নীরবতা

নীরবতা !! Part- 32

আব্বা,
আমি যাচ্ছি… জানি ভুল কিছু করছি না আমি। সত্যি বলতে আপনাদের ঠিক করা সম্পর্ক আমার পক্ষে মেনে নেয়া সম্ভব নয়। এখন হয়তো ভাববেন নিশ্চিত আমার কারো সাথে সম্পর্ক রয়েছে। হ্যাঁ, আপনার ধারণাই ঠিক। আমি একজনকে পছন্দ করি। পছন্দ বললে ভুল হবে। আমি ভালোবাসি.. খুব ভালোবাসি। আর যেটি হজ্ব করে আসা নামের হাজী হিসেবে আপনি কখনোই মেনে নিতেন না। হাজীসাবের মেয়ে প্রেম করছে! তওবা তওবা! এমন হাজারো কথায় বিচলিত হয়ে আপনি বড়ভাই এবং মেজভাইয়ের মতো নিজের সিদ্ধান্তই আমার উপর চাপিয়ে দিতেন। এবং আমার জীবনটা নরক বানিয়ে দিতেন। তাই আমি একরকম বাধ্য হয়েই পালানোর সিদ্ধান্তে আসলাম। জানি, আপনি আর কখনোই আমার মুখ দেখতে চাইবেন না। তবে আব্বা, আমি বিশ্বাস করি আমার ভালোবাসার মানুষটি আমায় সুখে রাখবে। আমি ভালো থাকবো আব্বা.. খুব ভালো থাকবো।
আপনার একমাত্র মেয়ে
অনা
বিদ্রঃ কিছু টাকা এবং আমার জন্য আপনার জমিয়ে রাখা গয়নাগুলো আমি আমার সাথেই নিয়ে যাচ্ছি। আমাকে মাফ করে দেবেন আব্বা।’
অনার চিঠি হাতে খানিকক্ষণ থম ধরে বসে রইলেন আলাউদ্দিন শেখ। তারপর লোক দিয়ে খবর পাঠিয়ে ডেকে আনালো চৈতালিকে। চেয়ারে হাতলে দুটো গুতো মেরে গম্ভীর গলায় বললেন,
-“অনা কার সাথে পালাইছে?”
-“মানে? অনা পালিয়েছে মানে?”
-“তামশা না কইরা ভালোয় ভালোয় সবটা খুইলা কও।”
-“চাচা আমি সত্যিই কিছু বুঝতে পারছি না।”
আলাউদ্দিন শেখ অনার ফেলে যাওয়া চিঠি চৈতালির দিকে বাড়িয়ে ধরতেই তা হাতে নিল চৈতালি। সময় নিয়ে পুরোটা পড়ে চুপচাপ দাঁড়িয়ে রইলো। স্তব্ধতা তার কোনোভাবেই কাটছে না। অনা আর প্রেম! কিভাবে সম্ভব? তাকে তো এব্যাপারে কিছুই জানায়নি সে!
-“আমার মাইয়া কোনহানে আছে? কার সাথে পালাইছে সবটাই খুইটা খুইটা কও। নয়তো ওর পরিণতি ভয়ংকর হবো কইয়া দিলাম!”
আলাউদ্দিন শেখের কথায় দু’কদম পিছিয়ে পড়লো চৈতালি। চোখেমুখে এসে জড়ো হলো একরাশ আতংক। ঢোক চেপে ভাঙা গলায় কোনোমতে বললো,
-“বিশ্বাস করেন চাচা, আমি কিচ্ছু জানি না। অনা এব্যাপারে আমারে কিচ্ছু জানায়নি।”
-“এইডা বিশ্বাস করবার কও? এইডা? পরশু রাতেও তুমি ওর লগে ছিলা। কেন ছিলা জানি না মনে করছো? তুমি ওরে প্ল্যান কইরাই ভাগাইছো। কোন কুত্তার বাচ্চার লগে ভাগাইছো সেইডা কও।”
-“চাচা সত্যিই আমি কিছু জানি না। আমি জানলে কি ওকে থামাতাম না? বিশ্বাস করেন ও আমাকে কিছুই বলেনি।”
উদ্বিগ্ন হলেন আলাউদ্দিন শেখ। চৈতালিকে আর কিছুই না বলে উঠে পড়লেন চেয়ার ছেড়ে। আপাতত তাকে ঠান্ডা মাথায় কাজ করতে হবে। নতুবা এসব পাড়ায় জানাজানি হয়ে গেলে বড্ড বিপদে পড়তে হবে তাদের। দোতালায় উঠে এসে আলাউদ্দিন শেখ নিজের ঘরে খানিকক্ষণ পায়চারী করার পর কল করলেন মেসবাহর নাম্বারে। তার এই বিপদে আপাতত তিন ছেলেকেই তার পাশে দরকার। যাদের মুখের দিকে তাকিয়েই দূর্বল শরীরে বল খুঁজে পান তিনি।
পড়ন্ত বিকেলের তীব্র রোদে পুরো শরীর ঘেমে শার্ট ভিজে উঠেছে মেসবাহর। অসহ্য লাগছে এই সময়টি। আচ্ছা.. পড়ন্ত বিকেলের রোদও কি এতটাই তীব্র হয় নাকি কঠিন এক সত্যের মুখোমুখি দাঁড়িয়ে সে হাঁপিয়ে উঠছে? পারছে না লড়তে সে এই নির্মম সত্যির সঙ্গে? কপালের ঘাম মুছে মর্গ লেখা ঘরটির সামনে এসে দাঁড়ালো মেসবাহ। তার পাশেই জড়োসড়ো হয়ে দাঁড়িয়ে হাতের নখ কামড়ে যাচ্ছে মুবিন। গ্রামে এসে পৌঁছনোয় তাদের অনেক সময় হয়ে এসেছে। সকালে বাবার ফোন পেয়ে অনার পালানোর খবর শুনে আর একদন্ডও দেরি করেনি মেসবাহ। উল্লাসী এবং সুহাকে সঙ্গে নিয়ে তাড়াহুড়ো করে বেরিয়ে পড়েছিল গ্রামের উদ্দেশ্যে। দীর্ঘ পথ যাত্রার পর বাড়ি এসে পৌঁছে বেশ আলোচনার পর থানায় একটি মিসিং কমপ্লেইন করার সিদ্ধান্তে উপনীত হতে পেরেছিল সকলে মিলে। তার প্রায় কিছুক্ষণ পরেই সে মুবিনকে সাথে নিয়ে চলে এসেছিল থানায়। তবে থানায় আসার পর পাশের গ্রামের গ্যাং-রেপের কবলে পড়া এক মেয়ের গলা কাটা লাশ উদ্ধারের কথা শুনে গলা শুকিয়ে এসেছিল দু’ভাইয়ের। কিন্তু শেষমেষ পুলিশের কথামতো তাদের অনিচ্ছা থাকা সত্বেও আসতে হয়েছে গ্রামের সরকারি হাসপাতালে।
-“অনা তো পালিয়েছে। অনা এখানে থাকতে পারে না।”
মুবিনের কথা শুনে তার দিকে তাকালো মেসবাহ। ঘাড় নেড়ে ক্ষীণ স্বরে বললো,
-“হ্যাঁ..”
-“তাহলে আমরা এখানে কেনো আসলাম? আমার একদম ভালো লাগছে না৷ মেজভাই চলো আমরা বাড়ি ফিরে যাই।”
-“যাবো.. ওরা যেহেতু বলছে একটাবার দেখেই যাই।”
-“অনা পালিয়েছে.. এই মেয়ে অনা কখনোই হতে পারে না।”
কথা বাড়ালো না মেসবাহ। চুপচাপ দাঁড়িয়ে রইলো মর্গের সামনে। মুবিনের কথাটিই যেনো ঠিক হয় তা সেও মনে প্রাণে চাইছে। তবে পুলিশের আশংকা মতে এই মেয়েটিই যে অনা!
-“আসুন..”
ফর্সা ছিমছাম বর্ণের রোগা পাতলা একটি ছেলের ইশারা পেয়ে তার পিছু পিছু মর্গের ভেতরে ঢুকতেই বুকের ভেতরটা হুহু করে উঠলো মেসবাহর। বড়সড় এই ঘরটি বেশ শীতল। দু’পাশের দেয়ালে বেশ কিছু ফ্রিজারে ঠাসা। মাঝে কিছু স্ট্রেচার। যাতে সাদা কাপড়ে মুড়িয়ে প্রাণহীন কিছু দেহ রাখা। আশপাশ থেকে নজর সরিয়ে চোখজোড়া বুজে লম্বা একটি শ্বাস ছেড়ে পেছনে ফিরলো মেসবাহ। চোখের পলক ফেলে মুবিনকে আস্বস্ত করে এগুলো কয়েক কদম।
-“তাড়াতাড়ি দেখবেন। আমার ডিউটি শেষ। তবুও আপনাদের জন্য আমার এখনো হাসপাতালে থাকা লাগতেছে। একটু আগে আসতে পারেন নাই? গোয়ার গোড়ায় গু না আসলে আপনাদের হাগা বাড়ায় না?”
খানিকক্ষণ আগে রোগা পাতলা ছেলেটিকে দেখে মেসবাহর মনে মায়া কাজ করলেও তার মুখে এমন কথা শুনে মেজাজ খারাপ হলো তার। কড়া কিছু কথা শোনানোর জন্য মুখ খোলার ইচ্ছে থাকলেও স্ট্রেচারে রাখা নিষ্প্রাণ দেহটির মুখ থেকে কাপড় সরাতেই সেদিকে নজর গেলো মেসবাহর। সাথেসাথেই তার বুকের ভেতরটা মুচড়ে উঠলো। রক্তমাখা ছিন্নবিচ্ছিন্ন মুখের দিকে তাকিয়েই চোখ ফিরিয়ে নিল মেসবাহ। খানিকদূরে দাঁড়িয়ে থাকা মুবিনের দিকে চেয়ে ডুকরে কেঁদে উঠলো সে।
পুরো হাজী বাড়িজুড়ে নেমে এসেছে শোকের ছায়া। বাড়ির ছোট মেয়ে অনা খুন হয়েছে। একদল মানুষ তাকে ধর্ষণ করে গলা কেটে ফেলে রেখে গিয়েছিল ঘন জংগলের মাঝে। যা সকালে এক গ্রামবাসীর চোখে পড়ায় তা পুলিশের নির্দিশে মর্গে রাখার পর মেসবাহ এবং মুবিন মিলে নিয়ে এসেছে বাড়িতে। মৃতদেহটি এনে রাখা হয়েছে উঠোনের মাঝবরাবর। অল্প সময় হলো লাশ আনায় লোকজনের উপস্থিতিও খুব কম। লাশের পাশেই একদল মাদ্রাসার ছাত্ররা জড়ো হয়েছে দোয়াদরুদ পড়ার কাজে। সেখানে বসেই তারা জোর গলায় কোরআন পাঠ করে যাচ্ছে। তারই বিপরীত পাশে বসে চিৎকার করে একনাগাড়ে কেঁদে যাচ্ছেন মোরশেদা বেগম। তার করুণ আর্তনাদ দেখে আশেপাশের মানুষের হৃদয়ও কেঁদে উঠছে। চোখের কোণা বেয়ে গড়িয়ে পড়ছে পানির স্রোত।
-“কাল রাতেই খাইতে বসে মেয়ে আমায় কয় আম্মা আমারে একটু খাওয়াইয়া দাও রে। আমি কই ঢেঙ্গী মেয়ে কী কয় রে! আমি আমার মেয়েরে শেষ খাওয়া খাওয়াইয়া দিলাম নারে।”
মোরশেদা বেগমের আহাজারি শুনে পাশ থেকে বয়স্কমতো এক মহিলা শান্তনা দিতেই আরও ব্যাকুল স্বরে কেঁদে উঠলেন তিনি। হাতপা মেলে মাটি থাপড়িয়ে থাপড়িয়ে বলতে লাগলো,
-“খাইতে বসে মৌমিরে কোলে নিয়ে কয় ফুপু তুই আমাকে ভালোবাসিস? মৌমি ওর গালে চুমা দিয়ে কয় আম্মুর থেকেও অনেক ভালোবাসি তোমায় ফুপুরে। ওর বাপের কাছে কয় আব্বা তুমি আমার আর মৌমির মধ্যে কারে বেশি ভালোবাসো? ওর বাপ হাইসা কয় মৌমিরে বেশি ভালোবাসিরে। মেয়ে আমার রাগ কইরা আমারে আইসা কয় আম্মা আব্বারে বলো অনাও তার আব্বার থেকে আম্মারে বেশি ভালোবাসেরে। আমার পরির মতো মেয়ে আর কখনোই ওর বাপের সাথে রাগ করবো নারে। কোন কুত্তার দলেরা আমার মেয়েরে খাঁমচে ছিঁড়ে খাইছেরে। আমার মেয়ে কতই মনে হয় চিৎকার করছেরে। কতই মনে হয় কষ্ট পাইছেরে।”
-“শান্ত হ বোন। শান্ত হ।”
-“কেমনে শান্ত হমুরে? আমার তাজা ধরফরা এক মাইয়ারে কেমনেই মনে হয় ওরা মারছে রে! গলা কাটার পর আমার মেয়ে মনে হয় কেমন ছটফট করছেরে! এত কষ্ট আমার মেয়ের কপালেই কেন লিখা রাখছিল আল্লাহ মালিকরে?”
-“আল্লাহ যা করে ভালোর জন্যই করে। একটু ধৈর্য ধর বোন।”
-“আমি কেমনে ধৈর্য ধরমু? আমারে কী আল্লাহ চোখে দেখছিলো না? আমারে রাইখা আমার মেয়েরে কেন নিলরে? আমার মেয়ে মনে হয় কেমনে ছটফটাইছে রে! ওই কুত্তা গুলা কতই কষ্ট দিছে আমার মেয়েরে রে। মেয়ে আমার আর কখনোই আমার বুকে আসবেনারে। সাজার জিনিস কিনবার জন্য আমার কাছে টাকা চাইবেনারে। আমার গালে চুমা দিয়ে কইবো না আম্মা ভাইয়েরা আসলে এবার বেশি করে টাকা আমার জন্য চাইবারে। আমি কেমনে বাচমুরে? বুড়া বয়সের কত সাধনার পর এই মেয়েটারে পাইছিলামরে। কিন্তু আল্লাহ তারেই আমার কোল থেকে আগে কাইরা নিলরে! আমার বুক খালি কইরা তারে নিয়া গেলরে। ওই হারামিরা আমার মেয়েরে কত্ত কষ্ট দিয়ে মারছে রে..”
খবর পাওয়ামাত্র বাড়ি থেকে ছুটে এসে মোরশেদা বেগমের করুণ আর্তনাদ ধ্বনি শুনে তার দিকে পা বাড়ালো চৈতালি। তবে কয়েক কদম এগুতেই পাশ থেকে বাঁধা অনুভব করলো সে।
-“এদিকে এসো..”
আচমকা মুবিনের টানে হকচকিয়ে গেল চৈতালি। ব্যথাতুর মুখে সে মোরশেদা বেগমের দিকে চেয়ে বললো,
-“আগে চাচির কাছে যাই।”
-“না, তুমি ওদিকে যাবে না।”
-“কেনো?”
চৈতালির প্রশ্ন উপেক্ষা করে তাকে এক টানে বাড়ির এক কোণায় এনে দাঁড় করালো মুবিন। চোখেমুখে স্পষ্ট ক্রোধ ফুটিয়ে বললো,
-“তুমি এত হিংসে করতে অনাকে? এত? ছিঃ! চৈতালি। আমি বিশ্বাস করতে পারছি না। কী করে পারলে তুমি এগুলো করতে?”
চোখজোড়া প্রসস্থ হয়ে এল চৈতালির। বিস্মিত গলায় সে বললো,
-“কী যাতা বলছো এসব!”
-“যাতা বলছি? যাতা? তুমি পরশু রাতে অনার সাথে ছিলে না? এমনকি কাল রাতেও তোমার ওর সাথে টেলিফোনে কথা হয়েছে। হালিমা চাচি নিজে শুনেছেন অনাকে তোমার সাথে কথা বলতে।”
-“হ্যাঁ, অনা আমায় কল করেছিল। কিন্তু ও তো আমায় এসব কথা বলেনি। বিশ্বাস করো মুবিন।”
-“তাহলে কেনো কল করেছিল?”
-“তুমি আজ আসবে সেকথা জানতে।”
-“হাসালে! বোকা পেয়েছো আমায়? আমি আজ আসবো তা কাল কী করে জানবে অনা?”
-“আমি জানি না। সত্যিই আমি জানি না।”
-“তুমি জানো চৈতালি। আর তুমি ইচ্ছে করেই ওকে এমন একটি কাজ করাতে বাধ্য করিয়েছো!”
-“পাগল হয়েছো তুমি? আমি কেনো এসব করবো?”
-“কারণ তুমি অনার অবস্থানকে হিংসে করতে। পরিবারের ভালোবাসা, ভাইদের আদর সবকিছুকে তুমি হিংসে করতে। আমি অনাকে না তোমাকে কাকে বেশি ভালোবাসি তাও কিন্তু তুমি একদিন প্রশ্নও করেছিলে।”
-“প্রশ্ন আমি মজার ছলে করেছিলাম। তুমি বিশ্বাস করো আমি কিছু জানি না। ও আমায় কিছু জানালে কখনোই আমি ওকে পালানোর মতো জঘন্য একটি কাজ করতে দিতাম না।”
লম্বা একটি দম ছাড়লো মুবিন। ঠোঁটজোড়া চেপে কান্না থামানোর চেষ্টায় ব্যর্থ হয়ে বললো,
-“তুমি দায়ী চৈতালি।”
কেঁদে উঠলো চৈতালিও। ক্রন্দনরত গলায় বললো,
-“আমি দায়ী নই। তুমি কেনো এমনটা বলছো? অনা আমার ছোটবেলার বান্ধবী। তোমার চেয়ে বেশিরভাগ সময় ও আমার সাথে কাটিয়েছে। ও আমার সবচেয়ে কাছের একজন মানুষ। ওর ক্ষতি আমি কখনোই চাইতে পারি না।”
-“কাছের মানুষ, বান্ধবী.. অথচ অনা তোমায় কিচ্ছুটি জানায়নি? এসব গাঁজাখুড়ি কথা বিশ্বাস করতে বলো আমায়?”
-“হ্যাঁ বলি। আমার আর তোমার মাঝের সম্পর্কের ব্যপারেও কিন্তু আমি অনাকে কিছুই জানাইনি। তাহলে অনা না জানালে সেটা অস্বাভাবিক কেনো হবে?”
-“কারণ এটা ওটা ভিন্ন ব্যাপার। না তোমার ভাই আছে আর না অনা তার সাথে প্রেম করেছে!”
হাটুজোড়া ভাজ করে বসে পড়লো চৈতালি। মুবিনের দু’পা আঁকড়ে ধরে ফুঁপিয়ে উঠলো সে।
-“আল্লাহর কসম.. অনা আমায় জানায়নি। আমার যে কী পরিমাণ কষ্ট হচ্ছে তা আমি কাওকে বলে বোঝাতে পারবো না, মুবিন। প্লিজ সবার মতো তুমি অন্তত আমায় ভুল বুঝো না!”
-“তুমি এখান থেকে যাও। তোমার ছায়া আমার বোনের আশেপাশে থাকলেও ওর আত্মার কষ্ট হবে। তুমি যাও এখান থেকে…”
চৈতালির হাতের মাঝ থেকে পা ছাড়িয়ে উঠানের দিকে এগুলো মুবিন। কষ্টে তার বুকের ভেতরটা ছারখার হয়ে যাচ্ছে। কেনো করলো চৈতালি এমনটা? কেনো তার বোন তাকে ফেলে চলে গেল পরপারে? আর কখনোই বোনের দেখা পাবে না সে। আর কখনোই তাকে মাথা বানিয়ে দেবে না। কখনোই বলবে না বিনামূল্যে আমি কোনো কাজ করিনা ভাই!
(চলবে)