পাথরের বুকে ফুল

পাথরের বুকে ফুল ! সিজেন 2 !! Part- 32

অরিত্রানের সামনে মুখ ঘোমড়া করে বসে আছে রিমনে।তার পাশেই কাচুমাচু হয়ে বসে আছে অরহাম।অরিত্রান জহুরি চোখে তাকিয়ে আছে দু’জনের দিকে।এরই মাঝে টুশি এসে পানির গ্লাস নিয়ে হাজির।অরিত্রান চোখ গরম করে তাকিয়ে বললো,
—-“ তোমাকে না বলেছি কাজে আসবে না??তবে কেন এলে??আমার কথার অবাধ্য হওয়ার শাস্তি কি জানো??”
টুশি হি হি করে হেসে বললো,
—-“ আমি তো কামে আহি নাই।অতিথি হইয়া আইছি।রিমন ভাইজানের বিয়া লাগবো তো।হ্যাডার লাইগা।”
অরিত্রান চোখ ঘুরিয়ে রিমনের দিকে তাকালো।রিমনের মাথা নিচের দিকে।
—-“ তুই বিয়ে করছিস??কবে??”
রিমন কাচুমাচু করে বললো,

—-“ আসলে রিমির বিয়ে হয়ে যাচ্ছে।”
অরিত্রান ভ্রু কুচঁকালো।ডান হাতের একটা আঙ্গুল দিয়ে কপালের চুলগুলো সরিয়ে বললো,
—-“ ও ভালো তো।তা তুই কাকে বিয়ে করবি এখন??”
—-“ কাকে করবো মানে??ওরেই করবো।”
—-“ তুলে নিয়ে আসবি?”অরিত্রানের তীক্ষ্ন প্রশ্ন।
রিমন দাঁত বের করে হেসে বললো,
—-“ আরে না।ওর ওই বিয়ে হবে না।আজ সন্ধ্যায় যেতে বলেছে আমাদেরকে।”
অরিত্রান কিছুক্ষন তাকিয়ে থেকে বললো,
—-“ ও এই ব্যাপার।তাহলে যা।দাদাজানকেও নিয়ে যা।”
অরিত্রান উঠে দাড়ায়।রিমন কিছু বলতে চায়।কিন্তু বলতে পারছে না।অরিত্রান যদি রেগে যায় ভেবে।অরিত্রান কিছুটা উপরে উঠে কিছু একটা ভেবে রিমনের দিকে ঘুরে তাকায়।বলে,
—-“ আমাকেও যেতে হবে??”
রিমনের মুখে হাসি ফুটে উঠেছে।অরিত্রানের কাছে এসে বললো,
—-“ তুই গেলে ভালো হয়।”
অরিত্রান রিমনের দিকে তাকিয়ে থাকে কিছুক্ষণ।রিমন ভয়ে চোখ নামিয়ে নেয়।অরিত্রান সিঁড়ি বেয়ে উঠতে উঠতে বললো,
—-“ টাইম জানিয়ে যা।”
রিমন মাথা তুলে একবার তাকায়।তারপর অরহাম খানকে জড়িয়ে ধরে।অরহাম খান হাসলো।মাঝে মাঝে রিমন এমন বাচ্চাদের মত কাজ করে দেখলেই হাসি পায়।
_______________________
ড্রয়িংরুম জুড়ে বিশাল আয়োজন।খাবারের থেকে শুরু করে সাজসোজ্জার কোন কমতি নেই।ড্রয়িংরুমের মাঝে সাদা লেদারের সোফা।সেখানেই সবাই বসে আছে।অরিত্রান বসেছে একদম কোনায়।তাকে দেখেই বুঝা যাচ্ছে, চরম বিরক্ত সে।রিমন বেশ লজ্জা পাচ্ছে।লুজুক হেসে সে জুসের গ্লাস হাতে বসে আছে।অরমানের মুখ গম্ভীর।সে আসলে কোন দিকে তাকিয়ে আছে বুঝা দায়।সবার সামনের সোফায় বসে আছে রিমির বাবা মা ।তারা খুবই আতঙ্কে আছে।চোখে মুখে তাদের ভয়।কিছুক্ষণ পর পর বলছে,এটা নিন ওটা নিন।অরিত্রান এসবে বিরক্ত।সে পরিবার ঘটিত ব্যাপার গুলো তেমন পছন্দ করে না।
কিছুক্ষণের মধ্য সিঁড়ি দিয়ে নেমে আসে রিমি।তার পাশে ওয়াসেনাত আর নোড়া।নোড়ার মনটা খুব ভালো এখন।রিমিকে সোফায় বসিয়ে দেওয়া হয়।অরিত্রান ফোন নিয়ে ব্যস্ত।অরিত্রানকে দেখে ওয়াসেনাত শক্ট।আজ অরিত্রান সাদা শার্ট,কালো ব্লেজার গায়ে পরেছে।লম্বা চুলগুলে পিছনে সেট করে রেখেছে।চোখ নিচের দিকে।হাতে ব্ল্যাক ঘড়ি।চোখে মুখে দাম্ভিক একটা ভাব আছে।ওয়াসেনাত মুগ্ধ চোখে তাকিয়ে আছে।মনে মনে বিড়বিড় করছে,ছেলেটা এত সুন্দর কেন!!”নোড়া চিমটি কাটে হাতে।ওয়াসেনাত মৃদু চিৎকার করে বললো,
—-“ ওহহ!”
নোড়ার দিকে তাকিয়ে বললো,
—-“ কি হয়েছে??”
নোড়া চোখ টিপে বললো,
—-“ পছন্দ হয়েছে বুঝি??”
ওয়াসেনাতের চিৎকারে অরিত্রান মাথা তুলে তাকায়।ওয়াসেনাত এখানে আসবে সে যানতো।কিন্তু তার মোটেও এটা পছন্দ হয় নি।এখানে অরূপ আছে অরূপকে তার একদম পছন্দ না।রিমনের জন্যই এখানে আসা।ওয়াসেনাতের পাশে অরূপ সবতেই অরিত্রান চোখা চোখে তাকায় ওয়াসেনাতের দিকে।ওয়াসেনাত ঢোক গিলে।নোড়াকে টেনে অরূপের পাশে বসিয়ে দেয়।এতো সময় পরে ওয়াসেনাতের চোখ যায় অরহামের দিকে।চোখ বড় করে সে বললো,
—-“ উনি আপনার দাদা??”
অরিত্রান জবাব দিলো না।রিমন বললো,
—-“ জি।ভাবী আপনি চিনেন দাদাকে??”
রিমনের কথাটা কানে যেতেই সবাই চমকে তাকালো তার দিকে।অরিত্রানের তেমন পরিবর্তন হলো না।সে আগের মত তার কাজে ব্যস্ত।রিমন চোখ ছোট করে নিচের দিকে তাকায়।সবাই উৎসুক হয়ে তার দিকে তাকিয়ে আছে।রিমির তেজি চোখ।দাঁত কটমট করে তাকিয়ে আছে সে।অরূপ কৌতুহলি গলায় বললো,
—-“ ওয়াসেনাত তোমার ভাবী কিভাবে হয়??”
রিমন কি বলবে ভেবে পায় না।অরূপের মা ফোড়ন কেঁটে বললো,
—-“ আসলেই তো??ওয়াসেনাতের তো বিয়ে হয়নি।আর তুমি তো বলেছ তুমি অনাথ।তাহলে ভাবী কেন ডাকলে??”
রিমি কথা ঘুরাতে চায়।বলে,
—-“ আম্মু ভুলে বলে ফেলছে মনে হয়।”
রিমির মা মেয়ের দিকে চোখ রাঙ্গিয়ে তাকালো।মেয়েটার লজ্জা কি কম না কি!!ছেলে পক্ষের সামনে কেউ এভাবে জবাব দেয়??আবার মনে মনে ভাবে মেয়ের দোষ কি?একটা সময় ছিলো যখন মেয়েরা লজ্জায় কথা বলতে পারতো না।আর এখন তো মারামারিও করে।তার মেয়ে যে কেমন এটা তার জানা আছে।রিমি চুপ করে মাথা নিচু করে।তার মা বললো,

—-“ বাবা রিমন তুমি কি সত্যি ভুলে বলেছ??আসলে ভুলে বললে মানুষ আপু বা আন্টি বলে কিন্তু তুমি ভাবী ডাকলে কেন??”
রিমন পরেছে মহা বিপদে।কয়েক সেকেন্ড আপন মনে চিন্তা করে সে বললো,
—-“ ওয়াসেনাত আমার বোনের মত তাই তো??আর বোনের মত মানে ওর হাজবেন্ড আমার দুলাভাই হবে
ঠিক!!”
অরূপ একটু রাগি গলায় বললো,
—-“ ওর তো বিয়েই হয়নি।”
—-“ আরে একদিন তো হবে।ওর জামাই আমার দুলাভাই।দুলাভাইকে আবার আমরা ভাই ও ডাকি।সে হিসেবে ভাইয়ের বউ হলো ওয়াসেনাত।আর ভাইয়ের বউ মানেই ভাবী।”
রিমন হি হি করে হেসে উঠলো।কিন্তু বাকি সবাইকে চুপ থাকতে দেখে সে নিজেও চুপ করে গেলো।সবাই হা করে তাকিয়ে আছে।অরহাম ওয়াসেনাতকে নিজের পাশে জায়গা করে দিয়ে বললো,
—-“ দাদুমনি তুমি এখানে বসো।”
ওয়াসেনাত তাকিয়ে দেখলো।দাদার পাশেই অরিত্রান।ওয়াসেনাত বসলেই অরিত্রানের পাশে বসা হবে।কথাটা ভাবতেই তার হৃৎপিণ্ড কেঁপে উঠে।অরিত্রান মুখ তুলে ওয়াসেনাতের ভীতু মুখের দিকে একবার তাকায়।তারপর চোখ নামিয়ে নেয়।অরহাম তাড়া দিয়ে বললো,
—-“ দাঁড়িয়ে আছো কেন??বসো!”
ওয়াসেনাত ছোট ছোট পা ফেলে বসলো।অরূপ ভ্রুকুঁচকে তাকায়।অরিত্রানের বুকে একটা শান্তির বাতাস বয়ে গেলো।এত সময় পরে অদ্ভুত ভাবে তার ঠোঁটজোড়া একটু মেলে গেলো।সে হাসছে!ওয়ীসেনাত মাথা নিচু করে আছে।অরূপের ভালো লাগছে না।সে উঠে দাড়াঁ।চেয়ার নিয়ে আসবে আর ওয়াসেনাতকে সেখানে বসতে বলবে বলেই
ঠিক করেছে।অরিত্রান গম্ভীর গলায় বললো,
—-“ বিয়েটা কবে হবে??”
রিমির পরিবারের সবাই অবাক।এখনো তো কিছুই বলা হলো না।কথাই হলো না।ছেলের সম্পর্কেও জানা হলো না।এর মাঝেই এমন প্রস্তাবে তারা একটু ভড়কে গেলো।একজন অপরজনের মুখ চাওয়া চাই করতে শুরু করে।অরহাম বললো,
—-“ আসলে ওর কথা হচ্ছে যেহেতু এরা একজন আর একজনকে পছন্দ করে সে হিসেবে আর তো কিছু বলার নেই।ছেলে বা মেয়ের মাঝে তো কোন প্রবলেম নেই।তাই বিয়ের তারিখটা কবে দিবেন বলে ফেলাই ভালো।”
রিমির বাবা অরিত্রানের দিকে তাকিয়ে বললো,
—-“ আপনি নিজেই ঠিক করুন।”
অরিত্রান তীক্ষ্ন চোখে তাকায়।তিনি দ্রুত বলে,
—-“ আসলে আপনিই তো আসল।তাই আপনি যা বলবেন তাই হবে।”
অরিত্রান পায়ের উপর পা তুলে বললো,
—-“ মেয়ের বাবা কে??আপনি না আমি??”
—-“ আমি।”
—-“ তাহলে আমি সব হলাম কিভাবে??যাই হোক,আসল কথাটা আমিই বলি।বিয়ে কবে হবে এটা আমি জানি না।তবে ছেলে সম্পর্কে আপনাদের ধারনা কেমন আমি জানতে চাই!!”
রিমির বাবা ভয়ে ভয়ে বললো,
—-“ ছেলে দেখতে ভালো।”
—-“ ছেলে দেখতে ভালো হলেই হয় না।রিমনের মালিকানায় তিনটা ফ্যাক্টরি আছে।একটা বাড়ি আছে।গাড়ি কয়টা আছে সেটা জানা নেই।সে চাইলেই নিজের অফিসে বসতে পারে।তাই তাকে আপনাদের কম মনে হওয়ার কিছু নেই।”
কথাটা বলে একটু পিছনে ঝুঁকে ওয়াসেনাতের কানের কাছে ফিসফিস করে বললো,
—-“ ওই ছেলেটার আশেপাশে যাতে না দেখি পরীজা।
অরিত্রান উঠে দাড়াঁলো।সাথে দাড়িঁয়ে পরেছে সবাই।অরিত্রান কিছু না বলে হনহন করে চলে গেলো।রিমন বললো,
—-“ ও যা বলেছে সব সত্য নয়।ওই সবই ওর দেওয়া।
রিমির বাবা কিছু বললো না।সবাই আবার আলোচনায় বসেছে।বিয়ের তারিখ নিয়ে।নোড়া ওয়াসেনাতের দিকে তাকিয়ে বললো,
—-“ ভাই দেখলি কি তেজ!পুরাই আগুন!!”
ওয়াসোনাত একটা চিমটি কেঁটে বললো,
—-“ শেট আপ!”
নোড়া হাসলো।হাসতে হাসতে বললো,
—-“ পোলা তো পোলা না আগুনেরই গোলা।”
ওয়াসেনাত চোখ পাকিয়ে তাকায়।বিয়ের তারিখ দেওয়া হয় সাত দিন পরে।
______________________
সূ্র্যের ঘনা রশ্নি ধিরে ধিরে মেঘের আড়ালে ডেকে যাচ্ছে।ওয়াসেনাত এত সময় চোখের উপরে হাত দিয়ে রেখেছে।সূর্যের কড়া কিরণ তার মুখেই এসে পড়ছিলো।এখন সেই সূর্য মেঘের আড়ালে ডুব দিয়েছে।হঠাৎ করেই বাতাস হচ্ছে তীব্র।অরিত্রান দাড়িয়ে আছে কদঁম গাছের নিচে।গাছ ভর্তি কদঁম।বর্ষা মানেই হলুদ কদঁম।ওয়াসেনাত বেশ অভিজ্ঞ একটা ভাব নিয়ে হোয়াইট বোর্ডে অক্ষর লিখছে।আজ শুক্রবার।শুক্রবার বা অবসর সময়ে ওয়াসেনাত তার কুঞ্জবাড়িতে আসে।এটা এক প্রকার এতিমখানা সাথে বৃদ্ধাশ্রম।অনেক বাচ্চা আর কিছু বৃদ্ধ-বৃদ্ধা লোক থাকে এই বাড়িতে।অবসর সময়ে ওয়াসেনাত এই বাচ্চাদের পড়ায়।আজ তার কোথাও যাওয়ার নেই তাই এখানে আসা।অরিত্রান বুকে দু’হাত ভাঁজ করে গাছের গায়ে হেলান দেয়।ওয়াসেনাত এখনো তাকে দেখেনি।বাতাস হচ্ছে তীব্র।হঠাৎ যেন আকাশে মেঘ করেছে।অরিত্রানের দৃষ্টি স্থির।সে তাকিয়ে আছে সামনের উড়ন্ত হিজাবের অংশের দিকে।সে দেখছে।দৃষ্টি তার তীক্ষ্ন।চোখ গভীর।ওয়াসেনাত হাত নিচিয়ে বুঝাতে ব্যস্ত।বার বার পলক ফেলছে সে।ওয়াসেনাতের পাতলা ঠোঁটজোড়া অরিত্রানের কাছে ভারি অদ্ভুত লাগে।ওয়াসেনাত যখন হাসে ঠোঁট দু’টি মেলে ঠোঁটের কোনায় গর্ত হয়।সূর্যের তীর্যক আলোয় ওয়াসেনাতের গাল দুটি লাল হয়ে আছে।হঠাৎ বৃষ্টি শুরু হয়।সব বাচ্চারা দৌড়ে পালায়।ওয়াসেনাত হাসে।দু’হাতে বৃষ্টি জমা করে।সেই বৃষ্টি আবার নিজের মুখে ছুড়ে মারে।বাতাসের গতি বাড়ে।অরিত্রানের মাথার উপরের কদঁম গাছ থেকে ঝরে পরে কয়েকটা কদঁম।অরিত্রান হাত বাড়িয়ে সেই কদঁম হাতে নেয়।ওয়াসোনাত ভিঁজে।ভিঁজার তালে তালেই হঠাৎ অরিত্রানকে দেখে সে চমকে উঠে।কয়েক কদম এগিয়ে আসতেই কাঁদায় পা ঢুকে পড়ে যেতে নেয়।অরিত্রান দ্রুত ছুটে এসে দুহাতে ওয়াসেনাতের কোমড় জড়িয়ে তাকে উপর করে তুলে।চোখ গরম করে বলে,

—-“ দেখে চলা ফেরা করতে পারো না??ডাফার একটা!”
ওয়াসেনাত ভারী অবাক হয়ে বললো,
—-“ আপনি এখানে কেন??”
—-“ কেন আসতে পারি না??”
—-“ সেটা না কিন্তু আপনি আসবেন বলেননি তো!!”
—-“ অরিত্রান খান কাউকে বলে কিছু করে না।”
ওয়াসেনাত চোখ রাখে অরিত্রানের চোখে।বৃষ্টির পানি অরিত্রানের মুখ ছুঁয়ে ছুঁয়ে পরছে।লাল ঠোঁট ফ্যাকাশে হয়ে আছে।সবুজ চোখের ঘন পাপড়িতে পানি জমেছে।অরিত্রান চোখের পলক ফেলছেনা।ওয়াসেনাতের পা টা আরো একটু বেকে যায়।অরিত্রানের একটা হাত ওয়াসেনাতের পিঠে বাকি হাত ওয়াসেনাতের বাঁকা কোমড়ের ভাজে ,সেই হাতের মুঠোয় কঁদম।ওয়াসেনাত নিচে পরে যেতে নেয়।অরিত্রান কোমড় চেপে ,পিঠের উপরে হাত দিয়ে আরো টেনে নিজের দিকে নিয়ে আসে।অরিত্রানের মুখের পানি ওয়াসেনাতের চোখ,নাক,গাল,ঠোঁটের উপরে পরছে।ওয়াসেনাতের বুকের ধুকপুকানীর শব্দ তীব্র হচ্ছে।বৃষ্টির পানিতে কাঁপছে শরীর।অরিত্রানের ছোঁয়ায় যেন জাদু আছে।ছুঁয়ে দিলেই বিদ্যুৎ খেলে যায় শরীরে।রঞ্জে রঞ্জে উত্তাপ ছড়িঁয়ে পড়ে।লাল হয় দু’গালের পাশ।ওয়াসেনাতের ঠোঁট কাঁপছে।ঠোঁট বেয়ে পরছে বৃষ্টির বর্ষন।অরিত্রানের দৃষ্টি গভীর।ওয়াসেনাত অরিত্রানের চাহনিতে অপ্রস্তুত হয়ে পরে।পা টেনে উঠতে চায়।আবার পিছলে পরে।অরিত্রানের আরো কাছে চলে যায়।অরিত্রান হাসে।কোমড় দুহাতে পেচিঁয়ে দাড়াঁ করিয়ে দেয়।কিন্তু ছাড়ে না।ওয়াসেনাত কাঁপা ঠোঁটে বলে,
—-“ হঠাৎ এখানে কেন এলেন??”
অরিত্রান কিছু বললো না।সে তাকিয়ে আছে ওয়াসেনাতের ভিঁজা মুখের দিকে।সচ্ছ কাঁচের মত মনে হচ্ছে তার।ওয়াসেনাত বললো,
—-“ আজ নিয়ে দু’দিন কোথাই ছিলেন??”
অরিত্রান শীতল কন্ঠে বললো,
—-“ আমার কথা মনে পড়েছে বুঝি??”
ওয়াসেনাত অবাক হয়।ভাবে মানুষটা কি মনের কথা পড়ে নিতে পারে??না কি সত্যি চোখ পড়তে পরে?এটাও কি সম্ভব!!অরিত্রান কোমড়ের হাতটা আরো শক্ত করে বললো,
—-“ আমার কিন্তু খুব মনে পড়েছে!!দু’দিন ঘুমাতে পারিনি।”

অরিত্রানের শীতল কন্ঠ।ওয়াসেনাতের চোখ ছোট হয়ে আসে।অরিত্রানের চোখে চোখ রাখে ওয়াসেনাত।অরিত্রানের চোখ কথা বলে!ওয়াসেনাত বড্ড অবাক হলো!সত্যি তো অরিত্রান যা মুখে বলছে তাই তার চোখের গভীরে ভাসছে!চোখের মাঝে আকুলতা!!না দেখার!না কি ঘুমের জন্য এমন লাগছে!ওয়াসেনাত বুঝলো না।অনেক সময় নিয়ে ওয়াসেনাত অরিত্রানের চোখের দিকে তাকিয়ে আছে।অরিত্রানের দৃষ্টি স্থির নেই।চোখ ঘুড়ছে।ওয়াসেনাতের চোখে,গালে,ঠোঁটজোড়ায়।অরিত্রানের মস্তিষ্ক ভার হচ্ছে।কিছুসময় আগে ও যে অস্থিরতা ছিলো তা এখন নেই।এই কয়েক মুহূর্তে তার মনে হচ্ছে এই মেয়েটা শুধু তার নেশা না,মাদকতা না,জীবনের প্রান ভোমরায় রূপ নিচ্ছে।তারও একটু ফিল্মি ডায়লগ দিতে ইচ্ছে করছে।”পরীজা আমি তোমাকে ছাড়া বাচঁবো না।একমুহূর্ত তোমাকে ছাড়া থাকতে আমার দম বন্ধ হয়ে আসে।নিঃশ্বাস নিতে কষ্ট হয়।সব অন্ধকার লাগে।সব এলোমেলো লাগে।তোমার বিরহে আমি যেমন কাঁতর হই।তোমার কাছে থাকলে,অনেক নিষিদ্ধ ইচ্ছে এসে ভীড় জমায় মাথায়।ইচ্ছে হয় সব নিয়ম ভেঙ্গে একটু নিষিদ্ধ ইচ্ছে গুলোতে ঝুঁকে পড়ি।”অরিত্রান দীর্ঘশ্বাস নেয়।সেই শ্বাসের উত্তাপ এসে পরে ওয়াসেনাতের চোখে মুখে।কেঁপে উঠে সে।চোখের পাতা নিভু নিভু করে তাকায় অরিত্রানের দিকে।ওয়াসেনাত একটা হাত তুলে অরিত্রানের চোখ ছুঁয়ে দেয়।অরিত্রান চোখ বুজে।ওয়াসেনাত বিড়বিড় করে বলে,
—-“ আপনার চোখজোড়া মারাত্নক!!”
অরিত্রান হো হো করে হেসে উঠে।গভীর একটা দৃষ্টি নিক্ষেপ করে বললো,
—-“ আমার সবই মারাত্নক।কারন আমি মানুষটাই মারাত্নক।সবারই একুই কথা।”
ওয়াসেনাত চোখ মুখ কুঁচকে বললো,
—-“ উহু!সবার মারাত্নক আর আমার মারাত্নক বলার মাঝে পার্থক্য আছে।”
অরিত্রানে ওয়াসেনাতের কোমড় টেনে গাছের সাথে ঠেসে দাড়াঁয়।এক ভ্রু তুলে বললো,
—-“ সেটা কিভাবে??”
ওয়াসেনাত কিছু বলে না।লজ্জায় মাথা নামিয়ে নেয়।বিড়বিড় করে বলে,
—-“ আপনি মানুষটা আসলেই মারাত্নক!”
অরিত্রান হাসে।ওয়াসেনাত মাথা তুলে তাকায়।অরিত্রানের চুল লেপ্টে আছে কপালে।গালের খোঁচা খোঁচা দাড়ি।ঠোঁটে বিন্দু বিন্দু পানি।মোটা মোটা ভ্রু।চুলগুলো হালকা সোনালী।কাছ থেকে দেখলেই বুঝা যায়।অরিত্রান ওয়াসেনাতকে হালকা ঝাঁকিয়ে ফেলে দিতে চায়।আচমকা এমন হওয়ায় ওয়াসেনাত ভয় পেয়ে যায়।অরিত্রানের গলা দু’হাতে জাপ্টে জড়িয়ে নেয়।অরিত্রান শব্দ করে হাসে।নিজেও দু’হাতে ওয়াসেনাতকে জড়িয়ে উপরে তুলে নেয়।ওয়াসেনাতেক কয়েক সেকেন্ড লেগে যায় অরিত্রানের কান্ড বুঝে উঠতে।ওয়াসেনাত রেগে অরিত্রানের বুকে কয়েকটা ঘুষি দেয়।ঠোঁট উল্টে সে বললো,
—-“ আপনি কি পাগল??”
অরিত্রান ভ্রু নিচের দিকে নামিয়ে বললো,
—-“ অব্যশই!কেন তুমি জানো না??”
—-“ আমি কিভাবে জানবো??”ওয়াসেনাতের ক্ষীন গলার প্রশ্ন।
অরিত্রান ওয়াসেনাতের মাথায় নিজের কপাল ঠেকায়।ওয়াসেনাত চোখ বড় করে বললো,
—-“ কেউ চলে আসবে।আপনি এমন নির্লজ্জ কেন হয়ে যাচ্ছেন দিন দিন।ছিঃ নিচে নামান!!”
ওয়াসেনাতের বুকের ধক্ ধক্ শব্দ কানে আসছে অরিত্রানের।তার সারা শরীর থরথর করে কাঁপছে।অরিত্রান এগুলো দেখে হাসে।ফিসফিস করে সে বললো,
—-“ সব তো তোমার জন্য।আর প্রেমিক মানুষ নির্লজ্জ হয় এটা সবার জানা।কেন তুমি জানো না!!”
ওয়াসেনাতের মুখের পানি গড়িয়ে পরছে অরিত্রানের চোখে মুখে।শ্বাস দ্রুত পড়ছে ওয়াসেনাতের।কম্পিত হচ্ছে ঠোঁট।বৃষ্টি হচ্ছে ঝুম ধরে।ভালোবাসায় মাখামাখি হচ্ছে বৃষ্টিও।বৃষ্টির প্রতিটি বিন্দ বলছে আজকের বৃষ্টি তোমাদের নামে করলাম।ভালোবাসা নিজের রূপে চলছে চোখে চোখে,নিঃশ্বাসে নিঃশ্বাসে,হৃৎপিন্ডের শব্দে।ভালোবাসার বর্ণনা হয় না কে বলেছে?এইতো চোখে চোখে হয় বর্ণনা!ভালোবাসা যেমন গভীর এর বর্ণনা কারীও হতে হবে গভীর।আজ সেই বর্ণনা হচ্ছে।চোখে চোখে,হৃৎপিণ্ডের শব্দে,নিঃশ্বাসের উত্তাপে।অরিত্রান ওয়াসেনাতের পিঠ চেপে আর একটু কাছে নিয়ে আসে।মুখের একটু উপরে ওয়াসেনাতের মুখ।ছুঁই ছুঁই করছে ঠোঁটজোড়া।অরিত্রান গলার কন্ঠে নেশা মিশিয়ে বলে,
—-“ ভালোবাসি পরীজা!!”
ওয়াসেনাত চোখমেলে তাকায়।অরিত্রানের চোখেও নেশা।এতো নেশায় ডুবে ওয়াসেনাত মরেই যাবে বলে তার মনে হচ্ছে।কারো চোখের গভীরতা এতো হয়!!ওয়াসেনাত অরিত্রানের টি-শার্ট খামঁছে আছে।অরিত্রান কিছুসময় পরে ওয়াসেনাতকে নিজে নামিয়ে একহাতে কোমড় জড়িয়ে গাছে হেলান দেয়।বলে,
—-“ আমার একটু নায়ক হতে ইচ্ছে করছে।”
ওয়াসেনাত কিছু বললো না।চোখ নিচের দিকে।অরিত্রান নিজেই বললো,
—-“ নায়কের মত বলতে ইচ্ছে করছে,তুমি আমার নিঃশ্বাসে রূপ নিয়েছ পরীজা।তোমার বাড়ির সামনে দাড়িঁয়ে তোমাকে একবার না দেখলে আমার দিন কাঁটে না।আমার সময় থমকে যায়।আমার শুধু তোমার আশেপাশে থাকতে ইচ্ছে করে।তোমার বাস্তব জীবনের নায়ক হতে চাই আমি!!”
ওয়াসেনাত অরিত্রানের দিকে তাকিয়ে বললো,
—-“ আপনি তো দু’দিন আমার সাথে দেখা না করেই ছিলেন।”
অরিত্রান হাসে।কিছুই বলে না।ওয়াসেনাত বুঝে নেয়।অরিত্রান প্রতিদিনই তার বাসার সামনে যায়।সকাল বিকেল রাতে।মজিদ ভাই বলেছে।সেও দেখেছে।ওয়াসেনাত হাসে।ঠোঁট টিপে সে হাসি থামিয়ে বলে,

—-“ এতো ভালোবাসার কি দরকার।”
ওয়াসেনাতের দিকে ঝুঁকে অরিত্রান বললো,
—-“ আমি তো ভালোবাসার কিছুই বুঝিনা।ভালোবাসা নিজের থেকেই এসে ধরা দেয়!শতরূপে ধরা দেয়!প্রতিবার বলে আমি তোমাকে চাই।তোমাকে কতটুকু ভালোবাসতে চাই জানি না।শুধু তুমি হলেই চলবে।আমার পাশে থাকো।এতেই হবে।এটা যদি ভালোবাসা হয় তাহলে আমি তোমাকেই ভালোবাসি।হাজার বছর এমন ভাবেই ভালোবাসতে চাই।”
অরিত্রানের এক হাতে কঁদম দেখে ওয়াসেনাত বললো,
—-“ আপনি গাছে উঠতে পারেন??”
অরিত্রান অবাক হয়ে বললো,
—-“ গাছে আবার উঠা যায় না কি??”
—-“ গাছে না উঠে কদঁম পেলেন কই??
অরিত্রান হাতের দিকে তাকিয়ে বললো,
—-“ ও এগুলো আমার মাথায় পড়েছে।কি নাম এই ফুলের??”
ওয়াসেনাত হেসে ফেলে।বলে,
—-“ আপনি কদঁম ফুলের নাম জানেন না??”
—-“ না।”
ওয়াসেনাত অরিত্রানের দিকে তাকায়।হলুদ টি-শার্ট পরেছে।নিজের দিকে তাকিয়ে সে চমকে উঠে তার গায়ে নীল জামা।ওয়াসেনাত খুশিতে লাফিয়ে বললো,
—-“ আপনি হিমুর হলুদ পরেছেন আর আমি রূপার নীল।হাতে কঁদম।আকাশ জুড়ে বৃষ্টি।ওয়াও একদম হিমু রূপার মত।”
অরিত্রান ভ্রু কুঁচকে বললো,
—-“ আমি হিমু না অরিত্রান আর তুমি ওয়াসু।এই হিমু রূপা কে??কি সব এলোমেলো কথা।”
অরিত্রান কঁদমগুলো ছুঁড়ে দিতে চায়।ওয়াসেনাত চেঁচিয়ে বললো,
—-“ এই আপনি কি করছেন??কঁদম ফেলে দিচ্ছেন কেন??”
অরিত্রান নাক কিঞ্চিত উঁচিয়ে বললো,
—-“ এটা কোনো ফুল হলো??আমার পছন্দ হলো না,তাই ফেলে দিচ্ছি।”
ওয়াসেনাত মুখ ফুলিয়ে বললো,
—-“ আমার খুব পছন্দের।একদম ফেলে দিবেন না।এগুলো দিয়ে সুন্দর করে প্রপোজ করেন।তাহলেই আমার নায়ক হতে পারবেন।”
ওয়াসেনাত মনে মনে ভাবে আচ্ছা হিমু কিভাবে প্রপোজ করেছে রূপাকে??না কি করেই নি।হতেও পারে যে পাগল ছেলে।ওয়াসেনাত নিজে নিজে হাসে অরিত্রান ভ্রু কুঁচকে বললো,
—-“ এতো ভালো ভালো ফুল থাকতে এই ফুল দিয়ে প্রপোজ করবো??কিন্তু কেন?”
—-“ নায়ক হতে চাইলে তো করতেই হবে।করেন।”
ওয়াসেনাত মুখ ঘুড়িয়ে বললো।অরিত্রান হাসলো সেই মুখ ঘুরানো দেখে।তারপর বললো,
—-“ আমি প্রপোজ করতে পারিনা।”
—-“ মানে কি?আজকে না করলে আমি কিন্তু সত্যি অন্য নায়ক খুঁজে নিবো।”
অরিত্রান ওয়াসেনাতকের কোমড় আরো চেপে বললো,
—-“ এতো সহজ!!”
—-“হুম!”

অরিত্রান হাসে।কোমড় ছেড়ে সামনে হাটু গেড়ে বসে কাঁদার উপরে।হাত বাড়িয়ে দেয় ওয়াসেনাতের দিকে।হাত ভর্তি কঁদম।বৃষ্টি ভেঁজা শরীর।
—-“ ভালোবাসায় কোনো শর্ত হয় না।হয় না কোনো বাক্য।তোবুও বলবো আমি সব কিছুর বিনিময়ে ভালোবাসতে চাই।এই শর্ত আমি আমার সব কিছুর বিনিময়ে রাখতে রাজি।আমি ভালোবাসি বলে বেরাতে চাই না।তোমাকে বুঝে উঠতে চাই।ভালোবাসা শব্দ উচ্চরণ করলে অদ্ভুত ভাবে আমি তোমাকে বুঝতে পারি।তোমাকে বুঝার জন্য আমি হাজার ,কোটি বার ভালোবাসি শব্দের স্রোত তুলতে পারবো।”ভালোবাসা এবং যত্ন দিয়ে মরুভূমিতেও ফুল ফোটানো যায়।”(ডেভিড রস).কথাটা সত্য।ভালোবাসা পাথরের বুকেও ফুল ফোটাতে পারে।আর তুমি আমার সেই ফুল।আমার ফুলের কাছে এই ফুল তুচ্ছ।ফুলগুলো নিয়ে তুমি চাইলে এদের ধন্য করতে পারো।আমার ভালোবাসা এই ফুলে প্রকাশিত হবে না।তুমি চাইলে নিতে পারো।আমি তোমার প্রেমিক হয়ে নয়!অনন্ত কাল তোমার প্রেমে ডুবে থাকা ভালোবাসার মানুষ হয়ে থাকতে চাই!আমাকে ভালোবাসতে হবে না।প্রেমিকা হতে হবে না আমার ,সাথে ভালোবাসার কথা বলতে হবে না!শুধু এই নীল গভীর চোখে তাকিয়ে থাকার অধীকার দিলেই হবে।আমি তাকিয়ে থেকেই পার করে দিবো নিজের বাকি জীবন।তাকিয়ে থেকে ভালোবাসি বলে তোমাকে বুঝার চেস্টা করবো শুধু।এতেই হবে।”
অরিত্রান থামে।ওয়াসেনাত হাত বাড়িয়ে ফুলগুলো নিয়ে মুঠো বন্ধ করি।অরিত্রান দাড়িঁয়ে পরে।ওয়াসেনাতের একটা হাত নিজের হাতের আঙ্গুলের ভাঁজে ঢুকিয়ে বলে,
—-“ ভালোবাসি!!”
ওয়াসেনাত চোখ তুলে তাকায়।বৃষ্টিতে সব ঝাপসা হয়ে উঠেছে।ওয়াসেনাতের চোখের কোনা লাল হয়ে আছে।অরিত্রান চোখের দিকে তারিয়ে বলে,
—-“ ভালোবাসি কথায় ,এই চোখের ভাষা বুঝা সত্যি বড্ড সোজা!!”
বৃষ্টি ভিজিয়ে দিচ্ছে।মাখিয়ে দিচ্ছে ভালোবাসা।দু’টি মানুষের নিশ্চুপ নিঃশ্বাস কোথাও এসে এক হচ্ছে।বিনিময় করছে ভালোবাসা।অরিত্রান কিছুসময় তাকিয়ে থেকে বন্দী হাতের উল্টপিঠে নিবিড় এক চুমু বসিয়ে দেয়।ভাঁজে আটকে থাকা আঙ্গুলের ভাঁজে ঠোঁট ছুঁয়ে দেয়।ভিজা কোমড়টা আবার জড়িয়ে কাছে নিয়ে আসে।ওয়াসেনাতের রগে রগে কাঁপন শুরু হয়।অরিত্রান ওয়াসেনাতের চোখে চোখ রাখে।দু’টি চোখ এক হয়।মনে মনে এক হয় হৃৎপিণ্ড।বৃষ্টিকে সাক্ষী রেখে আজ ভালোবাসা হোক চোখে চোখে!কথা হোক অন্তরের সাথে অন্তরের!গভীরতা বাড়ুক!ভালোবাসার মিল দেহে দেহে নয়!!অন্তরে অন্তরে হয়!এটাই তো ভালোবাসা!চাহিদা, তৃষ্ণা সব জুড়ে গড়ে উঠোক অন্তরের ভালোবাসা!!অর্থ বিহিন ভালোবাসা!!যার অর্থের খোঁজে নাম লেখাক হৃৎপিণ্ড নামক যন্ত্র!!”
#চলবে__________