না বললেও ভালোকিন্তুবাসি

না বললেও ভালোকিন্তুবাসি !! Part- 16

মোহনা হা করে সাগরের দিকে তাকিয়ে আছে।
সাগর : কি হলো?
মোহনা : আপনি কি ঠিক করে নিয়েছেন যে আপনার আর আমার বিয়ে হবে?
সাগর : হামম।
মোহনা : আপনার না কতোগুলো প্রেমিকা আছে।
সাগর : so what?
মোহনা : তো আপনি আমাকে বিয়ে করবেন কেন ?
সাগর: কারন আমার ইচ্ছা। বাদ দিন… তো মিস নাগিন কি খাবেন?
মোহনা : আপনার মাথা আর আমার মুন্ডু…
সাগর : good…
মোহনা : ১টা কথা বলুনতো সোজা রাস্তা ছেরে আপনি এই বাকা রাস্তা ধরলেন কেন? পান্হপথের জ্যাম জানেন না?
সাগর : ওই রোডে accident হয়েছে। আর তাছারাও এখান দিয়ে তো বসুন্ধারা পরবে। আপনি যে landing এ ১টা জুতোর অর্ডার দিয়েছিলেন সেটা কালেক্ট করতে হবেনা?
মোহনা : হামম হামম।
.
পরদিন…
রাত ৮টা…
সাগর মোহনাকে পড়াতে এলো । ওর শরীরে জ্বর তবুও এলো। মোহনার রুমে ঢুকে দেখে মোহনা গাল ফুলিয়ে মন খারাপ করে বসে আছে।
সাগরের শরীরে জ্বর তাই মোহনার মাথায় হাত দিলোনা।
সাগর : মোহোপাখি… মন খারাপ কেন? কি হয়েছে?
মোহনা : কিছুনা।
সাগর : বললেই হলো? বলো তো কি হয়েছে?
মোহনা : আমি আজকে পরীক্ষায় ২৯পেয়েছি।
সাগর : good marks… fantastic starting …
মোহনা: খোচা মারছেন? কম পেয়েছি বলে?
সাগর : মোটেও না। আমি প্রথম পরীক্ষায় কতো পেয়েছিলাম জানো? ৮। মাইনাস মার্কিং হয়েছিলো অনেক।
মোহনা : আমি মনে করেছিলাম ok হবে। কিন্তু অনেক tuff…
সাগর : মোটেও না। keep it simple … আর শুরুতেই হার মেনে যাবে? তুমি না মোহনা।
মোহনা : যদি allow না হই?
সাগর : মোহনা নেগেটিভ কথা বলে? আমি জানি তুমি পারবে।
মোহনা : যদিই না পারি?
সাগর : ৪০তো ওঠাতে পারবে? এতোটুকু তো আমি গ্যারান্টি দিয়ে বলতে পারি।
মোহনা : ৪০ তো পাবে… 😒… ৪০দিয়ে তো আর সরকারিটায় হবেনা। আর আমি সরকারি মেডিকেলেই পড়তে চাই।
সাগল : মেডিকেল মেডিকেলই হয়। তুমি সাদা এ্যাপ্রোন পরবে তো পরবে।
মোহনা : পরবে তো পরবে… ২০লক্ষ টাকা দিয়ে আমি পড়তে যাই আর ওই ঢাকাইয়া বুড়ি এসে আবার ভাঙা রেকর্ড চালাক। যে আমার ছেলের আমার নাতির টাকা শেষ করছে …
blah blah…
সাগর : ১মিনিট ১ মিনিট… ঢাকাইয়া বুড়ি কথা মোহনাকে কবে থেকে effect করে?
মোহনা : …
সাগর : আর তার থেকেও বড় কথা ভাইয়া বা বড়আব্বুর টাকা লাগবে কেন?
মোহনা : তা নয়তো কি আপনাদের টাকা নিবো? কি মনে করেন আপনি নিজেদের? হ্যা?
সাগর বুঝতে পারলো মোহনা ক্ষেপে গেছে। আর এখন কিছু বলা মানে ওকে আরো গরম করা। তাই এই টপিক বাদ দিয়ে কথার জালে ফেলে মোহনাকে ঠান্ডা করলো।
.
একটুপর….
মোহনা খেয়াল করলো যে সাগরের চোখ মুখ কেমন লাল হয়ে আছে। ফুলে আছে।
মোহনা : একি আপনার চোখ মুখ এমন লাগছে কেন?
সাগর : ওই এমনি…
মোহনা : ওই এমনি মানে? দেখি দেখি…
মোহনা সাগরের কপালে হাত দিলো।
মোহনা : আল্লাহ আপনার দেখি ধুম জ্বর। আসুন আসুন এখানে বসুন। আমি ac কমিয়ে দিচ্ছি। বন্ধই করে দিচ্ছি।।
সাগর : আরে তোমার গরম লাগবে যে।
মোহনা : ওই চুপ থাকুন তো। একদম চুল টেনে ছিরে ফেলবো ।
মোহনা ac বন্ধ করে দিলো। আপনি বসুন। মোহনা হালকা পাতলা
কিছু খাবার নিয়ে এলো। দিপ্তীও এলো সাথে।
মোহনা : দেখি দেখি উঠুন উঠুন… খেয়ে নিন…
দিপ্তী : হ্যা সাগর ওঠো…
সাগর : খাবার কেন?
মোহনা : মাথায় দেয়ার জন্য।
সাগর : আরে ইফতার করেই তো এলাম।
মোহনা : আমি জানি আপনি কিছুই খাননি। কারন জ্বর এলে আপনি কিছু খান না। এখন চুপ চাপ খেয়ে নিন।
সাগর : বলে কি? ও ভাবি…
দিপ্তী : কোনো কথানা। খেয়ে মেডিসিন নিয়ে শুয়ে পরো।
সাগর : আরে ভা….
দিপ্তী সাগরের মুখে খাবার ঢুকিয়ে দিলো। মোহনা আর দিপ্তী হাহা করে হাসতে লাগলো।
সাগর : not done guys…
তখন কুকারের সিটি বাজলো আর দিপ্তী দৌড় মারলো।
সাগর: এই দেখো ভাবি চলে গেছে। আর খাবোনা ।
মোহনা : খেয়ে চুপচাপ ঔষধ নিয়ে rest করুন।
সাগর : আমি rest করলে আপনাকে পড়াবে কে মিস নাগিন….
মোহনা : এই আমি আমি করে আপনি tired হননা?
সাগর : উহু।
.
৩দিনপর….
রিতু: আমার প্রানু….
মোহনা : আমার জানু…. কি রে কি খবর?
রিতু : ঘাটিয়া…
মোহনা : কেন কেন?
রিতু : missing u অনেক গুলা।
মোহনা : awwe…. আমিও।
রিতু : কি ভাব একেক জনের… ভিকারুন্নিসা , আইডিয়ালের student বলে কথা।
মোহনা : তো আমার রিতু পালোয়ান কিছু করেনা বুঝি?
রিতু : আবার জিগায়…. এখন বল তোর কি খবর?
মোহনা : আর খবর….
রিতু : মানে?
মোহনা : মানে হলো এই গরু গরু ভাইয়ারা আমাকে ভাবি বলে ডাকে….
রিতু : what ?
মোহনা রিতুকে সবটা বলল। আর সব শুনে রিতু গলা ফাটিয়ে হাসতে লাগলো।
মোহনা : তুই কি আমাকে বলবি যে আমি তোকে কোন খুশির খবর দিলাম ?
রিতু : তুই বুঝবি না। তুই ফিডার খা। ভাইয়া তোকে সত্যি অনননননেক ভালোবাসে।
মোহনা : তুই কি পুরোপুরি পাগল হয়ে গেছিস?
রিতু : huh… তুই ভাইয়ার ভালোবাসা বুঝবিনা?
মোহনা : না। কারন উনি আমাকে ভালোবাসেন না…উন…
রিতু : তুই এটা বলতে পারলি? এটা কেমন অকৃতজ্ঞের মতো কথা বললিনা…
মোহনা : তুই আমার কথাটা শেষ তো করতে দে।
রিতু : বল।
মোহনা : দেখ আমি আর জল্লাদ ছোটবেলা থেকে একসাথে আছি। আর ক্লাল 9 পর্যন্ত we were very friend… তাই emotional attachment আছে। মনে হয়না এটা ভালোবাসা… মানে ভালোবাসা but not like lovers…
রিতু : what? এটা ভাবার মানে কি?
