পাথরের বুকে ফুল

পাথরের বুকে ফুল !! Part- 27

ওয়াসেনাত একটা রেস্টুরেন্টে বসে আছে।চোখে মুখে তার প্রবল আগ্রহ। তার ঠিক সামনেই দুজন লোক বসে আছে।একজন তার বাবা আর একজন তার দাদাশ্বশুর।ওয়াসেনাতের চিৎকার শুনে তার বাবা তার কাছে আসলেই সে তার বাবাকে সব বলে আর তিনি অরিএানের দাদার সাথে দেখা করাতে নিয়ে আসে।ওয়াসেনাত অতি আগ্রহের সাথে বলে উঠে……
__আব্বু এবার তো বল?
__হুম বলছি।আমি আর ইমান একই ভার্সিটিতে পড়তাম। দুজই প্রিয় বন্ধু ছিলাম। কলেজ একসাথেই পার করেছি দুজনে।আমাদের সাথে ভার্সিটিতে এসে অমিতার পরিচয় হয়।আমি আর ইমান মানে ইহানের বাবা মধ্যবিত্ত পরিবারের ছেলে ছিলাম।অমিতাও তেমনই।তিন জনের বন্ধুত্ব খুবই গভীর ছিল।এর মাঝেই আশিকের আগমন মানে অরিএানের বাবার।প্রথম দিনই আশিকের সাথে আমার পরিচয় হয় একটা গাড়ির নিচে তাকে পড়ে যাওয়া থেকে ওকে বাঁচাতে গিয়ে।আমিই ওকে ইমান আর অমিতার সাথে পরিচয় করিয়ে দি।আশিক সুদর্শন ছেলে ছিল সাথে কোটিপতি বাপের ছেলে।তোমার দাদা মারা যাওয়ার পরে আমি খুব ভেঙে পরি তখনও আমাকে নিজের বাড়ি নিয়ে আসে।সেই থেকেই ওর বাবাকে বাবা ডাকা।আমাদের চার জনের বন্ধুত্ব ভার্সিটি বিখাত ছিল।যেখানে যেতাম এক সাথে।আমাদের সবার মাঝে শুধু আশিকই কোটিপতি ছিল।অমিতা অতি সুন্দরি নারী ছিল।এক কথায় যাকে বলে হুরের মত সুন্দরী। আশিক প্রথম দেখায়ই অমিতার প্রেমে পরে যায়।যা ধিরে ধিরে ভালোবাসায় রূপ নিতে শুরু করে।আশিক আমাকে একদিন ডেকে বলে……
__ভাই আমি তো প্রেমে পরেছি?
__কার?(অবাক হয়ে)
__অমিতার।আমি ও কে সত্যেই খুব ভালোবেসে ফেলেছি।কিন্তু ভয় করছে বলতে। বললে যদি আমাদের ফ্রেন্ডশীপ ভেঙে দেয়।কি হবে এটা ভেবেই ভয় পাচ্ছি।
:
আমি এটা শুনে অনেক অবাক হয়েছিলাম।কিন্তু তবুও ওর মনের অবস্থা বুঝতে পেরে বলে দিয়ে ছিলাম…
__বলে দে। যা হবে দেখা যাবে।
:
আশিকও বলে দিল। খুব সুন্দর করে প্রপোজ করে ছিল অমিতাকে।অমিতাও রাজি হয়ে যায়।তার ভাব দেখে মনে হয়েছে সে এমনটাই আসা করে ছিল।শুরু হয় ওদের নতুন পথ চলা।সারা দিন দুজনে প্রেমে বেস্ত।এভাবেই কেটে যায় ১টা বছর।আশিক শুধু মাস্টার্স করেছে আমাদের সাথে।বাকি পড়া দেশের বাইরেই করেছে সে।পড়া শেষে সবাই কাজ খোঁজা শুরু করে।আমিও তাই করছিলাম। হঠাৎ আশিক আমাকে আর ইমানকে তার অফিসে জয়েনিং লেটার দিয়ে জয়েন্ট করতে বলে।প্রথমে রাজি না হলেও তোমার মার কথা ভেবে রাজি হয়ে যাই।
__মার কথা ভেবে মানে(কথার মাজেই ওয়াসেনাত প্রশ্ন করে বসে)
__হুম তোমার মার সাথে অনেক আগে থেকেই আমার রিলেশন ছিল।যদিও দুজনেই দু জায়গায় ছিলাম।তবুও ভালোবাসার কমতি ছিল না।আমি তাড়াতাড়ি তোমার মাকে বিয়ে করতে চেয়েছি।কারন মামা মানে নানা তোমার মাকে অন্য জায়গায় বিয়ে দিয়ে দিতে চাচ্ছিল।চাকরি পাওয়ার পরে আমি বাড়ি চলে যাই।তারপরেই সমস্যার শুরু।আমি বাড়ির সব সামাল দিতে শুরু করি যা সামলাতে সামলাতে আমার একবছর লেগে যায় আর এই দিকে অমিতাও একবছর ধরে গায়েব হয়ে যায়। সাথে ইমানও।বাবা মানে আশিকের বাবা আমাকে একদিন কল করে আশিকের খারাপ অবস্থার কথা বলে।আশিকতো পাগলের মত হয়ে গেছে অমিতা অমিতা করে।আমি আবার ঢাকায় ব্যাক করি।তোমার মাকে তখনও আমি বিয়ে করি নি।তোমার নানা মেনে নিতে চাচ্ছে না।তিনি আমাকে আরো যোগ্যতা অর্জন করতে বলে দেয়।ঢাকা এসে আমি আশিকে সামলাতে শুরু করি।কিছু দিন যাওয়ার পরেই একদিন অমিতা এসে আশিকে জড়িয়ে ধরে বলে উঠে….
__আসলে আমার বাবা মারা গিয়েছিল।তাই আমি এত দিন মাকে সামলাতে সামলাতে আর আসতে পারি নি।আমি অনেক সমস্যার মাঝে ছিলাম।তাই তোমাকে কল করতে পারি নি….
এমন হাজারো কথা বলে আশিকে ভুলিয়ে ভালিয়ে বিয়ে করে নেয়।আমি মানা করেছিলাম।কিন্তু ভালোবাসা জিনিসটাই অন্ধ হয়।কিছু ভালোবাসায় অন্ধ হওয়া ভালো আবার কিছু ভালোবাসার প্রতি অন্ধ হলে সব শেষ হয়ে যায়।যেমনটা আশিকের সাথে হয়েছে।অমিতার সাথে সাথে ইমানেরও আভিরভাব হয়।আশিক বন্ধুত্বের খাতিলে আমাদের নিজের কোম্পানিতে চাকরি দিয়ে দেয়।আমিও যোগ্য হওয়ার পিছনে পরে যাই।নিজেকে নিয়ে ব্যস্ত হয়ে পরি।এভাবে কিছু দিন যাওয়ার পরেই আশিক একটা খুশির সংবাদ শুনায়।আশিক বাবা হবে।এটা আসলেই সবার জন্যে খুশির সংবাদ ছিল।আশিক নিজের সব টাইমই অমিতার পিছনে দেওয়া শুরু করে।আর ওই দিকে ইমান নানা ভাবে কোম্পানির টাকা সরানো শুরু করে।আমি কিছু বললে আশিকের কাছে আমার নামে উল্টাপাল্টা শুনিয়ে দেয়।আশিক আমার পক্ষে থাকতে চেয়েও পারে না অমিতার জন্যে।আমি ভার্সিটি লাইফ থেকেই এটা লক্ষ করেছি।অমিতার ইমানের প্রতি আলাদা দরদ আছে।তবে তেমন গায়ে মাখি নি।নিজের জীবনে অধিক প্রবলেম ছিল বলে কাউর ব্যাপারে আর বেশি ভাবনা চিন্তার সময় পাই নি।এই দিকে আশিকের একটা ছেলে হয়।অরিএানই তার ছেলে।অমিতা আর আশিকের ছেলে অরিএান।ইমান নানা ভাবে আমাকে আশিকের কাছ থেকে দুরে ঠেলে দেয়।আসলে বউ নামের বস্তুর কারনেই এটা সম্ভব হয়েছে।তা না হলে ইমান এমনটা করতে পারতো না।কোনো ভাবে একবছর কাটার পরে আমি নতুন চাকরি খুঁজে বাড়ির কাছাকাছি সেখানে চলে যাই।তারপরে আর আশিকের সাথে যোগাযোগ হয়নি।আসলে আমিই করি নি এক প্রকার চাপা অভিমান জমা হয়েছিল।আমি বাড়ি গিয়ে তোমার নানাকে মানাতেই দুই বছরের মত লেগে গেছে।তারপর নিজের জীবন নিয়ে ব্যস্ত হয়ে গেছিলাম।কেটে গেল অনেক বছর। তুমিও দুনিয়াতে চলে এসেছিলে।একদিন খবরের কাগজ পড়ার সময় আশিকের মৃত্যুর কথা পড়ি আমি কিছুসময়ের জন্যে থমকে গেছিলাম।সেখানে লিখা ছিল ও আত্নহ্যাতার করেছে। কিন্তু আমি এটা যানি ও এমন করাতে পারে না।তারপর তোমাকে আর তোমার মাকে নিয়ে আমি ডাকা চলে আসি।অনেক খোঁজ খবর নিয়ে যানতে পারি আশিকের সব সম্পত্তি এখন অমিতা আর ইমানের নামে।ইমান অমিতাকে বিয়ে কখন করলো আর তাদের একটা ছেলে কখন হল আমি কিছুই যানি না।আমি ভেবে ছিলাম আশিকের ছেলেই ওদের ছেলে নামে পরিচয় পেয়েছে।কিন্তু ব্যাপারটা তেমন না।পরে বুঝতে পেরেছি।তখন তাদের সাথে কি হয়েছিল এটা তোমার দাদাজানকে জিগ্যেস করো(চোখের পানি মুছতে মুছতে বলে উঠে)
:
:
:
তিন জনের চোখেই পানি তবে ওয়াসেনাতের কান্নার মাএা বেশি।তার কেনো যে এত কান্না পাছে এটা সেও যানে না।কান্না জড়িত চোখে সে দাদার দিকে তাকায়। অরিএানের দাদা চোখের পানি মুছতে মুছতে চশমাটা চোখে দিয়ে বলতে শুরু করে…………
__অরিএান প্রচণ্ড বদ মেজাজি ছেলে।ছেলেরা সাধারনত রাগি হয়।কিন্তু অরিএানের বিষয়টা ভিন্ন। যে ছেলে নিজের বাবাকে নিজের চোখের সামনে খুন হতে দেখে আর বাবার খুনের সাথে তার মায়ের হাত আছে এটাও নিজের চোখে দেখার পরে এমন হওয়াটাই কি সাভাবিক নয়?হুম।আজ থেকে ১৫ বছর আগে অরিএানের বয়স তখন দশ কি এগারো বছর।এই দশ, এগারো বছরে সে যদি সব চাইতে কম কারো অযত্ন পেয়ে থাকে তবে তা তার নিজের মায়ের।আমি আমেরিকাতেই ছিলাম। আশিক প্রায় কল করে বলতো অমিতা অরিএানের সাথে তার সাথে বাজে বিহেভিয়ার করে।এছাড়াও কারণে অকারণে নানা সময় অরিএানকে মারধর করে।কিন্তু তখন অরিএান খুবই শান্ত ছেলে ছিল।তেমন একটা দুষ্টুমি করত না।এক প্রকার তার মত ছেলেই ছিল না।আমি এত কিছু শুনে বিদেশ থেকে দেশে চলে এলাম।এসেই আমি অমিতার রং ঠং দেখেই বুঝতে পারলাম কেমন মেয়েকে আমার ছেলে নিজের বউ করেছে।তার রাত করে বাসায় ফিরা, পার্টি,ছোটো জামা পড়া আমাকে অবাক করেছে তার চাইতেও অবাক করে অরিএানের প্রতি তার বাজে ব্যবহার। এভাবে কিছু দিন যাওয়ার পরে একদিন আশিক তাড়াহুড়া করে বাসায় এসে আমাকে বলে আমাকে আর অরিএানকে নিয়ে বিদেশে চলে যাবে আর তাও কিছু সময়ের মধ্যে।আমি বুঝতে পারছিলাম না কি হয়েছে তবে তাকে বেশ উত্তেজিত লাগছিল।আমি কিছু জিগ্যেস করতেই বলে উঠে পরে সব বলবে। আমাদের জীবন নাকি ঝুঁকিতে আছে।বাসা থেকে বের হওয়ার সময় অরিএান জিদ ধরে সে তার মাকে ছাড়া যাবে না।আসলেই ছেলেটা তার মাকে খুব ভালোবাসতো । আশিক অনেক বুঝিয়ে বলে অমিতা এয়ারপোর্টেই আছে।সবাই বাহিরে বের হতে পা বাড়াবো ঠিক তখনই অমিতা, ইমান, তার ছেলে ইহান আর সাথে কিছু সিরিয়াল কিলার নিয়ে হাজির হয়। যাদের আমি বিভিন্ন পেপারে দেখে ছিলাম।তারা আমাদের সবাইকে বেধে ফেলে শুধু অরিএান বাদে। এবার আমি কিছু কিছু বুঝতে পেরেছি।আসলে সে দিন আশিক ওদের আসল রূপ সম্পর্কে যেনে গিয়েছিল। আশিকে ব্লাকমেইল করে যদি সব কিছু তাদের নামে না লিখে দেয় তবে অরিএানকে মেরে ফলবে।অরিএান অমিতাকে বার বার বলছে….
__মা কেন এমন করছ?আমি তো গড বয় হয়ে গেছি। এখন আর তোমার সামনেও যাই না।তার পরেও কেন বাবা কে কষ্ট দিচ্ছে?
:
কিন্তু অমিতার কথা অরিএান নাকি তার ছেলেই না। আসলে ইমানই ওকে বলেছে তার সন্তান নাকি হওয়ার সময়ই মারা গেছে। কিন্তু আসলে সত্য এটাই অরিএান অমিতার নিজের নাড়ি কাটা ছেলে।আশিক ছেলের জন্যে সব করতে পারে তাই সব তাদের নামে লিখে দেয় এবার অমিতা বলতে শুরু করে…………
__আশিক আমি কখনোই তোমাকে ভালোবাসি নি।আমি তো ইমান কেই ভালোবেসেছি।আর ইমান আমার প্রথম স্বামী। তুমি যানতে চেয়েছিলে না এক বছর আমি কোথাই ছিলাম?আমি বলছি।আমরা বিয়ে করেছি আগেই কিন্তু হঠাৎ আমি প্রেগন্যান্ট হয়ে পরি তাই তোমার সামনে আর আসি নি।কারণ একটাই তুমি জানলে আর আমাকে বিয়েও করবে না আর আমি তোমার এই বিশাল সম্পত্তির মালিকও হতে পারবো না।প্রথম থেকেই ইমান আর আমার প্লান ছিল তোমার সম্পত্তি নিজেদের করা। আয়েস,আলিসান করে জীবন পার করা।কিন্তু আমার ছেলে হওয়ার পরে আর এগুলো করতে চাই নি। ইমানের কথায় আবার তোমার কাছে আশা।আর হ্যাঁ আমার ছেলে ইহান( চৌদ্দ বছরের একটা ছেলেকে সামনে এনে)তারপরে তোমাকে বিয়ে বাচ্চা নেওয়া সবই নাটক ছিল। কিছু দিনের মধ্যেই এত বছরের প্লান শেষ হয়ে যেত কিন্তু শেষ হওয়ার আগেই তুমি সব যেনে গেছ। যাই হোক এখন সব আমাদেরই।(বলেই হাসা শুরু করে)
__তুই আমার সাথে বেইমানি করেছিস ভালো কথা কিন্তু নিজের ছেলে অরিএানের সাথেও কিভাবে করতে পারলি এমন। লজ্জা লাগেনি।তুই তো মা জাতির কলঙ্ক। ছি।লজ্জা হয় তোর মত মেয়েকে আমি এত ভালোবেসেছি।ছি. নিজের প্রতি আমার ঘৃনা হচ্ছে। (চিৎকার করে বলে উঠে আশিক)
__কিসের ছেলে ইমান সব বলেছে আমাকে এই ছেলে আমার না।আমার বাচ্চা তো হওয়ার সময়ই মারা গিয়েছিল।তুমি তো একে কোথায় থেকে যানি নিয়ে এসেছ কে যানে।
__ছি কেমন মা তুই। মায়ের তো আলাদা টান ভালোবাসা থাকে নিজের নাড়ী ছিঁড়া সন্তানের জন্যে কিন্তু তুই ছি..নিজের সন্তানকেই তুই চিন্তে পারলি না।তোরে তো আমি খুন করবো।তুই কত বার যে আমার বাবা সোনার মাথা পাটিয়েছিস আমি কিছু বলিনি ও বার বার বলেছে বাবা মাকে কিছু বলো না।কিন্তু আমি কি যানতাম তোর মনে কি ছিলো।তুই তো ওকে নিজের বুকের দুধও খাইয়ে ছিলি সে দিকদিয়েও কি তোর একটুও মায়া হল না।জানোয়ার
__আরে আমি কি আগে জানতাম না কি এ আমার ছেলে না। যানলে জীবনেও একে আমার দুধ খাওয়াতাম না।
__তোদের আমি খুন করবো।আর ইমান এই তোর বন্ধুত্ব তোর জন্যেই আমি তৌপিকের সাথেও কত বাজে ব্যবহার করে ছিলাম।আমি কি তখন জানতাম তুই আর তোর বউ বেইশা অমিতা মিলে এসব করে ছিলি।ছি….
__আর ছি ছি করতে হবে না।তুই নিজে বাঁচলে তো খুন করবি(ইমান)
__এই থাক না।আমাদের সব কাজ তো শেষ এদের ছেড়ে দেও। শুধু শুধু খুন খারাবির কি দরকার।(অমিতা)
__শত্রুকে বাঁচিয়ে রাখতে নেই।বুজলে জান।এই তোরা সবাইকে মেরে চলে আয়।
:
:
:
আমি সবই দেখছিলাম কিন্তু কিছু বলিনি।কারণ আমি হাত ছুটাতে শুরু করে ছিলাম।অরিএানকে দেখে আমি অবাক হয়ে গেলাম।সাথে ওই বেয়াদপ ইহানকে দেখেও। অরিএান যত বার ওই ডাইনি অমিতাকে মা ডেকেছে ঠিক তত বার ওই ছেলে তাকে ঘুষি মেরেছে।আর তার জন্ম দাত্রি মা বেশ মজা নিচ্ছে। অরিএানের মুখ দিয়ে রক্ত ছোড়তে লাগে। কিন্তু অরিএান হঠাৎ করেই চুপ চাপ হয়ে যায় আর কোনো শব্দই করে নি সে।তারা আশিকে আমাদের সামনেই মাথায় গুলি করে আর গানটা আশিকের হাতে ধরিয়ে দেয়।অরিএানকে তারা বাধে নি। অরিএান বার বার তার মায়ের পা ধরছিল তার বাবাকে ছেড়ে দিতে কিন্তু প্রতিবারই জবাবে ওই অমিতা লাথি দিয়েছিল।আর তার ছেলে তাকে ইচ্ছা মত মেরে ছিল।আশিকে তাদের লোকগুলো মেরে ফেলার পরেই তারা চলে যায়। আর ওদের বলে যায় আমাদের মেরে ফেলতে কিন্তু আমি অনেক কৌশলে অরিএান আর নিজেকে বাঁচিয়ে আমেরিকা চলে যাই এর পর থেকেই অরিএান কেমন যেন হয়ে যায়।আমি অরিএানকে ১৫বছর পরে তোমার সাথে দেখা হওয়ার পরেই প্রথম হাসতে দেখেছি।অরিএান আমেরিকায় নানা বন্ধুদের সাথে মিশতো তাদের মাধ্যমেই সে মেয়েদের প্রতি ঝুঁকে পরে কিন্তু কোনো আকর্ষণ বা মেয়েদের শরীরের নেশার জন্যে না। তারা বুঝিয়েছে নারীদের কষ্ট দেওয়ার উপায় এটা আর অরিএান নারী জাতিকেই ঘৃন্না করতো তাই এসব করে বেড়িয়েছে।কিন্তু ও সব সময় নেশাকরেই মেয়েদের সাথে অমন করতো।।অরিএান খুব কম বয়সে নিজের যোগ্যতা আর বুদ্ধি দিয়ে বিলিয়োনার হয়ে উঠে। দেশে এসেই সে নিজের বাবার সব সম্পত্তি ওদের থেকে কিনে নেয়।কিন্তু কেন যেন ওদের কোনো ক্ষতি করে নি।এখনও সে অমিতাকে খুব ভালোবাসে তা না হলে সে দিন পালিয়ে যাওয়ার সময় মায়ের লাল শাড়ি নিয়ে পালাতো না।হ্যাঁ ওই দিন আমরা ওই লোকদের থেকে পালিয়ে যাওয়ার সময় অরিএান নিজের মায়ের একটা শাড়ি নিয়ে নেয়।যা এখনও তার কাছে আছে।অরিএান এই ১৫ বছরে নিজেকে পাথর তৈরি করে ফেলেছে।যার মনে না ছিল দয়া আর না ছিল মায়া।কিন্তু তুমি ওর জীবনে এসেই ওকে পরিবর্ত করে দিলে।অরিএান এখন হাসতে শিখেছে আর ভালোবাসতেও শিখেছে তোমার জন্যে।আমি চাই তুমি সারা জীবন তার সঙ্গ দেও।ওকে ভালো রাখ।ও তেমন ভালোবাসা পায় নি তাই একটু বিগড়ে গেছে।ছেলে মেয়েকে ভালো করে গড়ার কারিগর তো মা বাবা কিন্তু ওর তো তারা ছিল না।(কাদঁতে কাদঁতে কথা গুলো বলা শেষ করে।)
:
:
:
ওয়াসেনাতের বাবা, অরিএানের দাদা,ওয়াসেনাত সবাই কাদঁছে। কিন্তু ওয়াসেনাতের কান্নার মাএা দেখে সবাই অবাক। সম্পূর্ণ রেস্টুরেন্ট ওয়াসেনাতের দিকে তাকিয়ে আছে।ওয়াসেনাতের বাবা তাকে জড়িয়ে ধরে আছে।তাও ওয়াসেনাতের কান্নার বেগ কমছে না।উল্টা কাপাঁকাপি বাড়ছে।এবার অরিএানের দাদাও ওয়াসেনাতকে জড়িয়ে ধরে।ওয়াসেনাত লাগাম হিন ভাবে কাদঁছে। তার কান্না আসলে অরিএানের জন্যে না নিজের মার জন্যে।আল্লাহ তাকে কত ভালো মা দিয়েছে এটা ভেবেই তার কষ্ট হচ্ছে। তার মাতো নিজের চোখ না থাকার পরেও তার কষ্ট হলেই টের পেয়ে যায়।তাকে কত যত্নে আগলে রাখে। আর অরিএান ও কি পেছে জীবনে?কত যন্ত্রণা নিয়েই না থাকে ছেলেটা?কত কষ্ট হয়েছিল তার?তাকে তো তার মা মেরে ফেলতে চেয়েছে। ওয়াসেনাতের আরো জোড়ে কলিজা ফেটে কান্না পাচ্ছে।যেখানে ওয়াসেনাতের নিজের মা তাকে মাঝে মাঝে খাবার খাওয়ার জন্যে বোকলেই তার কলিজা ছিঁড়ার মত কষ্ট হয় বুক ফেটে কান্না পায় সেখানে অরিএানকে তো লাথিও মারতো আরো কত কি করেছে তার সাথে তার মা ?আল্লাহ যানে।ছোটো অরিএানের জন্যে ওয়াসেনাতের আরো বেশি কষ্ট হচ্ছে। কেন যেন ওয়াসেনাতের ইচ্ছা করছে অরিএানকে জড়িয়ে ধরে বলতে আমি সব সময় আপনার সাথে থাকবো।অনেক ভালোবাসবো।কিন্তু অরিএান তো তার সামনে নেই।সে ভাবছে পৃথিবীতে এত জঘন্য মাও আছে?।কিভাবে সম্ভব?ওয়াসেনাতকে তার বাবা আর দাদাজান ধরে গাড়িতে বসায়।ওয়াসেনাত এক নাগাড়ে কেঁদেই চলেছে…………..
:
:
:
#চলবে………………….🍁

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *