প্রেমের পাঁচফোড়ন

প্রেমের পাঁচফোড়ন !! Part- 46

কেন লজ্জা করবে?তুমি এখন আমার বউ,এখন তো লজ্জা লাগারই কথা না,অবশ্য তখনও বউ ছিলে,পাতানো বউ,তখন সাহস দেখাতে পেরেছি আর এখন তো!!
.
এই খবরদার,একদম ঠোঁট কেটে কুচিকুচি করে মরিচখোলা দিয়ে দিব আমি
.
তোমার চিন্তাধারা এতটা উপরে কেন বলোতো?আমি?
আমি শাহরিয়ার শান্ত কিনা তোমায় কিস করবো??
ঠোঁট দেখছো তোমার?আমি যারে কিস করবো তার ঠোঁটে এক গাদা লিপস্টিক থাকবে
তোমার ঠোঁটে তো লিপস্টিক নাই,জীবনে দাও ও নাই,হুদাই ন্যাচারাল পিংকিস একটা রঙ,এটা দেখে আমার কিস করার ইচ্ছাও জাগবে না বুঝলা??
.
হইসে,কিস করবেন না ঠিক আছে তাই বলে এত কথা শুনানোর কোনো মানে হয় না,আর আমিও আপনাকে কিস করতে কেনোই বা যাবো?আপনার ঠোঁট দেখছেন?সারাদিন সিগারেট আর সেন্টার ফ্রেশ খেয়ে খেয়ে কি অবস্থা বানাই রাখসেন
.
আমার ঠোঁট একদম ঠিক আছে,আমি ভার্সিটির ক্যামপাসে দাঁড়িয়ে ঠোঁটে হাত বুলালে মৌমাছির মত ১০/১৩টা মেয়ে এসে সামনে দাঁড়াবে জানো তুমি?
.
হ্যাঁ,শুধু দাঁড়াবে,আর কিছু না,ঐ ঠোঁট ছোঁয়ার ইচ্ছা কারোর জাগবে না
.
নিচতলা এসে গেছে আহানা বেরিয়ে চলে গেলো লিফট থেকে
গ্যারেজ থেকে শান্ত বাইক নিয়ে আসলো রোডের কাছে
আহানা চুপচাপ উঠে বসলো

আহানা?
.
কি?
.
তোমাকে আমি ছাড়া আর কেউ কিস করেছে কখনও?
.
না,😒কেন বলুনতো
.
এমনি
.
আপনি তো এলিনাকে করেছেন আমি ১০০% সিউর,আমাকে দলিল দেখালেও বিশ্বাস করবো না
.
তুমি তো বললে আমার যে ঠোঁট আমাকে কেউ কিস করবে না তাহলে?
.
তোহহ?আপনি তো বললেন আপনি এমন কোনো মেয়েকে কিস করবেন যার ঠোঁটে এক গাদা লিপস্টিক থাকবে,আর এলিনা তো ২গাদা লিপস্টিক দিয়ে আসে রোজ,তার মানে ওরে করছেন নিশ্চয়
.
তোমার সাথে মাঝে মাঝে কথায় পারি না আমি,আওলায় যাওলাই যাই,এত কথার প্যাঁচ কেমনে দিতে পারো
.
কিস টপিক বাদ,আমিও না কোথাকার কোন ছেলের সাথে কিস নিয়ে আলোচনায় মেতেছি
.
হুহ ভেরি ফানি,কোথাকার কোন ছেলে মানে?আমি তোমার পাতানো বর ছিলাম ওকে?আর এখন রিয়েল বর
এমনকি আমি তোমাকে কিস ও করেছি ছোটবেলায়,ওকে?
সো আজ আমি কোথাকার কেউ না,এখন আমি তোমার লিগালি হাসবেন্ড,আর একদিন কোথাকার বললে পানিতে চুবাবো

চা নিয়ে দুজনে বসে আছে দূরের এক গাছতলায়,মানে সেই লেকটাতে যেটাতে কদিন আগেই এসেছিলো যখন তারা দুজনেই অবিবাহিত ছিল!
তবে আজ আর পানিতে পা চুবাইনি
কারণটা হলো আহানার গা গরম,মানে হালকা জ্বর,শান্ত ওর হাত ধরতেই টের পেয়েছে তাই আর পানিতে পা চুবায়নি,এমনি একটা গাছের নিচে ফাঁকা রোডে বসে আছে দুজনে,হাতে চায়ের কাপ,কাপ থেকে ধোঁয়া উঠতেসে
আহানা বড় রোডটার দিকে তাকিয়ে আছে,সে রোড দিয়ে বড় বড় গাড়ী যাচ্ছে,একবার ট্রাক,একবার বাস,একবার প্রাইভেট কার
শান্ত হঠাৎ করে চুপ হয়ে গেছে
আহানা চারিদিক চোখ বুলিয়ে শান্তর দিকে তাকিয়ে ব্রুটা কুঁচকিয়ে বললো কি হয়েছে আপনার?
.
কিছু না,আমি ঔষুধ কিনে দিয়ে যাব,খাবার খেয়ে ওটা খেয়ে নিবা,আমি কিন্তু পরে এসে ঔষুধের পাতা চেক করবো,না খেলে তোমার খবর আছে,তুমি তো আবার ঔষুধ খেতে ভুলে যাও
.
আপনার কি ধারনা?সামান্য এই জ্বরের জন্য আমি ঔষুধ খাবো?আর কাজ নাই আমার
.
তুমি খাবে না তোমার স্বামী খাবে,তুমি নিজের একটুও যত্ন নাও না
.
ঢং করতে হবে না,আপনি তো নিজের খুব যত্ন নেন তাই না?তাই তো ডেইলি ১২টা করে সিগারেট খান
.
১২টা খেলে কিছু হয় না,আর আজ ১১টা খাইসি
.
শোয়ার আগে আরেকটা খাবেন,জানি আমি
.
তো কি হয়েছে,কিছু তো হয় না এটাতে,বরং তোমার জ্বর হলে তুমি দূর্বল হয়ে যাবা,অফিস আসতে পারবা না,তারপর তোমাকে অফিস থেকে বের করে দিবে
.
হুম,ঠিক আছে খাবো
.
শীত লাগতেসে?আমার জ্যাকেটটা নাও

আহানা চোখটা বড় করে বললো এত কেয়ার?
.
কিসের কেয়ার?আমার গরম লাগতেসে বলে তোমাকে দিচ্ছি,বাসায় গিয়ে দিয়ে দিবা,এখন জ্যাকেট খুলে হাতে রাখাটাও ঝামেলা তাই তোমাকে দিতেছি,অন্য কোনো কারণ নেই
.
লাগবে না,আপনার জ্যাকেট আপনি আপনার কাছে রাখেন
.
আহানা চলো আজ সারারাত আমরা ঢাকার রাস্তায় কাটাই,শুধু হাঁটবো,ক্লান্ত হলে গাছের নিচে বসবো
.
পারবো না,আমার শরীর খারাপ লাগতেসে আমি বাসায় যাবো
.
😒ওকে
.
বাসায় ফিরে শান্ত বাইক নিয়ে চলে যেতে নিতেই দাদা ডাক দিলেন
.
আল্লাহ জানে আবার কেন ডাকতেসে
আসসালামু আলাইকুম দাদা!
.
ওয়ালাইকুম আসসালাম,তা শান্ত কই যাও তুমি?
.
আমি আসলে, ইয়ে আসলে ডিম আনতে যাই
.
আরে ডিম তো আমাদের বাসায় ও আছে,তুমি যাও বাসায় আমি অলিকে দিয়ে পাঠাচ্ছি
.
না লাগবে না,ঐ তো দোকান!
.
আরে না যাও
দাদা ঠেলে শান্তকে দোতলায় পাঠিয়ে দিলেন
.
আহানা নিজের রুমে এসে জামা চেঞ্জ করতেসে
.
শান্ত দরজার সামনে এসে দাঁত কেলিয়ে একবার এক দিকে তাকাচ্ছে
দাদা কোমড়ে হাত দিয়ে বললেন কি হলো?তোমার কাছে তো এক্সট্রা চাবি আছে তাহলে বাইরে দাঁড়িয়ে আছো কেন?
.
না চাবি লাগবে না,আমি নক করতেসি
.
কিসের নক,তোমার ওয়াইফ অন্য কেউ তো না,চাবি দিয়ে খুলে ভিতরে যাও
অলি অলি?এদিকে আয় তো মামণি
শান্ত তাও দুবার নক করলো দরজায়,আহানা শুনতে পেলো না কারণ সে বেডরুমের শেষ কোণায় আর শান্তর টোকাটা ছিল আস্তে,দাদার ভয়ে জোরে দিতে পারলো না,শেষে বাধ্য হয়ে চাবি নিয়ে দরজা খুলে ওদিকে তাকাতে তাকাতে ভিতরে চলে আসলো সে
কিসের একটা শব্দ পেয়ে আহানা রুম থেকে বেরিয়ে ড্রয়িং রুমে পা রাখতেই শান্তকে দেখে ওর চোখ কপালে
সাথে সাথে এক চিৎকার দিলো সে
শান্ত চোখ বন্ধ করে আরেকদিকে ফিরে দাঁড়িয়ে পড়লো
.
সরি সরি,আগে থেকে মাফ চাইতেসি
.
আপনি একটা স্টুপিড! একটা মেয়ের বাসায় কেউ নক না করে ঢুকে?আপনার কাছে এক্সট্রা চাবি আছে বলে যা খুশি তাই করবেন?
বেয়াদব,অসভ্য কোথাকার!
আহানা জামা ঠিক করে পরে তারপর ওড়না পরে নিয়ে শান্তর সামনে গিয়ে দাঁড়ালো,চোখ রাঙিয়ে কিছু বলতে যাবে তার আগেই আবার দরজায় নক হলো
আহানা গিয়ে দরজা খুলে দেখলো দাদা,অলি আর তার ১৪গুষ্টি সবাই দাঁড়িয়ে আছে দরজার ওপারে
আহানা ওড়না মাথায় দিয়ে দাঁত কেলিয়ে বললো আপনারা?আসেন ভিতরে আসেন

আরে কথা সেটা না কথা হলো গিয়ে তুমি এত জোরে চিৎকার করলে কেন,আমরা ভাবলাম চোর ডাকাত পড়লো কিনা
.
আহানা শান্তর দিকে তাকিয়ে হাসার ভান করে বললে না আসলে ও নক না করে ঢুকেছে তো তাই আচমকা ভয় পেয়ে গেসিলাম
.
ওহ আচ্ছা,তাই বলে এত জোরে চিল্লাইলা আমাদের তো কলিজা বের হয়ে আসতেছিল আর একটুর জন্য
অলি ডিম ২টা আহানার হাতে ধরিয়ে চলে গেলো সাথে সবাই চলে গেলো
আহানা দরজা লাগিয়ে শান্তর কাছে গিয়ে রাগে গজগজ করতে করতে রান্নাঘরের দিকে গেলো
.
সরি আহানা!দাদা আমাকে জোর করে বাসায় ঢুকাইছে,নক করতেও দেয় নি,তাও আমি দুবার নক করেছিলাম,তুমি হয়ত শুনতে পাওনি
.
এখন থেকে মনে হচ্ছে ছিটকিনিও লাগাতে হবে,এই আপনার চাবিটা আমাকে দিয়ে দিন বলতেসি,অসভ্য একটা!
.
😒সরি তো,আর এমন হবে না,পরে দাদা যদি বলে তোমার চাবি কই তাহলে কি বলবো?
.
যান এখন!
.
আহানা?
.
কিইইইইই?
আহানা চুলায় পাতিল বসিয়ে পিছন ফিরতেই শান্তকে এত কাছে দেখে পিছিয়ে তাকের সাথে লেগে গেলো
ব্রু কুঁচকে রাগী চোখে কিছুক্ষন চেয়ে থেকে বললো কি ব্যাপার?এখানে আমার এত কাছে কি?কাগজটা দেখাবো নাকি?
.
দেখাতে হবে না😒শুধু বলতে এসেছি যে আমি তোমায় কিস করবো না কোনোদিন
.
করিয়েন না,যান এখন
আহানা শান্তকে ধাক্কা দিয়ে বাসা থেকে বের করে দরজা লাগিয়ে দিলো
.
শান্ত হেসে দিয়ে পিছন ফিরতেই দেখলো দাদা দাঁড়িয়ে আছে কোমড়ে হাত দিয়ে
ভয়ে ঢোক গিলে আবারও দরজায় নক করলো সে
.
আহানা এবার প্রচণ্ড রেগে গেছে দরজা খুলে কটমট করতে করতে শান্তকে এক কিল বসিয়ে দিলো
শান্ত ভিতরে ঢুকে দরজা লাগিয়ে নিচে বসে পড়লো
.
কি হইসে আপনার?মদ গাঁজা খেয়েছেন?আজ আমার বাসা থেকে নড়তেসেন না কেন আপনি?
.
শুনো আমার এত শখ নাই তোমার এখানে থাকার,দাদা বাইরে পাহারা দিচ্ছে বলেই যেতে পারতেসি না আমি
.
আহানা দরজা খুলে বাইরে বেরিয়ে দেখলো দাদা চেয়ার নিয়ে বসে আছে,কোলের মধ্যে রেডিও
ওয়াজ মাহফিল শুনতেসেন
আহানা আবার দরজা লাগিয়ে মুখ গোমড়া করে শান্তর পাশে বসে গেলো
.
কি?
.
কি?
.
কিছু খাওয়াবা না?খুব খিধা লাগসে আমার
.
ভাত বসাইসি আর ডিম আছে,আর কিছু নাই
.
ডিম দিয়ে খালি ভাত কেমনে খায়,আমি পারবো না হুহ!
.
আহানা একটা ব্যাগ খুঁজে এনে শান্তর হাতে ধরিয়ে দিয়ে বললো আলু আনতে

আমি?এত রাতে আলু আনতে যাবো?
.
বেশি কথা বললে শুধু নুন দিয়ে ভাত খেতে দিব
.
ফাইন!যাচ্ছি!
শান্ত জ্যাকেট খুলে আহানার গায়ে ছুঁড়ে মেরে বের হলো
.
কই যাও শান্ত?
.
দাদা আলু আনতে যাই
.
ওহ ভালো ভালো যাও
.
শান্ত এক রাশ বিরক্তি নিয়ে বাজারের দিকে গেলো

শুন রিয়াজ আমি তোকে বলতেসি শান্তর কি যেন হইসে,সে ইদানিং বাসায় কম থাকে
.
আমি কি করবো,আচ্ছা একটা কাজ করলে হয় না?ওরে ফলো করলে হয় তো
.
আগে বাসায় আসুক,কাল ওরে ফলো করবো,কিছু তো একটা লুকাচ্ছে নিশ্চয়!
.
নওশাদ কথা কম বল!!তাড়াতাড়ি তরকারি কিন,বুয়া রেঁধে চলে যাবে তাড়াতাড়ি কর,তোর দ্বারা জীবনে ঠিকমত বাজার হয় না
.
মামা ২কেজি আলু দিন তো
.
নওশাদ আর রিয়াজ চোখ বড় করে পাশে তাকালো,শান্তর গলা শুনে
শান্ত এই অসময়ে আলু কিনতে এসেছে?ও মাই গড!!
.
শান্ত ওদের দেখেনি,আলু কিনে হাঁটা ধরলো
.
আজ এটাই মোক্ষম সুযোগ,চল ওরে ফলো করি
.
শান্ত হেঁটে চলেছে তার পিছু পিছু নওশাদ আর রিয়াজ আসতেসে
শান্ত টের পেয়েছে যে তার পিছু পিছু কেউ আসতেসে,সে এমন রোড দিয়ে যাচ্ছে যেখানে প্রতি ১০মিনিটে একটা লোকের দেখা পাওয়া যায়
আর তাই ব্যাপারটা বুঝার জন্য শান্ত থেমে গেলো
ওমা তার পিছনে যারা আসতেসিলো তারাও থেমে গেলো,পায়ের আওয়াজ শোনা যাচ্ছে না আর!
শান্ত ইচ্ছে করে পিছনে তাকালো না
ব্যাপারটা সে বুঝে গেছে
.
আহানা বারান্দায় এসে শান্তর অপেক্ষা করে যাচ্ছে,শান্তকে দেখতে পেয়ে হেসে দিলো কিন্তু একি!শান্ত রোড দিয়ে সোজা হেঁটে ঐদিকে চলে যাচ্ছে কেন!
এই যে শুনুন?এটা আমাদের বাসা,আপনি ঐদিকে কোনদিকে যাচ্ছেন.?আজব তো এই!!দাঁড়ান!!ঐ!
আহানা বোকা বনে গেলো,শান্ত এমন ভাব ধরে গেলো যেন সে আমাকে চিনেই না
আহানা এবার আবারও রোডের দিকে তাকিয়ে দেখলো নওশাদ আর রিয়াজ ও যাচ্ছে শান্তর পিছু পিছু
আহানা জিভে কামড় দিয়ে লুকিয়ে পড়লো সাথে সাথে
রিয়াজ থেমে গিয়ে উপরে তাকালো
.
নওশাদ?আমার মনে হলো আহানার ভয়েস শুনলাম
.
হুম এই বাসায় তো আহানা থাকে,তাহলে শান্ত ঐদিকে কোনদিকে গেলো,আমি তো ভাবলাম আহানার কাছে আসবে আলু নিয়ে,কিন্তু ও তো আলু নিয়ে ঐদিকে চলে গেলো,এখন কোনদিকে গেলো সেটাই তো বুঝতেসি না,এত গলি,কোন গলিতে ঢুকেছে কে জানে
.
খুঁজে না পেয়ে দুজনে আবার বাড়ি ফিরে গেলো

