না বললেও ভালোকিন্তুবাসি

না বললেও ভালোকিন্তুবাসি !! Part- 02

নেমেই ২জন সামনে তাকিয়ে দেখে vice-principal repair করার কাজ কতোদূর এগিয়েছে তা দেখার জন্য। রিতু-মোহনা ২জন ২জনের মুখের দিকে তাকালো। লম্বা ১টা ঢোক গিলল।
রিতু: এখন?
মোহনা: এখন আর কি ? পালাবো। স্যার তো দূরে।
রিতু: আসতে কতোক্ষন?
মোহনা: আরে আসার wait করবো নাকি? পালা…
মোহনা রিতুর হাত টেনে দে দৌড়….
.
একটুপর…
রিতু হাপাচ্ছে…. আর মোহনা রাস্তায় থাকা বিড়ালের সাথে মেও মেও খেলছে। বিড়ালটা মোহনার সাথে মেও মেও যুদ্ধে হেরে গিয়ে দৌড় মারলো। তা দেখে মোহনা হাহা করে হাসতে লাগলো।
রিতু:😒
মোহনা : কিরে ট্যারা হয়ে গেলি নাকি?
রিতু: তুই কি এলিয়েন?
মোহনা: আবার জিগায়? চল এখন…
রিতু: কোথায়?
মোহনা : ক্যাপিটাল বা সিরাজে?
রিতু : এখন? shopping ?
মোহনা: হামম। দেখি galaxy আসছে কিনা? আর তাছারাও এই রোদে বাইরে ঘুরবে কে?
রিতু: কি বুদ্ধি? টাকা পাবো কোথায়?
মেরিন : আমার কাছে আছে?
রিতু: কতো?
মোহনা : গুনেছে কে?
রিতু : সবার ছোট হলে যা হয়… সবাই খালি দেয়। আর বড় হলে দিতে হয়। চল….
মোহনা : চল চল… নোয়াখাইল্যা…
রিতু : চল ঢাকাইয়া…
২বান্ধবি মনের সুখে shopping এ ঘুরতে লাগলো।
সিদ্ধেশ্বরীর পাশেই mall ২টা হওয়াতে সুবিধাই হয়েছে ওদের …..
.
স্কুল ছুটির একটু আগে…
মোহনা: ওই আমার ক্ষুধা লেগেছে। order করেছি ২যুগ হয়ে গেলো। খাবার দিচ্ছেনা কেন ? আমি মরে গেলে দিবে নাকি? আমার খাবার অন্য কাউকে? চোট্টাবাজগুলা….
রিতু: তুই কি আধা মিনিটও চুপ থাকতে পারিস না। ৫মিনিটও হয়নি order করেছি….
মোহনা: তুই ঘড়িই চিনিস না….
রিতু : তুই চিনিস তো।
মোহনা : হ্যা।
রিতু : তাহলেই হবে…. 😒..
.
ওদিকে….
সাগরের class শেষ হতেই ও মোহনার স্কুলে ছুটলো। ছুটির সময় হয়ে গেছে। কিছুক্ষনের মধ্যে ছুটি হয়েও গেলো। পুরা স্কুল বেরিয়ে গেলো। কিন্তু রিতু-মোহনা বের হলোনা। সাগর ওদের classmate রিনতিকে জিজ্ঞেস
করলো: আচ্ছা রিতু-মোহনা কোথায়?
রিনতি: ওরা তো আজকে আসেইনি ভাইয়া…..
বলেই চলে গেলো।
সাগর: আসেনি?how could it possible ? অভ্র ভাইয়া তো মোহোকে ড্রপ করে গেছে? আর মোহো এসেছে মানেই রিতু এসেছে…. তাহলে ?
সাগর গার্ডকে জিজ্ঞেস করলো ওদের কথা। কিন্তু গার্ড বলল ওদের ঢুকতে দেখেছে but বের হতে দেখেনি। যদি মোহনা একা থাকতো তাহলে ভয় থাকতো। কিন্তু সাথে রিতু আছে । তাই ভয় কম। কারন রিতুকে লেডি ডনও বলা চলে।
সাগর: ভেতরে গিয়ে দেখি।
সাগর ভেতরে ঢুরে সারা স্কুলের ১টা round মারলো। তখন ওর চোখে repairing এর কাজ চোখে পরলো । সাগরের বুঝতে আর দেরি হলো না যে ২বাদরই পালিয়েছে। পালিয়েছে অথচ বাসায় যায়নি। আর রোদ মোহনার সহ্য হয়না। সেই সাথে হাতে আছে টাকা সামনে আছে mall… আর কি লাগে জীবনে… এটা মোহনার ভাষা…. সাগর আর না ভেবে ছুটলো ।
.
রিতু-মোহনা পেটপূজা করে ক্যাপিটাল থেকে বের হতে নিলো। নিচে নামার সময় মোহনা সাগরকে দেখে নিলো। দেখলো সাগর ভেতরে ঢুকছে। মোহনা ১টানে রিতুকে নিয়ে সরে গেলো।
রিতু: মাগো…. টান মারলি কেন?
মোহনা: জল্লাদ। রিতু: ভাইয়া?
মোহনা: হামম।
রিতু: চল ….
মোহনা: ১টা উস্টা মেরে তোরে উগান্ডা পাঠিয়ে দিবো । ওই জল্লাদ আমাকে সামনে পেলে সত্যি গলা কাটবে….
রিতু: কি বলিস কি এগুলো?
মোহনা: তোর বাপের মাতা… চল লিফ্ট দিয়ে নামবো।
২জন লিফ্ট দিয়ে নিচে নামলো। দেখলো সাগর দারিয়ে আছে। যাকে দেখে মোহনার অজ্ঞান হওয়ার অবস্থা।
মোহনা: পপপানি খাবো….😨..
সাগর পানি ওর হাতে দিয়ে কোনো কথা না বলে চুপচাপ গিয়ে গাড়িতে বসলো। পিছে পিছে রিতু-মোহনাও গেলো। মোহনা সামনে আর রিতু পিছে বসলো।
.
১ঘন্টাপর….
মোহনা রুমে ঢুকবে কি ঢুকবেনা সেটা ভাবছে। যতোগুলো দোআ দরূদ আছে সব পড়ে বুকে ফু মেরে ভেতরে ঢুকলো। দেখে সাগর বাংলাদেশ ও বিশ্বপরিচয় , ইসলাম শিক্ষা , বাংলা নামের বড় বড় পারমানবিক বোম্ব নিয়ে বসে আছে।
মোহনা মনে মনে:পালা মোহো পালা…. এই missile গুলো তোর ওপর পরলে পরকাল নিশ্চিত… ready 1…2…
সাগর: যদি ১মিনিটের মধ্যে টেবিলে এসে না বসা হয় তবে থাপ্পরের সাথে করল্লার জুস, ফ্রুট সালাদ , vegetables আর strawberry milkshake খেতে হবে….
কথাটা শুনে ২ লাফে মোহনা এসে বসলো।
মোহনা: আপনি কিন্তু একটু ভুল করেছেন?
জল্লাদ মানে সাগর বই ঘাটছে আর কলম দিয়ে কি যেন করছে।
মোহনা: বলছিলাম কি জল্লাল, মানুষ কি টেবিলে বসে না চেয়ারে বসে?
এমন বেহুদা প্রশ্ন শুনে সাগর মোহনার দিকে তাকালো।
মোহনা: অমন করে তাকানোর কি আছে? চোখ তো আমারও আছে আমি কি ওভাবে তাকাই?
সাগর : এমন বেহুদা প্রশ্ন করলে কি করবো?
মোহনা : আমি বললেই দোষ। আপনি যে বললেন এসে টেবিলে বসতে।
সাগর : shut up… এই শিটটা দেখো । এটা বাংলা ১ম পত্রের। এখানে সকল কবিদের জন্ম-মৃত্যুর সাল এবং কিছু important point লেখা আছে। আর এটা ইসলাম শিক্ষার শিট। এটাতে কিছু আরবী ছোট ছোট শব্দের অর্থ আর সেই সাথে আছে last chapter এর ভূগোল বিদ, রসায়নবিদ etc সবার কিছু কিছু poin note করা। mcq te অনেক আসে। BGS টার শিট নেই। বই মার্ক করেছি ওই ২টা বইও মার্ক করেছি। বলো কোনটা পড়বে এখন? তবে তার আগে বলো homework করেছো? তোমার homework গুলো দেখতে দেখতে তুমি এর মধ্যে থেকে যেকোনো ১টা টপিক দেখে নিবে। আমি ধরবো।
মোহনা উত্তর কি দিবে? ও তো ট্রমাতে চলে গেছে।
সাগর : কি হলো?
মোহনা চমকে উঠলো।
সাগর: এমন react করার কারন কি? আমি কি তোমার কিডনি বা লিভার চেয়েছি?
মোহনা: ….
সাগর: give me the hw…
মোহনা বের করে দিলো।
সাগর: good… এখন বলো কি পড়বে?
মোহনা: math or biology or chemistry or physics or english….
সাগর : যেগুলো বলেছি সেগুলো….
মোহনা: উহু….
সাগর : বুঝেছি ওই খাবার লাগবে….
মোহনা: না….📢📢…
.
একটুপর….
দীপ্তি নাস্তা নিয়ে এলো। এসে দেখে মোহনা কানে ধরে ১পায়ে দারিয়ে আছে। আর সাগর HW খাতার আরালে মুখ লুকিয়ে হেসে কুটিকুটি। এটা নতুন কিছুনা… মোহনা পড়া না পারলেই সাগর ৭মিনিট ওকে কান ধরিয়ে দার করিয়ে রাখে…. তাও ১পায়ে। আর মোহনা পড়া তখনই পারেনা যখন এই ৩টা বিষয় পড়তে দেয়া হয়। যাই হোক… সাগরের যাওয়ার সময় হলো।
মোহনা মনে মনে: ওরে ইচ্ছাধারী করল্লা… তোরে তো আজকে আমি কি যে করবো….
তখন মোহনার নজর পরলো ফুলের টবে ।
মোহনা মনে মনে : idea…
মোহনা টবটা হাতে নিয়ে দৌড়ে বারান্দায় গেলো। wait করছে কখন সাগর দরজা দিয়ে বের হবে। আর ও সাগরোর মাথা ফাটাবে। যেই সাগর বের হলো ধপাস করে টবটা ছেরে দিলো। কিন্তু মোহনার আশার বাতি নিভিয়ে সাগর টবটা ধরে ফেলল। এর পিছে ঘুরলো। ঠোটে devil smile …
সাগর: কালকে যেন কবিদের ঠিকুজী গুষ্ঠি মুখস্ত পাই…. সেই সাথে যুক্তফ্রন্ট।
.
কিছুদিনপর…
রিংকু: মোহপু….
মোহনা: হামম।
রিংকু :আজকে খেলবে না?
মোহনা: হামম। ওরা কোথায়?
রিংকু : নিচে দারিয়ে আছে?
মোহনা: ভাবি….. আমি খেলতে গেলাম।
মোহনা খেলতে বেরিয়ে গেলো। ৮-১০বছর বাচ্চাদের সাথে মোহনার ১টা gang আছে। ওদের সাথেই খেলা করে। মোহনাদের বাসার পাশে ১টা কলোনি আছে। সেই কলোনির বাচ্চাই ওরা। মোহনা মন মতলবির জন্য রিতু ছারা ওর আর কোনো same age বন্ধু নেই ।
যাইহোক…
মোহনা : আজকে কি খেলবোরে?
রিংকু: ফুটবল?
মোহনা : না.. পরশুদিন খেলেছি।
দিপু: তাহলে কি খেলবো?
মোহনা : ফাটাফাটি খেলবো…
রিপা: মানে?
মোহনা : ক্রিকেট।
রিংকু : তবে ফাটাফাটি বললে যে?
মোহনা: আজকের খেলাটা একটু অন্যরকম হবে।
পাপ্পু: যেমন?
মোহন : রোজ তো খেলি ভুল করে কারোনা কারো কিছুনা কিছু ভেঙে যায়…. আর বাসায় বিচার যায়।
আর আজকে… 😏
দিপু: আজকে?
মোহনা: ইচ্ছা করে ভাঙবো…
সবাই: 😱
মোহনা : আগে কি দিয়ে শুরু করা যায় বলতো?
অপু: ওই lamp post দিয়ে…
রিপা: না না… ওই ক্যার ক্যারানি রিনা খানের গোলাপের টবে..
মোহনা : না না। গোলাপ না । গোলাপ আমার প্রিয় লাগে। অন্য টবে… পেয়ারার টবে…
শালি পেয়ারা খেতে দেয়নি আমাকে। বললাম টাকা দিবো…
রিংকু: আপু তাহলে কেটো আনলে ভালো হতো….
মোহনা: ওর গরু… কেটো দিয়ে মারলে cctv তে ধরা খেয়ে যাবো। ইচ্ছা করে লাগানোর জন্য…. কিন্তু ব্যাট-বল তো …😁😁…
দিপু: চরম হবে আপু…
মোহনা : আমি জানি….
পাপ্পু: অনেক দূরে তো…. তাই আমি মারবো… ওরা তো পিচ্চি…
দিপু: ওরা তো পিচ্চি…😒.. আমি মারবো…
মোহনা: ওই থাম । টস করি… কোন টিম ব্যাট করবে….
.
পাপ্পুই আগে ব্যাট করবে..
আর নিশানা লাগালো নাসরিন ( মোহনা রিনা খান বলে ডাকে ) নামের ১মহিলার পেয়ারার টব…
আর সাথে সাথে শুরু হলো মহিলার ঘ্যানর ঘ্যানর…
এরপর মোহনার পালা এলে ও ভাঙলো ১জনের বাড়ির জানালা….
ওরা আজকে খেলছে কম ভাঙছে বেশি।
রিংকু : আপুরে কলিজা তো জুরিয়ে গেলো….
মোহনা: 😁। ওই এখন কিন্তু আবার আমার পালা…
শিবু: এখন কি ফাটাবে আপু
মোহনা: ওই টাকলার…
দিপু: মাথা?
মোহনা : আরে না … মাথা অন্যদিন ফাটাবো। আজকে তো গাড়ির হেডলাইট ফাটাবো… ওই দেখ পার্ক করা…
সবাই : okkkk. মোহোপু…
রিংকু মারলো বল… মোহনা মারলো শট। কিন্তু দুর্ভাগ্যক্রমে তখন সাগরের গাড়ি সামনে এসে পরলো… আর বল গিয়ে লাগলো গাড়ি জানালায়… back sit এর…
মোহনা:ওরে বাবারে…
মোহনা দে দৌড়… আর তোরাও
🏃🏃
সবাই ভাগলো।
.
সাগর বলটা হাতে ঘোরা ঘোরাতে আসছে। অপু একটু বেশি গুলুমুলু হওয়াতে পালাতে পারেনি…। অন্যরাও আশেপাশে লুকিয়ে আছে। সাগর পাপ্পুর সামনে গিয়ে গালটেনে
বলল: কি খবর…
পাপ্পু: ভালো…
সাগর : হামম। তো বিচ্ছু বাহিনীর লিডার নিশ্চয়ই পালিয়েছে…
পাপ্পু: 😅।
সাগর ১বক্স চকোলেট বের করে
বলল : এই যে বিচ্ছু বাহিনীর বাকী সদস্যবৃন্দ… কে কে চকোলেট খাবে? চলে এসো চলে এসো…
সবাই ছুটে এলো। মোহনা ছাড়া সবাই এলো।
সাগর : নাও সবাই মিলে খাও…
বেশ খোশ মেজাজেই সাগর এগিয়ে যাচ্ছিলো । কিন্তু যাওয়ার পথে দেখে মোহনার ওরনা পরে আছে। মোহনা দৌড়ে পালানোর সময় ওরনা পরে গেছে। সাগরের মেজাজ গরম হয়ে গেলো। ওরনাটা হাতে পেচালো। রেগে হনহন করে মোহনাদের বাসায় গেলো।
ভাবি : আরে সাগর… বোসো…
সাগর : মোহো কোথায় ভাবি ?
ভাবি: সেকি ? দেখোনি? তোমার ছাত্রী তো নিচেই খেলতে গেলো।
সাগর : ওহ… আমি আসছি।
ভাবি : বসো…
সাগর : দারাও বাদর ধরে আনছি….
ভাবি :😂।
সাগর বাসা থেকে বের হলো।
.
মোহনা ঘাপটি মেরে বসে আছে । ওর সাধের আমগাছে। হ্যা মোহনা গাছেও উঠতে পারে।
মোহনা: ওরে বাবা… তোরে কে বলেছিলো আমার সামনে আসতে? আমার নিশানার সামনে আসতে… আমি কি ইচ্ছা করে ভেঙেছি নাকি? আল্লাহই জানে আজকে আমার কি করবে? ওই যে বের হচ্ছে…. সে কি… ওনার হাতে কি পেচানো? ওরনা? মেয়েদের ওরনা হাতে নিয়ে ঘোরে? থাক বাবা আমার কি? ও মা এখানে তাকাচ্ছে কেন?
মোহনা পাতা দিয়ে মুখ ঢেকে রাখলো।
.
একটুপর…
মোহনা: মনে হয় চলে গেছে… দেখি তো…
চোখ মেলে তাকিয়ে দেখে সাগর রেগে মেগে তাকিয়ে আছে… মোহনা দেখে চমকে উঠলো। balance হারিয়ে পরে যেতে নিলো। কোনো রকমে গাছের ডাল ধরে ফেলল। আর ডাল ধরে ঝুলতে লাগলো।
সাগর: একদম শিক্ষা হয়েছে … ঝোলো এখন বাদুরের মতো…. বাদুর কোথাকার…
মোহনা: একটু নামিয়ে দিননা….please ….
সাগর: নামাবোনা… ঝুলকে থাকো ফাজিল মেয়ে…
মোহনা:অমন করে বলেনা…. পরে গেলে মরে যাবো যে…
সাগর: ওখান থেকে পরলে কেউ মরেনা…
মোহনা: কিন্তু হাত-পা তো ও বাবা গো ভাঙতেই পারে…
সাগর: ভালো হবে…
মোহনা: বববলে কি…. আপনি না আমাকে বিয়ে করবেন… ভাঙাচুরা বউ নিয়ে চলবেন কি করে?
সাগর: হুইলচেয়ারে বসিয়ে….
মোহনা: ouck…. ববলে কি… বউ কি হুইসচেয়ারে বসিয়ে রাখার বস্তু…?
সাগর: তো ওরনা কি ফেলে রাখার বস্তু?
মোহনা: না… মোটেও না… যারা এমন করে তাদের কে করল্লার পায়েস আর চিরতার সন্দেশ খাওয়ানোর দরকার…