মোহনা : অনেক কিছু।practically ভাবনা। দেখ he is perfect … i am not… উনি জিরাফ আমি মানুষ , উনি সুস্থ আমি পাগল। abnormal… মাঝে মধ্যে মনে হয় উনি সাইকো। যাই হোক কেউ কোন পাগল ছাগলকে কেন ভালোবাসবে? ভাব…
রিতু : দেখ এমন কিছুনা…. ভাইয়া actually তোকে ভালোবাসে।
মোহনা : ঢেড়স। উনি আমাকে ভালোবাসতেই পারেনা। কারন তার girlfriends আছে।
রিতু : shut up…
মোহনা : আরে উনি নিজেই বলেছে।
রিতু : মজা করেছে।
মোহনা : উনি সত্যিই বলেছে।
রিতু: ok fine… মানলাম আছে। আমাকে দেখ। আমার ৩-৪টা bf আছে… but আমি রাজকে ভালোবাসি।
মোহনা : আরে তুইতো…
রিতু : আমারটা ok হলে ভাইয়ারটা হবেনা কেন?
মোহনা : কারন উনি আমাকে ভালোবাসেনা।
রিতু : not again…
মোহনা : হ্যা… ভালোবাসলে i love u তো বলতো… propose তো করতো । যেমন রাজ তোকে করেছে। সবাই করে।
রিতু : love u বলাটা কি জরুরী?
মোহনা : আবার জিগায়?
রিতু : ধর তোকে ভাই propose করলো, love you বলল । তুই জবাবে কি বলবি?
মোহনা : i hate you… 😎😎..
রিতু : exactly … তাই বলা বেকার।
মোহনা : আরে বেকার কেন? বলতে তো পারবো যে কেউ জীবনে i love u বলেছে, propose করেছে । না হলে জল্লাদের জন্য তো আমার কোন প্রেম করার ইচ্ছাই পূরন হলোনা।
রিতু : তো ভাইয়ার সাথেই প্রেম করনা…
মোহনা : stupid … তুই কি শুনিস নি আমি কি বলেছি?
রিতু : হাহাহাহা। বললেই কেবল ভালোবাসা হয়না।
আড্ডা মেরে ২জন বাসায় গেলো। সেদিন আর সাগর পড়াতে আসেনি। সেদিন ২-৮ call time ছিলো।
.
পরদিন …
সন্ধ্যায়…
সাগর : whats up মিস নাগিন ?
মোহনা : 😒।
সাগর : আজকে কি হয়েছে?
মোহনা : 😒।
সাগর : ১গ্লাস পানি দিবা?
মোহনা দিলো। সাগর পানি খেতে লাগলো।
মোহনা : আপনি কি আমাকে ভালোবাসেন?
মোহনার কথাটা শুনে সাগর ভীষম খেলো। পানি নাকে-মুখে ঠেকলো। কাশি দিতে লাগলো। মোহনা সাগরের ঘাড়ে হাত বুলাতে লাগলো।
মোহনা : ok?
সাগর : বই বের করো।
মোহনা : সেটাতো করবোই । আগে আমার জবাব তো দিন।
সাগর :কি জবাব দিবো?
মোহনা : এই যে আপনি আমাকে ভালোবাসেন কি না?
সাগর মুচকি হাসি দিলো।
সাগর: এই প্রশ্নের কারন?
মোহনা রিতুর সাথে বলা সব কথা বলল।
সাগর : মোহো nobody is perfect … not even me… বুঝিয়াছো?
মোহনা : এখন আমার উত্তর দিন।
সাগর : দিবো। এখন না যাওয়ার সময়।
মোহনা : okkk..
.
পড়ার পর…
সাগর : good… impressive যে তুমি study করছো।
মোহনা : 😎।
সাগর : কিন্তু তুমি কি জানো তুমি এমন study করলে ssc & hsc… hsc result তো দেয়নি এখনো। যাই হোক যদি এভাবে study করতে তবে বোর্ড টপার হতে।
মোহনা : 😒।
সাগর : পাগলি।
মোহনা : এখন বলুন।
সাগর : কিছু ভুলো না তুমি।
মোহনা : জানি।
সাগর : এখন তোমাকে বলা বেকার। শুধু এটা জেনে রাখো যে বউ তুমি আমারই হবা। আর হ্যা আমি তোমাকে
#না_বললেও_ভালোকিন্তুবাসি ।
বলেই সাগর চলে গেলো।
মোহনা : এ্যা …. এই লোকটা কি কখনো normal কথা বলতে পারেনা? আগের জন্মে নির্ঘাত জিলাপি ছিলো।
.
৩দিনপর ….
মোহনা ক্লাস করে বের হলো। দেখে সাগর দারিয়ে আছে।
মোহনা : আপনি?
সাগর : ১৪ রোজা চলছে । শপিং করতে হবে না?
মোহনা : হামম।
সাগর : চলো।
গাড়িতে …
সাগর : জানো আমাদের লন্ডন থেকে ২টা higer degree এর offer এসেছে। আসলে ট্যান্টম সিটিতে। scholarship ও বলতে পারো। ১টার session শুরু হবে october থেকে আর অন্যটার november থেকে। great opportunity ….
মোহনা : oh great …. কোনটা নিবেন ? মানে apply করবেন?
সাগর : নভেম্বরের টা। অক্টোবরে তোমার পরীক্ষানা।
মোহনা : আরে নভেম্বরের টা পেলেও তো আপনার আগেই যেতে হবে। তাইনা?
সাগর : না। timely যাওয়াটাই fact….
মোহনা : কথায় হারানো যাবেনা।
.
শবে ক্বদরের আগের দিন…
সাগরদের বাসায় ওর দাদুভাই-দীদা এসেছে । দিন ধরে এসেছে।
দাদুভাই : এই ছোট খোকা…
রেদোয়ান : হ্যা বাবা।
দাদুভাই : আমি চাই কালকে সবাইকে নিয়ে ইফতার করতে। শ্রাবনীর শশুড়বাড়িতে ফোন করো । সাগরের হবু শশুড় বাড়ি ফোন করো।
রেদোয়ান : ok বাবা।
পরদিন সবাই মিলে একসাথে ইফতার করলো। দীদা মোহনা কে রেখে দিলো । বলল ২ দিন পর উনারাও চলে যাবে আর সাগর ওকেও বাসায় দিয়ে আসবে।
রাতে দীদা , শিখা , শ্রাবনী , মোহনা একসাথেই নামায পরে একসাথেই ঘুমালো। ছোট অর্থিও ওদের সাথে ঘুমালো। মোহনা তো দীদাকে আষ্ঠেপৃষ্ঠে জরিয়ে ঘুমালো। আর দীদাও মোহনার মাথায় হাত বুলাতে লাগলো। দীদা মোহনাকে অনেক আদর করে । দীদা সবাইকে গল্প শোনাতে লাগলো।
.
পরদিন…
খান বাড়িতে মমতা খান এসে হাজির হলো। কারন তার কিছুদিন ধরে বুকে ভীষন ব্যাথা। দম নিতে কষ্ট হয় । ডক্টর দেখানো হলো। ডক্টর বলল যে উনার condition ভালোনা। heart attack এর সম্ভাবনা আছে। উনাকে যেন কোনো ভাবেই উত্তেজিত না করা হয় । উনাকে relax mood এ রাখতে হবে।
.
ঈদের আগের দিন…
দুপুরবেলা…
সাগর মোহনা কে পৌছে দিতে এলো । সাগর গাড়ি সাইড করতে করতে মোহনা ওপরে চলে গেলো। সাইড করে নেমে আসার সময় রিংকুদের সাথে দেখা হয়ে গেলো। ওদের সাথে কথা বলতে লাগলো।
মোহনা তো ভেতরে গিয়ে অবাক হলো মমতাকে দেখে। শুভ্র মোহনাকে জানায়নি যে মমতা এসেছে। কারন যদি মোহনা জানতো যে মমতা এসেছে তাহলে মমতাকে জ্বালাতে মোহনা আগেই চলে আসতো।
মোহনা মনে মনে : এই ঢাকাইয়া বুড়ি কোথায় থেকে হাজির হলো? জাহান্নাম থেকে হোক আমার জামাইর কি? মোহনা just ignore her….
মোহনা মমতাকে ignore করে দিপ্তীকে হ্যালো ভাবি বলে রুমে যেতে লাগলো।
মমতা : তোর এ বাসায় আসার দরকার কিরে চরিত্রহীনা?
মোহনা ১৮০° angel এ পিছে ঘুরলো।
মোহনা : কি ? 😤
.
চলবে…