আহানা লুকিয়ে ওদের চলে যাওয়া দেখছে,স্বস্তির একটা নিশ্বাস ফেলে আহানা পাশে তাকিয়ে দেখলো শান্ত একটা মই দিয়ে উপরে আসতেসে
.
আহানা প্রথমে চোর বলে চিল্লাবে ভাবলো পরে টিশার্ট দেখে বুঝলা এটা শান্ত
শান্ত উপরে উঠে ফ্লোরে বসে ফিসফিস করে বললো আমাকে কারা যেন ফলো করতেসিলো,অনেক কষ্টে বাঁচলাম
.
নওশাদ আর রিয়াজ ভাইয়া ফলো করতেসিলো আপনাকে
আমি দেখছি
.
ঐ শয়তানগুলো হাত ধুয়ে আমার পিছে লাগছে,ওরা আজ নয়ত কাল বের করেই ছাড়বে আমার আর তোমার বিয়ে হয়েছে
.
হুমম
.
এখন নাও রান্না করো,আমার পেটের ভেতর সাপ বেজির খেলা শুরু হয়ে গেছে
.
আহানা রান্নাঘরে এসে ডিম দুটো সিদ্ধ করতে দিলো
এরপর আলু কেটে নিলো,ডিম সিদ্ধ হতেই সেটা দিয়ে আলুর তরকারি রেঁধে নিলো,ব্যস হয়ে গেছে
শান্ত ফ্লোরে বসে গেমস খেলতেসে
আহানা এক এক করে খাবার এনে বিছানার উপর রাখতেসে
নিন খাওয়া শুরু করেন
.
হুমম,আসতেসি
শান্ত বিছানায় গোল হয়ে বসে খাওয়া শুরু করে দিলো,আহানা ওর খাওয়া দেখতেসে
.
কি হলো তুমি খাও না কেন,?

আমার খিধা নেই
.
শান্ত খাওয়া বন্ধ করে হাত নিয়ে আহানার কপালে রাখলো,জ্বর কম ও না বেশিও না,তবে যে জ্বর আছে তাতে ঔষুধ খেতেই হবে
আমি একদম ভুলে গেসিলাম ঔষুধের কথা এই নওশাদ রিয়াজের চক্করে পড়ে
.
শুনুন,আমি ঔষুধ খাব না,আমার ভাল্লাগতেসে না,একটু ঘুমালে ঠিক হয়ে যাবো
.
না,আমি তো শুনবো না.তুমি এক কাজ করো তোমার প্লেট এনে দাও আমি তোমাকে খাইয়ে দিব
.
না প্লিস,আমার খিধা নেই,আপনি যান,বললাম না কাল সকালে ঠিক হয়ে যাবে
.
শান্ত যেন আহানার কথাটা শুনলোই না,নিজের খাবার শেষ করে হাত ধুয়ে উঠে চলে গেলো
.
আবার আসবে নাকি আসবে না
আহানা দরজার কাছে এসে বললো আর আসবেন?আমি ছিটকিনি লাগাবো?
.
শান্ত তখন ৭/৮টা সিঁড়ি নেমে গেছে উপরের দিকে চেয়ে বললো আমার জ্যাকেট কোথায়?
.
আহানা বেডরুমের দিকে তাকিয়ে দেখলো বিছানার উপর
.
ওটাতো বিছানার উপর
.
হুম তাহলে বুঝো আসবো কি আসবো না?
.
শান্ত নিচে নেমে ঔষধের জন্য যাচ্ছিলো পিছন থেকে আবারও দাদা ডাক দিলেন

কি দাদা?
.
তুমি না সবে আলুর জন্য গেসিলে?
.
হুম
.
তাহলে আবার এসেছো কখন?আমি তো এখানেই ছিলাম তোমাকে তো যেতে দেখলাম না আর এখন আবার কই যাচ্ছো?
.
আসলে আহানার গায়ে হালকা জ্বর তাই ঔষুধ কিনতে যাচ্ছি
.
ওহ,বেশি শরীর খারাপ কি?আমি তোমার দাদিকে পাঠাবো?
.
না তার দরকার নেই,আমি আছি না
.
ঠিক আছে যাও
.
শান্ত ঔষুধ হাতে নিয়ে আহানার বাসার দিকে তাকিয়ে দাঁড়িয়ে আছে
আমি তো আছিই,তবে!একটু দূরে,যেখান থেকে ওর যত্ন নিতে পারবো না,সারারাত একা একা কি করবে,যদি জ্বর বেড়ে যায় ওর?যদি আমাকে দরকার হয়?বাসায় না ফিরলে নওশাদ সূর্য আর রিয়াজ জোঁকের মত ধরবে,কোনদিকে যাবো
চলবে♥