তুমি প্রাক্তন নও আমার ভালোবাসা !! Part- 11
ফারহান : আচ্ছা ফারিয়া আমি আসছি নিজের খেয়াল রেখো (বলেই ফারহান ফারিয়ার কপালে চুমু দিয়ে চলে গেলো,,,,ফারহান চলে যাওয়ার পর ফারিয়ার একা একা লাগছিলো তাই রহিমার সাথে গল্প করছে এমন সময় কলিংবেল এর আওয়াজ শুনে রহিমা বলে
রহিমা : অখন আবার কডা আইলো
ফারিয়া : করো কিছু দরকার হয়তো
রহিমা : আইচ্চা দেকি(বলে রহিমা উঠে দরজা
খুলতে যাবে তখন ফারিয়া বলে…
ফারিয়া : তুমি বসো আমি দেখছি(বলেই উঠে দরজা খুলে দেখে একটা মহিলা দাঁড়িয়ে আছে…..
মহিলাটিকে দেখে ফারিয়া তাকিয়ে আছে কারণ মহিলাটিকে সে চিনে না ফারিয়ার তাকিয়ে থাকা দেখে মহিলাটি বলে উঠে
মহিলাটি : কি ভিতরে আসতে বলবে না নাকি এটাও জানো না যে কেউ দরজায় দাঁড়িয়ে থাকলে তাকে ভিতরে নিয়ে যেতে হয়(মহিলাটির কড়া গলার কথা শুনে ফারিয়া একটু অপমান বোধ করলেও তা বুঝতে না দিয়ে পরম সম্মানের সাথে ভিতরে আসতে বলে..মহিলাটি ভিতরে আসে…এতক্ষনে রহিমা খালাও চলে এসেছেন কে আসলো দেখার জন্য রহিমা খালা এসে বলে…
রহিমা : আরে মেডাম আপনে? আসেন ভেতরে আসেন উনি ফারহান স্যারের মা…. (ফারিয়াকে উদ্দেশ্য করে বললো কথাটা বললো রহিমা,,,, ফারিয়া বুঝতে পেরে সালাম করার জন্য এগিয়ে গেলে ফারিয়াকে সালাম করতে না দিয়ে নেহার বলে উঠেন…
নেহার : থাক আর আদিক্ষেতা দেখাতে হবে না(গাল বাকা করে)
ফারিয়া : আসলে মা আমি আপনাকে চিনতে পারিনি (মাথা নিচু করে,)আমি চা বানিয়ে নিয়ে আসছি আপনার জন্য..বসুন আপনি (বলে যেতে নিলেই মিসেস নেহার বলে উঠে..
নেহার : কোথাও যেতে হবেনা তোমার,,, তোমার সাথে আমার কিছু কথা আছে (বলেই সোফায় আরাম করে বসেলো
ফারিয়া : জ্বী বলুন (বলে মিসেস নেহার এর সামনে গিয়ে দাঁড়ালো
নেহার : আরে দাঁড়িয়ে আছো কেন বস বস
ফারিয়া : জ্বী (বলে নহার এর পাশে বসলো)
নেহার : কত টাকা চাই তোমার (স্বাভাবিক ভাবেই কথাটা বললেন নেহার)
ফারিয়া : কিসের টাকা (বলেই জিজ্ঞাসু দৃষ্টিতে নেহার এর দিকে তাকালো)
নেহার : তুমি নিশ্চয় জানো তোমার কখনো বাচ্চা হবে না কারণ তোমার বাচ্চা হওয়ার ক্ষমতা নেই….জানোই তো আমার একটাই ছেলে আর আমি চাই আমার ছেলের বাচ্চা হোক,,,আমার বংশবৃদ্ধির জন্য তো তার বাচ্চা হওয়া অত্যাবশ্যক তাই না,,, যা তুমি তাকে দিতে পারবে না,,, আমি চাই না তুমি আমার ছেলেকে বাবা ডাক শুনা থেকে বিরতো রাখো আমার খুব ইচ্ছে আমার নাতী নাতনী হবে,,,সবাই যদি জানে তোমার এমন একটি মেয়ের সাথে ফারহানের বিয়ে হয়েছে যার কিনা বাচ্চা হবে না,,, অপমানে আমি কাউকে মুখ দেখাতে পারবো না আর তুমি চিন্তা করো না তোমার যত টাকা লাগে আমি তোমাকে দিবো,,,, তোমাকে আমার ছেলের জীবন থেকে চলে যেতে হবে,,, তোমার সব খরচের দায়িত্ব আমি নিবো আমি কি বলতে চেয়েছি আশা করে বুঝতে পেরেছো না বুঝলে আবার বুঝিয়ে দিবো সমস্যা নেই😊😊
———————————
————————————————-
—————————————————————
দুপুরে অনেক বার কল দিয়েও ফারিয়াকে পায়নি ফারহান,,,, হয়তো তার ফোনে চার্জ নেই তা ভেবে আর কল দিলো না…অফিসের কাজের চাপে ফারিয়ার কথা আর মনে পড়েনি সন্ধ্যায় অফিস ছুটির পরে ফারিয়ার জন্য চকলেট নিলো অনেক গুলো চকলেট ফারিয়ার খুব প্রিয় তাদের রিলেশন চলাকালীন ফারিয়া রাগ করলে চকলেট দিয়ে ফারিয়ার রাগ ভাঙাতো ফারহান,,,,,,ফারিয়ার বাচ্চামি গুলো মনে করে মুচকি হাসে ফারহান,,,,আকাশটা মেঘলা হয়ে আছে খুব জোরে বৃষ্টি নামতে পারে অনেক দিন পর ফারিয়াকে পেয়েছে তাই ফারহান চায় ফারিয়ার সাথে বৃষ্টি বিলাস করতে খুব খুশি লাগছে ফারহানের আজকে খুব দ্রুত গাড়ি
চালিয়ে বাসায় যাচ্ছে ফারহান….
বাসায় গিয়ে কলিংবেল চাপ দিলে রহিমা খালা এসে দরজা খুলে দেয় রহিমা খালাকে দেখে একটু অবাক হয় ফারহান কারণ এই কয়েকদিন ফারিয়াকে দরজা খুলে দিতো কারণ এই সময় ফারহান আসে আজকে ব্যতিক্রম দেখে ফারহান একটু অবাক হলেও কিছু বলে না,,,, উপরে চলে যায় নিজের রুমে,,,,রুমে গিয়ে ফারিয়াকে না দেখে ডাকা শুরু করে সাড়া না পেয়ে রুম ভালো করে দেখে বেলকনিতেও না দেখে ওয়াশরুমে চেক করে নাহ ফারিয়া ওয়াশরুমে নেই এতক্ষনে বৃষ্টি শুরু হয়ে গেছে..
ফারহান ভাবলো হয়তো ছাদে গেছে,,,, ফারহান ছাদে গিয়ে দেখলো ফারিয়া নেই আর বৃষ্টি হচ্ছে তাই থাকার কথাও না,,,,ফারিয়াকে না পেয়ে ফারহান তাড়াতাড়ি নিচে নেমে ফারিয়া কে ডাকতে লাগলো ফারিয়ার কোন সাড়া না পেয়ে ফারহান রহিমা খালাকে ডাকতে লাগলো…
ফারিয়া : রহিমা খালা,,,, কোথায় তুমি(জোরে জোরে ডাকতে লাগলো,,,ফারহানের এমন জোরে ডাকা শুনে রহিমা খালা তড়িঘড়ি করে এসে বলে
রহিমা : কি হইসে স্যার
ফারহান : ফারিয়া কোথায়?
রহিমা : হে কইলো বাড়ি চলি যাইতাছি,,,
ফারহান : বাড়ি চলে গেছে মানে কি(রেগে জোরে কথাটা বললো,,,,ফারহানের কথা শুনে রহিমা খুব ভয় পেয়ে যায় আর বলে..
রহিমা : মেডাম আইছিলো,,,তয় বউমনিরে কইছে চইলা যাইতে..
ফারহান : মা এখন কেন আসলো আর কেনইবা ফারিয়াকে চলে যেতে বললো তুমি কিছু শুনেছো কি কি বলেছে মা?
রহিমা : হ হুনছি বউ মনি নাকি মা হইতে পারবো না হেল্লাইগা কইচে আপনের জীবন থেইকা চইলা যাইতে এক বছর আগে,,আর মেডাম বউ মনিরে কইচে আপনের ভালা চাইলে চইলা যাইতে বউ মনির সব খরচ চালাইবো মেডাম অনেক টেকা দিতে চাইছে বউ মনিরে চইলা যাওয়ার লাইগা কিন্তু বউ মনি টেকা নেয় নাই চইলা গেছে,,, মেডামের কতায় বউমনি চইলা গেছে….
রহিমা খালার কথা শুনে ফারহানের মাথায় আগুন ধরে গেলো আর এখন সব ক্লিয়ার ফারহানের কাছে ফারিয়া কেন এক বছর আগে তাকে ছেড়ে গেছিলো,,,, আসতে আসতে সব মনে পড়ে ফারহানের যখন জিজ্ঞেস করতো কেন ছেড়ে চলে গিয়ে ছিলে আমাকে ফারিয়া তখন উত্তরে বলতে চাইতো তার অসম্পূর্ণতা নিয়ে ফারহানের জীবনে জড়াতে চায়নি,,,ফারিয়া মা হতে পারবে না তাই সে আমাকে এড়িয়ে চলতো কিন্তু আমাকে একটা বার তো জিজ্ঞেস করতে পারতো আমি কি চাই,,,আমাকে কিছু না বলে এইসব করলো ফারিয়া রাগে ফারহানের চোখ দুটো লাল হয়ে গেলো তাড়াতাড়ি উপরে গেলো তার রুমে ফোন নিতে আর একটা চিঠি পেল ফারহান খুলে দেখে চিঠিতে লিখা
সময় মত ডিভোর্স পেপার পেয়ে যাবে তুমি
ভালো থেকো..
চিঠিটা পড়ে ফারহানের আরো বেশি রাগ উঠলো…কফিলকে কল দিয়ে বলে তার বাসায় আসতে,,, অফিস ছুটির কারণে কফিল এখনো রাস্তায় তাই তাড়াতাড়ি চলে আসলো…
কফিল : স্যার আসবো
ফারহান : হুম আসো,,,, আমার সাথে চলো এক জায়গায়,,,
কফিল : আসুন স্যার…..
চলবে……..