পেইন

পেইন !! লেখাঃ এপিস ইন্ডিকা !! Part- 02

-ব্রো তুই সত্যই এর সাথে ওসব করবি।।আই মিন আগের গুলোর মতো ও মোটেও না।।দেখেতো হিজাবী মনে হচ্ছে।।
সামনে থাকা মেয়েটির দিক ইশারা করে বলে উঠে রাহুল।।
তাতক্ষনিক জবাবে শিশির বললো,,
—-আমি এতোটাও খারপ নই।।
রাহুল খানিকটা ভ্রু কুচঁকে বলে উঠে,,
—-তাহলে ছেড়ে দিবি??
শিশিরের ঠোঁটে রহস্যময় হাসি।।সেই হাসি ধরেই বলে উঠে,,,
—-আমি এতটা ভালও নই।।
রাহুল প্রশ্নের নজরে তাকিয়ে রইলো।।
শিশির তা দেখে হেসে দিলো।। আর বলল,,
—-একটু ধৈর্য ধর একটু পর সব জানতে পাড়বি।।


কিছুক্ষণ আগেই হুশ ফিরেছে বিন্দুর।।চোখ পিট পিট করে খুলে আবার বন্ধ করে নেয় সে।।আবার চোখ খুলার চেষ্টা করে সে,, চোখ খুলতেই সব কিছু অন্ধকার দেখতে পায় সে।।মুহুর্তেই বিন্দুর মুখ খানায় ভয় স্পষ্ট হয়ে ওঠে।। তার কাছে মনে হতে থাকে তার দম বন্ধ হয়ে আসছে।। অন্ধকারে মাথার হিজাব টেনে খুলে ফেলে সে।।সাড়া শরীর ঘেমে একা কার হয়ে উঠেছে তার।।সাথে সাথে তার শ্বাস প্রশ্বাস দ্রুত বেগে বাড়তে লাগে।।সে বিছানায় হাতরাতে হাতরাতে নামে তার পর দেয়ালে গিয়ে ঠেকে আর তখনি পাশে থাকা টেবিলের উপর ফুলদানিটা পড়ে যায়।।বিন্দুর দম আটকে আসচ্ছে।।তার সাথে মস্তিষ্ক কাজ করা বন্ধ করে দিচ্ছে।।সে দেয়াল হাতরিয়ে দরজা খুজঁতে চেষ্টা করে যাচ্ছে কিন্তু পারছে না।।দুটি পা যেন অসার হয়ে আসচ্ছে তার।।সে ল্যাংড়া তে ল্যাংড়া তে দরজা খুজঁতে লাগলো।।দরজা পেয়ে তা টানতে লাগলো কিন্তু বাহির দিক থেকে লাগানো বিধায় পাড়ছেনা খুলতে।।তার উপর শরীর আর মস্তিষ্কের কথা শুনচ্ছে না।।ধীরে ধীরে নিস্তেজ হয়ে যাচ্ছে তারপর ও দরজা ধাক্কা দিয়ে যাচ্ছে আর মৃদ সুরে বলে যাচ্ছে বিন্দু,,

—-প্লিজ দরজা খোলো।। আমার অন্ধকারে ভয় করে।। আমি মারা যাচ্ছি প্লিজ দরজা খোলো।।

বিন্দুর এই মৃদু আর্তনাদ যেন সারা ঘরেই তার মতো আটকা পড়ে যাচ্ছে।।ধীরে ধীরে মাটিতে লুটিয়ে পরলো বিন্দু।।তখনি দরজা খুলে গেল।।বাহিরের এক ঝলক আলো উঁকি দিতে লাগল।। বিন্দুর তখনো হালকা চোখ খুলা।।সে দেখলো একটি ছায়ামুর্তিকে যে ভিতরে প্রবেশ করে তার পাশে এসে বসে কিছু বলছে।। যার ওয়াজ বিন্দুর কান পর্যন্ত পৌঁছাচ্ছে না।।
ধীরে ধীরে চোখ গুলো আবার বন্ধ হয়ে যায় তার।।


—-কি হয়েছে তোমার চোখ খুলো।।কি হয়েছে তোমার।।এই কিছু বলো??

হন্তদন্ত হয়ে পরে থাকা বিন্দুর মাথাটা কোলে নিয়ে তার গালে হালকা চাপর দিতে দিতে বলতে লাগে শিশির।।
বিন্দুর কোনো সারা শব্দ না পেয়ে কোলে তুলে নেয় সে।।
তখন পাশের রুমে বসে কম্পিউটারে কিছু কাজ করছিল শিশির।। পাশের রুমে কিছু ভাঙ্গার শব্দে দৌড়ে আসে সে আর দরজা খুলে দেখে মেয়েটি মাটিতে পরে আছে।।তার উপর ঘেমে একাকার।।

শিশির বিন্দুকে তার রুমে নিয়ে গেল।। এসির পাওয়ারও বারিয়ে দিল।।এতখন পর্যন্ত মেয়েটিকে ভাল করে লক্ষ করেনি সে।।যেহেতু তখন সে হিজাব আর নেকাব পড়া অবস্থায় ছিল।।

কিন্তু আলোতে মেয়েটির চেহারা দেখতেই ধক ধক করে উঠে তার দিলের মাঝে।।
সে স্থীর চাহনীতে তাকিয়ে থাকে বিন্দুর দিক।।
যেন আজ কত বছরের তৃষ্ণা মিটাচ্ছে সে।।
ধীরে ধীরে হৃদস্পন্দন তীব্র হতে লাগলো তার।।
সাথে সাথে শিশিরের চোখ থেকে ২ ফোঁটা জল গড়িয়ে পড়ে।।মেয়েটির সেই মায়াময়ী মুখখানি দেখে পুরনো স্মৃতি মনে পড়ে যায় শিশিরের, পরক্ষণেই চোখ-মুখ শক্ত করে দু হাত মুঠ করে বলতে লাগে সে,,

—-কাউকে ছাড়বো না আমি।।সব কটাকে তার কর্মের ফল পেতেই হবে।।আর আমি দেবো সব।।গুনে গুনে।।

বের হয়ে যায় শিশির।।

কখন থেকে কলিং বেল বেঁজেই যাচ্ছে শিশিরের বাসার।।খোলার নাম নেই।।এখন রিতিমতো হাত পা ছুড়ে দরজা ধাক্কাতে লাগছে কেউ।।এ বাসায় শিশির আর তার সার্ভেন্ট জোজো থাকে।।জোজো বাজারে গেছে।। শিশির কাজ করছে।।শিশির এতো জোড়ে জোড়ে আওয়াজ পাওয়ায় নেমে আসে শিড়ি বেয়ে।।আর ভাবতে থাকে,,
—-এ সময় কে এলো।।আর রাহুলের কাছে চাবি আছে, সে এমন করবে না।।হাতের ঘড়ির দিক তাকিয়ে, জোজো এখন আসার কথা না।।

শিশির আর কিছু না ভেবে দরজার কাছে গেল।। নয়তো আবার ভেঙ্গেই ফেলবে।।
দরজা খুলে কিছুটা চমকে বলে উঠে শিশির,,
—-তুমি??
বাহিরের ব্যক্তিটি ধাক্কা দিয়ে ভিতরে ঢোকে বলতে লাগে,,
—-এতক্ষন লাগে তোমার দরজা খুলতে? জানো সেই কখন থেকে….?
কথার মাঝেই এক হ্রাস বিরক্তি নিয়ে শিশির বলে উঠে,,
—-কে ন এসেছো??আর আমার ঠিকানা কই পেলে??
—-ভয় পেয় না।।আমি তোমার কার্ড রেখে দিয়ে ছিলাম সেদিন রাতে!!
মেয়েটি শিশিরে কাছে ঘেসতে লাগলো ধীরে ধীরে।।
শিশির ভ্রু কুচকে তাকিয়ে।। মেয়েটি শিশিরকে জড়িয়ে তার কিছু খুলে থাকা বোতামের উপর দিয়ে শিশিরের লোমহীন বুকে চুমু খেয়ে বলতে লাগে,,

—-মনে আছে তোমার সেই রাতের কথা।।আমি যে ভুলতে পারিনি।।তোমার করা কঠোর স্পর্শকে।।সেদিন মনে হয়েছিল যেন তোমার মনের রাগ সব আমার উপর দিয়ে শেষ করতে চাইছো।।আমি যে তোমার স্পর্শের প্রেমে পড়ে গেছি।।আর যে ওই স্পর্শ খুব করে পেতে ইচ্ছে করছে।। তাই তো ছুটে এসেছি।।

শিশির ঝিনুকের কথাতে যতটা না অবাক হচ্ছে তার থেকে দিগুন বিরক্ত হচ্ছে।।যা তার চোখ মুখে স্পষ্ট।।
সে ঝিনুকে নিজের থেকে ছাড়িয়ে ঝাঁটকা মেরে শরীয়ে দেয়।।ঝিনুক পড়তে গিয়েও নিজেকে সামলে নেয়।।ঝিনুকের রাগ লেগে যায় শিশিরের দিক তাকিয়ে চিল্লিয়ে বলে উঠে,,

—-তোমার সাহস কি করে হয় তুমি ঝিনুক শেখকে ধাক্কা দেও??তুমি কি জানো আমি কে??

শিশির ভাবলেশহীন ভাবে নিজের শার্ট ঠিক করতে করতে বলে উঠে,,

—-হে জানি তুমি কে! আমি কেন পুরো শহর এখন জানে তুমি কে! তুমি হচ্ছো সে যার একটি খুব হট অশ্লীল ভিডিউ বের হয়েছে।। যেখানে বুঝাই যাচ্ছে ঝিনুক শেখ তার সব কিছু একটি অপরিচিত ছেলের কাছে।।যেখানে এ ও বোঝা যাচ্ছে যে ঝিনুক ছেলেটি সাথে সেচ্ছায় সেই খেলায় তাল দিয়ে যাচ্ছে।।আর কিছু শুনতে চাও??

চুপসে যাওয়ার মতো মেয়ে ঝিনুক না।।সে এবার জোড় গলায় বলতে লাগে,,,
—-সব তুমি করেছো! কেশ করবো আমি তোমার নামে!!
শিশির এবার সোফার উপর পায়ের উপর পা তুলে খুব আরাম করে বসে বলতে লাগে,,

—-হে কেন নয়? করতেই পারো! কিন্তু যখন তোমার কাছে প্রুব চাইবে তখন কি করবে আমাকে একটু বলবে দয়া করে?

এবার কথা নেই মুখে ঝিনুকের।।সে চুপ করে গেল।।
আর ভাবতে লাগলো,,
—-সেই ভিডিও তে যাই আছে সবটাতে এ প্রমান হয়ে যাবে আমি সেচ্ছায় তার সাথে জড়িয়েছি।।আর শিশিরকে সেখানে দেখাই যাচ্ছে না।।।আর দেখা গেলেই হবে আর কি? এখানে দুজনের মত আছে বুঝাই যাচ্ছে।।

সে এবার মিয়ে গেল,,শিশিরের কাছে গিয়ে বলতে লাগে,,
—-প্লিজ আমাকে ফিরিয়ে দিও না বিশ্বাস করো আমি এতো ছেলেদের সাথে ডেটে গেছি কেউ তোমার মতো সুখ দিতে পারেনি।।প্লিজ আমাকে আমাকে আপন করে নেও।।
এবার ঝিনুক জোড় করে শিশিরের ঠোঁট আয়ত্ব করতে না।।তখনি শিশির উঠে যায়।।আর ঝিনুককে টানতে টানতে বের করে দেয় ধাক্কা দিয়ে তারপর চিবিয়ে চিবিয়ে বলে উঠে,,

—-আমি কোনো মেয়ের সাথে দ্বিতীয়বার শুই না।।তাও আবার তোমাদের মতো ছেছড়াদের সাথে।।আর হে আমার বাড়ির ত্রিসীমানা তোমাকে দেখলে উল্টো কেস করে দেব।।পরে যতটুকু তোমার বাপের সম্মান আছে তাও যাবে।।সো গো টু হেল।।

ঝিনুকের মুখের উপর দরজা লাগিয়ে দেয় শিশির।।
ঝিনুক যেন তা হজম করতে পারলো না।।সে বাহিরে দাড়িয়ে শিশিড়কে গালগাল করতে লাগলো।।না পেরে পায়ে হীল ছুড়ে পারলো দরজায়।।সে পর্যায় সে জুতো জোড়া তুলে বের হয়ে যায় শিশিরের বাড়ি থেকে।।

চলবে,,

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *