২য় প্রেম ( 2nd Love ) Part- 07
ইশান : কোথায়
মিহি: মাহিম এর সাথে দেখা করতে
ইশান : হুম চল
মিহি আর ইশান মাহিম এর রুম গেল
মাহিম মিহিকে দেখে অনেক খুশি
মিহি: কেমন আছেন
মাহিম: ভাল থাকতে দিয়েছেন কি
মিহি: কেন আমি আমার কি করলাম
মাহিম: আমার মন চুরি করছেন আমাকে পাগল বানাইছেন আর কাল কে তো প্রান নিয়ে নিচ্ছিলেন
মিহি: তাই নাকি
মাহিম: হুম প্রথম দেখেই ভালবেসে ফেলেছি
মিহি:……
মাহিম বসে মিহিকে প্রোপোজ করে
মাহিম:I love you mihi ..do you love me
মিহি: i do, …
I love you too mahim
মিহি খুব খুশি ২জন কথা বলছে আর মুচকি হাসছে
অন্য দিকে ইশান মিহির হাসি মাখা মুখ দেখছে আর মনে মনে বলছে সব সময় এমনি থেকো মিহি
ইশান হালকা কাশি দিয়ে বলল আমি কি কাবাব মে হাড্ডি হয়ে গেলাম
মিহি:আরে না
মাহিম: আপনি কে??
ইশান বলতে যাবে তখনি মিহি বলল
মিহি: ও ইশান ভাইয়া + আমার বেস্ট ফ্রেন্ড
ও সব সময় আমার সাথে থাকে সব কিছু তে সাপোট করে
মাহিম: ওহ নাইচ টু মিট ইউ ব্রো
আমি শাহেদ হোসেন মাহিম
ইশান : সেম টু ইউ ব্রো,
আমি ইশান, ঢাকা ভার্সিটি সেকেন্ড ইয়ারে আপনি
মাহিম: আমি মাস্টার্স এ এক্সাম দিয়েছি
ইশান : ভাল, একটা কথা
মাহিম: কি কথা
ইশান :খুব মুল্যবান মানুষ কে আপনার কাছে দিচ্ছি যত্নে রেখেন
বলেই বেরিয়ে গেল ইশান
ইশান বাইরে দারিয়ে ভাবছে সে ঠিক করল তো মাহিম মিহিকে সুখে রাখবে তো?? ওকে কোনো কষ্ট দিবেনা তো নাহ মিহিকে কষ্ট দিলে তাকে খুন করে ফেলব আমি ওকে কষ্ট দেয়ার অধিকার কারর না এসব ভাবছে আর চোখ দিয়ে পানি পরছে ইশানের আর কষ্ট পেতে দেবেনা মিহি কে
এদিক মিহি আর মাহিম কথা বলে বাইরের দিকে আসল
ইশান ফোনে বাসাই কথা বলছিল তখন মিহি ডাক দিল
ইশান ইশারাই বল আসছে
ইশান মিহি আর মাহিম দারিয়ে আসে
ইশান: মিহি সব গুসিয়ে নাও বাসায় যেতে হবে
মিহি: মানে কি এলাম এ তো ২দিন
ইশান : দাদির শরিল ভাল না আব্বু আজি যেতে বলছে
মিহি: নানুর কি হইছে
ইশান : …….
মিহি : বল নানুর কি হইছে
ইশান : দাদি ব্রেইন স্ট্রোক করছে হসপিটাল নিয়ে গেছে সবাই
মিহি: কি বলছ এসব,নানুর কিছু হবেনা আমি এখুনি যাব চল
মাহিম: আমি কি যেতে পারি তোমাদের সাথে??
ইশান : ভাইয়া এখন আপনাকে নিয়ে যাওয়া ঠিক হবেনা
মাহিম : ওকে
মিহি: আমি রেডি হয়ে আসছি
মিহি হোটেল এ গিয়ে আনিসাদের বলে তারাও গুছিয়ে নেই
বের হওয়ার সময়
মাহিম: আবার কবে দেখা
মিহি: জানিনা ভাল থেকেন
মিহি গাড়িতে গিয়ে বসে
ইশান : খুব শীঘ্রই আপনাদের দেখা হবে
মাহিম : হুম
ইশান : আপনার নাম্বার টা দিলে ভাল হত
মাহিম:01———
ইশান : ধন্যবাদ আজ আসি অন্যদিন দেখা হবে
মাহিম: সাবধানে যেয় আর গিয়ে কল দিও
মিহি মাথা নারিয়ে হ্যা বলে
ইশানের গাড়িতে মিহি আর ইশান
আর অন্য গাড়িতে মিহির ৩বান্ধবি আর ড্রাইভার
গাড়ি চলতে শুরু করেছে
মিহি চুপ চাপ বসে আসে ইশান বার বার মিহির দিকে দেখছে
কেও কোন কথা বলছে না ২জন এই চুপ
বিকালে ইশান আর মিহি হসপিটাল এ পৌছাল
মিহি গিয়ে বড় মামাকে জরিয়ে ধরে কান্না করতে লাগল
মামা নিজেও কেঁদে দিল মিহির নানা মারা যাওয়ার পর মিহির নানি একা সব কিছু সামালিয়েছে পরিবার টাকে এক করে রেখেছে সবাইকে ভালবেসে কাছে টেনে নিয়েছি
সবাই কান্না করছে আমান আর ইশান সবাইকে সামালাতে পারছেনা
কিছুক্ষন পর ডক্টর এলে আমান বলল কি অবস্থা
ডক্টর : পেশেন্ট এর অবস্থা ভাল না
আমান: কি বলছেন আপনি
ডক্টর : আমান নিজেকে শক্ত কর তুমি ভেঙে পরলে তোমার ফ্যামিলিকে সামলাবে কি করে মানুশ এর আজ হলেও মরতে হবে কাল হলেও মরতে হবে আমান নিজেকে সামলাউ তুমি নিজেও একজন ডক্টর তোমাকে শক্ত হতে হবে মাই বয়
আমান: স্যার কোন মেডিসিন কি নেই??
ডক্টর : আমান নিজেকে শক্ত কর আর আল্লাহকে ডাক
আমান :….
ডক্টর চলে
সবাই কান্নাকাটি করছে
এর মধ্যে সিস্টার এসে বল পেশেন্ট এর জ্ঞান ফিরেছে ইশান নামে কাউকে ডাকছে ইশান কে
ইশান : আমি ইশান
সিস্টার : আমার সাথে চলুন
কেবিনে ইশান কে দেখে দাদি অক্সিজেন খুলে ইশানের হাত ধরে বলল আমি জানি ইশান তুই মিহিকে ভালবাসিস একমাত্র তুই পারবি মিহিকে ভাল রাখতে সুখি রাখতে আমাকে কথা দে তুই কখন মিহিকে কষ্ট দিবিনা মেয়েটা খুব দুখি ওকে দেখে রাখিস তুই
ইশান : তোমাকে কথা দিচ্ছি মিহিকে কখন কষ্ট পেতে দেবনা দাদি ওর চোখে পানি আসতে দিবনা আমি ওর ভালর জন্য যা করতে হয় করব
দাদি: সবাইকে এক্টু ডাক দে আমার সময় খুব শেষ
ইশান : এখুনি ডাক দিচ্ছি তোমার কিছু হবেনা
ইশান সবাইকে ডাকতে যাই
সবাই আসলে বড় মামাকে নানু বলে মিহি কে তোদের কাছে রেখে গেলাম ওর খেয়াল রাখিস ওরে কখন কষ্ট দিসনা পারলে সারাজিবন আমার বাড়িতে রেখে দিস মিহি কে কাছে ডেকে নেই নানু মিহির হাত ইশান এর হাতে দিয়ে বলে তোরা কখন আলাদা হবিনা এই বলেই
হাত ছেরে দেই
সবাইকে ছেরে না ফেরার দেশে চলে যাই নানু মিহি জ্ঞান হারিয়ে ফেলে সবাই কান্নাকাটি করতে থাকে নানুর লাশ বাসাই আনা হই
মিহি এক্টু পর পর নানু বলে চিতকার দিচ্ছে আবার জ্ঞান হারাচ্ছে
নানুর গোসল শেষ এ সবাইকে ডাকা হই শেষ বার দেখার জন্য
মিহির জ্ঞান ফেরার অপেক্ষাঈ ছিল সবাই মিহির জ্ঞান ফিরলে তাকে নিয়ে নানুর লাশের কাছে নিয়ে যাওয়া হই মিহি নানুর লাশ দেখে চিতকার করে কান্না করে দিয়ে বলে ও নানু নানু গো তুমিও চলে গেল আমাকে ছেড়ে আমি যে আর একা হয়ে গেলাম তুমি ফিরে আসো নানু আমি আর তোমার সাথে ঝগড়া করব আর তোমাকে ক্ষেপাবনা তোমার সব কথা শুনব তুমি ফিরে আসো নানু
মেজো মা: মারে যে যাই সে আর ফিরে আসেনা তুই শান’ত হো
মিহি: ও মেজো মা তোমার কথা তো নানু শোনে তুমি বলনা ফিরে আসতে দেখ আমার উপর অভিমান করে চলে যাচ্ছে তুমি বারন কর না মা
মেজো মা: মারে শান’ত হো তোর নানু আর ফিরবে না মা শান’ত হো
মিহি আবার জ্ঞান হারাই
নানুর জানাযা দাফন শেষ করে সবাই বাসাই ফিরে আসে
বড় মামাকে দেখে মিহি চিতকার দিয়ে বলে
মামা আমার নানুকে কেন নিয়ে গেলে আমার নানু যে একা থাকতে চাইনা একা একা কি করে থাকবে কবরে ও মামা আমাকে নিয়ে চল না নানুর কাছে আমি নানুর কাছে থাকব
মিহির কান্না দেখে সবাই চুপ হয়ে যাই
ওকে বুজাই সবাই তার হায়াত শেষ তাই সে চলে গেছে সবাইকে একদিন জেতে হবে
একে একে যে যার বাসাই চলে যাচ্ছে দুরের আত্নীয় আছে সবাই বাড়িরর মানুশ গুলোকে শান্তনা দিচ্ছে
ইশান উপরে গিয়ে একা একা কান্না করছে
ছেলেরা যে সবার সামনে কান্না করতে পারেনা
চিতকার করে কান্না করে কষ্ট কমাতে পারেনা তারা সবার আড়ালে কান্না করে তারা সবার সামনে শক্ত পাথর কিন্তু পিছনে যে তাদের মনে কস্টের সাগর
রাতে কেউ খাইনি সবাই লিভিং রুমে ঘুমিয়েছে
সকালে মিহিকে পাওয়া যাচ্ছে না সবাই মিহিকে পুরো বাড়ি তে খুজল পেল না
ইশান বাড়ির বাইরের দরজা দিকে তাকিয়ে দেখে দরজা খোলা ইশান কিছু না ভেবেই বাইরে চলে যাই বাইরে খুজতে খুজতে মিহিকে কবরস্থান এর সামনে পাই মিহি দাড়িয়ে দারিয়ে কান্না করেছে আর বলছে সবাই আমাকে ছেড়ে কেন চলে যাও আমি কি খুব খারাপ কেন একা করে দেও বার বার আমাকে
কেন বল
ইশান গিয়ে মিহির কাধে হাত রাখল মিহি পিছনে ফিরে তাকিয়ে দেখে ইশান
ইশান কে জড়িয়ে ধরে আর কান্না করে মিহি ইশান ওকে বুজাই কিন্তু মিহি বুজতে চাইনা
ইশান অনেক বুজিয়ে মিহিকে বাসাই আনে
মিহিকে দেখে সবাই যেন প্রান ফিরে পাই
সবাই মিহিকে বোঝাই কিন্ত মিহি এখন মেনে নিতে পারেনি মিহি কাছের মানুষ হারানোর যন্ত্রনা অনেক যা কখন বোঝানো যাইনা।
মিহি সবার অবস্থা দেখে নিজেকে সামালে নিয়েছে
ইশান সব সময় মিহির সাথে থাকে খেয়াল রাখে
মাঝে মাঝে মাহিম এর সাথে কথা বলাই দেয় ইশান । ইশানের কষ্ট হয় তবুও যে তার দাদিকে বলছে মিহিকে খুশি রাখবে ওর খুশির জন্য সব করবে আর মিহির খুশিকেই ইশানের সুখ মনে করে ইশান
আস্তে আস্তে আগের মত হচ্ছে যে যার কাজে ব্যস্ত হয়ে পরেছে
কেটে গেল ২টা মাস আজ মিহির রেজাল্ট দেবে সকাল থেকে মিহি চিন্তায় আছে কিন্তু বাসার কেউ তাকে নিয়ে চিন্তিত না সবাই যানে মিহির ভাল রেজাল্ট হবে
১২টাই রেজাল্ট আউট হয়
মিহি রেজাল্ট দেখে কেঁদে দেই নিচে গিয়ে দেখে সবাই নিচে মন খারাপ করে বসে আছে
মিহি বড় মামাকে জরিয়ে ধরে বলে মামি আমি গোল্ডেন Aপ্লাস পেয়েছি
মামা মিহিকে আলতো করে ঘুরিয়ে বলে
মামা : আমি জানি আমার মেয়েটা গোল্ডেন পাবে
মিহি: মিহি আবার কান্না করে বলে আজ নানু থাকলে খুব খুশি হত মামা
বড় মা: মামনি তোর নানু সব দেখে সে অনেক খুশি হইয়েছে তুই মন খারাপ করিস না মা
মেজো মা: মিহি আজ তোর পচ্ছন্দের সব রান্না হয়েছে আমি তোকে নিজে হাতে খাইয়ে দিব
মামা; মা তোমার কি গিফট চাই
মিহি : আমার অন্য কিছু লাগবে না মামা তোমাদের ভালবাসা আমার জিবনের সেরা গিফট
ইশান : হুম বড় হয়ে গেছো তোমার জন্য এই ছোট উপহার
ইশান একটা বক্স দিল মিহি কে
মিহি নিয়ে র্যাপিং পেপার খুলে দেখে নতুন ফোন মিহি খুশি হয়ে ইশান কে ধন্যবাদ বলে
ইশান মনে মনে বলে সারাজিবন এই ভাবে খুশি থেকো মিহি তোমার চোখে কান্না মানাই না কিন্তু আল্লাহ তোমাকে কেন এত কষ্ট দেই তোমার সব কষ্ট আমাকে দিয়ে দিক আমি সহ্য করে নিব কিন্তু তোমার কষ্ট যে সহ্য করতে পারিনা
দুপুরবেলা খেয়ে মিহি উপরে গিয়ে ফোন অন করে দেখে ফোন ওয়ালপেপার এ মিহির খুব সুন্দর একটা ছবি আর মাহিম এর নাম্বার সেভ করা মিহি অনেক খুশি হয় আর ইশান লুকিয়ে লুকিয়ে মিহির হাসি মাখা মুখ দেখছি
মিহি মাহিম কে কল দেই
মিহি: আসসালামলাইকুম
মাহিম:অলায়কুম আসসালাম,কে
মিহি: চিন্তে পারেন নাই
মাহিম: হুম পেরেছি তো আমার পেত্মি টা
মিহি: কিহহ আমি পেত্মি
মাহিম : হুম আমার পেত্মি,কেমন আছো
মিহি: আল্লহামদুলিল্লাহ আপনি
মাহিম: ভাল কি কর
মিহি: আপনার সাথে কথা বলছি
মাহিম :আর
মিহি : বারান্দাই দারিয়ে আছি
মাহিম: আজ তো রেজাল্ট দেছে
মিহি: হুম
মাহিম: কাল এক্টু দেখা করবা
মিহি : কেন
মাহিম: আমার পেত্নী টা এত ভাল রেজাল্ট করল তাকে কিছু দিবনা
মিহি: আপনি জানেন আমার রেজাল্ট? ?
মাহিম: হুম জানি
মিহি : কি করে?
মাহিম : ইশান ফোন দিয়ে বলছে
মিহি: ওওওও
মাহিম: হুম কাল তাহলে দেখা হচ্ছে
মিহি: সিউর না
মাহিম: কেন
মিহি : ইশান ভাইয়া কে বলি তারপর সিউর বলব
মাহিম: সব কিছু ইশান এর কথা শুনে করতে হবে না
মিহি: ইশান ভাইয়া আমার বেস্ট ফ্রেন্ড ওকে না বলে আমি কিছু করি না
মাহিম: ওকে দেখ কি করবা
মিহি : হু
রাখি
বলে কল কেটে দেই
রাতে খাওয়ার সময় অয়ন ভাইয়া বলে মিহি তোর কি চাই
মিহি: কিছু না ভাইয়া
অয়ন : তা বললে তো হবেনা
মিহি: আমার তোমরা আছো এই অনেক আর কিছু চাইনা
অয়ন: নাহ আমরা আসি থাকব তুই যা চাবি তাই হবে
আমান: হুম ভাইয়া। মিহি বল তোর কি চাই
মিহি: ঠিক আছে, তোমরা কিছু এতিম বাচ্চা দের কিছু জামা কাপড় আর খাওয়ার ব্যবস্থা কর
অয়ন: আমার বোন টার যা বলবে তাই হবে
সবাই খাওয়া শেষ করে রুম এ গেল
মিহি নিজের রুমে এ না গিয়ে ইশান এর রুম এ গেল
মিহি : আসব???
ইশান : আরে তুমি আমার রুম এ আসতে পারমিশন লাগেনাকি
মিহি: হুহ এখন লাগেনা তোমার বউ আসলে লাগবে
ইশান : হুম
মনে মনে এই ঘরে কোন বউ আসবেনা আর তোমার কখন ও পারমিশন লাগবেনা
মিহি: একটা কথা বলব
ইশান : হুম একটা কেন ১০০ টা বল
মিহি: কালকে তোমার সময় হবে
ইশান: হুম কেন
মিহি,: কালকে মাহিম এর সাথে দেখা করব
ইশান : ওহ ঠিক আছে
মিহি চলে আসে
রুম এসে মাহিমকে কল দিয়ে বলে কাল কে দেখা করব
সকালে
মিহি আর ইশান বেরিয়ে যাই ইশান সাথে থাকায় বাসার কেউ কিছু জিজ্ঞাসা করে না
মিহি আর ইশান একটা রেষ্টুরেন্ট এ অপেক্ষা করছে মাহিম এর জন্য
চলবে? ???
সবাই বাসাই থাকুন সুস্থ থাকুন