ঘরের ভীতরে
থাকবো দিনের বেলা যে ঘরের ভীতরে
থাকতে হবে এই কথা তো ভাবি আমাকে
বলেনি। আপনি একটু খানি দ্বাড়ান আমি
এখুনি ভাবিকে জিগাই আসতেছি দিনের
বেলা আপনার সাথে ঘরের ভীতরে যাবো
কিনা?
আমি:- আরে না থাক ঘরে ভীতরে যেতে
হবেনা তুমি গিয়ে ওদের সাথে খেলা
করো কেমন?
সোনালী:- কেন যেতে হবেনা, আপনি
এখুনি না বলছেন যাবেন?
আমি:- হ্যা বলছি কিন্তু এখন যেতে হবে
না। তখনি সোনালীর ভাবি এসে আমাকে
সোনালীকে বলতেছে,,
ভাবি:- সোনালী তোর জামাইকে নিয়ে
খেতে আয় তোদের জন্য সবাই অপেক্ষা
করতেছে।
সোনালী:- ভাবি তোমাকে একটা কথা
জিগাইবো?
ভাবি:- যা জিজ্ঞেস করবি খাবার
টেবিলে করিস এখন তোর জামাইকে
সাথে করে খাবার টেবিলে আয়। বলে
সোনালীর ভাবি চলে গেলো আর
সোনালী এসে আমাকে বলতেছে,,
সোনালী:- চলেন খাবার খাবেন?
আমি:- তুমি যাও আমি আসতেছি।
সোনালী:- ভাবি বলেছে আপনাকে
সাথে করে নিয়ে যেতে, যদি আপনি না
যান তাহলে তো ভাবি আমাকে বকা
দিবে।
আমি:- হ্যা চলো, কি আর করবো সবার
সামনে মান ইজ্জত এবার যাবে। আল্লাহ
আজকের মত আমাকে বাচিয়ে দেন এরপর
এমন ভূল আর কোন দিন করবোনা। এই কথা
গুলো ভাবতে ভাবতে খাবার টেবিলের
সামনে গেছি যখনি আমি আর সোনালী
চেয়ারে বসেছি তখনি,,
ভাবি:- সোনালী তুই আমাকে কি যেন
জিগাইবি বলছিলি এখন বল। তখনি আমি
চেয়ার থেকে উঠে দৌর দিব দিব ভাব।
সোনালী:- আপনি তো বলেনি দিনের
বেলা আমি ওনার সাথে ঘরের ভীতের
থাকতে। কিন্তু ওনি তো আমাকে দিনের
বেলাও ঘরের ভীতরে নিয়ে যেতে
চাইছে তাই বলতেছি কি আমি কি ওনার
সাথে দিনের বেলাও ঘরের ভীতরে
থাকবো। সোনালীর কথা শোনে সবাই
সোনালীর দিকে না তাকিয়ে আমার
দিকে তাকিয়ে আছে।
শ্বশুড়:- সোনালী তুই এখন বড় হয়ছিস এখন
তোর বিয়ে হয়ছে নিজের বুদ্দি খাটিয়ে
কথা বার্ত্রা বলিস।
সোনালী:- আমার কি দোষ আমি যখন একা
শুইতে গেছিলাম রাতে তখন ভাবি
বলেছে এখন থেকে রাতের বেলা তুই একা
থাকবিনা তোর সাথে তোর বরও থাকবে
মানে ওনি থাকবে আমার সাথে। কিন্তু
দিনের বেলা যে ঘরের ভীতরে থাকতে
হবে তা তো বলেনি। তাহলে কি এখন
থেকে দিনের বেলাও ওনার সাথে ঘরের
ভীতরে থাকবো। সোনালীর কথা শোনে
সবাই আব্বু সহ আমার দিকে তাকিয়ে
আছে।
ভাবি:- সোনালী তুই কি বলতেছিস এসব
কথা?
সোনালী:- আমার কি দোষ ওনি তো
আমাকে বলছে ঘরের ভীতরে যেতে! এখন
ভাবি তুমি বলো যদি ওনি আবার বলে
দিনের বেলা ঘরের ভীতরে যেতে
তাহলে কি যাবো? এবার সোনালীর কথা
শোনে আমি খাবার টেবিল থেকে ওঠে
আসতেছি তখনি,,
আব্বু:- সোহরাব খাবারটা শেষ করে তারপর
যা, সোনালী গ্রামের মেয়ে লিখা পড়া
তেমন করেনি আর ওর বয়স তো তেমন
হয়নি। ওর কথা কিছু মনে না করে তুই ওকে
সব কিছু শিখিয়ে নিলে ভালো হবে।
আমি:- ওকে আমি কি শিখাবো তার
চাইতে ভালো হবে আমি আজকে ঢাকা
চলে যাবো।
আব্বু:- ঠিক আছে তাহলে আমরা সবাই
আজকে বিকালে ঢাকা চলে যাবো সাথে
# বউ_রানী সোনালীকে নিয়ে যাবো।
সোনালী:- আমি ঢাকা যাবো কি মজা
মজা আমি ঢাকা গিয়ে চিরিয়াখানা
দেখতে যাবো তারপর রমনা বটগাছ
দেখতে যাবো! আরো কত যায়গায় ঘুরতে
যাবো।
আব্বু:- হ্যা তোমাকে সোহরাব সব কিছু
দেখাবে। এখন খাবারটা শেষ করে নাও,
তারপর গিয়ে রেডি হয়ে যাবে।
সোনালী:- এই আপনি আমাকে সব যায়গায়
ঘুরতে নিয়ে যাবেন?
আমি:- একবার আব্বুর দিকে তাকিয়ে
বলছি হ্যা নিয়ে যাবো। তখন সোনালী
অনেক খুশি হয়ছে এরপর খাবার শেষ করে
আমি রুমে এসে রেডি হচ্ছি তখনি
সোনালী এসেছে কাঁদতে কাঁদতে। আমি
জিজ্ঞেস করেছি সোনালী তুমি কান্না
করেছো কেন?
সোনালী:- আম্মু বলেছে আমি নাকি একা
একা আপনাদের সাথে যাবো তাই।
আমি:- হ্যা বিয়ের পর বউরা তো স্বামির
বাড়ীতে থাকে আর তোমার সাথে আমার
বিয়ে হয়ছে তাহলে তুমি তো আমাদের
বাড়ীতে থাকবে। আচ্ছা এখন তুমি কাকে
সাথে নিলে কান্না করবেনা।
সোনালী:- রাজা, পাঁচ ঘুটি, সোলয়া, আর
টুন টুনিকে, সাথে নিলে আমার আর কান্না
আসবেনা।
আমি:- এত মানুষকে নিয়ে তুমি কি করবে?
সোনালী:- এরা মানুষ নয়, সব কিছু আমার
খেলনার নাম, দ্বাড়ান আমি এখুনি সব
গুলাকে নিয়ে আসতেছি। বলে দৌরে ঘর
থেকে চলে গেলো আর একটু পর এসেছে
হাতে করে পাছটা পাথর একটা রসি, বড়
একটা চারা, আর একটা পুতুল।
আমি:- এই গুলা দিয়ে কি করবে?
সোনালী:- ঢাকা গিয়ে খেলবো ঐখান
কার পিচ্চি ছেলে মেয়েদের সাথে। আর
আমি আগে বলে দেয় আমাকে যদি
খেলতে বাধা দেন তাহলে আমি কিন্তু
অনেক কান্না করবো?(এখন কোন একটা বলে
ঢাকা নিয়ে যায় তারপর আমি যা বলবো
তাই হবে এখানে কিছু করা যাবেনা, মনে
মনে কথা গুলা ভেবে নিলাম)
আমি:- ঠিক আছে তুমি যা বলবে তাই হবে
এখন রেডি হয়ে আসো। তারপর সোনালী
রেডি হয়ে এসেছে আর এদিকে এলাকার
সব গুড়া গাড়া বাচ্ছা বড় সবাই এসেছে
সোনালীকে বিদায় দেওয়ার জন্য। আমার
তো মনে হচ্ছে এলাকার হাঁস মুরগি গুলাও
ওর জন্য কান্না করতেছে। যাক অবশেষে
সবার কাছ থেকে বিদায় নিয়ে আমরা
গাড়ীতে ওঠলাম ভাইয়া গাড়ি চালাচ্ছে
পাশে ভাবি, আম্মু আব্বু, মাঝে আমি আর
সোনালী একটু পেছনে বসেছি। তখনি,,
সোনালী:- আমার মাথা ঘুরতেছে মনে হয়
ভমি হবে।
আমি:- ভাইয়া গাড়ি থামা, তখনি
সোনালী বলে,,
সোনালী:- এখন আর হবেনা, তখন আবার
গাড়ি চালাতে সুরু করেছে। কিছুক্ষন
যাবার পর সোনালী বলে,, আমার না অনেক
ঘুম পাচ্ছে আমি ঘুমাবো।
আমি:- ঠিক আছে তাহলে তুমি আমার
কাদে মাথা দিয়ে ঘুমিয়ে থাকো।
তারপর সোনালী আমার কাঁদের উপর মাথা
রেখে ঘুমিয়ে পরছে। প্রায় তিন ঘন্টা পর
আমরা আমাদের বাড়ীতে এসেছি তবে
সোনালী এখনো ঘুমিয়ে আছে। তারপর
গাড়ি থেকে সবাই নামতেছে আমি
সোনালীকে ঢাক দিতেছি তখন সোনালী
ওঠতেছেনা, তাই ইচ্ছে করে ওর কপালে
একটা কিস করে দিয়েছি আর তখনি
সোনালী সজাক হয়ে গেছে। হায় আল্লাহ
এই আমি কি করলাম যদি এখন সোনালী
বলে দেয় আমি ওকে গাড়িতে কিস
করেছি তাহলে তো আমার মান সম্মানের
বারোটা বাজাবে।
সোনালী:- আপনি এমন করে তাকিয়ে
আছেন কেন আমি নাব আমাকে ধরে
নামান।
আমি:- (যাক বাচা গেলো তাহলে ঘুমিয়ে
ছিলো বুঝতে পারেনি।) হ্যা আসো
তোমাকে নামায়। বলে সোনালীকে ধরে
গাড়ি থেকে নামিয়ে আমরা সবাই
বাসার ভীতরে ঢুকতেছি তখনি সোনালী
বলে,,
সোনালী:- শোনেন আপনি যে আমাকে
গাড়ির ভীতরে চুমা দিয়েছেন, কিন্তু
আমি তো আপনাকে চুমা দেয়নি তাহলে
আমাকে চুমা দিলেন কেন? তখনি চেয়ে
দেখি সবাই আমার দিকে তাকিয়ে আছে
আর আমি নিচের দিকে তাকিয়ে বাসার
ভীতরে যাবো তখনি সোনালী কান্না
করতে সুরু করে দিয়েছে।
আমি:- সোনালী তুমি কান্না করতেছো
কেন?
সোনালী:- আপনি আমাকে চুমা দিয়েছেন
এখন আমিও আপনাকে চুমা দিবো। তানা
হলে আমি কান্না করতে থাকবো।

চলবে,,,

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *