প্রেমে পড়া বারণ

প্রেমে পড়া বারণ !! Part- 08

হাতে মেহেদী দিয়ে বসে আছি।আজ আমার হলুদ ছিলো। সব কিছু মনে হয় স্বপ্ন দেখছি।
আমি মনে হয় ঘোরের মাঝে আছি,নয়তো স্বপ্ন দেখছি। যদি তাই হয় তবে এই ঘোর না কাটুক,যদি স্বপ্ন হয় তবে এই স্বপ্ন ছেড়ে জাগতে চাই না।
রেহান ভাই যখন আব্বু আম্মুকে বিয়ের কথা বললো, সবাই খুব খুশি হয়েছে। আম্মু আর ফুপি মনে হয় সবচেয়ে বেশি খুশি হয়েছেন সেটা উনাদের আগ্রহ আর উৎসাহ দেখেই বোঝা যাচ্ছে।
পারে তো তখনই বিয়ে দিয়ে দেন!!
মাঝে দুদিন সময় গেলো। বিয়ের শপিং, সবকিছু এই দুইদিনে শেষ হলো।
বিয়ের আয়োজন অনেকটা ঘরোয়া ভাবেই করা হয়েছে। খুব কাছের আত্মীয়-স্বজন,বন্ধু-বান্ধবদের ইনভাইট করা হয়েছে।
(আপনাদের ও নিমন্ত্রণ রইলো বিয়ের!) 😊😉
এই দুইদিনে রেহান ভাইয়ের সাথে দেখাও হয়নি।আমি রুম থেকেই বের হইনি,আর যখন মাহি আপু, দিয়া, রিয়াদ ভাইয়া সবাই আমাকে নিয়ে শপিং এ গেলো তখনও উনাকে দেখিনি। মনে মনে খুঁজেছি,কিন্তু পেলাম না! একটু মন খারাপ ছিলো।
আজ দুজনের হলুদ সন্ধ্যা এক সাথেই হলো। সবাই খুব আনন্দ করেছে।
উনাকেও খুব সুন্দর লাগছিলো। কিন্তু সবার সামনে লজ্জায় আর কথা বলতে পারিনি!
মাহি আপু আমার হাতে মেহেদী দিয়ে আমাকে রুমে দিয়ে গেছেন। ।
আমার ভাবনায় ছেদ পড়লো মাহি আপুর কথায়।
– মেহেদী শুকিয়ে গেছে?
– হা।
– তাহলে, আয় তুলে দিচ্ছি।তারপর ফ্রেশ হয়ে ঘুমিয়ে পড়।
– আচ্ছা।
– যদিও তোর ঘুম আসবে না জানি! কিন্তু আজ না ঘুমালে,কাল তো জাগতে পারবি না!
বলেই চোখে টিপ্পনী কাটলো!!
– ধুর! তোমার শুধু অসভ্যতা!
– হা,আমি বললেই অসভ্যতা! ঠিক আছে! দেখবোনে!
মাহি আপু চলে যাবার পরে ফ্রেশ হয়ে বিছানার এলাম।
কিন্তু কিছুতেই ঘুম আসছে না।
রেহান ভাই কি ঘুমাচ্ছেন? দুই দিনের মধ্যে একবারও কথা হয়নি।উনি ইচ্ছে করলেই একবার ফোন দিতে পারতেন, সেটাও দেয়নি।
আমি কি করে নির্লজ্জের মতো ফোন দেই?
তাই আমিও দেইনি।
এসব ভাবতে ভাবতে একটা ফোন আসলো। মোবাইল হাতে নিয়ে দেখি রেহান ভাই!!.
রিসিভ করে কি বলবো ভেবে পাচ্ছি না।মনে হচ্ছে বুকে কেউ হাতুড়ি দিয়ে পেটাচ্ছে!
– হ্যালো।
– ঘুমিয়ে পড়েছিলি?.
– না।
– কি করছিস?
– শুয়ে আছি।
– ঘুম আসছে না?
– আপনি ঘুমাননি?
– আমারও ঘুম আসছে না। আজকে তোকে অনেক সুন্দর লাগছিলো । বউ বউ।।
বলেই হাসলেন।
উনার কথা শুনে আমি মিটিমিটি হাসছি।
– জানিস, এমন হুট করে সবটা হয়ে যাবে সেটা ভাবিনি।।
– আমিও না!
– বেচারা ইশতিয়াক!!
তবে ওকে একটা ধন্যবাদ জানানো দরকার।
– কেন?.
– ওর জন্যই আজকে এসব হচ্ছে।
– হুম।
– আচ্ছা এখন ঘুমিয়ে পড়।কালকে তো সারাদিন অনেক প্রেশার যাবে।
– আচ্ছা।
– আর শুন।
– কি?
– বিয়ের সাজে চশমা টা পরিস না,প্লিজ!
– আমি চশমা ছাড়া…!!
– আচ্ছা ঠিক আছে পড়িস।এমনি বললাম।
আমার কি আর সেই কপাল!.
আমার তো বউ হবে এক কানি!!
– কিহ?
রাগে আমার.. ইচ্ছে করছে…
চশমা পড়ি বলে এই ভাইবোন গুলো কত নাম দিলো আমাকে! কানি! চার ব্যাটারি!!
আর আজ উনিও!.
– ভালো হয়েছে আমি কানি।কানি বিয়ে করতে কে বলেছে? করতে হবে না বিয়ে।
– আচ্ছা, আচ্ছা, সরি সরি আর বলবো না।। এখন রাখি।তুই ঘুমা।
– আচ্ছা ঠিক আছে।
রেহান ভাই ফোন রেখে দিলেন।।ভাবনার সাগরে ডুব দিয়ে আমিও ঘুমে তলিয়ে গেলাম।
চলবে….