তুমি প্রাক্তন নও আমার ভালোবাসা

তুমি প্রাক্তন নও আমার ভালোবাসা !! Part- 10

অন্য দিকে দিপ্তি তার মাকে যা ইচ্ছে তা বললো ফারিয়া আর ফারহানকে নিয়ে…….

দিপ্তি : দেখো মা তোমার ছেলে খুব বেশি বাড়াবাড়ি করে ফেলেছে,,,তুমি এত করে বলছো যে তাকে আরো ভালো সুন্দরী মেয়ে খুঁজে দিবে কে শুনলো কার কথা তার এক কথা আমি বিয়ে করবো না ওই মুখপুড়িকে শেষে বিয়ে করেই নিলো,,তাসিনের সামনে তো লজ্জায় আমি মাথা উঁচু করে তাকাতেও পারছি না,,..কি আছে ওই মেয়ের মধ্যে মা তোমার ছেলে তোমাকে একবার জানানোর চেষ্টা করলো না বিয়ে করে নিলো,,, আদর দিয়ে তো বাদর বানিয়েছো,,,এখন প্রতিবেশিদের নানা কথা শুনবে সবাই তো তোমাকেই বলবে নেহার (ফারহানের মায়ের নাম) তোমার ছেলে তোমাকে না জানিয়ে বিয়ে করে ফেলেছে ছিঃ ছিঃ,, আর যখন বাচ্চা হবে না তোমার বান্ধবীরা সবাই বলবে কিরে নেহার তো নাতি নাতনি কেন হচ্ছে না,,,,ভাবতেই কেমন লাগছে মা ছি কি লজ্জার বিষয়,,, তুমি কিছু বলছো না কেন মা (রেগে বললো দিপ্তি,,,,এতক্ষণ পর মিসেস নেহারও মুখ খুললেন

নেহার : আগে সব ব্যাপার জেনে নিতে হবে ফারহান এমন একটা কাজ করবে আমি স্বপ্নেও ভাবিনি,, ঠান্ডা মাথায় সব ভাবতে হবে সুযোগ বুঝে কাজ করতে হবে তুই এত উত্তেজিত হচ্ছিস কেন আর এখনো তো তেমন কেউ জানেনা শোন——————-

——————————————-

——————

——–

সকালে ফারিয়া ঘুম থেকে উঠে নিজেকে আবিষ্কার করলো ফারহানের লোমশ বুকের উপর….সিল্কি চুল গুলো এলোমেলো হয়ে আছে ফারহানের প্রতি কেমন যেন মায়া কাজ করছে ফারিয়ার,,মোহে ডুবে যাচ্ছে ফারহানের ফ্যানের বাতাসে চুল গুলো উড়ছে ফারহানের আর ফারিয়া চুলে আসতে আসতে হাত বুলিয়ে দিচ্ছে,,,, এক সময় কত স্বপ্ন দেখতো ফারহানকে নিয়ে তার একটা পরিবার হবে বেবি হবে সারা ঘর আনন্দে মেতে উঠবে,,, কিন্তু এখন এই সব ভাবতেই ফারিয়ার চোখে জল আসে কি হবে এর পরে কি ভাবে দাঁড়াবে দিপ্তি আর তার মায়ের সামনে ফারহানকে কিভাবে আবারো ধোকা দিবে এইসব ভাবছে আর কান্না করছে ফারিয়ার চোখের জল পড়ছে ফারহানের মুখের উপর আর ফারহানের নড়াচড়া দেখে ফারিয়া ভাবনার জগৎ থেকে বেরিয়ে আসে তাড়াতাড়ি চোখের জল মুছে নেয়,,,ওর মধ্যে ফারহানের ঘুম ভেঙে যায় তাকিয়ে দেখে ফারিয়ার ঘুম ভেঙে গেছে…

ফারহান : good morning সোনা বউ(বলেই কপালে চুমু দিলো….ফারিয়া কিছু না বলে উঠে ফ্রেশ হতে চলে গেলো ফ্রেশ হয়ে ফারহানের জন্য কফি নিয়ে আসলো রুমে ডুকে দেখে ফারহান রুমে নেই,,,,, ওয়াশরুমের দরজা খোলার আওয়াজ পেয়ে তাকিয়ে দেখে ফারহান গোসল করে বের হলো তার ছোট ছোট ভেজা চুল গুলো থেকে ফোটা ফোটা পানি পড়ছে,,,, ফারিয়ার ইচ্ছে করছে ফারহানের চুল গুলো আলতো করে আচল দিয়ে মুছে দিতে,,,,,ফারহানের ভেজা লোমশ বুকে হাত বুলিয়ে দিতে ইচ্ছে করছে….ফারহান ফারিয়ার এমন ভাবে তাকিয়ে থাকা দেখে মুচকি হেসে বলে

ফারহান : ছিঃ ছিঃ এমন করে তাকিয়ে আছো কেন আমার লজ্জা করছে না বুঝি ছেলে হলেও আমার লজ্জা করে তো হায় হায় কেমন করে তাকিয়ে আছে দেখো (বলেই মুখে হাত দিয়ে ডেকে ফেললো….অন্য দিকে ফারহানের এমন অবস্থা থেকে ফারিয়ার লজ্জার নাজেহাল অবস্থা…কফি রেখে তাড়াতাড়ি বেলকনি তে গিয়ে দাঁড়িয়ে রইলো…ফারিয়ার এমন করে চলে যাওয়া
দেখে ফারহান হো হো করে জোরে হেসে দেয়…ফারহান কফি হাতে নিয়ে বেলকনিতে গিয়ে ফারিয়ার পাশে গিয়ে দাঁড়ালো…,ফারহানকে দেখে ফারিয়া লজ্জায় মাথা নিচু করে চলে আসতে নিলেই ফারহান এক হাতে দিয়ে জড়িয়ে ধরে…

ফারহান : পালাচ্ছো কেন সোনা বউ বরকে একা পেলে কোথায় পালানো হচ্ছে হুম (ফারিয়ার কাধে পরম আবেশে নাক ঘষে কথাটি বললো)
ফারিয়া : পালাবো কেন ( চোখ বন্ধ করে কথাটি বললো)
ফারহান : তাহলে এখানেই থাকো (বলেই কফিতে চুমুক দিলো ফারহান)বাহ অসাধারণ হয়েছে…এখন থেকে রোজ সকালে আমার জন্য কফি বানিয়ে দিবে,,, আমি সকালের শুরুটা তোমার হাতের কফি দিয়েই শুরু করতে চাই মাই লাভলি কুইন
ফারিয়া : আমি পারবো না আপনার জন্য কফি বানাতে হুহ
ফারিয়া : তুমি না বানিয়ে দিলে আর কি করার নিশুকে কফি বানানোর দায়িত্ব দিবো(কথাটি বলার সাথে সাথে ফারিয়া রাগি চোখে ফারহানের দিকে তাকালো,,, তা দেখে ফারহান মুচকি হাসি দিলো আর বলে আচ্ছা আমি অফিস যাবো রেডি হতে হবে

ফারিয়া : হুম আগে আমি রেডি হই
ফারহান : তোমার আজ থেকে অফিস যাওয়ার দরকার নেই তুমি ভাষায় থাকো
ফারিয়া : মানে ( ব্রু কুচকে)
ফারহান : মানে তোমার আজকে থেকে অফিস যাওয়া বন্ধ তুমি বাসায় থাকবে আমি আসলে আমার কি লাগবে না লাগবে তার খেয়াল রাখবে,,, সব কিছু রহিমা খালা থেকে জেনে নিবে ওকে সোনা বউ (কফি রেখে জড়িয়ে ধরে বলে কথা গুলো বললো….ফারিয়া কিছু বলতে যেও পারলো না)
ফারিয়া : হুম ঠিক আছে…


ফারহান রেডি হয়ে অফিসে চলে গেলো যাওয়ার আগে ফারিয়ার কপালে ভালোবাসার পরশ দিয়ে গেলো আর সাবধানে থাকতে বললো

ফারহান দুপুরে ফারিয়াকে কল দিয়ে জিজ্ঞেস করলো খেয়েছে কিনা,,, কি করছে,,,ফারিয়ার একা একা বোরিং লাগছিলো তাই রহিমা খালার কাজে সাহায্য করলো তার সাথে গল্প করলো অনেক ভাব জমে গেলো দুজনার মধ্যে……

সন্ধ্যায় ফারহান বাসায় ফিরার পর ফারিয়া ফারহান কে পানি এগিয়ে দেয় যা যা দরকার সব ঠিক মত সময় মত দিচ্ছে ফারিয়ার এইসব আচরণ ফারহানকে বেশ অভাক করছে আবার মনের ভিতরে প্রশান্তি অনুভব করছে…

রাতে ডিনার করে দুজনে ঘুমিয়ে পড়ে,,, সকালে ফারিয়া ফারহানকে কফি বানিয়ে আর ফারহান অফিসে চলে যায় এখন মোটামুটি সব ঠিকঠাক ফারিয়া যথেষ্ট খেয়াল রাখে ফারহানের,,,,ফারহান তো আকাশের চাঁদ হাতে পেয়েছে যেন তবে কোথাও না কোথাও তাদের মাঝে দূরত্ব থেকেই যায় এভাবে কয়এক দিন কেটে যায় ফারহান ফারিয়ার জন্য অফিস থেকে আসার সময় বেলী ফুল নিয়ে আসে চকলেট নিয়ে আসে মাঝে মাঝে বাইরে নিয়ে যায় ফারিয়াকে এভাবেই কেটে যায় আরো কয়েকটা দিন….

অন্য দিকে দিপ্তি

দিপ্তি – আচ্ছা মা তুমি কিছু বলছো না কেন ভাইয়াকে মান সম্মান তো সব শেষ করে দিচ্ছে আসতে আসতে চার দিকে জানা জানি হয়ে হয়ে যাচ্ছে(রেগে)
নেহার – হুম এখনি কিছু একটা করতে হবে..
—————–

—–

ফারহান : আচ্ছা ফারিয়া আমি আসছি নিজের খেয়াল রেখো (বলেই ফারহান ফারিয়ার কপালে চুমু দিয়ে চলে গেলো,,,,ফারহান চলে যাওয়ার পর ফারিয়ার একা একা লাগছিলো তাই রহিমার সাথে গল্প করছে এমন সময় কলিংবেল এর আওয়াজ শুনে রহিমা বলে
রহিমা : অখন আবার কডা আইলো
ফারিয়া : করো কিছু দরকার হয়তো
রহিমা : আইচ্চা দেকি(বলে রহিমা উঠে দরজা
খুলতে যাবে তখন ফারিয়া বলে…

ফারিয়া : তুমি বসো আমি দেখছি(বলেই উঠে দরজা খুলে দেখে একটা মহিলা দাঁড়িয়ে আছে…..

চলবে……

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *